অন্তঃপুর পর্ব-১৬

0
2

#অন্তঃপুর
বিনতে ফিরোজ
১৬.

সাদমানের কাছে রাফির ফোন নাম্বার ছিল। তাই আফরিন ভাবল একবার ফোন করে কথা বলবে। প্রকৃতপক্ষে সে লোকটাকে তার পেটের ভেতর জমানো কথাগুলো না বলে শান্তি পাচ্ছিল না। যার সাথে বিয়ে হতে যাচ্ছে, জীবন জুড়তে যাচ্ছে তার সবটা জানার অধিকার তো রাফির আছে।

সাদমান ঘুমিয়ে ছিল। তাই কয়েকবার নক করেও কোনো সাড়াশব্দ পেলো না আফরিন। ঘড়িতে কেবল নয়টা বাজে। এত তাড়াতাড়ি তো সাদমানের ঘুমানোর কথা নয়। ভেবেই দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে পড়ল আফরিন। যা ভেবেছিল তাই। সাদমানের মুখের উপরে বই। পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে গেছে।
বালিশের পাশে ফোনটা রাখা ছিল। ফিঙ্গার লক দেয়া দেখে সাদমানকে ডাক দিল আফরিন।
“এই সাদ! শোন। একটু ফোনটা খুলে দে।”
সাদমান লক খুলে ওপাশ ঘুরে শুয়ে পড়ল। কল লিস্ট থেকে রাফির নাম্বার বের করে নিজের ফোনে টুকে নিল আফরিন। সে ঘর থেকে বের হলে ঘুম ঘুম চোখে ফোনের স্ক্রিন দেখল সাদমান। রাফির নাম দেখতেই তার কপালে ছোট্ট একটা ভাঁজ পড়ল।

দুবার রিং হওয়ার পর দিন ধরল লোকটা। আফরিন ভাবছিল কীভাবে কথাটা বলা শুরু করবে। তাই রাফি যে ফোন ধরেছে সেটা খেয়াল করতে পারেনি।
“কে বলছেন?” তীক্ষ্ম কন্ঠটা কানের পর্দায় এসে ধাক্কা দিতেই আফরিনের ধ্যান ভাঙলো।
“আমি আফরিন।” চটপট উত্তর দিল আফরিন।
রাফির কপালের ভাঁজগুলো মুছে গেল। মুহূর্তেই বিরক্তি ঘিরে ধরল তাকে। বিয়ে সম্পর্কিত কোনকিছুই তার ভাল লাগছে না। সেই অপছন্দের তালিকায় বিয়ের কনের স্থান সবার আগে।
রাফি বুঝল না এই মেয়ে কেন তাকে ফোন দিয়েছে। কথাবার্তা নিশ্চয়ই রেস্টুরেন্টে হয়ে গেছে। তাহলে তার সাথে কি?
“শুনতে পাচ্ছেন? হ্যালো?”
“বলুন।” কাঠ কাঠ কণ্ঠে বলল রাফি।
আফরিনের মনে হল কোনো কারণে এই লোকের মেজাজ ঠিক নেই। প্রথম কয়েকবার সাক্ষাতে রাফিকে বিনয়ী বলেই মনে হয়েছে। তবে আজকে রেস্টুরেন্টে তাকে বিরক্ত বলে মনে হচ্ছিল। সম্ভবত কাজ টাজ নিয়ে। ভাবল আফরিন। অথচ সে আন্দাজও করতে পারল না রাফির অপছন্দের কারণ এই বিয়ে, সে নিজে।
“আপনি কি ফ্রি আছেন? একটু সময় নিতাম।”
রাফি খোলা দরজা দিয়ে কেবিনের বাইরে তাকাল। কর্মীরা সবাই চলে গেছে ছয়টার পর পরই। সে নিজেই অফিসকে ঘর বানিয়ে নিয়েছে। হাতে সময় থাকলেও এই মেয়েকে সেটা দেয়ার মোটেও ইচ্ছে নেই তার।
“সংক্ষেপে শেষ করুন।”
রাফির কণ্ঠের কঠোরতায় আফরিন কিছুটা ভড়কে গেল। সে যা বলতে চাচ্ছে সেটা কি এই মুহূর্তে বলা ঠিক হবে?
আমতা আমতা করে বলতে শুরু করল সে, “আমার বাবা মায়ের সাথে আকথা হয়েছে?”
রাফির বিরক্তি বাড়ল। কোনো গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে এই মেয়ে ফোন দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। আবার বিনা কারণে, টাইম পাস করতে ফোন দিয়েছে এটাও আফরিনের ব্যক্তিত্বের সাথে যায় না।
“না।”
আফরিন দম ছাড়ল। কথা বলতে যেয়েও আটকে গেল একবার। আবার বলতে শুরু করার আগেই কান বিপ করে একটা শব্দ হল।
“ধুর!” ফোন রেখে দিল রাফি। সে নিজেকে দেখতে পাচ্ছে মাহমুদ হিসেবে এবং আফরিনকে আসিফার জায়গায়। ফলে আফরিনকে তো বটেই, নিজেকেও তার ভাল লাগছে না। ধৈর্য হারা হয়ে ফোন কেটে দিল রাফি। মেয়েটার কথা শুনতে একটুও ভাল লাগছিল না। পরপর নাম্বারটা ব্লক করে দিল। কথা যত কম হবে অশান্তি তত কম হবে। তার বাবা মায়ের দাম্পত্য অন্তত এটাই বলে।
আফরিন ভাবল ভুল করে কেটে গেছে। তাই আবার ফোন দিল সে। ওপাশ থেকে ব্যস্ত জানান হল। আবার ফোন দিয়েও কেটে দিল আফরিন। লোকটা তাকে আবার ছ্যাচড়া না ভাবে। ঠোঁট কামড়ে ভাবতে লাগল কি করা যায়। কথাগুলো তো তাকে জানানোও দরকার।

⁠。。。。。。。。。。。

রাত জেগে আফরিন একটা চিঠি লিখল। লোকটার সাথে যেহেতু ফোনে বা সাক্ষাতে কথা বলা সম্ভব হচ্ছে না তখন হতাক্ষরের আলোচনাই সই। না জানানোটা আফরিন যেন মেনেই নিতে পারছিল না।
চিঠি লেখার সময় তার নিজের কাছেই যেন কেমন লাগছিল। এ জীবনে কারো কাছে কখনও চিঠি লেখা হয়নি। কেবল নিজেকেই স্তূপ স্তূপ কাগজের অনুভূতি উপহার দেয়া হয়েছে। আজ যদিও বা লিখতে বসেছে তবু এমন একজনকে যার সাথে তার কোনো সম্পর্কই নেই। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলেও তা বদলাতে কতক্ষন?
আফরিন নিজেকে শান্ত করল। লোকটা যদি ট্যা জীবনসঙ্গী হয় তাহলে তাকে জানাতেই হবে। সাদা রুলটানা কাগজে যখন সে কলম ছোঁয়াল তখন ঘড়ির কাটা বারোর ঘর অতিক্রম করেছে।

“জনাব রাফি,
সালাম জানবেন। আপনার সাথে কিছু জরুরী কথা ছিল। কিন্তু সাক্ষাৎ বা ফোনালাপ কোনোটাতেই সেসব বলে উঠতে পারিনি। সুযোগও হয়নি। তাই এই মাধ্যমটা বেছে নিলাম। আপনার ব্যস্ত সময়ের কিছু অংশ ধার নেয়ার জন্য আগেই ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

আমার জন্ম সনদ অথবা এনআইডি কার্ড যেটাই দেখুন না কেন আমার বাবার পরিচয়ে পাবেন মোশাররফ হোসেন এবং মায়ের পরিচয় আফসানা ইসলাম। পরিচয়টা মিথ্যে না হলেও সেই অর্থে সত্যি নয়। আদতে তারা আমার জন্মদাতা পিতা মাতা নন। তারা আমার দুধ বাবা মা। এই সম্পর্কের সূত্র ধরেই আমি এই পরিবারে ঢুকে পড়েছি। খুব অনাকাঙ্খিত ভাবে।
ডাক্তারের বলা নির্ধারিত তারিখের আগেই আমার মায়ের ডেলিভারি হয়। কোনো এক সফরে ছিলেন বাবা মা। বাস ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাসের বেশিরভাগ মানুষ আহত হয়েছিলেন। নিহতের সংখ্যাও নেহায়েত কম ছিল না। তার মাঝে ছিলেন আমার বাবা। এক্সিডেন্টের জায়গা থেকে হাসপাতালে নেয়ার পথেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। খবরটা মা-কে জানানো হয়নি। কারণ তখন তার অবস্থা সংকটাপন্ন। আমাকে পৃথিবীতে আনার সময়টুকু আল্লাহ আমার মা-কে দিয়েছিলেন। সিজারের পর প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় পেরিয়ে গেলেও আমার মা আমাকে খাওয়াতে পারছিলেন না। দুর্বল শরীর নিয়েই তিনি আশপাশে কোনো একজন মহিলাকে খুঁজলেন যিনি আমাকে একটু খাওয়াবেন। খুঁজে খুঁজে আমার দুধ মাকে পেলেন। অসুস্থ মহিলার এমন ব্যাকুল আকুতি আমার দুধ বাবা মায়ের নরম মন ভেজাতে বেশি সময় নিল না। ঐ আমার মায়ের কোলে শেষ থাকা। খাইয়ে যখন আমাকে আমার দুধবাবা ফেরত দিয়ে আসতে গেলেন তখন জানতে পারলেন মেয়ের দায়িত্ব অচেনা দম্পতির হাতে দিয়ে আমার মা-ও বাবার পথ ধরেছেন।
আমার বাবা মা দয়াপরবশ হয়ে তাদের কাছে আমাকে রেখে দিলেন। সাদের সাথে একই যত্নে আমাকে লালন পালন করতে থাকলেন। বোধ করি এই খবরটা না দিলে কস্মিনকালেও আপনি চোখের দেখায় বুঝতেন না এই তিনজনের সাথে আমার রক্তের কোন সম্পর্ক নেই।
কিন্তু বিপত্তি বাঁধল পরিবারে। সাদের দাদা অথবা নানাবাড়ির তেমন কেউই বিষয়টা পছন্দ করলেন না। আমাকে এতিমখানায় রেখে আসাই ছিল সবচেয়ে সহজ এবং বুদ্ধিমানের কাজ। আমার বোকা বাবা মা তা করলেন না। শুনেছি আমার জন্মদাত্রী নাকি মা-কে বলেছিলেন আমাকে একটু দেখে রাখতে। মা যে সেই অনুরোধ এভাবে রাখবেন তিনি বোধহয় বুঝতে পারেননি। বেচারি চলে তো গেলেন কিন্তু মা-কে বিপদে ফেলে গেলেন।
ফলশ্রুতিতে আমরা আলাদা থাকি। বাড়তে থাকা কোন্দল কমাতে এবং থামাতে বাবা স্কুলের কাছে বাসা নিলেন। একসময় এখানেই বাড়ি বানালেন। বলা বাহুল্য আমার আপন পিতা মাতার কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞাপন, থানা পুলিশ করেও আমার কোন আত্মীয়ের খোজ পাওয়া যায়নি।

এতকিছু আপনাকে বলার কারণ হল আপনাকে আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে পছন্দ করা হয়েছে। যদি এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকে তবে আপনি হবেন আমার জীবনের অংশ। এবং স্বামী স্ত্রীর সর্ম্পকে অন্য যেকোন সম্পর্ক থেকে খুব আলাদা এবং সেনসিটিভ বলেই আমি জানি। আমার জীবনের এমন গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় আপনাকে জানানো জরুরী বলে মনে করেছি। তাই এই কালি ক্ষয়।

আল মালিক আপনাকে সুস্থ রাখুন, ভাল রাখুন।

ইতি
আফরিন

বিঃদ্রঃ আমার বাবা মায়ের সাথে আপনাকে যদি সুন্দর একটা সম্পর্ক তৈরি করতে বলি সেটা কি খুব কঠিন অনুরোধ হবে?”

চিঠিতে চোখ বুলিয়ে নিল আফরিন। বানান ভুল হয়নি। কাটাকাটিও নেই। ঠোঁট চেপে ভাবল অতিরিক্ত কিছু লেখা হয়েছে নাকি। নাহ। কাজের কথাই এসেছে। সতর্কভাবে লুকিয়ে ফেলার অংশগুলোও বুদ্ধিমানের চোখ এড়িয়ে যাবে না। দেখা যাক সাইয়েদ রাফির বুদ্ধির ধার কেমন।

বিয়ের তারিখ ঠিক করা হয়েছে সামনের মাসের পনের তারিখ। আর সতের দিন পর। সাদমানের এক মামাই আছেন যিনি আফরিনকে খুব আদর না করলেও অচ্ছুৎ ভেবে অপমান করেন না। তার সাথেই পরামর্শ করলেন মোশাররফ। বাকিদের দাওয়াত দিলেও তাদের সাথে পরামর্শ করার কথা ভাবলেন না। আফরিন সম্পর্কে তাদের মনোভাব জানার পরও তাদের কাছে ওর জন্য কোনো সহযোগিতা কামনা করা বোকামি।
সেই মামাও খোঁজ খবর নিয়েছেন। এবং এমন ঘর আফরিনের জন্য হাতছাড়া করা ঠিক হবে না বলে মতামত দিয়েছেন। সাদমান যদিও তখনও অর্থ সম্পদের দাড়িপাল্লা নিয়ে চিন্তিত ছিল তবু সে একেবারে ভেটো দিতে পারেনি পারিপার্শ্বিক চিন্তা করে। সবকিছু কি আর মন মতো হয়?

অনিক এলো হাসিকুঞ্জের মুখপাত্র হয়ে। কিছু জরুরী আলাপ সেরে নিল মোশাররফ হোসেনের সাথে। যাওয়ার কালে আফরিন তাকে পিছু ডাকল। অনিক একটু অবাকই হল। তার সাথে আফরিনের কোন দরকার থাকতে পারে বলে মনে হয়নি।

“জি বলুন।”
বাঁশ পাতা রঙের খামটা এগিয়ে দিল আফরিন। “সাইয়েদ সাহেবকে এটা দিতে পারবেন?”
অনিক হেসে ফেলল। সাইয়েদ সাহেব? শালা ছাগল সাহেব।
আফরিন কপাল কুচকে ফেলল। এই লোক হাসছে কেন?
“জি পারব।” খামটা নিল অনিক।
“উনি সম্ভবত ব্যস্ত। এজন্য ফোনে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাই..”
অনিক মনে মনে রাফিকে কঠিন একটা ধমক দিল। তার সাথে গতকাল রাতেও আধা ঘন্টা ধরে প্যাঁচাল পেড়েছে যেন এই বিয়েটা থামিয়ে দেয়। আর আফরিনের সাথে কথা বলার সময় হয় না। হবু বউকে এড়িয়ে যাচ্ছে। ছাগলের ছাগল!
“ঠিকাছে আমি দিয়ে দিব ইনশাআল্লাহ্।” বলল অনিক। বন্ধুর হবু বউয়ের সামনে তো আর তার বদনাম করা যায় না।
“ধন্যবাদ।”
অনিক মাথা নেড়ে চলে গেল।
আফরিন দম ছাড়ল। এবার একটু হালকা লাগছে। এখন সময় প্রস্তুতি নেয়ার। পিত্রালয় ছাড়ার প্রস্তুতি। ডাইনিং রুমের খাওয়ার টেবিলের দিকে তাকিয়ে হাসল আফরিন। যেই হাসির পুরোটা জুড়েই স্পষ্ট বিষাদের ছোঁয়া।

_______________

যাব যাব করে রাফির কাছে যাওয়াই হচ্ছিল না। শেষমেষ অনিকের সময় মিলল ঠিক বিয়ের আগের দিন। নিজের অফিসের কাজ গোছাতেই সময় চলে গেছে। বিয়ের জন্য কয়েকটা দিন গ্যাপ যাবে। সেটা আগে পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে অনিক।
গাড়িতে উঠে যখন এয়ার ফ্রেশনার নেয়ার জন্য ড্রয়ার খুলল তখন তার চোখ কপালে ওঠার দশা। আফরিন দেয়া খামটা যত্ন করে এখানে রেখেছিল। যত্নেই পড়ে আছে সে। প্রাপকের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়নি। অনিক এয়ার ফ্রেশনার দেয়ার সময়টুকু আর নষ্ট করতে চাইল না। গাড়ি ছোটাল রাফির অফিসের দিকে। জানে ওকে ওখানেই পাওয়া যাবে।

রাফি তখন দুপুরের খাবার খাচ্ছিল। খাওয়ার মাঝে অনিককে দেখে সে মোটেও খুশি হল না।
“চেহারার কালার তো একেবারে আমেরিকা থেকে আফ্রিকা হয়ে গেল। সমস্যা কি?” ভুরু নাচাল অনিক।
মুখের খাবার গিলে রাফি বলল, “জীবনের সবচেয়ে বড় সমস্যা গলায় ঝুলিয়ে দিয়ে বলছিস সমস্যা কি? লজ্জা করে না?”
“না করে না।” পরক্ষনেই স্বর নরম করল অনিক, “মেয়েটা অনেক ভাল রাফি। তুই সুখী হবি।”
“কেউই খারাপ না।”
“তাহলে?”
“মেলে না অনিক। দুটো মানুষ একসাথে এবং মোস্ট ইমপোর্টেন্টলি শান্তিতে থাকতে চাইলে অনেক বিষয়ে ছাড় দিতে হয়। সেটা মাঝে মাঝে নিজের পছন্দের বিষয়। অপর পক্ষের পছন্দ নিজের অপছন্দ হলেও সেটা করতে হয় মানিয়ে নেয়ার জন্য।”
“আরে তোকে তো আমি ছাগল ভেবেছিলাম! তোর চিন্তা তো ঘোড়ার মতো টগবগ করে ছুটছে! বিয়েতে তুই পিএইচডি করে ফেলেছিস। তোর আর চিন্তা কি?”
রাফি খাওয়া বন্ধ করল।
“মানুষ নিজের দোষ দেখতে পছন্দ করে না অনিক। দেখে না। এখন একা আছি বলে এতকিছু বলতে পারছি। যখন সংসারে একটা অশান্তি হবে তখন অপর পক্ষের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে নিজের বিবেকের কাছে শুদ্ধ থাকতে চাইব। জিন যে পেয়েছি। ও তো বেইমানি করবে না।” বিষাদ হেসে বলল রাফি।
অনিক স্বান্তনা দিতে পারল না। বেশ কিছুক্ষণ পর হাতের খামটা রাফি টেবিলে রেখে বলল, “আফরিন দিয়েছিল।”
রাফি এক পলক দেখলেও কিছু বলল না। ওটা ওখানেই পড়ে রইল। অবহেলায়।

~চলমান~