#হৃদয়স্পর্শী_মায়াবিনী
#নুসাইবা_ইসলাম_হুর (মিমি)
#পর্বঃ১০
এই ফারিসতা এবার কিন্তু আমি সত্যি সত্যি মার দিবো সেই কখন থেকে ডাকছি তবুও পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিস।
ফারজানা বেগমের এমন ডাক চিৎকারে ফারিসতা পিটপিট করে চোখ খুলে ঘুম জোড়ানো কণ্ঠে বলে উঠলো আম্মু আজ তো ভার্সিটি নেই আরেকটু ঘুমাই না।
দশটা বেজে গেছে আগে উঠে নাস্তা করে নে তারপর যত খুশি ঘুমা কিছু বলবো না।
পরে নাস্তা করবো প্লিজ ডেকো না এ বলে পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো তা দেখে ফারজানা কিছুক্ষণ মেয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো। শুক্রবার এই মেয়েকে ঘুম থেকে ওঠানো তার কাছে যুদ্ধ করার সমান। তিনি স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তি খাবার টাইম এদিন ওদিক হওয়ার একদম পছন্দ করে না। আর যাই হয়ে যাক না কেনো তার সময় মতো তিন বেলা খাবার খাওয়া লাগবে এই রুটিন বরাদ্দ। এদিকে বেলা গড়িয়ে যাচ্ছে তা দেখে ফারজানা বেগম ফারিসতাকে ওঠানোর জন্য ফারিসতার কাছে যে হাত ধরতে মেয়ের হাত দেখে চমকে গেলো তিনি। ফারিসতার হাতের কব্জির কাছে লালচে বর্ণের তিনটা দাগ তা দেখে ফারজানা বেগম বিচলিত হয়ে ফারিসতাকে ডাকতে যাবে তখন খেয়াল হলো আরেক হাতেও সেইম দাগ। ফারজানা বেগম দুই হাতের দাগ অবলোকন করে কিছু একটা আন্দাজ করতে গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠলো,
তোর হাতে কি হয়েছে?
মায়ের ডাকে ঘুম হালকা হয়ে যাওয়ায় ফারিসতা যখন আবার ঘুমের প্রস্তুুতি নিচ্ছিলো তখন ফারজানা বেগমের মুখে হাতের কথা শুনে কলিজার ভিতরে ছ্যাত করে উঠলো। এতক্ষণ ঘুমে চোখ খুলতে না পারা চোখজোড়া চট করে খুলে গেলো। মুহূর্তে মাঝে ঘুম উধাও হয়ে গেলো। ফারিসতা তড়িঘড়ি করে উঠে বসে হাতের দিকে তাকাতে দেখতে পেলো ফুল হাতার জামার হাতাটা ঘুমের ঘোরে হাতের কব্জির উপরে উঠে গেছে যেটা দেখে ফারিসতার বুকের ভিতর ধক করে উঠলো। কিছুটা সময় নিয়ে ফারিসতা ফারজানা বেগমের হাতের মুঠো থেকে চট করে হাত সরিয়ে নিয়ে হাতা টেনে দাগ ঢাকতে ঢাকতে ঢোক গিলে বোকা হেসে বলে উঠলো ক.. কিছুনা আম্মু ওই একটু লেগেছিলো।
ফারজানা বেগম গম্ভীর হয়ে ফারিসতাকে অবলোকন করতে করতে বলে উঠলো, মিথ্যা বলা আমি পছন্দ করিনা সেটা খুব ভালো করেই জানো তুমি।
মায়ের মুখে তুমি সম্মোধন শুনে ঢোক গিললো ফারিসতা। ফারজানা বেগম ওকে দুইটা সময় তুমি সম্মোধন করে। এক ও যখন অসুস্থ থাকে তখন আদর করে তুমি সম্মোধন করে। দুই যখন খুব রেগে যায়। এখন এই মুহূর্তে এক নাম্বারটা হওয়ার কোনো চান্স নেই তার মানে এই মুহূর্তে ওর মা খুব রেগে আছে ভাবতে শুকনো ঢোক গিললো ফারিসতা।
ফারিসতার ভাবনার মাঝে ফারজানা বেগম ফারিসতার হাত সামনে এনে হাতা কব্জি থেকে সরিয়ে বলে উঠলো, দুই হাতের সেইম দাগ স্পষ্ট বলে দিচ্ছে এটা কিসের দাগ। আমি তোমার মুখ থেকে শুনতে চাচ্ছি এই দাগের কারণ।
ফারজানা বেগমের সব কিছু ধরে ফেলাতে ফারিসতার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো। এখন কি জবাব দিবে ও? সত্যি কথা ভুলেও বলা যাবে না তাহলে কেলেঙ্কারি বেজে যাবে ভাবতে ফারিসতা কি জবাবদিহি করবে ভাবতে মাথায় একটা বুদ্ধি চলে আসলো। ফারিসতা তাৎক্ষণিক বলে উঠলো,
আসলে আম্মু জানোইতো কলেজ, ভার্সিটিতে প্রথম প্রথম সিনিয়ররা জুনিয়রদের র্যাগ দেয়। তো কাল ফার্স্ট ডে ছিলো তাই কিছু সিনিয়র আপুরা র্যাগ দেয়। জানোইতো হুটহাট আমার মাথা গরম হয়ে যায় তাই সিনিয়র আপুদের সাথে ভুল বসত বেয়াদবি করে ফেলি যার শাস্তি হিসেবে তারা এক ঘন্টা চেয়ারের সাথে বেঁধে রেখেছিলো আমায়।
ফারিসতার কথায় ফারজানা বেগম ফারিসতাকে অবলোকন করতে করতে বলে উঠলো,
ঢাকা আসার আগে তোমাকে কি বলে এনেছিলাম সেটা কি ভুলে গিয়েছো তুমি? বলেছিলে এখানে এসে কেনো গ্যাঞ্জামে জড়াবে না তাহলে কেনো সিনিয়রদের সাথে বেয়াদবি করেছো? যেহেতু সিনিয়রা র্যাগ দিয়েছে এটার সাপোর্ট ও আমি দেই না তাই দু’জনের এই ভুল ছিলো তাই এবারের জন্য ক্ষমা করে দিলাম বাট নেক্সট টাইম যদি কোনো ঝামেলায় জড়াও তাহলে কিন্তু আমি আবার সিলেট ব্যাক করবো। ভুলে যেও না তোমার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি আবার ঢাকায় পা দিয়েছি। আমি তোমাকে সব ধরনের ফ্রিডম দিয়েছে শুধু তার বিনিময়ে বলেছি তোমার এই হুটহাট মাথা গরম করে ঝামেলায় জড়ানোর স্বভাব ছাড়তে হবে। আমার এই কথা না শুনলে আমি বাধ্য হবো তোমার ফ্রিডম কেঁড়ে নিতে।
ফারজানা বেগমের কথায় ফারিসতা ঢোক গিলে মাথা নিচু করে ছোট করে বলল, আর কোনো ঝামেলায় জড়াবো না প্রমিজ।
মনে থাকে যেনো এবার ফ্রেশ হয়ে খেতে আসো এ বলে ফারজানা বেগম রুম থেকে চলে গেলো।
ফারজানা বেগম যেতে বড় করে নিঃশ্বাস নিয়ে ফারিসতা বিড়বিড় কর বলল, যদি জানতে তোমার মেয়ে কি ঝামেলায় জড়িয়েছে তাহলে নির্ঘাত মিনি স্ট্রোক করে ফেলতে এতক্ষণে।
ফারিসতার বিড়বিড়ানীর মাঝে ফারজানা বেগমের ফের ডাক পেতে ফারিসতা তড়িঘড়ি করে উঠে ফ্রেশ হয়ে খেতে চলে গেলো। দুজনের খাওয়ার মাঝে ফারজানা বেগম একটা কথাও বললো না। খাওয়া শেষ হলে চুপচাপ এটো থালাবাসন নিয়ে বেসিনে চলে গেলো তা দেখে ফারিসতা ঠোঁট ওল্টালো। মায়ের রাগ কিভাবে ভাঙাবে ভাবতে ফারিসতা ফারজানা বেগমের পিছু পিছু যেয়ে পিছ থেকে ফারজানা বেগমকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলো,
ওওও আম্মু এবারের জন্য ক্ষমা করে দেওনা বলেছিতো আর কখনো কোনো ঝামেলায় জড়াবো না। আর রাগ করে থেকো না প্লিজ। তুমি রাগ করে থাকলে আমার কান্না কান্না পায়। এবার কিন্তু সত্যি সত্যি কান্না করে দিবো আমার সাথে কথা না বললে।
মেয়ের এমন বাচ্চামো কথাতে ফারজানা বেগম মৃদু হেঁসে থালাবাসন ধুতে ধুতে বলে উঠলো ক্ষমা তো তখন এই করেছি বলেছি শুনোনি।
তাতো মন থেকে করোনি। মন থেকে করলে এমন রাগ করে থাকতে না কাঁদো কাঁদো ফেইস করে বলল ফারিসতা।
ফারিসতার কাজে ফারজানা বেগম ফের মৃদু হেঁসে ফারিসতার দিকে ঘুরে বলল,
আমার আহ্লাদী কণ্যা মা রাগ করে নেই এখন। কিন্তু পরের বার এমন কিছু শুনলে কিন্তু সত্যি সত্যি রাগ করবো।
ফারিসতা খুশি হয়ে বলে উঠলো আর এরকম কিছু হবে না পাক্কা প্রমিজ।
ফারিসতার কথা বলার মাঝে কলিংবেলে বেজে উঠলো তা দেখে ফারজানা বেগম বলে উঠলো হয়েছে এবার যেয়ে দেখো কে এসেছে। বাড়িওয়ালা আপা এসেছে হয়তো। কাল তার সাথে দেখা হয়েছিলো খুবি রশিক মানুষ। বলেছিলো আজ আসবে দেখা করতে। তোমাকে কাল দেখতে চেয়েছিলো কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় আর বাসায় আসেনি।
ফারজানা বেগমের কথায় ফারিসতা সম্মতি দিয়ে মেইন ডোর খুলে দিতে চোখের সামনে ফুটে উঠলো হাস্যজ্জ্বল একটা মুখশ্রী। ফারিসতা হাস্যজ্জ্বল উজ্জ্বল শ্যামলা বর্ণের মানুষটিকে দেখে বুঝতে পারলো এই হয়তো বাড়িওয়ালা তাই ফারিসতা মুখে হাসি টেনে বলে উঠলো আসসালামু আলাইকুম আন্টি।
আমেনা বেগম হাস্যজ্জ্বল মুখে আরো হাসির রেখা টেনে সালামের উত্তর দিয়ে বলে উঠলো,
তুমি ফারজানা আপার মেয়ে ফারিসতা?
ফারিসতা স্মিত হেঁসে সম্মতি দিতে আমেনা বেগম বলে উঠলো মা শা আল্লাহ খুব কিউট তুমি। তোমার আম্মু কোথায় বাসায় আছে?
আমেনা বেগমের এমন শুমধুর কথা শুনে ফারিসতা বুঝলো যে আসলেই উনি খুব রশিক। ফারিসতা অমায়িক হাসি দিয়ে বলল, আম্মু বাসায় আছে আপনি বাহিরে কেনো ভিতরে আসুন আন্টি।
তোমাদের সাথে আজ আড্ডা দেবো বলেই এসেছি। আমার মেয়েটা আসছে তাই দাঁড়িয়ে আছি… ওইতো এসে পড়েছে। আমেনা বেগমের কথা শুনে ফারিসতা সামনে তাকাতে দেখতে পেলো লিফট থেকে নেমে একটা মেয়ে ওদের সামনে এগিয়ে এসেছে। উজ্জ্বল ফর্সা মেয়েটা ওদের সামনে এসে ফারিসতার দিকে হাত উঠিয়ে ইশার দিয়ে বলল, হ্যালো।
ফারিসতা স্মিত হেঁসে হ্যালো বলতে পিছ থেকে ফারজানা বেগম বলে উঠলো একি ফারিসতা ওনাদের বাহিরে দাঁড় করিয়ে কেনো রেখেছো? কথাটা বলে ফারজানা বেগম আমেনা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলল, কিছু মনে করবেন না আপা আমার মেয়েটা যে কি করে আসুন ভিতরে আসুন।
ফারজানা বেগমকে বিচলিত হতে দেখে আমেনা বেগম বলে উঠলো মেয়ের দোষ নেই আমিই ভিতরে যাইনি আদরিবা আসতে দেরি করেছিলো তাই ওর জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম।
আমেনা বেগমের কথায় কিছুটা স্বস্তির পেয়ে ফারজানা বেগম আদরিবার দিকে তাকিয়ে বলল ওও আচ্ছা কেমন আছো আদরিবা?
আদরিবা মৃদু হেঁসে বলল আলহামদুলিল্লাহ ভালো আন্টি আপনি কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ মা এসো ভিতরে এসো এ বলে সবাইকে ভিতরে নিয়ে ড্রয়িংরুমে যেয়ে বসলো। তারপর টুকটাক গল্প জুড়ে দিলো। গল্পের এক পর্যায়ে জানতে পারলো আদরিবা আর ফারিসতা একি ক্লাসে একি ভার্সিটিতে পড়ে এমনকি একি ডিপার্টমেন্টের দুজন। এ খবর জানার পর দুজনের মাঝে বন্ডিংটা যেনো মুহূর্তের মাঝে পাল্টে গেলো। বড়েদের মাঝে ওরা না থেকে ফারিসতা আদরিবাকে ওর রুমে নিয়ে গিয়ে রাজ্যের গল্প শুরু করে দিলো দুজনে।
*****
সকালের ঝামেলা মিটমাট করে বিকেলের দিকে বাসায় ফিরলো তাজ। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে তাজ নিচে নামতে রেহেনা বেগম আর আর রুবিনাকে ছাড়া আর কাউকে চোখে পড়লো না তাই তাজ রেহেনা বেগমের উদ্দেশ্যে বলে উঠলো,
মেজো মা খাবার দেও খুব খিদে পেয়েছে।
তাজের কথায় রেহেনা বেগম স্লান হেঁসে রুবিনাকে সব খাবার গরম করে আনতে বলল। এতক্ষণ তাজের অপেক্ষায় এই বসে ছিলো রেহেনা বেগম। চৌধুরী বাড়ির প্রথম সন্তান তাজ তাই ওর প্রতি সবার ভালোবাসা টানটা একটু বেশি এই। যতই অন্যয় করুক তবুও সবার প্রথম ভালোবাসাটা তো এই ছেলেটাকেই ঘিরে। ছেলেটা সকাল সকাল না খেয়ে বেরিয়ে গিয়েছে জানে সারাদিন ও কিছু খাবে না। এই ছেলে যতই পরিবর্তন হয়ে যাক না কেনো সবাই জানে মা আর চাচির হাতের রান্না ছাড়া ঠিক মতো খেতে পারে না তাইতো প্রায় সময় বাহিরে থাকলে না খেয়ে কাটিয়ে দেয়। তাহমিনা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েছে যার জন্য তাহমিনা বেগমকে রেস্ট নিতে বলে দুপুর থেকে রেহেনা বেগমে তাজের অপেক্ষায় ছিলো। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে তাজের দেখা মিললো।
রেহেনা বেগমের ভাবনার মাঝে রুবিনা খাবার গরম করে আনতে রেহেনা বেগম তাজকে খাবার বেরে দিলো। সকাল থেকে না খেয়ে থাকায় অতিরিক্ত খিদের জন্য খাবার দেওয়ার সাথে সাথে তাজ খাবার খাওয়া শুরু করলো। কয়েক লোকমা খাওয়ার পর কিছু একটা মনে পড়তে তাজ চোখ তুলে রেহেনা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলল, মা কোথায়?
তাজের প্রশ্নে রেহেনা বেগম ছোট করে বলল, ভাবির শরীরটা একটু খারাপ তাই রেস্ট করছে।
তাজ রেহেনা বেগমকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে বলে উঠলো, মেজো মা কিছু কি হয়েছে? তোমার চোখমুখ এমন শুকনো লাগছে কেনো?
তাজের প্রশ্নে রেহেনা বেগমে বিচলিত হয়ে বলল, না না আমার কি হবে। তুই কথা না বলে চুপচাপ খাওয়া শেষ কর। সকাল থেকেতো মনে হয়না কিছু খেয়েছিস।
বাবা রাগারাগি করেছে? রেহেনা বেগমের পুরো কথা অগ্রাহ্য করে শান্ত গলায় প্রশ্ন ছুড়লো তাজ।
তাজের প্রশ্ন রেহেনা বেগম না বলতে যাবে তার আগে রুবিনা ক্ষিপ্ত হয়ে বলে উঠলো একদম মিথ্যা বলবেন না আম্মা। খালুজান শুধু রাগারাগি না এক প্রকার তান্ডব করেছে বাসায় যার জন্য বড় আম্মার প্রেসার হাই হয়ে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আপনারা বাবা-ছেলে রোজ রোজ এক একটা তান্ডব ঘটান যার পুরো ঝড়ঝাপটা যেয়ে পড়ে বড় আম্মার উপরে। ওই মানুষটা একা একটা শরীরে আর কত ঝড়ঝাপটা সহ্য করবে? বলতে বলতে রুবিনার চোখে পানি চলে আসলো। এই বাসায় কাজ নেওয়ার পর থেকে রেহেনা বেগম ওকে কাজের মেয়ে না যেনো নিজের মেয়ের মতো স্নেহ করেছে। সেই মায়ের এমন কষ্ট আর সহ্য করতে না পেরে যেই তাজকে বাঘের মতো ভয় পায় আজ সেই তাজের মুখের উপরে কথাগুলো বলে উঠলো।
রুবিনাকে এতো কথা বলতে দেখে রেহেনা বেগম ইশারায় অনেকবার চুপ থাকতে বলেছে কিন্তু কে শোনে কার কথা।
এদিকে রুবিনার কথায় তাজ কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থেকে হঠাৎ খাবার ছেড়ে উঠে দাঁড়তে রেহেনা বেগম বিচলিত হয়ে বলে উঠলো একি খাবার ছেড়ে উঠছিস কেনো? সারাদিন কিছু খাসনি পুরো খাবারটা শেষ কর আর নাহলে শরীর খারাপ করবে।
পরে খাবো এ বলে তাজ কাউকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে উপরে উঠে গেলো। তাজ যেতে রেহেনা বেগম রুবিনার দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে বলল,
কতবার তোকে কথাগুলো বলতে না করেছি তারপর ও কেনো বলেছিস? ছেলেটা এমনি সারাদিনের না খাওয়া। এখন একটু খাবে তাও খেলো না।
যেই ছেলের জন্য তোমরা কষ্ট ছাড়া আর কিছুই পাও না তারপর ও সেই ছেলের জন্য এতো কেনো ভাবো তোমরা? কই তাজ ভাইজান তো আপনাদের কথা ভাবে না। যদি ভাবতো তাহলে বড় আম্মাকে এভাবে প্রতিনিয়ত এমন ধুকে ধুকে কষ্ট পেতে হতো না।
রুবি ছোট মানুষ হয়ে এতো বোঝা লাগবে না তোর। আর কখনো যদি দেখেছি বড়দের সাথে এভাবে কথা বলতে তাহলে কিন্তু মার খাবি আমার হাতে।
#চলবে?
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
হ্যাপি রিডিং….🥰