হৃদয় নিবাসে তুই পর্ব-৩৭

0
467

হৃদয় নিবাসে তুই
পর্ব-৩৭
লেখনীতেঃ ভূমি

দিহানের হাতটা একহাত দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরেই আরেক হাত দিয়ে পেট চেপে ধরল অদ্রিজা।কম্পনরত চাহনি নিয়ে চাতক পাখির মতো মাঠের আশেপাশে তাকাল বার কয়েক।কোন পরিচিত মুখ ভেসে উঠল না।নেহাও বোধ হয় আজ ভার্সিটিতে আসে নি।পেটের অসম্ভব ব্যাথায় বাধ্য হয়ে দিহান নামক যুবকটিরই সাহায্য নিতে হলো।যে যুবকটিকে সে ভালোবাসার সুযোগ দিবে বলেও দেয়নি, ঠকিয়েছিল, সেই যুবকটির হাতই শক্ত করে চেপে ধরল নিঃসন্দেহে।এক ঝুড়ি ভরসা, আশ্বাস নিয়েই দিহানের ঘাম জড়ানো মুখের দিকে চাইল অদ্রিজা।তলপেটটা হাত দিয়ে খামচে ধরেই অস্পষ্ট কন্ঠে বলল,

‘ দি্ দিহান?নেহাকে একটু বলবে আসতে?প্লিজ!কল করো না একটু ওকে।’

দিহান বোকার মতো চাইল।অদ্রিজার অসুস্থতা দেখেই ভড়কে গেল।মাথা ফাঁকা লাগল কয়েক মুহুর্ত।কি করবে, কি বলবে বুঝে না উঠেই শূণ্যের দিকে তাকিয়ে জোরে জোরে শ্বাস ফেলল সে।কপাল চেপে ধরে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করতে করতেই অদ্রিজাকে বলে উঠল,

‘ দ্রিজা?এখানে অনেক রোদ।বসবে একটু কোথাও।হয়তো ভালো লাগবে।এমন রোদে দাঁড়িয়ে থাকলে তো শরীর আরও খারাপ হবে।’

অদ্রিজা মিনমিনে চোখে চাইল। কিছু না বলেই ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলে দিহানের হাতটা ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করল।কিন্তু পারল না।ব্যাথায় বিষিয়ে উঠল পুরো শরীর। প্র্যাগন্যান্সির চার মাসের মাঝেই এই ব্যাথার কোন উৎস খুঁজে না পেয়েই শরীর কেঁপে উঠল তার।হাত পায়ের শিরায় টান পড়ল যেন।দুই হাত দিয়ে তলপেটটা চেপে ধরেই টলমল করা চোখজোড়া বন্ধ করে নিল অদ্রিজা।সঙ্গে সঙ্গেই নরম গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ল নোনতা পানি।দিহান ছোটছোট চোখে অদ্রিজার গাল বেয়ে নোনতা পানি গড়ানো, অস্থিরতা, অস্বাভাবিক ব্যাথায় মুখ চোখ নীল হওয়া সবটাই পর্যবেক্ষন করল।নেহাকে কল করে দ্রুত আসতে বলেই কল কাঁটল।এক দৈাড়ে ভার্সিটির সামনে থাকা টং দোকানটা থেকে একটা পানির বোতল নিয়েই আবারও দৈাড়ে এসে দাঁড়াল অদ্রিজার সামনেই।পানির বোতলটা এগিয়ে দিয়েই কপালের ঘাম।মুঁছতে মুঁছতে বলে উঠল,

‘ অল্প পানি খেয়ে মুখে পানির ছিটে দাও তো। হয়তো ভালো লাগবে।হঠাৎ এমন ব্যাথা হচ্ছে কেন?কিছুই তো বুঝতে পারছি না।’

অদ্রিজা মাথা তুলে ঝাপসা চোখে দিহানের দিকে তাকাল।চোখের ঘন পাঁপড়ি গুলো ভিজে উঠল মুহুর্তেই।শূণ্য, সাদা, অনুভূতীহীন মুখটা ব্যাথায় ক্রমশ নীলাভ হয়ে উঠল যেন।দাঁতে দাঁত চেপেই কোনভাবে বলে উঠল সে,

‘ দে্ দেওয়ালের সাথে ধাক্কা খেয়েছিলাম সিঁড়ি দিয়ে নামার সময়।পেটের দিকে ধাক্কাটা একটু জোরেই লেগেছিল। তাই..’

অদ্রিজার বাকি কথাটা শেষ হলো না।ব্যাথায় বিষিয়ে উঠল মন প্রাণ।দাঁতে দাঁত কাঁমড়ে কান্না হজম করার সহস্র চেষ্টা করতে করতেই সামনে উপস্থিত হলো বিশালদেহী, লম্বা চওড়া শরীরের রক্তিম নামক যুবকটি।মুখ চোখ গম্ভীর তার।দৃষ্টি অত্যাধিক শান্ত!জমে থাকা গলাটা হালকা ঝেড়েই কোলে তুলে নিল অদ্রিজাকে।ঠোঁট চেপে শীতল গলায় বলে উঠল,

‘ চলাফেরাতে একটু হুশ রাখলে ক্ষতি কি হয়?আপনি তো এখন একা নন।এটা কেন মনে থাকল না আপনার?এত তাড়াহুড়ো করে চলার কি ছিল?’

অদ্রিজা কিছু বলল না।রক্তিমের শার্টটা মুঠো করে খামচে ধরল।অন্য দিনের মতো নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা চালাল না আজ।হাত পা জমে উঠল ক্রমশ।ভারী শরীরটার নিয়ন্ত্রন যেন নিজের উপর আর রাখা গেল না।রক্তিমের বাহুডোরে নিজের পুরো শরীরের ভার এলিয়ে পড়ল মুহুর্তেই।চোখজোড়া বুঝে নিতে নিতেই অস্ফুট গলায় বলে উঠল সে,

‘ আ্ আমায় কোলে তুললেন কোন সাহসে?আমি যেতে পারব।’

রক্তিম এবার গম্ভীর মুখ চাহনিতেও হাসি ফুটাল।ঠোঁট চওড়া করে হেসেই দিহানকে ধন্যবাদ জানিয়ে পা বাড়াল। গাড়ির সিটে অদ্রিজাকে আলতো করে বসিয়ে দিয়েই বাঁকা হেসে বলে উঠল,

‘ এই না হলে রক্তিমের ওয়াইফ? মরে যাবে তবুও রক্তিমের মতোই জেদ নিয়ে বসে থাকবে।আহহ!আপনার রাগ জেদ এসব দেখেই তো ফিদা হয়ো যাই।আর ফিদা হতে চাই না।চুপচাপ বসে থাকবেন।ব্যস!’

অদ্রিজা কিছু বলল না।বলার জন্য গলা দিয়ে কোন শব্দ ও আসল না অবশ্য।চোখজোড়া বুঝে নিয়েই শরীরটা এলিয়ে দিল গাড়ির সিটে।রক্তিম ড্রাইভিং সিটে বসেই আয়নায় তাকিয়ে অদ্রিজার মুখটা দেখল।ক্লান্তি মাখা ঝিমিয়ে পড়া চোখ। ঘেমে উঠা কপালে ছোটছোট চুল গুলো আটকে আছে।চুপসে আছে পুরো মুখ।রক্তিম দীর্ঘশ্বাস ফেলল।অদ্রিজার পেটের নিচে হাতজোড়া দিয়ে খিচে ধরা আর ব্যাথায় নীলাভ মুখ, তিক্ত চাহনি দেখেই বুকের ভেতরটা মুঁচড়ে উঠল অজানা ভয়ে।জীবনের প্রতিটা মুহুর্ত,প্রতিটা ক্ষণ যেখানে হাজার দুঃখও সে হাসিমুখে বরণ করেছে সেখানে আজ এইটুকুতেই বুক ভারী হয়ে উঠছে তার।কঠিন দীর্ঘশ্বাস গুলো মুক্ত করা বেশ কঠিন হয়ে উঠছে আজ!এটাই বুঝি একজন বাবার অনুভূতি।নিজের অনাগত সন্তানের একটুখানি ক্ষতির আভাসেও বুঝি বাবাদের বুকে এমন উতাল পাতাল ঝড় সৃষ্টি হয়?আচ্ছা!তার বাবা কি তার জন্য এতটা উদ্বিগ্ন থাকত?এতটা চিন্তা করত তার জন্য?না!করে নি এত চিন্তা।এতটা উদ্বিগ্নও হয় নি।মনে মনে নিজেকে নিজেই উত্তর গুলো দিয়ে চোখজোড়া বন্ধ করল রক্তিম।উষ্ণশ্বাস ফেলে সামনে থাকা পানির বোতলটার মুখ খুলেই অদ্রিজাকে হা করতে বলল।অদ্রিজা কয়েক সেকেন্ড চুপ থাকলেও পরমুহুর্তে কিছু না বলেই হা করল।এই গরমে, ঘামে চুপসে উঠা এই শরীরের জন্য ঐটুকু পানি প্রয়োজন ছিল।শুকনো গলা এবার বুঝি একটু ঝরঝরে হলো।রক্তিমের দিকে ছোট ছোট চোখে তাকাতেই রক্তিম হালকা হেসে বোধ হয় বুঝাতে চাইল সে চিন্তা করছে না।এটা চিন্তা করার মতো কোন বিষয়ই না।কিন্তু মন জিনিস টা বড্ড অবাধ্য।শরীরের ক্লান্তি, পেট ব্যাথায় বিষিয়ে উঠা যন্ত্রনার সাথে এবার মন খোঁচখোঁচ করা অজানা ভয় যোগ হলো।গলা সরু করে কিছু বলার আগেই রক্তিম গাড়ি স্টার্ট দিল।সঙ্গে সঙ্গে হালকা বাতাসে শীতল হয়ে উঠল শরীর।নিস্তেজ হয়ে উঠল ভারী দেহ।হাত পা লতিয়ে পড়ল গাড়ির সিটের উপর।চোখ জোড়াও বুঝে আসল মুহুর্তেই।

.

হসপিটালের করিডোরেই দাঁড়িয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলল নেহা।নিচ থেকে উপরে জোরে জোরে সিঁড়ি বেয়ে আসার দরুন হাুঁটুতে ভর দিয়ে হাঁপাল কিছুক্ষন।দিহান চোখ ছোট ছোট করে নেহার দিকে তাকিয়ে রইল।মৃদু হেসে নেহার দিকে এগিয়েই বলল,

‘ এত জোরে উঠলি কেন?এখন হাঁফাতে থাক।আমি যাচ্ছি।’

নেহা মুখ তুলে চাইল।দিহান যাচ্ছি বলেও গেল না।স্থির দাঁড়িয়ে থেকে নেহার হাঁফাতে থাকা মুখটা দেখতে ব্যস্ত হয়েই মুচকি হাসল।ঠোঁট চেপে বলল,

‘ যাব?তুই একাই আসিস তাহলে।’

নেহা আবারও মিনমিনে চাহনিতে তাকিয়ে রইল।কিছু না বলে জোরে জোরে হাঁফিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করল।দিহানের হাতটা আকস্মিকভাবেই খপ করে ধরে নিয়ে বলে উঠল,

‘ কি আশ্চর্য!এতটা পথ যখন তোর সাথেই এসেছি তখন এটুকু পথ তুই আমাকে রেখে একা একা চলে যাবি? এত খারাপ তুই?!’

দিহান হালকা হাসল।নেহার হাতটা নিজের হাতের সাথে জড়িয়ে আছে দেখেই গম্ভীর গলায় বলল,

‘ আজ তোরা সবাই আমার হাতটাকে ধপাধপ ধরে ফেলছিস কেন বুঝে উঠছি না।’

নেহা সরু চোখে চাইল।কি বুঝেই মনে হলো, কোনকিছুতে জোর করা উচিত না।দিহান যদি তাকে ভালোবাসে তাহলে কোন একদিন সেও হাত ধরবে।জোর করে হাত ধরতে হবে কেন হাত?কথাটা ভেবেই দিহানের হাতটা ছেড়ে দিল।দু পা এগিয়েই হাঁটতে হাঁটতে বলে উঠল,

‘ স্যরি দিহান।খেয়াল করা হয় নি। হুটহাট কি করে ফেলি খেয়াল থাকে না আমার!’

দিহান কপাল কুঁচকাল।সামনের মেয়েটা যে নেহাই বুঝে উঠতে দেরি হলো।এত সহজে কষ্ট পেয়ে গেল এই মেয়েটা?তার হাতটা ছেড়ে দিল?অথচ সেইদিন তাদের বাসার সামনেও কত জোর দিয়ে কথা বলেছিল। অদ্ভুত!কষ্ট পেল কেন?মনে মনে প্রশ্নগুলো করেই নিজের মাথায় নিজেরই ঘুষি বসাতে মন চাইল দিহানের।দাঁতে দাঁত চেপে দ্রুত পায়ে এগিয়ে নেহার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েই নেহার হাতটা খপ করে ধরে বসল।ভ্রু কুঁচকেই বলল,

‘ তুই এইটুকুতেও মাইন্ড করিস?জানা ছিল না।’

‘ মাইন্ড কখন করলাম?’

দিহান দৃষ্টি গভীর করল।কপাল কুঁচকানো চাহনি নিয়ে নেহার দিকে তাকিয়েই গম্ভীর গমগমে কন্ঠে বলে উঠল,

‘ তাহলে হাত ছাড়লি কেন?’

নেহা অবাক হলো।হাত ছাড়বে না?তাহলে কি করবে? বোকার মতোই প্রশ্ন করল নেহা,

‘ হাত ছাড়ব না?তুই তো বিরক্ত হচ্ছিলি।তাহলে?হাত ছাড়া উচিত হয়নি আমার?’

দিহান শক্ত কন্ঠেই অন্য পাশ ফিরে বলল,

‘ নাহ!উচিত হয়নি।কেন হাত ছাড়বি তুই?হাত ছাড়ার অনুমতি কে দিল তোকে?’

নেহা এবার বোকার মতো তাকাল।ফুস করে নিঃশ্বাস ফেলে চাহনিটা দিহানের মুখ থেকে নিজের হাতের দিকে নিল।দিহানের হাত যে তার চিকন হাতটা ধরে রেখেছে তা বোধগম্য হতেই ক্লান্তিমাখা নিঃশ্বাস বেরিয়ে এল ভেতর থেকে।মুখে ফুটল মৃদু মিষ্টি হাসি। চোখজোড়া বন্ধ করে নিয়ে প্রশান্তির হাসি হাসল।প্রতিউত্তরে একটা কথাও না বলে নিশ্চুপে দিহানের সাথে পা মিলিয়েই পা বাড়াল।

.

হসপিটালের কেবিনে নিজেকে আবিষ্কার করতেই চোখ মেলে চাইল অদ্রিজা।নিজের অনেকটা কাছে কোন পুরুষের অস্তিত্ব বুঝে উঠেই থমকে গেল সে।উষ্ণ নিঃশ্বাসগুলো মুখচোখ ছুঁয়ে যেতেই কেঁপে উঠল।হাত পায়ের তালু ইষৎ ঘেমে উঠল অস্বস্তিতে।তবুও নড়াচড়া করার মতো এটুকু শক্তি পেল না নিজের মধ্যে। বার কয়েক শুকনো ঢোক গিলেও নিজের মুখের উপর উপছে থাকা পুরুষটিকে সরার জন্য বলতে পারল না সে।মুখ দিয়ে একটা শব্দ ও বের হলো না।বিস্ময়, অস্বস্তি নিয়ে ছোটছোট চোখে উপরের দিকটায় চেয়ে থাকতেই বুঝতে পারল সামনের লোকটা ফুপাচ্ছে। আরও বুঝল,লোকটার ঠোঁটজোড়া তার কপালের মসৃন ত্বকটাতেই স্থির। অদ্রিজা হালকা কাঁপল।হাঁসফাঁস করল। অস্ফুট স্বরে অনেক চেষ্টা করেই বলে উঠল,

‘ র্ রক্ তিম!’

অদ্রিজার অস্ফুট স্বরে কেঁপে কেঁপে বলা কথাটা শুনেই সামনের লোকটি মুহুর্তেই এক লাফে সরে দাঁড়াল। অদ্রিজা এতক্ষন জেগে ছিল ভেবেই চমকাল সে।কন্ঠ নিচু করেই গমগমে কন্ঠে বলল,

‘ স্যরি।আ’ম স্যরি। বুঝতে পারিনি আপনি জেগে আছেন।’

অদ্রিজা কিছু বলতে পারল না।তাকিয়ে রইল স্থির দৃষ্টিতে। রক্তিমের শুকনো মুখচোখ পরখ করেই গলা শুকিয়ে আসল মুহুর্তেই।কি এমন হয়েছে?রক্তিম এতটা চুপচাপ?এতটা শান্ত?শরীর শিউরে উঠল মুহুর্তেই।চোখজোড়া ছোটছোট করে স্থিরভাবে রক্তিমের দিকে তাকাতেই মনে জাগল কঠিন প্রশ্ন।কাঁপা কাঁপা ভাবে বাম হাতটা গিয়ে ঠেকল তার পেটে। ঠোঁটে ঠোঁট চেপেই বলে উঠল

‘ র্ রক্ তি….’

বাকি কথাটা বলা হলো না অদ্রিজার।রক্তিম তার তর্জনি আঙ্গুলটা অদ্রিজার ঠোঁটে রেখেই হালকা হাসল।কন্ঠটা পিচেল করার চেষ্টা করেই বাঁকা হাসার চেষ্টা করল।কিন্তু চেষ্টা সফল হলো না।স্পষ্ট বুঝা গেল রক্তিমের হাসিটা বানোয়াট।চোখেমুখে হাসির সেই উচ্ছ্বলতাটা ফুটেই উঠল না।তবুও বানোয়াট সে হাসি নিয়েই বুঝাতে চাইল সবটা ঠিক আছে।কোন চিন্তা নেই।কিন্তু মিথ্যে সেই সান্ত্বনাতে অদ্রিজার মন মানল না।স্থির নয়নে তাকিয়ে আবারও বলার চেষ্টা করল,

‘ আ্ মা্ র বে্ বি ভা….’

রক্তিম আবারও আঙ্গুলটা অদ্রিজার ঠোঁটে রেখেই লম্বা নিঃশ্বাস ফেলল।মুখে চোখে হাসির রেখা ফুটানোর চেষ্টা চালিয়েই শুকনো কন্ঠে বলল,

‘ আপনার শরীরে ইনজ্যাক্ট করা হয়েছে।ঘুমানোর কথা আপনার। ঘুমোন।আপনার শরীর দুর্বল।পরে কথা বলার শক্তি পেলে কথাগুলো বলে নিবেন।ওকে?যা জানার জেনে নিবেন।এখন প্লিজ চুপ থাকুন।প্লিজ!’

অদ্রিজা মুখ ফুলাল।বড়বড় চোখে রক্তিমের মুখের দিকে দৃষ্টি স্থির রাখতেই তপ্তশ্বাস বেরিয়ে আসল ভেতর থেকে।রক্তিম কি তার থেকে কিছু এড়িয়ে যাচ্ছে?লুকোতে চাইছে কিছু?কথাগুলো মস্তিষ্কের নিউরনে নিউরনে ঘুরতেই আবারও নিস্তেজ হয়ে আসল শরীর।চোখজুড়ে নেমে আসল চরম ঘুম।মুহুর্তেই বুঝে আসল চোখজোড়া। ঝাপসা হলো দৃষ্টি।সামনের লোকটার মুখও ঝাপসা হয়ে আসল সেই দৃষ্টিতে।তার চোখজোড়া বোধ হয় ছলছল করছিল।কে জানে!ঝাপসা চাহনিতে অতো কিছু বুঝা হয়ে উঠে নি আর!

চলবে…