সীমাহীন পর্ব-১৭+১৮+১৯+২০

0
2

সীমাহীন
#Meherika_Ayat (আরাধ্যা)
পর্ব 17+18
আপনি?
কে আপনি?
বলল আরাধ্যা।
আমি মাহিনের বন্ধু।
তুমি তো বেশ ভালোই আছো,
তোমার বিয়ে মনে হচ্ছে?
সত্যি টা জানলেও কি আরিয়ান চৌধুরীকে বিয়ে করবে?
আরাধ্যাঃ কোন সত্যি? কিসের সত্যি? প্লিজ আমাকে বলবেন?
রাফিঃ শুন তাহলে,
আমি মাহিনের সব থেকে কাছের বন্ধু। আমার নাম রাফি।
মাহিনের তোমাকে প্রথম দেখা থেকে ভালোবাসা সবই আমি জানি।
আমিই ওকে বলেছিলাম ওই বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যেতে। মাহিনও ওই বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেল।
কিন্তু আরিয়ান চৌধুরী ওকে অপমান করে বের করে দিয়েছে। তারপরও সে তোমার সাথে অনেক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে। আরিয়ান চৌধুরীর জন্য পারেনি। আর কালকে থেকে ওকে ফোনে ও পাওয়া যাচ্ছে না।
এটা নিশ্চই আরিয়ান চৌধুরীরই কাজ।
ওই আরিয়ান চৌধুরী একটা….
কি আমি? পিছন থেকে বলে উঠলো আরিয়ান।
আরিয়ানঃ আরে তুমি রাফি নাকি? কেমন আছো? মাহিনের কি খবর? ওর বিয়ের দাওয়াত দিতে এসেছো নাকি? আসলে আজকে আমরা একটু বিজি আছি। তোমার সাথে অন্য দিন কথা হবে বাই। সবার আগে গল্প পড়তে নীল ক্যাফের ভালোবাসা পেজের সাথেই থাকুন
.
রাফি আরাধ্যাকে একটা কাগজ দিয়ে বলল,
আরু এটা আমার নাম্বার।
প্রয়োজন হলে কল করতে পারো।
.
আরিয়ানঃ কি বলতে চাইছিল রাফি?
আরাধ্যাঃ না, এমনি।
আরিয়ানঃ রাফি একটা কাগজ দিল না তোমাকে দেখি তো?
আরাধ্যা আরিয়ানকে কাগজ টা দিলে,
আরিয়ান টুকরো টুকরো করে ফেলে দিল৷
আরিয়ানঃ রাফির সাথে কথা বলার,
কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।
.
আরে তোরা সবাই নিজের জন্য শপিং করতেই বিজি?
আরাধ্যার জন্য কিছু দেখেছিস?
বোনদের উদ্দেশ্যে বলল আরিয়ান।
রিধিঃবাহহ ভাইয়া,
এখন থেকেই বউ পগলা হয়ে গেছিস? পরে কি হবে।
দেখছিস তো আপু?
রাজঃ ঠিকই তো বলেছে আরিয়ান,
নিজেদের জন্য এতোওও শপিং করছো, যেন তোমাদেরই বিয়ে।
আমার বোনের জন্য ও কিছু দেখো৷
রিধিঃ তুমি তো চুপই থাকো। নিজের বউয়ের খবর নিতে পারে না, আসছে বোনের খবর নিতে।
আরিয়ানঃ কার বউ? কিসের বউ?
ইসস ভাইয়া যে এখানে ছিল, আমি তো খেয়ালই করেনি। এখন কি যে হবে,
মনে মনে বলল রিধি।
রেশমিঃ বাদ দাও না ওসব।
দেখো আরুর জন্য একটা লেহেঙ্গা দেখছি। সুন্দর না?
উদয়ঃ হুম,
এটা আরুকে খুব মানাবে।
রাজঃ রাইট,
আমাদের বোনকে সব কিছুতেই মানায়।
রাজ আর উদয় আরাধ্যাকে বোনের মতো ভালোবাসে। ছোট থেকেই ওকে বোন বলে ডাকে।
রিধিঃ কিরে আরু তুই কিছু বল।
আরাধ্যা তো রাফির ওই কথা গুলোই ভাবছে।
আরাধ্যাঃ হুম,
তোরা যা পছন্দ করে নিবি,
আমি পরবো।
আরিয়ান আরাধ্যার ব্যাপার টা বুঝতে পেরেছে।
আরিয়ানঃ বউ টা!
তুমি কি কিছু নিয়ে টেনশনে আছো?
আরাধ্যাঃ না।
.
.
.
সন্ধ্যায় সবাই ড্রয়িংরুমে বসে আছে।
কলিং বেলের শব্দ শুনে দরজা খুলে দিল রিধি।
উনি এসে গেছে।
.
আরিয়ান জুয়েলারি দোকানের মালিককে কল করে বলছে সবচেয়ে এক্সক্লুসিভ গোল্ড আর ডায়মন্ড সেট যেন বাসায় পাঠিয়ে দেয়।
এখন সেগুলো নিয়ে এসেছে।
সবাই যে যার পছন্দ মতো জুয়েলারি নিয়েছে।
ফাতেমা বেগম নিজে পছন্দ করে নিল আরাধ্যা জন্য।
ফাতেমা বেগমঃ যতো গয়নাই নাও না কেন,
বিয়ের দিন আমাদের খান্দানী গয়না পরেই বিয়ে হবে। এটা আমাদের বংশের ঐতিহ্য।
আরাধ্যাঃ ঠিক আছে আম্মু।
রিধিঃ এনগেজমেন্টর জন্য রিং দেখতে হবে না?
ভাইয়া কোথায়?
আরিয়ানঃ আমি এখানে,
উদয়ঃ শালা তোরে রিং দেখতে ডাকতেছে।
আরিয়ানঃ এখন থেকে তোরাও আমার শালা।
.
ওক্কে প্লিজ রিং চয়েজ করবি ভাইয়া? বলল রেশমি।
রিধিঃ আরু আয় রিং দেখ,
আরাধ্যা অন্য মনস্ক হয়ে আছে।
রেশমিঃ কি ভাবছো,
আরু?
তুমি আজকে এতো মন খারাপ করে আছো কেন?
.
আরিয়ান তো এবার রাগে ফেটে যাচ্ছে।
আরিয়ানঃ আমি যাচ্ছি কেউ আসবে নাকি রিং দেখতে? ( রেগে গিয়ে)
আরাধ্যা আর আরিয়ান মিলে দুটো রিং চয়েজ করলো।
.
.
.
আর ৪ দিন পর এনগেজমেন্ট।
কি বলেতে চেয়েছিল রাফি?
কিছু করেনি তো স্যার মাহিনের সাথে?
কিন্তু আমি কি করবো?
বিয়ের জন্য তো না করা যাবে না,
ভাবছে আরাধ্যা।
.
সকাল হয়ে গেছে।
কালকে এনগেজমেন্ট
সব ঠিকঠাক চলছে, কিন্তু আরাধ্যার চিন্তার শেষ নেই।
ব্যাপার টা আরিয়ান খুব ভালো করেই খেয়াল করেছে।
.
আরো একটা রাত কেটে গেছে। আজ সন্ধ্যায় এনগেজমেন্ট।
দুপুরে হঠাৎ আরাধ্যার ফোন বেজে উঠল,
একটা অচেনা নাম্বার থেকে।
চলবে……

সীমাহীন
#Meherika_Ayat (আরাধ্যা)
পর্ব ১৮
আরাধ্যাঃ হ্যালো!
কিরে বিয়ে করছিস,
কিন্তু আমাদেরকে জানানোর প্রয়োজনও মনে করলি না? এতো স্বার্থপর হয়ে গেছিস? ফোনের ওপাশ থেকে বলে উঠলো আরাধ্যার ফ্রেন্ডরা।
আরাধ্যাঃ না,
আসোলে আমার কাছে ফোন ছিল না রে। আজকেই দিয়েছে স্যার।
নীলাঃ হুম,
বুঝছি সব, আর বলা লাগবে না।
আরাধ্যাঃ কিন্তু তোরা কেমনে জানলি?
রুপাঃ এই শুন,
তুই ইনভাইট না করলেও আরিয়ান ভাইয়া আমাদেরকে স্পেশালি ইনভাইটেশন দিয়েছে।
আর আমরা বিকেলেই আসছি৷
আরাধ্যাঃ হুম,
তোদের ছাড়া তো আমার বিয়েই হবে না।
জয়াঃ হুহহ তা তো দেখছিই।
আরাধ্যাঃ সরিইইইই
আসোলে আমি ভেবেছি রিধি তো তোদের বলবেই,
সরিইইই রে।
প্রিয়াঃ রিধিইইই?
ওই পেত্নীর কথা তো না বলাই ভালো৷ রাজ ভাইয়াকে পেলে তার আর কোনো দিকে কি খেয়াল থাকে?
তোর ভাগ্য অনেক ভালো রে।
আরিয়ান ভাইয়ার মতো হ্যান্ডসাম + হট + রোমান্টিক বর পেয়েছিস।
ইসসস আমি যদি পেতাম।
আচ্ছা বিকেল কথা হবে নাউ বাই।
আরাধ্যাঃ ওক্কেইইইই।
.
সত্তিইইই এতোদিন পর একটু ভালো লাগছে।
সবার সাথে কতো দিন পর কথা হলো। আর আজ তো দেখাও হবে।
ভাবছে আরাধ্যা।
.
.
.
খুব জামকালো ভাবে আজ আরিয়ানদের বাড়ি টা সাজানো হয়েছে।
আফজাল সাহেবর এক মাত্র ছেলের বিয়ে বলে কথা।
সবাই আজ বেশ খুশি।
.
.
.
আরিয়ান আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
পাশে রাজ, উদয়, অর্জুন, রুদ্র, পিয়াস,…… আরো অনেক বন্ধুরা আছে ওর।
আরিয়ান আজ ফরমাল ড্রেস পরেছে। শার্ট প্যান্ট কোট। ওকে জাস্ট অস্থির লাগছে।
অর্জুনঃ দোস্ত,
আজকে তোরে দেখি মাইয়ারা তো অজ্ঞান হই যাইবো।
রাজঃ অজ্ঞান অই আর কি লাভ। হেতের এখন বউ আছে।
রুদ্রঃ আরে বিয়া হইতে এখনও ৩ দিন দেরি,
যা এনজয় করার করেনে আজ।
উদয়ঃ আরিয়ান আগেও ভালো ছেলে ছিল এখনও ভালো ছেলে হয়ে থাকবে,
তাই না দোস্ত?
পিয়াসঃ হ, ভালো হই যা।
আজকে থেকে বউয়ের গোলাম হওয়ার প্রস্তুতি লও দোস্ত।
আরিয়ানঃ আরাধ্যার মনের গোলাম তো সেই কতো আগেই হই গেছি। আজ আর কি?
.
তোমাদের শেষ হইছে?
আমি একটু আরিয়ানের সাথে কথা বলবো।
দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বললেন আফজাল সাহেব।
রাজঃ জ্বী আংকেল।
তোরা সবাই চল।
.
আফজাল সাহেবঃ বাবা,
৩০ বছর আগে আমিও এই জায়গায় ছিলাম।
আজ থেকে তোমার নতুন জীবন,
আরুর বাবা মা বেঁচে নেই।
মেয়েটা জীবনে অনেক কষ্ট সহ্য করেছে। ভালোবাসা বিয়ে ওর সব কষ্ট মুছে দিতে পারবে তো?
আরিয়ানঃ জ্বী,
ইনশাআল্লাহ বাবা।
তোমাদের দোয়া থাকলে সব পারবো।
আমার দোয়া সব সময় তোমার জন্য,
বললেন আফজাল সাহেব।
সবার আগে গল্প পড়তে নীল ক্যাফের ভালোবাসা পেজের সাথেই থাকুন,নীল ক্যাফের ভালোবাসা ছাড়া অন্য কোন পেজে গল্প পরলে বুঝবেন চুড়ি করে পোস্ট করা গল্প।
.
.
.
ইসসস নজর না লাগে যেন চান্দেরও গায়ে। আজকে তো ভাইয়া আবার পাগল হয়ে যাবে।
আরাধ্যার উদ্দেশ্যে বলল রেশমি।
নীলাঃ ঠিক বলছো আপু।
আরাধ্যা আজ একদম ওয়াইট কালারের একটা গাউন পরেছে।
মাথায় নেটের ওড়না।
চুল গুলো উপড় করে বাধা। কানে ডায়মন্ডের দুল। ঠোঁটে লাল লিপ্পি।
খুব সুন্দর লাগছে আরাধ্যাকে।
.
.
.
সবাই নিচে দাঁড়িয়ে আছে।
আরিয়ান আর আরাধ্যা হাত ধরে সিড়ি দিয়ে নামছে। ভিডিও ম্যান ভিডিও করছে। সবাই ওদের ছবি তোলা নিয়ে ব্যস্ত। আরিয়ান আরাধ্যার কাছে গিয়ে আস্তে করে বলল,
আমাকে আজই তোমার রুপের আগুনে পুড়ে ফেলার প্ল্যান করেছো?
বাসর রাত পর্যন্ত যেতে দিবে না মনে হচ্ছে।
.
আংটি বদল হলো।
সবাই মিষ্টি মুখ করছে।
কাল আরাধ্যা আর আরিয়ানের হলুদ।
চলবে…….

সীমাহীন
#Meherika_Ayat
(আরাধ্যা)
পর্ব 19+20
আজ আরু ও আরিয়ানের হলুদ।
পুরো বাড়ির থিম হচ্ছে আজ সাদা কালারের।
মেয়েরা সবাই সাদা লেহেঙ্গা আর সাথে খয়েরী কালারের ওড়না পরেছে৷
আর ছেলেরা খয়েরী কালারের পাঞ্জাবী।
আরাধ্যাকে সাদা লেহেঙ্গা সাথে হলুদ ওড়না পরানো হয়েছে।
আরিয়ান হলুদ পাঞ্জাবী পরেছে।
আরু ও আরিয়ানকে পাশাপাশি বসানো হয়েছে।
.
.
.
আরিয়ানের পাশে গিয়ে রুদ্র বলল,
রুদ্রঃ দোস্ত,
আর আজাকের রাত টা ওয়েট কর।
কালকে তো উফফফসসস।
আমার তো কইতে শরম লাগের।
আরিয়ানঃ এমন ভাবে কছের লাগে যেনো তোর বাসর রাত কাল।
রুদ্রঃ আমার হলে তো কথাই ছিল না।
আমি কি আর তোর মতো ভাল ছেলে নাকি?
আমি তো সব আরো আগেই করে ফেলতাম।
.
হইছে আপনাদের কথা শেষ? ভাইয়াকে হলুদ লাগাতে আম্মু আসতেছে।
বলল রিধি।
.
হলুদ পর্ব শুরু হলো,
আফজাল সাহেব ও ফাতেমা বেগম এসে আরিয়ান ও আরুকে হলুদ লাগালেন৷
সাথে একটা গয়নার সেট দিয়ে গেলেন।
এরপর রেশমি আর রিধি,
তারপর রাজ ও উদয়।
এভাবে একে একে সবাই হলুদ লাগালো আর গিফট দিয়ে গেল।
.
.
.
সকাল থেকে বেশ ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন চলছে৷
পার্লার থেকে আরুকে সাজানোর জন্য মেয়েরা এসেছে।
আজ আরিয়ান মেরুন কালারের শেরওয়ানী পরেছে।
আর আরুকে পরিয়েছে গোল্ডেন আর মেরুন কালারের লেহেঙ্গা।
একদম সিম্পল ভাবে সাজিয়েছে আরাধ্যাকে।
কিন্তু সারা শরীরে গয়নার জ্বলকানীতে অপরুপ লাগছে আরাধ্যাকে।
নীলাঃ আরু,
আজ তো আরিয়ান ভাইয়া চোখই ফেরাতে পারবে না তোর উপর থেকে।
মিতুঃ আরু রাতে কি কি হবে সব কিন্তু বলবি সকালে আমাদেরকে।
(ফিসফিস করে)
আরাধ্যা তো লজ্জায় লাল হয়ে আছে।
রেশমিঃ হয়েছে হয়েছে আর লজ্জা পেতে হবে না আম্মু আসছে একটু কথা বলবে আরাধ্যার সাথে।
সবাই চলে গেছে,
রুমে শুধু আরু ও ফাতেমা বেগম।
ফাতেমা বেগমঃ আরু,
আজ মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে না? আমি জানি তো
আরাধ্যা কেঁদে দিল ফাতেমা বেগমকে ধরে।
ফাতেমা বেগমঃ কাঁদিস না,
আচ্ছা আমি বুঝি তোকে মায়ের মতো ভালোবাসি না?
আরাধ্যাঃ না আম্মু তা নয়৷
ফাতেমা বেগমঃ তাহলে আর কান্না কিসের।
এখন থেকে আমিই তোর মা। মনে থাকবে তো?
আরাধ্যাঃ একদম৷
ফাতেমা বেগম আরাধ্যার কপালে আলতো করে চুমু দিলেন৷
.
তোরা ওকে নিচে নিয়ে আয় বলে রুম থেকে বের হয়ে গেলেম ফাতেমা বেগম।
.
.
.
আরিয়ান ও আরাধ্যা পাশাপাশি বসে আছে৷
আরিয়ানঃ মাই কুইন,
তোমাকে অস্থির লাগছে৷
ইসসস কখন যে রাত হবে আর তোমাকে মন ভরে দেখবো।
আরাধ্যাঃ রাতে আপনার জন্য সারপ্রাইজ আছে স্যার।
আরিয়ানঃ রিয়েলি?
কি সারপ্রাইজ?
একটু ক্লু দাও তো, বাকি টা আমি বুঝে নিতে পারবো।
আরাধ্যাঃ তা তো রাতেই দেখবেন,
তবে তা আপনার কল্পনার বাইরে।
দুজনে আস্তে আস্তেই কথা গুলো বলছে।
আরিয়ান বেশ বুঝতে পেরেছে, কিছু একটা তো করবেই আরাধ্যা।
.
.
.
বাসর ঘরে বসে আছে আরাধ্যা৷ পাশে রিধি, মিতু, নীলা, প্রিয়া, জয়া, রেশমি আরো অনেকেই আছে।
রিধিঃ ওই শুন তোরা,
টাকা ছাড়া কিন্তু ভাইয়াকে রুমে ডুকতে দেওয়া যাবে না, মনে থাকে যেন।
ওক্কেইইইই বস,
সবাই এক সাথে বলে উঠলো।
.
আরিয়ান ওর বন্ধুদের সাথে অন্য রুমে আছে।
পিয়াসঃ দোস্ত,
সকালে কিন্তু সব কইবি৷
আমার সময় আমি তোরে সব কইছিলাম না?
রাজঃ কিহহহ?
সব কইছিলি? আহহহ আমারে তো কেউ কয় নাই।
উদয়ঃ বাদ দে তো।
দোস্ত চল তোরে আরাধ্যার হাতে তুলে দিয়ে আসি৷
রুদ্রঃ হায়রে😭😭😭😭
আজকে আমাগো দোস্ত শেষ।
.
বাসর ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে, আরিয়ান ও তার বন্ধুরা।
টাকা ছাড়া এক পাও ভেতরে ঢুকানো যাবে না।
রুমের ভেতর থেকে বলল রিধি।
রুদ্রঃ ছি ছি ছি,
তুমি তোমার ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা চাও?
রিধুউউউউউউ আমার কাছে শুধু টাকা না অনেক কিছু আছে৷
রাজঃ সাইড় প্লিজ
তুমি আমার সাথে এমন করবা রিধুউউউ?
রিধিঃ আপনি কে এসেছেন গো?
রাজঃ ওকে, মনে থাকবে আমার সব।
আরিয়ানঃতুই বোন হয়ে আমার সাথে এমন করিস?
দাঁড়া তোকে বিদায় করে তো আমার শান্তি।
নে ধর টাকা,
১০০০০ হাজার টাকার বান্ডেল দিল আরিয়ান।
.
.
.
বাসর ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল আরিয়ান।
আরাধ্যাঃ আপনাকে আমার কিছু বলার আছে।
আরিয়ানঃ তোমার সব কথা শুনার জন্য আমি প্রস্তুত বউ সোনা।
আরাধ্যাঃ আমি আপনাকে ভালোবাসি না,
আমার থেকে দূরে থাকবেন।
কাছে আসার কোন রকম চেষ্টাও যদি করেন,
তাহলে আমি এ বাড়ি ছেড়ে চলে যাব।
আরিয়ান আরাধ্যার কাছে আসতে থাকলো।
চলবে….
(খুব প্রব্লেমে আছি। গল্প দিতে লেট হতে পারে।

সীমাহীন
#Meherika_Ayat (আরাধ্যা)
পর্ব ২০
আরাধ্যার কথা শুনে যেন আরিয়ানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।
আরিয়ান আরাধ্যার দিকে এগোতে থাকে,
আরাধ্যা পিছিয়ে যাচ্ছে।
আরাধ্যাঃ কি?
কি করতে চাচ্ছেন আপনি?
আরিয়ানঃ যা করার প্রয়োজন, তাই করছি।
আরাধ্যাঃ হুম, আমি তো জানতামই
বিয়ে তো আমাকে করেছেনই ভোগ করার জন্য।
কোনো ভালোবাসা না, সব মিথ্যে অজুহাত।
আরিয়ানঃ যা ভাবার ভাবতে পারো।
আরিয়ান আরাধ্যার একদম কাছে চলে এসেছে।
আরাধ্যা চোখ বন্ধ করে ফেলেছে।
আরিয়ানের নিশ্বাস এসে পড়ছে, আরাধ্যার মুখে।
হাত বাড়িয়ে খাটের কোণ থেকে একটা বালিশ নিল আরিয়ান।
আরাধ্যা চোখ খুলে দেখলো আরিয়ান সোফার উপর বালিশ রাখছে।
আরিয়ানঃ আমি সোফায় সুয়ে পড়ছি,
তুমি খাটে ঘুমোতে পারো নিশ্চিন্তে।
আরাধ্যা তো আরিয়ানকে দেখে অবাক হচ্ছে,
সত্যি মানুষ টা আমাকে ভালোবাসে? নাকি সব মিথ্যে অভিনয়।
ভাবছে আরাধ্যা।
আরিয়ানঃ কি ভেবেছিলে? এসব করলে আমি তোমাকে ছেড়ে দিব?
এই চিনলে তুমি আমাকে?
তোমাকে যদি জোর করেই কিছু করার ইচ্ছে থাকতো, তাহলে আরো আগেই কি করতে পারতাম না বলো? আমি করলে তুমি কি কিছু করতে পারতে? কাউকে বলতে পারতে? আর বললেও কি হতো আমার?
কিন্তু না, আমি সত্যি তোমাকে ভিষণ ভালোবাসি আরাধ্যা। যেদিন তুমি নিজ থেকে আমাকে কাছে টেনে নিবে,
সেদিনই আমি তোমার কাছে আসবো৷
এর আগ পর্যন্ত না হয় দূর থেকেই ভালোবাসি।
কথাগুলো বলে আরিয়ান সুয়ে পড়লো সোফায়।
আরাধ্যা ভাবছে,
স্যার তো ঠিকই বলেছে। সেদিন আমি নেশার ঘোরে ছিলাম, তাও স্যারেরই কাছে।
কিন্তু স্যার তো কিচ্ছু করেনি।
রাফি কি বলতে চাইছিল আমাকে তাহলে?
কিছুই মাথায় ঢুকছে না, উফফফফফফ…..
.
.
.
রাজঃ কি করছে ওরা এখন?
রিধিঃ কি করবে? কত্তোওওও কিছুউউউউউ।
রাজঃ আমাদের নাম্বার কোন দিন আসবে পাখি?
রিধিঃ তোমার খালি এসব ভাবনা, ফাজিল।
রাজঃ আমরা তো এখনও করতে পারি,
বিয়ে করা পর্যন্ত ওয়েট করা লাগে নাকি?
রিধিঃ অবশ্যই,
বিয়ের পরেই সব হবে। রাতের ১ টা বাজতেছে,
যাও ঘুমাও। সকালে কথা হচ্ছে।
রাজঃ একটু কিছুও পাবো না নাকি? (মন খারাপ করে)
রিধি রাজের ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিল।
৫ মিনিট পর….
রিধিঃ হইছে? এবার তো ঘুমোতে যাবেন।
রাজঃ হুম, লাভ ইউ পাখি।
.
.
.
আরাধ্যা ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলো, আরিয়ান ঘুমিয়ে গেছে সোফায়।
আরাধ্যা শাড়ি পরতে পারে না, তাই টপস আর পালাজ্জো পরে নিয়েছে। সকালে রিধিতাকে বলবে তাকে শাড়ি পরিয়ে দিতে৷
কি নিষ্পাপ লাগছে স্যারকে, আসলেই তো আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু আমার কেন মনে হচ্ছে কিছু একটা লুকিয়েছে সবাই আমার কাছ থেকে? ভাবছে আরাধ্যা।
ইসসসস কতো রাত হয়েছে, না এবার ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে তো আবার উঠতে হবে।
মনে মনে বলল আরাধ্যা।
.
কিসের যেন আওয়াজে আরাধ্যার ঘুম ভেংগে গেল, মনে হচ্ছে কেউ তার দিকে এতোক্ষণ তাকিয়ে ছিল৷ উঠে বসে দেখলো কেউ নেই।
স্যার সোফায় নেই কেন? হয়তো ওয়াশরুমে গেছে।
কিছুক্ষণ পর আবারও শব্দ শুনতে পেল,
চেয়ার টানার শব্দ হচ্ছে, হাটাহাটির শব্দও পাচ্ছে আরাধ্যা। আরো কিছুরও শব্দ।
কিন্তু কোথা থেকে আসছে শব্দগুলো আরাধ্যা ঠিক বুঝতে পারছে না।
আরাধ্যা খাট থেকে নেমে ওয়াশরুমের দিকে গেল। কই স্যার তো এখানে নেই। বারান্দায় গিয়ে দেখলো, এখানেও নেই। দরজাও বন্ধ,
তাহলে কোথায় গেল স্যার?
ভাবছে আর অবাক হচ্ছে আরাধ্যা।
খুজতে খুজতে রুমের দেয়ালের কাছে যেতেই
শব্দটা যেন আরো বেড়ে যাচ্ছে।
ভয়ে কেঁপে উঠলো আরাধ্যা।
তাড়াতাড়ি করে খাটের উপর এসে লেপ মুড়ি দিয়ে সুয়ে পড়লো আরাধ্যা।
চলবে…….