#রেড_রোজ
পার্ট [১৬](ক্র্যাজিনেস)
#লেখিকা_ফারহানা_নিঝুম
(কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ)
(কঠোর ভাবে প্রাপ্ত বয়স্ক এবং মুক্তমনাদের জন্য উ’ন্মুক্ত।)
সফট্ মিউজিক বাজছে, কাপল ডান্স হচ্ছে। জিসান কিয়ৎক্ষণ আগেই কেয়া কে নক করে বলেছে দ্রুত বাড়িতে আসতে চায়নি। জিসান অনেক বুঝিয়ে বলেছে সারপ্রাইজ আছে তাড়াতাড়ি আসতে।
সবাই অপেক্ষা করছে বার্থ ডে গার্লের জন্য। জিসান ঐশ্বর্যের কাছে এগিয়ে গেলো, ঐশ্বর্য মিনিবারে বসে সফট ড্রিংকস খাচ্ছে।
“রিক মিস বাংলাদেশী কোথায়?”
ঐশ্বর্য গ্লাসে চুমুক দিয়ে বলে।
“রেডি হচ্ছে মনে হয়।”
কথাটা বলে সিঁড়ির দিকে চোখ গেলো ঐশ্বর্যের। উৎসা কে নামতে দেখে জিসান কে বললো।
“ডিম লাইট ওদিকে দিতে বল।”
জিসান ডেভিড কে ইশারা করলো।এই লোকটি পুরো ফাংশান অ্যারেঞ্জ করেছে। জিসানের কথা অনুযায়ী সিঁড়ির দিকে আলো ফেলতেই চোখ মুখ খিঁচিয়ে বন্ধ করে নেয় উৎসা।
ঐশ্বর্য মূহুর্তে থমকে গেলো, তার গলা শুকিয়ে আসছে। তাকিয়ে আছে উৎসার পানে, সিল্ক লাল রঙের শাড়িতে নিজেকে আবৃত করেছে উৎসা।হাতে লাল চুড়ি, চোখের প্রথমাংশ থেকে শেষ প্রান্ত পর্যন্ত কাজল টেনে দেওয়া। কপালের ঠিক মাঝখানে টিপ দিয়েছে,উৎসার ধ’নুকের ন্যায় তুলতুলে নরম শরীর টা নজর কা’ড়তে সক্ষম। ঐশ্বর্য যেনো শ্বাস নিতেই ভুলে গিয়েছে।
উৎসা বোকা বোকা চাহনিতে আশেপাশে দেখলো। জিসান আর ঐশ্বর্য কে দেখে ভুবন ভোলানো হাসি হাসলো।হাসিটা এসে বুকে লাগলো ঐশ্বর্যের,সে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়। ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে বাঁ’কা হাসলো,এই মেয়ে ছ’লনাময়ী। না হলে কখনো গাউন কখনো সালোয়ার কামিজ আর এখন শাড়িতে উ’ন্মা’দ করতো?
ঐশ্বর্য রাগলো, ডান হাতে সিল্কি চুল গুলো পিছনে ঠেলে দেয়। মনে মনে বলে।
“গ্রেট রেডি রেড রোজ ইউ হ্যাভ টু সাফার এক্সট্রা।”
উৎসা গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গেলো জিসানের দিকে।
“বাহ্ মিস বাংলাদেশী দারুণ তো!এই ড্রেসটার নাম যেনো কী?”
ঐশ্বর্য মাঝখান থেকে বলে উঠে।
“ছাড়ি!
উৎসা শাড়ির এমন বি’ব্রতকর অবস্থায় হেসে দেয়।
“না না ছাড়ি না শাড়ি।”
“ইয়া হোয়াট অ্যাভার!”
পাঁচ মিনিটের মাঝে কেয়া চলে এলো, মনে তার বিষন্নতা। এমন ফ্রেন্ড চাই না তার। কেউ তার বার্থ ডে মনে রাখেনি।
আচমকা কেয়ার চোখে পট্টি বেঁধে দিলো কেউ।
“আরেহ কে?”
“আমি।”
“জিসান হোয়াট দ্যা হেল ইজ দিস?ছাড় বলছি।”
“নো ছাড়াছাড়ি।”
ঐশ্বর্যের কন্ঠস্বর শুনে কেয়া বলে।
“রিক তুইও?হোয়াট হ্যাপেনিং গাইজ?”
ঐশ্বর্য জিসান কিছুই বললো না,কেয়া কে টেনে ভেতরে নিয়ে গিয়ে টেবিলের সামনে দাঁড় করিয়ে চিৎকার করে বলল।
“ওয়ান টু থ্রি হ্যাপি বার্থডে।”
জিসান তৎক্ষণাৎ চোখ খুলে দেয়।এত সব অ্যারেঞ্জমেন্ট দেখে কেয়া কথা বলতেই ভুলে যায়।
“ওয়াও,,,
জিসান ঐশ্বর্যের বাহুতে কাত হয়ে বলে।
“হ্যাপি বার্থডে ফ্লা’র্টিং বা’জ।”
কেয়া ফিক করে হেসে উঠলো, জিসান আর ঐশ্বর্য কে দু হাতে জড়িয়ে ধরে।
“টু মাচ ইয়ার,ইউ আর নট গুড অ্যাট অল।তোরা একটুও ভালো না।”
উৎসা একটা সুন্দর ফুলের বুকে কেয়ার হাতে দিলো।
“হ্যাপি বার্থডে কেয়া আপু।”
কেয়া উৎসা কে দেখে রিতিমত তম্বা খেয়ে গেলো।
“ওয়াও কিউট গার্ল ইউ লুকিং সো প্রীটি!”
উৎসা মৃদু হাসলো।
“তুমিও সুন্দর দেখতে।”
কেয়া কেক কা’টলো,একে একে সবাই কে খাওয়ায়। সেলফি তুলতে ভুলে না সে।উৎসা কেয়ার সঙ্গে কি কথা বলে খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো।কেয়া উৎসার একা কয়েকটা ছবি তুললো, ঐশ্বর্য এসে উৎসার হাত টেনে পাশে নিয়ে যায়।
“কী হয়েছে?”
উৎসা সহজ প্রশ্ন করে, ঐশ্বর্য উৎসা কে মাথা থেকে পা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে বলে।
“ইউ আর লুক লাইক অ্যা রেড রোজ।”
উৎসা ঠোঁট কা’ম’ড়ে ধরে।এই লোকটা মাঝে মাঝে উৎসা কে রেড রোজ বলেই ডাকে।
“ধনেপাতা।”
“হোয়াট?”
ভ্রু কুঁচকে নেয় ঐশ্বর্য,উৎসা ফিক করে হেসে উঠলো।
“থ্যাংক ইউ।”
ঐশ্বর্য উৎসার মুখ পানে কিছুটা ঝুঁকে বলে।
“এভাবে থ্যাংকস তো নেবো না!”
উৎসা বুঝলো না।
“তাহলে?”
ঐশ্বর্য দুষ্টু হাসলো।
“ওয়েট এন্ড ওয়াচ।”
জিসান ঐশ্বর্য কে ডেকে বললো।
“রিক ইটস্ ইওর টার্ন।”
ঐশ্বর্যের দিকে গিটার ছুড়ে দিলো জিসান, ঐশ্বর্য ক্যাচ করে।
সে সুর তুলে।
Every night in my dreams
I see you,I feel you
That is how I know you go on
Far across the distance
And spaces between us
You have come to show you go on
Near,far, Wherever you are
I believe that the heart does on
Once more, you open the door
And you’re here in my heart
And my heart will go on and on
Love can touch us one time
And last for a lifetime
And never let go ‘Till We’re gone
Love was when I loved you
One true time I’d hold to
In my life, we’ll all always go on
Near,far, Wherever you are
I believe that the heart does on
Once more, you open the door
And you’re here in my heart
And my heart will go on and on
উৎসা ভ্রু কুঁচকে নেয়,কী অদ্ভুত! এইরকম সময়ে একটা সুন্দর রোমান্টিক হিন্দি গান শুনলে কত ভালো লাগতো! কিন্তু এখানে ইংলিশ গান? উফ্ সত্যি বিরক্তিকর।
___________________
এখন রাত আড়াইটার কাছাকাছি রুমে ক্লান্ত হয়ে রুমের দিকে এগুতে লাগলো উৎসা।পা দুটো যেনো অসাড় হয়ে আসছে তার,ভার শরীর টা টেনে কোনো রকমে উপরে নিয়ে যাচ্ছে। তৎক্ষণাৎ হাতে টান পড়তেই ভড়কে গেলো উৎসা।
মৃদু স্বরে আ’র্ত’না’দ করে।
“আহ্।”
রুমে ঢুকিয়ে ডোর লক করে দেয় ঐশ্বর্য।উৎসা ঐশ্বর্য কে দেখে ভীত নয়নে তাকালো। ঐশ্বর্যের চুল গুলো এলোমেলো, শার্টের উপরের দুটি রুম খোলা আছে।চোখে মুখে কা’মনা ফুটে উঠছে, স্পষ্ট কাছে আসার কাতরতা।
“আআপনি এখানে কেন ননিয়ে এলেন?”
উৎসা কাঁপা কাঁপা কন্ঠে শুধায়। ঐশ্বর্য এক কদম দু কদম এগিয়ে আসছে।উৎসা সেই মাপ অনুযায়ী পিছিয়ে যাচ্ছে,ভেতর তার অজানা আ’ত’ঙ্কে কাঁপছে।
ঐশ্বর্য এগিয়ে গিয়ে উৎসা কে জাপটে জড়িয়ে ধরে।
উৎসা স্তম্ভ!
“এটা কি করছেন? প্লিজ ছাড়ুন।”
ঐশ্বর্য শুনলো কী না তা জানা নেই,সে বিড়বিড় করে আওড়াল।
“একটু জড়িয়ে থাকি? ভালো লাগছে না উৎসা ।”
উৎসা কাঁপছে, ঐশ্বর্য কে ছাড়াতে বলে।
“না না , আমার ভালো লাগে না আপনাকে।”
“উঁহু, ঠিক তো। সত্যি শুধু জড়িয়ে থাকব।”
উৎসার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে, ঠোঁট দুটো তীর তীর করে কাঁপছে। ঐশ্বর্যের বুকে উষ্ণতার ছোঁয়া পাচ্ছে সে, কিন্তু সেটা সাময়িক সময়ের জন্য।
“প্লিজ ছাড়ুন আমায়, আমার এসব ভালো লাগে না।”
ঐশ্বর্য পিছন ঘুরে উৎসা কে দু হাতে চেপে ধরে।ঘাড়ে ওষ্ঠা ছুঁয়ে বলে।
“রেড রোজ ট্রাস্ট মি ইউ আর লুকিং সো প্রীটি, তোমাকে যে কেউ দেখলে ভালোবেসে ফেলবে।”
উৎসা ফুঁপিয়ে উঠে।
“কিন্তু আপনি আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। আমার আপনাকে ভয় লাগে।”
ঐশ্বর্যের উ’ন্ম’ত্ত হয়ে উঠেছে উৎসার মাঝে।এক সময় ঐশ্বর্যের হাতের বাঁধন দৃঢ় হয়। ঐশ্বর্য খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে উৎসা কে। উৎসা শব্দ করে কেঁদে দেয়।
“ঐশ্বর্য চৌধুরী আপনি ভালো না, আমি আপনার সাথে থাকব না।”
উৎসা ঐশ্বর্য কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ঐশ্বর্য আরো শক্ত করে চেপে ধরে ঘাড়ে নাক ঘষে লম্বা একটা নিঃশ্বাস টেনে নেয়।
আচমকা ঐশ্বর্য সরে এলো, নিজের চুল খামচে ধরলো সে।
“ওহ্ শিট শিট।”
ঐশ্বর্য পাগলের মতো হয়ে উঠে,উৎসার থেকে দূরে সরে গেল । ঐশ্বর্যের পাগলামি দেখে ভয়ে জড়সড় হয়ে গেছে উৎসা।
ঐশ্বর্য ঘাড় ঘুরিয়ে উৎসা কে দেখে ফের ওর কাছে এলো।
“সুইটহার্ট ডোন্ট ক্রাই প্লিজ!জান কাঁদে না তো।”
ঐশ্বর্য উৎসা কে টেনে কাউচের উপর বসালো।ওর হাত নিজের বলিষ্ঠ হাতের মুঠোয় নিয়ে ফের অস্থির কন্ঠে বলে।
“প্লিজ সোনা কাঁদে না, অ্যাম স্যরি। ডোন্ট ওয়ারি আর ছুঁবো না। প্লিজ ডোন্ট ক্রাই সুইটহার্ট।”
উৎসার কান্না থামছে না, ঐশ্বর্য কেমন করছে তা ভয়ের কারণ হচ্ছে উৎসার।
“আআমি রুম যাবো।”
ঐশ্বর্য পিটপিট চোখ করে তাকালো কী যেনো ভাবলো,চট করে উঠে গিয়ে লাইট অফ করে বিছানায় এসে বসলো।উৎসার হাত টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে।
“কী করছেন ছাড়ুন প্লিজ।”
ঐশ্বর্য শুনলো না,উৎসা কে বুকে চেপে ধরে শুয়ে পড়ে।উৎসা প্রাণপণ চেষ্টা করলো নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার, কিন্তু পারলো না।
ঐশ্বর্য নিজের চওড়া বুকে উৎসার ছোট্ট দেহটাকে চেপে ধরে, ওর মাথায় আদুরে হাত বুলিয়ে দেয়।উৎসা এক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়ে,চোখ ভর্তি ঘুম হা’না দিলো। ঐশ্বর্যের বুকে খানিকটা উষ্ণতা অনুভব করছে সে।
ঐশ্বর্য অস্পষ্ট স্বরে বলল।
” আই অ্যাম স্যরি সুইটহার্ট। তুমি কাছে থাকলে অনেক টা শান্তি অনুভব করি। আমার সাথে থেকো সবসময়, প্লিজ।”
ঐশ্বর্য উঁকি দিয়ে দেখলো উৎসা অলরেডি ঘুমিয়ে গিয়েছে। ঐশ্বর্য মৃদু হাসলো, আলতো ভাবে উৎসা কে বিছানায় শুয়ে দিয়ে চাদর টেনে দেয়।রুম থেকে বেরিয়ে গেল ঐশ্বর্য,উৎসা চায় না সে তার সঙ্গে থাকুক। যেদিন উৎসা ঐশ্বর্যের কাছাকাছি আসবে, সেদিন ঐশ্বর্য উৎসার মাঝে নিজেকে খুঁজে নেবে।
চলবে……………।✨