#অন্তঃপুর
বিনতে ফিরোজ
৩১.
খুব কষ্ট করে পুরোটা রাস্তা মুখ বন্ধ করে এসেছেন আসিফা। লোকটার কথা কোনো অংশে মিথ্যা নয়। মাহমুদের সাথে কল রেকর্ড শুনিয়েছে। না শোনালেও তিনি বিশ্বাস করতেন। এই কাজ মাহমুদ করতে পারে।
তিনি বারবার নিষেধ করেছিলেন। একবার সর্বনাশের পরও লোকটার শিক্ষা হয়নি। কীভাবে রাফিকে বলবেন এসব? তার মন চাইছিল চিৎকার করে কাঁদতে। করতে পারলেন না। জাফরের সামনে কান্নাকাটি করা মানে রাফির কাছে খবর পৌঁছে দেয়া।
চেপে রাখা কান্না বুকে ঝড় তুলতে দেরি করল না। আসিফা টের পেলেন তার বুকে ব্যাথা করছে। বা পাশে। চিনচিনে ব্যাথাটা ক্রমেই বাড়তে থাকল। একবার ভাবলেন জাফরকে ডেকে বলেন। সেই ইচ্ছেটুকুও হলো না। বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে ব্যাথা কিছুটা কমলেও গায়েব হলো না। মাহমুদ যতদিন এসব করবে ততদিন গায়েব হবেও না।
আশপাশে কেউ ছিল না। সোজা নিজের ঘরে যেয়ে শুয়ে পড়লেন তিনি। এখন মরে গেলে কেমন হয়? এই অশান্তি আর ভাল লাগছে না। রাফির সামনাসামনি হওয়ার চেয়ে মৃত্যুকে অনেক সহজ মনে হচ্ছে।
___________________
“শোন তো।” রাফির ডাকে বই থেকে মুখ ওঠাল আফরিন। কিছুদিন পরই মিড শুরু হবে। পড়ার চাপ বেড়েছে।
“শুনছি বলুন।”
“এখানে আসো।”
রাফি বিছানায় বসে আছে। আফরিন দেখল ওর চোখ দুটোয় চিন্তার ছাপ।
“শুনতে পাচ্ছি তো। আপনি বলুন।”
রাফি কিছু বলল না। তাকিয়ে রইল।
আফরিন বলল, “আমার অনেক পড়া। এখনই বলতে হবে? পরে বললে হবে না?”
“এখনই বলতে হবে।” কেমন থমথমে কণ্ঠে বলল রাফি। আফরিন দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে টেবিল ছাড়ল। রাফির মুখোমুখি বিছানায় বসে বলল, “বলুন এবার।”
রাফির দৃঢ় ভাব এক নিমেষে গায়েব হয়ে গেল। আফরিন অবাক হয়ে লক্ষ্য করল লোকটা মুহূর্তের মাঝেই অস্বস্তির মাঝে ডুবে গেছে।
“কী হলো? বলুন।”
“বলছি।”
বলছি বললেও কিছু বলার কোনও লক্ষণ রাফির মাঝে দেখা গেল না। আফরিন বলল, “জনাব অন্তর্মুখী সাইয়েদ। পুরো সাতাশ পৃষ্ঠার একটা শিট আমাকে আজকেই শেষ করতে হবে। আপনি কি চান আমি সারারাত জেগে থাকি?”
রাফি হেসে ফেলল, “এটা কেমন সম্বোধন!”
“যেমন স্বভাব এমন সম্বোধন।” আফরিন নির্বিকার। “বলবেন?”
“আমার উপরে তো তোমার রাগ থাকার কথা।” খুব ভেবে চিন্তে বলেও রাফির মনে হলো কথাটা ঠিক ভাবে বলা হলো না। বলা উচিত ছিল, “আমার উপরে কী তোমার অনেক রাগ জমা আছে রিনি?” রাফি খেয়াল করেছে সে রিনি বলে ডাকলে আফরিন খুশি হয়। ঝট করেই একটা ঝলমলে ভাব খেলে যায় তার চেহারায়।
“আছে।” মাথা নেড়ে বলল আফরিন। পা তুলে বিছানায় আরাম করে বসল। আলাপ সম্ভবত দীর্ঘ হতে যাচ্ছে।
রাফি অবাক হলো, “আছে?”
“জি।”
“তাহলে বলো নি কেন?”
“কী বলব?”
“রাগ করে আছ।”
আফরিন হতাশ নিশ্বাস ছাড়ল, “কোনোদিন শুনেছেন কেউ রাগ করে বলে আমি রাগ করেছি। আমার রাগ ভাঙাও।”
“বললে সুবিধা হত না?” আস্তে করে বলল রাফি। আফরিনের হাসি পেল।
“তাহলে মানুষের ব্রেন আছে কীসের জন্য?”
“যে জন্যই থাকুক না কেন। বউয়ের মুড বোঝার জন্য আরেকটা ব্রেন দরকার।”
“আপনি কী বোঝাতে চাচ্ছেন?” আফরিন তীক্ষ্ম কণ্ঠে বলল।
রাফি তড়িঘড়ি করে বলল, “কিছু না! কিছু না! টপিক থেকে সরে যাচ্ছি। তোমার পড়ারও দেরি হয়ে যাচ্ছে। এবার বলো তো রাগ করে ছিলে কেন? করলে বলো নি কেন?”
“আপনার কী মনে হয়? কেন রাগ করে ছিলাম? অবশ্য ছিলাম বলছি কেন? আছি বলা উচিত।”
রাফি মনে মনে প্রমোদ গুনল। এখনো রাগ করে আছে?
“ঐ সেদিন তোমাকে রেখেই চলে এসেছিলাম এজন্য?” ইতস্তত করে বলল রাফি।
“কোনদিন?” রাফির মনে হল আফরিনের কণ্ঠ ঠান্ডা হয়ে গেছে। যেই ঝরঝরে ভাব এতক্ষণ ছিল সেটা আর নেই।
“বিয়ের দিন।”
“আরো আছে।”
“আর কী?” রাফি যেন নিজেকেই প্রশ্ন করল। বহু চেষ্টা করেও বুঝল না আর কী কী কারণে আফরিন তার উপরে রেগে থাকতে পারে।
আফরিন বলল, “আমি সাহায্য করব?”
রাফি অস্বস্তি বোধ করল। এই আফরিনকে অচেনা লাগছে, “বলো।”
“সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীকে এক প্রকার ছুঁড়ে ফেলে এসেছেন রুম ভরতি মানুষের সামনে। শারীরিক ভাবে ছুঁড়ে ফেলেননি। মানসিকভাবে কাজটা করেছেন। নির্বাসিত অবস্থায় নতুন বউয়ের বাসর রাত কেটেছে দাদী শাশুড়ির রুমে। আপনার সব আত্মীয় দেখেছে নতুন শাড়ি, গহনা পরা, সেজেগুজে বেড়ানো বউ স্বামীর পাত্তা তো দূর তার ঘরে ঠাঁই অব্দি পাচ্ছে না। হাসিখুশি থাকার জন্য আমাকে কথা শুনতে হয়েছে। স্বামী পরিত্যক্তাদের হাসতে নেই। সমস্যা ছিল আপনার, সেটা নিজের মধ্যে চেপে রেখেছেন। বিয়ের আগে বা পরে আমার সাথে ডিসকাস করার কথা ভাবেননি। বাড়ির কাজের লোক আমাকে নিয়ে তামাশা করেছে। এত বড়লোক বাড়ির বউ হয়ে কী করলাম? স্বামীকেই পেলাম না। পুরো একটা মাস একই বাড়িতে থেকেছেন অথচ আমি বেঁচে আছি নাকি মরে গেছি এই খোঁজটুকু নেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। মুখে একটা শব্দ না বলেও প্রতিনিয়ত আমাকে অপমান করে গেছেন। আর কী কী বলব সাইয়েদ সাহেব?”
আফরিনের কণ্ঠ কিছুটা কাঁপল। রাফি এতক্ষন মাথা নিচু করে ছিল। এক পলক তাকাতেই দেখল আফরিনের চোখ টলমল করছে। টুপ করে এক ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। নিজেকে কী ভীষণ অপরাধী মনে হলো রাফির! এত ক্ষোভ জমা ছিল আফরিনের মনে?
রাফি অনেকক্ষণ চুপ করে থাকল। গুছিয়ে নিল কী কী বলবে। তারপর নিচু কণ্ঠে বলল, “বিয়ে নিয়ে ভাবলেই আমার ভেতরে ভয় কাজ করত। একটা অসুখী দাম্পত্য মানুষের পুরো জীবনটা কীভাবে নষ্ট করে দিতে পারে তার প্রত্যক্ষ সাক্ষী আমি। শুধু দুটো মানুষের জীবন নষ্ট করে না, এমন একটা পরিবার তৈরি করে যেখানে সবসময় অশান্তি হয়। এজন্যই আমি কখনও বিয়ে করতে চাইনি। দাদীমাকে হাজার বুঝিয়েও রাজি করাতে পারিনি। বাবা, মা, দাদীমা কেউ আমাকে বোঝার চেষ্টা করেনি। তাদের তোমার উপর দেখিয়ে ফেলেছি।”
“চমৎকার কাজ করেছেন।”
“সরি রিনি।”
“সরি এক্সেপ্টেড।” আফরিন ভারী কণ্ঠে বলল।
“আমি ভুল ছিলাম। তুমি যদি আমাকে একটু বলতে..”
“কী বলতাম? আমাকে অন্য ঘরে রেখেছেন কেন? কাকে বলতাম? যে একশ হাত দূরে থেকে আমাকে দেখলে আরও দুশো হাত পিছিয়ে যায়?” এই পর্যায়ে রেগে গেল আফরিন।
রাফি চুপ করে রইল। একটু পর আবার বলল, “সরি রিনি।”
আফরিন হাসল, “এত সরি বলতে হবে না। যার মুখ দেখার সৌভাগ্য হয় না তার উপরে রাগ করা বিলাসীতা। নিজের বাবা মায়ের কলহের দাম্পত্য দেখে আপনি যে এমন হয়েছে সেটা বুঝতে পারতাম। সত্যি বলতে আপনার জন্য মায়াও লাগত। কিন্তু নিজের জন্যও খুব একটা ভাল লাগত না। শুধু ভাবতাম এই সময়টা কত দ্রুত শেষ হবে। অপমান সহ্য করারও তো একটা সীমা আছে। বাদ দিন এসব। আমি তো ভেবেছিলাম কাজটা যে ঠিক হয়নি এটাই আপনি বোঝেননি। বুঝেছেন দেখে ভাল লাগল। নিজের দোষ বোঝে কয়জন? বুঝলেও স্বীকার করে না, স্বীকার করলেও ক্ষমা চায় না। আপনি তিনটাই করেছেন। এবার শ্বাস নিন।”
আফরিন উঠে গেল। তার কন্ঠ ঝরঝরে। অথচ রাফি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে একটু পরপরই চোখ মুছছে আফরিন।
রাফি শুয়ে পড়লে আফরিন টেবিল ছেড়ে উঠল না। মনেও হল না খুব সহসাই সে উঠবে বলে। রাফি এপাশ ওপাশ করেও স্বস্তিতে চোখ বন্ধ করতে পারছিল না। শেষমেষ উঠে পড়ল। আফরিনের কাছে যেয়ে বলল, “মাঝে মাঝেই আমি ট্রমাটাইজড হয়ে যাই। বাবা মা খুব বেশি ঝগড়া করলে নিতে পারি না। ঐ সময় স্বাভাবিকভাবে ভাবতেও পারি না। আমার মনে হয় ডাক্তার দেখানো উচিত।”
“ঠিকাছে। দেখাবেন। কালকে চলেন যাই।”
রাফি উত্তর না দিয়ে বিছানায় চলে এল। আফরিন যদি দেখাবেন বলে থেমে যেত তাহলে মনে হয় রাফি আজকে আর ঘুমাতে পারত না।
___________________
ভয়ঙ্কর ঘটনাটা পরদিন সকালে ঘটল। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মাহমুদের উপরে আ-ক্র-ম-ণ করা হল। ছু-রি-র আঘাত লাগল কয়েক জায়গায়। ডান গালে যেই ক্ষতটা হয়েছে সেটা আরেকটু হলেই চোখে ঢুকে যেত। ঘটনাটা এত দ্রুত ঘটল যে দারোয়ান যেয়ে পৌঁছাতে পৌঁছাতেই মাহমুদ মাটিতে বসে পড়েছেন। আশপাশ থেকে মানুষজন ছুটে আসতে দেখে লোকগুলো যেই গাড়ি নিয়ে এসেছিল সেই গাড়িতে করে তাড়াতাড়ি সরে পড়ল। দারোয়ান চেষ্টা করেও নেমপ্লেটে দেখতে পারল না। মনে হচ্ছে সেখানে সাদা রং করা।
মাহমুদ চিৎকার করলেন, “আমাকে ওঠাচ্ছ না কেন!”
দারোয়ান তাকে ধরে বাড়ির ভেতরে নিয়ে গেল।
আগাহতের যন্ত্রণার চেয়ে বেশি রাগে গজগজ করছেন মাহমুদ। এসব আসিফার আলহা মাতব্বরির জন্য।
মুহূর্তেই বাড়িতে হুলুস্থুল লেগে গেল। রাফি বাড়িতেই ছিল। খবর শুনে সে ছুটে এল। বাবার দিকে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে গেল সে। আফরিন বলল, “এক্ষুণি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।”
“আগে থানায় খবর দিতে হবে।” নাবিলা বলল।
মাহমুদ এক প্রকার চিৎকার করে উঠলেন, “খবরদার না! কেউ পুলিশ ডাকবে না।”
আসিফা ফার্স্ট এইড বক্স হাতে এগিয়ে আসছিলেন। মাহমুদের এই কথা শুনে থেমে গেলেন। শান্ত কণ্ঠে বললেন, “দেবে না কেন? লোকগুলোকে ধরতে হবে না?”
রাফি বলল, “এসব কথা পরে হবে। আগে হাসপাতালে যাওয়া দরকার।” মাহমুদের ডান গাল থেকে র-ক্ত পড়ছে। হাতের র-ক্ত ফ্লোর ভিজে গেছে। বোঝাই যাচ্ছে লোকগুলো ভয় দেখাতে এসেছিল। প্রাণে মা-রতে নয়।
“না কাউকে ধরতে হবে না। কোথাও যাব না আমি।”
“চিৎকার করবে না। চিৎকার করে কিছু পাল্টাতে পারবে না।” ঠান্ডা কণ্ঠে বললেন আসিফা।
মাহমুদ বসা থেকে দাঁড়িয়ে আসিফার দিক তেড়ে এলেন। দাঁতে দাঁত চেপে বললেন, “সব তোমার জন্য! কে বলেছে মাতব্বরি করে ওদের সাথে দেখা করতে? কী উদ্ধার করেছ তুমি?”
“সব জানো তাহলে এটা জানো না কী উদ্ধার করেছি?”
“**টা করেছ তুমি! ওদের টাকা দেবে তুমি? কত টাকা দেবে? আমার সাথে টাকার গরম দেখাতে এসেছ?”
“ওদের টাকা দেব না আমি। জুয়াড়ি স্বামীকে বাঁচানোর কোনো ইচ্ছা আমার নেই।”
মুহূর্তেই ড্রয়িং রুমে যেন একটা বিস্ফোরণ ঘটে গেল। বিশেষ করে আফরিনের জন্য। রাফির দিকে তাকাতেই দেখল সে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নাবিলার চেহারার ভাবও একই রকম। ফ্লোর র-ক্তে ভেসে যাচ্ছে। আগে কী মাহমুদকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত না?
গলার রগ ফুলিয়ে মাহমুদ বললেন, “ঠিক করেছি জুয়া খেলেছি। আরও একশবার খেলব! কী করবে তুমি? কী করবে?”
আসিফার প্রচণ্ড ইচ্ছে হল মাহমুদের গালে শক্ত একটা থাপ্পড় বসাতে। কষ্ট করে নিজেকে আটকালেন তিনি।
“ছেলেমেয়েদের সামনে চিৎকার করো না।”
কেউ থামল না। মাহমুদ চিৎকার করতে করতেই এক পর্যায়ে মেঝেতে পড়ে গেলেন। রাফি শক্ত হয়ে নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে রইল। আফরিন চাপা কণ্ঠে বলল, “বাবাকে ধরুন! যান!”
রাফি গেল না। জাফর ছুটে এসে মাহমুদকে ধরল। সেই আঘাতের জায়গায় ব্যান্ডেজ করে দিল।
ঘটনা সেখানেই থেমে রইল না। ঘন্টাখানেক পর দুজনের গলা আবার নিচ থেকে শোনা গেল। রাফি চুপচাপ নিজের ঘরে বসে রইল। অফিসেও গেল না। আফরিন কয়েকবার বলল। শোনার কোনো লক্ষণ রাফির মাঝে নেই। অধৈর্য হয়ে আফরিন কোন্ট উঁচু করে ফেলল, “আশ্চর্য! আপনি এখনো যাচ্ছেন না কেন? এক্ষুনি বাবা মায়ের কাছে যান!”
রাফি শীতল কণ্ঠে বল, “চুপ করো। আমাকে একা থাকতে দাও।”
আফরিন অবাক হয়ে দেখল রাফি শুয়ে পড়ছে।
বিকেলের দিকে রাফির কাছে এলেন মাহমুদ। শান্ত কণ্ঠে সাবলীল ভঙ্গিতে বললেন, “আমি আসিফাকে তালাক দিতে চাই। ব্যবস্থা কর।”
আফরিন দাঁড়িয়ে থাকতে পারল না। তার পা দুটো টলছে। মাহমুদ কী নির্বিকার ভঙ্গিতে চলে যাচ্ছেন!
রাফি বললেও চুপ করে থাকতে পারল না আফরিন। অবিশ্বাস্য ভঙ্গিতে বলল, “আপনি এখনো স্বার্থপরের মতো ঘরে বসে থাকবেন? বাবা মায়ের কাছে যাবেন না?”
“না।”
“এক্ষুনি উঠুন আপনি। এক্ষুনি যান!” চিৎকার করল আফরিন।
রাফি শক্ত কণ্ঠে বলল, “তোমার বাবা মায়ের সাথে তো অনেক দিন তোমার দেখা হয়নি। যাও বেড়িয়ে আসো। নিজের বাবা মাকে নিয়ে চিন্তা কর।”
আফরিন বিস্মিত হয়ে রাফির মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। চোখমুখ শক্ত করে তার দিকে তাকিয়ে আছে। ঝট করে উঠে দাঁড়াল আফরিন। তক্ষুণি বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল।
সকালে চিৎকার চেঁচামেচি শুনলেও মনোযোগ দেননি। রোজ হয়। নতুন কিছু তো না। সমস্ত ঘটনা রুমিলা জানলেন সন্ধ্যার পর। জুয়া খেলে টাকা ঋণ করেছে তার ছেলে। এক জায়গায় না। কয়েক জায়গায় সর্বমোট নয় লাখ টাকা ঋণ করেছে। সেই পাওনাদাররা এসে তাকে র-ক্তা-ক্ত করে গেছে। ছেলে অবশেষে তার বউকে তালাক দিতে চেয়েছে। রাফি আফরিনকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। এতসব একসাথে নিতে পারলেন না রুমিলা। সন্ধ্যার পর পরই হার্ট অ্যাটাক করলেন তিনি।
~চলমান~