অনুভূতির কেন্দ্রবিন্দু তুমি পর্ব-২৫+২৬

0
591

#অনুভূতির_কেন্দ্রবিন্দু_তুমি
#পর্বঃ২৫
#সুমাইয়া_সানজুম_ঐশী

আচ্ছা” প্রেমিকা” হয়েছো কখনো, তুমি?একেবারে সত্যিকারের প্রেমিকা?প্রেম প্রেম গন্ধ পেয়েছো কখনো?অনুভূতির অ*ত্যাচার সহ্য করেছো? ছোট্ট কিশোরী হৃদয় নিয়ে কখনো কারো জন্য ছট*ফট করেছ?হয়তো না।কি করেই বা তুমি প্রেমিকা হবে,বলো?মায়াময় মানুবীদের যে প্রেম নি*ষিদ্ধ। সে তো একান্তই তার ব্যক্তিগত পুরুষের।

তবে আজ না তোমার এই ব্যক্তিগত পুরুষের খুব করে প্রেমিক পুরুষ হওয়ার সাধ জেগেছে। একদম সত্যিকারের প্রেমিক পুরুষ। সামনে দাড়িয়ে থাকা সেই প্রেয়সীর নে*শায় মক্ত হওয়া প্রেমিক।তার উদাস দৃষ্টি, দীর্ঘ এলো চুল হাজার খানিক বাহানায় এই প্রেমিক কে ডাকছে।অযথাই তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে তার সেই কাজলরাঙা চোখে। তার সেই বেখেয়ালি চাহনিতে। আচ্ছা তুমিও কি এই অনুভূতির অ*ত্যাচারে ব্যকুল হয়েছো!

আমি চুরি পড়ছিলাম।পিঠে হাতের স্পর্শ পেয়ে চমকে উঠলাম। আয়নায় পিছনে আঁধারের প্রতিবিম্ব দেখতে পেলাম। তার স্পর্শ আমার হৃদস্পন্দন কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।তিনি খুব মনযোগ সহকারে পিছনের ফিতা লাগিয়ে দিলেন। অতঃপর আয়নায় দৃষ্টি মিলিয়ে বললেন,

_now perfect,,মিষ্টি কালারটা তোমায় একটু বেশিই মানিয়েছে।একদম মিষ্টি মিষ্টি লাগছে

তার প্রশংসা আমার অ*স্বস্তি ভাবটা শতগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। কোনো রকম তার দৃষ্টি উপেক্ষা করে দরজার দিকে যেতেই শুনতে পেলাম,

_নিজের এই রুপ কি বাহির বাসীদের ও দেখাতে চাইছো?নাকি ওরনা ছাড়াই লেহেঙ্গা পড়ার সাধ জেগেছে!

আমি যেন এবার হুশে ফিরলাম। নিজের দিকে তাকিয়ে নিজেই হতবাক হয়ে গেলাম। তড়িঘড়ি বিছানার উপর থেকে ওড়না টা গায়ে জড়ালাম। এতোক্ষন আমি উনার সামনে ওড়না ছাড়া ছিলাম ভাবতেই গায়ে কাটা দিয়ে উঠলো।

তাড়াতাড়ি করে তার সামনে থেকে যেতেই লেহেঙ্গাতে পা বেজে পড়তেই তিনি ধরে ফেললেন। কোমড় জড়িয়ে একেবারে নিজের কাছে টেনে নিলেন। তার এহেন কান্ডে আমি হকচকিয়ে গেলাম। এক অদ্ভুত জড়তা জেকে ধরলো আমাকে।তার এতো নৈকট্য আমার হৃদকম্পন শতভাগ বাড়িয়ে দিয়েছে।মুখে জড়তা ভাব নিয়েই বললাম,

__ছাড়ুন, এখন ঠিক আছি,,, আর পরবো না

সে আমার কথায় বাকা হাসলো। তার এই হাসি মোটেও আমার বোধগম্য হলো না।অতঃপর আমার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললেন,

_ছেড়েই তো দিয়েছি।তুমিই তো বারংবার তোমায় কাছে টানার ইঙ্গিত দিচ্ছো।তাই তো এখন আর তোমায় ছাড়তে ইচ্ছে করছে না।এখন বলো আমার কি করা উচিত!

এমন সময় রোজা আপু আর নীল ভাইয়ার গলা শুনতে পেলাম,

_আমরা কিন্তু কিছু দেখছি না, চোখে কালা চশমা পড়ে আছি।

তাদের কথা শুনে আঁধার বজ্জাত ব্যাটা আমাকে ছেড়ে দিসে।হনুমান আর একটু আগে ছাড়তে পারলি না! এরা এখন আমাকে শুধু শুধুই লজ্জা দিবে।আঁধার চাবি টা নিয়ে দরজায় গিয়ে বললেন,

_চোখের ডাক্তার দেখা। হুদাই কালা চশমা পড়ে নিজেদের জোকার বানানোর কোনো মানেই হয় না।

____

আপুর আর ভোর ভাইয়ার কবুল বলার মাধ্যমে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।বরপক্ষের আত্মীয়রা রাতের খাবার এর পর বর সহ বিদায় নিবেন হবেন। আমি ভেবেছিলাম বিয়ে যেহেতু হয়ে গেছে, হয়তো ভোর ভাইয়া আজ রাত এখানে আপুর সাথে থাকবেন কিন্তু ঘরোয়া ভাবে বিয়ে হয়েছে তাই ভোর ভাইয়াও নাকি থাকবেন না। রাতের খাবার এর পর চলে যাবেন।আপুর পরীক্ষার এক মাস পর বড় করে বিয়ের অনুষ্ঠান করে আপুকে তুলে নিবেন তারা।

আমি আপুকে রুমে বসিয়ে আপুর জন্য পানি আনতে নিচে যাচ্ছিলাম

_ছোট্ট আপু,তুমিও এসেছো আলো আপুর বিয়েতে?

পরিচিত কন্ঠ শুনে চমকে উঠলাম, তাকিয়ে দেখি উদয় ভাইয়া

_ভাইয়া আমি তো এখানেই থাকি। আপনি কখন এলেন?

_এইতো বিকেলেই আসলাম। আসলে খুলনা থেকে এখানে আসাটা অনেক ঝামেলা।

_আপনি না চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এ ইন্টার্নিশীপ এ আছেন তাহলে খুলনা থাকেন কেনো?

আমি কৌতূহল বশত জিজ্ঞেস করলাম ভাইয়াকে।

_আসলে আমরা এ বাড়ি ছেড়ে একটা কারনে খুলনায় শীফট হয়েছিলাম। আমি আর আরাফ এখানেই মেডিকেলে চান্স হওয়ায় আবার চট্টগ্রাম এ থাকা আর কি।তুমি কি ধ্রুব ভাইয়ার মামাতো বোন টা নাকি?

__না,,আম আমি তো

_ও আমার বউ।

আঁধারের কথায় আমি সামনে তাকালাম। উদয় ভাইয়া তো টাসকি খেয়ে গেছেন। আধার একজন মধ্য বয়সী নারীর কাধে হাত রেখে দাড়িয়ে আছেন। সেই নারীকে আমায় দেখিয়ে বললেন,,

_মেঝো মা এই হচ্ছে তোমার ধ্রুবের বউ।তোমাদের এতো করে বলার পরোও তোমরা বিয়েতে আসো নি।

মেঝ মা আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসতেই আমি তাকে সালাম দিলাম।তিনি সালামের জবাব দিয়ে আমার মুখ দু হাতে ধরে একদৃষ্টিতেবেশ কিছুক্ষন তাকিয়ে বললেন,

_ধ্রুব,, ওকে কোথায় পেয়েছো? ওর মা-বাবাকে আমরা থাকতে একদিন ডেকো। আলাপ করবো।

উনার কথা শুনে আমি ঘাব*ড়ে গেলাম। আম্মু -আব্বুকে উনি কি জন্য খুজছেন।

খাবার শেষে এবার বর দের যাবার বেলা।তাই ভোর ভাইয়া আর আলো আপুকে তার রুমে কিছু সময় আলাদা কথা বলার জন্য দেওয়া হয়েছে। আর প্রিন্সিপাল স্যার আর তার ওয়াইফ নিচে মা,বাবা আর বাকিদের সাথে কথা বলছেন।

___

আলো বারান্দায় ছিলো। ভোরের উপস্থিতি টের পেতেই নড়েচড়ে দাঁড়ায়।

_বলেছিলাম না বউ,,তোমায় খুব তাড়াতাড়িই নিজের কাছে নিয়ে আসবো। অর্ধেক ব্যবস্থা এখন করলাম আর বাকিটা তোমার এক্সাম এর পর করবো।

ভোরের কথা শুনে আলো অবাকের চূড়ান্ত পযার্য়ে। সেদিন অফিসের পর এই প্রথম ভোর আবার তার সাথে কথা বলেছে।এতদিন বিয়ের কথা চললেও ভোর আলোর সাথে আলাদা করে কোনো কথা বলে নি।ভোরের এমন কথায় আলোর কিছু একটা সন্দেহ হলো।ভোরের দিকে ফিরে ডেবডেবে চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,

_মানে,,আপনি কখন বলেছেন!আপনার সাথে তো আমার একবারই আপনার অফিসে দেখা হয়েছিল। তখন তো,,

আলোকে আর বলতে না দিয়ে তার কোমড় জড়িয়ে নিজের কাছে টেনে নেয় ভোর।এনে আলো ঘা*বড়ে যায়।হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক এর তুলনায় দ্বিগুণ পর্যায়ে চলছে।একরাশ লজ্জা ঘিরে ধরেছে তাকে।যার কারণে মুখ থেকে কোনো আওয়াজ বের করতেও দ্বিধাগ্রস্ত হচ্ছে।ভোর আলোর লজ্জা রাঙা মুখ দেখে মুচকি হেসে বলল

_সেদিন, ভাসিটির স্টোর রুমের কথা ভুলে গেছো বউপাখি!

আলোর কাছে এবার সবটা বিস্ময়কর লাগছে।সে ভোরের চোখে চোখ রেখে বললো

_তার মানে ঐদিনের বদমাইশ লোকটা আপনিই ছিলেন!

আবার ভোর আলোকে আরও কাছে টেনে নিয়ে বললো,

_হ্যাঁ, শুধু ওইদিনের নয়,তোমায় মেসেজ রোজ ডি*স্টার্ব করা তারপর রবিনের ভিডিও ক্লিপ গুলো তোমার কাছে সেন্ড করা মানুষটাও আমি ছিলাম।

আলো যেন অবাক হওয়া ওও ভুলে গেছে।

এই মানুষটা কে সে আগে তো কখনো দেখে নি। তাহলে সে তার নাম্বার টা কীভাবে পাবে!আর তাকেই বা কেন মেসেজ করতো!তার সাথে রবিনের রিলেশন ছিলো জানার পরো ও কেন তাকে বিয়ে করেছে।রবিনের ভিডিও ফুটেজ গুলোই বা তার কাছে কেনো পাঠিয়েছে! এসব চিন্তা যেন মাথায় জটলা পাকিয়ে ফেলেছে।সে এতটাই বেখেয়ালি যে ভোরের এতো নিকটে থেকেও তার হুস নেই।তার মন এখন কৌতূহলে ভরপুর হয়ে আছে তাই সে জিজ্ঞেস করেই ফেলল,

_কিন্তু আপনি এসব কেনো করেছেন?সবকিছু জানার পরোও আমাকে এতো তাড়াতাড়ি বিয়েই বা কেনো করেছেন??

#চলবে

#অনুভূতির_কেন্দ্রবিন্দু_তুমি
#পর্বঃ২৬
#সুমাইয়া_সানজুম_ঐশী

_বলুন, কেন বিয়ে করেছেন আমায়?,জবাব দিন।

আলোর কথায় ভোর মুচকি হেসে তাকে আরও নিকটে টেনে নিলো।আলো কিছুটা ভড়কে গেল এমন হাসি দেখে। নড়াচড়া করলো ছাড়া পাওয়ার কিন্তু সফল হল না।ভোর আলোর চোখে চোখ রেখেই বললো,

_একপলক দেখায় ভীষণ ভাবে ভালোবেসে ফেলেছিলাম তোমায়।দেশের বাইরে থেকে ফেরার দু দিনের মাঝেই কেউ এভাবে তার ভুবন ভুলানো হাসির দ্বারা আমার মন চুরি করে ফেলবে বুঝতেই পারিনি।তার একখানা সূক্ষ্ম চোখের দৃষ্টিতেও হৃদকম্পন জোরালো করে দিয়েছিল আমার।তার সেই কন্ঠস্বর শুনার এক অদম্য ইচ্ছে জেগেছিল।

তাই তো সেদিন ই প্রশাসনিক কার্যালয় থেকে তার নাম্বার নিয়ে ছিলাম।সেই রাত থেকেই তাকে জালাতন করতে লাগলাম।কিন্তু সেদিন ভাসিটির সামনে তোমায় রবিন এর সাথে হেসে কথা বলতে দেখে মেজাজ বিগড়ে গিয়েছিল তাই স্টোর রুমে নিয়ে রাগ ঝেড়েছিলাম। রবিন তোমার উডবি যেনে নিজের উপর ই রাগ হচ্ছিলো। ভাবতেই খারাপ লাগছিলো যে আমি অন্যের উডবি কে ভালোবেসেছি।তবুও আমি আমার ভালোবাসাটাকেই প্রাধান্য দিয়েছি।ভেবেছিলাম তোমায় তুলে নিয়ে বিয়ে করবো কিন্তু রবিন আমার কাজটাকে এতটা সহজ করে দিবে ভাবতেই পারিনি।

অতঃপর তোমার সেই কুলাঙ্গা উডবির ব্যান্ড বাজালাম। তারপর নিজের ভালোবাসার মানুষ টাকে নিজের করে নিলাম।

কিন্তু জানো তো,,এখনো আমার হৃদয়টা বিষাদগ্রস্ত। তোমার ভাইয়ের ভিলেনি শর্ত পরীক্ষার পর তোমায় শশুর বাড়ি যেতে দেবে।তাই তো তোমায় পেয়েও এখনো অনেক দূরত্ব। শুনেছি,, দূরত্ব ভালোবাসা বাড়ায়,, এই কথার ভিত্তিতে নাহয় তোমায় ছাড়া আরো ওও কয়েক দিবস পার করবো।ভালোবাসার মানুষ টাকে পেয়েছি এই আনন্দে আমি এই কয়েক দিবস অনায়াসে পার করে দিবো।

আলো অবাক দৃষ্টিতে ভোরের কথা শুনছে।

আসলে সঠিক মানুষের সাথে আমাদের একটু দেরিতেই পরিচয় হয়।
আলোর কেনো যেন ভোরের প্রত্যেক টা কথা ভীষণ ভাবে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে। তবে তার মন দোটানায় পড়ে আছে। যদি এবার ওও তার সাথে প্রতারণা হয়।এই মানুষটাও যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে তখন!

ভোর আলোর ভাবনার মাঝেই ফোড়ন কেটে বলল

_কিছু কিছু প্রতারক দের কারনে মানুষ সত্যিকার ভালোবাসাকে অবিশ্বাস করে।আমি তোমার বিশ্বাস কে ঠুনকো হতে দেব না,,বউ তাই আমাকে ওই রবিন এর সাথে তুলনা করা বন্ধ করো,,নয়তো পিটাবো তোমাকে।

শেষের কথা টা শুনে আলো ভোরের দিকে কঠোর দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই ভোর তার ওষ্ঠোদয় আলোর কপালে ছোয়ালো।পরম সুখের আবেশে চোখ বুজে ফেলল আলো।কেমন যেন শান্তি অনুভব করলো সে।হয়তো ব্যক্তিগত পুরুষের স্পর্শ টাই এমন

_খেয়াল রেখো নিজের।তোমার কাছে পরীক্ষা পর্যন্ত সময় আছে। নিজেকে ওইসব ফাউল চিন্তাধারা থেকে বের করো।আমার প্রেমময় অত্যাচার সহ্য করার প্রিপারেশন নেও।আল্লাহ হাফিজ।

একথা বলে ভোর তাৎক্ষনিকভাবে আলোর রুম ত্যাগ করলো। আলো ভোরের যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে। সে তো তার জীবনে একটা বিশ্বাস যোগ্য মানুষকে খুজছিলো।তবে কি এই তার বিশ্বাসযোগ্য মানুষ।

°°°°°°°°°°°°°°

_পিচ্চি তুমি ধ্রুব ভাইয়ের বউ আগে বলো নি কেন??আমি আরও তোমাকে ভাইয়ের বোন বানিয়ে দিচ্ছিলাম।

আড্ডার মাঝে উদয় ভাইয়া কথায় সবাই আমার দিকে তাকালো।

__আসলে ভাইয়া, বলার সুযোগই হয় নি

আমি আমতা আমতা করে বললাম

_তুই ব্যাটা বিয়ের দিন খুলনা থাকবি।আর ঐশী তোর কানেকানে গিয়ে বলে আসবে সে ভাইয়ে বউ।বেয়াদ্দপ

রোজা আপুর কথায় তাদের কাজিনদের মধ্যে হাসির রোল পরে গেল।

_আচ্ছা ভাবী,তোমার কোনো ছোট বোন নেই?না মানে,,কতো দিন আর সিংগেল থাকবো বলো।আমার তো তোমায় বেশ ভালো লাগলো। তোমার বোন নিশ্চয়ই তোমার মতই মিষ্টি হবে,, মুখে এক গাল হাসি রেখেই আরাফ ভাইয়া বললেন

__না,, ভাইয়া। তবে বড় বোন আছে।আপনার থেকে সিনিয়র হবে।আপনি চাইলে আপুর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

আমার কথা শুনে সবাই আরেক দফা হাসাহাসি করলো।এভাবেই সবার আড্ডা বরযাত্রী যাওয়ার অনেক সময় পর পর্যন্ত চললো। শেষে আঁধারের ধমকে সবাই যার যার রুমে ঘুমাতে গেলো।আমি আর রোজা আপু রান্না ঘরে আছি।

__আরে ঐশী,, আর কয়টা মিষ্টি খাবা!পেট খারাপ হবে তো!

__এইতো আপু এটাই লাস্ট।এরপরই তোমাদের সাথে ঘুমাতে যাবো।

এগারো নাম্বার মিষ্টি টা খেতে খেতেই বললাম আমি।

__ভাই কিছু বলবেনা?

_না, উনি আজ যা খেটেছে তাতে এতক্ষণে এক ঘুম হয়ে গেছে তার।আমি রুমে গেলে শুধু শুধু ডিস্টার্ব হবে।তাছাড়া তোমরা রুমে এখন অনেক মজা করবা।আমি কিছুতেই তা মিস করতে চাই না।

আপু দুইটা কোল্ড ড্রিংকস নিয়ে আমার হাত টেনে নিয়ে যেতে যেতে বলল,

_চলো বোন,,নয়তো পুরো ফ্রিজের মিষ্টির প্যাকেট এক রাতেই ফিনিস করে দেবে তুমি।

সিড়ি পেরুতেই আপুর রুম থেকে সবার কথা শুনতে পেলাম। তারমানে সব ছেলেরা সহ সব কাজিন রাই আছে আপুর রুমে। যাক তাহলে আড্ডা টা সেই হবে।

__ঐশী,, তোমার ভাইয়ের রুমে যাওয়া উচিত। নয়তো ভাইয়া তোমাকে খুজতে খুজতে আমাদের রুমে চলে আসবে। পরে তোমার সাথে আমাদের ও ধোলাই দিবে।

আপুর কথা শুনে আমি মেকি হাসি দিয়ে বললাম,

__তুমি হুদাই প্যারা নিচ্ছো।তোমার ভাই কোন দেশের মিনিস্টার যে এতো ডরাও।আরে আমি আছি না।আমি সবটাই সাসামমলে

আর বলতে পারলাম না তার আগেই চিরচেনা সেই শক্তপোক্ত হাত আমায় রুমে টেনে নিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলেন। আমি কিংকতব্যবিমূড়। ঘটনা টা এতোটাই দ্রুত ঘটলো যে কিছু বুঝে উঠতেই পারি নি।আঁধার আমায় দেয়ালে চেপে ধরেই বললেন,

_সমস্যা কি তোমার? তোমায় রুমে ডেকেছি কানে যায়নি? আবার ওই রুমে কেনো যাচ্ছিলে?

তার সারামুখে রাগের ছাপ স্পষ্ট। আমার আঁখিযুগল আটকে গেলো তার উন্মুক্ত বুকে বিন্দু বিন্দু পানি কণায়।উনি হয়তো মাত্রই শাওয়ার নিয়েছেন। একদম স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে তাকে।কিন্তু তার চোখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। এখন আবার কেন রাগলো আল্লাহ যানে।উনি মনে শুধু রাগ করার বাহানাতেই থাকে।তাই আমতাআমতা করে বললাম,

__আপুদের রুমে ঘুমাবো আমি।সবাই ওখানে মজা করছে। আমাকে যেতে দিন।ছাড়ুন

আমার এই কথাটা যেন তার রাগের আগুনে ঘি ঢালার কাজ করেছে।হাতের বাধন শক্ত করে চোখ ছোট তাকিয়ে বললেন,

_কোথাও যাবে না তুমি।এখানেই থাকবা।রুম থেকে এক পা বেরুলে বারান্দা থেকে ছুড়ে ফেলে দিবো একদম।

তার কথায় আমার রাগ লাগলো।ওখানে সবাই মজা করছে আর আমাকে এই জল্লাদ এর কাছে থাকতে হবে,, এটা কেমন কথা।

তাই বিপরীতে বললাম,

_আমি যাবো।

_কেন?ছেলেদের সাথে কথা বলতে বুঝি খুব ভালো লাগে।তাইতো তখন কি হেসে হেসেই কথা না কথা বলছিলে!ডানা গজিয়েছে না তোমার? ডানা কিভাবে ছাটানো যায় তা এই ডাক্তার খুব ভালো করেই যানে।

এবার যেন ভীষণই রাগ লাগলো আমার। এক ধাক্কায় তাকে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দিলাম। কেমন নিচু মন-মানসিকতা তার!আমি আমার সব দেবর আর ননদ এর সাথেই তো কথা বলছিলাম। তার এতো পুড়তেছে কেন তা তো বুঝতেসি না। তাই কপাট রাগ নিয়েই বললাম,

#চলবে

বি.দ্র:রিচেইক করিনি। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।।