হৃদয়াসিক্ত কাঠগোলাপ পর্ব-৩+৪

0
846

#হৃদয়াসিক্ত_কাঠগোলাপ
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পর্বঃ০৩
বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে আরাবী। আপন ভাবনায় ব্যাকুল সে।মাথায় চিন্তার শেষ নেই।কি থেকে কি হয়ে গেলো হঠাৎ। কয়েকপলকের মাঝে ওর জীবনের মোড় পুরোই ঘুরে গেলো।হাতের দিকে তাকালো আরাবী।সেখানে মাঝের আঙুলে পরা আংটিটার দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।আচমকা আংটিটায় হালকা স্পর্শ করলো আরাবী।স্পর্শ করা মাত্র হালকা কেঁপে উঠলো ও।আর মাত্র হাতে গোনা পনেরো দিন তারপরেই বাবা মায়ের আদরের কন্যা বিদায় নিয়ে চলে যাবে অন্যের বাড়ির বউ হয়ে। সারাজীবনের জন্যে একজন পুরুষের সাথে ওর জীবন জুড়ে যাবে ওর।স্বামি স্ত্রীর পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হবে ওরা।লম্বা শ্বাস ফেললো আরাবী।সকল চিন্তা চেতনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিলো।যা হবার তা হবেই খামোখা টেনশন করে লাভ নেই।আরাবী রুমে যাওয়ার জন্যে পা বাড়ালো। তৎক্ষনাত দরজায় হুলস্থুলভাবে কেউ বা’রি দিতে লাগলো।আরাবী ভড়কে গেলো এমন করায়। দ্রুত পায়ে গিয়ে রুমের দরজা খুলে দিলো। দরজা খুলতেই আরাবীর ছোট বোন ফিহা হুরমুরিয়ে ওর রুমে প্রবেশ করলো।আরাবী ভ্রু-কুচকে তাকালো ফিহার দিকে।এদিকে ফিহা আরাবীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত পর্যবেক্ষন করে বললো,
-‘ কিরে তোর না-কি বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে? আব্বু বললো।’

আরাবী ড্রেসিংটেবিলের দিকে যেতে যেতে বলে,
-‘ আব্বু যেহেতু বলেছো তাহলে তাই হবে।’

ফিহা রেগে গেলো আরাবীর কথায়।রাগি গলায় বলে,
-‘ বিয়ে ঠিক হতে না হতেই তোর ভাব বেড়ে গিয়েছে তাই নাহ আরাবী?’

আরাবী শান্ত কন্ঠে বলে,
-‘ সম্মান দিয়ে কথা বল ফিহা।আমি তোর বড় বোন।’

-‘ বড়বোন মাই ফুট।তোকে বড়বোন মানে কে? তোকে কোন দিক দিয়ে আমার বোন মনে হয়? আমার সাথে তো তোর কিছুই মিল নেই।বা চেহারায় না গায়ের রঙে।সো নিজেকে আমার বোন বলবি না কোনদিন।’

আরাবী’র চোয়াল শক্ত হয়ে আসলো ফিহার কথায়।মেয়েটা এতো বেয়া*দপ হচ্ছে দিন দিন।কারো পরোয়া করে নাহ।মানুষকে নূন্যতম সম্মানটাও করতে জানে নাহ এই মেয়ে।আরাবী শক্ত গলায় বলে,
-‘ ফিহা আমার রুম থেকে বের হো।তোর এসব অহেতুক কথা আমি শুনতে চাই নাহ।’

-‘ যাবো না কি করবি তুই?’

আরাবী এবার বেশ চটে গেলো।রাগি আওয়াজে বলে,
-‘ ফিহা আমি কিন্তু তোকে থাপ্পর দিতে বাধ্য হবো। বের হো আমার রুম থেকে।’

কথাগুলো বলে আরাবী হাত উঁচিয়ে ফিহা রুম থেকে বের হবার জন্যে ইশারা করলো।ওমনি ফিহা নজরে আসে আরাবী হাতে পরিহিত স্বর্ণের আংটিটা।ফিহা দ্রুত পায়ে এসে আরাবীর হাত চেপে ধরলো। আচমকা এমন করায় বেশ অবাক হলো আরাবী।নিজের হাত ছাড়াতে চাইলো ফিহা থেকে।কিন্তু ফিহা ছাড়ছে নাহ।আরাবী বিরক্ত হয়ে বললো,
-‘ কি করছিস ফিহা? হাত ছাড়।’

ফিহা আরাবীর হাতের আংটিটা টেনে খুলার চেষ্টা করতে করতে বলে,
-‘ এই আংটিটা অনেক সুন্দর। আমাকে দে না আমি একটু পরি।দু তিন দিন হাতে দিয়ে তারপর তোকে ফেরত দিয়ে দিবো।’

-‘ ফিহা কি হচ্ছে কি এসব?ছাড় আমার হাত।ছাড়।’

ফিহা আর আরাবী ধস্তাধস্তি শুরু করে দিলো।ফিহা আংটিটা খুলার চেষ্টা করতে লাগলো।আরাবী সহ্য করতে না পেরে ফিহাকে সজোড়ে ধাক্কা মারলো।ফিহা ছিটকে পরলো গিয়ে বিছানার উপর।আরাবী হাত চেপে ধরলো।ফিহা শক্ত করে হাত ধরায় হাতের কব্জিতে বেস ব্যাথা পেয়েছে আরাবী।আবার যেই আঙুলে আংটি পরা সেই আঙুলটাও অনেক খানি ছি*লে গিয়েছে।র’ক্ত বের হচ্ছে।এদিকে বিছানায় পরে গিয়ে ফিহা ন্যাকা কান্না করতে লাগলো চিৎকার করে।
-‘ আম্মু, আব্বু, ভাইয়া দেখে যাও আরাবী আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে।আম্মুউ!’

ফিহা একটুও ব্যাথা পায়নি শুধু শুধু অভিনয় করছে।এদিকে ফিহার কান্না শুনে সবাই ছুটে আসলো আরাবীর রুমে।লিপি বেগম গিয়ে ফিহাকে আঁকড়ে ধরলো।জিহাদ সাহেব আরাবীর কাছে গেলেন দ্রুত।কারন তিনি দেখেছেন আরাবীর হাত থেকে র’ক্ত ঝরছে। লিপি বেগম রাগি গলায় আরাবীকে বলে,
-‘ কি সমস্যা তোর? ফিহাকে কেন ধাক্কা দিয়েছিস তুই?’

আরাবী মাথা নিচু করে নিলো।চাপা আওয়াজে বলে,
-‘ আমি ইচ্ছে করে ধাক্কা দেইনি আম্মু।’

-‘ চুপ একদম ন্যাকা সাজবি নাহ।তুই যে ফিহাকে দেখতে পারিস না তা আমি ভালোভাবেই জানি।’

-‘ কি বলছো আম্মু।এমনটা কেন হবে? ফিহা আমার বোন।’

ফিহা এই কথা শুনে চেচিয়ে বলে,
-‘ একদম আমাকে নিজের বোন বলবি না। তুই আমাকে বোন মানিসই না। তাহলে কি তুই আমাকে ধাক্কা দিতি?’

-‘ ফিহা তুই তো আমার সাথে জোড়জুড়ি করছিলি?’

-‘ একদম মিথ্যা বলবি না আরাবী।নাহলে আমি তোকে চড় মারবো বলে দিলাম।’

লিপি বেগমের ধমকে চুপ হয়ে গেলো আরাবী।এদিকে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আরাবীর বড় ভাই ফাহিম।এতোক্ষন সে চুপচাপ সব দেখছিলো।মেজাজ তু’ঙ্গে উঠে গিয়েছে ওর।ফাহিম একটা কোচিং সেন্টারে পড়ায়।ফিহাও সেখানে পড়ে।ফাহিমের পড়ানো শেষ হলে ফিহাকে নিয়েই একেবারে বাড়ি ফিরে আসে ফাহিম। আজকেও তাই হয়েছে।ফ্রেস হয়ে আসতেই ওর বাবা জানায় আরাবীর বিয়ে ঠিক হয়েছে তাও তার বাবার অফিসের বসের ছেলের সাথে।শুনে খুব খুশি হয় ফাহিম।কিন্তু এই কথাটা শুনার সাথে সাথে ফিহা যে উঠে আরাবীর রুমের দিকে গিয়েছে সেটা ও লক্ষ করেছে।তাই নিজেও পিছু পিছু এসেছে।সে জানে ফিহার স্বভাব কেমন।এবং এতোক্ষন যা হচ্ছিলো সবই দেখেছে ও। ফাহিম রাগি চোখে ফিহার দিকে তাকিয়ে বলে,
-‘ মিথ্যা আরাবী না মিথ্যা বলছে ফিহা।ফিহা এসেই আরাবীকে ওর শশুড়বাড়ি থেকে পরিয়ে যাওয়া আংটিটা নেওয়ার জন্যে টানাটানি করছিলো।আরাবী হাতে ব্যাথা পাওয়ার কারনেই ফিহাকে ধাক্কা দিয়েছে।আমি নিজেই সব দেখেছি।’

-‘ ভাই..ভাইয়া কি বলছো তুমি এসব?’

জিহাদ সাহেব ধমকে উঠলেন ফিহাকে,
-‘ বেয়াদ*প মেয়ে।বড়বোনের এনগেজমেন্টের আংটি নেওয়ার জন্যে এসব করতে তোমার লজ্জা করলো নাহ? যাও নিজের ঘরে যাও। নাহলে চড়িয়ে গাল লাল করে দিবো।’

ধমক খেয়ে ফিহা কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলো নিজের রুমে। লিপি বেগম এইবার ফাহিমকে উদ্দেশ্য করে বলেন,
-‘ সামান্য একটা আংটির জন্যে আরাবী এমন করলো।আর তুই ফিহাকে এর জন্য দোষ দিচ্ছিস।’

জিহাদ সাহেব বেশ রুক্ষ কন্ঠে বলেন,
-‘ এটা সামান্য আংটি না লিপি সেটা তুমিও জানো।এটা ওর বাগদানের আংটি।’

লিপি বেগম কিছু বলতে নিবেন তার আগেই জিহাদ সাহেব তাকে থামিয়ে বলেন,
-‘ আমি আর কিছু শুনতে চাই না।তোমার গুনধর ছোট মেয়ের কাছে যাও তুমি।এই বিষয়ে যেন আর কোন কথা না উঠে।আর ফিহা ভালোভাবে বুঝিয়ে দিও বড়বোনের সাথে কিভাবে বিহেব করতে হয়।’

লিপি বেগম স্বামি কথায় দমে গেলেন। রাগি চোখে আরাবীর দিকে তাকিয়ে চলে গেলেন।ফাহিম এইবার এগিয়ে এসে বলে,
-‘ বাবা যাও তুমি রুমে যাও।খাওয়ার আগে তোমার মেডিসিন আছে।আমি আরাবীকে দেখছি যাও তুমি।’

ছেলের কথায় জিহাদ সাহেব আরাবীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে তারপর চলে গেলেন।তিনি যেতেই ফাহিম আরাবীকে ধরে বিছানায় বসালো।তারপর ফার্স্টএইড বক্স এনে আরাবীর হাতটা ব্যান্ডেজ করে দিলো।আরাবী মাথা নিচু করে আছে।ফাহিম আরাবীর মাথায় আদুরে হাত বুলিয়ে বলে,
-‘ তুই এতো তাড়াতাড়ি বড় হয়ে গেলি কিভাবে বলতো আরাবী? তোর নাকি বিয়েও ঠিক হয়ে গিয়েছে।বাবার কাছে কথাটা শুনে একটু রাগ লেগেছিলো।এভাবে হুটহাট কি কোন কিছু হয় বল? পরে যখন শুনলাম বাবার অফিসের বস নিহান সাখাওয়াতের ছেলে জায়ান সাখাওয়াতের সাথে তোর বিয়ে ঠিক হয়েছে শুনে ততোটাই খুশি হলাম।ছেলেটা অনেক ভালো।আমার থেকে দু ব্যাচ সিনিয়র ছিলো সে ভার্সিটিতে ।তাই তাকে বেশ ভালোভাবেই চিনি আমি।ছেলেটা একটু গম্ভীর তবে মনের দিক দিয়ে বেশ ভালো।আমি যতোটুকু দেখেছি।’

আরাবী কিছু বললো না চুপ করে রইলো।ফাহিম এইবার ধীর আওয়াজে জিজ্ঞেস করলো,
-‘ তুই কি এই বিয়েতে রাজি আরাবী?’

আরাবী হাসিমুখে তাকালো ভাইয়ের দিকে তারপর বলল,
-‘ আমার আব্বু আর ভাইয়া যেহেতু বলছে এখানে বিয়ে হলে আমি সুখে থাকবো।আর তারা যেহেতু রাজি তাই আমিও রাজি।আর আমার যেহেতু কোন পছন্দ নেই।তাই তোমাদের পছন্দই আমার পছন্দ ভাইয়া।আমি এই বিয়েতে খুশি।হয়েছে?এটাই তো শুনতে চেয়েছিলে তুমি?’

ফাহিম হেসে আরাবীর গাল টেনে দিলো,
-‘ সব জানিস দেখি।’

-‘ তোমার বোন বলেই তো সব জানি।’

ফাহিম বোনকে বুকে টেনে নিলো।আরাবীও ভাইকে জড়িয়ে ধরলো।ওর আব্বু আর ভাই যেহেতু বলেছে লোকটা ভালো আর ফ্যামিলিও ভালো।তাহলে আরাবীর আর কোন চিন্তা নেই।ওর আব্বু আর ভাই ওর জন্যে বেস্ট’টাই সিদ্ধান্ত নিবে ও জানে।
_____________
নূর আর ইফতি ফিসফিস করছে।নূর হলো জায়ানের ছোট বোন।নূর বলছে,
-‘ ইফতারি ভাইয়া জায়ান ভাইয়ার কি হয়েছে বলোতো?’

ইফতি নূরের কথায় বিরক্ত হয়ে তাকালো নূরের দিকে।চাপা ধমকে বলে,
-‘ বেয়া*দপ মেয়ে।ইফতারি কি হ্যা? আমার নাম ইফতি ঠিকঠাকভাবে বল।নাহলে থাপ*ড়িয়ে কান লাল করে দিবো।’

নূর মুখ কালো করে বললো,
-‘ আমি তোমাদের দুই ভাইয়ের একবোন আমাকে মা*রতে পারবে তুমি?’

ইফতি রাগি কণ্ঠে বললো,
-‘ তাহলে তুই উল্টাপাল্টা নামে ডাকিস কেন আমায়?’

-‘ উফ,আচ্ছা বাদ দেও।এটা বলো ভাইয়া আমাদের ভাবিকে দেখে কি রিয়েকশন দিয়েছিলো?’

-‘ কি আর রিয়েকশন দিবে?ব্যাটা জন্মের নিরামিষ।ওর মতো আমি আর কাউকে দেখি নি।’

নূর ভাব নিয়ে বললো,
-‘ দেখবা কেমনে আমার জায়ান ভাইয়ার মতো একপিছই হয়।’

ইফতি নূরের মাথায় চা*টি দিয়ে বলে,
-‘ ও মানুষ না রোবট।’

-‘ উফ, ভাইয়া মারলা কেন?’

-‘ তোরা দুটো বের হো আমার রুম থেকে।আমার কাজে সমস্যা হচ্ছে।’

ওদের খুনশুটির মাঝে হঠাৎ জায়ানের গম্ভীর গলার আওয়াজে দুজনেই ভড়কে গেলো।নূর নিজেকে সামলে নিয়ে দাঁত কেলিয়ে বলে,
-‘ ভাইয়া বলছিলাম কি…’

জায়ান নূরকে আর বলতে দিলো না।তার আগেই ওকে থামিয়ে দিয়ে নিজে বলে,
-‘ কোনরকম অযথা কথা বললে এখনই চুপ যা।’

-‘ আরে ভাইয়া শুনে তো নিবে আমি কি বলি।’

-‘হু!’

-‘ বলছিলাম কি ভাবি কে দেখে তোমার কেমন লেগেছে।’

নূরের প্রশ্নে জায়ানের তেমনটা একটা পরিবর্তন দেখা গেলো না।জায়ান ল্যাপটপে আঙুল চালাতে চালাতে উত্তর দিলো,
-‘ হু,ভালো।’

হতাশ হলো নূর আর ইফতি।এতো ইনিয়েবিনিয়ে প্রশ্নটা শেষমেষ করলো ওরা।আর জায়ান উত্তর দিলো কি এটা? ‘ হু,ভালো।’ এটা কোন উত্তর হলো?
ওদের ভাবনার মাঝে জায়ান ল্যাপটপ কোল থেকে রেখে তীক্ষ্ণ চোখে নূর আর ইফতির দিকে তাকিয়ে বলে,
-‘ আর কিছু আস্ক করবি?নাহলে যা বের হো।’

নূর মুখ ফুলিয়ে নিলো।তার এই ভাইকে কিছু জিজ্ঞেস করে লাভ নেই। শুধু ত্যাড়াব্যাকা উত্তর দিবে। নূর ইফতির হাত ধরে টানতে টানতে জায়ানের রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। তারপর ইফতিকে ঝারি দিয়ে বলে,
-‘ কেমন মানুষ তুমি।ভাইয়া আর ভাবি ছাদে একা কথা বলতে গেলো তুমি একটু লুকিয়ে চুরিয়ে দেখবা না ওরা কি করছিলো তখন।’

ইফতি বিরক্ত হলো নূরের এতো বকরবকর শুনে।বললো,
-‘ থামবি তুই?আমি বেহা*য়া নাকি বড় ভাই আর ভাবি একা একা কি করছিলো তা উঁকিঝুঁকি দিয়ে দেখবো।চল এখান থেকে জলদি ভাইয়া নাহলে রেগে যাবে।’

ইফতি নূরকে নিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো।এদিকে জায়ান ওদের যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসলো।ধীর আওয়াজে বললো,
-‘ আমার মনের অনুভূতি সম্পর্কে জানাটা এতো সহজ ব্যাপার না।যাকে আমি মন দিয়েছি সে ছাড়া আমার চোখের ভাষা,আমার মনের অনুভূতি কেউ বুঝবে নাহ।’

তারপর ক্যালেন্ডারের দিকে তাকিয়ে বিরবির করলো,
-‘ আর মাত্র পনেরো দিন।’

#চলবে___________

#হৃদয়াসিক্ত_কাঠগোলাপ
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পর্বঃ০৪
সূর্যের প্রখ’র তেজে যেন ঝলছে যাচ্ছে চারপাশ।অসহ্য গরমে নাস্তানাবুদ অবস্থা সবার।একটুখানি শীতল বাতাস এসে গা ছুঁয়ে দিলেই যেন কলি*জা জুড়িয়ে যায়। গরমে অস্থির হয়ে গিয়েও বেঁচে থাকার তাগিদার জন্যে সবাই কাজের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরেছে।থেমে নেই কারো নিত্যদিনকার কাজকর্ম।
এইতো আরাবীও আজ ইউনিভার্সিটিতে এসেছে।আজ মাস্টার্সের প্রথম ক্লাস।মিস দিলে হবে বুঝি?ক্লাস শেষ করে ইউনিভার্সিটি’র গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে ও।পাশেই দাঁড়ানো ওর বান্ধবী আলিফা।আলিফা গরমে হাসফাস করে এইবার আরাবীর উদ্দেশ্যে বললো,
-‘ দোস্ত,ভাল্লাগে না।গরমে সি*দ্ধ হয়ে যাচ্ছি।’

আরাবীও ক্লান্ত স্বরে বললো,
-‘ হু,আজ অনেক গরম পরেছে।’
-‘ চল না আরাবী পাশে একটা ক্যাফে আছে ওখানে যাই।’

আলিফার কথায় আরাবী ভাবলো আসলেই ক্যাফে গিয়ে ঠান্ডা ঠান্ডা কিছু খেলে মন্দ হয় নাহ।গলাটা শুকিয়ে এসেছে এমনিতেও।ব্যাগে যে বোতল আছে সেগুলোর পানি খাওয়া আর না খাওয়া সমান ব্যাপার।তাই আরাবী রাজি হয়ে গেলো।
-‘ হ্যা,যাওয়া যায়।’

আরাবী ব্যাগ খুলে ফোন বের করলো।বাবাকে ফোন করে জানিয়ে দেওয়া প্রয়োজন।বাবাকে না বলে ও কোথাও যায় নাহ।ফোন বের করতে নিয়ে আঙুলের ব্যাথা জায়গায় আবারও ব্যাপা পেলো আরাবী।ব্যাথায় ‘ইস’ করে উঠলো।ফলে ব্যান্ডেজটায় র’ক্ত উঠে লাল হয়ে গেলো।আলিফা তা দেখে বলে,
-‘ আরে কি করলি? আবারও ঘা*টা তাজা হয়ে গেলো।একটু দেখে শুনে ব্যাগটা খুলবি নাহ?’

আরাবী মলিন হেসে বলে,
-‘ এইটুকুতে কিছু হবে নাহ।চিন্তা করিস নাহ।’

বাবাকে ফোন করে জানিয়ে দিলো আরাবী।তারপর আলিফার সাথে ক্যাফের উদ্দেশ্যে চললো।
____________
-‘ অফিস টাইমে আমি কাজ রেখে এখন তোদের সাথে এখানে এসেছি।আমার কতো ইম্পোর্টেন্ট কাজ ছিলো জানিস?’

নূর জায়ানের কথায় বিরক্তিতে ‘চ’ এর মতো শব্দ করলো।তারপর বললো,
-‘ একটু আধটু কাজ বাদ পরলে কিছু হয় না ভাইয়া।তোমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।ট্রিট দিবে না আমাদের? তুমি এতো কিপ্টা কেন?’

জায়ান ভ্রু-কুচকালো।বললো,
-‘ কিপ্টামি কোথায় করলাম?তোদের কার্ড দিয়েছিলাম নাহ?’
-‘ কার্ড দিয়ে কি হবে?যার বিয়ে তাকেও আসতে হবে স্বয়ং নিজে থেকে ট্রিট দিতে হবে।এটাই নিয়ম।’

একটা মাত্র বোন তার কথা ফেলতে পারবে না জায়ান।তাই চুপচাপ বসে রইলো না চাওয়া সত্তেও।অফিসে গিয়ে সেখান থেকে জায়ান আর ইফতিকে একপ্রকার ধরে টেনেহিছড়ে নিয়ে এসেছে নূর।পুরোটা সময় নূরকে দিতে হবে আজ।শপিং করিয়ে দিতে হবে সাথে যা যা নূর চাইবে তাই দিতে হবে।জায়ানের কাজ থাকায় নিজের কার্ড দিয়ে বলেছিলো ইফতিকে সাথে নিতে। কিন্তু আরাবী নারাজ সে আজ তার দু ভাইকে সাথে করে নিয়েই তবে ক্ষ্যান্ত হয়েছে।ওদের খাওয়ার মাঝে জায়ানের কল আসলো একটা ফোনে।তাই জায়ান উঠে একটু সাইডে চলে গেলো কলটা এটেন্ড করার জন্যে।
নূর বড় ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে মুখ ফুলিয়ে বলে,
-‘ ভাইয়া এমন কেন? আমি উইশ করি ভাইয়াকে যেন ভাবি নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরায়।’

ইফতি মাছি তারাবার মতো করে বলে,
-‘ হাহ সেটা স্বপ্নে।’

কথাটা বলেই ইফতি ক্যাফের দরজার দিকে তাকালো।তাকানো মাত্র হা করে রইলো।নূর ইফতিকে এমনভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ভ্রু-কুচকালো। নিজেও তাকালো সেদিকে।বিষ্ময়ে গোলগোল হয়ে গেলো নূরের চোখ। তারপর কোন কিছু না ভেবে একদৌড় লাগালো সেদিকে।নূরকে এমন করতে দেখে ইফতি চেচিয়ে উঠলো,
-‘ নূর আস্তে যা পরে যাবি।’

কে শুনে কার কথা সে নূর দৌড়।
———
কথা বলতে বলতে আরাবী আর আলিফা ক্যাফেতে ঢুকছিলো।এমনসময় কেউ এসে হুরমুর করে আরাবীকে জড়িয়ে ধরলো।এমন করায় বেশ ভড়কে গেলো আরাবী।আলিফা চেঁচিয়ে উঠলো,
-‘ আরে আরে কে আপনি?ওকে এইভাবে চেপে ধরেছেন কেন?’

আরাবী হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে।এদিকে সে আর কেউ না নূর আরাবীকে ঝাপ্টে ধরেছে।নূর আরাবীকে লম্বা একটা হাগ করে তারপর আরাবীকে ছাড়লো।তারপর হাসিমুখে বললো,
-‘ ভাবি,ভাবি।ইস,তুমি এখানে এসেছো।আমি তোমাকে দেখে একেবারে খুশি হয়ে গেলাম।’

আরাবী চিনতে পারছে না নূরকে।আসলে সেদিন ও ভয়ে আর লজ্জায় কারো দিকেই ভালোভাবে তাকায়নি।আরাবী আমতা আমতা করে বললো,
-‘ কিন্তু তুমি কে?’

নূর হা করে রইলো আরাবীর প্রশ্নে।পরক্ষনে আবার চেহারা দুঃখী দুঃখী করে বলে,
-‘ ভাবি এটা কি বললে তুমি?আমি তোমার জামাইয়ের একমাত্র বোন।তোমার একমাত্র ননদিনী নূর। আর তুমি কিনা আমায় চিনতেই পারোনি।’

আরাবী নূরের কথায় সাথে সাথে জিহবায় কামড় দিলো।সর্বনাষ বড় ভুল করে ফেলেছে।ইস, নূর মেয়েটা এখন কি ভাবছে ওকে নিয়ে।আরাবী জোড়পূর্বক হেসে বলে,
-‘ আসলে বুঝোই তো সেদিন একটু নার্ভাস ছিলাম তাই কারো দিকে তেমনভাবে তাকাইনি।এইজন্যেই চিনতে পারিনি তোমাকে।সরি হ্যা।’

নূর ফিঁক করে হেসে দিলো,
-‘ আরে ভাবি চিল।আমি তো এমনিতেই একটু দুষ্টুমি করছিলাম।’

এরমধ্যেই এখানে এসে ইফতি উপস্থিত হলো।ইফতিকে মনে আছে আরাবীর।তাই ইফতির উদ্দেশ্যে বলল,
-‘ আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া।ভালো আছেন।’
-‘ ওয়া আলাইকুমুস সালাম। ভালো আছি ভাবি।আপনি ভালো আছেন?’
-‘ আলহামদুলিল্লাহ!ভালো।’

আলিফা এতোক্ষন ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে পুরো ঘটনা দেখছিলো।আরাবীর ওর দিকে নজর যেতেই আরাবী আলিফার হাত ধরলো।ধ্যান ভাংলো আলিফার।আরাবী হালকা হেসে বললো,
-‘ ও আমার বান্ধবী আলিফা।’

নূর বললো,
-‘ হ্যালো আলিফা আপু।আমি আরাবী ভাবির একমাত্র একটা কিউট ননদ নূর।’

ইফতি প্রথমে সালাম জানালো।আলিফাও সালামের উত্তর নিলো।ইফতি বলে,
-‘ আমি ভাবির দেবর ইফতি সাখাওয়াত। ‘

সাক্ষাৎ শেষ হতেই।নূর আরাবীর হাত টেনে ধরলো,
-‘ ভাবি তোমরা নিশ্চয়ই ক্যাফেতে কিছু খেতে এসেছো।’

আরাবী নূরের প্রশ্নে বলে,
-‘ হ্যা, আসলে বাহিরে অনেক গরম।তাই ভাবলাম আমি আর আলিফা কোল্ড কফি খাই।’
-‘ বেশ ভালো করেছো।চলো আমরাও এখানে কফি খেতে এসেছিলাম।চলো আমাদের সাথে জয়েন করবে তোমরা আসো।জায়ান ভাইয়াও এসেছে। অনেক মজা হবে।জানো আমি আজ ভাইয়াকে অফিস থেকে ধরে নিয়ে এসেছি।আমার একমাত্র বড় ভাই।তার বিয়ে ঠিক হয়েছে।সে আমাকে ট্রিট দিবে না এটা কি হয়?তাই আমি জায়ান ভাইয়া আর ইফতি ভাইয়া দুজনকেই ধরে বেধে নিয়ে এসেছি।’

জায়ানও এখানে আছে ভয়ে গলা শুকিয়ে আসলো আরাবীর।লোকটা এখানে আছে তারমানে।এখন আরাবী কিভাবে যাবে লোকটার সামনে?এই ব্যাক্তির উপসস্থিতি টের পেলেই তো আরাবীর ভয়ে দম বন্ধ হয়ে আসে।কাঁপাকাঁপি করতে করতে জ্ঞান হারাবার মতো অবস্থা হয়ে যায়।নূরকে যে বলবে ও যাবে নাহ সেটাও পারবে নাহ।মেয়েটা না আবার খারাপ কিছু ভেবে বসে।এদিকে নূরকে এমন বকবক করতে দেখে ইফতি বলল,
-‘ আস্তে কথা বল।শ্বাস নেহ।এতো কথা কিভাবে বলিস তুই?’

নূর মুখ কুচকালো।প্রতিবাদি সুরে বলে,
-‘ আস্তে কথা কেন বলবো? মুখ দিয়েছেই আল্লাহ কথা বলার জন্যে।যা মনে আসবে ডিরেক্ট বলে ফেলবো।কোন থামাথামি নেই।’

নূরের এমন বাচ্চামো কথায় আলিফা হেসে দিলো।ইফতি তাকাতেই আলিফা নিজের হাসি বন্ধ করে আবারও সিরিয়াস মুড নিয়ে দাড়ালো।তা দেখে ইফতি হালকা হাসলো।নূর আরাবীকে নিয়ে ওদের টেবিলের সামনে নিয়ে দাড়ালো।ঠিক তখনই জায়ান কথা বলা শেষ করে এসেছে।জায়ানকে দেখেই আরাবী মাথা নিচু করে রইলো।জায়ান আরাবীর দিকে অদ্ভূত দৃষ্টিতে তাকিয়ে।নূর বললো,
-‘ ভাইয়া দেখো সার্প্রাইজ।ভাবিকে নিয়ে আসলাম।’

জায়ান শীতল কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
-‘ হু! কোথায় পেলি ওকে?’

ইফতি জবাবে বলে,
-‘ গরম লাগার কারনে ভাবি আর ওনাত ফ্রেন্ড ক্যাফের এসেছে কোল্ড ড্রিংস এর জন্যে।ক্যাফেতেই দেখা হলো মাত্র। তাই নূর আমি গিয়ে নিয়ে আসলাম।আমাদের সাথে যেন জয়েন করে।ভালো করেছি না ভাইয়া।?’

জায়ান ইফতির কথা পরিপ্রেক্ষিতে কিছুই বললো না। শীতল চাহনীতে সে তাকিয়ে আরাবীর দিকে।আরাবী চোখ তুলে একবার তাকালো জায়ানের দিকে।তাকাতেই জায়ানের ওই শীতল চোখের চাহনী দেখে ওর অন্তর আত্মা কেঁপে উঠলো।এইভাবে তাকিয়ে আছে কেন লোকটা ওর দিকে? কি যেন আছে ওই দৃষ্টির মাঝে।আরাবীর বুকের ভীতর এফোড় ওফোড় করে দেয় ওই চাহনী।আরাবী ভয়ের সাথে ঢোক গিললো।শুকিয়ে যাও গলাটা একটু ভিজানোর বড্ড দরকার।জায়ানের শান্ত কন্ঠ শোনা গেলো,
-‘ হেভ আ সিট।’

নূর জায়ানের কথা শুনে টেনে আরাবীকে বসিয়ে দিলো।ইফতিও আলিফাকে বসার জন্যে বললো।আলিফা আরাবীর দিকে তাকালো।আরাবীর একপাশে নূর বসেছে অন্যপাশ খালি।আরাবীর হবু বর সামনে দাঁড়ানো সেই বসবে ওই খালি জায়গাটায়।আলিফা পরিস্থিতি বুঝে অপরপাশে গিয়ে বসে পরলো।ওর পাশে বসলো ইফতি।তবে মাঝে যথেষ্ট জায়গা রেখে বসেছে ছেলেটা।আলিফার ভালো লাগলো ব্যাপারটা দেখে।এদিকে আরাবী চুপচাপ বসে ক্রমাগত হাত কচলাচ্ছে।নার্ভাসনেসের ঠ্যালায় ও বোধহয় ম’রে টরে যাবে।আরাবী বিরবির করলো,
-‘ ইয়া মাবুদ। আমাকে একটু স্বাভাবিক করে দেও।’

কিন্তু তা আর হলে তো?আরাবীর কাঁপাকাঁপি আরো একধাপ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্যে জায়ান ধপ করে বসে পরলো ওর পাশে।একদম ওর গা ঘেষে বসলো।আরাবীর শ্বাস গলায় আটকে গেলো।পুরো শরীর বরফের জমে গিয়েছে ওর।জায়ানের বাহু আরাবীর বাহুর সাথে একেবারে লেগে।আরাবীর যেখানটায় জায়ানের স্পর্শ করছে।আরাবীর মনে হচ্ছে সেই জায়গাটায় কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।এসির মাঝেও ঘামতে লাগলো আরাবী।জায়ান আরাবীর অবস্থা দেখে সবার আড়ালে ঠোঁট কামড়ে মৃদ্যু হাসলো।আলিফা আর ইফতি নূরের বকবক শুনতে ব্যস্ত।জায়ান মাথাটা নিচু করে আরাবীর কানে ফু দিলো।এমন করাতে ভয়ানকভাবে কেঁপে উঠলো আরাবী।হাটুর কাছের জামা সজোড়ে খামছে ধরলো।হৃৎপিন্ডটা বোধহয় বুক চিরে বেড়িয়ে আসবে।আরাবীর সেই কাঁপা হাতটা জায়ান নিজের হাত দ্বারা চেপে ধরলো।জায়ানের এক একটা কান্ডে যেন আরাবী চারশো চল্লিশ বোল্ডের ঝটকা খাচ্ছে।কি হচ্ছে ওর সাথে কেন হচ্ছে? লোকটা এমন কেন করছে?সেদিনের জায়ান আর আজকের জায়ান এক নাহ।কোনভাবেই এক নাহ।অন্তত আরাবীর কাছে তো নাই।জায়ান আরাবীর হাতটা আরো একটু শক্ত করে ধরে।আরাবীর কানে ফিসফিস করে বললো,
-‘ টেক আ ব্রিথ।’

আরাবী সাথে সাথে মাথাটা সরিয়ে ফেললো।জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছে আরাবী। জায়ানের হাতের মাঝে থাকা হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো।কিন্তু কোনভাবেই পারছে।আরাবী এইবার না পেরে কাঁপা গলায় নিচু কন্ঠে বলে,
-‘ হাতটা ছাড়ুন প্লিজ।’

জায়ানের কোন জবাব নেই।সে নির্বিকার।ইয়া মাবুদ এই কোন লোকের খপ্পরে পরলো ও, ভাবছে আরাবী।আরাবী আবারও বলে,
-‘ ছা..ছাড়ুন নাহ প্লিজ।’
জায়ানের ভাবলেসহীন উত্তর,
-‘ উহু,এইভাবেই থাকুক।’

এই উত্তরে যেন আরাবীর কেঁদে দেবার মতো অবস্থা।ঠোঁট ভেঙ্গে কান্না আসছে ওর।’এইভাবেই থাকুক!’ বললেই হলো নাকি? এমনভাবে আরাবী থাকবে কিভাবে? এইযে আরাবীর হাত-পা কাঁপছে,হাপানি রোগির মতো শ্বাস নিচ্ছে,হৃৎপিন্ড ধরাস ধরাস করছে।এইভাবে কি থাকা যায়?উহু! একদম নাহ।আজ আরাবীর ম’রেই যাবে।একদম মরে যাবে। সেদিন ওকে কি ধমকটাই নাহ দিলো।জায়ানের ধমক খেয়ে আরাবীর রূহ উড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিলো।আর আজ লোকটা এসব কি করছে? একটা মানুষ রাতারাতি এমন ভাবে বদলে যেতে পারে কি করে?মানে কিভাবে?জানা নেই আরাবীর।কিচ্ছু জানা নেই।

#চলবে________
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।