স্বপ্নের_crush ? (in reality) Part-39 (Last Part)

0
5083

স্বপ্নের_crush ? (in reality)
Part-39 (Last Part)
writer : Borno ☺
ছদ্দনামঃ Samiya Arohi
.
সকালে,,,
চোখে সূর্যের আলো পরতেই আহানের ঘুমটা ভেঙে গেলো। পাশে তাকিয়ে দেখে আরোহি বেঘোরে ঘুমচ্ছে। আহান এক মনে তাকিয়ে থাকে আরোহির ঘুমন্ত চেহারার দিকে। আরোহির চোখের পাতাগুলো খুবই নমনীয় এবং শান্ত দেখাচ্ছে। চোখের পাতাগুলো ছুঁয়ে দিতে বড্ড ইচ্ছে করছে আহানের তাই দুই চোখের পাতায় ?? ভালোবাসার পরশ দিতেই আরোহি ঘুমটা ভেঙে যায়। চোখ খুলে তাকিয়ে কিছুক্ষণ সময় নিয়ে বোঝায় চেষ্টা করে ও কোথায়। তারপর কলকের কথা মনে পড়তেই তাড়াহুড়ো করে ঊঠতে নিলেই আহান ওকে জড়িয়ে ধরে
আহানঃ এতো সকালে কোথায় যাচ্ছো?
আরোহিঃ বাড়ির নতুন বউ আমি,, আজ রান্না করতে হবে তো
আহানঃ ৮টার সময় রান্না করতে গেলে খাবো কখন?
আরোহিঃ (চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে) আ…আটটা বাজে!? ??
আহানঃ জ্বি,
আরোহিঃ (মনে মনে) ইশশশ এই ঘুমের জন্য আজ আমার নাক কাটা গেলো ??
আহানঃ কি হলো? কি ভাবছো?
আরোহিঃ আমি কিছু ভাবছি না কিন্তু মা-বাবা কি ভাববেন?
আহানঃ ? কিছু ভাববে না, বাসর রাতের পর লেট উঠাটা স্বাভাবিক, শুধু আমরাই জানি আমরা এখনও কিছু করিনি ওরা তো আর জানে না ?
আরোহিঃ (হাত দিয়ে আহানের মুখ চেপে ধরে) ইশশশ তোমার মুখে কিছু আটকায় না ? [বলেই আহানকে ধাক্কা দিয়ে বাথরুমে চলে যায়]

এদিকে অর্ণব সেই কখন থেকে অরনিকে ডাকছে কিন্তু অরনির উঠার নামই নেই,, শেষে অরনির মুখে পানি মারতেই,
অরনিঃ আআআআআ
অর্ণবঃ আস্তে…
অরনিঃ আপনি এখানে কেন?
অর্ণবঃ বারে,, আমার বাড়িতে আমি থাকবো না?
অরনিঃ ?? ওহ সরি সরি,, তাহলে আগে আমি ফ্রেশ হয়ে আসি টাটা [বলেই উঠে বাথরুমে দৌড়]
অর্ণবঃ (মনে মনে) এদের দু বোনকে অলিম্পিকে পাঠালে দেশের অনেক লাভ হবে ??

আরোহি নতুন শাড়ি পড়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছিল,, তখনই আহান পেছন থেকে এসে আরোহির কোমড় জড়িয়ে ধরে আরোহির চুলে মুখ গুজে দেয়, আর আরোহি রীতিমত কাপতে শুরু করেছে,, আহান একটু হালকা করে ধরায় আরোহি নিজেকে ছাড়িয়ে বললো, ” আমি মার কাছে যাই” বলেই দৌড়।
আহানঃ (মনে মনে) এই টুকু রোমেন্সেই এতো কাপুনি ? এর থেকে একে অলিম্পিকে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত, দেশের উন্নয়ন হবে ??
______________________
রান্নাঘরে,
আরোহিঃ ছোট মা !
অর্ণবের মাঃ আরে, রান্নাঘরে কেন? কিছু লাগবে?
আরোহিঃ (অপরাধবোধ নিয়ে) না, আসলে বিয়ের পরের দিন নাকি শ্বশুরবাড়ির সবাইকে রান্না করে খাওয়াতে হয়, আমার যে উঠতে দেরী হয়ে গেলো ?
অর্ণবের মাঃ (মুচকি হেসে) এতে নিজেকে এতো অপরাধী ভাবতে হবে না,, আমাদের বাড়িতে এমন কোনো নিয়ম নেই, আর লেট উঠাটাই স্বাভাবিক। এখন রান্না না করলেও চলবে। পরে আমাকে শুধু হেল্প কোরো তাহলেই হবে বুঝলে? এখনই গিন্নি হতে হবে না
আরোহিঃ তবুও কিছু করি?
অর্ণবের মাঃ (কিছুটা ভেবে) উমমম ? তাহলে চা বানাও
আরোহিঃ (খুশি হয়ে) ওকে ?
আরোহির চা বানানো হতেই অরনি রান্না ঘরে আসে,,
অরনিঃ ইয়ে,,মাম্ম..মানে,, দেরী হয়ে গেলো
অর্ণবের মাঃ ইটস ওকে,,
অরনিঃ আমি কি কাজ করবো?
অর্ণবের মাঃ তুমি না হয় আমাদের হেল্প করো
অরনিঃ ওকে ☺
সবাই মিলে নাশতা করে,, অর্ণবের বাবা আরোহির চায়ের সুনাম করেন, সাথে সবাইকে এটাও বলে দেন সন্ধ্যায় পার্টি আছে, ওরা যেন সময় মতো রেডি হয়ে যায়, আর অর্ণব অরনিকে মেকআপ নিয়ে টিস করতে শুরু করে ?
_________________
বিকালে,
আরোহি অনেক্ষণ ধরে আলমারি খুলে দাঁড়িয়ে আছে দেখে আহান জিজ্ঞেস করলো,
আহানঃ Any Problem??
আরোহিঃ হুম,, আসলে কি পড়বো শাড়ি না লেহেংগা, আর কোনটাই বা পড়বো বুঝতে পারছি না
আহান আলমারি থেকে একটা Pearl white রঙের শাড়ি বের করে দিলো। শাড়িটা বেশ সুন্দর, সিম্পলের মধ্যে গর্জিয়াস।
আরোহি বেশ অনেক্ষন সময় নিয়ে শাড়িটাই পড়লো, আগে সেভাবে শাড়ি না পড়লে যা হয় আরকি। এরপর চুল গুলো Greek Goddess Updo style করলো। সাথে চুলের একপাশে টায়রা পড়লো। হাতে চুরি পড়লো। যেহেতু শাড়িটা ওফ হোয়াইট কালারের মতো তাই মেকআপটাও হালকা করলো। চোখ গুলো মায়াবী আর ঠোটে লিপস্টিক। সাজ কমপ্লিট করতেই আহান রুমে এলো, আহান আরোহির দিকে একবার তাকিয়ে অন্যদিকে তাকাতেই আবার চোখ ফিরিয়ে আরোহিকে দেখলো। এবার যেন চোখটা নড়েই না। চোখে পলকও পড়ে না। আরোহি আহানকে খেয়াল করেনি, কিন্তু আহান যেন আরোহিকে দেখে হারিয়ে গেছে, আরোহি আহানকে দেখতেই লজ্জা পেলো।

অর্ণব অরনিকে একটা মেরুন রঙের শাড়ি পছন্দ করে দিয়েছে। মেরুন রঙের শাড়ি, বড় করে খোপা, হাত ভর্তি চুরি আর মাথায় টায়রা। অরনিকে একে বারে পুতুল লাগছে। অর্ণব তো অরনিকে দেখে হা হয়ে গেছে। পেছন থেকে গিয়ে অরনির কোমড় জড়িয়ে ধরে বলে, “ইশ আমার বউটার যেন নজর না লাগে” অরনি লজ্জায় অর্ণবকে ধাক্কা দিয়ে সরে আসে।

আহান ধীরে ধীরে আরোহির দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। আরোহি টুল থেকে উঠে পেছতে পেছতে ড্রেসিং টেবিলের পাশে দেওয়ালে আটকে যায়। আহান ধীরে ধীরে ড্রেসিং টেবিল থেকে কাজলটা নিয়ে আরোহির কানের পেছনে লাগিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে, “আমার হুর পরীটার যেন নজর না লাগে” আরোহি লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেলে
____________________
আহান আরোহির হাত ধরে ওদের বাড়ির পেছনের গার্ডেনে নিয়ে আসে ওখানেই অনুষ্ঠানটা হচ্ছে,, একটু পর অর্ণব আর অরনি আসে। মাইক হাতে নিয়ে অর্ণবের বাবা সবার উদ্দেশ্যে বলতে শুরু করেন,
“আজ আমার জীবনের সব থেকে খুশির দিন, আজ আমি দুটো মেয়ে পেয়েছি। আমার আহান আমার জন্য আরোহি মা কে এবং অর্ণব আমার অরনি মাকে এনে দিয়েছে। সবাই দোয়া করবেন ওরা যেন সব সময় একসাথে সুখে থাকে”
সবাই হাততালি দিলো। হঠাৎ নিহাকে পার্টিতে দেখা গেলো। আহান আর আরোহি নিহাকে দেখে রেগে গেছে কিন্তু তবুও রাগ কন্ট্রোল করলো। নিহা ওদের দিকে এগিয়ে এলো,
নিহাঃ হাই আহান, হাই আরোহি
আরোহিঃ হাই
নিহাঃ কংগ্রেচুলেশনস টু বোথ ওফ ইউ
আহানঃ থ্যাংক ইউ।
নিহাঃ আম সরি আমি জানি আমি যা কিছু করেছি তা ক্ষমার যোগ্য না। তবুও পারলে ক্ষমা করে দিয়ো
আরোহিঃ ইটস ওকে। তুমি নিজের ভুল বুঝতে পারলেই এনাফ
নিহাঃ থ্যাংকস,, ভালো থেকো [বলেই নিহা পার্টি থেকে চলে গেলো]
পার্টি হবে আর গান হবে না এমন হতে পারে?? তবে সবার রিকুয়েস্টে আহান-আরোহি আর অর্ণব-অরনি কেও ড্যান্স করার জন্য অনুরোধ করা হলো। ওরা নাচের জন্য পজিশন নিলো,,,,
( Ajab Prem ki Gajab kahani movie-r Tera hone laga hoon গানটা শুরু হলো)
( ওরা কাপল ডান্স করতে শুরু করলো,, আহান আরোহির কোমড় ধরে নাচছে, আর অর্ণব অরনির কোমড় ধরে নাচছে,, সেই সাথে আরও অনেকেই আছে ইন ফ্যাক্ট অর্ণবের বাবা-মা কেও নাচতে হচ্ছে)

Shining in the shade in sun like a pearl upon the ocean
Come and feel me
Girl feel me
Shining in the shade in sun like a pearl upon the ocean
Come and heal me
Girl heal me
Thinking about the love we making
And the life we sharing
Come and feel me
Girl feel me
Shining in the shade in sun like a pearl upon the ocean
Come and feel me
Com’on heal me
[আরোহি লিপ সিং করে আহানের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো]
Oh aaja tu bhi mera mera
Tera jo ikrarr hua
Toh kyun na main bhi keh doon keh doon
Hua mujhe bhi pyaar hua
[আহান আরোহির দিকে তাকিয়ে লিপ সিং করলো]
Tera hone laga hoon
Khone laga hoon
Jab se mila hoon
[অর্ণব অরনি দিকে তাকিয়ে লিপ সিং করলো]
Tera hone laga hoon
Khone laga hoon
Jab se mila hoon

Shining in the shade in sun like………… Com’on heal me
নাচ শেষ হলো,, সবাই হাত তালি দিলো। সবাই এসে ওদের সাথে কথা বলছে।
অনুষ্ঠান শেষ হলো। সবাইকে গেটে বিদায় দিয়ে বাসায় আসার সময় হঠাৎ করে বৃষ্টি আসে,, আহান আরোহিকে তাড়াতাড়ি বাসার ভেতর যেতে বললেও আরোহি যায় না, কারণ আরোহির বৃষ্টিতে ভিজতে খুব খুব খুব ভালো লাগে,, আহান আরোহিকে ভিজতে নিষেধ করে,
আহানঃ আরোহি ভেতরে যাও,, এখন ভিজতে হবে না
আরোহিঃ তুমি কিন্তু বলেছিলে বৃষ্টিতে ভেজার সাথী হবে। বৃষ্টি বিলাসী হবে আর এখন প্রমিস ভাংছো!
আহানঃ প্রমিস ভাংছিনা, তোমার ঠান্ডা লাগবে তাই বললাম
আরোহিঃ উহু লাগবে না
বলেই আরোহি লাফিয়ে লাফিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে,, হঠাৎ স্লিপ খেয়ে পড়ে যেতে নিলেই আহান ধরে ফেলে। আর আরোহি আহানের শার্ট আকড়ে ধরে। আরোহি চোখ খুলতে পারছে না, বৃষ্টির ফোটা ওর চোখে মুখে পড়ছে আর আহান মুগ্ধ হয়ে আরোহিকে দেখছে। এভাবে বেশ কিছুক্ষন ছিলো। আরোহি আহানে হার্ট বিট শুনতে পাচ্ছে৷ এই বৃষ্টির রাতে এই জন শূন্য পরিবেশে শুধু আহান আরোহি আর ওদের হার্ট বিট। আরোহি আহানের হার্ট বিট শুনতে পাছে আর আহান আরোহি হার্ট বিট শুনতে পাছে।
হঠাৎ আহান আচমকা আরোহিকে কোলে তুলে নিয়ে বাসায় দিকে হাটা শুরু করে। আরোহি আহানের শার্ট আকড়ে ধরে আহানের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। আহান আরোহিকে কোলে নিয়ে সিড়ি বেয়ে উপরে ওর রুমে চলে যায়। আরোহিকে বেডে শুইয়ে দেয়। আরোহি ঠান্ডায় রীতিমতো কাপছে। আজ আরোহিকে দেখে আহানের যেন ঘোর লেগে গেছে। ধীরে ধীরে আহান আরোহির ঠোঁট দখলে নিয়ে নেয়। আরোহি আহানকে খামচে ধরে কিন্তু সেদিকে কারও হুশ নেই। ধীরে ধীরে দুজনের মিলন ঘটে। এভাবে তাদের পবিত্র ভালোবাসা পূর্ণতা পায়।
সুখে জীবনযাপন শুরু করে তারা তাদের স্বপ্নের_crush দের নিয়ে… ❤

°°°°°সমাপ্ত °°°°°