অপ্রিয় মাস্টার পর্ব-২৬+২৭

0
159

#অপ্রিয়_মাস্টার
পার্ট [২৬]
#লেখিকা_ফারহানা_নিঝুম

(কঠোর ভাবে প্রা’প্ত বয়স্ক এবং মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত।)
আনিকা আহমেদ সোফায় বসে আছে , ওনার পাশে এসে বসেছে সাহাদ আহমেদ।
“কী গোঁ হঠাৎ এভাবে বসে আছো যে?”
আনিকা আহমেদ মন খারাপ করে বলে।
“কত দিন হলো তোমার ছেলেটা একবারের জন্যও আমার সাথে কথা বলেনি। ফোন করেছে কিন্তু কথা বললো না আমার সাথে।”

সাহাদ আহমেদ ফিক করে হেসে দিলেন, স্ত্রী তাই সেই আগের মতো অভিমানী রয়ে গেলো।
“আচ্ছা এই জন্য রেগে আছো?”

আনিকা আহমেদ মলিন মুখে বলেন।
“রাগ নয়,ছেলেটা কে অনেক দিন তো হলো দেখি না। মেয়েটার সাথে কথা হলেও ছেলেটার সাথে তো হয়ই না।”

সাহাদ আহমেদ কিছু বলতে যাবেন তার পূর্বে আহাদ আহমেদের ফোন আসে। জরুরী এক মিটিং আছে তাদের বিকেল তিনটার দিকে, যাওয়ার জন্য তলব করেছে।
সাহাদ আহমেদ আনিকা কে বিদায় জানিয়ে বেরিয়ে পড়লো,আনিকা আহমেদ একাকী বসে রইল। ওদিকে তনয়া আহমেদ দুজনের জন্য দু কাপ চা এবং মুড়ি মাখা নিয়ে আসে।
“এই নে ছোট, এগুলো খা। তাহলে মন ভালো হয়ে যাবে।”

চা এবং মুড়ি মাখা দেখে বেশ খুশি হয় আনিকা আহমেদ।
“তুমি এসব করলে? আমাকে তো ডাকতে পারতে!”
“এসব বাদ দে,চল দু’জন মিলে গল্প করি আজ।”

আনিকা হেসে সম্মতি জানালো।

পার্কের এক কোণে বসে আছে রিয়া, কারো জন্যই অপেক্ষা করছে সে।
“কতক্ষণ হয়ে গেলো আসছে না কেন?”

প্রায় আধঘন্টা ধরে অপেক্ষা করছে রিয়া, অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ভেঙ্গে দিল উপস্থিত হয় তারিফ। ওকে দেখে অধরে হাসি লেপ্টে গেল রিয়ার।
“এত দেরী কেন?”

তারিফ ফুস করে শ্বাস টেনে বলে।
“আর বলিস না রাস্তায় কত জ্যাম।”
“আচ্ছা ঠিক আছে চলো যাই।”
“হুম চল।”

রিয়া তারিফের হাত ধরে এগিয়ে যেতে থাকে, তৎক্ষণাৎ দূরে দাঁড়িয়ে সবটা দেখছে সোহা আর তাহিয়া।
তাহিয়া সোহা কে ধাক্কা দিয়ে বলে।
“এই এটা তো রিয়া আর তারিফ তাই না!”

সোহা সম্মতি জানিয়ে বললো।
“হ্যাঁ ওরাই তো দেখছি, ব্যাপার টা কী বলতো?”
“জানি না, তবে আমাদের বাকিদের সাথে কথা বলতে হবে।”
“ঠিক বলেছিস।”

ওদিকে রিয়া আর তারিফ ইতিমধ্যেই একটা অটো রিকশা ধরে নিজেদের গন্তব্যের দিকে চলে যায়।
_______________
আজ কলেজে যায়নি কন্ঠ, তাকে বাড়ি সামলাতে হবে।অহনা খান এবং শাহা খান বাড়িতে নেই।ওরা দু’জন মাজারে গিয়েছে, ওখানে গরিবদের আজ দুপুরে ওরা খাওয়াবে।সেই ব্যবস্থা করতে গিয়েছে।
বাড়িতে কেউ থাকতে পারবে না,তাই কন্ঠ থেকে যায়।
পুরো বাড়িতে একা আছে কন্ঠ, অল্প রান্না করে নেয় সে। রান্না শেষে বেসিনে হাত ধুয়ে বের হয় সে।সদর দরজা বন্ধ করে নিজের ঘরের উদ্দেশ্যে দুতলায় যেতে লাগে। কিন্তু হঠাৎ উপর থেকে কিছু শব্দ শুনতে পায় সে।
“কী হলো?ওইটা কিসের শব্দ ছিল?”

মনের মধ্যে ভয় কাজ করছে কন্ঠের, দরজা বন্ধ থাকা সত্ত্বেও কেউ কী করে ভেতরে আসতে পারে?
উপরের দিকে একপা দু’পা করে উপরে যায় সে, শব্দটা নিজের ঘর থেকেই শুনতে পাচ্ছে।ভয় ভয় বলে উঠে।
“কে আছেন ভেতরে?”আমি জিজ্ঞেস করছি কে ভেতরে?”

আকস্মিক কেউ হেঁচকা টান দিয়ে রুমের ভেতরে টেনে নেয় কন্ঠ কে, আঁ’তকে উঠে কন্ঠ। চেঁচিয়ে উঠলো সে।
“কে কে ছাড়ুন আমায়?সরে যান।”
“পাগলী আমি তূর্য,এই শান্ত হও।”

কন্ঠ শান্ত হতে পারলো না,চোখ মুখ খিঁচিয়ে বন্ধ করে নেয়। তূর্য ব্যাপার টা বুঝতে পেরে আলগোছে জড়িয়ে ধরে তাকে।
“জান, আমি তূর্য।”

কন্ঠ বার কয়েক শুকনো ঢুল গিলে নেয়।
“স্যার আপনি! আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।”

তূর্য কন্ঠের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে।
“রিল্যাক্স।”

তূর্য কন্ঠ কে বিছানায় বসলো,খানিকটা শান্ত হয় কন্ঠ।নাক টেনে বলে।
“এমন কেন আপনি? এভাবে ভয় দেখালেন কেন?”

তূর্য ফট করে কান ধরে ফেলে।
“স্যরি স্যরি,ভুল হয়েছে আমার। আমি কি জানতাম আমার বউ টা এত ভয় পায়?”
“যান আপনার সাথে কথা বলব না।”

কন্ঠ উঠে গেলো বিছানা থেকে তৎক্ষণাৎ তূর্য তাকে টান দিয়ে নিজে কোলে এনে বসায়।
“কোথায় যাও?”

নে’শা লো চোখে তাকিয়ে আছে তূর্য, কন্ঠ তূর্যের চিবুকে অধর ছুঁইয়ে বলে।
“চলে যাচ্ছি, আপনি আমাকে কষ্ট দেন খালি।”
তূর্য নিরবে হাসলো।
“আজ সব কষ্ট দূর করে দেবো।”

কথাটা বলেই কন্ঠ কে বিছানায় ফেলে দেয় তূর্য,ওর উপর চড়ে বসে সে।
” দেবো না কিছু।”
“জোর করে সব নিয়ে নেবো।”

তূর্যের এহেন কথায় ঘাবড়ে। কন্ঠ বিছানায় শুয়ে আছে, তূর্য শার্ট খুলে উন্মুক্ত হয়ে দাঁড়ায় তার সামনে।
বুকের ভেতর দ্রিম দ্রিম শব্দ হচ্ছে, আবছা আলোয় লোকটাকে দেখেছে। কিন্তু আজ এভাবে সামনাসামনি দেখতে বুক কাঁপছে তার।
তূর্য তৎক্ষণাৎ কন্ঠের উপর চলে আসে,কপালে গাঢ় চুম্বন এঁকে দেয়।
“আপনি অদ্ভুত সুন্দর স্যার।”

কথাটা ফিসফিস করে বলে উঠে কন্ঠ, তূর্য কন্ঠের কানের লতিতে হাল্কা করে কা’ম’ড় দিয়ে বলে।
“আমার থেকে আপনি একটু বেশি সুন্দর।”

ব্যথায় কঁ’কিয়ে উঠলো কন্ঠ।
“ব্যথা লাগলো।”
“ইস্,আরেকটু দেই।”

কন্ঠ নাক ফুলালো, ধাক্কা দিয়ে তূর্য কে বিছানায় ফেলে উপরে উঠে বসে। খানিকটা নিচু হয়ে হাত দুটো দুপাশে চেপে ধরে বলে।
“এবার আমি দেবো।”

কন্ঠ তূর্যের ছাপ দাড়ি যুক্ত গালে কা’ম’ড়া’চ্ছে।ব্যথা পেলেও প্রকাশ করে না তূর্য,তার শান্তি লাগছে প্রচুর। একটা সময় পর কন্ঠ তূর্যের বুকে হাম’লে পড়ে। পাগলের মতো নিজের অধর ছুঁইয়ে দেয়। এক সময় ফের কন্ঠ তূর্যের বলিষ্ঠ দেহের নিচে চাপা পড়ে যায়।
“ফোনের যা বলেছি আবার বলো।”

কন্ঠ তূর্য কে কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
“আমি আপনাকে ভালোবাসি।”
“আবার।”

কন্ঠ ফিক করে হেসে উঠলো।
“আমি আপনাকে ভালোবাসি, আমি আপনাকে ভালোবাসি, আমি আপনাকে ভালোবাসি।”
“আমি ভালোবাসি জান, ভীষণ ভালোবাসি।”

দুইটি দেহ মন আত্মা আরো একবার আদিম খেলায় ম’ত্ত হয়ে উঠে।

“আপনি কিন্তু বললেন না কিছু আমায়?”

তুফায়েল ল্যাকেজ গুছিয়ে রাখছে,অরিন ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে তার জিনিস গুলো গুছিয়ে ফেলেছে সে।অরিন কিছুই বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে?তাই প্রশ্ন করে তুফায়েল কে।সে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলল।
“কিছুক্ষণ পর আমাদের ফ্লাইট, তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নাও।”

কথাটা বলেই যেতে নেয়,অরিন তাকে থামিয়ে বলে।
“আপনি আমাকে আমার কথার উত্তর দেন নি!”

ফুস করে শ্বাস টেনে নেয় তুফায়েল।
“ফ্লাইটে টাইম পাস করার জন্য তো কিছু চাই ।তখন সব বলব।”

অরিন মলিন মুখে বলে।
“আমার খুব খিদে পেয়েছে।”

তুফায়েল শান্ত দৃষ্টিতে তাকালো তার দিকে।
“একটু অপেক্ষা করো, খাবার নিয়ে আসছি।”
“আচ্ছা।”
___________
সহিতা বেশ সেজে গুজে বেরিয়ে গেল, কোথাও একটা যাচ্ছে সে?সে আর যাই করুক অন্তত তূর্য কে ছেড়ে থাকতে পারবে না। ফোন বের করে কাউকে কল করে সহিতা।
“হ্যলো,কই আপনি?যা বলেছি করেছেন?”

অপাশ থেকে আগুন্তক বলে উঠে।
“হ্যা ম্যাম সব ঠিক আছে।”

সহিতা বেশ আনন্দিত হয়।
“এইবার বেশ হবে, শ’য়তা’ন মেয়ে আমার তূর্য কে নিয়ে টানাটানি করে।”

চলবে………..✨।

#অপ্রিয়_মাস্টার
পার্ট [২৭]
#লেখিকা_ফারহানা_নিঝুম
(কঠোর ভাবে প্রা’প্ত বয়স্ক এবং মুক্তমনাদের জন্য উ’ন্মু’ক্ত।)
“আমার প্রথম একবার বিয়ে হয়েছিল, বলতে পারো ভুল মানুষের সঙ্গে। জানো সে তাকে ছুঁতে পর্যন্ত দেয়নি, ব্যাপার টা হা’স্যক’র তাই না!”

কথাটা বেশ তা’চ্ছিল্যের সঙ্গে বলে উঠে তুফায়েল। অরিন তুফায়েলের কথা শুনে হতবাক।তুফায়েল নিচের তাকিয়ে আবারো বলতে শুরু করে।
“সুনয়না নাম তার, অসম্ভব সুন্দর দেখতে। আমার মা আনিকা আহমেদ পছন্দ করেছিল তাকে।ওকে যেদিন দেখেছিলাম সেদিন প্রেমে পড়েছিলাম।ও নাকি আমাকে ভালোবাসতো, সবার সম্মতিতে আমাদের বিয়ে হয়।”

কিয়ৎক্ষণের জন্য থামে তুফায়েল। অরিন অকপটে জিজ্ঞেস করে।
“তারপর?”

তুফায়েল স্ফীত হেসে বলল।
” বাসর ঘরে আমাকে বলেছে তাকে যেনো না ছুঁই, আমার নাকি এখনও সেই অধিকার হয়।”

অরিন আশ্চর্য হয়ে বলে।
“কীঈ? আপনি তো স্বামী, তাহলে কে ছুঁতে পারবেন না!”
“ও আমাকে সেদিন নানা যুক্তি দেখিয়েছে, তুমি জানো অরিন আমি অনেক চেষ্টা করেছি ওকে খুশি করতে। কিন্তু ওর মন পাইনি, আমার মা কত বার তাকে বলেছি তোমার পছন্দ করা মেয়ে কোনো কিছুতেই খুশি হয় না। একদিন সকালে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল সুনয়না,ও মাঝে মাঝেই এটা সেটার জন্য বের হয়। কিন্তু সেদিন যে গিয়েছিল আর ফিরেনি। আমি এখনো ভুলতে পারিনি সুনয়না কে।”

অরিন নিরবে অশ্রু ফেলে, তাকে যখন ভুলতে পারেনি তাই তার সাথে জড়িত হলো কেন?
“তুমি কী ভাবছো আমি জানি, সুনয়না কে ভালোবাসা সত্বেও কেন তোমার সাথে জড়ালাম তাই তো?”

অরিন উপর নিচ মাথা নাড়ল।
“তুমি জানো তোমার চঞ্চলতা কে ভালোবেসে ফেলছি আমি,তোমাতে আটকে গেছি। এখন আমার একটা ভয় লাগছিল, কোথাও আমি বিবাহিত জেনে ছেড়ে চলে যাবে না তো? আমি একবার হেরেছি, সহ্য করতে পারব না এবার।”

অরিন নিশ্চুপ, কোনো কথাই বলছে না সে। ওদিকে আশেপাশে সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। ফ্লাইট কাল ভোর বেলায় ল্যান্ড করবে।তুফায়েল অরিনের হাত শক্ত করে ধরে।
“প্লিজ অরিন রাগ করো না, আমি সত্যি তোমাকে কাছে রাখতে এসব করেছি।”

অরিন হাত ঝাড়া দিয়ে ছাড়িয়ে নেয়।
“ওনাকে ভালোবেসেন তাই না? তাহলে আমাকে বিয়ে করার মানে কী!”

ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো অরিন,তুফায়েল অরিন কে টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসে।আলতো করে ওর অধর আঁ’ক’ড়ে ধরে তুফায়েল,হাত ঢুকিয়ে দেয় চুলের মধ্যে।অরিনের শ্বাস ভারী হয়ে আসছে, কিন্তু তুফায়েল তাকে ছাড়ছে না।এক সময় তুফায়েল অরিনের কো’ম’ড় টেনে জড়িয়ে ধরে, কিঞ্চিৎ দু’জনে আলাদা হয়।জোরে জোরে শ্বাস টানতে থাকে অরিন, কিন্তু তুফায়েল তাকে ছাড়তে প্রস্তুত নয়।টেনে আবার অমৃত সুধা পান করে।একটা সময় অরিন তার শরীরের ভার ছেড়ে দেয়,তুফায়েলের বুকে হাত রাখে। দু’জনের মধ্যে এক অনূভুতির উদ্ধত হয়,হুট করেই তুফায়েল অরিনের বুকের মাঝ বরাবর কা’ম’ড়ে দেয়,কঁ’কিয়ে উঠলো অরিন।দু হাতে তুফায়েলের চুল খা’ম’চে ধরলো।
“কী করছেন? আশেপাশে লোকজন আছে!”

তুফায়েল নিজের ঠোঁট কা’ম’ড়ে ধরে, তার মধ্যে ভালোবাসা, কাছে পাওয়ার তীব্র ইচ্ছা।সব দিশেহা’রা করে দিচ্ছে তুফায়েল কে।সে রিতিমত ঘাপটি মে’রে বসে থাকে,অরিন চোখ বন্ধ করে চুপচাপ বসলো। তার কেমন জানি বেশ শীত লাগছে, নিজের জ্যাকেট খুলে অরিন কে জড়িয়ে নেয় তুফায়েল,আনমনেই হেসে উঠে অরিন।
________________
মাঝ রাতে ঘুম থেকে উঠে পড়ে কন্ঠ, প্রচন্ড রকম ভয় হচ্ছে তার। জাপটে জড়িয়ে ধরে তূর্য কে।
“আমার ভীষণ ভয় করছে।”

তূর্য ঘুম ঘুম চোখে তাকায় কন্ঠের দিকে।
“বুকে আসো আমার।”

তূর্য কন্ঠ কে টেনে নেয়, কন্ঠ ঝাপটে ধরে তাকে। তূর্য কন্ঠের কপালে চুমু দিয়ে বলল।
“আমি আছি তো! ভয় কিসের?”

কন্ঠ ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদে বলে।
“স্যার আমার মনে হচ্ছে খাটের নিচে একটা ভূত বসে আছে, আমাকে ডাকছে। আমি সাড়া না দিলে এই বুঝি আমায় টেনে নিচে নিয়ে যাবে।”

তূর্য ফিক করে হেসে উঠলো।
“তাই!”
“হুম,ওই তো আসছে,বাবা গোঁ। বুকে ঢুকিয়ে নিন।”

তূর্য একদম বুকে শক্ত করে চেপে ধরে কন্ঠ কে।
“পাগলী।”
“পাগল।”
“তুমি।”
“নট, আপনি।”
“আচ্ছা ঠিক আছে।”
“নট ঠিক আছে, আপনি পাগল আমি পাগলী ডান ডানা ডান ডান।”

তূর্য এইবারে শব্দ করে হেসে উঠলো।
“আচ্ছা পাগলী। এবার ঘুমম।”
“উঁহু শরীরে ব্যথা।”

তূর্য কন্ঠের কানের লতিতে চুমু দিয়ে বলল।
“সকালে ওষুধ খেয়ে নিলে কমে যাবে।”
“না, একটু হাত বুলিয়ে দেন।”
“কোথায়?”
“এখানে।”

কন্ঠ নিজের পেটে ইশারা করলো, তূর্য মুচকি হেসে নিচু হয়ে অধর ছুঁইয়ে দেয় কন্ঠের পেটে, আবেশে চোখ বুজে নেয় কন্ঠ।

সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে দরজা খোলা মাত্র সাফিন কে দেখে পিলে চমকে উঠে শাহা খান।
“সাফিন! আমার ছেলে।”

শাহা খান সাফিন কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।শাহিন খান দুতলা থেকে নেমে আসেন।
“সাফিন!কখন এলে জানালি পর্যন্ত না।”

সাফিন আর নীলা দু’জনে ভেতরে ঢুকে, দুজনেই সালাম করে শাহা খান এবং শাহিন খান কে।
কন্ঠ নীলা কে দেখে আত্মহারা হয়ে উঠে।
“আপুউউ।”

দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে তাকে।নীলাও প্রায় ছুটে যায়, সাফিন চেঁচিয়ে উঠলো।
“আস্তে নীলা
সবাই অবাক হয়ে সাফিনের দিকে তাকালো,শাহা খান বেশ উৎফুল্ল হয়ে জিজ্ঞেস করে।
“সাফিন,তুই হঠাৎ ওকে আস্তে চলতে বললি কেন?”

সাফিন মুখে হাসি ঝুলিয়ে বলল।
“তোমরা যা ভাবছো তাই-ই, তোমাদের বউমা মা হতে চলেছেন।আর তোমরা দাদা দাদী।”

বাড়িতে নতুন অতিথি আসছে শুনে খুশিতে আ’ত্মহা’রা হয়ে উঠে সবাই। কন্ঠ শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নীলা কে,সে বেশ লজ্জা পায়। ওদিকে মিষ্টির প্লেট নিয়ে আসে অহনা খান।
“দেখি হা কর তো মা।”

নীলার মুখে মিষ্টি তুলে দেয় অহনা খান, সবাই বেশ ব্যস্ত হয়ে উঠে ওদের নিয়ে। এই সবের মধ্যে কন্ঠের বেশ রাগ হয়,সে-ও মা হতে চায়, তাহলে তার বেলাও সবাই কত খুশি হবে!
_________________
অনেক দিন পর কলেজে পা রাখলো কন্ঠ। সবাই ক্যান্টিনে বসে ছিল, কন্ঠ এসে ওদের সাথে যোগদান করে।
“হেই গাইস কী অবস্থা তোদের? ক্লাসে না গিয়ে এখানে?”

কন্ঠ লক্ষ্য করে দেখলো সবার মুখে চিন্তার ছাপ।
“কী হয়েছে তোদের?কী নিয়ে ভাবছিস?”

তারিফ সূক্ষ্ম শ্বাস ফেলে বলে।
“আর বলিস না কন্ঠ, সানের অবস্থা খুব খারাপ।”
“কেন কী হয়েছে ওর?”

তারিফ,সোহা,তাহিয়া,রিয়া সবাই কন্ঠ আস্তে আস্তে সবটা খুলে বলে।সব শুনে চোয়াল শক্ত করে নেয় কন্ঠ। গুরুগম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলো।
“কোথায় আছে ও এখন?”

ক্লাবের এক পাশে বসে আছে সান,হাতে তার ড্রিঙ্কস।
আশেপাশে অনেক আওয়াজ হচ্ছে। কন্ঠ সান কে দেখা মাত্র এগিয়ে গেলো।
কন্ঠ কে দেখে চমকে উঠে সান।
“কন্ঠ তুই!আরে তোরা সবাই এখানে কী করছিস?”

কন্ঠ তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলে।
“আমি ভাবতেও পারিনি তুই এসব করবি?”

সান মাথা নত করে নেয়।
“আমি সত্যি পারিনি রে।”

কন্ঠের প্রচন্ড রাগ হয়,সে না চাইতেই সানের গালে থা’প্প’ড় বসিয়ে দেয়।
“কন্ঠ!”

সোহা কিছু বলতে যাবে তার পূর্বেই কন্ঠ তাকে হাতের ইশারায় থামিয়ে দেয়।সান গালে হাত চেপে ধরে।
“তুই আমাকে,,,
“হ্যা আমি তোকে থা’প্প’ড় দিয়েছি,কী পারলি না তুই?একটা মেয়ে ওভাবে ছেড়ে চলে আসলি, এটা কী সুন্দর করে পারলি। এখন আবার এই যে ছাই পাস খাচ্ছিস, এটাও খুব পারিস কিন্তু নিজের ভালোবাসার মানুষ কে কাছে আনতে পারিস না!”

সান কাঁপা কন্ঠে বলে।
“আমি তো কিছুই করি না ওকে এনে কোথায় রাখবো,কী করব?”

কন্ঠ তাচ্ছিল্য করে বলল।
“ইচ্ছে থাকলে সবই সম্ভব, তোকে আর কিছুই করতে হবে না। এখন যা করার আমিই করব।”

সবাই অবাক হয়ে কন্ঠ কে জিজ্ঞেস করে।
‘কী করবি তুই?”

বাড়ির কলিং বেল বাজা মাত্র দরজা খুলে দেয় একজন বৃদ্ধ মহিলা।
“আপনারা?”

চলবে…………..✨।