স্বপ্নের_crush ??
Part_3+4
writer : Borno ☺
ছদ্দনাম : Samiya Arohi
অর্ণবঃ [ RJ র আসল নাম ?] এটা কি হলো দোস্ত?
আহানঃ Strange girl ?
°°° এরপর অনুষ্ঠান শেষ হলো, আর অরনি আমার উপর অত্যাচার শুরু করলো। ছোট বোন হয়েও অনেক বকেছে আমাকে ??°° এই ছিলো আমার দুঃখজনক কাহিনী। তারপর আর কল দিইনি,, কিভাবেই বা দিতাম বলেন ??
.
আপনাদের কাহিনী শোনাতে শোনাতে আমার ফ্রেন্ড নিশা আর মিতু চলে এসেছে,,, আজ আমাদের কলেজের প্রথম দিন তাই আমার পেয়ারের আম্মুকে আর আমার সাথে লড়াই করে আমাকে ঘুম থেকে উঠাতে হয়নি ? excitement এ নিজেই উঠে গেছি। আম্মুর তো আমাকে একা একা তাও আবার এত সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেখে হাত থেকে পাউরুটি পড়ে গেছিলো ? যদিও এইটা এক প্রকার ইনসাল্ট তবুও আমি আম্মুর রিএকশন দেখে ফিক করে হেসে দিয়েছিলাম।
.
আর অরণি??? ও পানি খাচ্ছিলো। আমাকে দেখেই ফিক করে আব্বুর গায়ে পানি ফেলে দিয়েছে ? এই জন্য সকাল সকাল নাস্তা হিসেবে আব্বুর কাছে কয়েক দফা বকা জুটেছে ওর কপালে ?? সাথে ওকে ফ্লোর পরিষ্কার করতে হয়েছে ??
,
এইসব দেখে আমার দিনটা ভালোই শুরু হলো কিন্তু কি করবো? স্বভাব তো আর এত তাড়াতাড়ি পাল্টায় না তাই আমিও এই সুযোগে আম্মুর গলা ধরে বলেছি, ” আম্মু দেখলে আমি সকাল সকাল উঠলে তোমাদের কত্তত্তত্ত সমস্যা!! তার থেকে আমি কালকে থেকে আবার আগের মত লেট উঠব,, কালকে থেকে তোমার ডিউটি আবার শুরু ওকে??? উম্মম্মম্মম্মমাাাহহহ ??” [দেখলেন আমি কত্ত চালাক?]
কিন্তু এর রিপ্লাই হিসেবে আম্মু আমার পেছনে খুন্তি নিয়ে রেস শুরু করে দিলো?,, উফফফ ভালোর আর কোনো মূল্য ই নেই দুনিয়াতে ????
.
আমি আমার ফ্রেডদের সাথে কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
****** এই হলো রাস্তা-ঘাটের অবস্থা ? দরকারের সময় রিক্সা পাওয়া যায় না আর অন্য সময় এই রিক্সার জন্য আমি রাস্তা পার হতে পারিনা ?***
.
আজকেও কোনো রিক্সা নেই। তবে আজকে আমি একা নই জন্য বোর হচ্ছি না ? অবশেষে রিক্সা পেলাম। তিনজন এক রিক্সায় উঠে কলেজে চলে আসলাম। কলেজে পৌঁছে আমাদের তো পাগল প্রায় অবস্থা,, কত স্বপ্ন ছিলো আমাদের এই কলেজে পড়ার। শহরের সব থেকে নামি কলেজ বলে কথা ?? আমরা কলেজের ভেতরে গেলাম। কলেজে পরিবেশটা অনেক সুন্দর। দুইপাশে বাগান করা, কত ফুল!!! হঠাৎ এক উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হলো,, আমরা বুঝলাম না ঠিক হচ্ছেটা কি? মেয়েরা মেকআপ ঠিক করছে, উৎসুক হয়ে সবাই গেটের দিকে তাকিয়ে আছে। তাই আমরাও গেটের দিকে তাকালাম। দেখলাম ২ টা ইম্পোরটেড গাড়ি ঢুকলো। ১টা গাড়ি থেকে ৩জন ছেলে আর ২ জন মেয়ে নামলো আর অন্যটা থেকে ১জন ছেলে বের হলো ফর্সা, লম্বা, চোখটা অনেক সুন্দর, একটা নেভি ব্লু কালারের টি-শার্ট, তার উপর ব্লাক জ্যাকেট, অ্যাশ কালারের জিন্স ,, যেকেউ crush খাবে ?? আমিও crushed কিন্তু আমি তো আর লুচু না তাই মুখটা ঘুরিয়ে নিলাম,, আমি তো আহানকে ভালোবাসি,,।।। ছেলেটাকে দেখার পর মেয়েগুলো সব লুচুতে পরিণত হলো, যেটা দেখে আমার মাথা গরম হয়ে গেল। হুহ,,, whatever !! আমি ওখান থেকে চলে আসলাম ???
.
আমার পেছন মিতু আর নিশা ও আসলো। কিন্তু ২জনই ওই ছেলেটাকে নিয়ে বক বক করছে ?..
নিশাঃ ছেলেটা কি জোস না?? ?
মিতুঃ হ্যা রে আমি তো হা হয়ে দেখছিলাম??
আমিঃ ওই তোরা চুপ করবি???? তখন থেকে লুচুদের মত করছিস কেন? তোরাও ওই মেয়েগুলোর মত লুচু হয়ে গেলি নাকি?? ?
মিতুঃ আমরা আবার কি করলাম??
নিশাঃ তোকে তো কিছু বলিনি। আমরাই ডিসকাস করছিলাম ?
আমিঃ ডিসকাস করলে আমার সামনে থেকে দূরে গিয়ে কর,, যত্তসব ?? [ গট গট করে রেগে চলে যাচ্ছিলাম আর কিছু একটার সাথে বাড়ি খেয়ে পড়লাম। মনে হলো আমার উপর কোনো বস্তা পড়েছে,, মেজাজটা খারাপ ছিলো তাই বলেই ফেললাম, ” ওহ আল্লাহ গো,, কলেজে বস্তা আসলো কোথা থেকে!!? কোন কানা রে? দেখে চলতে পারেন না??? চোখ পকেটে নিয়ে ঘুরেন নাকি? কি ভারী আল্লাহ গো!! আমার কোমড়টা গেল? এইবার আমাকে কে বিয়ে করবে?? আহান তো সিউর আমাকে আর বিয়ে করবে না???”
.. এতক্ষণ চোখ বন্ধ করে বকবক করছিলাম। চোখ খুলে আমি তো পুরা আকাশ থেকে ধপাস করে নিচে পড়লাম ????,, OMG !! ? এ তো নিচের সেই ছেলেটা।। আমার উপর পড়ে আছে, ? আমার চোখের দিক তাকিয়ে আছে,? আমি চারপাশে তাকিয়ে দেখি সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি তাকে একটা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে উঠে দিলাম এক দৌড় ?? কি লজ্জা কি লজ্জা। আমার লাইফে আমি ২ বার লজ্জায় পড়লাম। প্রথমে আমার বোনটার জ্বালায় আহানকে কল দিয়ে আর দ্বিতীয়ত আজকে এই ছেলের জন্য,, ইশশশশশশ!! ??
°° আরোহীর এত নাটকীয় কথাগুলোর পর হঠাৎ করে এইভাবে দৌড় দেওয়া দেখে সবাই হতবাক ??°°
.
নীলঃ আহান তুই ঠিক আছিস?
আহানঃ ( নিচ থেকে উঠে জামা-কাপড় ঝাড়তে ঝাড়তে) হ্যা, ঠিক আছি। ( মনে মনে, strange girl)
.
[ জি হ্যা রিডার,, এ-ই হলো সেই আহান। আরহী কখন আহানকে দেখেনি জন্য চিনতে পারেনি আর আহানও আরহীকে কখনও দেখেনি। ]
°
আরোহী প্রচন্ড লজ্জা পেয়েছে তখন। সেজন্য নিজের বান্ধবীদের সামনেও যায়নি আর। একা একা মাথা নিচু করে হাটছে আর ঘটনাটা বার বার মনে পড়ছে ওর,।। হঠাৎ,,
সায়রঃ হেই ?
আমিঃ ??? ??
সায়রঃ আরে জাস্ট রিল্যাক্স,, হাই আম সায়র। তোমার সিনিয়র। ৩য় বর্ষে
আমিঃ ওহ! আমি আরহী ? ১ম বর্ষে
সায়রঃ কোনো সমস্যা হলে আমাকে বলবা ওকে??
আমিঃ ওকে ভাইয়া ?
সায়রঃ ? Don’t call me that stupid ভাইয়া ?
আমিঃ ওহ! ? ওকে ( পাশ কাটিয়ে চলে আসলাম)
.
°° সায়রঃ (মনে মনে) মেয়েটা দেখতে অনেক কিউট তো। একে পটাতে হবে ?
°°°°°°°
এইদিকে আহান তার সব ফ্রেন্ডদের [মেঘ, মিম, ফারহান, ফারিয়া আর অর্ণব ( জি, RJ ও এইখানেই পড়াশোনা করেন) ] সাথে কথা বলছে °°°°
আহানঃ আচ্ছা দোস্ত আমি কি ভয়ংকর দেখতে? মানে আমাকে দেখে কি কারো ভয় পাওয়া স্বাভাবিক? অথবা আমার কথাগুলোকি রুড?
মেঘঃ মোটেই না। তোর জন্য কত মেয়ে পাগল। তোকে দেখে কত মেয়ে তোর কাছে আসতে চায়,, তোর গান শুনে কত মেয়ে ফিদা। আর তুই তো একটাকেউ পাত্তা দিস না ?
আহানঃ তাহলে ওই মেয়েটা ওভাবে দৌড় দিল কেন?
মিমঃ আরে বেচারি লজ্জা পেয়েছে ?
আহানঃ তাই বলে এইভাবে ভুত দেখার মত দৌড়! ?
অর্ণবঃ হাহাহা রেডিওর মেয়েটাও তো এমনই ছিল??
সবাইঃ ?????
আহানঃ (মনে মনে) কে এই মেয়ে? চেহারায় এত মায়া ? আবার ওইদিনের রেডিওর মেয়েটার মত Strange..!! উফফফ যেই হোক এই মেয়ে whatever I don’t care ? এরা কারা?? অন্যদের থেকে একদম আলাদা,, ? যেই হোক আমি রেডিওর ওই মেয়েটাকে খুঁজে বের করবই একদিন ???
….
.
আরোহি লজ্জায় আজ কোনো ক্লাসই করেনি। সেই সকাল থেকে মুখ ফুলিয়ে কলেজের ছাদে বসে আছে একা একা ? একটুপর মিতু আর নিশা আরোহিকে খুঁজতে খুঁজতে ছাদে হাজির,,,,
মিতুঃ ওহ তুই ফাইনালি এইখানে? আর আমরা সারা কলেজ খুঁজতে খুঁজতে হয়রান ?
নিশাঃ তোর জন্য আজকে এতো ব্যায়াম করা হয়ে গেছে যে আগামী ৭ দিন আমাকে আর ব্যায়াম করতে হবে না ?
আরোহি কিছু না বলে নিচে চলে আসলো। পেছন পেছন মিতু আর নিশাও চলে আসলো। ওরা বুঝতে পেরেছে আরোহির মন খারাপ তাই আর কিছু বলেনি। আরোহি নিচে এসে বলল, ” আমার ভালো লাগছে না, আমি বাসায় যাচ্ছি। তোরা ক্লাস কর, আমাকে তোদের নোটস গুলো দিস। বাই” (কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আরোহি চলে গেল),,, মিতু আর নিশা হতভম্বের মত তাকিয়ে আছে,, কারণ ওদের এত বছরের ফ্রেন্ডশিপে ওরা এটা জানে যে, এত তুচ্ছ বিষয়ে আরোহি এইভাবে চলে যাবে না। তাহলে কি হলো আরোহির? ??
আরোহি গেট দিয়ে বের হওয়ার আগে পার্কিং -এ আহানদের দেখতে পায়। তারপর দ্রুত বের হয়ে যায়,।
.
বাসায় এসে আরোহি সোজা নিজের ঘরে গিয়ে দরজা হালকা করে দেয়, আর তার গিটার নিয়ে বারান্দায় গিয়ে সুর তোলে আহানের কণ্ঠে শোনা প্রথম গানের, “গল্পগুলো আমাদের”। আরোহির চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে, আরোহী একা একা বলতে শুরু করে, ” আহান আমি তো শুধু তোমাকেই ভালোবাসি, না দেখে না চিনে,, শুধুমাত্র তোমার ভয়েস আর তোমার কথা শুনেই আমি তোমায় ভালোবেসে ফেলেছি ❤ তোমার গান শুনেই প্রথম আমার হার্ট বিট অসম্ভব মাত্রায় বেড়ে গিয়েছিলো কিন্তু আজকে কেন আবার এমন ফিল হলো বলো না? হ্যা প্রথম আমি লজ্জা পেয়ে দৌড়ে ছিলাম, কিন্তু একটু পর খেয়াল করি আমার হার্ট বিট বেড়ে গেছে, তোমার গান শুনে যেমন ফিল হয়েছিলো তেমন ফিল হচ্ছে ? কিন্তু কেন? এটা কি শুধু প্রথম কোনো ছেলে আমার কাছে এসেছে সেইজন্য? নাকি অন্যকিছু? ? কিন্তু আমি শুধু তোমাকে চাই আহান শুধু তোমাকে। তুমি যে আমার #স্বপ্নের_crush,, ❤”
আরোহিকে ওভাবে আসতে দেখে অরনিও ওর পেছন পেছন আসে আর দরজা লাগানো না থাকার কারনে সব কিছু শুনতে পায়। অরনি মনে মনে ভাবে,” এখন দেখি আমাকেই কিছু করতে হবে। নয়তো এর দ্বারা কিছুই হবে না, আর নিজে কষ্ট পাবে ? এই যে আমার বোন কি করে হলো!!!?? কোথায় আমার লাইন সেট করে দিবে না তো আমি ওর লাইন সেট করে দিচ্ছি ?৷ কিন্তু কি যে করি??”
°°°°°ক্লাস শেষে সবাই বাসায় চলে আসে,,। আহানও বাসায় গিয়ে এখনো এইটাই ভাবছে “এই মেয়েটা কে? আবার এত তাড়াতাড়ি চলে গেলো কেন কলেজ থেকে? ওর ভিতু চেহারার দিকে তাকিয়ে থাকতে আমার এত কেন ভালো লাগছিলো? আর আমার হার্ট বিট? হ্যা আমার হার্ট বিটও তো ফাস্ট হয়ে গেছিলো ?!! উফফ যেই হোক I don’t care”
°°°°
এইদিকে অরনি পড়েছে মহা চিন্তায়। নিজের রুমে বারবার পায়চারি করছে আর একা একা বকবক করছে,” উফফফ আমার মতো একটা বাচ্চা মেয়ের মাথায় এত হার্ড ম্যাটার নিয়ে বুদ্ধি আসবে কোথা থেকে? কি যে করি? এদের মিলাবো কি করে? আর ওই কলেজের ছেলেটাই বা কে?? উফফ কোনো আইডিয়া আসেনা কেন ? …………………………………………………………………………. আইডিয়া!!!!! যদি সামহাউ আমি RJ র সাথে ফ্রেন্ডশিপ করতে পারি তাহলে আপু আর আহান জিজুকে এক করতে পারবো ? আর RJ র সাথে আমার সেটিংও হয়ে যেতে পারে ?? তখন আমি আর RJ ?? আমাদের #স্বপ্নের_crush গুলো আমাদের হবে ? ? ইয়ায়ায়ায়ায়াহুউউউ! লুঙ্গি ড্যান্স লুঙ্গি ড্যান্স ? না না আমি তো আর লুঙ্গি পড়িনা তাই ঢিংকা চিকা ঢিংকা চিকা ???? তাহলে কালকে থেকে আমার মিশন শুরু। এখন আগে RJ র ডিটেইলস কালেক্ট করতে হবে। হুম ?”
°°
অরনি তার কাজে লেগে গেলো। আর আরোহি তার কল্পনায় ?
°°°
Next day কলেজে,
আরোহি গেটে ঢোকার সময় চেক করলো আহান এসেছে নাকি। দেখলো গাড়ি আছে কিন্তু তারা আসে পাশে নেই। আরোহি একটু রিল্যাক্স হয়ে ক্লাসে গেলো। আজ ক্লাস করলো ভালোভাবে। যাক কালকের জন্য কোনো প্রবলেম হয়নি ? অবশ্য বেশি কেউ দেখেনি তবুও একটু ভয় ও লজ্জা তো পাবেই………
…
সিড়ি দিয়ে নামার সময় দেখলাম সামনে সায়র।
আরোহিঃ (মনে মনে) এই লুচু টাইপের ছেলেটা এইখানে কি করে ?
সায়রঃ হেই আরোহি! তোমাকেই খুঁজছিলাম ?
আরোহিঃ জি ভাইয়া বলেন ? ( শয়তানের নাম না নিতেই হাজির ?)
সায়রঃ ?তোমাকে না বলছি আমাকে ভাইয়া বলবা না
আরোহিঃ আসলে ভাইয়া আজকে সকালে এক জ্যোতিষির সাথে দেখা হলো। উনি বলেছেন আজকে আমি কাউকে ভাইয়া ছাড়া অন্যকিছু বলে ডাকলে নাকি তার অনেক বড় ক্ষতি হবে, তার নাকি কখনও বিয়ে হবে। আর আমি কিভাবে আপনার এত বড় ক্ষতি করতে পারি বলেন???? তাই আজ আমার ভাই দিবস ?? (মনে মনে, তোকে তো আমি রাখি পরায় ছাড়ব, লুচু একটা? তোর ধান্দা বুঝিনা আমি ? আফ্রিকান উগান্ডা কাহিকা, মন চাচ্ছে তোর চুলে গাম লাগাই দিই ?)
সায়রঃ আচ্ছা ওকে ওকে।
আরোহিঃ আচ্ছা ভাইয়া আসি। ভালো থাকবেন,,
(সায়রকে কিছু বলতে না দিয়ে আমি দিলাম এক দৌড়) কিন্তু দূরভাগ্য, সামনে তাকিয়ে দেখি ওই ছেলেটা (আহান) আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে কারণ আমি আবার ওই ছেলেটার (আহান) সামনেই দৌড় দিছি,, ??? আল্লাহ দড়ি ফেলাও এরে তুলে দেই। জীবনে যতবার দৌড় দিছি এর সব এর সামনেই ?? উফফফ শান্তিতে দৌড়ও দিতে পারি না আজকাল। আমি এইবার উল্টো দিকে ঘুরে দিলাম এক দৌড় ?? [( মনে মনে) ভাগ মিলখা ভাগ, আরে না না আমি তো আরোহি,, তাহলে ভাগ আরোহি ভাগ???]
আহানঃ ??????? কি মেয়েরে বাবা সব সময় দৌড়াতেই থাকে! আর আজকে ওর ভাই দিবস!!! ?????
°
.চলবে
স্বপ্নের_crush ??
Part-4
writer : Borno ☺
.
আহানঃ ??????? কি মেয়েরে বাবা সব সময় দৌড়াতেই থাকে! আর আজকে ওর ভাই দিবস!!! ?????
নিহাঃ হেই আহান,, একা একা হাসছ কেন বেবি? ( এই হলো নিহা। বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে। অনেক ইগো। আর আহানকে পছন্দ করে তবে আহান ওকে এক কথায় সহ্য করতে পারে না। )
আহানঃ না কিছু না [(মনে মনে) এই মেয়েটা আবার!! ??]
নিহাঃ চলো আহান আমরা কেন্টিনে যাই
আহানঃ ওকে। (কারণ আহান জানে এখন নিহাকে নিষেধ করলেও ও শুনবে না)
°°°
এইদিকে আরোহি এক দৌড়ে ক্যান্টিনে এসে পৌছে পর পর ২ গ্লাস পানি শেষ করল ?
মিতুঃ কি রে আজকাল কি তুই রেসে দৌড়ানোর প্রাকটিস করছিস নাকি? যখন দেখি তখনই দৌড়াচ্ছিস ?
আরোহিঃ আরেএএএএএ সকাল সকাল ওই লেজ কাটা বানরটার সাথে দেখা হলো। আজ আমার সারাদিনটাই খারাপ যাবে,, ধুর ধুর ধুর ??
নিশাঃ লেজ কাটা বানরটা আবার কে? ???
আরোহিঃ আরে ওই যে সায়র না কায়র ?
মিতু ও নিশাঃ ওহ ???
আরোহিঃ তার উপর আবার কালা কান কাটা কুমিরটা আবার আমি দৌড়ানোর সময়ই সামনে পড়েছে
মিতুঃ এইটা আবার কে রে?
আরোহিঃ আরে কালকের ঐ ছেলেটা,, কালা কুমির কোথাকার আমি দৌড় দিলেই সামনে হাজির হয়। মনে হয় ভুত-টুত হবে যেভাবে সব সময় সামনে হাজির হয়। ইচ্ছা করে কেটে কুচি কুচি করে আলু ভর্তা বানাই ?
নিশাঃ দোস্ত চুপ যা আর কিছু বলিস না
আরোহিঃ কেন রে? তোর এত গায়ে লাগছে কেন? ওহ তোদের তো আবার ক্রাশ হুহ? ঐ সাদা হাতিটাকে তো আমি জলে চুবিয়ে মারব। আমি জীবনে এত বার দৌড়াইনি যতবার ওর সামনে দৌড়েছি। সাদা হাতি কোথাকার, পঁচা ইঁদুর, কান কাটা তেলাপোকা, কালো বিড়াল, পঁচা ফুচকা, ছাগলের ৪ নম্বর বাচ্চা আর আর… ??? আর কি বলা যায় রে? ( এতক্ষণে আরোহি ওদের দিকে তাকাল)
মিতু ও নিশাঃ ???
আরোহিঃ কি রে? তোদের চেহেরা এমন দেখাচ্ছে কেন? ( বলে পিছনে ঘুরে যা দেখল তাতে আরোহির কান্না করার মতক অবস্থা।)
আরোহি দেখলো যে ????..আহান পকেটে হাত দিয়ে রাগি লুক দিয়ে তাকিয়ে আছে ?????????
আর এইদিকে আরোহিঃ??????
°°
আহান কিছু না বলে আরোহির হাত ধরে টেনে একটা রুমে নিয়ে গিয়ে দরজা আটকে দিলো
আরোহিঃ ক..ক.. ই.. কিক.. কি করছেন।। দ..দদ.. দরজজা লাগাচ্ছেন কে. কেন..নো?? ???
আহানঃ কেন? কি বলছিলে যেন? আমি সাদা হাতি? আমি কালা কুমির? like seriously?
আরোহিঃ ন..না.. নাহ মানে
আহানঃ তোমার না আমাকে কেটে কুচি কুচি করার ইচ্ছা?? আমি তো তোমার সামনেই আছি।। কুচি কুচি করে কাটো দেখি কেমন পার? ?
আরোহিঃ প্লিজ ছেড়ে দিন। আমি তো মজা করেছি। ( অযথা হাসার চেষ্টা করে ?) আপনি দেখি মজাও বুঝেন না?
আহানঃ তাই? এইটা মজা ছিল? তাহলে আমিও একটু মজা করি? কি বল? ( বলে সামনে এগিয়ে যেতে থাকে)
আরোহিঃ প্লিজ আমি একটা বাচ্চা,, অবুঝ একটা শিশু। একটা দুঃস্বপ্ন ভেবে ভুলে যান
আহানঃ তুমি বাচ্চা??? ? তবে অবুঝ তো বটে
আরোহিঃ ? আমাকে পচাচ্ছো!!
আহানঃ যা ভাব্বে তাই
আরোহী রেগে আহানকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল আর আহান আরোহির দৌড় দেখে হাসতে হাসতে পাগল???
°°°° নিহা সবটা খেয়াল করল। নিহা তো রেগে আগুন। নিহা ভাবতে থাকে কিভাবে একে আহানের কাছে থেকে দূরে সরানো যায় °°°°
আরোহিঃ বেটা বজ্জাত,, বুনো ওল,, বুড়ো বাঘ, ভিগি বিল্লি হুহ আমার সাথে ফাজলামি ? ৩২টা থাপ্পড় দিয়ে ১টা দাতঁ ভেংগে দিব ?
আহানঃ বলা শেষ?
আরোহিঃ আল্লাহ আবার শুনে ফেলেছে? দড়ি ফেলাও আমি উঠে যাই ??? ( চান্দু আমি আর ধরা দিচ্ছি না, এইবার আহান আমাকে ধরার আগেই আমি ফুড়ুৎ ??)
আহানঃ আমি কি এমন করলাম যে এই মেয়ে খালি আমার থেকে দূরে পালায়??
…
Next day at college,
আরোহিঃ আমি কলেজে ঢুকতেই সায়র আমাকে সিঁড়ির দিকে ডাকলো ?
সায়রঃ হেই কেমন আছো?
আরোহিঃ জি ভাইয়া ভালো। আর আপনি?
সায়রঃ আজকে আবার ভাইয়া বলছো কেন? ?
.
আরোহিঃ না আসলে ভাইয়া কালকে আম্মুকে ঐ জ্যোতিষির কথা বলার পর আম্মু আবার ঐ জ্যোতিষির কাছে গিয়েছিলো। তিনি বলেছেন, কালকে যাকে যাকে ভাইয়া ডেকেছি তাদের আজীবন ভাইয়া ডাকতে। নাহলে নাকি ঘোর অমঙ্গল ? (ডাহা মিথ্যা কথা?)
.
সায়রঃ (আরোহির হাত চেপে ধরে) আমার সাথে মজা কর? আমাকে কি তোমার বোকা মনে হয়?? কিসের ভাই হ্যাঁ?
আরোহিঃ ( আমার হাতটা অনেক জোরে চেপে ধরেছে জন্য আমার হাতে খুব পেইন হচ্ছে) ?? ভাইয়া সরি। আর এমন হবে না। আমার লাগছে
সায়রঃ কিহহ!! আবার ভাইয়া বলা? তোমাকে দেখছি ভালো কথায় কাজ হবে না ?
আরোহিঃ ( সায়র আমার হাতটা ক্রমশই জোরে চেপে ধরেছে আমার চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে ??????) প্লিজ আমার হাতটা ছাড়ুন
______ হঠাৎ কেউ এসে আমার হাতটা সায়রের হাত থেকে মুক্ত করলো। আমার হাতে এতো পেইন হচ্ছিলো যে আমি সিঁড়িতে বসে পড়লাম ???
.
আহানঃ (আমি উপর তলা থেকে নামার সময় দেখলাম সায়র আরোহির হাতটা অনেক শক্ত করে ধরে রেখেছে। আরোহি অনেক কান্না করছে, হাতটা ছাড়াতে চাচ্ছে কিন্তু তবুও সায়র ওর হাতটা ধরে আছে। এইটা দেখে মাথাটা গরম হয়ে গেল। তাই গিয়ে হাতটা ছাড়ালাম। আর মাথা ঠান্ডা করে পরিস্থিতি সমলাতে বললাম) কি হচ্ছে? ও কান্না করছে কেন? এনি প্রবলেম?
সায়রঃ নো। ইটস ওকে। ( চলে আসলাম, কারণ আহানের বাবা কলেজের ট্রাস্টি)
°°°°°°°°° সায়র যাওয়ার পর
আহানঃ তুমি ঠিক আছো তো?
আরোহিঃ হ্যাঁ (কিন্তু আমার হাতে অনেক ব্যাথা করছে??)
আহানঃ সত্যি তো? ?
আরোহিঃ জি। থ্যাংকস ?
আহানঃ তোমার হাতটা দেখি???
আরোহিঃ কেন? আমার হাত দেখে কি হবে?? আহহহ ??
আহানঃ ( কিছু না বলে ওর হাতটা জোর করে দেখার জন্য টাচ করতেই ও আহ করে উঠে) হাতের অবস্থা তো খুব খারাপ। পুরো লাল হয়ে গেছে। আর তুমি বলছো ঠিক আছো!? ?
আরোহিঃ ????
আহানঃ চল
আরোহিঃ কোথায়?
আহানঃ ??? ( কোনো কথা না বলে ওকে গাড়িতে করে হসপিটালে নিয়ে গিয়ে ব্যান্ডিস করিয়ে নিলাম) এরপর ওর বাসায় দিয়ে এলাম
আরোহিঃ ( গাড়ি থেকে নেমে) আচ্ছা আসি
আহানঃ ওয়েট। তোমার নাম্বারটা দাও
আরোহিঃ ( বেটা ফাজিল, একটু হেল্প করে আবার নাম্বার নেওয়ার ধান্দা!! ? বেটা বজ্জাত, কালা ছাগল, ডাস্টবিনের পচা ময়লা, হাতির দিম, ছাগলের মোরব্বা…….)
আহানঃ হয়েছে মনে মনে গালি দেওয়া??
আরোহিঃ (হায় আল্লাহ!! ??? আমার মনের কথা বুঝলো কিভাবে!!?)
আহানঃ থাক আর ভেবো না। আমি তোমার মনের কথা বুঝলাম কি করে সেটা ঐ ছোট্ট মাথায় ঢুকবে না, এইবার নাম্বা….
আরোহিঃ ০১৭৭………… (উনাকে পুরো কথা বলতে না দিয়ে নাম্বার বলে বাসায় দিলাম দৌড়। কারণ উনি যে হারে আমার মনের কথা বুঝে যাচ্ছেন এতে আমার দিন ঘনিয়ে এসেছে)
আহানঃ ??? ????? ( হাসব না কাদব??) আজব মেয়ে
……. গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বাসায় চলে আসলাম……..
.
.
.
রাতে,
আহানঃ ওকে একটা কল দিবো? না থাক ?
এইদিকে, আরোহিঃ কি ব্যাপার!! কল করে না কেন? ওইভাবে নাম্বার নিলো আর এখনও কল দেয় না!!?? ?? হুহ আমার কি!? ধুর ধুর ধুর ?
আহানঃ কলটা দিয়েই দিই ?
ক্রিং ক্রিং ক্রিং ??
আরোহিঃ হ্যালো ?
আহানঃ বলো ?
আরোহিঃ আজব তো আমি কি বলব!! আপনি কল করেছেন আপনি বলবেন ????
আহানঃ এইটা কি হলো!? ??? পাগল তোমার কি অবস্থা এখন সেটা বলো
.
আরোহিঃ তো সেটা বলেন। জি আমি ভালো আছি। আমার হাত- পা ভাংগেনি যে আমি এতক্ষন অসুস্থ থাকব ?
.
আহানঃ যেভাবে চলাফেরা কর তাতে হাটো কম দৌড়াও বেশি আর আমার উপর উল্টায় পাল্টায় পড় বেশি ????
.
আরোহিঃ আপনার উপর পড়তে আমার বয়েই গেছে
আহানঃ তাহলে পড় কেন?
আরোহিঃ আমি কি ইচ্ছা করে পড়ি নাকি। আচ্ছা এরপর থেকে সায়রের উপরে পড়ব??
.
আহানঃ হ্যাঁ then সায়রকে হাসপতালে পাঠাতে হবে
আরোহিঃ কেন?
আহানঃ তোমার যা ওজন ??????
আরোহিঃ হুহহহহহ ? আর জীবনেও আপনার উপর পড়বো না…. বাই ?
আহানঃ আরে শুনো.. টুট টুট টুট.. হাহাহা পাগল??
.
পরের দিন কলেজে,
আরোহিঃ উফফফ আজ অনেক লেট হয়ে গেছে। স্যার আমাকে আজ কাচা চিবিয়ে খেয়ে ফেলবে..
হঠাৎ… আম্মুউউউউউউ ??? এই কলেজে এত বস্তা কেন? আর সব বস্তা আমার উপরে পড়ে কেন!!? ?? (with lots of নেকা কান্না)
চোখ খুলে দেখি আমি আবার আহানের সাথে ধাক্কা খেয়েছি ?? ?
আহানঃ কি বললে??? আমি বস্তা!?
আরোহিঃ এত ভারী হলে বস্তা না বলে আর কি বলব? বুলডোজার!!?? ?
আহানঃ কালকে না বললে তুমি আমার উপর আর পড়বে না, তো আজ আবার কি হলো?
আরোহিঃ ???? হুহ আমার বয়েই গেছে আপনার উপর পড়তে ( বলেই উঠে পড়লাম)
আহানঃ তাহলে পড়লে কেন!?
.
আরোহিঃ আমার তো ক্লাসে লেএএটট…??? ( দিলাম এক দৌড় ????)
আহানঃ ??? হলোটা কি!?? এই মেয়ে এইভাবে সব সময় দৌড়ায় কেন!? সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে ?
আরোহিঃ [আরে বুঝলেন না তো? ওই ছেলেটার সাথে কথা বলতে গিয়ে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে আমি লেট হয়ে গেছি। যেই মনে পড়লো দিলাম এক দৌড়। নয়তো স্যার আমার ১৩টা ২০ বাজিয়ে দিতেন ?]
°°°
ক্লাস শেষ করে বের হয়ে ক্যাম্পাসের দিকে যাচ্ছিলাম দেখলাম নিহা কয়েকজন ছেলের সাথে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ,
নিহাঃ হেই ইউ, কাম হিয়ার
আরোহিঃ yes
নিহাঃ আমাদেরকে চিনো?
আরোহিঃ জি, আপনারা সিনিয়র
নিহাঃ তাহলে সালাম দিলে না কেন?
নিশাঃ সরি
নিহাঃ জানো তো সিনিয়ররা র্যাগিং করে ?
মিতুঃ জি ?
নিহাঃ তো তুমি একটা গান শোনাও
আরোহিঃ হোয়াট! এটা ঠিক না। আপনারা র্যাগিং করছেন এটা স্যাররা জানলে আপনাদের পানিশ করবেন
নিহাঃ how dare you!? ? তুমি আমাকে ভয় দেখাও? you bloody poor,,, (বলেই ওর হাত চেপে ধরলাম ??)
আরোহিঃ আহহহ??? ( সবাই আমার হাতটাকেই ধরছে কেন???)
.
আহানঃ নিহা কি হচ্ছেটা কি ???
নিহাঃ ওহ কাম অন বেবি। আমরা তো কতজনকে র্যাগিং করেছি। তাই ওদেরও করছিলাম। কিন্তু ঐ মেয়েটা কি না আমাকে ভয় দেখায় ওর এত বড় সাহস
.
আহানঃ শাট আপ নিহা। ওদের কেউ ডিস্টার্ব করবে না।
নিহাঃ কেন? তোমার কি?
আহানঃ আমার অনেক কিছু [বলেই পিছনে ঘুরে দেখি আরোহি নেই] আরোহি কোথায়?
মিতুঃ এখানেই তো ছিলো। মনে হয় ছাদে গেছে
আহানঃ ওকে.. তোমরা দাড়াও আমি ওকে নিয়ে আসছি
নিশাঃ ইয়াহ ইয়াহ টেক ইয়োর টাইম ?
আহানঃ ? [ ব্লাস করতে করতে চলে গেল]
°°°°°°°
…ছাদে গিয়ে দেখলো…….
.
To be continued ……