রিটেক পর্ব-১২+১৩

0
117

#রিটেক
#বিনতে_ফিরোজ
পর্ব:১২

রূপা বুঝতে পারছে না তার কি বলা উচিত। কেনো হিমেলের এই তাড়াহুড়া? যে ছেলেটা বিয়ের নাম শুনলে রেগে যেত তার আজ এত পরিবর্তন? এতো!
হিমেল তার সাথে আসা চারজন বন্ধু নিয়ে রূপার কাছে এসেছে। এসেই বলেছে,
– রূপা! চলো বিয়ে করে ফেলি!
– কি সব কথা বলছো!
রূপা বেশ চমকে গিয়েছিলো। হিমেল এমন মজা করছে কেনো?
– কি সব বলছি? সবসময় তুমি বলতে। আজকে আমি বলছি।
রূপা বারবার বিয়ের কথা বলত কথাটা হিমেলের বন্ধুদের সামনে বলায় বেশ লজ্জা পেল রূপা। ইতঃস্তত করে বলল,
– মজা করো না।
– মজা করছি না। আ’ম সিরিয়াস!
হিমেলের মুখ দেখে মনে হয়নি সে মজা করছে। রূপা সেই থেকে ভাবনায় পড়েছে।
– রূপা! কি এত ভাবছো?
ভাবনা থেকে বের হয়ে রূপা দেখলো হিমেলের বন্ধুরা তাদের কথা বলতে দেখে দূরে সরে গেছে। রূপা চাপা কণ্ঠে বলল,
– বিয়ে করব বললেই বিয়ে করা যায়? আশ্চর্য!
– কেনো? এতদিন আমি যখন এই কথা বলতাম তুমি তো রেগে বো-ম হয়ে যেতে।
– উফফ হিমেল! বুঝতে চেষ্টা করো। আমার অভিভাবক আছে। তাদের সাথে কথা বলে তুমি সিস্টেমেটিকালী আগাও। আমার বাসায় প্রস্তাব পাঠাও। পারিবারিকভাবে সব হোক।
– আরে সেটা তো হবেই। আমি জাস্ট বলছি চলো আজ আমরা বিয়ে করে নেই। আজ হোক কাল হোক সিস্টেমেটিকালী বিয়ে তো আমি তোমাকেই করবো। তাই না?
– এটা আবার কেমন কথা? এখানে এভাবে আমরা বিয়ে করব কেন? এমন তো না যে আমাদের বাসা থেকে মেনে নেবে না। তুমি পাগল হয়েছো হিমেল!
– সেটা হয়েছি। মানতে দ্বিধা নেই। আজ তোমাকে এই রূপে দেখে সত্যিই পাগল হয়েছি।
বুকে হাত দিয়ে বললো হিমেল। রূপা হাসলো। নরম কণ্ঠে বলল,
– এমন ছেলেমানুষী করো না হিমেল। এখান থেকে ফিরে প্রস্তাব পাঠাও। তারপর তো..
– আহা! এক কথা বারবার বলে! আমি তো বলছিই পাঠাবো। কিন্তু দেখ আমরা ঘুরতে এসেছি কিন্তু নিজেদের মতো একটু সময় কাটাতে পারছি না। চলো না রূপা বিয়েটা করে নিই।
শেষটুকু রূপার হাত ধরে অনুরোধ করলো হিমেল। রূপা বিভ্রান্ত বোধ করল। তার বিবেক বলল হিমেলের কোনো যুক্তিই ধোপে টেকে না। আবার আবেগ তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে। সায় দিতে চাইছে হিমেলের হিম আহ্বানে। আমতা আমতা করে রূপা বলল,
– আচ্ছা আমি একটু পরামর্শ করে নেই।
– কার সাথে? তোমার মায়ের সাথে? কক্ষনো না। উনি কি রাজি হবেন ভেবেছো?
রূপার মস্তিষ্ক যেনো কাজ করতে চাইলো। মা রাজী হবেন না। তাহলে সেই কাজটা করা কি ঠিক হবে? হালকা স্বস্তি আসা চেহারায় আবার বিভ্রান্তির ছাপ দেখা দিলো। হিমেল বোধহয় বুঝত পারলো। তাকে আশ্বস্ত করতে বলল,
– রূপা! তুমি যদি আমাকে বিশ্বাস করো তাহলে আমার সাথে আসবে আর নাহলে যেটা তোমার ভালো লাগে।
– আমি তো তোমাকে বিশ্বাস করি।
– তাহলে?
– আচ্ছা অন্তত আসমার সাথে..
– অসম্ভব!
চমকে উঠে বলল হিমেল। সে কেন এতোটা চমকালো রূপ বুঝতে পারল না রূপা।
– তাহলে কেয়া?
– ওটা তো একটা বেয়াদব মেয়ে। আচ্ছা তুমিই না বলেছিলে আমাদের মাঝে কোনো তৃতীয় ব্যক্তিকে টানবে না? তাহলে ওদের কথা আসছে কেনো? আচ্ছা বাদ দাও। মনে হচ্ছে আমি তোমাকে জোর করছি। থাক যা হবার হবে একদিন।
শেষ কথাটায় অনিশ্চিয়তার হাওয়া মিশিয়ে বলল হিমেল। চলে যেতে উদ্যত হতেই রূপা তার হাত ধরে ফেলল। দ্রুত বলল,
– আচ্ছা আমি রাজি।
– সত্যিই!
– হ্যাঁ। কিন্তু এখানে সবাইকে কিভাবে? মানে..
– আরে সবাইকে কে জানাচ্ছে? আমার বন্ধুরা আছে। ওতেই হবে।
– সবাই গসিপ করবে কিন্তু।
– করুক।
আড়চোখে তুলির দিকে তাকালো রূপা। তার চোখে বেদনা নাকি রাগ সেটা বুঝলো না। কিন্তু তুলির মুখচ্ছবি পরিবর্তন হওয়াটা ঢের বুঝলো। দুলতে থাকা সিদ্ধান্তে যেনো হঠাৎই স্থির হয়ে গেলো সে। হিমেলের টানতে থাকা হাতের দিকে তাকালো। আরেকবার তুলির দিকে। ভুলে গেলো কেউ তাকে বলেছিল, “তুই গা ভাসিয়ে দিলে এই স্রোত তোকে কোথায় নিয়ে যাবে তুই নিজেও বুঝবি না।” একদম ভুলে গেলো।
জোৎস্নার আলো গায়ে মেখে রাতের এক প্রহরে নিজ নাম আরেকজনের সাথে জুড়ে দিল রূপা। সে বুঝল না কোথায় সাক্ষর করছে, কোথায় নিজের নাম জুড়ে দিয়েছে। সুখের জোয়ারে নাকি দুঃখের ভাটায়। সে বুঝল না। আসমা, কেয়া, অর্পি কেউ জানলো না রূপার দেখা স্বপ্ন আজ সত্যি হয়ে গেছে। অন্যভাবে।

•• •• •• ••

সন্ধ্যা থেকে দীপ্তির সাথে মনোমালিন্য চলছে ফাহাদের। এটা এখন নিত্যকার নিয়ম। কথা বললেই ঝগড়া হয়। তবে এক্ষেত্রে ফাহাদ বরাবরই পিছিয়ে। কথার বিপরীতে তৎক্ষণাৎ শক্ত কথা সে বলতে পারে না। শেষবার দীপ্তিকে সে আশাহত হয়ে বলেছিল,
– তুমি আমাকে কখনোই বুঝলে না দীপ্তি।
দীপ্তি চিৎকার করে বলেছে,
– বরঞ্চ তুমি আমাকে বোঝোনি। আমি তোমাকে বুঝেছি। অবশ্যই বুঝেছি।

দীপ্তি নিজেকে রুমে আটকে রেখেছে। ফাহাদ নিজের ছোট্ট ডায়েরীটা সম্বল করে বসে আছে করিডোরে। সমুদ্রের পানি যেনো তার বুকে আছড়ে পড়ছে। কেমন গর্জন তুলছে! ডায়েরির পাতা খুলল ফাহাদ। গুটি গুটি করে লিখতে শুরু করল,

– দীপ্তি! তুমি কি আমার সাথে কখনও চাঁদ দেখেছো? অথবা বৃষ্টি? আঁধারের পর্দার আড়ালে কখনও আমার হাতকে সম্বল করে হেঁটেছো? হালকা বৃষ্টির মাঝে কখনও গাছকে পলক ফেলতে দেখেছো? অথবা তাদের খুশির হিল্লোল? রাত জেগে কখনো আমার সাথে নিশাচর পাখির আওয়াজ শুনেছ? শোননি। শোননি দীপ্তি। তুমি জানোনা আমার সবচেয়ে পছন্দের কাজ কি। আমি জানি। তুমি জানো না তোমার অবহেলা আমাকে কষ্ট দেয়। তুমি সেটাই আমাকে সবচেয়ে বেশি দিয়েছো। তুমি এটাও জানোনা আমি কি ভীষণ অসুখী। দীপ্তি! তুমি আসলে আমাকে কখনোই বুঝতে পারো নি। কখনোই না।

চলমান।

#রিটেক
#বিনতে_ফিরোজ
পর্ব:১৩

বিবাহিত জীবনের প্রথম সকাল। ভাবনাটা মাথায় আসতেই থমকে গেলো রূপা। বিছানায় ঘুমন্ত হিমেলের মুখের দিকে তাকালো। সে কার কাছে বিবাহিত? নিজের কাছে, হিমেলের কাছে আর হিমেলের গুটিকয়েক বন্ধুদের কাছে। এছাড়া আর কেউ তার এই লুকানো বিয়ের কথা জানে না। লুকানো বিয়ে? হ্যাঁ! লুকানোই তো। সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে, অভিভাবকের আড়ালে করা লুকানো বিয়ে।
কাল রাতটা রূপা কাটিয়েছে হিমেলের বুক করা একটা নতুন হোটেলে। হিমেলের বন্ধুরা তাদের ছেড়ে গিয়েছিলো বিয়ের পরপরই। অবশ্যি একটা ট্রিট দাবি করতে তারা ভোলেনি। নতুন অনুভূতির জোয়ারে কাল সারারাত অন্য কিছু মাথায় আসেনি। কিন্তু সূর্যের আলো চোখে লাগতেই স্বপ্নের পর্দা সরে গিয়ে চোখের তারায় বাস্তবতা আঘাত হা-ন-লো। তবে ভাবনা বেশীদুর গড়িয়ে যাওয়ার আগেই আসমার কল পেলো রূপা।

– আসসালামু আলাইকুম বান্ধবী। কেমন আছিস?
– ওয়া আলাইকুমুস সালাম। ভালো আছি। তোর কি অবস্থা?
– আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। সব ঠিকঠাক তো রূপা?
ঢোক গিললো রূপা।
– হ্যাঁ সব ঠিকঠাক।
– আচ্ছা শোন..
– রূপাআআ..
ঘুম জড়ানো স্বরে ডাকলো হিমেল। ভয়ে রূপার শ্বাস আটকে আসতে চাইলো।
– কে ডাকলো রে?
আসমার সন্দেহ মাখা প্রশ্ন। রূপার ভয় সত্যি হলো। আসমা শুনে ফেলেছে।
– কই? কেউ না তো।
– আমি স্পষ্ট শুনলাম কোনো ছেলের গলা। আর তোর কণ্ঠ হঠাৎ এমন গিয়ে গেলো কেনো। কি হয়েছে রূপা? সত্যি করে বল।
রূপাকে এক প্রকার চেপে ধরলো আসমা। বিছানা হাতড়ে রূপাকে না পেয়ে হিমেল আবার ডাকলো। আগের চেয়েও জোর গলায়।
– সকাল সকাল কোথায় গেলে রূপা? আসো না!
ফোন কেটে দেওয়ার চিন্তা করতেই আসমার প্রশ্নে রূপাকে থেমে যেতে হলো।
– রূপা! তুই কি হিমেলের সাথে?
রূপার চিন্তার গতি লোপ পেয়েছে। কোনো মতে সে বলল,
– হ্যাঁ।
স্তব্ধ হয়ে গেলো আসমা। তার কণ্ঠে কোনো কথা জোগালো না।
– সারারাত ওর সাথেই ছিলি?
– হ্যাঁ।
– রূপা!
ভগ্ন কণ্ঠে বলল আসমা। বারান্দার গ্রিল ধরে নিজেকে সামলে নিলো সে। রূপা নিজের পক্ষে সাফাই গাইলো।
– আসমা আমরা কালকে বিয়ে করে নিয়েছি। ওর সাথে কিন্তু আমি এমনি ছিলাম না। বিশ্বাস কর।
– ছি! রূপা! আমি ভাবতেই পারছি না। তুই তুই! বিশ্বাস তুই আন্টিকে করাস রূপা। আমার বিশ্বাস বোধ হয় তোর আর দরকার নেই।
ফোন কেটে দিলো আসমা। বান্ধবীর পরিণতি দেখে হাউমাউ করে কান্না এলো তার। মুখে হাত দিয়ে সেটা আটকালো। রূপা কি জানে ও কিসের ভেতর আছে? এটা কি আদৌ বিয়ে? রূপাটা এতো বোকা কেনো?

আসমার প্রতিক্রিয়া রূপাকে বাস্তবিকই ভয় পাইয়ে দিলো। আসমা শুনেই যদি এমন করে তাহলে মা, ভাইয়া কি বলবে? অসম্ভব! ওদের জানানোই যাবে না। তৎক্ষণাৎ হিমেলের কাছে গেলো সে। তার হাত ধরে বলল,
– হিমেল! তুমি বল ফিরে গিয়েই আমাকে বিয়ে করবে?
সদ্য স্নাত রূপাকে দেখে হিমেলের ভালো লাগলো। মুচকি হেসে বলল,
– তোমাকে সুন্দর লাগছে।
– হিমেল! আমি কি বলছি!
– বিয়ে তো হলোই। আবার কি?

হোটেলে ফিরে গেলে লাল চোখের কেয়া এবং চোখমুখ ফুলিয়ে রাখা অর্পির সাথে তার দেখা হলো। চোরা এতদের দিকে তাকালো সে। কেয়া রীতিমত চেপে ধরলো রূপাকে।
– রূপা! তুই কোথায় ছিলি সারারাত? ঠিক আছিস তো?
রূপাকে দেখে অর্পি আবারও কান্না শুরু করেছে। কাঁদতে কাঁদতেই সে বলল,
– রূপা! তুই হারিয়ে কি গিয়েছিলি?
রূপা বুঝতে পারল এদের উল্টাপাল্টা বোঝানো সম্ভব না। অগত্যা তাকে সত্যি কথাটাই বলতে হলো। কথাগুলো বোধগম্য হওয়ার পর কেয়া কিছু বলল না। হঠাৎ দাঁড়িয়ে খুব শীতল কণ্ঠে বলল,
– যেই বিশ্বাস দিয়ে তোর মা,ভাই তোকে এখানে পাঠিয়েছে সেই বিশ্বাসের কি দারুন মর্যাদা দিয়েছিস! হ্যাটস অফ টু ইউ!
চলে গেলো কেয়া। তার দিকে তাকাতে পারল না রূপা। অর্পি বিস্মিত, ভীত কণ্ঠে বলল,
– তুই কি করেছিস রূপা!

•• •• •• ••

ফাহাদ সিদ্ধান্ত স্থির করেছে। এই সম্পর্ক আর রাখার কোনো মানে হয় না। দীপ্তি নিজেও সুখী নেই, সেও না। তার চেয়ে এটাই ভালো হবে। অন্তত নিত্য অশান্তি থেকে বাঁচা যাবে। বিষয়টা নিয়ে দীপ্তির সাথে কথা বলতে হবে। ভাবলো ফাহাদ। তাদের বড়ো ফেরার আর বেশি দেরি নেই। দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল ফাহাদ। এসেছিল সম্পর্কের মোড় ঘোরানোর জন্য। সেটা ঘুরেছে সত্যি। তবে অন্যদিকে।

ঘুম থেকে উঠে হাঁটতে বেরিয়েছিল সে। ফিরে এসে দীপ্তিকে খুঁজলো। খাবার খাওয়া দরকার। কিন্তু দীপ্তি ঘরে নেই। ওয়াশরুম থেকে আওয়াজ আসতেই সেদিকে গেলো ফাহাদ। দরজা আধখোলা। দীপ্তি র আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। সে বমি করছে। ছুটে গেলো ফাহাদ। যাচ্ছে যেতেই তার চোখ যেনো কপাল ছুলো। দীপ্তি র বমির অধিকাংশ র-ক্ত। ক্রমেই নেতিয়ে পড়ছে সে। এক পর্যায়ে পড়ে যেতে নিলেই তাকে দ্রুত আঁকড়ে ধরলো ফাহাদ। চিৎকার করলো,
– দীপ্তি!

রূপা এবং ফাহাদরা একই হোটেলে উঠেছিল। ফলে ফাহাদ যখন হোটেল ম্যানেজারের কাছে সমস্যা বলে সাহায্য চাইলো তখন ম্যানেজার এই দলের কথা তাকে জানালো। ফাহাদের অনুরোধে কয়েকজন ইন্টার্ন ডক্টর দীপ্তিকে দেখলো। ইতোমধ্যেই খবর শুনে কয়েকজন হাজির হয়েছে। রূপা, কেয়া, অর্পিও সেখানে আছে। তবে হিমেলকে দেখা গেলো না। পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ছেলেটা বলল,
– কিছু টেস্ট করতে হবে ভাই। এবং এক্ষুনি। এখানকার হাসপাতালে ব্যবস্থা কি আমি জানিনা। তাই পরামর্শ দিবো সরাসরি ঢাকায় চলে যান। ইটস ইমারজেন্সি।
পরক্ষণেই হোটেল ম্যানেজারের দিকে তাকিয়ে বলল,
– আপনি কি একটা অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন?
– জি অবশ্যই।
– তাহলে দ্রুত সেটাই করুন। পথটুকু আমি যাচ্ছি আপনাদের সাথে।
– আমিও যাবো।
কেয়া এগিয়ে এলো। দীপ্তির কথা শুনে তার একটা ভয়ঙ্কর ধারণা হয়েছে। সেটা কতটুকু সত্য টেস্ট করেই বলা যাবে।
– চলো। একজন সাথে থাকলে ভালো হবে।
– আমিও যেতে চাই।
এখানে থাকতে ভালো লাগছিল না রূপার। ক্রমেই যেনো দমবন্ধ হয়ে আসছিল। আগে পিছে না ভেবে বলে ফেললো সে। এর থেকে এই ভালো হবে, রোগীর সাথে ঢাকায় চলে যাবে। বাসাও তো সেখানেই। সে ভাবলো না তার “জীবনসঙ্গী” কোথায়, তার মতামত কি।
রূপার কথায়ও কেয়া তার দিকে তাকালো না। তবে ছেলেটা যথেষ্ট বিস্মিত হলো। কারণ গতকাল বিয়েতে উপস্থিত না থাকলেও রূপা এবং হিমেলের বিয়ে যে হয়েছে সেটা সে জানে।
– যাবে? চলো তাহলে। আর কারো যাওয়ার দরকার নেই। বাকিরা টিমের সাথে ফেরত এসো।

অ্যাম্বুলেন্সে উঠে দীপ্তির হাত ধরে রাখলো ফাহাদ। যেই মানুষটার সাথে বিচ্ছেদের চিন্তা করছিলো সেই মানুষটারই এমন অবস্থা যেনো তাকে ভেতর থেকে নাড়িয়ে দিয়েছে।

রূপা ফাহাদের ধরে থাকা হাতের দিকে তাকিয়ে রইলো। কি ভরসা সেই বন্ধনে!

চলমান।