রাজনীতির রংমহল পর্ব-৩০

0
680

#রাজনীতির_রংমহল
#সিমরান_মিমি
#পর্বসংখ্যা_৩০(স্পেশাল পর্ব)

প্রাণহীন দেহটা বহু কষ্টে টেনে নিচ তলায় নামলো পরশ।সামনের খালি জায়গা’টা এখন অনেকটাই ফাকা।লাশ নিয়ে মসজিদের সামনের মাঠে গিয়েছে সবাই।ওখানেই হয়তো গোসল করাবে।ধীর পায়ে হেটে গাড়িতে উঠলো পরশ।ভেতরে বয়ে চলা দুইটা ধারা তাকে পুরোপুরি নিঃশেষ করে দিচ্ছে।ধর্ষিতা ছোট বোন,খুন হয়ে যাওয়া ছোট ভাইয়ের মুখ খানি চোখের সামনে ভেসে উঠতেই গা ছেড়ে দিলো সিটের উপর।নিঃশব্দে চোখের দু-পাশ থেকে জড়িয়ে পড়লো দু-ফোটা অশ্রু।কলিজা’টা যেন কেউ কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলছে।

পরক্ষণেই চোখের সামনে ভেসে উঠলো পাভেলের রক্তাক্ত ছিন্নভিন্ন লাশ।ভেসে উঠলো প্রেমার ছটফটানির দৃশ্য।হাতের মুঠো শক্ত হয়ে গেল।কপালের দুই পাশের শিরা গুলো যেন ছিড়ে বাইরে বেরিয়ে যাবে।দাতের সাথে দাত পিষে যাচ্ছে পরশের।শরীরের রক্ত টগবগ টগবগ করে ফুটছে।যেন হাতের কাছে পেলে একটা জানোয়ার কেও নিঃশ্বাস নিতে দেবে না।গাড়ির মিররে ফুটে উঠলো এক হিংস্র, ভয়ংকর,দানবীয় রুপ।চোখ দুটো অস্বাভাবিক মাত্রায় লাল হয়ে আছে।সামনের দিকে তাকিয়ে থাকতেই গাড়ি স্টার্ট দিলো পরশ।এক টানে আড়াই মিনিটের মধ্যে নিজের পার্টি অফিসের সামনে গাড়ি থামালো।

পিরোজপুর সদরের এক প্রান্তে পরশের অফিস এবং অন্য প্রান্তে সোভামের অফিস।দ্রুত পায়ে উঠে এলো দোতলায়।চাবি দিয়ে খুললো পার্সোনাল রুম টা।নির্বাচনের সময় প্রায়’ই রাত কাটাতে হতো এখানে।ঘরে ঢুকে খাটের নিচ থেকে বিশাল এক কাঠের বাক্স টেনে বের করলো। মুখের ভঙ্গি স্বাভাবিক রেখেই ড্রয়ারের ভেতর থেকে বের করলো কাঙখিত চাবি টি বের করলো।বাক্সের কাছে গিয়ে তালা খুলে উপরের ঢাকনা সরালো।মুহুর্তে’ই ভেতর থেকে দৃশ্যমান হলো অজস্র ভয়ংকর অস্ত্র।

চাপাতি,ছুড়ি,কাচি,রামদা,ক্ষুর,চায়না অটোসুইস চাকুসহ,চাইনিজ কুড়াল ইত্যাদি নানান রকম ভয়ংকর ধারালো অস্ত্রে ভরপুর বাক্স।নির্বাচন সময়ে এসব ব্যাবহার করতে হয় বিরোধীদলের বখে যাওয়া সন্তাসদের বিপক্ষে।পাশের রুমে এর থেকেও আরো অনেক অস্ত্র রাখা রয়েছে। পরশ পুরো বাক্সে একবার চোখ বুলিয়ে নিলো।তারপর সেখান থেকে চাইনিজ কুড়াল টা হাতে নিলো।বাক্স বন্ধ করে আবারো আগের মতো খাটের তলায় রেখে দিলো। শান্ত ভাবে রুমের দরজা আটকে পুনরায় গাড়িতে উঠে কাঙ্ক্ষিত স্থানে পৌছাবার আশায় গাড়ি স্টার্ট দিল।

.

.

.

.

★★★★★
সামনেই পড়ে আছে পাভেলের রক্তাক্ত ছিন্নভিন্ন লাশ।গল গল করে পুরো শরীর থেকে উপচে রক্ত পড়ছে।পাশেই হাত চেপে ধরে সেদিকে তাকিয়ে থরথর করে কাপছে সুজন।সে তো নেশায় নেই।সম্পুর্ন হুশে রয়েছে।কি করে এমন হিংস্রতা সহ্য করবে সে।নিজের প্রাণ বাচানোর তাগিদেই পাভেল সোভামের দিকে আক্রমণ করেছিলো।কিন্তু অতি চালাক ধুরন্ধর ব্যাক্তি সোভাম সরদার পাশ থেকে সুজনকে টেনে নিজের সামনে দাড় করায়।ফলস্বরূপ হাতের কনুই কেটে পুরো ঝুলে যায় সুজনের।

থরথর করে কাপতে কাপতে সুজন সোভামকে বললো-

ভাই, এইটা করার কি কোনো দরকার ছিলো?এবার কি করবেন?ধরা পইরা যাব আমরা।

বিরক্তিকর শ্বাস ফেলল সোভাম।সুজনের দিকে তাকিয়ে বললো-

তুই আর আরাফ এটাকে কোথাও পুতে দিয়ে আয়।যেন কেউ কোনো টের না পায়।

ভয়কাতুরে সুজন চমকে উঠল।হাতের যন্ত্রনায় পুরো শরীর বিষিয়ে উঠেছে।কাপাকাপা স্বরে বললো-

ভাই, আমি পারবো না।কেউ যদি দেখে ফেলে আমায়।তখন কি হবে?এমনিতেও গাড়ি আপনার ক্লাবের সামনেই রইছে।ওদিকে প্রেমা যদি সব বলে দেয়।আমি তো ফেসে যাবো পুরোপুরি।

থেমে কন্ঠে কাঠিন্যতা এনে,

আমি ফাসলে আপনারা বাচতে পারবেন না ভাই।

সোভাম ত্যাড়া চাহনিতে সুজনের দিকে তাকালো।বললো-

প্রেমা অসুস্থ।ও এতো সহজে কিছু বলবে বলে মনে হয় না।আপাতত হস্পিটালে থাক।পরে কোনোভাবে দম টা বন্ধ করে দিব।কিন্তু আপাতত পাভেলকে মারা দরকার ছিলো। জানোয়ারের বাচ্চায় সব জানে।ওরে ছাইড়া দেওয়া মানে আমার পুরা ক্যারিয়ার শেষ। এখন তুই কোনো কথা বলিস না।কেউ কিচ্ছু জানে না।গাড়ি নিয়ে সোজা হাসপাতালে যা।কি কি হয় সব আমাকে জানাবি।

আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে রইলো সুজন।ক্ষেপে গিয়ে বললো-

মানে টা।প্রেমা আমাকে দেখলেই নাম বলে দেবে।আপনি আমারে বিপদের মুখে ফালাইয়া দিতে চান।আমি আর কিছুতেই শিকদার বাড়িতে যাব না।আপনার কাছেই থাকবো।

মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে সোভামের।নিজেকে সংযত করে বললো-

তুই আমার কাছে থাকলে সব সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।তার থেকে বরং তুই গাড়িটা আমার ক্লাবের সামনে থেকে নিয়ে কোথাও পালিয়ে যা।যা টাকা লাগে আমি দিব।

পুনরায় ক্ষেপে গেল সোভাম।বললো-

গাড়ি নিয়া যাব মানে?আরে এই গাড়ি পরশ ভাইয়ের।আমি যেখানেই যাই না কেন খুজে নেবে আমায়।তার থেকে বরং আমি কোথাও পালাইয়া যাই।আপনি টাকা দেন।

হাসলো সোভম।বিদঘুটে সেই হাসি।বললো-

ওই জানোয়ারের বাচ্চা।তুই এইখান থেকে পালাবি।গাড়ি আমার ক্লাবের সামনে থাকবে।তাহলে তো পুলিশ নির্দিধায় আমারে এরেস্ট কইরা নিয়া যাবে।এই গাড়ির আশে পাশেও আমার লোকেরা যাবে না।আমার লোক যাওয়া মানে আমি যাওয়া।গাড়ি সরাতে হলে তুইই সরা।

–আমি পারমু না।আপনার হইয়া কাজ করছি, শেষে আপনিই আমারে বিপদে ফালাইবেন।ভাই,ভাই আমারে কোথাও লুকাইয়া রাখেন।নইলে আমি ধরা পড়লে কিন্তু আপনিও শেষ।

কতক্ষণ ভাবলো সোভাম।তারপর সুজনের কাধে হাত রেখে বললো-

ঠিক আছে গাড়ি আমার লোকেরাই নিয়ে যাবে।তোকেই লুকিয়ে রাখবো সবার থেকে।চল

বলেই ধারালো ক্ষুর টা ঢুকিয়ে দিল সুজনের পেটে।

হালকা হাসি দিয়ে বললো-

আমারে ব্লাকমেইল করিস জানোয়ারের বা*চ্চা।তোকে বাচিয়ে রাখলে নিশ্চিত আমার ক্যারিয়ার এখানেই শেষ।

ফোন হাতে নিয়ে কল করলো একটা নম্বরে।ওপাশ থেকে ফোন ধরতেই সোভাম বললো-

সোহেল, রানাকে নিয়ে দু মিনিটের মধ্যে ক্লাব ঘরে আয়।সাবধান কেউ যেন জানে না।

ফোন কাটতেই নিরব আর আরিফকে বললো-

পাভেল কে নিয়ে নির্জন কোনো জায়গায় পুতে ফেল।আরিফ নির্দিধায় লাশ ধরলো। নিরব কাপতে কাপতে লাশটা নিয়ে গেল। দুজনেই নেশাগ্রস্ত।এখন মাটি খুড়ে তারপর পাভেল কে ঢোকাতে বড্ড শ্রম হবে।তার থেকে বরং কচুরি দিয়েই ঢেকে টলতে টলতে ক্লাবে গেল তারা।

সোহেল এবং রানা আসতেই উঠে বসলো সোভাম।মাটিতে মুখ বাধা অবস্থায় পড়ে থাকা সুজন এখনো কাতরাচ্ছে। প্রাণ পাখিটা যাবে যাবে করছে।তার দিকে তাকিয়ে বললো-

এইটার পকেটে চাবি আছে।সামনে গাড়ি আছে।এটাকে দূরে কোথাও নিয়ে গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসিয়ে সিটবেল্ট বেধে দিবি।যাতে নড়তে না পারে।তারপর জ্বালিয়ে দিবি যেন ছাইটুকুও কেউ না পায়।তবে সাবধান খুব নির্জন জায়গায় নিয়ে যাবি।

গতকালকের ঘটে যাওয়া নির্মম হত্যা গুলো চোখের সামনে ভেসে উঠছে নিরবের।এতক্ষণ সে কথাই ভাবছিলো সে।আচমকা সোভামের দিকে তাকিয়ে বললো-

ভাই,আপনার স্বার্থের জন্য কোনো এক দিন আমাকেও মেরে ফেলবেন।

চকিতে তাকালো সোভাম।আশে-পাশে বারকয়েক তাকিয়ে দেখলো সবাইকে।পার্টি অফিসের ভেতরে আছে তারা।দূরের টেবিলে সোহেল আর রানা তাস খেলছে।তার কিছুটা দুরেই আরিফ সিগারেট টানছে।

সোভামকে নিরব থেকে হতাশ হলো নিরব।বললো-

ভাই, আমরা এতোগুলা খুন,ধর্ষন করছি।অথচ না পালিয়ে গিয়ে এখনো অফিস রুমে বসে আছি।আপনি কাউকেই কোথাও যেতে দিচ্ছেন না।আমার ভয় লাগছে।

সোভম আলতো হাসলো।নিরব যে কাল থেকেই ভীষণ ভয়ে আছে সেটা সে বেশ বুঝতে পারছে।ভাইকে সান্ত্বনা দেবার জন্য বললো-

আরে পাগল। পালিয়ে গেলে আরো নিশ্চিত হয়ে যাবে পুলিশ।আর আমরা কি কিছু করেছি নাকি।করলেও বা প্রমাণ নাকি।পাভেল নেই।আর প্রেমার খবর কিছুক্ষণ আগেও নিয়েছি আমি।সারাক্ষণ নাকি ঘুমের ওষুধ দিয়ে রাখতে হয় ওকে।অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। শুনেছি বরিশাল নয়তো ঢাকায় নিয়ে যাবে।

আর কে জানে এই ব্যাপারে।তোরা চারজন।সেতো তোরা সারাক্ষণ আমার কাছেই আছিস।কে করবি বেইমানি?

হাসলো আরিফ।যেন সে খুব মজা পেয়েছে কথাগুলোতে।তারপর নিরবকে ঠাট্টা করে বলল-

এতো ভয়।অথচ খাওয়ার সময় তো নিজেই আগে দৌড় দিয়েছিলি।

হেসে দিলো অফিস রুমের সবাই।আপাতত বর্তমান পরিস্থিতি সবার প্রথম সন্দেহ সোভাম দের উপরেই পড়েছে।তবে উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে কিছুই করতে পারছে না।তবে যেচে ঝামেলায় না জড়ানোর জন্য সোভামের দলের লোকেরাও আজকাল তাকে এড়িয়ে চলছে।এমনকি পার্টি অফিসে আসাও বন্ধ করে দিয়েছে।আজকে ভেতর থেকেই দরজা বন্ধ করে রেখেছে আরিফ।

হঠাৎ কলিং বেলের আওয়াজ পেতেই চমকে উঠলো সবাই।সোভাম নিজেও চমকালো।সবার দিকে তাকিয়ে বলল-

হয়তো পুলিশ এসেছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।সবাই একদম স্বাভাবিক থাকবি।অতিরিক্ত ন্যাকামি যেই টায় করবি আল্লাহর কসম একদম….

আর বলতে পারলো না।এর মধ্যে পুনরায় বেল বেজে উঠলো।সোভাম হাসিমুখে দরজা খুললো।ওপাশের ব্যাক্তিকে দেখেই ধীরেধীরে তার চোয়াল শক্ত হতে লাগলো।সাথে ভয়ের দানাও হৃদয়ে বাসা বাধতে লাগলো।

পরশকে দেখে ইতোমধ্যে নিরব ঘামতে শুরু করে দিয়েছে। সোভাম নিজেকে স্বাভাবিক’ই রাখলো। দরজার ও প্রান্ত থেকে ধীর পায়ে এক পা সামনে আগালো পরশ।সোভাম ও এক পা পিছু এলো।যেন সে বুঝতেই পারছে না পরশের এখানে আশার কারন।আরেক পা পিছনে আগাতেই ডান হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল টা দুহাত দিয়ে ধরে এক কোপ মারলো সোভামের গলায়।মুহুর্তেই কন্ঠনালি ভেদ করে পুরো মাথাটা ছিটকে পড়লো ওপাশের দেয়ালে।সাথে সাথেই রুমে থাকা চারজনের বিকট আওয়াজের সাথে দাঁড়িয়ে থাকা মুন্ডুহীন ধরটার রক্ত টগবগিয়ে বের হয়ে পরশের সারা শরীর মেখে গেলো।ধীরে ধীরে ছটফট করতে করতে টলে পড়লোস দেহটা ফ্লোরের উপর।

রুমে উপস্থিত চারজনই যেন স্বপ্ন দেখছে। আত্নরক্ষার্থে এবং নিজের তেজকে সবার সামনে প্রকাশ করার জন্য টেবিলের উপর রাখা ফুলদানি টা নিয়ে এগিয়ে আসলো আরিফ।পরশের দিকে ছুড়ে মারতেই সরে গেল সে।ওপাশের কাচের জানালাটায় পরে চুরমার করে কিছু অংশ গোল হয়ে ভেঙে গেল।হাতের রক্তমাখা কুড়াল টা দিয়ে আরিফের হাতের উপর কোপ মারলো।এরইমধ্যে সোহেল ছুটে দরজা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করতেই দরজা আটকে দিল পরশ।হাতের কুড়াল টা দিয়ে অস্ত্রহীন চারটা মানুষের উপর চোখ বন্ধ করে কুপিয়ে যাচ্ছে পরশ।আরিফের মাথার পেছনে বলশালী হাতের আরেকটা কোপ পড়তেই ঘিলু বেরিয়ে এলো।নুয়ে পড়লো সেখানেই।নিরব ও ফ্লোরে গড়াগড়ি খাচ্ছে।তার পেটের উপরের কোপটাতে ভেতরের নাড়িভুড়ি বেরিয়ে এসেছে।

রানা চিৎকার করে বললো-

ভাই,আল্লাহর কসম আমি কিছু করি নাই।পরশকে এগোতে দেখেই ভাঙা কাচের জানালাটার উপর ঝাপিয়ে পড়লো। চুরমার করে কাচ ভেঙে পড়লো ওপাশের কাটাতারের বেড়ার উপর।

ইতোমধ্যে বাইরের জনগন,পুলিশ,দরজা ভাঙতে সক্ষম হয়েছে।ছুটে এসে দশ বারোজন পরশকে আকড়ে ধরলো।কিন্তু দাও দমাতে পারলো না।নিজের শেষ আঘাত হিসেবে হাতের কুড়াল টা ছুড়ে মারলো সোহেলের দিকে।ঘ্যাচাং করে হাটুর উপর বিধে গেল কুড়ালটি।

সারা শরীর,মুখ জুড়ে ঘাতকদের রক্তের বন্যা বয়ে গেছে।চিৎকার দিয়ে সমস্ত শরীর টাকে ঝাড়া মারলো পরশ। পুলিশরাও যেন ভয় পেয়ে ছেড়ে দিলো। আলতো পায়ে টুলতে টুলতে অফিসের বাইরে এলো। ঝরঝর করে বমি করে দিলো পরশ।পাশেই স্কুলমাঠের বাগানে পানি দেওয়ার পাইপ।আলতো পায়ে হেটে সারা শরীর ধুয়ে ফেললো পানি দিয়ে।

এ যেন কোনো মুভির সুটিং চলছে। আশেপাশে হাজার হাজার মানুষ পরশকে ভিনগ্রহী কোনো প্রানীর মতো দেখে যাচ্ছে।কেউ কেউ নিজের ফোন বের করে দূর থেকে লুকিয়ে ভিডিও করছে।

চলবে?