#অনুভবে_তুমি
#পর্ব_৪২
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ
ইভান আজ আহসান কে ধরে ফেললো।সে ভাবতেই পারে নি প্রথম মিশনেই এভাবে তার দেখা পেয়ে যাবে। যদিও তাকে ধরতে অনেক বেশি হয়রানি হতে হয়েছে ইভানদের।আজ ইভানদের আনন্দের দিন।আহসানকে ধরতে পেরে অনেক বেশি খুশি লাগছে তাদের। সেদিনের পর থেকে আহসানকে আর দেখা যায় নি।অয়নের আস্তানায় গিয়ে খুব সাহস করে নিজেকে গ্যাং এর লিডার বলে আসার পর থেকে বেচারা উধাও হয়েছে।যদিও এটা তার দোষ নয়,তার বড় বসের কথামতোই হয় তো এভাবে লুকিয়ে আছে।আর এখন তো ইভানের হাতে মাত্র একমাসের সময় আছে। আর ইভান চ্যালেঞ্জ করেছে এই একমাসের মধ্যেই সকল কে ধরে ফেলবে।সেজন্য সবাই আরো বেশি সতর্ক হয়েছে।আহসান নিজেকে বাঁচানোর জন্য একট গোপন আস্তানা তৈরি করেছে।আর সেই গোপন আস্তানা টা হলো তার নিজের বাড়ি।আহসান তার নিজের বেডরুমেই একটা সুরঙ্গ তৈরি করেছে।আর সেখানেই লুকিয়ে আছে সে।তবে বোঝার কোনো উপাই ছিলো না যে তার বেডরুমেই কোনো সুরঙ্গ আছে।কারণ সুরঙ্গের উপরে একটা খাট পাতানো ছিলো।যেহেতু খাটটি বক্স খাট ছিলো সেজন্য খাটের নিচে দেখার কোনো উপাইও ছিলো না।অনেক বুদ্ধি করে আস্তানা টা তৈরি করেছে আহসান।কারণ এই একমাসে ইভান নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ না করতে পারলে আবার জেলে যাবে।সেজন্য সকল সন্ত্রাসী এই একমাস খুব সতর্ক থাকবে।এই একমাস পার হয়ে গেলেই তো সবার বিপদ কেটে যাবে।সবাই আবার আগের মতো অপরাধ করতে পারবে।এজন্য তাদের লিডার সবাইকে এই একমাস গোপন কোনো জায়গায় লুকিয়ে থাকতে বলেছে।
ইভানরা যখন সব জায়গা তন্নতন্ন করে খুঁজেও আহসান এর কোনো সন্ধান পাচ্ছিলো না তখন ইভান বুদ্ধি করে আহসানের পুরো বাড়িটা চেক করে।কিন্তু আহসানের বেড রুম চেক করার সময় কেনো জানি ইভানের সন্দেহ হলো।কারণ আহসানের স্ত্রী বার বার বলছিলো স্যার চেক করা হয়ে থাকলে আপনারা এখন আসতে পারেন।আমার বাচ্চারা ঘুমাবে।কারণ ওদের এখন ঘুমানোর সময় হয়ে গেছে।এই বলে আহসানের স্ত্রী তার বাচ্চাদের নিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো।ব্যাপার টা কেমন যেনো অদ্ভুত লাগলো ইভানের।স্বামীকে ধরতে এসেছে সি আই ডি আর উনি আছেন বাচ্চাদের ঘুম নিয়ে।ইভান তখন দিশান আর নীলয় কে বললো বাচ্চাদুটিকে কোলে নাও তোমরা।বাকিটা আমি দেখছি।ঠিক তখনি আহসানের স্ত্রী চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেন।আপনাদের কোনো কমন সেন্স নাই নাকি!একজন মহিলা মানুষের বেডরুমে ঢুকে কি শুরু করেছেন এসব?আমি কিন্তু আপনাদের নামে উলটো মানহানির মামলা দিবো।
ইভান সেই কথা শুনে বললো, ওকে দিয়েন।কোনো সমস্যা নাই।এই বলে ইভান একা একাই বেড টা সরালো।কিন্তু কোনো চিহ্ন খুঁজে পেলো না।ইভান তা দেখে ভীষণ হতাশ হয়ে গেলো।তার পুরো বিশ্বাস ছিলো এখানেই সে খুঁজে পাবে আহসানকে।ঠিক তখনি দিশান চিৎকার করে বললো স্যার মেঝেটা ভালো করে দেখেন ,টাইলসগুলো কেমন যেনো নড়বড়ে।ইভান সেটা শোনামাত্র টাইলসগুলোতে হাত দিলো।হ্যাঁ টাইলসগুলো নড়বড়ে,ভালো করে জয়েন করা হয় নি,এজন্য ঠিক ভাবে বসে নি।
ইভান সেজন্য আর এক মিনিট ও দেরী করলো না।এক এক করে নিজেই সকল টাইলস উঠাতে লাগলো।নীলয় তা দেখে বললো স্যার মিস্ত্রীকে খবর দেই।তাহলে তাড়াতাড়ি হবে কাজটা।আপনি অযথায় কেনো কষ্ট করবেন?এই বলে নীলয় ইভান কে ওঠালো।
ইভান তখন বললো নীলয় তুমি এখনি বাহিরের কাউকে আহসানের কথা বলো না।কারণ এটা আমাদের ম্যাটার,সুতরাং আমরাই এটা নিজেরাই সমাধান করবো।চলো নিজেরাই চেষ্টা করি।এই বলে ইভান আবার কাজ শুরু করে দিলো।ইভানের দেখাদেখি দিশান আর নীলয় ও কাজ শুরু করে দিলো।এদিকে আহসানের বউ জোরে জোরে চিৎকার চেঁচামেচি করতে লাগলো।ইভানদের যা নয় তাই বলে গালিগালাজ করতে লাগলো।
আহসানের বউ এর এমন ব্যবহার দেখে ইভানের মেজাজ ভীষণ বিগড়ে গেলো।কিন্তু মেয়ে মানুষ দেখে তার গায়ে হাত দিতেও পারছে না ইভান।সেজন্য ইভান নীলয় কে বললো,তাড়াতাড়ি শীলা আর দীপা কে খবর দাও আর এই মহিলাকে ধরে নিয়ে যেতে বলো।কয়েকটা চড় খেলেই চুপ হয়ে থাকবে।কথাটা শোনামাত্র আহসানের স্ত্রী চুপ হয়ে গেলো।তবে তিনি বসে থাকলেন না।ফোন হাতে নিয়ে কাকে যেনো কল করতে লাগলেন।ইভান তা দেখে আহসানের বউ এর হাত থেকে মোবাইল টা কেড়ে নিলো এবং তাকে অন্য আরেকটা রুমে বন্দি করে রাখলো।
ইভানরা এক এক করে সব টাইলস ওঠাতে লাগলো।টাইলসগুলো ওঠানোর পর ইভানরা খেয়াল করলো মাটিগুলোও কেমন যেনো আলগা আলগা।সেজন্য তারা তাড়াতাড়ি করে মাটি খুঁড়তে লাগলো।যখন তারা উপর থেকে কিছু টা মাটি সরিয়ে ফেললো ঠিক তখনি তারা একটা সুরঙ্গ দেখতে পেলো।সুরঙ্গ টি দেখে সবার চোখ কপালে উঠে গেলো।ইভান ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে নীলয় তাকে বাধা দিলো।সে বললো,স্যার এভাবে একা একা প্রবেশ করা ঠিক হবে না।আমার মনে হয় ভিতরে শুধু আহসান নয়, আরো অনেকেই আছে।আমাদের পুলিশ ডিপার্টমেন্টের লোকদের খবর দেওয়া উচিত।ইভান সেই কথা শুনে তার বিশ্বস্ত কয়েকজন পুলিশকে খবর দিলো।তারা খবর পাওয়া মাত্র ছুটে এলো।কিন্তু কেউই ভিতরে প্রবেশ করার সাহস পেলো না।কারণ সবাই জানে এই কাজে অনেক রিস্ক আছে।ইভান তখন সাহস করে নিজেই প্রবেশ করলো সুরঙ্গের ভিতরে।ইভানের দেখাদেখি এক এক করে দিশান আর নীলয় ও প্রবেশ করলো।ইভানরা ভিতরে প্রবেশ করা মাত্র গুলির শব্দ শোনা গেলো।সবাই বুঝে গেলো ইভানের উপর হামলা শুরু হয়েছে।সেজন্য পুলিশগুলো আর চুপ করে থাকতে পারলো না,তারাও প্রবেশ করলো ভিতরে।নীলয়ের ধারণাই ঠিক ছিলো।শুধু আহসান ছিলো না ভিতরে।সমস্ত গ্যাং এর লিডাররা এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছে।মুহুর্তের মধ্যে তুমুল লড়াই শুরু হয়ে গেলো।একের পর এক পুলিশের লোক আহত হতে লাগলো।তখন কিছু পুলিশ সুরঙ্গ থেকে বের হয়ে আরো কিছু বিশ্বস্ত পুলিশদের খবর দিলো।কিন্তু এবার আর সন্ত্রাসীরা পেরে উঠতে পারলো না।অবশেষে তারা হার মেনে নিলো।সন্ত্রাসীদের মধ্যেও অনেকেই আহত হয়েছে।কারণ তাদের সবাইকে হাতে আর পায়ে গুলি করা হয়েছে।
ইভান সন্ত্রাসীদের ধরেছে শুনে পুলিশের বাকি সদস্যগুলোও এলো।কিন্তু তাদের আর প্রয়োজন ছিলো না।ইভান তখন আহসানকে টানতে টানতে বাহিরে বের করলো।কিন্তু আগেই আহসানকে পুলিশের হাতে তুলে দিলো না।সেজন্য সে পুলিশ অফিসারের পারমিশন নিয়ে নিজেই আগে পার্সোনাল ভাবে আহসানের সাথে কথা বলতে চাইলো।কারণ আহসান কে এখনি যদি পুলিশের হাতে দিয়ে দেয় তাহলে অনেক গোপন তথ্য তারা জানতে পারবে না।সেজন্য ইভান আহসানকে নিয়ে তাদের একটা গোপন আস্তানায় চলে গেলো।আর নানা ধরনের প্রশ্ন করতে লাগলো তাকে। ইভান প্রথমে ভালোভাবেই জিজ্ঞেস করলো,কার আদেশে আহসান এই গ্যাং পরিচালনা করে।আহসান উত্তরে বললো সে নিজেই পরিচালনা করে।এবং সেই লিডার। ইভান সেই কথা শুনে আহসানকে একটা চড় মেরে বললো আমি সবকিছু জেনেই তোকে জিজ্ঞেস করছি।সত্য করে বল।আমি জানি তোরও লিডার আছে।কিন্তু কে সে?
আহসান সেই কথা শুনে বললো তাহলে নিজেই খুঁজে বের কর,আমাকে জিজ্ঞেস করছিস কেনো?কথাটা শোনামাত্র ইভানের মাথা গরম হয়ে গেলো।সে তখন আহসানকে একের পর এক আঘাত করতে লাগলো। আহসান তবুও মুখ খুললো না।ইভান তখন আহসানকে মেরে ফেলার হুমকি দিলো।আহসান সেই কথা শুনে বললো আমাকে মেরে ফেললে তোরই লস।তুই জীবনেও নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবি না।তারচেয়ে বরং আমাকে ছেড়ে দে।তুই পারবি না লিডার কে ধরতে।অযথায় লাফালাফি করিছ না।তাছাড়া তিনি পুরো দেশ কে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন কোথায় কে কি করছে সব সাথে সাথে খবর যায় তার কাছে।এই যে তুই আমাকে ধরেছিস এ খবরও গিয়েছে ওনার কানে।আমাকে তুই বেশিক্ষন আটকিয়ে রাখতে পারবি না।ইভান আহসানের মুখে এসব কথা শোনামাত্র আরো জোরে জোরে আঘাত করতে লাগলো।এক পর্যায়ে ইভানের লাঠিই ভেংগে গেলো।আহসানের পুরো শরীর রক্তাক্ত হওয়ার পরেও সে মুখ খুললো না।দিশান তা দেখে বললো স্যার এভাবে হবে না।ওকে অন্যভাবে লাইনে আনতে হবে।ইভান সেই কথা শুনে বললো, সে ব্যবস্থাও করেছি।দেখি এরপর কি করে সে চুপ থাকে?এই বলে ইভান থেমে গেলো আর নীলয় আর দীশান কে বললো,তোমাদের সবার পরিবারকে আগে সেফে জায়গায় রাখো।আমার বিশ্বাস আহসানের লিডার আহসানকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য তোমাদের পরিবার কে ব্যবহার করতে পারে।দিশান আর নীলয় সেজন্য তাদের বাবা মাকে ফোন করে সতর্ক করে দিলো।
ইভান যখন সকল ঝামেলা মিটিয়ে তার ফোন হাতে নিলো তার চোখ কপালে উঠে গেলো।মৌরি মনে হয় হাজারবার কল দিয়েছে তাকে।কিন্তু সে একবারও টের পায় নি।সেজন্য ইভান সাথে সাথে মৌরিকে কল দিলো।কিন্তু মৌরি কল রিসিভ করলো না।ইভান তখন অতশীকে কল দিলো।অতশীও কল রিসিভ করলো না।ইভান সেজন্য ভীষণ টেনশনের মধ্যে পড়ে গেলো।ইভানকে এমন টেনশন করা দেখে দিশান বললো,স্যার আপনি না হয় একবার বাসায় যান,এদিকে আমরা সামলিয়ে নিচ্ছি।ইভান সেই কথা শোনামাত্র আর এক সেকেন্ডও দেরী করলো না।তাড়াতাড়ি করে বাসায় চলে গেলো।
ইভান বাসায় এসে দেখে সবাই একসাথে ডাইনিং রুমে বসে আছে।সবাইকে একসাথে দেখে তার চিন্তা কিছুটা দূর হলো।কিন্তু ইভান খেয়াল করলো সবাই কে বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছে।ইভান তখন অতশী অতশী বলে ডাকতে লাগলো। কারণ সবাই বসে আড্ডা দিলেও অতশী ছিলো না এদের সাথে।এদিকে অতশীকে ডাকা দেখে সবার চোখমুখ শুকিয়ে গেলো।ইভান কিছু বুঝতে পারলো না।সে মৌরির কাছে এগিয়ে গিয়ে বললো,কি হয়েছে?সবাই এভাবে বসে আছে কেনো?আর অতশী কই?
মৌরি তখন ইভানের হাত ধরে বললো, ভাইয়া অতশীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।আমরা সব জায়গায় খুঁজে দেখেছি কিন্তু কোথাও পাই নি তাকে।
কথাটা শোনামাত্র ইভানের মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো সে তখন তার বাবার দিকে তাকিয়ে বললো,কি হয়েছে বাবা?মৌরি এসব কি বলছে?
ইভানের বাবা তখন বললো আমিও তো মাত্র ফিরলাম বাসায়।তখন মিটিং শেষ করে একটু বাহিরে গিয়েছিলাম।আর এখন বাসায় এসে শুনি অতশীকে পাওয়া যাচ্ছে না।
ইভান তখন মৌরিকে বললো,ওর মাকে ফোন দিয়েছিলি?
–হুম।
–ওর বান্ধুবীদের জিজ্ঞেস করেছিলি।
–হ্যাঁ।সব জায়গাতেই খবর নিয়েছি।কোথাও যায় নি সে?
ইভান তখন চিৎকার করে বললো,তাহলে অতশী কোথায় গেলো?বাসাভর্তি লোকের মধ্যে থেকে সে কিভাবে উধাও হলো?এই বলে ইভান লতিফ আংকেল কে ডাকতে লাগলো।লতিফ আংকেল কে ডাকা দেখে ইভানের বাবা বললো,আমি ওকে জিজ্ঞেস করেছি।কিন্তু লতিফ বললো, সে অতশীকে গেট থেকে বের হতে দেখেছে।কিন্তু কোথায় গিয়েছে সেটা বলে নি।
ইভান তার বাবার কথা শোনামাত্র লতিফের কাছে গেলো আর জিজ্ঞেস করলো আংকেল অতশীকে বাসা থেকে বের হতে দেখেছিলেন?
লতিফ আংকেল সাথে সাথে বললো হ্যাঁ বাবা দেখেছি।ইভান তখন বললো ওর সাথে কি আর কেউ ছিলো?
–হ্যাঁ ছিলো।গেটের বাহিরে এক ছেলে দাঁড়িয়ে ছিলো।অতশী মা তার সাথে চলে গেলো।আমি জিজ্ঞেস করলাম, মা ছেলেটি কে?অতশী তখন বললো ওর কোনো এক ফ্রেন্ড হয়।দরকারী একটা কাজে যাচ্ছে।কয়েকঘন্টা পরেই ফিরে আসবে।আমি সেজন্য আর বেশিকিছু জিজ্ঞেস করি নি।
ইভান কিছুই বুঝতে পারছে না।কি হচ্ছে এসব?এই পরিস্থিতিতে অতশী আবার কোন ফ্রেন্ডের সাথে কোথায় গেলো?ইভান সবার ফ্যামিলিকে সেফ জায়গায় থাকতে বললেও সে নিজের ফ্যামিলিকেই সতর্ক করতে ভুলে গেছে।সে কখনোই ভাবে নি অতশী তাকে না বলে এভাবে বাসা থেকে বের হয়ে যাবে?
এদিকে অতশীর আম্মু আর দাদী খবর পেয়ে পাগলের মতো দৌঁড়ে এলো ইভানের বাড়িতে।আর চিৎকার করে বললো অতশী কই?ওকে নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
ইভান সেই কথা শুনে বললো, মা প্লিজ একটু শান্ত হোন।অতশী ওর কোনো এক ফ্রেন্ডের সাথে গিয়েছে।এমনিতেই ফিরে আসবে।আপনারা রেস্ট নিন।
অতশীর মা তখন বললো,ফ্রেন্ড?কোন ফ্রেন্ডের বাসায় গিয়েছে সে?
–আমরা কেউই জানি না।তবে লতিফ আংকেল নাকি দেখেছে কোন এক ছেলে ফ্রেন্ডের সাথে চলে যেতে।ছেলে ফ্রেন্ডের কথা শুনে অতশীর মা প্রচন্ড রেগে গেলো।তিনি ধমক দিয়ে বললেন,বাবা ইভান কি সব ভুলভাল বলছো?ওর কোনো ছেলে ফ্রেন্ড নাই।নেহা,সুইটি আর লিশা ছাড়া ওর কোনো ফ্রেন্ড নাই।ইভান তুমি বসে থেকো না।এখনি খুঁজতে বের হও।নিশ্চয় আমার মেয়েটা বিপদের মধ্যে আছে। এই বলে অতশীর মা হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো।
ইভান অতশীর মাকে কি বলে শান্ত্বনা দিবে বুঝতে পারলো না।তবে ইভান নিজেও বুঝতে পারছে এর পিছনে অন্য কোনো কারন আছে।অতশী কখনোই তাকে না বলে এভাবে বাহিরে যেতেই পারে না।যদিও যেয়ে থাকে অন্তত মৌরিকে তো বলে যাবে।তাহলে অতশী কই গেলো এভাবে?
ইভান বুঝতে পারছে না কি করবে এখন?আর কোথায় খুঁজবে তাকে?তবে ইভান একটা অংক কিছুতেই মেলাতে পারছে না,তা হলো কেয়ার টেকার লতিফ মিথ্যা কথা কেনো বলছে?তাহলে কি অতশীর ধারণাই ঠিক ছিলো?
কারণ অতশী যে ছেলে ফ্রেন্ডের সাথে চলে গেছে এটা সে কখনোই বিশ্বাস করে না।কারণ তার জানামতে এমন কোনো ছেলে নেই যার সাথে অতশীর ভালো কোনো সম্পর্ক আছে।অতশীকে সে অনেকদিন ধরেই চেনে।সে তার ডিপার্টমেন্টের কোনো ছেলের সাথেও কথা পর্যন্ত বলতো না।তাহলে হঠাৎ করে আবার এই ছেলে ফ্রেন্ড আসলো কই থেকে?
#চলবে,
#অনুভবে_তুমি
#পর্ব__৪৩
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ
ইভান কেয়ারটেকার লতিফ কে ফলো করতে লাগলো। সেজন্য সে বাসার বাহিরে সিসিটিভি ক্যামেরা সেটিং করলো।ইভান বুঝতে পারছে লতিফের মধ্যে কোন গড়বড় আছে।তা না হলে লতিফ কেনো মিথ্যা কথা বলবে?অতশীর যে কোনো বয়ফ্রেন্ড নাই ইভান এ ব্যাপারে নিশ্চিত।কারণ সে অতশীকে অনেক বেশি বিশ্বাস করে।কিন্তু ইভান এখন পর্যন্ত তার বাবাকে বিন্দুমাত্র সন্দেহ করতে পারলো না।সে বুঝতেই পারছে না এসবের পিছনে তার বাবার হাত আছে।তার বাবা নিজেই একজন নামকরা সন্ত্রাসী।মুহিব সাহেব পেশায় একজন উকিল হলেও তিনি সবার চোখের আড়ালে এসব অপরাধ করে থাকেন।লতিফ মুহিবের একজন বিশ্বস্ত সহযোগী, যে শুধু একজন সাধারণ কেয়ারটেকার নয়।
মুহিব সাহেব একজন এতিম ছেলে ছিলেন। আকবর নামের কোনো এক সন্ত্রাসী তাকে দত্তক নেই।কারণ আকবরের নিজের কোনো সন্তান ছিলো না।আকবরের কাছে থাকতে থাকতেই মুহিব সাহেব সবকিছু শিখে ফেলেন।কিন্তু আকবর কখনোই চাইতেন না মুহিব এ পেশায় আসুক।সেজন্য আকবর মুহিব কে পড়ালেখা করান যাতে সে তার মতো একজন সন্ত্রাসী না হয়।আকবরের খুব ইচ্ছা ছিলো মুহিব কে তিনি অনেক বড় একজন উকিল বানাবেন।কিন্তু মুহিবের এসব পড়ালেখায় তেমন কোনো আগ্রহ ছিলো না।তবুও আকবরের জোরাজোরি তে করতে হয়েছে পড়ালেখা।আর আকবরের জন্যই সে আজ উকিল হতে পেরেছে।
হঠাৎ একদিন পুলিশের হাতে আকবর ধরে পড়ে।এবং পুলিশ আকবরের পরিবারকেও খুঁজতে থাকে।কিন্তু আকবরের স্ত্রী মুহিবের কেরিয়ারের কথা চিন্তা করে তাকে নিয়ে পালিয়ে গ্রামে চলে যায়।এবং ওখানেই থাকা শুরু করে।কিছুদিন থাকার পর মুহিব গ্রাম থেকে আবার শহরে চলে আসে।আর আবার তার পেশায় যুক্ত হয়।সে সবসময় শুধু ভাবতে থাকে কি করে তার বাবাকে ছাড়িয়ে আনবে কিন্তু পারে না।এর মধ্যে আকবরের ফাঁসির আদেশ হয়।তাকে যখন কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় রাস্তার মধ্যে কিছু সন্ত্রাসী পুলিশদের উপর এট্যাক করে। তার বাবার বিশ্বস্ত কয়েকজন সন্ত্রাসীদের নিয়ে মুহিব নিজেই এই গ্যাং টা তৈরি করেছিলো,যাতে সে তার বাবাকে ফাঁসির হাত থেকে মুক্ত করতে পারে।এজন্য সন্ত্রাসী আর পুলিশের মধ্যে তুমুল লড়াই হচ্ছিলো।মুহিব নিজেও উপস্থিত ছিলো সেখানে।সে তার বাবাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করবে দেখেই এসেছিলো।কিন্তু হঠাৎ সন্ত্রাসীগুলো আকবরকেই গুলি করতে থাকে।মুহিব দূর থেকে সব দেখছিলো।সে ভাবতেই পারে নি তার বাবার বিশ্বস্ত লোকই তাকে খুন করবে।এদের চক্রান্তেই আকবর পুলিশের কাছে ধরা পড়েছিলো।কারণ আকবর না থাকলে তার পদ টা এরা দখল করতো।নিজের চোখে এই দৃশ্য দেখে মুহিবের মাথা গরম হয়ে যায়।সে সিদ্ধান্ত নেয় এদের সবাইকে সে নিজের হাতে খুন করবে।যেমন ভাবা তেমন কাজ।মুহিব সকল সন্ত্রাসীদের নিজের হাতে খুন করে।এইভাবে তার সাহস বেড়ে যায়।তারপর সে নিজেই তার বাবার জায়গা টা দখল করে।এভাবে ধীরে ধীরে মুহিব তার বাবার পেশাটাই গ্রহণ করে।তবে সে এখন পর্যন্ত কারো সামনে যায় নি।সে ছদ্মবেশেই এতো বড় একটা গ্যাং তৈরি করেছে।সেজন্য এখন পর্যন্ত মুহিবকে কেউ চিনতে পারে নি।বা তাকে ধরতে পারছে না।মুহিব সাহেবের কথা কারো মাথাতেই আসে না।ইভান এতো বড় একজন সি আই ডি অফিসার হয়েও বুঝতে পারছে না।আর বুঝবেই বা কি করে? সে তো জানে তার বাবার মতো সৎ আর আদর্শবান লোক আর কেউ নাই।
ইভানের নানাও একজন নামকরা উকিল ছিলেন।তিনি মুহিবের ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে তার মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে দেন।মুহিব বিয়ের পর এই জগত থেকে সরে আসতে চেয়েছিলো। কিন্তু পারে নি।মানুষ খুন করা তার নেশা হয়ে গিয়েছিলো। মুহিব সাহেব ভাবতেও পারে নি তার নিজের ছেলেই একদিন এতোবড় একজন সি আই ডি অফিসার হবে।আর তাকে ধরার জন্য পাগল হয়ে যাবে।অন্য কেউ হলে তাকে কবেই শেষ করে ফেলতেন মুহিব সাহেব।কিন্তু নিজের ছেলে দেখে ইভানের কোনো ক্ষতিই করতে পারছেন না তিনি।তা না হলে পথের কাঁটা কবেই উপড়ে ফেলতেন।
তবে ইভান তার বাবাকে সন্দেহ না করলেও অতশী বুঝতে পারে।সে সেদিন মুহিব সাহেব কে ফলো করতে করতে তার পিছু পিছু চলে যায়।আর মুহিব সাহেব এবং কেয়ারটেকার লতিফের কিছু কথা শুনতে পারে।কিন্তু অতশী পালানোর আগেই ইভানের বাবা অতশীকে দেখে ফেলে। সেজন্য সাথে সাথে অতশীর চোখে মুখে কাপড় পেঁচিয়ে তাকে ধরে ফেলেন।আর তার হাত পা বেঁধে তাকে দূরে কোথাও নিয়ে যান।কিন্তু ইভান সন্দেহ করবে দেখে তাকে বলে সে নিজের ইচ্ছায় কোনো এক ছেলের সাথে বাহিরে গিয়েছে।কারণ ইভানের বাবা জানে ইভান পালটা প্রশ্ন করবে,যে অতশী কিভাবে উধাও হলো?এতো লোকজনের মধ্যে তাকে কেউ কিভাবে ধরে নিয়ে গেলো?
এদিকে আহসানকে ধরে ফেলায় সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়ে গেলো।কারণ কেউই বিশ্বাস করতে পারছে না আহসান এতো বড় একজন সন্ত্রাসী!শুধু আহসান না,এক এক করে অনেকের নামই বের হয়ে আসলো যারা যারা এতোদিন আড়ালে ছিলো।আহসান কে রিমান্ডে নেওয়া হলে তাকে অনেক বেশি নির্যাতন করা হয়।তবুও সে মুখ খুলতে চাইছিলো না।তবে যখন সে আধামরা হয়ে যাচ্ছিলো তখন তাকে আবার জিজ্ঞেস করা হলে সে কিছু কথা শেয়ার করে সবার সাথে।।আহসান জানায় তাকেও শপথ করে নেওয়া হয়েছে।এজন্য সে বলতে চাইছিলো না।তবে সে সত্যি জানে না তাদের সেই বড় লিডার কে?তার লিডারের সাথে শুধু তার ফোনে কথা হয়। তার লিডারের নির্দিষ্ট কোনো ফোন নাম্বার ছিলো না।একেক দিন একেক নাম্বার থেকে কল দেয় তিনি।তার লিডার তাকে কল করে আর আহসান সেই অনুযায়ী কাজ করে।আহসান এই কাজে তার শশুড়ের কোম্পানি টা কাজে লাগায়।আহসানের শশুড় মারা গেলে আহসান তার শশুড়ের কোম্পানি টা দেখাশোনা করে আর এই কোম্পানি তে যত ইয়ং ছেলে চাকরি করতে আসে তাদের ব্লাকমেল করে এভাবে সন্ত্রাসী পেশায় যুক্ত করে।এই ব্লাকমেলের স্বীকার হয়েছে অয়ন। যার জন্য অয়ন আজ এতো বড় একজন সন্ত্রাসী।আহসানের কারণেই মুহিব সাহেবের গ্যাং টা এতো বড় হয়েছে।সেজন্য মুহিব সাহেব আহসান কে অনেক বেশি ক্ষমতা আর দায়িত্ব দিয়েছেন।আহসান নিজেই সবগুলো গ্যাং পরিচালনা করে। সেজন্য সবাই আহসান কেই লিডার ভাবে।আহসান আর চুপ করে থাকতে পারলো না।সে এক এক করে সকল পুলিশ অফিসারের নাম বলে দিলো যারা যারা তাকে সাহায্য করতো।দেখা গেলো অর্ধেক পুলিশের লোকই টাকার বিনিময়ে আহসানের কাছে বিক্রি হয়ে গেছে।অফিসার আকরাম ও ছিলো এদের দলে।
এবার শুভ্র আর অয়নও মুখ খুললো।তারা বলে দিলো যে শুভ্রর ফ্যামিলিকে ধরে নিয়ে গেছে আহসান।যার জন্য তারা দুইজনই মিথ্যা বলেছে।আহসান কে যখন জিজ্ঞেস করা হলো এ ব্যাপারে সে জানালো এসব কিডন্যাপ এর কাজ তার লিডার নিজেই করে।সে এসবের ব্যাপারে কিছু জানে না।
অয়ন কে মুক্তি না দিলেও শুভ্র কে মুক্তি দেওয়া হলো।এবং সে আবার তার সি আই ডির পদ ফিরে পেলো।
এবার ইভান আর তার টিমকে দায়িত্ব দেওয়া হলো আহসানের থেকে সেই ফোন নাম্বার গুলো নিয়ে এর আসল মালিক কে খুঁজে বের করা।কিন্তু ইভান অতশীকে খোঁজার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।সেজন্য সে অন্য কাউকে এই দায়িত্ব দিতে বলে।কারণ ইভান অতশীকে না পেয়ে একদম পাগলের মতো হয়ে গেলো।সে আর সন্ত্রাসীর পিছনে না ছুটে সবকিছু ফেলে অতশীকে খুঁজতে লাগলো।ইভান বুঝতে পারছে না কাকে ধরবে এখন?আর কোথায় খুঁজবে অতশীকে?
এদিকে আহসানের দেওয়া নাম্বার গুলো এক এক করে ট্রাকিং করতে লাগলো পুলিশ।নাম্বার ট্রাকিং করে সেই ঠিকানায় পৌঁছে গেলো পুলিশ।কিন্তু যার নামে সীম রেজিষ্ট্রেশন করা আছে তারা কেউই বেঁচে নেই।তাদের পরিবারের লোকেরা জানালো কেউ একজন খুন করেছে তাকে।এইভাবে প্রতিটা ঠিকানায় গিয়ে পুলিশ সেম তথ্য পেলো।যাদের নামে সীম রেজিষ্ট্রেশন করা তারা প্রত্যেকই মৃত্যু বরণ করেছে।এ থেকে পুলিশ ধারণা করলো সন্ত্রাসী এসব লোকদের খুন করে তাদের সীমটা ব্যবহার করছে।আর নানা রকমের অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে।পুলিশ কিছুই করতে পারলো না।সেজন্য তারা চুপচাপ থাকলো।
কিন্তু এভাবে চুপচাপ থাকলে হবে না।তা না হলে সন্ত্রাসী কে কখনোই ধরা যাবে না।সেজন্য উপর থেকে আবার ইভানকে দায়িত্ব দেওয়া হলো।কিন্তু ইভান এবারও না করে দিলো।কারণ সে কিছুতেই তার কাজে মনোযোগ দিতে পারছে না।কারণ এই মুহুর্তে তার অতশীকে খোঁজা বেশি প্রয়োজন।সে এখন সন্ত্রাসী ধরার মুডে নাই।দরকার হলে সে চাকরিই ছেড়ে দেবে তবুও এসব দায়িত্ব কাঁধে নেবে না।
ইভানের এমন পাগলামি দেখে শুভ্র,দিশান,নীলয় ভীষণ টেনশনের মধ্যে পড়ে গেলো।তারা বুঝতেই পারছে না ইভানকে কিভাবে তার দায়িত্বে ফেরাবে।সেজন্য ওরা ইভানকে অনেক বোঝালো। শুভ্র আর দিশান অনেক বেশি রিকুয়েষ্ট করলো তাকে।যে এবার যেনো ইভান রাজি হয়।এভাবে ইভান যদি তার দায়িত্ব থেকে সরে পড়ে তাহলে ব্যাপার টা আর কেউই সলভ করতে পারবে না।এটা ইভানের জন্য অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। ইভান সবার রিকুয়েষ্ট এ আর চুপ করে বসে থাকতে পারলো না।সে তার তিন বিশ্বস্ত সহযোগী শুভ্র,দিশান আর নীলয় কে নিয়ে মাঠে নেমে পড়লো।ইভান বর্তমানে সবচেয়ে বেশি আতংকের মধ্যে আছে।একদিকে অতশীর জন্য চিন্তা অন্যদিকে দেশের সবচেয়ে বড় একজন সন্ত্রাসী কে ধরার চ্যালেঞ্জ! সে বুঝতেই পারছে না এর শেষ পরিনতি কি?
ইভান প্রথমেই সীম ট্রাকিং করা সেই ঠিকানায় আবার খোঁজ নিতে লাগলো।সে এক এক করে সবগুলো লোকের চোদ্দগুষ্টি সম্পর্কে জানতে লাগলো।এইভাবে খুঁজতে খুঁজতে ইভান আজ এক মহিলার বাড়ি পৌঁছে গেলো।মহিলাটির নাম ছিলো মুন্নি বেগম।কারণ এই মুন্নি বেগমের নামেও সীম রেজিষ্ট্রেশন করা আছে।আর এই সীম থেকেও আহসানের লিডার ফোন দিয়েছিলেন।মুন্নি বেগমের খোঁজ নিতে গিয়ে ইভান দেখলো তিনি এখনো বেঁচে আছেন।তবে মহিলা টি একদম মৃত্যু শয্যায়,সেজন্য এই মহিলাকে কিছু জিজ্ঞেস করলেও তো তার থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যাবে না।সেজন্য ইভান মুন্নি বেগমের সেবায় নিয়োজিত মহিলা দুইদিকে জিজ্ঞেস করলো।কিন্তু মহিলা দুইটি কিছুই বলতে পারলো না।তখন ইভান উলটো প্রশ্ন করলো এই মহিলার আত্নীয় স্বজন কোথায়?মহিলা দুইটি তখন দুইজন দুইজনার দিকে তাকালো।আর বললো,আমরা কিছুই জানি না।আমরা শুধু এনার সেবা করি।ইভান তখন জিজ্ঞেস করলো আপনারা কি নিজের থেকে সেবা করছেন না কেউ বলেছে আপনাদের?
মহিলা দুইটি তখন বললো না কেউ বলে নি।আমরা মানবতার খাতিরে দেখাশোনা করছি এনার।কারণ আমাদের বাড়ি পাশেই।চোখের সামনে মহিলাটির এমন দুর্দশা দেখে আর চুপ করে থাকতে পারি নি।সেজন্য আমরা নিজেরাই সেবা করছি।যতদূর শুনেছি এনার কোনো আত্নীয় স্বজন নাই।ইনি কোথায় থেকে এসেছেন সেটাও জানি না।
ইভানের মাথা এবার চক্কর দিতে লাগলো।সে বুঝতে পারলো না এই বুড়ির সাথে সন্ত্রাসীর কিভাবে যোগসূত্র থাকতে পারে?নীলয় তখন বললো স্যার এমনতো হতে পারে এনার কোনো ছেলে ছিলো আর তাকেই খুন করে তার সীমটা নিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসী।হয় তো সেই সীমটা এই বুড়ির নামে ছিলো।
ইভান তখন বললো হতে পারে।কিন্তু আমি ভাবছি অন্য কথা।যে মহিলা দুইটি সেবা করছে মুন্নি বেগমের, এদের মুখ চোখ দেখে মনে হলো এরা মিথ্যা কথা বলছে।এরা এমনিতেই কখনো এই মহিলার সেবা করতেই পারে না।নিশ্চয় বুড়ির কোনো সম্পদ আছে।আর সে লোভেই এরা বুড়ির সেবা করছে।আমাদের খোঁজ নিতে হবে।কেনো জানি আমার অনেক বেশি সন্দেহ হচ্ছে।কারণ মানুষ স্বার্থ ছাড়া কখনোই কাউকে সাহায্য করে না। আর এই মহিলা দুইজন কি করে কোনো স্বার্থ ছাড়াই অসুস্থ মুন্নি বেগমের সেবা করতে পারে?
#চলবে,