অপ্রিয় মাস্টার পর্ব-০১

0
342

#অপ্রিয়_মাস্টার
#সূচনা_পর্ব
#লেখিকা_ফারহানা_নিঝুম

‘ এখন কান ধরো,এই মূহুর্তে।’

অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকায় কন্ঠ, ভীষণ কান্না পাচ্ছে তার। কিন্তু কাঁদতে পারছে না,এত এত স্টুডেন্টের মাঝে এভাবে অপমান করছে তাদেরই প্রফেসর তূর্য খান।তার তো কোনো দোষই নেই এসবের মধ্যে, কিন্তু তবুও শা’স্তি তাকেই পেতে হচ্ছে।
ঘন্টা খানেক আগের কথা,ক্লাস রুমে বসে ছিল রিয়া ও কন্ঠ।হুট করেই ক্লাসে তাহিয়া এসে বলল।

‘ গাইস জানি না কি হয়েছে বাট তূর্য স্যার আসছে কপালে কিন্তু দুঃখ আছে বুঝে নাও।’

সোহা একটু বিরক্ত নিয়ে জিজ্ঞেস করে।
‘ নো ইয়ার কন্ঠ কে ডেকে পাঠিয়েছে,ও না কী চিঠি দিয়েছে তনিয়া এটাই বলল।’

সবাই আড় চোখে তাকায় কন্ঠের দিকে, ওদিকে ও কিছুই বুঝতে পারছে না কিসের চিঠি?দু তিনটে শুকনো ঢুক গিলে রিয়া।

ব্ল্যাক শার্ট তার উপর সুট পরে পকেটে হাত গুজে টান টান হয়ে দাঁড়ায় তূর্য খান, লোকটাকে দেখা মাত্র বুকের ভেতর ধ’ড়’ফ’ড় করতে শুরু করেছে কন্ঠের।কী জানি কি করেছে সে? কিন্তু যত দূর মনে পড়ছে কিছুই তো করেনি।ক্লাস রুমের প্রায় সব স্টুডেন্টের মধ্যমনি এখন তারা দুজনেই, সবাই উৎসুক হয়ে আছে জানার জন্য ব্যাপারটা কী? ওদের এক সাইডে তাহিয়া,রিয়া সোহা দাঁড়িয়ে আছে।
পকেট থেকে একটি চিরকুট বের করে এগিয়ে দেয় কন্ঠের দিকে তূর্য , চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে কন্ঠ। রাগান্বিত কন্ঠে বলে উঠে তূর্য।

‘ ধরো?’

কন্ঠ কাঁপা কাঁপা হাতে চিরকুটটা নিজের ডান হাতে নেয়। তূর্য আগের ন্যায় বলে উঠে।

‘ কী লেখা আছে এতে পড়ো?’

জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় কন্ঠ,তাকে পড়তে হবে? আশ্চর্য তো বেছে বেছে তাকেই সিলেক্ট করতে হলো এটা পড়ার জন্য? কন্ঠের কোনো ভাবান্তর নেই তা দেখে কিছুটা চিৎকার করেই বলে উঠে তূর্য।

‘ পড়তে বলেছি?পড়ো এটা।’

তূর্যের এহন ধমক খেয়ে চোখ ভরে গেল কন্ঠের তবুও কাঁপা হাত দিয়ে চিরকুট খুলে বড় সড় ধা’ক্কা খায়।এটা তো তারই লেখা চিঠি কিন্তু সে তো আরেকজনের জন্য লিখেছে।

‘ শুরু করো।’

থমকে যায় কন্ঠ,এটাতে যা যা লিখা আছে সেগুলো পড়লে তার আর মানসম্মান থাকবে না। অশ্রুসিক্ত নয়নে আবার তাকায় কন্ঠ তূর্যের দিকে, কিন্তু তূর্য একটু মায়া বা সহানুভূতি প্রকাশ করল না।চোখের ইশারায় বলল চিরকুট পড়তে। চিরকুট পড়তে গেলেই গলা ধরে আসছে কন্ঠের,কি করে পড়বে এটা? কিন্তু যতক্ষণ না সে চিরকুট পড়বে তার আগে এই প্রফেসর তাকে ছাড়বে না এটা বুঝতে কারো বাকি নেই। অবশেষে সময় নষ্ট না করে চিরকুট পড়তে লাগলো কন্ঠ।

” অপ্রিয় মাস্টার

কেমন আছেন? আমি জানি আপনি ভালো আছেন তবুও জিজ্ঞেস করলাম আর কী?
আচ্ছা আপনি এত্তো সুন্দর কেন বলুন তো?
এত্ত সুন্দর হওয়ার কী কোনো প্রয়োজন ছিল?
‌ ওই যে গুল মুখশ্রী,যা দেখলে আমার অন্ত’রা’ত্মা ঠান্ডা হয়ে যায়। আচ্ছা আপনি তো মাস্টার সব কিছু জানেন আর সবটাই বুঝেন, তাহলে কেন আমার মন বুঝেন না?এই যে আমার বুকের বা পাশে হৃদ যন্ত্রটা আপনাকে দেখলেই ধ’ড়’ফ’ড় করতে শুরু করে এগুলো কী আপনার চোখে পড়ে না? পঁচা মাস্টার একটা।যাই হোক আমার এটুকু বলার ছিল যে আমার মনে আপনার জন্য এক আকাশ পরিমাণ অনূভুতির উদয় হয়েছে,যার নিবারণ শুধু আপনিই করতে পারবেন। ভালোবাসি অপ্রিয় মাস্টার।

ইতি
আপনার বউজান কন্ঠ।”

পড়া শেষ হতেই উপস্থিত সব স্টুডেন্ট হুঁ হুঁ করে হেসে উঠল, চোখে পানি চিকচিক করছে কন্ঠের।হাত থেকে ছু মে’রে চিরকুট নিয়ে নিল তূর্য,থমক দিয়ে বলে উঠল।

‘ কলেজে কী এসব করতে আসো?হাউ ডেয়ার ইউ? তোমার এত্ত সাহস হলো কী করে প্রফেসর তূর্য চৌধুরী কে চিঠি লিখেছে?’

নুইয়ে থাকা মাথা আরও নুইয়ে নিল কন্ঠ, এখানে সত্যি তার কোনো দোষ নেই এটা তো ওর বো,,,,

কন্ঠের ভাবনার মধ্যে খানে তূর্য আবার থমকের স্বরে বলে উঠে।

‘ এখন কান ধরো এই মূহুর্তে।’

আশেপাশে এক নজর তাকায় কন্ঠ, সবাই ওকে নিয়ে মাতামাতি করছে,অনেকে আবার মুখ চেপে হাসছে।সব কিছু বি’ষা’ক্ত তি’রের ন্যায় বুকে এসে বাঁধছে কন্ঠের। অবশেষে তূর্য সবার সামনে কানে ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখে কন্ঠ কে, এমন অপমানিত হবে কন্ঠ বুঝেনি।বোকা মেয়ে কন্ঠ কে ওভাবে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভীষণ খারাপ লাগছে রিয়ার,আসলে ভুল কিন্তু ওর কিন্তু মাঝখান থেকে ফেঁ’সে গেছে বোকা কন্ঠ।

‘ আজ সারাদিন তুমি এই মাঠেই কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকবে বলে দিলাম গট ইট?যদি আমার কথার নড়চড় হয় তাকে খুব খারাপ হবে।’

কথাটা বলেই বড় বড় পা ফেলে অফিসরুমের উদ্দেশ্যে রওনা দিল তূর্য চৌধুরী, কন্ঠ ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। কলেজে পা রাখার পর থেকে দেখে আসছে এই প্রফেসর কে, ওদের শুধু ছাত্রী আর শিক্ষকের সম্পর্ক নয়। সম্পর্কে বেয়াই ও বিয়ান হয়, তূর্য -এর ছোট চাচার ছেলে সাফিনের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে কন্ঠের মামীর মেয়ে নীলার সাথে।

নবীন বরণ অনুষ্ঠান চলেছে কলেজে,সবে মাত্র কলেজে পা রেখেছে কন্ঠ,রিয়া।
সকাল সকাল ঘুমে কাঁদা হয়ে আছে কন্ঠ আর তার সাথে রিয়াও। দুজনেই একই রুমে থাকে, হঠাৎ তড়িৎ গতিতে ঘুম থেকে উঠে বসে কন্ঠ।
দরজায় কড়া নাড়ছে আনিকা আহমেদ, শুকনো ঢুক গিলে নিল কন্ঠ। দরজা খোলা মাত্র যেন আনিকা আহমেদ তাকে মা’রতে আসবেন, কিন্তু দরজা না খুলেও তো কোনো উপায় নেই। অবশেষে কিঞ্চিৎ ভ’য় নিয়ে গিয়ে দরজা খুলে দিল কন্ঠ, হনহনিয়ে রুমে ঢুকে পড়ল আনিকা আহমেদ।অ’গ্নি দৃষ্টি নি’ক্ষে’প করে কন্ঠের দিকে,মাথা নুইয়ে নেয় কন্ঠ।

আনিকা আহমেদ ক্ষিপ্ত কন্ঠে প্রশ্ন করে কন্ঠ কে।

‘ তুই এখনো পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিস?এই তুই যে আজ কলেজে যাবি তা কী মাথায় আছে?যাওয়ার আগে বাড়ির এত্ত কাজ কে করবে?’

ভয়ে গুটিসুটি হয়ে দাঁড়িয়েছে কন্ঠ,আনিকা আহমেদের চেঁচামেচি শুনে ঘুম থেকে উঠে পড়ে রিয়া।উঠেই নিজের মা কে এভাবে চেঁচাতে দেখে বিরক্ত প্রকাশ করছে সে।আনিকা আহমেদ কন্ঠের কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখে রাগান্বিত হয়ে আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই রুমে প্রবেশ করে তনয়া আহমেদ।

” আহা ছোট সকাল সকাল শুরু করে দিলি তো মেয়েটার সাথে?”

একটু দমে গেল আনিকা আহমেদ, তবুও আড় চোখে তাকাচ্ছে কন্ঠের দিকে।রিয়া বিছানা থেকে উঠে তনয়া আহমেদ কে জড়িয়ে ধরে বলল।

“‌দেখো না চাচী মা সকাল সকাল এসেই আমাদের এত্ত সুন্দর ঘুম নষ্ট করে দিয়েছে।”

তনয়া আহমেদ রিয়ার গালে হাত রেখে বলে।

” তুইও না ওদের সাথে কেন ঝগড়া করছিস? আমিই তো কন্ঠ কে বললাম একটু রেস্ট করে নিতে,ও তো সেই সকালে উঠেছিল। আজকে ওর কলেজের প্রথম দিন তাই আমিই বললাম যাতে আজ ও রেস্টে থাকে।”

মুখ বাঁকিয়ে নেয় আনিকা আহমেদ, জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় কন্ঠ,বড় মামী তার জন্য এভাবে মিথ্যা কথা বলছে?ও তো আজকে উঠতেই পারেনি। প্রথম দিন কলেজের তাই কাল রাতে প্রিপারেশন নিয়ে রাখতে রাখতে এত দেরী হয়ে গেছে। চোখের ইশারায় চুপ থাকতে বলে তনয়া আহমেদ কন্ঠ কে।আনিকা আহমেদ আর অপেক্ষা করলেন, রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন।হাফ ছেড়ে বাঁচলাম এমন অবস্থা কন্ঠ।

” যা যা দুজনে গিয়ে তৈরি হয়ে নিচে এসে কিছু খেয়ে নে।”

কন্ঠ জড়িয়ে ধরল তনয়া আহমেদ কে।

” থ্যাংক ইউ বড় মামী।”

” পাগলী।”

ড্রয়িং রুমের খাবার টেবিলে বসে আছে আহাদ আহমেদ,সাহাদ আহমেদ এবং সাহাদ আহমেদের বড় ছেলে তুফায়েল আহমেদ।

” কই গোঁ আজকে কী আর চা টা পাবো না?”

রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এলো আনিকা আহমেদ,হাতে তার চায়ের ট্রে।হাতে হাতে সবাই কে চায়ের কাপ তুলে দিলেন আনিকা আহমেদ,আহাদ আহমেদ আনিকা কে জিজ্ঞেস করলেন।

” কী ব্যাপার আনিকা? তুমি চা দিচ্ছ যে? তোমার আপা কোথায়?”

আনিকা আহমেদ নাক মুখ কুঁ’চকে বলে।

” আপা তো ওই কন্ঠের কাছে আছে।”

কন্ঠের কথা শুনে চোয়াল শক্ত করে নিলেন আহাদ আহমেদ।স-জোরে ডাক দিলেন।

‘ তনয়া?তনয়া কোথায় তুমি?”

তনয়া আহমেদ স্বামীর ডাক শুনে তড়িৎ গতিতে ছুটে আসেন ড্রয়িং রুমে, তী’ক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।

” কী হয়েছে?”

আহাদ আহমেদ কিছুটা রাগ মিশ্রিত কন্ঠে বলে উঠেন।

” আমরা যে অফিস যাবো সে খেয়াল কী আছে তোমার? সকাল সকাল কই আমাদের খেতে দেবে তা না করে কন্ঠের কাছে দৌড়াদৌড়ি করছো কেন?”

হাসি মুখ মূহুর্তের মধ্যে চুপসে গেল আনিকা আহমেদের,ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো এক রাশ দীর্ঘ শ্বাস।উনি আর কথা বাড়ালেন না, রান্না ঘরে চলে গেলেন খাবার নিয়ে আসতে।
সাহাদ আহমেদ ভাইয়ের এই আচরণে বিরক্ত প্রকাশ করেন,যত যাই হোক কন্ঠ তো ওদের নিজের ছোট বোনের মেয়ে,তার সঙ্গে এমন আচরণ করা কী ঠিক?

” ভাইয়া এটা কিন্তু তুমি ঠিক করছো না, কন্ঠ তো আমাদের বাড়ির একজন সদস্য। তাহলে সবাই ওর সঙ্গে এমন ব্যবহার করলে ওই ছোট্ট মেয়েটার মনের উপর দিয়ে কী যাবে ভাবতে পারছো?”

আহাদ আহমেদ আগের ন্যায় বলে উঠেন।

“‌দেখ‌ সাহাদ তুই অন্তত আমাকে বোঝাতে আসিস না একদমই, জানি না কেন নাহিদা নিজের মেয়ে কে আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে চলে গেল?”

তপ্ত শ্বাস ফেলে সাহাদ আহমেদ, সিঁড়ির কাছে দাঁড়িয়ে সবটা শুনে কন্ঠ, চোখের কোণে চিক চিক করছে অশ্রু ঘাড়ে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে পিছন ফিরে তাকাল।রিয়া দাঁড়িয়ে আছে,হুট করে তাকে জড়িয়ে ধরে বলে।

“‌ চাচার কথায় কিছু মনে করিস না বোকা কন্ঠ আমার।”

অধর টেনে হাসে কন্ঠ, অতঃপর রিয়া কে জড়িয়ে ধরে বলে।

” কিছু মনে করার আগেই তো তুই এসে মন থেকে সব খারাপ লাগা উধাও করে দিলি।”

” ঠিক আছে এখন চল আজকে তো কলেজের প্রথম দিন রেডি হতে হবে।”

রিয়া কন্ঠ কে নিয়ে আবার রুমে দিকে ফিরে গেল।


বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে আছে তূর্য, গায়ে কিছুই নেই। সাদা কম্বল জড়িয়ে আছে।দরজায় কড়া নাড়ছে অহনা খান।

” তূর্য? তূর্য বাবা উঠে পড়।সহিতা এসেছে। তূর্য?”

বিছানা থেকে উঠে দরজা খুলে দেয় তূর্য, ভেতরে আসেন অহনা খান।

” কী রে তুই এখনও বসে আছিস যে?সহিতা তো এসে গেছে।”

তূর্যের কোনো ভাবান্তর নেই,সে আলমারি থেকে ট্রাউজার নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।
বিরক্ত হলেন অহনা খান,ছেলের মতগতি কিছুই আন্দাজ করতে পারেন না উনি।

ফ্রেশ হয়ে একে বারে কলেজে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়ে। হাতে আছে কিছু ফাইল,আজ কলেজে ফার্স্ট ইয়ারের নবীন বরণ অনুষ্ঠান তাই তাকে থাকতে হবে। অবশ্য কলেজ তার পরিচিত আঙ্কেলের , আমেরিকা থেকে পড়াশোনা করে আসার পর আঙ্কেল নাহিদ অনেক রিকোয়েস্ট করেছে তাকে ওদের কলেজে জয়েন করতে। কলেজের প্রায় সব ফ্যাসিলেটিস পায় সে।

সোফায় বসে অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছে সহিতা,কখন তূর্য আসবে তার সাথে আজকে ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল। প্রায় দু মাস ধরে তাকে বলেছে ভালোবাসে, কিন্তু তূর্যের ভাবান্তর নেই। অবশ্য তূর্য এখনই এসব প্যারা নিতে চাইছে না, তবুও অনেকটা চেষ্টার পর রাজী হয়েছে তূর্য।কাল রাতে অনেকক্ষণ সময় নিয়ে মানিয়েছে তূর্য কে আজ শপিং এ যাবে ওরা।ওর ভাবনার মাঝে সিঁড়ি থেকে নেমে আসে তূর্য, ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠে হাসি।
সহিতা কে দেখে গম্ভীর মুখ খানি আরো একটু গম্ভীর করে নেয়।

” এ কী এত্ত সকাল সকাল তুমি?”

তূর্যের প্রশ্ন শুনে হকচকিয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়াল সহিতা।

” তূর্য তুমি কী ভুলে গেলে আজ আমাদের শপিং এ যাওয়ার কথা ছিল?”

কপাল চুলকায় তূর্য, কাল কথায় কথায় হ্যা বলে দিয়েছিল তূর্য। কিন্তু এখন তার পক্ষে যাওয়াটা একদমই সম্ভব নয়।

” আসলে আমাকে কলেজে যেতে হবে সহিতা,সো আজকে শপিং এ যাওয়া হবে না প্লিজ।”

মূহুর্তের মধ্যে মুখের হাসি কর্পূরের ন্যায় উবে গেল সহিতার। তূর্য এক নজর হাতের ওয়াচের দিকে তাকিয়ে দেখে নেয়, এরপর বেরিয়ে যায়।সহিতা মুখ গোমড়া করে বসে পড়ল আগের জায়গায়।কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিল শাহা খান,উনি মুখ বাঁকিয়ে রান্না ঘরে গিয়ে বলেন।

” আপা তোমার ছেলে দেখছো কি ভাবে সহিতা কে ইগনোর করছে?”

শাহা কে দেখা মাত্র কপাল কুঁচকে নেয় অহনা খান।
শাহা আবারও বলে।

” কয় দিন পর ওদের এংগেজমেন্ট আর এখন ওর এমন অবস্থা? আচ্ছা আধেও কী বিয়েটা হবে?”

এবার কিছুটা বিরক্ত হন অহনা খান, শক্ত কন্ঠে বলে উঠেন।

” না হলে না হবে, যদি আমার ছেলে বিয়ে করতে না চায় তাহলে হবে না বুঝতে পারলে? তুমি বরং নিজেকে নিয়ে ভাবো।”

হাতের চামচ শব্দ করে রেখে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে গেল অহনা খান।

চলবে…………. ✨।