অপ্রিয় তুমি পর্ব-১০

0
286

#অপ্রিয়_তুমি
#পর্ব১০
#আফিয়া_আফরোজ_আহি

আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। পেঁজো পেঁজো মেঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে পুরো আকাশ জুড়ে। উৎসা মেহরাবের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে এক মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। ওর মনেও কালো মেঘ জমেছে। আঁধার ঘনিয়ে আসছে। এই বুঝি বর্ষণ শুরু হলো বলে। তবে উৎসা তার আগেই নিজেকে সামলে নিলো। বুক চিড়ে বেরিয়ে এলো দীর্ঘশ্বাস। কেটে গেছে দুটো দিন। এই চার দিনে মেহরাব ভুলেও উৎসার সামনে পড়েনি। মেহরাব কখন বাড়ি আসে কখন যায় কোনোটাই উৎসা জানে না। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে বিছানা ফাঁকা, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেও মেহারব বাড়িতে আসে না। বিছানার অপর পাশটা ফাঁকাই পড়ে থাকে, যেমনটা রেখে ঘুমায় ঘুম ভেঙ্গে উঠেও তেমনটাই পায়। তার মানে কি মেহরাব বাড়ি আসে না? উৎসা আর কিছু ভাবতে পারছে না। মাথা হ্যাং হয়ে আসছে। বুক চিড়ে বেরিয়ে এলো দীর্ঘশ্বাস। স্মৃতির পাতায় ধরা দিলো সেদিনের কাহিনী।

সেদিন ঘুম ভেঙ্গে উৎসার নিজেকে মুক্ত মনে হলো। প্রতিদিন ঘুম ভাঙলে চোখের সামনে মেহরাবের ঘুমন্ত মুখ খানা ভেসে ওঠে। অতঃপর ওকে ডেকে তুলতে হয়। নাহলে ওঠার জো নেই। মেহরাব শক্ত আলিঙ্গনে জড়িয়ে রাখে। ওর জড়িয়ে ধরার ধরণে মনে হয় বাঁধন একটু আলগা হলেই বোধ হয় উৎসা ওর থেকে পালিয়ে যাবে। মেহরাবের কাণ্ড কারখানা মনে করে উৎসা হাসলো। পাশে তাকিয়ে দেখলো জায়গা টা ফাঁকা সেখানে কেউ নেই। মেহরাব গেল কোথায়? এতো সকাল সকাল তো কোথাও যাওয়ার ছেলে মেহরাব না। তবে কোথায় গেল? প্রতিদিন উৎসা ডেকে তলে ওকে, অতঃপর সাহেবের ঘুম ভাঙে। আর আজকে আগে ভাগেই উঠে গেছে? বাহ্! বেশ উন্নতি তো! উৎসা ভাবলো হয়তো নিচে গেছে। ও ভাবনা বাদ দিয়ে রেডি হয়ে ব্যাগ নিয়ে নিচে নামলো। আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দেখলো মেহরাব কেন ওর অস্তিত্বও নেই। উৎসা হতাশ হলো। খেয়ে উঠতেই মাহিন বলে উঠলো,
“উৎসা তুমি যেয়ে গাড়িতে বসো ড্রাইভার তোমাকে দিয়ে আসবে”

উৎসা মাথা নেড়ে সায় জানালো। তবে সাহস হলো না কাউকে মেহরাবের কথা জিজ্ঞেস করার। সারাদিন উৎসা অপেক্ষা করেছে তাও মেহরাবের দেখা পায় নি। ঘড়িতে রাত এগারোটা বেজে গেলেও মেহরাবের আসার কোনো লক্ষণ নেই। কয়েক বার ব্যালকনিতে যেয়ে উঁকি দিয়ে এসেছে। ভাবলো জেগে থাকবে। কিন্তু সকাল সকাল ওঠায় জেগে থাকতে চাইলেও পারলো না। বসে থাকতে থাকতে মিনিট কয়েকের মাঝে ঘুমের দেশে পারো জমালো।

অপর দিকে রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ বাড়ি ফিরলো মেহরাব। ক্লান্ত দেহটাকে কোনো রকমে টেনে হিচড়ে রুম পর্যন্ত এলো। শরীরের ক্লান্তির চেয়েও মনের ক্লান্তি জেঁকে ধরেছে ওকে। রুমে ঢুকে চোখ পড়লো বিছানার সাথে হেলান দিয়ে বই কোলের ওপর নিয়ে বসে থাকা উৎসার পানে। এক লহমায় সকল ক্লান্তি কেটে গেল। চোখে খেলে গেল, মুগ্ধতা, ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসি ফুটে উঠলো। মেয়েটা কিভাবে ঘুমিয়ে আছে? এভাবে ঘুমালে নিঃঘাত ঘাড় ব্যথা করবে। মেহরাব এগিয়ে গিয়ে উৎসাকে ঠিক করে শুইয়ে দিলো। কাল উৎসার কথায় অভিমান হয়েছিল ওর। ও যতোটা চাইছে সম্পর্ক টা মানিয়ে নিতে, স্বাভাবিক করতে উৎসা ততোটাই অবহেলা করছে। মেহরাব পারছে না প্ৰিয় মানুষটার অবহেলা মেনে নিতে। মেনে নিতে নিতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। তাই মেহরাবের মনে হচ্ছে উৎসার সময় প্রয়োজন। জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেয়ে সময় দেওয়া উচিত। জোর করতে গেলে দেখা যাবে হিতে বিপরীতে না হয়ে যায়। উৎসাকে জোর করে কাছে আনতে গিয়ে যদি সারাজীবনের জন্য হারিয়ে ফেলে? তখন ও থাকবে কি করে? এই মেয়েটার মাঝেই যে ওর সকল অস্থিরতা, সকল অসুখের সমাধান। ওকে ছেড়ে থাকা মেহরাবের পক্ষে সম্ভব না। মেয়েটা কে নিজের করে পাওয়ার জন্য কম কাঠ খড় পড়াতে হয় নি। নিজের কর্ম কাণ্ডের কথা ভেবে মেহরাব নিজেই হাসলো। উৎসার মুখের দিকে তাকালো। বাচ্চা একটা মেয়ে, এই টুকু মেয়ের জন্য কতই না পা*গলামো, কতই উন্মাদনা কিন্তু মেয়েটা কোনো দিন জানবেই না। এই মেয়েটা ওকে এতটা বাজে ভাবে নিজের জালে ফাঁসিয়েছে যে মেহরাব সেই জাল ছেদ করে বেরিয়ে আসতে পারছে না আর না চাইছে। সেজন্য ভেবেছে যে জালে তাকে আটকে রাখা হয়েছে তা ভেদ করে না বেরিয়ে উল্টো এই জালেই মেয়েটাকে সে নিজের সাথে আষ্টে পিষ্টে জড়িয়ে রাখবে আজীবন। নিজের থেকে এক চুল পরিমান ও দূরে যেতে দিবে না। কোনো কিছুকে সারাজীবনের জন্য পেতে গেলে ধৈর্য প্রয়োজন। প্রয়োজনে মেহরাব ধর্য্য ধরবে তাও উৎসাকে ওর চাই। মেয়েটাকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে মেহরাব নিজের কষ্ট হওয়ার সত্ত্বেও উৎসার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলছে। ইচ্ছে করেই বাড়িতে দেরি করে এসেছে। এতক্ষন অফিসে বসে ছিলো। অফিস শেষ হলে ওর প্রিয় জায়গা খোলা আকাশে নিচে বিশাল মাঠের এক কোণে বসে আকাশ বিলাস করছিলো। আকাশ বিলাস কিছুটা অদ্ভুত তাই না? আকাশে চন্দ্রের দেখা নেই। ঘন কালো মেঘেদের আনাগোনা। মেহরাব কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে উৎসার দিকে তাকিয়ে থেকে ফ্রেশ হতে চলে গেল। মনে মনে ভাবছে কি করে পারবে ও এই মেয়েটাকে না দেখে থাকতে? তাকে না জ্বালালে যে মেহরাবের শান্তি লাগে না। তার থেকে দূরত্ব বঝায় রাখা কি এতোই সহজ? উহু! মন বলে উঠলো,
“সামান্য দূরত্ব যদি ভালোবাসা বাড়ায়?”

অবচেতন মনে জবাব এলো,
“সত্যি কি দূরত্ব ভালোবাসা বাড়ায়? নাকি চলে যাওয়ার বাহানা বানায়?”

মেহরাব আঁতকে উঠলো। না! না! এটা হতেই পারে না। উৎসা ওকে ছেড়ে যেতে পারে না। দরকার পড়লে উৎসাকে ও বন্দি করে রাখবে তাও ওর ওকেই চাই। নিজের মাঝে সাইকো সত্ত্বা টের পেতেই মেহরাব চোখ বুঝলো, জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করলো। নিজেই নিজেকে সান্তনা দিলো অচিরেই সব ঠিক হবে। উৎসার মনে ওর জন্য ভালোবাসা সৃষ্টি হবে। বিছানা শুয়ে আলতো হাতে নিজের অস্তিত্ব কে কাছে টেনে নিলো। অতঃপর আঁকড়ে ধরলো বুকের মধ্যখানে। মেহরাব পারছে না উৎসাক নিজের বুকের ভেতরে ঢুকিয়ে ফেলে। কাল সারা রাত ফাঁকা বুকের অস্থিরতা ওকে ঘুমাতে দেয় নি। অভিমান করে উৎসার কাছেও যায়নি। কিন্তু আর সম্ভব না। বিয়ে করা বউ ওর। কেন দূরে থাকতে যাবে? বউয়ের আশেপাশেই ঘুরবে কিন্তু বুঝতে দেওয়া যাবে না। উৎসার কানের কাছে এগিয়ে গিয়ে বিরবির করে বলল,
“আমায় নিরাশ করো না বউ, খুব শীঘ্রই ভুল বোঝা বুঝি ঠিক করে ফিরে এসো আমার বুকে। এই বেহায়া পুরুষটা যে তোমার প্রতীক্ষায় বসে আছে, আমার প্রতীক্ষা বিফলে যেতে দিও না, প্লিজ”

মেহরাবের কাতর কণ্ঠ কিন্তু কথা গুলোর একটাও উৎসার কর্ণকুহর অবধি পৌঁছাচ্ছে না। ও গভীর ঘুমে মগ্ন। মেহরাব উৎসার ঘাড়ে মুখ গুজলো। কিছুক্ষণের মাঝে পারি জমালো ঘুমের দেশে। সকাল সকাল উৎসা ঘুম থেকে ওঠার আগেই মেহরাব অন্য রুমে যেয়ে ঘুমিয়ে গেল। মাহিনকে আগেই বলে রেখেছে উৎসাকে কি বলতে হবে। আর কি কি করতে হবে। মাহিন ভাইয়ের কথায় সায় জানিয়েছে শুধু, উল্টে কোনো প্রশ্ন করেনি। আর না জানতে চেয়েছে কিছু। মাহিন জানে ওর ভাই যতোই ঘাড়ত্যাড়া হোক না কেন কখনোই ভুল কিছু করবে না। সেই আশ্বাস থেকেই কিছু জিজ্ঞেস করেনি।
————
ক্লাসে মন খারাপ করে বসে আছে উৎসা। পড়ায়ও মনোযোগ নেই। শিক্ষক ক্লাস বোর্ডে কিছু বোঝাচ্ছে। উৎসা এক ধ্যানে বোর্ডের দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু ওর বিন্দু মাত্র মনোযোগ নেই। হুট্ করেই শিক্ষক বলে বসলো,
“উৎসা দাড়াও”

কথা উৎসার কান পর্যন্ত পৌঁছালোই না। ফের ডাকলো তাও উৎসার মনোযোগ নেই। এবার শিক্ষক ক্ষেপে গেলেন। জোরে ধমক দিয়ে বলল,
“উৎসা!”

উৎসা কেঁপে উঠলো। এক ঝটকায় দাঁড়িয়ে গেল। থতমতো খেয়ে বলল,
“জি স্যার”

“মনোযোগ কোথায় থাকে তোমার? কতোক্ষণ ধরে ডাকছি। ক্লাসে মনোযোগ দিতে না পারলে ক্লাসে আসার দরকার নেই”

উৎসা মিন মিনে স্বরে বলল,
“সরি স্যার। আর কখনো এমন হবে না”

“ঠিক আছে এবারের মতো মাফ করে দিলাম এরপর আর যেন এমন না হয়। বসো”

উৎসা মাথা নেড়ে সায় জানিয়ে বসে পড়লো। তানজিলা বিষয়টা খেয়াল করেছে। কয়েক দিন যাবত উৎসা কেমন মন মরা হয়ে থাকে, ভাবনার জগতে বসবাস করে। সারাদিন কি এতো ভাবতে থাকে এই মেয়ে? কিছু জিজ্ঞেস করলেও বলে না। কি হয়েছে উৎসার?

ব্রেক টাইম দিতেই তানজিলা উৎসা কে পাকড়াও করলো। উৎসা এটা সেটা বলে কাটিয়ে যেতে চাইছে। অপর দিকে তানজিলাও ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী নয়। জিজ্ঞেস করতে করতে মুখে ফ্যানা তুলে ফেলছে তাও উৎসা মুখ খুলছে না। এক পর্যায়ে তানজিলা ব্ল্যাক মেইল করা শুরু করলো,
“বুঝেছি আমি তো আর তোর কেউ না? আমায় বলবি কেন? আমায় বলতে হবে না। তুই থাক তোর মতো। আমি গেলাম, আমার আশেপাশেও ঘেসবি না বলে দিলাম”

“এমন করছিস কেন ইয়ার? এটা আমাদের সংসারিক বিষয় তোকে কিভাবে বলি বল?”

তানজিলা তেড়ে এসে বলল,
” দু দিন হতে পারলো না বিয়ে হয়েছে, তুই সাংসারিক বিষয় শেখাস আমায়? তুই যে কতো সংসার করছিস আমার জানা হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি বল নাহয় আমি যাচ্ছি”

উৎসা তানজিলাকে আটকে দিলো। হাত ধরে পাশে বসিয়ে একে একে সেদিনের ঘটনা খুলে বলল। তানজিলা কপাল চাপড়াচ্ছে ওর কথা শুনে। উৎসা চোখ মুখ কুঁচকে ভয়ে ভয়ে বলল,
“এমন রিয়েকশন দিচ্ছিস কেন বান্ধবী?”

“তোকে যে মেহরাব ভাইয়া এখনো কিছু বলেনি এটা তোর সাত কপালের ভাগ্য। আমার নিজেরই তো তোকে থাপড়াতে ইচ্ছে করছে”

উৎসা ঠোঁট উল্টে জিজ্ঞেস করলো,
“কেন আমি কি করেছি?”

“তোকে যে মেহরাব ভাই কিভাবে সহ্য করছে আল্লাহ মালুম”

“আরে কি করেছি সেটা বলবি তো! না বলে বকে চলেছিস”

তানজিলা নিজেকে সামলে নিলো। অতঃপর শান্ত কণ্ঠে বলল,
“দেখ উৎসা এখন তোদের বিয়ে হয়েছে। তোরা স্বামী-স্ত্রী। একে অপরের পরিপূরক। আগে যা হয়েছে সেটা ভুলে যা। এখন তোর উচিত সব কিছু মানিয়ে নেওয়া। আমার জানামতে মেহরাব ভাইয়া মানিয়ে নেওয়া যথেষ্ট চেষ্টা করছে তুই’ই ঝামেলা পাকাচ্ছিস। আগে ভাইয়া আর তুই একে অপরের সাথে ঝগড়া করতি এটা ঠিক ছিলো, এখন আর সেটা মানায় না। কারণ এখন তোরা বিবাহিত। দুজন মিলে মিশে চলতে হবে। ভাইয়া ও তো মানুষ নাকি? তুই বার বার যদি তাকে বলিস তুই তাকে পছন্দ করিস না, ভাইয়া তোর অপ্রিয় তাহলে ভাইয়ার কেমন ফিল হবে? নিজেকে একবার ভাইয়ার জায়গায় বসিয়ে ভেবে দেখ। তু্ই এখনো তোর ইগো ধরে আছিস। ইগো দেখাতে গেলে আর যাই হোক সংসার হয় না ইয়ার। ভালোবাসা কিংবা সংসারে ইগো থাকতে নেই। তবে আমি তোকে নিজের আত্মসম্মান বিসর্জন দিতে বলিনি। ইগো আর আত্মসম্মান আলাদা। ভাইয়া যদি তোর আত্মসম্মানে আঘাত করে তাহলে সেটা আলাদা বিষয়। তু্ই এখনই ভাইয়া কে কল দে, কল দিয়ে আসতে বল”

উৎসা মিন মিনে স্বরে বলল,
“তোকে বললাম না উনার নাম্বার আমার কাছে নেই”

“কি বললি? আশ্চর্য! আমি এটা ভেবে অবাক হচ্ছি তোদের বিয়ের প্রায় মাস খানেক হয়ে গেছে আর তোর কাছে ভাইয়ার নাম্বার নেই? আজব কথা না?”

উৎসা মিন মিন করে বলল,
“আমার কি দোষ? উনিও তো সেঁধে নাম্বার দেয় নি”

তানজিলা থা*প্পড় উঠাতে গিয়েই হাত সরিয়ে নিলো। মাথায় চাপর মেরে বলল,
“ভাইয়া তোর ভাসুর না শশুর? তোর নিজের বিয়ে করা জামাই তার কাছে নাম্বার চাইতে কিসের এতো দ্বিধা?”

তানজিলা একটু থামলো। অতঃপর খোঁচা মেরে বলল,
“কোলে তো দিব্বি উঠতে পারো, নাম্বার চাইতে গেলেই তোমার যতো লজ্জা, দ্বিধা?”

“আমি সেঁধে ওনার কোলে উঠতে চাইনি উনিই তো জোর করে কোলে তুলেছে”

“দেখা উৎসা ফাজলামো না। ইগো দেখানোটা বোকামো, সম্পর্কে ফাটল ধরাতে ইগোই যথেষ্ট”

উৎসা মনোযোগ দিয়ে ভাবতে বসলো। তানজিলার কথা একটাও মিথ্যা না। যা বলছে সবই সত্যি। আগে থেকেই ওর ইগো একটু বেশি। এই ইগোর জন্য কতো জনের সাথে ফ্রেন্ডশিপ, সম্পর্ক খারাপ হয়েছে তার ইয়াত্তা নেই। কিন্তু উৎসা সেগুলো পাত্তা দেয়নি। তবে এবারের সম্পর্কে ছেলে খেলা নয়। উৎসা অবচেতন মনে ভাবলো,
“আচ্ছা ওর এই ইগোর জন্য যদি মেহরাব ওকে ছেড়ে চলে যায় তখন?”

নিজের ভাবনায় নিজেই আঁতকে উঠলো উৎসা। না! না! মেহরাব এটা করতেই পারে না। মেহরাব ওকে ছেড়ে যেতেই পারে না। কখনোই না। কিন্তু যেতে কতক্ষন? কয়েকদিন যাবত তো দেখাই দিচ্ছে না। উৎসা মনে মনে ভাবলো আজকে বাসায় যেয়েই মেহরাবকে কল করবে। অতঃপর সরি বলে সব ঠিক করে নিবে। নিজের ভাবনায় নিজেই হেসে উঠলো। মনে মনে বলল,
“আমায় ইগনোর করা তাই না মিস্টার লুচু? দাঁড়ান দেখাচ্ছি মজা! ইগনোর করার শাস্তি তো আপনাকে পেতেই হবে। জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ”

#চলবে?