শিশির ভেজা রোদ্দুর পর্ব-১৩+১৪

0
903

#শিশির_ভেজা_রোদ্দুর
#Part_13
#Writer_NOVA

পরেরদিন……

সকাল থেকে আকাশটা আজ ঘন আঁধারে ঢেকে আছে।মনে হচ্ছে এই বুঝি ঝুপঝাপ করে বৃষ্টি নেমে গেলো।তন্বী আজ কলেজে আসেনি।ওর সকালে একটু মাথা ধরেছিলো।সেই ছুতোয় সে আজ কলেজ ফাঁকি দিয়েছে। আমিও দিতে পারতাম কিন্তু মন সায় দিলো না। সামনের এক্সাম তাই একটু পড়াশোনা নিয়ে সিরিয়াস হয়েছি।কলেজ ছুটি হয়েছে আরো মিনিট দশেক ধরে। হেঁটে গেইট পার হতে না হতেই শুরু হলো ঝুম বৃষ্টি।বৃষ্টির তোরজোরে পাশের এক দোকানের ছাউনীর নিচে দাঁড়ালাম। আকাশের এই অবস্থা দেখেও ছাতা আনিনি।ছাতা আনতে আমার ভীষণ বিরক্ত লাগে।বৃষ্টি না হলে ছাতার বোঝা বইতে হয়।তাই আমার কাছে ছাতা নামক বস্তুটা অসহ্যকর।আশেপাশের দোকানগুলোও বন্ধ। এই বৃষ্টিতে রিকশাতো জীবনেও পাওয়া যাবে না। তাই বোর হয়ে বৃষ্টি থামার অপেক্ষা করতে লাগলাম।

♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♥♥♥♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪

ভেবেছিলাম তুমি ছাড়া জীবন চলবে না
সত্যি বলছি তোমায় এখন মনে পরে না
কারো জন্য কারো জীবন থেমে থাকে না
সত্যি বলছি তোমায় এখন মনে পরে না
ভেবেছিলাম তুমি ছাড়া জীবন চলবে না

আমার জায়গায় বসিয়েছো অন্য কাউকে যেমন
তোমার জায়গায়ও দিয়ে দিবো অন্য কাউকে তেমন
কারো জন্য কারো জীবন থেমে থাকে না
ভেবেছিলাম তুমি ছাড়া জীবন চলবে না
সত্যি বলছি তোমায় এখন মনে পরে না

ভাবে না যে আমায় তার কথা কেন ভাববো
যার কাছে প্রেম ছেলেখেলা তার প্রেমে কেন ভাসবো
ভাবে নাযে আমায় নিয়ে তাকে কেন ভাববো
যার কাছে প্রেম ছেলেখেলা তার প্রেমে কেন ভাসবো
কারো জন্য কারো জীবন থেমে থাকে না

ভেবেছিলাম তুমি ছাড়া জীবন চলবে না
সত্যি বলছি তোমায় এখন মনে পরে না
কারো জন্য কারো জীবন থেমে থাকে না
ভেবেছিলাম তুমি ছাড়া জীবন চলবে না

♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♥♥♥♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪

সম্প্রতি জনপ্রিয় হওয়া এই গানটা পাশের কোথাও জোরে বাজছে।আশেপাশে তাকিয়ে সেই উৎস খুঁজতে লাগলাম। একসময় খুঁজেও পেলাম।আমার থেকে ৭-৮ হাত দূরে একটা কলেজ পড়ুয়া ছেলের মোবাইলে গানটা বাজছে।বৃষ্টির বেগ কমে আসায় আর ছেলেটা বেশি একটা দূর না হওয়ায় গানের প্রত্যেকটা শব্দই আমি শুনতে পেয়েছি। অদ্ভুতভাবে এই গানের সাথে আমার জীবনেরও মিল আছে।

পাশ দিয়ে কলেজের একটা ছেলে ও একটা মেয়ে একসাথে এক ছাতার তলে আমাকে সাইড কাটিয়ে চলে গেল। তা দেখে আমার বিষাক্ত অতীত মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো।তার সাথেও দেখা হয়েছিলো আমার এই বৃষ্টির দিনে।একসময় বৃষ্টি খুব পছন্দ থাকলেও এখন প্রচুর বিরক্ত লাগে।বৃষ্টি দেখলেই যে অতীতগুলো চোখে ভাসে।হ্যাঁ,আমিও প্রথম ভালোবাসার সান্নিধ্যে গিয়েছিলাম। কিন্তু কে জানতো সেই ভালোবাসায় আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। কেই বা জানতো আমি এক বৈঈমানকে মন দিয়ে বসে ছিলাম।উপর দিয়ে আমি একটা হাসি-খুশি,প্রাণোচ্ছল মেয়ে। যে কিনা সবাইকে মাতিয়ে রাখে।কিন্তু ভেতরে আমি ব্রোকেন। পুরো ভেঙেচুরে গেছি।কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই। তার খবর কি কেউ রাখে🙂?

তবে একজনের কারণে আমি পুরো পুরুষ জাতিকে দোষারোপ করি না।যদি পুরো পুরুষ জাতিকে দোষারোপ করি তাহলে আমার বাবাকে,তায়াং ভাইয়াকেও দোষারোপ করা হবে।কিন্তু তারা তো আমার নতুন করে বেঁচে থাকার কারণ। হুট করে কেন যে আবার অতীতটা মনে এলো।যেই বিষাক্ত অতীতের কারণে আমি আজ আমার পরিবার থেকে এতদূরে।আমার প্রিয় গ্রাম,প্রিয় পরিবেশ থেকে দূরে।আবার কেন সেই অতীত মনে হচ্ছে আমার।চোখ দুটো টলমল করে উঠলো।

হঠাৎ আমার মুখের সামনে এসে একজন তার ছাতাটা ঝাড়া দিলো।ছাতায় থাকা পানির বিন্দুগুলো আমার মুখে ছিটে আসতেই আমার সম্বিত ফিরলো। সে ছাতাটা ঝাড়া দিয়ে আমাকে বললো,

—কি মিস টিডি পোকা কি এতো ভাবছো? কতক্ষণ ধরে এসে তোমার পাশে এসে দাঁড়িয়ে আছি। তোমাকে কয়েকবার ডাকলাম তাও সাড়া নেই।

নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে দেখলাম এনজিও সংস্থা। অন্য সময় হলে এতক্ষণে ঝগড়া বাঁধিয়ে ফেলতাম।কিন্তু এখন সেই মুডে নেই আমি।আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে এনাজ বললো,

—কি ব্যাপার কথা বলছো না যে?মন খারাপ?

আমি তার দিক থেকে চোখ সরিয়ে ছোট করে উত্তর দিলাম।

—নাহ।

— আমার তো মনে হচ্ছে তোমার মন খারাপ।

—বললাম তো কিছু হয়নি।

—কি হয়েছে আমাকে বলতে পারো!

—আপনার তো ছাতা আছে তাহলে আপনি এখানে কেন এলেন?

—কথা ঘুরিয়ে ফেললে।

—আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি।

—দেখলাম তুমি একা এখানে দাঁড়িয়ে আছো তাই চলে এলাম।

—আপনি হঠাৎ কলেজে?

—কিছু কাগজ তুলতে এসেছিলাম।তাছাড়া একটা কাগজে প্রিন্সিপাল স্যারের একটা সিগনেচার লাগবে।তাই এসেছিলাম।তোমার ছাতা কোথায়?

—আমার ছাতা আনতে ভালো লাগে না।

—এটা কোন কথা হলো?

—হ্যাঁ হলো।

—ত্যাড়ামী করছো?

—বলতে পারেন হ্যাঁ।

—আচ্ছা চলো একসাথে চা খাই।নাকি তাতেও সমস্যা হবে?

—ইচ্ছে করছে না।

—তোমাকে এতটা মনমরা ভালো লাগে না।তোমাকে হাসি-খুশি প্রাণোচ্ছল দেখতে ভালো লাগে। তুমি প্লিজ সবসময় হাসি-খুশি থেকো।

—একটা মানুষ কখনও একরকম থাকতে পারে না।তা কি জানেন আপনি?

—হ্যাঁ জানি।তবে চেষ্টা করলো মানুষ সবই পারে।

—না চেষ্টা করলে পারে না। ভালো থাকার অভিনয় করলে পারে।

—হয়েছে সেসব কথা বাদ দাও এখন।চলো চা খাই।

—আপনার মনে হয় চা অনেক পছন্দ?

—হ্যাঁ অনেক।

আমি কোন উত্তর দিলাম না।গুটি গুটি পায়ে তার সাথে সামনের দিকে যেতে লাগলাম।পাশের ছোট টং দোকানটা পলিথিন দিয়ে আটকে রেখে দোকানী ভেতরে ঘাপটি মেরে বসে আছে। এদিকটায় ততোটা খেয়াল করিনি বলে দেখিনি।ভেতরে গিয়ে একটা বেঞ্চিতে বসলাম আমরা দুজন।দোকানি যখন চায়ের কাপে চামচ নেড়ে সবকিছু মিশ্রিত করছিলো তখন কাপ ও চামচের সাথে লেগে যে টুংটাং শব্দ হচ্ছিলো, আমি মুগ্ধ হয়ে তা শুনছিলাম।নিস্তব্ধ পরিবেশে বৃষ্টি পরার শব্দের সাথে এই টুংটাং শব্দটা আরো বেশি আকর্ষণীয় লাগছিলো।চায়ের কাপ দুটো দোকানী আমাদের দিকে বাড়িয়ে দিলো।আমরা দুজন হাত বাড়িয়ে কাপ দুটো নিয়ে নিলাম।এনাজ চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে আমার দিকে তাকালো।আমি আড় চোখে তা খেয়াল করে বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে চায়ে চুমুক দিলাম।কোন কথা না বলে দুই কাপ চা খেয়ে দুজন বেড়িয়ে পরলাম।ততক্ষণে বৃষ্টিও অনেক কমে গেছে। এনাজ আমাকে বললো,

—এখুনি চলে যাবে?

—হ্যাঁ,রিকশা পেলেই চলে যাবো।

—কিছুখন একসাথে বৃষ্টি উপভোগ করি চলো।

—আমার বিরক্ত লাগে।

—আমার সাথে উপভোগ করো দেখবে ভালো লাগবে।

তার কথার অবাধ্য হতে ইচ্ছে হলো না। তবে বুক চিড়ে একটা দীর্ঘশ্বাস বের হলো।সমান তালে বৃষ্টি বিন্দুগুলো ঝড়ে পরছে পিচঢালা রাস্তার ওপর।সেদিকে দুজনের দৃষ্টি। এনাজ আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে গলা ঝেড়ে বললো,

—একটা প্রশ্ন করি?

—হুম করেন।

—তোমার কাছে ভালোবাসা মানে কি?

তার এই অদ্ভুত প্রশ্ন শুনে আমি তার দিকে তাকালাম। তাকাতেই চোখাচোখি হয়ে গেলো।তার চোখের দিকে তাকিয়ে ভেতরে ভেতরে কেঁপে উঠলাম।চাহনিটা ঘায়েল করে দিবে আমায়।কিন্তু আমি তো ঘায়েল হতে চাই না।দ্রুত চোখ নামিয়ে নিচু স্বরে বললাম,

—-ভালোবাসার তো অনেক উদাহরণ আছে।কোনটা দিবো?

—তোমার যেটা ইচ্ছা।

—ভালোবাসা হলো একটা রাবার ব্যান্ডের মতো।যার দুপাশে দুজন ধরে থাকে।যদি কেউ একজন একপাশ থেকে ছেড়ে দেয় তাহলে অবশ্যই অপরপাশের জন আঘাত পাবে।যাকে আপনি ভালোবেসেছেন তাকে আঘাত দেয়া আর নিজের সাথে প্রতারণা করা দুটোই সমান।

সত্যিই ভালোবাসা রাবার ব্যান্ডের মতো।নয়তো সে একপাশ ছেড়ে দিলে আমিতো আঘাত পেতাম না।তবে এক হিসেবে মনের ভেতর একটু শান্তি লাগে।আমাকে আঘাত দিয়ে সে নিজের সাথে প্রতারণা করেছে। আবার মাঝে মাঝে বুকটা কেঁপে উঠে।আসলেই কি সে আমায় ভালোবেসেছিল? যদি ভালোবাসতো তাহলে তো এতবড় ধোকাটা দিতে পারতো না।এই উত্তরগুলো আমার জানা নেই। বরং উত্তর খুঁজতে গেলে আমি পাগল হয়ে যায়।বৈঈমান মানুষটার ওপর ঘৃণা হয়।

এনাজের কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে তার দিকে তাকালাম।তাকিয়ে দেখি সে মুচকি হাসছে।নিশ্চয়ই আমার কথা শুনে হাসলো।তাকে হাসতে দেখে আমি জিজ্ঞেস করলাম,

—কি ব্যাপার হাসছেন যে?আমি কি কোন ভুল উত্তর দিয়েছি?

এনাজ আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,

—না,তুমি ঠিক বলেছো।তুমি এখানে দাঁড়াও, আমি পাশের রিকশার গ্যারেজ থেকে আমার বাইকটা নিয়ে আসি।বৃষ্টি শুরু হচ্ছিলো বলে সেখানে রেখে এসেছিলাম।

আমি দ্রুত চোখ নামিয়ে মাথা নেড়ে সায় দিলাম।
এই ছেলের চোখের দিকে তাকালে আমার ভেতরটা তোলপাড় শুরু করে দেয়।হৃৎপিণ্ডটা অনবরত লাফাতে থাকে।তখন ইচ্ছে করে হৃৎপিণ্ডটাকে খপ করে ধরে বন্দী করে রাখি।তাহলে হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে। এনাজ কিছুটা পথ যেয়ে পেছনে তাকিয়ে আমাকে বললো,

–তোমাকে বাড়িতে পৌঁছে দিবো।তোমার কোন সমস্যা নেই তো?

এখন রিকশা পাওয়া সম্ভব নয়।তাই আমি আর কোন ভনিতা করলাম না।ডানে বামে মাথা নাড়িয়ে না বললাম।এনাজ মুচকি হেসে বাইক নিয়ে আসতে গেলো।বাইক নিয়ে মিনিট তিনের মধ্যে চলে এলো।ছাতাটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো,

—বাইকে উঠে বসো।আর উঠে দয়া করে ছাতাটা মেলে নিয়ো।গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পরছে এখনো।তোমার তো আবার বৃষ্টির পানিতে এলার্জি। এতটুকু বৃষ্টির পানি মাথায় পরলে মাথাব্যথা উঠে যাবে।

আমি চমকে চোখ দুটো বড় বড় করে তার দিকে তাকালাম।এনাজ বাইকের আয়নার দিকে তাকিয়ে এক হাতে মাথা ঝাড়তে ঝাড়তে আমাকে বললো,

—এতো অবাক হওয়ার কিছু নেই। তায়াং-এর থেকে এসব জেনেছি।

আমি স্বাভাবিক হয়ে বাইকে উঠে গেলাম।একহাতে এনাজের কাঁধে আলতো করে হাত রেখে আরেক হাতে ছাতা মেলে ধরলাম।এনাজ সামান্য ঘাড় ঘুরিয়ে বললো,

—শক্ত করে ধরে বসো।

—হু বসেছি।

আমার উত্তর শুনে এনাজ সামনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বাইক স্টার্ট দিলো।বাইক শো শো গতিতে ছুটে চললো বাসার উদ্দেশ্য। মিনিট দশকের মধ্যে আমরা বাসায় চলে এলাম।এনাজ বাইক থেকে নেমে আমাকে ছাতা দিয়ে ভেতর অব্দি পৌঁছে দিলো।আমি মানা করেছিলাম কিন্তু শোনেনি।এক ছাতার নিচে দুজন পাশাপাশি হাঁটার সময় আমার ভীষণ অস্বস্তি লাগছিলো।যার কারণে তাকে বিদায় না জানিয়ে আমি দ্রুত রুমে চলে এলাম।বারান্দায় দাঁড়িয়ে উঁকি মেরে দেখলাম এনাজ ছাতা মাথায় ধীর পায়ে বাইকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আমার জীবনে আবারো একি ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে চলছে!!!

#চলবে

#শিশির_ভেজা_রোদ্দুর
#Part_14
#Writer_NOVA

— নোভা,এই নোভা যাবি আমাদের সাথে?যদি যেতে চাস তাহলে জলদী উঠ।

সবেমাত্র চোখ দুটো লেগে এসেছিলো তারমধ্য তায়াং ভাইয়া ডাকাডাকি শুরু করেছে।বিরক্তি সহকারে কপালের উপর থেকে হাতটা সরিয়ে চোখ পাকিয়ে তায়াং ভাইয়ার দিকে তাকালাম।মেজাজ আমার অলরেডি বিগড়ে গেছে। আমার চাহনিতে তায়াং ভাইয়া একটুও ভ্রুক্ষেপ করলো না।বরং আবারো তাড়া দিয়ে বললো,

—ঘুমিয়ে গিয়েছিলি?কখন থেকে ডাকছি।

এবার যেনো মেজাজটা আরো বেশি চড়া হলো।বাঙালি কখনও কোনকিছু সহজে বিশ্বাস করে না।ঘুম থেকে জাগিয়ে জিজ্ঞেস করে ঘুমিয়ে গেছি নাকি।যদি আপনি ঘুম থেকে উঠে বলেন, “ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম কেন ডাকলে?” তাহলে বিশ্বাস করবে।এখন আমার ইচ্ছে করছে তায়াং ভাইয়ার মাথায় যদি শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করতে পারতাম তাহলে মনটা শান্তি হতো।রাগ না দেখিয়ে শান্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করলাম,

—কি হয়েছে ভাইয়া?এতো ডাকাডাকি কেন করছিস?আমি যে ঘুমিয়ে পরেছি তা কি তোর চোখে পরেনি?

তায়াং ভাইয়া মুচকি হেসে বললো,
—এত তাড়াতাড়ি ঘুমাতে হবে না। মাত্র আটটা বাজে।এখন ঘুমিয়ে সারারাত মোবাইল নিয়ে পরে থাকলে কপালে মার আছে। তারচেয়ে চল বাইরে থেকে ঘুরে আসি।তোর ফেভারিট ফুচকাও খাইয়ে আনবো।

ভাইয়ার কথা শুনে চোখ দুটো আমার রসগোল্লা হয়ে গেলো।এটা আমার ভাই তো?আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। ওকে এতদিন খুচিয়ে খুঁচিয়েও রাতের বেলা বাইরে নিয়ে যেতে পারতাম না।কত বলেছি চল ভাইয়া ফুচকা খেতে যাবো।কিন্তু ভাইয়া রাজী হতো না।সেখানে ও নিজে এসে বলছে বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাবে।আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। নিশ্চয়ই আমি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছি।চোখ দুটো বড় বড় রেখেই আমি বললাম,

—ভাইয়া আমি সিউর এখন আমি স্বপ্ন দেখছি।তুই এসব কথা কখনও বলতেই পারিস না।আমি আগে নিজেকে চিমটি কেটে দেখি।আমি বাস্তবে আছি নাকি স্বপ্নে। তুই নিজে এসে এসব কথা বলছিস।আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।

কথাটা বলে নিজের গায়ে একটা ছোট করে চিমটি কাটলাম।ব্যাথা পেয়ে আগের থেকে দ্বিগুণ চোখ বড় বড় করে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।আমি বাস্তবে আছি। তায়াং ভাইয়া আমার মাথায় মৃদু চাপর মেরে বললো,
—যেতে চাইলে জলদী রেডি হো।নয়তো তোদের দুটোকে রেখেই আমরা চলে যাবো।

—কে কে যাবো তায়াং ভাইয়া?

—তুই, আমি, তন্বী আর এনাজ।

—এনজিও সংস্থাও আমাদের সাথে যাবে?

—কি?এনজিও সংস্থা কে?

—মানে তোর বন্ধু এনাজও আমাদের সাথে যাবে?

—হ্যাঁ যাবে।কেন তোর কোন সমস্যা?

এনাজ আমাদের সাথে যাবে এই কথাটা শুনতেই আচমকা আমার ভেতরটা চমকে উঠলো। শ্বাস-প্রশ্বাসও ভারী হয়ে উঠলো।এই ছেলেটার কথা শুনলে ইদানীং আমার কি জানি হয়।আমার মনে হয় আমি নিজের মধ্যে থাকি না।কিরকম একটা অস্বস্তিকর ফিলিংস হয়।কোথায় অন্য কারোর সময় তো হয় না।আমাকে ভাবনায় বিভোর দেখে তায়াং ভাইয়া আমার চোখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

—কি রে কোথায় হারিয়ে গেলি?এনাজ গেলে কি তোর কোন সমস্যা?

—না না আমার সমস্যা হবে কেন?

—তাহলে এখন আর কথা বলিস না।যেতে চাইলে দশ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে ড্রয়িংরুমে চলে আয়।নয়তো দুটোকে ফেলেই চলে যাবো।মনে রাখিস সময় কিন্তু মাত্র দশ মিনিট।আর হ্যাঁ বোরকা পরবি, হিজাব বাঁধবি।এই দুটো করতে দশ মিনিটের বেশি লাগে না।

তায়াং ভাইয়া চলে গেলো।আমি নিষ্পলক চোখে তায়াং ভাইয়ার যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলাম।কি করে বলবো যে তার বন্ধুর আশেপাশে থাকলে আমার হার্টবিট বেড়ে যায়।আমি কোথায় জানি হারিয়ে যাই।কিন্তু আমি তো চাই না আর কারো মাঝে হারাতে।একবার ধাক্কা সামলিয়ে নিজেকে দাঁড়া করাতে পেরেছি। কিন্তু দ্বিতীয় বার তো পারবো না।

—নোভাপু,কি কালার হিজাব বাঁধবা?আমি কিন্তু মিষ্টি কালারটা পরবো,তুমি?

তন্বী রুমে ঢুকে আলমারি খুলতে খুলতে আমার দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো।আমি ওর দিকে কিছু সময় বোকার মতো তাকিয়ে রইলাম।আসলে আমি এতটাই ভাবনায় বিভোর ছিলাম যে ওর কথা মাথায় ঢুকেনি।কয়েক মিনিট পর ওর কথা বুঝতে পারলাম।নিচু স্বরে ওকে বললাম,

—আকাশি রঙের হিজাবটা বের কর।সাথে কালো বোরকাটা।যেটার নিচে শাড়ির পারের মতো কাজ আছে সেই কালো বোরকটা।

—আচ্ছা। আমি তাহলে চিকন পার ওয়ালা কালো বোরকাটা পরি।

—তন্বী ঘটনা কি রে?

তন্বী চোখ, মুখ কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

—কিসের ঘটনা?

—তায়াং ভাইয়া হঠাৎ আমাদের নিয়ে বাইরে ফুচকা খেতে নিয়ে যাবে।তাও রাত আটটা বাজে। আমিতো প্রথমে শুনেই অবাক।আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না। এটা আমাদের তায়াং ভাইয়াতো?

—আমিও প্রথম অবাক হয়েছি।কিন্তু দুই দিন ধরে তোমার মন খারাপ। বৃষ্টির দিনও নাকি তোমার মন অনেক খারাপ ছিলো।সেটা এনাজ ভাইয়া এসে আমাদের ভাইয়াকে বলেছে।তারপর থেকে তুমি অনেক চুপচাপ থাকো।তাই আমাদের নিয়ে ঘুরতে বের হবে।দিনে তো ভাইয়া সময় পায় না।তাই রাতের বেলা যাবে।

—তুই এতকিছু জানলি কি করে?

—বারে, আমার সামনে বসে তারা আলাপ আলোচনা করলো।আর আমি জানবো না।

—ওহ আচ্ছা। জলদী রেডী হো।অলরেডি পাঁচ মিনিট চলে গেছে।

তন্বীকে তাড়া দিয়ে আমিও তৈরি হতে চলে গেলাম।না চাইতেও মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো।ভাইটার আমাদের সবদিকে নজর।সেই বৃষ্টির দিনের ঘটনার পর আজ দুদিন কেটে গেছে। এই দুইদিন আমি সত্যি অনেক চুপচাপ ছিলাম।সেটাও ভাইয়ার চোখে পরে গেছে। নিজের মনে হাসতে হাসতে তৈরি হতে চলে গেলাম।

💖💖💖

ফুচকার স্টলে মুখোমুখি বসে আছি আমরা।আমার ভীষণ অস্বস্তি লাগছে।আমার বরাবর এনজিও সংস্থা বসেছে।তন্বীর বরাবর তায়াং ভাইয়া। আমরা এখন যেই ফুচকার স্টলে বসে আছি সেটা এই বাজারে সবচেয়ে বড় ফুচকার স্টল।আমাদের মতো অনেকেই এখানে রাতের বেলা ফুচকা খেতে এসেছে। তায়াং ভাইয়া ও এনাজ দুজন মোবাইলে ডুবে আছে। আমি ও তন্বী একবার ওদের মুখের দিকে তাকাই।আরেকবার নিজেদের দিকে তাকাই।নিজেদের অসহায় শিশু মনে হচ্ছে। আমাদের পাশের টেবিলে ছয়জন ছেলে বসে আড্ডা দিচ্ছে। সারা স্টল ওরাই তুলে ফেলেছে। ওদের দেখে আমার পুরনো কথাগুলো মনে পরে গেলো।আমরা সব ফ্রেন্ডরা কখনও কফিশপে,ফাস্টফুডে কিংবা ফুচকার স্টলে গেলে এমন করতাম।এখন কারো সাথে তেমন যোগাযোগ হয় না।শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে এসব ভাবছিলাম। তখুনি ঐ টেবিলের চিকনা দেখতে একটা ছেলে আমার দিকে তাকিয়ে এক চোখ মারলো।আমার রাগ হলো।কিন্তু কিছু না বলে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।তন্বী আমাকে ফিসফিস করে বললো,

—দেখো তো আপু এরা কি শুরু করেছে?অসহ্য লাগছে।

—কাদের কথা বলছিস?

—ঐ যে পাশের টেবিলের স্টপিডদের কথা বলছি।নূন্যতম ম্যানারও নেই। কি অবস্থা শুরু করছে?টেবিল থাপড়িয়ে বোধহয় আজ আর কিছু রাখবে না।একটু আগে ঐ চিকনা কালো চেক শার্ট পরা ছেলেটা আমাকে চোখ মারলো।এগুলো কি সহ্য করা যায় বলো।

—ঐ চিকনাটা আমাকেও চোখ মারছে।শুধু পারিনি উঠে গিয়ে গাল দুটো লাল করতে।ভাইয়াকে কিছু বলিস না। তাহলে এখানে অনেক বড় ঝামেলা হয়ে যাবে। সেবার যে আমাদের একটা ছেলে টিজ করেছিলো বলে ছেলেটাকে সারা কলেজের সামনে বেল্ট দিয়ে পিটিয়েছিলো। তোর মনে আছে?

—সে কথা কি ভুলতে পারি? তারপর অনেক দিন আমি ভাইয়াকে যা ভয় পাইছি।তবে ভাইয়ার থেকে কিন্তু এনাজ ভাইয়া আরো বেশি রাগী।

তন্বীর কথা শুনে চোখ দুটো বড় করে বললাম,
—বলিস কি? কিন্তু এই ছেলেকে তো মনে হয় ভাজা মাছ উল্টে খেতে পারে না।

—এনাজ ভাইয়া খুব ঠান্ডা মানুষ। সহজে রাগে না।কিন্তু রেগে গেলে রক্ষা নেই। একবার এক ছেলেকে এমন মার মেরেছিলো যে ছেলেটাকে হসপিটালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করতে হয়েছে।

—কেন মেরেছিলো?

—ছেলেটা একটা মেয়ের ওড়না ধরে টান দিয়েছিলো।

—তাহলে একদম ঠিক করেছে।

আমাদের ফুসুরফাসুর করতে শুনে তায়াং ভাইয়া মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করলো,

—ফিসফিস করে কি বলছিস? এতো কথা আমদানি করিস কোথা থেকে? সারাক্ষণ শুধু মুখ চলতেই থাকে।

তায়াং ভাইয়ার কথা শুনে আমি মুখ ভেংচি কেটে বললাম,

—তোরা যেমন সারাক্ষণ মোবাইলের ভেতর ঢুকে যেতে পারিস তেমনি আমরাও কথা বলতে পারি।

এনাজ মোবাইলের থেকে মুখ উঠিয়ে শান্ত চোখে আমার দিকে তাকালো।তার চোখে চোখ পরতেই বুকটা ধুক করে উঠলো।আমি দ্রুত চোখ নামিয়ে ফেললাম।এর চাহনিতে যে আমি ঘায়েল হয়ে যাই তা কি এই ছেলে জানে না।এনাজ মোবাইলটা পকেটে রেখে তায়াং ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলো,

—কি রে কতক্ষণ লাগে?এরা কি আজ আমাদের কিছু দিবে না?

তন্বী কপাল কুঁচকে বললো,
—আপনারাও ফুচকা খাবেন নাকি?

তায়াং ভাইয়া বললো,
—তোরা খাবি আর আমরা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবো নাকি?

—তোরা তো খাস না ভাইয়া।তাই জিজ্ঞেস করছি।তাই বলে এভাবে উত্তর দিবি।

আমি মুখ টিপে হেসে বললাম,
—ভালোই হয়েছে তন্বী।ওরাও আমাদের সাথে অর্ডার করেছে।নয়তো দেখা যেতো আমরা খেতাম আর ওরা তাকিয়ে থাকতো।তারপর ওদের নজরে আমাদের পেট ব্যাথা শুরু হয়ে যেতো।

তায়াং ভাইয়া আমার কথা শুনে বললো,
—অনেকদিন ধরে তুই আমার হাতে মার খাস না নোভা।নিয়মিত কয়েক ডোজ দিলে তুই ঠিক হয়ে যাবি।

—ইস,এত সোজা নাকি? গায়ে হাত তুলে দেখিস, হাত ভেঙে আরেক হাতে ধরিয়ে দিবো।

এনাজ গলা ঝেড়ে বললো,
—তায়াং তোর বোনের আর কিছু না থাকলেও চাপার জোর ভালোই আছে। করে দেখাতে না পারলেও মুখ দিয়ে খই তো ফুটাতে পারে।

আমি রাগী চোখে এনাজের দিকে তাকাতেই সে মিষ্টি হেসে স্টলের সাহায্যকারী ছেলেটাকে ডাকে বললো,
—ভাইয়া আর কতক্ষণ?

ছেলেটা সামনে এসে মাথা চুলকে বোকার মতো হেসে বললো,
—এই তো ভাইয়া হয়ে গেছে। আমি এখুনি নিয়ে আসছি।

ছেলেটা কথা শেষ করে এক মিনিটও দাঁড়ালো না।দ্রুত ভেতরে চলে গেল।ছেলেটার কথা বলার ভঙ্গি দেখে আমার ভীষণ হাসি পেলো।হাসলামও কিন্তু কেউ দেখেনি।কারণ আমাদের চারজনের মুখেই মাস্ক আছে। খাবার আসার আগে কেউ মাস্ক খুলবো না এমন পণ করে রেখেছি।হঠাৎ করে আমার চোখটা আবারো পাশের টেবিলে চলে গেল।ঐ চিকনা ছোকরাটা এবার ফ্লাইং কিস দেখালো।আমি চোখ পাকিয়ে একটা খাইয়া ফালামু লুক দিয়ে দ্রুত চোখ ফিরিয়ে নিলাম।এতে ওরা থামলো না।একের পর এক শিস বাজিয়ে যাচ্ছে। এতে আমিও তন্বী মহা বিরক্ত। এদের সাহস দেখে অবাক হচ্ছি।আমাদের সাথে ওদের থেকে বড় দুটো ছেলে আছে তারপরেও ওরা টিজ করছে।মিনিট তিনেকের মধ্যে আমাদের ফুচকা নিয়ে ছেলেটা ফিরে এলো।আমি ও তন্বী মাস্ক খুলে ফুচকা মুখে পুরতেই আবার ঐ ছেলেগুলো উৎপাত শুরু হলো।একজন বললো,

—আপু একা একা খাবেন?আমাদের একটু দেন।

আরেকটা ছেলে সাথেরজনকে বললো,
—দোস্ত, মিষ্টি কালার হিজাব ওয়ালী কিন্তু জোস।

ব্লু শার্ট পরা আরেকটি ছেলে বললো,
—আমার কিন্তু আকাশি কালার হিজাব পরাটাকে বেশি ভালো লাগছে। আকাশি রঙের হিজাব ওয়ালীর চোখের ওপর ক্রাশ খাইছি।

আমি একবার অসহায় চোখে তায়াং ভাইয়ার দিকে তাকালাম।সে নিশ্চিন্তে ফুচকা মুখে পুরছে আর মোবাইলে মনোযোগ দিয়ে কিছু একটা দেখছে।
এনাজও একি কাজ করছে। একবার মৃদুস্বরে ভাইয়া বলে ডেকে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করলাম।কিন্তু ফলাফল শূন্য। ছেলেগুলো এবার টেবিলে থাপ্পড় মেরে সবাই একসাথে গান ধরেছে। আমার এখন কান্না পাচ্ছে। আমাদের কতকিছু বলছে কিন্তু এনাজ বা তায়াং ভাইয়া কারো কোন রিয়েকশন নেই। আমি সত্যি হতাশ হলাম।এবার কিছুটা জোরেই ডাকলাম।

—তায়াং ভাইয়া।

—হুম বল।

—জলদী এখান থেকে চল।আমাদের এখানে ভালো লাগছে না।

আমার সাথে তন্বীও সুর মেলালো।তন্বী মুখের রং পাল্টে কড়া গলায় বললো,

—ভাইয়া আমাদের খাওয়া শেষ। চল উঠি।

এনাজ বললো,
—তোমরা তাহলে বাইরে গিয়ে দাঁড়াও আমি বিল দিয়ে আসছি।তায়াং তোর খাওয়া হলে ওদের নিয়ে বাইরে চলে যাস।আমার আসতে একটু দেরী হবে।

—আচ্ছা তুই যা।ভালো করে বিলটা দিয়ে আসিস।কোন সমস্যা যাতে না হয়।

কথাটা বলে তায়াং ভাইয়া এনাজের দিকে তাকালো। দুজনেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে একটা রহস্যময় হাসি দিলো।যা আমি বা তন্বী কেউই বুঝলাম না।তায়াং ভাইয়ার খাওয়া হতেই আমরা বের হয়ে গেলাম।ভাইয়া আমাদের দুজনকে দুটো চকবার আইসক্রিম কিনে দিয়ে আবার মোবাইলে মনোযোগ দিলো।আমি খুব মনোযোগ দিয়ে আইসক্রিম খাচ্ছি।
হঠাৎ আমার মনে হলো আমি এনাজকে দেখলাম। সাথে তখনকার ঐ চিকনা ছেলেটা যে আমাকে ফ্লাইং কিস দেখিয়েছে আর যে বলেছিলো চোখের ওপর ক্রাশ খেয়েছে সেই ছেলেটাকে নিয়ে এনাজ উত্তর দিকে দরজা দিয়ে বের হলো।তারপর এনাজ মাঝখানে দাঁড়িয়ে বাকি দুজনের গলাগলি ধরে হাসি মুখে ওদের সাথে কথা বলতে বলতে ভেতরের চিপা গলিতে ঢুকে গেলো।মিনিট পাঁচ হয়ে গেছে কেউ তো বের হয় না।একটু পর দেখলাম……….

#চলবে