#হৃদয়জুড়ে প্রেয়সীর আভাস
#পর্ব_২৫
#মোহনা_হক
-‘রুয়াত মা আয়াজ উঠেনিএখনো?’
সোফায় বসে ইনিমা আর রুয়াত একসাথে বসে কথা বলছিলো। মায়া চৌধুরীর কথা শুনে মাথা তুলে তাকায় তার দিকে। দেয়াল ঘড়িতে একবার তাকালো এগারোটা ত্রিশ বাজে। আয়াজ কখনো এতো সকাল পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকেনি। উঠে দাঁড়ায় রুয়াত।
-‘মা আসার সময় ওনাকে দেখেছিলাম ঘুমাচ্ছে।’
ভ্রু কুচকে এলো মায়া চৌধুরীর। এতক্ষণ ধরে ঘুমাচ্ছে? কাল রাতে তো ফজলুল চৌধুরী আর আরহাম কে বলেছিলো আজ প্রচারের কাজে বের হবে। তাহলে এতক্ষণ ঘুমাচ্ছে কেনো?
-‘ওকে তুলে দাও যাও।’
মাথা নেড়ে রুয়াত উপরে চলে যায়। ফজলুল চৌধুরী এসেছে বসেছেন বাড়ির বড় বউয়ের পাশে। ইনিমা মুচকি হাসলো তার শ্বশুড় কে দেখে। রুয়াত রুমে এসে দেখে আয়াজ উপুড় হয়ে ঘুমাচ্ছে। আয়াজের পিঠে
হাত দিয়ে গলার আওয়াজ হালকা উঁচু করে বলে-
-‘শুনছেন উঠুন।’
রুয়াতের কণ্ঠস্বর শুনে আয়াজ মাথা তুলে তাকায়। চোখগুলো একটু একটু লাল হয়ে আছে। সারা মুখে গম্ভীরতা। ঘুম ঘুম স্বরে বলে-
-‘কয়টা বাজে?’
-‘এগারোটা বাজতে চললো। আসলে মা বলেছে আপনাকে ঘুম থেকে তুলে দিতে।’
আয়াজ তার এক হাত কপালে রাখে। এতো সময় ঘুমিয়েছে। কাল রাতে তো একটুও ঘুমায়নি। রুয়াত উঠে আয়াজের পাঞ্জাবী বের করে দেয়।
-‘এখানে আসো রুয়াত।’
ধীর পায়ে রুয়াত আয়াজের সামনে দাঁড়ায়।
-‘জড়িয়ে ধরো একটু আমাকে।’
স্বাভাবিক কন্ঠস্বর আয়াজের। রুয়াত ও কিছু বললো না। আয়াজ কে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। প্রেয়সী কে বুকে জড়িয়ে ভালো লাগছে আয়াজের। অন্য রকম ভালো লাগা। রুয়াত কে কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে রেখে ছেড়ে দেয় আবার। ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে রুয়াত রুমে নেই। মেয়েটা কে একদমই শান্ত ভেবেছিলো আয়াজ। এখন দেখছে দু দন্ড কোঁথাও শান্ত হয়ে থাকে না। কাল সুন্দর করে বলে দিয়েছিলো যে আয়াজ যতক্ষণ বাসায় থাকবে ততক্ষণ তার চোখের সামনে থাকতে। কালকের কথা বোধহয় আজকের দিনটা শুরু হতেই না হতে ভুলে গিয়েছে। আয়াজ রুয়াতের নামিয়ে রাখা সাদা পাঞ্জাবী পড়ে নেয়। উপরে কালো রঙের কটি। হাতে ঘড়ি। চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করে একদম পরিপাটি হয়ে নিচে আসে সে। সোফায় পায়ের উপর পা তুলে আরহাম মোবাইল দেখছে। তার গায়েও সাদা পাঞ্জাবী আর উপরে কালো রঙের কটি। দু’ভাই সেম সেম পড়েছে। রুয়াত টেবিলে নাস্তা এনে রাখার সময় একবার আয়াজ আর আরহাম কে খেয়াল করে। এরা কি আজ শোক পালন করতে যাবে নাকি আজ? মুচকি হাসে রুয়াত। আয়াজ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। আর পাশের সোফায় আরহাম বসে। রুয়াত আবার ইনিমার কাছে আসে। রুয়াত এখনো জানে না যে তারা কোঁথায় যাচ্ছে। কিন্তু ইনিমা কে আরহাম বলেছে তারা আজ কোঁথায় যাবে। আয়াজ আর আরহাম এক সাথে নাস্তা করে নেয়। ফজলুল চৌধুরী আর মায়া চৌধুরী ইনিমা রুয়াতের সাথে খেয়ে নিয়েছে। আয়াজের পাশে রুয়াত দাঁড়িয়ে আছে।
দু ছেলে আর বাবার তিনজনের একই রকমের পোশাক। রুয়াতের জানার কৌতূহল বেশ কিন্তু সবার সামনে চুপ করে আছে। তারা আসলে যাবে কোঁথায়? মায়া চৌধুরী দু ছেলের পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। ফজলুল চৌধুরী দাঁড়িয়ে আছেন। প্রতিবার ইলেকশনের সময় একবার না একবার আয়াজের সাথে তারা দু’জন ও মিছিল বা বিভিন্ন সভায় যোগ দেয়। কাল এগুলো নিয়েই আলোচনা হয়েছিলো। ফজলুল চৌধুরী ছেলের কথায় যান সব সময়। নাহলে তার ছেলে আবার রাগ করে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু আরহাম কে রাজি করাতে আয়াজের কোনো কষ্ট করতে হয় না। রাজনীতির টুকটাক বিষয়ে সে জড়িত। যদিও কখনো এতো মূল্য দিয়ে কাজ করেনি।
-‘মায়া হয়েছে তোমার? আমাদের কিন্তু দেরি হয়ে যাচ্ছে।’
মায়া চৌধুরী সবার আড়ালে নিজের ওড়না দিয়ে চোখের অশ্রু মুছে নেয়। গতবার কি কাহিনীটাই না হলো। ছেলে কে এসব থেকে সরে আসার কথা বলতে পারবে না। যেনো সে সাহসটুকু ও নেই তার।
-‘সাবধানে থেকো তোমরা। আর আরহাম শুন আয়াজের মাথা হুটহাট গরম হয়ে যায়। ওকে সামলে নিস।’
আরহাম তার মাকে এক পাশ থেকে জড়িয়ে ধরে বলে-
-‘তুমি এতো চিন্তা করো না মা।’
আয়াজ একবার রুয়াতের দিকে তাকায়। এই মুহুর্তে ইচ্ছে করছে প্রেয়সী কে একবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তার থেকে বিদায় নিতে। অদম্য ইচ্ছেটা কে বির্সজন দিয়ে দিলো। রুয়াত অন্য দিকে তাকিয়ে আছে। তারা বের হয়ে আসে বাসা থেকে। বাসার বাহিরে তিনটার মতো গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। আয়াজরা চলে যাওয়ার পর গাড়িগুলো ও তাদের পিছন পিছন চলে যায়। জাফরি কে ঘুম পাড়িয়ে ইনিমা রান্নার কাজে নিচে আসে। এসে দেখে রুয়াত একা একা সবজি কাঁটছে। ইনিমার আগমনে রুয়াত তার দিকে তাকায়।
-‘আপু আজ ওনারা কোঁথায় গিয়েছে জানো কিছু?’
অবাক হয়ে ইনিমা রুয়াতের দিকটায় তাকালো।
-‘তুই জানিস না কিছু?’
দু’দিকে মাথা নাড়ায় রুয়াত। ইনিমা বেশ অবাক হয়। আয়াজ কি কিছু বলেনি রুয়াত কে।
-‘সামনে তো ইলেকশন তাই তারা প্রচার করবে আজ। আয়াজ এ ব্যাপারে তোকে কিছু বলেনি?’
রুয়াতের মন খারাপ হয়ে যায় পরক্ষণেই মনে আসে আয়াজ জানে রুয়াত এসব পছন্দ করে না। তাই হয়তো বলেনি রুয়াত কে। কিন্তু আয়াজের সাথে সম্পৃক্ত কিছুই এখন আর রুয়াতের অপছন্দ নয়। রাজনীতি জিনিসটা এখন খুব সহজ স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিচ্ছে। প্রচন্ড ব্যস্ততার মধ্যেও যদি আয়াজ তাকে তার প্রাপ্য সময়টুকু দিতে পারে তাহলে সে মানুষ টা নিঃসন্দেহে ভালো। আর মানুষটার কাজ ও। এখনো আয়াজের নামে তেমন খারাপ কিছুই শোনেনি। এমনটা না যে রাজনীতি করাটা কে পছন্দ করে! শুধুমাত্র স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নিচ্ছে সে। রুয়াত তপ্ত নিঃশ্বাস ছাড়ে। রান্না শেষ হলে উপরে চলে আসে। একেবারে শাওয়ার নিয়ে নেয়। কাল বৃষ্টি হয়েছিলো কিন্তু আজ আবার গরম পড়ছে। আয়নার সামনে বসে বসে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকাচ্ছে। তখনই জাফরি দৌড়ে আসে। রুয়াত জাফরির হাত ধরে বলে-
-‘কি হয়েছে জাফরি বাবু? তুমি এভাবে দৌড়াচ্ছো কেনো?’
হাঁপাতে লাগলো জাফরি। যেনো এটুকু দৌড় দিয়েই অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছে।
-‘নানুভাই এসেছে। নিচে আসো।’
রুয়াতের চোখ মুখে খুশির ঝলক দেখা যাচ্ছে। নানুভাই মানে হান্নান সাহেব। তাড়াতাড়ি করে নিচে এসে দেখে ঠিকই তার বাবা এসেছে। রুয়াত তড়িঘড়ি করে তার বাবার পাশে দাঁড়াতেই হান্নান মজুমদার মেয়েকে বুকে টেনে নেয়। মায়া চৌধুরী এতক্ষণ হান্নান মজুমদারের সাথেই কথা বলছিলেন। একদম হুট করে এসে চমকে দিয়েছে সবাই কে। রুয়াত তার বাবা কে ছেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালো।
-‘ মা আসেনি?’
চারপাশ উঁকি দেয় রুয়াত। মেহরুবা আসেনি বাসা খালি পড়ে থাকবে সেজন্য। তার খুব ইচ্ছে হয়েছে দুই মেয়েকে প্রাণ ভরে দেখবে আর ঠিক একারণেই পাঠিয়েছে হান্নান মজুমদার কে। রুয়াতের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
-‘না আসেনি।’
হান্নান মজুমদার জাফরি টেনে কোলে নেয়। এখন আর জাফরি কারও কোলে উঠতে চায় না। তাও সবাই জোর করে কোলে নেয়। সবাই একসাথে দুপুরের খাবার খায়। হান্নান মজুমদার প্রথমে নাকোচ করে দিলেও দু মেয়ের জোরাজুরিতে আবার খেতে বসলেন। খাবার খেয়েই রওনা দিয়েছিলেন তিনি। ইনিমা চা বানানোর কথা বললে এর আগেই রুয়াত বলে উঠে সে চা বানাবে। তাই ইনিমা আর কিছু বলেনি। রুয়াত চা বানিয়ে এনেছে। হান্নান মজুমদার, মায়া চৌধুরী, ইনিমা সবাই বসে বসে চা খাচ্ছে। রুয়াত চা খায় না বেশি। যখন মাথাটা একটু ব্যাথা করে তখন খায়। হঠাৎ হান্নান মজুমদার বলে উঠে।
-‘আপা আমি কেনো এসেছি সেটাই তো বলা হয়নি! আসলে মেহরুবার ইচ্ছে হয়েছে তার মেয়েদের দেখবে। তাই আমায় পাঠিয়েছে। আপনি যদি রাজি থাকেন তাহলে দু তিনদিন মেয়েরা আমাদের কাছে থাকবে।’
-‘আরে ভাই এসব কি বলছেন? আমি তো রাজি আছি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সামনে ইলেকশন আর এসময়ে আয়াজের কাজের চাপ খুব বেশি থাকে। রুয়াত যদি পাশে থাকে তাহলে ছেলেটা একটু ভরসা পাবে।’
রুয়াত একবার মায়া চৌধুরীর দিকে তাকাচ্ছে আবার হান্নান মজুমদারের দিকে তাকাচ্ছে। মা কে দেখতে ইচ্ছে করছে খুব। যেনো কয়েক বছর দেখা হয়না।
-‘এক মেয়ে যাবে আরেক মেয়ে যাবে না। মেয়ের খারাপ লাগার আগে আমার খারাপ লাগা শুরু হয়ে যাবে।’
মায়া চৌধুরী দেখলেন হান্নান মজুমদারের মুখটা ছোট হয়ে গিয়েছে কথাটা বলতে গিয়ে।
-‘আমি আয়াজ কে বুঝিয়ে বলবো। সমস্যা নেই রুয়াত ও যাবে আপনাদের সাথে।’
হান্নান মজুমদার খুশি হয়ে গেলেন। মায়া চৌধুরীর কথা মতো ইনিমা আর রুয়াত চলে গেলো তাদের জামা কাপড় গোছাতে। মনে মনে একটু আধটু ভয় কাজ করছে আয়াজ কে না বলে যাচ্ছে সে বাড়িতে। রুয়াত তার ভয়টা কে একপাশে রাখলো। দু দিনের বেশি থাকবে না। আয়াজ রাগ করলে ঠিক মানিয়ে নিবে। রুয়াত রেডি হয়ে তার ব্যাগ নিয়ে ইনিমার রুমে আসলো। ইনিমা জাফরি কে রেডি করাচ্ছে। রুয়াতের দিকে একবার তাকায় ইনিমা।
-‘আপু তোমার দেবর কে না বলে যাচ্ছি। ওনি যদি কিছু বলে?’
ইনিমা জাফরির চুল আঁচড়ে দিচ্ছে।
-‘আয়াজ মোটেও সেরকম নয়। কিছু বলবে না দেখে নিস। আর আরহাম ও তো জানে না। মা ঠিক ম্যানেজ করে নিবে দেখিস।’
বেডে এসে বসে রুয়াত। মোটেও শান্তি লাগছে না তার। বরং বেশ অস্থির অস্থির লাগছে। ইনিমা আর জাফরির রেডি হওয়া শেষে তারা তিনজন নিচে নামে। হান্নান মজুমদার মায়া চৌধুরীর থেকে বিদায় নেয়। মেয়েদের নিয়ে চলে আসে। মায়া চৌধুরী কে ও বলা হয়েছিলো তিনি বলেছেন পরে এক সময় আসবে।
বাসায় এসে রুয়াত ভীষণ খুশি। সারাক্ষণ মায়ের পিছন পিছন ছিলো। তার আর এই স্বভাব গেলো না। রাত বারোটা পর্যন্ত আড্ডা দিলো সবাই। ইনিমার শরীর খারাপ থাকায় ইনিমা আগেই ঘুমিয়ে পড়ে। রুয়াত পুরো আড্ডা চলাকালীন সময়ে বসেছিলো।
রুমে এসে হাত মুখ ধুয়ে নেয়। নাহলে গরমে গালের উপরের চামড়ায় জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে যায়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রুয়াত নিজেকে একবার দেখে নেয়। শরীরের বিভিন্ন অংশে আয়াজের দেওয়া ভালোবাসার চিহ্ন। মুচকি হাসে রুয়াত।
.
বাসায় এসে আয়াজ রুয়াত কে পায়নি। না আছে রুয়াত না আছে ইনিমা। আরহাম ও ইনিমা কে খুঁজে পাচ্ছে না। আয়াজ ফ্রেশ হয়ে মায়া চৌধুরীর রুমে আসে। তিনি শুয়ে আছেন।
-‘মা ঘুমাচ্ছো?’
মায়া চৌধুরী উঠে বসে ছেলের কথা শুনে।
-‘না বাবা আয়। ঘুমায়নি।’
আয়াজ তার মায়ের পাশে এসে বসে।
-‘বাসায় আজ কাউকে দেখতে পারছি না যে? তারা কোঁথায়?’
-‘আজ হান্নান সাহেব এসেছিলো। ওনি ওনার মেয়েদের নিয়ে গিয়েছেন। আমিও অনুমতি দিয়েছি।’
মায়া চৌধুরীর কথায় আয়াজের ভ্রু কুচকে আসে। রুয়াত ও বাড়িতে গিয়েছে অথচ সে জানে না। রুয়াত কি একবারও বলার প্রয়োজন বোধ করলো না? আয়াজ আর কিছু বললো না। মায়া চৌধুরীর মেডিসিন গুলো চেক করে চলে আসে। রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দেয়। টায়ার্ড সে। শুয়ে পড়ে। রাতে খাবার মতো মুড নেই। আরহাম খাওয়ার সময় আয়াজ কে কল দেয় কিন্তু সে বলে দিয়েছে খাবে না। পাশের জায়গাটা খালি। প্রেয়সী কে মনে পড়ছে খুব। আয়াজ আর নিজের রাগ পোষণ করলো না। রুয়াতের নাম্বারে কল দেয়।
রুয়াত এখনো ঘুমায়নি। ঘুম আসছিলো না। হঠাৎ আয়াজের কল পেয়ে ওঠে বসে। ভয় হচ্ছে প্রচুর। আয়াজ যদি কিছু বলে? বুক ধুকপুক শুরু হয়েছে। কল রিসিভ করে সে। সাথে সাথে আয়াজের গম্ভীরমুখের কথা শুরু।
-‘তুমি যে গিয়েছো আমায় বলেছো? কল দেওয়ার ও প্রয়োজন মনে করোনি?’
ঢোক গিলে রুয়াত।
-‘বাবার সাথে এসেছি। সত্যিই আমি কল দিবো ভেবে রেখেছি। এক্ষুনি দিতাম।’
অপাশ থেকে আয়াজ চুপ। রুয়াত আবারও বলে-
-‘শুনুন না রাগ করেছেন? খেয়েছেন আপনি?’
আয়াজ ছোট করে বলে-
-‘নাহ্।’
ভ্রু জোড়া মিলিয়ে যায় রুয়াতের।
-‘কেনো? খেয়ে আসুন যান।’
-‘ভালো লাগছে না। আমি সত্যিই রেগে আছি। তুমি একবার আমায় কল দিয়ে বলতে। বলেছো? আমাকে মানুষ বলে মনে করো না তুমি?’
-‘আমার কি বাবার সাথে আসার অধিকার নেই?’
-‘কখন বলেছি অধিকার নেই? তোমাকে আমি সম্মান করি। তোমার সব চাওয়া পাওয়া কে প্রাধান্য দেই৷ তারপরও এসব বলছো?’
রুয়াত মোবাইলটা কান থেকে সরিয়ে নেয়। পরক্ষণে আবার কানে নেয় মোবাইল।
-‘ভালোবাসি এমপি সাহেব। খুব বেশি।’
এই কথা শোনার জন্যই যেনো আয়াজ অপেক্ষা করছিলো৷ সব রাগ যেনো উবে গিয়েছে।
-‘বিশ্বাস করো এই কথাটি যদি সামনে থেকে বলতে আজ তুমি
আয়াজের কথা শেষ করতে দিলো না রুয়াত। সে ভালো করেই অবগত যে আয়াজ এখন কি বলবে।
-‘খেয়ে আসুন। যান।’
-‘খুব মনে পড়ছে তোমায়৷ এখন মনে হচ্ছে কি তোমায় ছাড়া আমি থাকতে পারবো না। শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। প্রতিটি মুহুর্তে এখন আমার প্রেয়সী কে মনে পড়ছে।’
রুয়াতের মনটা কেঁপে ওঠে। মানুষটা কে ছাড়াও তার থাকতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।
-‘আমার ও আপনাকে খুব মনে পড়ছে এমপি সাহেব।’
আয়াজ হাসে প্রেয়সীর কথা শুনে।
-‘উহু মনে পড়ছে বললে হবে না। কাল বাসায় আসতে হবে। তোমাকে আদর দেওয়া ছাড়া ঘুমোতে পারি না আমি।’
রুয়াতের গালে রক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়েছে। পাগল পুরুষ একদম।
#চলবে….