হলুদ শহরের প্রেম পর্ব-০৫

0
209

#হলুদ_শহরের_প্রেম – [০৫]
লাবিবা ওয়াহিদ

বেশ কয়েকদিন কেটে যায়। নিপুণের দিনগুলো ব্যস্ততায় কাটছে তো আবার কখনো আবার ঝিম ধরে। তবে আলস্য সময় কাটানোর উপায় নেই। সে প্রতিনিয়ত যেভাবে পারছে সেভাবেই ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করছে। এইযে আজ, ছুটির দিন। বাসায় বসে না থেকে নিশাতকে নিয়ে বের হলো কোথাও ঘোরার উদ্দেশে। তাদের আশেপাশেই ঘোরার জায়গা আছে, সেসব জায়গাতেই ঘোরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে। বিকালের দিকে ফিরে আবার রিপোর্ট লিখতে বসতে হবে।

রিকশায় বসে যখন নিপুণ অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে তখন নিশাত তাকে ঝাকায়। নিপুণ চমকে ভাইয়ের দিকে তাকাতেই নিশাত বলল,
–“এসএসসির পর কোথায় পড়ব আপা?”
–“তোর সিদ্ধান্ত, তুই ভালো জানবি।”

নিশাত কিছুটা নীরব থেকে বলল,
–“আপা?”
নিপুণ তাকালো নিশাতের দিকে। নিশাত আমতা আমতা করে বলল,
–“আমার ক্রিকেট পছন্দ অনেক।”
–“তো খেলবি। বারণ তো করিনি।”

নিশাত দমে গেল। সে ঠিক কী বলতে চাইছে সেটা নিপুণ বুঝেও না বোঝার ভান ধরলো। ঘুরাঘুরির এক পর্যায়ে এসে যখন নিশাত নিপুণের সাথে ছবি তুলছিল তখন হুট করে নিপুণের পাশে এসে সুপ্ত দাঁড়ায়। নিশাত তাকে ফোনের স্ক্রিনে দেখে নড়তে চাইলে সুপ্ত তাকে থামিয়ে বলল,
–“একদম নড়বে না। ছবি ভালো আসছে, ক্লিক করো!”

নিপুণ সুপ্তের দিকে অবাক নজরে তাকাতেই নিশাত সুপ্তের কথামতো ফোনে ক্লিক করলো। ক্লিকটা জোরালো হওয়ায় পরপর ডাবল ক্লিক পড়ে যায়। নিপুণ চোখ রাঙিয়ে বলল,
–“এক্সকিউজ মি?”

সুপ্ত সোজা নিপুণের চোখের দিকে চেয়ে বলল,
–“জি ম্যাডাম?”

নিপুণ দাঁতে দাঁত চেপে বলল, “আরেকজনের ছবির মাঝে ঢুকে যাওয়া কোন ধরণের ভদ্রতা?”

–“এটাকে অভদ্রতা বলে না। অধিকার আদায় করে নেওয়া বলে।”

নিপুণ কপাল কুচকে বলল, “আপনি এবং আপনার আজেবাজে কথা। নিশাত ছবি ডিলিট কর।”

নিশাত এতক্ষণ দুজনকে অবাক হয়ে দেখছিল। নিপুণের কথা ছবি ডিলিট করে নিলে সুপ্ত বলে ওঠে, “নো, নিশাত। আগে ছবিটা আমাকে হোয়াট’স আপ করো তারপর যা খুশি করিয়ো।”

নিপুণ এবার নিশাতকে চোখ রাঙিয়ে বলল, “খবরদার এরকম কিছু করবি না। দে দেখি আমাকে ফোন।”

নিপুণ নিশাতের হাত থেকে মোবাইল নেওয়ার আগেই সুপ্ত ছোঁ মেরে মোবাইলটা কেড়ে নেয়। এক গাল হেসে বলল,
–“সুন্দরীদের এত হাইপার হতে নেই ম্যাডাম, শ্বাসকষ্টের মতো রোগ হয়ে যায়। আমি তো আর ডাক্তার নই যে সারিয়ে দিতে পারব।”

বলতে বলতেই সুপ্তের ফোন হঠাৎ টুং শব্দ বেজে ওঠে। এর মানে তার ছবি আসা সফল হয়েছে। সুপ্ত নিশাতের ফোন ফেরত দিয়ে হাসি-মুখে বলল,
–“অন্য একদিন দেখা হবে নিশাত।”

সুপ্ত চলে গেল। শুধু খেপিয়ে দিয়ে গেল নিপুণকেই। সুপ্তের কাজকর্ম দিনদিন সহ্য সীমানার বাইরে চলে যাচ্ছে। ইচ্ছে তো করছে এখনই গিয়ে এর এসব কাণ্ড কারখানা রিপোর্টে গিয়ে লিখতে। এটলিষ্ট সবাই সুপ্ত’র ভালো মানুষির চেহারার ভেতরটা তো দেখতে পারবে।

———————
মিনহাজ সাহেব মিনমিন করে কিছু একটা পড়তে পড়তে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছেন। মিনহাজ সাহেবের স্ত্রী সাবিনা সুপ্তের রুম থেকে বেরিয়ে আসলেন। সুপ্তের শুকনো জামা-কাপড়গুলো ভাজ করে আলমারিতে রেখেছেন তিনি। সুপ্ত তার কাজ বাইরের কাউকে দিয়ে করাতে পছন্দ করে না। হয় নিজেই নিজের কাজ করে নয়তো তার মা তাকে গুছিয়ে দেয়। মিনহাজ সাহেব আড়চোখে স্ত্রীকে লক্ষ্য করে সরু গলায় বললেন,
–“নবাব আজ কোথায় গিয়েছে তার খোঁজ-খবর জানো?”

সাবিনা মলিন চোখে তাকালেন স্বামীর দিকে। স্বামী যে তাকে স্পষ্ট খোঁচা দিয়েছেন সেটা তিনি হাড়ে হাড়ে বুঝে নিলেন। সাবিনা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
–“হবে হয়তো, আশেপাশে।”

–“ওই আশেপাশেই থাকবে, আর মার-পিট করে বেড়াবে।”

–“কোথায় মারপিট করলো ও?”
–“করেনি কবে শুনি? তোমার লাই পেয়েই ছেলে এত মাথায় উঠেছে।”

সাবিনা এবার ভ্রু কুচকে বললেন, “লাই আমি একা দিলে এতদূর যেত না। আপনার এবং মাহমুদের লাইও পেয়েছে।”

মিনহাজ সাহেবও ভারী গলায় বললেন,
–“আমি কবে লাই দিলাম? ওর কোন কথাটা আমি শুনেছি?”

–“না শুনলেও চুপ তো থেকেছেন! এইযে এখন, রাজনীতি তো আপনার অনুমতি নিয়েই করছে তাই না?”

মিনহাজ সাহেবের মুখ-ভঙ্গি শক্ত হয়ে এলো। স্ত্রীর সাথে এ প্রসঙ্গে কথা বাড়ায় না। গম্ভীর গলায় বললেন,
–“নবাবজাদাকে কল দিয়ে বলো যেখানেই থাকুক মাগরিবের মধ্যে যাতে মসজিদে থাকে। আমি মসজিদ যাচ্ছি।”

বলেই মিনহাজ সাহেব উঠে দাঁড়ালেন। সদর দরজার দিকে আগাতে নিলে সাবিনা তাকে থামিয়ে বলল,
–“কলটা তো আপনিও দিতে পারেন। আর কত ছেলের থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখবেন?”

মিনহাজ জবাব দিলো না। দ্রুত বেরিয়ে গেল বাসা থেকে। তখনই রান্নাঘর থেকে ছুটে এলো মাসুদা। হন্তদন্ত গলায় এসে বলল,
–“তরকারিতে লবণ বেশি অইয়া গেছে খালাম্মা।”

সাবিনা বিরক্তির চোখে তাকালো মাসুদার দিকে। অল্প বয়সী মেয়ে মাসুদা। বয়স খুব সম্ভবত তেইশ চব্বিশ। বিয়ে করেছিল কিন্তু তার বর ভালো ছিল না বলে তালাক দিয়েছে। কোনো ছেলে-মেয়েও নেই। এভাবেই মানুষের বাড়িতে কাজ করে করে পেট চালায় সে। সাবিনা বিরক্ত গলায় বলল,
–“রান্নাঘরে চলো।”

মাসুদা সহসা নিষেধ করলো। বলল,
–“লবণ আপনেই সামলান খালাম্মা। সন্ধ্যা অইয়া গেছে, বাড়িত যামু।”

সাবিনা ভ্রু কুচকে বলল,
–“কোথায় সন্ধ্যা হলো? সবে সাড়ে পাঁচটা বাজে। ছয়টা পনেরোতে মাগরিবের আযান দিবে।”

মাসুদা তাও মানলো না। বলল,
–“আজকা আপনের বাড়িত আগে আইছি, তাই আগে আগেই আমার সন্ধ্যা অইয়া গেছে। খালুরেও দেকলেন না মাগরিবের নামাজে যাবে বলে চলে গেল? আমি তো পত্যেকদিন তার লগেই বাইরোই।”

মাসুদা থামলো। থেমে আবার বলল,
–“আমি যাই গা খালাম্মা। কালকা আবার আমু।”

মাসুদা কোমড় দুলিয়ে সাবিনার গায়ে একরাশ আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে চলে গেলো। সাবিনা মিনমিন করে বলল,
–“ফাঁকিবাজ মেয়ে! আগামীকাল থেকে মাহমুদের বাবাকে মাগরিবের নামাজের দশ মিনিট আগে বাসা থেকে বের হতে বলব।”

আজকের যুগে কাজের লোক পাওয়া খুবই মুশকিল। মাসুদা কয়েক বাড়িতে কাজ করে তাদের বাড়িতে আসে। তবুও কাজে ফাঁকিবাজি করে। সাবিনা একদিনও মাসুদার হাতে কাজ দিয়ে নিশ্চিন্তে বসতে পারেনি। সবসময় মাসুদার সাথে থেকে তাকে ধরে ধরে কাজ করাতে হয়। এসব ব্যাপারে সাবিনা যেমন বিরক্ত তেমনই ক্লান্ত। আর কত একা হাতে সংসার সামলাবে? সুপ্তটাও কথা শুনে না। সাবিনা কবে থেকে তাকে বলছে বিয়ের কথা, কানই দেয় না ছেলেটা। কিন্তু এবার তিনি এর হেস্তনেস্ত করেই ছাড়বেন। আগামীকালই জোবেদাকে খবর পাঠাবেন। তিনি ভালোই ঘটকালি করতে পারেন। এখন তার ঘটকালি কতটা ভালো সেটাই সাবিনা দেখে ছাড়বেন।

—————————–
নিশাতের ফর্ম ফিলাপের টাকা জমা দিতে নিপুণ স্কুলে এসেছিল। স্কুলে চলাফেরা করতে গিয়ে হঠাৎ নিশাতের এক স্যারের সাথে দেখা হয়। মধ্যবয়সী স্যার নিশাতকে নিয়ে কথা বলতে আলাদা ডাকেন নিপুণকে। নিপুণ চিন্তিত হয়ে পড়ে এ কথা শুনে। নিশাতের পড়াশোনায় কী কোনো খামতি চলছে? স্যার কোনো অভিযোগ করবেন না তো নিশাতকে নিয়ে। স্কুল ভবনের বাইরে কিছুটা দূরে দাঁড়াল নিপুণ স্যারের সম্মুখে। স্যার নিপুণকে আচমকা বিব্রতকর প্রশ্ন করে বসলেন,
–“শুনলাম তোমার নাকি ডিভোর্স হয়েছে?”

আচমকা এরূপ প্রশ্নে নিপুণ অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। নিপুণের চেহারায় সেই ভাব দেখে স্যার দ্রুত বললেন,
–“আরে, ভয়ের কিছু নেই। এভাবেই জিজ্ঞেস করলাম। একা ডিভোর্সী হয়ে নিশাতকে নিয়ে থাকছ এটা খুবই অবাকের ব্যাপার।”

নিপুণ সবসময় খেয়াল করেছে, ‘ডিভোর্সী’ শব্দটা তাকে কেমন দুর্বল করে ফেলে। এই দুর্বলচিত্তকে নিয়ে নিপুণ ভীষণ বিরক্ত। এই ধরণের পরিস্থিতির মুখোমুখি তো সে কম হয়নি। তাহলে কেন এই একটি শব্দে নিজেকে বারবার আটকে ফেলছে? নিপূণ যথাসম্ভব নিজেকে সামলে বলল,
–“অবাকের কী আছে স্যার?”

স্যার কথা ঘুরালো। বলল,
–“কী করো তুমি?”
–“দেশী-বিদেশী অনলাইন মিডিয়ায় রিপোর্টিং-এর জব করছি।”

নিপুণ এবার ভালো ভাবে তাকালো স্যারের দিকে। স্যারের দৃষ্টিভঙ্গি হঠাৎ-ই কেমন বদলে গেল। নিপুণ স্যারের চোখে কাম দেখে নির্বাক হয়ে যায়। স্যার রসিয়ে রসিয়ে আরও কিছু বলার চেষ্টা করলো। কিন্তু নিপুণ সেসব না শুনে সেখান থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করলো। কোনো রকমে স্যারকে এড়িয়ে বলল,
–“আমার দেরী হচ্ছে, যেতে হবে স্যার।”

নিপুণ যেতে নিলে স্যার হঠাৎ নিপুণের হাত ধরে বসলো। কামুক নজরে নিপুণকে আপাদমস্তক পরখ করে বলল,
–“চলো আমরা বিয়ে করে ফেলি। তোমাকে আমার ভালো লেগেছে। কেউ জানবে না আমরা বিয়ে করেছি, আলাদা থাকব। মাসে মাসে ভালো খরচও দিব। দিব্যি ভালো দিন কেটে যাবে নিশাতকে নিয়ে।”

নিপুণ আঁতকে ওঠে এই ধরণের কথা শুনে। যতদূর জেনেছে এই স্যার বিবাহিত, ছেলে-মেয়েও আছে। তার চাইতেও বড়ো ব্যাপার এই লোক নিপুণের বাবার বয়সী। নিপুণ চোখ রাঙিয়ে লোকটাকে বলল,
–“হাত ছাড়ুন স্যার। আমাকে সিনক্রিয়েট করতে বাধ্য করবেন না। এটা স্কুল।”

লোকটা নিজের ধ্যান, হুঁশ একদম খুইয়ে বসেছে যেন। নিপুণের হাত না ছেড়ে বলল,
–“আমিও সিনক্রিয়েট চাচ্ছি না। চলো বিয়েটা সেরে ফেলি। তোমারও তো পুরুষ সঙ্গ প্রয়োজন তাই না? আমি দিতে রাজি।”

নিপুণের গা গুলিয়ে এলো এই ধরণের বাজে কথা শুনে। নিপুণ কিছু বলার আগেই তাদের সামনে এসে দাঁড়ালো মিনহাজ সাহেব। মিনহাজ সাহেবকে দেখে স্যার চট করে নিপুণের হাত ছেড়ে দিলো। নিপুণ ঝাপসা চোখে তাকালো মিনহাজ সাহেবের দিকে। মিনহাজ সাহেব শক্ত চোখে স্যারের দিকে তাকিয়ে আছে। স্যার আমতা আমতা করছে, কিছু একটা বোঝানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছে মিনহাজ সাহেবকে। মিনহাজ সাহেব নিপুণের দিকে একপলক তাকিয়ে বললেন,
–“তোমার নাম কী?”

নিপুণ আমতা আমতা করে বলল,
–“নিপুণ।”
–“নিপুণ মা, তুমি কাজে যাও। আমি ওর ব্যবস্থা করছি।”

নিপুণ একপলক চেয়ে দেখল স্যারকে। স্যার অসহায় মুখে মিনহাজ সাহেবের দিকে তাকিয়ে। নিপুণ সেখান থেকে চলে গেলো। স্কুল থেকে বেরিয়ে একটি সিএনজিতে উঠে মুখে শাড়ির আঁচল চেপে কেঁদে ওঠে। এই ছোটো জীবনে তার আর কত কিছু দেখার বাকি আছে? সে যে এসব আর নিতে পারছে না। ধৈর্য ক্ষমতাও যে মলিন হয়ে আসছে।

মিনহাজ সাহেব এবার স্যারের দিকে তাকিয়ে চোয়াল শক্ত করে বললেন,
–“পুরুষ সঙ্গ প্রয়োজন তাই না?”

স্যার অত্যন্ত ভয় পেয়ে যায় মিনহাজ সাহেবের কথা শুনে। এর মানে কী তিনি সব শুনে ফেলেছেন। এ দিকটায় স্কুলের কোনো সিসি ক্যামেরা নেই। লোকটা সেই সুযোগই কাজে লাগিয়েছিল। কিন্তু মিনহাজ সাহেব যে এভাবে চলে আসবে কে জানত? স্যার হাঁটু গেড়ে বসে ক্ষমা চাইলো মিনহাজ সাহেবের কাছে। বারংবার মিনুতি করলো। কিন্তু বিশেষ লাভ হলো না। মিনহাজ সাহেব ক্ষমা করলেন না। উলটো দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,
–“পাওয়াচ্ছি তোর নারী সঙ্গ।”

বেশ অনেকদিন পর সুপ্তের ফোনে মিনহাজ সাহেবের নাম্বার থেকে কল এলো। বাইকে গা এলিয়ে রেখেছিল সুপ্ত। কিন্তু বাবার নাম্বার মোবাইলে ভেসে উঠতেই সুপ্ত চট করে উঠে বসে। দীপক কিছুটা দূরেই বিড়ি টানছিল। সুপ্ত ডাকে দীপককে। দীপক বিড়িটা ফেলে সুপ্তের দিকে এগিয়ে আসে। সুপ্ত ফোনের দিকে ভ্রু কুচকে চেয়ে বলল,
–“আজকে সূর্য কোন দিকে উঠেছে রে দীপক?”
–“কেন? কী হয়েছে?”
–“বাবা কল দিচ্ছে।”
অবাক হলো দীপক।
–“তো ধর কল। ইমার্জেন্সি হতে পারে।”

সুপ্ত গলা পরিষ্কার করে কল রিসিভ করলো। সালাম দিলো বাবাকে। ওপাশ থেকে মিনহাজ সাহেব গম্ভীর গলায় সালামের উত্তর নিয়ে বলল,
–“একটা কাজ আছে তোমার জন্য। সেই কাজ দিয়েই আমি দেখতে চাই এতদিন কোন রাজনীতির বিদ্যা শিখেছ তুমি!”

কল লাউড স্পিকারে ছিল। মিনহাজ সাহেবের কথা শুনে দুই বন্ধুই চরম অবাক হলো। সুপ্ত অবাক গলায় বলল,
–“ব্যাপার কী আব্বু?”

–“এক জানোয়ারকে ধরেছি। স্কুলের একজন অসুস্থ মানসিকতার স্যার। চাকরি গেলেও এর মানসিকতা সুস্থ হবে না। তাই একে তোমার কাছে হস্তান্তর করছি। কঠিন মামলা দিতে পারবে তো?”

মিনহাজ সাহেব থেমে আবার বললেন,
–“খবরদার যদি এ বেলায় নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছ তো!”

সুপ্ত বলল,
–“কী করেছে সেটা তো আগে জানতে হবে!”

মিনহাজ সাহেব খুলে বললেন সবকিছু। এক ফাঁকে সে নামটাও বলে ফেলেছেন নিপুণের। নিপুণের নাম শুনে সুপ্তের কান দুটো যেন গরম হয়ে গেলো। দীপক দাঁত দিয়ে নখ কাটলো। বিড়বিড় করে বলল,
–“শালা, আর মেয়ে পেলি না হাত বাড়ানোর জন্য। কুমিরভরা খালে পা বাড়ালি, তুই তো শেষ।”

চলবে—