সীমাহীন পর্ব-২১+২২+২৩

0
3

সীমাহীন
#Meherika_Ayat (আরাধ্যা)
পর্ব 21+22
সকালে দরজা নক করার শব্দ কানে আসতে আরাধ্যার ঘুম ভাংলো।
দরজার বাইরে থেকে রিধি বলল,
ভাবীইইইই আর কতোক্ষণ? আজকে তো রিসিপশন ভুলে গেছিস নাকি?
তাড়াতাড়ি আয় ব্রেকফাস্ট করেনে। আবার পার্লার থেকে মেয়েরা আসবে তোকে সাজাতে।
আরাধ্যাঃ হুম, আমি উঠছি।
ওয়েট দরজা খুলছি।
আরাধ্যা তাড়াতাড়ি আরিয়ানকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দিল।
আরাধ্যাঃ স্যার,
খাটে গিয়ে ঘুমান, রিধি আসছে জাগাতে।
আরিয়ান গিয়ে খাটে শুয়ে পড়লো।
আরাধ্যা সোফার সব ঠিক করে রিধিকে দরজা খুলে দিল৷
রিধিঃ গুড মর্নিং ভাবীইইইইই।
আরাধ্যাঃ কিসের ভাবী? আমাকে আরু বলবি।
আমি তোর বেস্টু ছিলাম, আছি আর থাকবো।
রিধিঃ হুম, লাভ ইউ সোনা।
আরিয়ান লেপের থেকে মুখ বের করে বলে উঠলো,
হুহহহ আমার মা বোন সবাইকে হাত করে নিলে আরু? আজ কাল তো আমাকে কেউ চেনেই না।
রিধিঃ আরু চল।
ভাইয়া আমি আর আরু যাচ্ছি। তুই ফ্রেস হয়ে আয়।
.
.
.
টেবিলে বসে আছে বড়রা।
পাশের সোফায় আরু রিধি ও তাদের অনান্য ফ্রেন্ডরা আছে৷
প্রিয়াঃ কিরে আরাধ্যা,
কাল রাতে কি কি হলো হুম?
নিলাঃ এই তোরা চুপ কর তো, আরু আমাকে সব বলবে।
রিধিঃ আগে ওকে খেতে তো দে প্লিজ।
জয়াঃ ইসস ভাবীর জন্য কতো আদর।
আরাধ্যাঃ রাতে অনেক কিছু হইছে,
তবে কাউকে বলা যাবে না।
রিয়াঃ কিহহহহহ? কেন বলা যাবে না।
আরাধ্যাঃস্যার না করছে বলতে।
নিলাঃ তাই বলে বলবি না? (মন খারাপ করে)
আরাধ্যাঃ আরেহহহ এসব শুনার কি আছে?
ওগুলা ওগুলা আর কি।
রিধিঃ আচ্ছা থাক, বুঝছি আমরা।
এবার খেয়েনে।
.
এদিকে আরিয়ানের ফ্রেন্ডরা ও আরিয়ানকে একই প্রশ্ন করে আছে।
আরিয়ান কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
রাতে কিচ্ছু হয়নি।
তারপর সব কিছু বলে। আর তার ফ্রেন্ডদের না করে দেয় কেউ যেন কিছু বুঝতে না পারে।
.
.
.
আরাধ্যা আজকে কালো একটা গাউন পরেছে,
আরিয়ান কালো শার্ট আর ব্লু জিন্স।
দুজনকে পাশাপাশি খুব মানিয়েছে, কারো নজর যেন না লাগে তোমাদের উপর।
পিছন থেকে বলে উঠলো ফাতেমা বেগম।
.

আম্মুউউউ ফাতেমা বেগমর উদ্দেশ্যে বলল আরাধ্যা। কাকে বেশি সুন্দর লাগছে?
ফাতেমা বেগমঃ তোকেই তো বেশি সুন্দর লাগে।
আরিয়ানঃ আম্মু তোমার ছেলে কিন্তু পাশে আছে।
ফাতেমা বেগমঃ আগে মেয়ে তারপর ছেলে।
আরিয়ানঃ ঠিক আছে, মনে থাকবে সব।
.
এভাবেই সারাদিন খাওয়া দাওয়া আর মজা করে কেটে গেল৷
রাতে আরাধ্যা সোফায় শুয়ে আছে, আরিয়ান খাটে।
কাল রাতে আমার সাথে কি হয়েছিল এসব?
নাকি আমার মনের ভুল? ভাবতে ভাবতে ঘুম এসে গেল আরাধ্যার।
আজ রাতেও ঠিক একই ঘটনা ঘটলো।
সকালে সব ঠিক শুধু রাতেই এমন হয় কেন আমার সাথে? কাউকে কিছু বলবো?
না না আমাকে পাগল ভাব্বে সবাই।
মনে মনে ভাবছে আরাধ্যা।
.
.
.
আবার আগের মতো কলেজ যাওয়া শুরু করলো আরাধ্যা। আরিয়ান অফিস যাওয়ার সময় রিধি আর আরাধ্যাকে কলেজে দিয়ে যায়,
আর দুপুরে বাসা থেকে গাড়ি এসে ওদের নিয়ে যায়।
নিবির নামের একটা ছেলে আরাধ্যাকে খুব ডির্স্টাব করতো। কিন্তু দুদিন থেকে ওকে কলেজেই দেখা যায় না। সবাই বলে ও নাকি গায়েব হয়ে গেছে। কিন্তু কিভাবে তা কেউ জানে না।
এদিকে আরিয়ান খুব কেয়ার করে আরাধ্যার।
আরাধ্যার আরিয়ানকে বেশ ভালো লাগতে লাগলো। রিধিরও রাজের সাথে বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। সব কিছু খুব ভালো চলছে।
.
একদিন আরাধ্যা রুম ক্লিন করতে করতে হঠাৎ আরাধ্যার হাতের সাথে ধাক্কা লেগে একটা দরজা খুলে গেল। যেটা দেখতে পুরোটা দেয়ালের মতো। আরাধ্যা তো এটাকে দেয়ালই ভেবেছে। রাতে এই দেয়ালের কাছে গেলেই ওই শব্দ গুলো জোরে জোরে শুনতে পেতো আরাধ্যা।
রুমের ভিতর ডুকে আরাধ্যা চমকে গেল,
তার মানে এসব করছে স্যার এতোদিন ধরে?
চলবে……..

সীমাহীন
#Meherika_Ayat (আরাধ্যা)
পর্ব ২২
আরাধ্যা রুমটার ভেতর ঢুকে দেখলো,
তার ছোট বেলার ছবি থেকে নিয়ে এই পর্যন্ত সব বিশেষ বিশেষ ছবি রয়েছে।
এমনকি স্কুলে একটা ছেলে ওকে ডিস্টার্ব সেই ছেলের ফুল দেওয়া ছবি টা , আকাশ, মাহিন আর কলেজের একটা স্যার ছিল বাজে স্বভাবের সুযোগ পেলেই সে এই সেই বাহানায় আরাধ্যা ও অনান্য মেয়েদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করতো।
১ মাস পর ওই স্যার নাকি অন্য কলেজে সিফট হয়ে গেছে।
এদের সবার ছবির মধ্যে লাল কালি দিয়ে ক্রস চিহ্ন দেওয়া।
বড় ধারালো একটা ছুরি টেবিলের উপর রাখা।
এবার আরাধ্যার বুঝতে বাকি রইলো না এই লোক গুলোর সাথে কি হয়েছে। আর কে করেছে এসব।
.

তার মানে রাফি আমাকে এই কথা টাই বলতে চেয়েছিল? কিন্তু কেন করলো এসব স্যার? আমাকে ভালোবাসে বলে? মনে মনে ভাবছে আরাধ্যা।
ফ্লোরে বসে পড়লো আরাধ্যা।
.
তাহলে তুমি এই রুমের রহস্য জেনেই গেছো আরু? পিছন থেকে বলে উঠলো আরিয়ান।
আরিয়ানঃ বিশ্বাস করো আমি তোমাকে “সীমাহীন ভালোবাসি”
আর তাই এসব করেছি।
যাতে কেউ তোমাকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে না পারে আরু।
আরাধ্যা নিশ্চুপ,
আরিয়ানঃ আরু কথা বলছো না কেন? রাগ করো না প্লিজ।
আরাধ্যাঃ আপনি একজন অসুস্থ মানুষ।
আপনার চিকিৎসা করানো উচিৎ।
আরিয়ানঃ হুম, আমি তোমার ভালোবাসার জন্য অসুস্থ। আমি তোমার জন্য পাগল। তোমার ভালোবাসাই আমার চিকিৎসা।
কথা টা বলে যেই আরিয়ান আরাধ্যার কাছে আসতে চাইলেই
আরাধ্যা বলল,
প্লিজ আমার থেকে দূরে থাকুন, আপনি একটা খুনী। আপনাকে আমি ভয় করি। একদিন আপনি আমাকেও মেরে ফেলবেন।
আরিয়ানঃ ছি ছি এমন বলো না সোনা,
আমি নিজেকে শেষ করে দিতে পারি কিন্তু তোমাকে না।
আরাধ্যাঃ চলে যান আপনি এখান থেকে,
আমার আপনাকে দেখলেও ভয় লাগে।
আরিয়ান মন খারাপ করে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
আরাধ্যা উঠে খাটে গিয়ে বসলো, আর ভাবলো
সবাই আমাকে এভাবে ঠেকিয়েছে। স্যারের সত্তিটা জানালে কি হতো? আমি বিয়েতে রাজি হতাম না? ভাবছে আর কাঁদছে আরাধ্যা।
.
.
সবার সাথে রাগ করে দুদিন ধরে কিচ্ছু খায়নি আরাধ্যা।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে আরাধ্যা।
আসবো? রুমের সামনে দাঁড়িয়ে বলল রিধি।
আরাধ্যা চুপ করে মুখ ফিরিয়ে নিল,
রিধি ভেতরে এসে আরাধ্যার পাশে দাঁড়ালো।
.
রিধিঃশুন আরু, আমি তোকে কিছু বলতে এসেছি। সব শুনার পর তুই যদি এখানে আর না থাকতে চাস তাহলে আমরা আর তোকে আটকাবো না।
আরাধ্যা চুপ করে রিধির দিকে চেয়ে আছে।
সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন।
.
রিধিঃ ভাইয়া তোকে সেই ছোট বেলা থেকেই পছন্দ করতো। তোর ফ্যামিলিও চাইতো তোর আর ভাইয়ার বিয়ে হোক।
আর এদিকে ভাইয়াও তোকে পাগলের মতো ভালোবাসতো। তুই কি খাচ্ছিস, কই যাচ্ছিস, ছোট থেকে বড় সব কিছুর খেয়াল ভাইয়া রাখতো। তোর চাওয়া পাওয়া সব ঠিক রাখতো ভাইয়া। আর চাইতো যে তুই বুঝিস যে ভাইয়া তোকে ভালোবাসে। তুই বুঝার সুযোগ টা পাওয়ার আগেরই অন্য কেউ তোকে প্রপোজ করে বসতো।
ভাইয়া ওই সব ছেলে গুলোকে বার বার ওয়ার্নিং দিত, যাতে তোকে ডিস্টার্ব না করে, তোর আশে পাশে না ঘুরে। কিন্তু যখন ওরা কোনো ভাবেই মানলো না তখনই ভাইয়া ওদের খুন করতে বাধ্য হয়। কারণ ভাইয়া তোকে কোনো ভাবেই হারাতে চায় না। আর তুই তো জানিস ভাইয়া কেমন রাগি ও জেদি স্বভাবের।
তুই কখনও ভেবেছিস ভাইয়া এসব তোর ভালোবাসা পাওয়ার জন্য করেছে। আর তুই কখনও ভাইয়াকে ভালোবেসেছিস? হয়তো তোর ভালোবাসা ভাইয়ার এই সীমাহীন রাগকে দূরে ফেলে দিতে পারে। তুই ঠিক কর তুই কি করবি। আমি এখন যাচ্ছি।
.
রিধি চলে গেল। আরাধ্যা অনেক্ক্ষণ বসে ভাবলো। তারপর উঠে সব গুছিয়ে নিল।
চলবে……

সীমাহীন
#Meherika_Ayat ( আরাধ্যা)
পর্ব ২৩
আরাধ্যা রুমের সব গুছিয়ে নিল।
সব ঠিকঠাক করে রুমের থেকে বের হলো।
.
নিচে নেমে চুলটা বেধে কিচেনে গেল আরাধ্যা।
শাহিদাঃ আরে বউমণি আপনি রান্নাঘরে কেন আইছেন? কিছু লাগবো? আমারে ডাকতেন আমি নিয়া যাইতাম উপরে।
আরাধ্যাঃ না ঠিক আছে।
তোমরা যাও আজকে তোমাদের ছুটি।
শাহিদা, বুশরা তোমরা গিয়ে রেস্ট নাও।
আমি আজ রান্না করবো।
.
সবাই টেবিলে বসে আছে।
আরাধ্যাকে রান্নাঘর থেকে বের হতে দেখে,
ফাতেমা বেগম বললেন,
আরে আরু তুমি কিচেনে কেন গেলে?
ঘরে সবাই কি মরে গেছে?
ওই শাহিদা, বুশরা তোরা কই? (রেগে চিল্লিয়ে)
সারাদিন ধরে মেয়েটা কিছু খায়নি, এখন আবার কিচেনে। তোরা কেউ দেখিস না?
আরাধ্যাঃ না আম্মু ওদের কোনো দোষ নেই,
আমিই ওদের বের করে দিয়েছি কিচেন থেকে।
রিধিঃ তাই বুঝি? তা আপনি কিচেনে কেন গেলেন বউমণি? (দুষ্টুমি করে)
আরাধ্যাঃ কেন আমি কিচেনে যেতে পারি না বুঝি ননদিনী?
.
আরিয়ান অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আরাধ্যার দিকে। কি সুন্দর দেখাচ্ছে তাকে।
ছোট ছোট চুল গুলো গালের সামনে এসে পড়েছে। কপালে ও নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে আছে। পুরো গিন্নি গিন্নি লাগছে আরাধ্যাকে।
ইচ্ছে করছে সামনে চুল গুলো আলতো করে কানের পাশে গুজে দিতে, ঘাম গুলো মুছে দিতে। কিন্তু সেই অধিকার তো আর আরিয়ানকে দেয় নি আরাধ্যা।
কথা টা মনে পড়তেই আরিয়ান মুখ টা কালো হয়ে গেল।
.
কি রান্না হয়েছে দেখি বলেই রিধি বাটির ঢাকনা উল্টালো।
রিধিঃ ওয়ায়াওওও 😮😮😮😮😮
ভাইয়া তোর ফেভারিট ইলিশ পোলাও, ডিমের ভুনাকারী আর টমেটো চাটনি।
এরপর আবার লাচ্ছি? সব দেখি ভাইয়ার ফেভারিট খারার? কি ব্যাপার আরু?
(দুষ্টু হাসি দিয়ে)
আরাধ্যাঃ হুম,
কাল তোর ফেভারিট ডিশ করবো,
যা এবার চুপ করে খেতে বস।
.
খেয়ে তো সবাই আরাধ্যার প্রশংসা করেই চলেছে। সবাই নিজের রুমে ঘুমোতে চলে গেছে।
আরিয়ান ডয়িং রুমে বসে ল্যাপটপে কাজ করেছে। আজ দুদিনে আরাধ্যা একটুও আরিয়ানের সাথে কথা বলেনি।
আজও এসব করেছে হয়তো সবাইকে দেখানোর জন্য। এসব ভাবতে ভাবতে নিজের রুমের দিকে গেল আরিয়ান।
লাইট জ্বালিয়ে তো আরিয়ান পুরো থ হয়ে গেছে।
.
.
.
রাজঃ কি বলো আজকে আরাধ্যা আরিয়ানের সব ফেভারিট ডিশ করেছে?
রিধিঃ জ্বী হ্যাঁ।
রাজঃ তুমি তো কখনও আমার জন্য করোনি।
(মন খারাপ করে)
রিধিঃ হয়েছে, মন খারাপ করতে হবে না।
আর ১৫ দিন পর তো বিয়েই আমাদের।
এরপর দেখবে কি করি না করি।
রাজঃ আচ্ছা পাখি।
এখন একটু আদর পাবো তো?
রিধিঃ উম্মম্মম্মম্মমাহ। গুড নাইট।
ফোন রেখে রিধি ঘুমিয়ে গেল।
.
.
.
পুরো রুমে ক্যান্ডেল আর গোলাপের পাপড়ি ছিটানো। খাটে সব গোলাপ আর গোলাপের পাপড়ি।
আরাধ্যা লাল ব্লাউজের সাথে একটা কালো নেটের শাড়ি পরেছে। চুল গুলো ছাড়া এক পাশে এনে রেখেছে। লাল লিপ্পি, হাত ভরা লাল কাঁচের চুড়ি।
আরিয়ান তো পাগল হয়ে যাচ্ছে আরাধ্যাকে দেখে।
আরাধ্যাঃ কেমন লাগছে আমাকে?
(ঘুরে ঘুরে)
পিট কাটা ব্লাউজের পিছন দিয়ে সাদা পিট আর কোমর দেখা যাচ্ছে।
আরিয়ান তো আগের জায়গায় দাঁড়ানো।
আরাধ্যা আস্তে আস্তে আরিয়ানের কাছে চলে এসেছে। আরিয়ানের হাত দুটো নিয়ে নিজের কোমরে উপর রাখলো।
আরাধ্যাঃ ভিষণ ভালোবাসি তোমায়।
আজকের পর থেকে আমাদের মাঝে কোনো দুরত্ব থাকবে না। প্রিয়!
আরিয়ানের তো সব স্বপ্নের মতো লাগছে।
আরাধ্যা আরিয়ানের ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিল।
আরাধ্যাকে কোলে নিয়ে খাটের উপর শুইয়ে দিল আরিয়ান। নিজের ভর টা আরাধ্যার উপর দিল।
.
সকালে আরাধ্যা গোসল সেরে বের হলো।
আরাধ্যাঃ স্যায়ায়ায়ায়ায়ার! (চিল্লিয়ে)
আপনাকে সেই কখন জাগিয়ে গেলাম,
আপনি এখনও পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছেন?
অফিসে যাবেন কখন?
.
আরিয়ান ঘুম ঘুম চোখে একটু তাকিয়ে বলল,
উফফফ শান্তিতে একটু ঘুমোতেও দিবে না দেখছি। আসো না বাবুউউউন!
দুজনে মিলে ঘুমাই।
আরাধ্যাঃ কিইইইইইহহহহ আমি শান্তিতে ঘুমোতে দেইনি? রাত থেকে হিসেব করলে পুরো ৮ ঘন্টা ঘুমানোর পরেও শান্তিতে ঘুমাতে চান?
আরিয়ানঃ রাতের কথা তো না বললেই পারো,
তুমি ঘুমাতে দিছো রাত্রে?
৪ টায় ঘুমাইছিলাম। আসো না আবার হয়ে যাক। (শয়তানি হাসি দিয়ে)
আরাধ্যাঃ এরোইইইই!
উঠবেন নাকি গায়ে পানি ঢেলে দিব?
(রাগি চোখে)
আরিয়ানঃ যাচ্ছি যাচ্ছি।
অমন করে তাকিও না বউ, একদম খাই ফেলবো কিন্তু।
.
আরিয়ান গোসল করে বেরিয়ে দেখে আরাধ্যা শাড়িতে কুচি দিয়ে পারছেনা।
ওর ভেজা চুল থেকে টুপ টুপ করে পানি পরছে। আরিয়ান আস্তে করে গিয়ে নিজের হাত দুটো আরাধ্যার কোমরে জড়িয়ে দিল।
আরাধ্যাঃ উফফফ শাড়ি পরতে পারছি না,
কোথায় হেল্প করবেন তা না করে কি করছেন?
আরিয়ান আরাধ্যার শাড়ির কুচি ঠিক করতে করতে বলল,
কাল রাতে কেমনে পরছিলা?
আরাধ্যাঃওটা তো রিধি পরিয়ে দিছিলো।
আরিয়ানঃ আচ্ছা।
এখন থেকে সব সময় শাড়ি পরবে,
আর সেটা আমি পরিয়ে দিব।
আরাধ্যাঃ ঠিক আছে।
.
.
.
বেশ ভালো যাচ্ছে দিন গুলো ওদের।
রিধি আর রাজেরও বিয়ে হয়ে গেছে।
প্রায় ১ বছর শেষ হয়ে গেছে আরাধ্যা আরিয়ানের বিয়ের।
আজ ওদের বিবাহ বার্ষিকি।
.
বেশ কয়েকদিন থেকেই আরিয়ান খেয়াল করছে, আরাধ্যা ওকে এড়িয়ে চলছে।
আজ আরিয়ান অফিস থেকে ফিরার সময় দেখলো আরাধ্যা বাসায় ঢুকছে একটা ছেলে ওকে বাসার সামনে ছেড়ে গেল।
.
আরাধ্যা বারান্দায় দাঁড়িয়ে কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছিল।
আরিয়ান রুমে ঢুকলো,
আরিয়ানঃ কার সাথে কথা বলছো?
আরাধ্যা তাড়াহুড়ো করে ফোন কেটে দিয়ে বলল,
প্রিয়াকে আসতে বলেছি আজকের পার্টিতে।
আরিয়ানঃ আচ্ছা, কোথায় গিয়েছিলে আজকে?
আরাধ্যা কিচ্ছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
আপনাকে কে বলেছে?
আরিয়ানঃ আমি আসার সময় দেখলাম তুমি বাসায় ঢুকছো।
আরাধ্যাঃ ক…কলেজে গেছিলাম একটু।
আরিয়ান দেখলো আরাধ্যা ওই ছেলে টার সম্পর্কে আরিয়ানকে কিছুই বলল না।
অথচ কিছু হলে আরাধ্যা সবার আগে আরিয়ানকে জানাতো।
আরিয়ান আর কিছু বলল না।
চলবে…….