গল্প – অকিঞ্চন
গল্পকার – শারমিন ইরান
পর্ব সংখ্যা – ছয়
_____
সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিট।
সবেমাত্র রবির নরম আলো কেটে তীক্ষ্ণ আলো আছড়ে পড়তে শুরু করেছে এই ধরণীতলে। সেই তীক্ষ্ণ আলো ধারণ করে মিনহাজ সাহেব দাঁড়িয়ে আছেন ‘WASA’ এর পানির লাইনে। মুখের নকশা দেখে যে কেউ বুঝবে তার ভেতকার বিতৃষ্ণাময় অনুভূতি। বাসায় ভালো পানি আসছে না ইদানীং। সব ময়লাযুক্ত পানি। পানি থেকে ময়লার সাথে সাথে ভেসে আসে তীব্র দুর্গন্ধ! ফুটিয়েও তেমন কোনো সুবিধা মিলছে না। খাওয়ার সময় ঠিকই হালকা গন্ধ রয়ে যায়। তার উপর ফিল্টার টা নষ্ট হয়ে পড়ে আছে আড়াই মাস যাবত। ঠিক করবে করবে ভেবেও করা হচ্ছেনা। সময়ই মিলছে না। ইদানীংকালে সময়টা বোধহয় একটু তাড়াতাড়ি’ই কেটে যাচ্ছে। মিনহাজ সাহেব তার কুঞ্চিত মুখ আরোও একটু কুঁচকে লাইনের দিকে তাকাল। তার সামনে আরোও পাঁচজন। আধঘণ্টা হয়ে গেল এখানে আসার। এখন পর্যন্ত লাইন’ই শেষ হলোনা। আগে থেকে অবগত থাকলে সে কস্মিনকালেও এখানে পা রাখত না। জানা ছিল না; একারণেই বাড়িওয়ালা হয়েও এইভাবে লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে তাকে। চেনা-পরিচিত যেসব ছোকরা আছে কারোর নাম্বারই নেওয়া হয়নি সেভাবে। থাকবে কীভাবে! আগে এমন বিপদে তো পড়া হয়নি।
অবশেষে পানির কাজ সম্পন্ন হলো। রিকশার দ্বারা ২০ লিটার পানি এনে গেটের সামনে দাঁড়ালেন মিনহাজ সাহেব। এখন আবার আরেক ঝামেলা! পানি উঠাবেন কীভাবে? তার দ্বারা পানি উঠানো সম্ভব নয়। ভাবতে না ভাবতেই তার এই সমস্যার সমাধান’ও হয়ে এলো। সেদিনকার সেই চালের বস্তার ছেলেটা আসছে। হ্যাঁ, এদিকেই তো আসছে। এমন সস্তা ধরণের বিপদ থেকে রেহাই পেয়ে মিনহাজ সাহেব বেশ তৃপ্তি পেলেন। ডেকে উঠলেন,
– এই ছেলে, এইইইই!
আচম্বিত এমন ডাকে তাওহীদ দাঁড়িয়ে পড়ল। তাদের গলিতে মানুষ প্রায়শই কম চলাফেরা করে। একারণেই ডাকটা যে তাকে দেওয়া হয়েছে বুঝতে খুব একটা অসুবিধা হলো না। সে যাচ্ছিল দুপুরের খাবার খেতে। ডাক শুনে শব্দের উৎসের দিকে এগিয়ে গেল। প্রভার বাবাকে চিনতে পেরে বেশ বিনয়, আন্তরিকতা নিয়ে বলল,
– জ্বী, চাচা বলেন।
মিনহাজ সাহেব এবার পূর্ণ চোখে তাওহীদের দিকে তাকালেন। ছেলেটার ‘চাচা’ ডাকটা বেশ মধুর শোনায়। এইভাবে ঢাকা শহরে তাকে কেউ ডাকে না। সবাই মিস্টার, সাহেব, স্যার, ভাই কিংবা নাম ধরেই ডাকেন। শহুরে হাওয়ায় গ্রাম্য বাতাস পেয়ে ভালোই লাগল। তাই সে সাবলীল কণ্ঠে বললেন,
– এই পানির বোতল গুলো একটু উপরে তুলে দিতে হবে।
তাওহীদ একবার পানির বোতলগুলোর দিকে তাকিয়ে আবার মিনহাজ সাহেবের দিকে তাকাল। সুন্দর হেসে বলল,
– এক্ষুনি দিতেসি, চাচা।
কাল বিলম্ব না করেই ৫ লিটার এর ৪ টি বোতল দু’হাতে তুলে সিঁড়ি বেয়ে উঠে গেল তাওহীদ। ক্ষণকাল পরেই ফিরে এলো হাসিমুখে। মিনহাজ সাহেবও মুখে সামান্য হাসি ফুটালেন। মানুষের হাসিমুখ দেখতে তার ভালো লাগে। ছেলেটা দেখতে তেমন সুশ্রী নয় তবে হাসিমুখে তেমন একটা খারাপ লাগে না। মিনহাজ সাহেব হাসিমুখেই পঞ্চাশ টাকা বাড়িয়ে বললেন,
– পঞ্চাশ টাকায় চলবে?
মিনহাজ সাহেব বড় ধরনের কোনো অপরাধ করে ফেলেছেন – এমন ভঙ্গিতে তড়িঘড়ি করে তাওহীদ হাত ঠেলে সরিয়ে শুকনো মুখ করে বলল,
– ছি! ছি! চাচা। এই তিনতলায় পানি উঠায়ে আবার টাকা নিব! পাগল হইসেন আপনে! টাকা লাগবে না। আমি তো এমনেই সাহায্য করলাম।
তাওহীদের এমন কথার বিপরীতে মিনহাজ সাহেব বেশ অসংলগ্ন এক প্রশ্ন করে উঠলেন। সামনের টিনশেড দেখিয়ে শুধোলেন,
– এই বাসায় থাকো?
– জ্বি, চাচা।
– ঢাকায় আসছো কতোদিন হয়? আগে তো দেখিনি এইখানে। আমি এখানকার স্থায়ী।
– চাচা, আটমাসের মতো হইসে।
– ওহ আচ্ছা। তাহলে আর কি! টাকা তো নিলে না। যাও, আমিও যাই।
– জ্বী আচ্ছা, অসুবিধা হইলে ডাকবেন।
মিনহাজ সাহেব গেটের ভেতর ঢুকে গেছিলেন। পেছন থেকে তাওহীদের এমন কথায় হেসে ফেললেন। বেশ মজা লাগল কথাটা। অসুবিধা হলে নাকি সে তাওহীদকে ডাকবে! ছেলেটা বোধহয় বেশিই সরল। ঢাকার এই পুঁজিবাদী কাঠামোর সঙ্গে এই সরল আন্তরিকতা মিশে অদ্ভূত কিছু একটা তৈরি করেছে ছেলেটার ভেতরে। নাহলে ঢাকায় এমন আন্তরিকতা খাটে না। এখানে তো এক ফ্ল্যাটে মানুষ খুন হলে অন্য ফ্ল্যাটে খবর পর্যন্ত পোঁছোয় না। মাত্র আটমাস হলো এসেছে। আটমাস। একারণেই বোধহয় গ্রামের হাওয়া এখনো গায়ে রয়ে গেছে। হতে পারে একারণেই এভাবে বিনামূল্যে কাজ’ও করে দিচ্ছে। গ্রামে তো একজনের কাজ অন্যজন নিজের কাজ মনে করেই করে; টাকা-পয়সার হিসেব সেখানে আসে অনেক পরে। আর এখানে তো ভালোবাসার দামও টাকা। টাকার শহর। না, না! ভুল হলো। শহর না; শহর, গ্রাম, পুরো দুনিয়া’টাই বোধহয় টাকার।
_____
ব্যাগের ভারে নুয়ে পড়ছে নিশী। ধীর গতির নিস্তেজ হাঁটায় তাকে কুঁজো রোগীর চেয়ে কোনো অংশ কম লাগছে না। এক কাঁধে ব্যাগ থাকায় ভারটা তুলনামূলক বেশি ঠেকছে। ব্যাগের অন্য হাত টা তুলে যে আরেক কাঁধে তুলবে সেই সাহস, শক্তি’টুকুও হচ্ছে না। দুপুরে পেটে কিছু পড়ে নি। এখন বাসায় গিয়ে কিছু নাস্তা করতে হবে। ডে শিফটে পড়ার এই এক ঝামেলা!
বাসার গলির সামনে পৌঁছতে পৌঁছতেই নিশীর হাঁটার গতি কমে এলো। এতোক্ষণের সকল অলসতা, বিতৃষ্ণা, ক্ষুধাভাব হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। গলির পাশের দেয়ালে ছয়/সাত জন যুবক দাঁড়ানো। ভীষণ কদাকার ভঙ্গি তাদের। কয়েকজনের সিগারেটের ধোঁয়ার কারণে মুখমণ্ডলই স্পষ্ট করে বোঝা যাচ্ছে না। নিশী গলির মাথার থেকে যথেষ্ট দূরে দাঁড়ানো। দূরে দাঁড়িয়েই নিশী অস্বস্তিতে জমে গেল; হাঁটার গতি তো আগেই কমিয়েছে। এখন কী করবে ও! সামনে দিয়ে চলে যাবে? যদি কিছু বলে! নিশীর মনে অজানা ভয় ভীড় করল। নিশী ভীষণ সাবধানে একবার চোখ তুলে নামিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরেই নিজের পা চালাতে লাগল। তার দু’ জিনিসে ভীষণ রকমের ভয় এবং আতঙ্ক। এক, কুকুর। আর দুই এমন কদর্য, বখাটে রূপী ছেলে। কুকুর আর ছেলে দেখলেই নিশীর হাঁটার গতি দশগুণ বেড়ে যায়। নিশী হাঁটতে হাঁটতেই আচানক বাম দিকে গিয়ে একটি দোকানে ঢুকে পড়ল। ঢোকার পরমুহূর্তে নিশী ভীষণ হাঁপাতে আরম্ভ করল। দোকানকার ভীষণ আদর কণ্ঠে শুধাল,
– কি নিবা, আঙ্কেল?
নিশী শুকনো মুখে বলল,
– একটা কোকোলা বিস্কিট দিন।
– ২০ টাকার টা?
– হ্যাঁ।
মানুষের সব দিন সমান যায় না। কোনো দিন অসম্ভব সুন্দর হয়। আবার কোনো দিন অকারণেই ভীষণ কুৎসিত হয়। নিশীর আজ কুৎসিততম দিন। একারণেই সে টাকা দিতে গিয়ে বুঝল যে তার কাছে বিশ টাকা নেই। আছে দশ টাকা। নিজের উপর অসম্ভব রাগে মাথা গলে পড়তে চাইল।
– এই নাও, আঙ্কেল।
নিশী বিস্কিটের দিকে চেয়ে ভীষণ করুণ, নিরীহ, শুকনো মুখে বলল,
– আমার কাছে বিশ টাকা নেই, আঙ্কেল। দশ টাকার প্যাকেট দিন, প্লিজ।
দোকানি হাসিমুখেই বিস্কিটের ছোট প্যাকেট বাড়িয়ে ধরল। নিশী প্যাকেট নিয়ে দোকান থেকে বেরুতে বেরুতে নিজ মনেই বলতে শুরু করল,
– আল্লাহ ছেলেগুলা যেন এতোক্ষণে চলে যায়, আল্লাহ। প্লিজ! প্লিজ! প্লিজ! আল্লাহ সাহায্য করো, প্লিজ।
নিশী দোকান থেকে বেরিয়েই লক্ষ্য করল, ডানদিক থেকে দু’জন ছেলে এদিকেই আসছে। দুঃক্ষিত! দু’জন ছেলে বলতে একজন যুবক এবং একজন পৌঢ় অর্থাৎ নিশীর ভাষায় আঙ্কেল। নিশী যুবক ছেলেটিকে বেশ ভালোভাবে চেনে। তার বিল্ডিং এর সামনের টিনশেডে থাকে। আর ইনিই তো তার আপার দিকে তাকিয়ে থাকে যা নিশী প্রভার সাথে চলাফেরা করেই বুঝতে পেরেছে। আবার ওইদিন এই ছেলেটাই তো বস্তা বাসায় দিয়ে এলো। নিশী ভীষণ গম্ভীর হয়ে গেল। এই আঙ্কেল আর ভাইয়াটাকে ভদ্র’ই মনে হচ্ছে। নিশী কী এই দু’জনের পেছনে পেছনে বিলাইয়ের ছাও এর মতো চলে যাবে? নাকি খাম্বার মতো দাঁড়িয়েই থাকবে? আঙ্কেল এর সামনে নিশ্চয় এইসব বেয়াদবরা কোনো নীচ ইঙ্গিত বা কিছু বলার সাহস পাবে না। হ্যাঁ, যাওয়াই যায়।
নিশীর এইভাবে স্তম্ভের মতো দাঁড়িয়ে থাকা দেখে তাওহীদ সামনের দিকে তাকাল। সম্ভবত সে কারণটি ধরতে পেরেছে। সে বেশ অনেকক্ষণ যাবত নিশীকে লক্ষ্য করে চলেছে পেছনের চায়ের দোকান থেকে। মেয়েটা কেমন যেন উশখুশ করছিল! সামনের ছেলেদের দল দেখে নিশীর অস্বস্তির কারণ বুঝতেও বেশি বেগ পেতে হলো না তাওহীদের। তাওহীদ বেশ নির্বিকার ভঙ্গিতেই বাম দিক থেকে সরে গিয়ে ডানদিকে হাঁটতে লাগল। নিশীর দিকে চাইতেই দু’জনের চোখে চোখ পড়ল। তাওহীদ বেশ সুন্দর করে এক স্নেহসুলভ হাসি নিশীকে উপহার দিল। নিশী ভীষণ পরিমাণে আশ্চর্যের সাথে সাথে খুশি হলো। সাথে তাওহীদের এই আচরণে থাকা সুপ্ত ইঙ্গিতে ভরসা পেয়ে দোকান থেকে রাস্তায় নেমে পড়ল। ডানদিকে তাওহীদ, মাঝে মধ্যবয়সী আঙ্কেল আর বাম দিকে নিশী। পুরো ঘটনা’টিতে নিশী বেশ তীব্রভাবে মুগ্ধ হলো তাওহীদের নিজে সরে গিয়ে নিশীকে নিরাপত্তা দেওয়ার প্রচেষ্টায়।
নিশীর ইমান খুব দৃঢ় কি না তা নিশী জানে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজও সেভাবে পড়া হয়না। তবুও সকল কাজে সে তার সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করে। নিশী এক মন ভর্তি কৃতজ্ঞতা নিয়ে সকলের উর্ধ্বে গিয়ে নিজের সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাল,
– থ্যাংক য়্যু, আল্লাহ। থ্যাংক য়্যু, আমাকে সাহায্য করার জন্য। তুমি অনেক বেশি ভালো। আমাকে সবসময় সাহায্য করো।
_____
প্রভা উদাস ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায়। পরনে সুতির কামিজ। ঝুরিঝুরি চুলগুলো নিজ দায়িত্বে ছড়িয়ে আছে কাঁধজুড়ে। দৃষ্টি কোথায় তা প্রভা জানে না। মহান আল্লাহ এক জোড়া চোখ দিয়েছেন। চোখ দিয়ে এই সুন্দর ভুবন দেখতে হবে। কেবল একারণেই বোধহয় চোখ জোড়া মেলে রাখা। নয়তো দু’ চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকলেও নিশ্চয় কেউ কিছু বলতে আসতো না। প্রভা গ্রিল ছেড়ে ভীষণ রকমের অবহেলায় হেঁটে গেল বারান্দার এক মাথা থেকে অন্য মাথায়। অসহ্য রকম আলসেমি, একঘেয়েমিতে শরীর ভেঙে আসতে চাইছে। না, না… তার মন মোটেও খারাপ নয়। মন আপাতত ‘নিউট্রাল’ পর্যায়ে স্থির আছে। না পজেটিভ, না নেগেটিভ। মন ঠিক’ই আছে। সমস্যা তার জীবনে। প্রভার ভীষণ ইচ্ছে হলো, ও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবে। এরপর আসমান সমান অভিমানে অভিমানী হয়ে বলবে যে, ও ওর জীবনটা ঠিকমতো বাঁচতে পারে নি। ওর জীবনটা ঠিকমতো বাঁচা হলো না। কেমন যেন মনের ভুলেই কেটে গেল! প্রতিদিন ভার্সিটি, ভার্সিটি থেকে ফিরে ঘরের কাজ, কম্পিউটার ক্লাস, পরীক্ষা সব মিলিয়ে কেমন কেমন পানসে এক জীবন! কোনো প্রাপ্তি নেই, কোনো উল্লাস নেই – এমন জীবনও আদোতে কারোর হয় বুঝি! প্রভা শ্বাস ছেড়ে নিজেকে একটু সময় দিতে চাইল। সবসময় এই ধরনের নেতিবাচক কথা ভাবতে ভালো লাগে না। মনটাকে নিউট্রাল পর্যায় থেকে প্রমোশন দিয়ে পজেটিভ দিকে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু উপায় কী? উপায় – তাওহীদ। প্রভা অসম্ভব পরিমাণে আশ্চর্য হয়ে থমকে গেল। সে যখন নিজের মন ভালো করার সমাধান খুঁজতে ব্যস্ত, তার অবচেতন মন তখন ‘তাওহীদ’ নামটিকে তার সামনে তুলে ধরল। তাওহীদ! প্রভা নিজে ব্যাপারটিকে প্রশয় দিতে না চাইলেও তার হৃদযন্ত্র ঠিকই দিয়ে দিয়ে। হৃৎপিণ্ড বলে বসল, যদি সে এখন তাওহীদের সাথে কথা বলে, তবেই তার মন ভালো হয়ে যাবে। প্রভা এগিয়ে গেলো বারান্দার অপর মাথায়। ঘোলাটে চোখে চেয়ে রইল টিনশেড এর দিকে। সত্যিই যদি তাওহীদের সাথে কথা বলা যেত – তবে মন্দ হতো না। লোকটা কথা বেজায় সুন্দর করে বলে। কথায় গ্রাম গ্রাম আভা থাকে, তবে শুনতে খারাপ লাগে না। প্রভা তার নিজের ব্যক্তিত্বের বিপরীতে গিয়ে দু’টো ব্যাপার ঠিক করে ফেলল। এক, লোকটির নাম্বার জোগাড় করতে হবে। এরপর যখনই মন খারাপ হবে তখনই কল জুড়ে দিয়ে মন ভালো করতে হবে। দুই, এরপর যদি কখনো তাওহীদের সাথে প্রভার দেখা হয়, তবে প্রভা মোটেও আলম, আলম বলে সুর তুলবে না। শুধু ডাকবে তাওহীদ বলে। তাও..হীদ। প্রভার চোখ হঠাৎ স্থির হয়ে গেল। দৃষ্টিসীমায় থাকা এই দুনিয়াবি সকল দৃশ্য মুছে গিয়ে ভেসে উঠল তাওহীদের সেই শিশুসুলভ মন খারাপের মুখচ্ছবি, যে মুখচ্ছবি নিয়ে তাওহীদ বলেছিল,
– আমার নামটা বোধহয় আপনার খুব অপছন্দের। একারণে ঠাট্টা করে তাওহীদ আলম বলে ডাকেন।
চলবে
_____
#অকিঞ্চন
#শারমিন ইরান