#অপ্রিয়_সেই_তুমি
#প্রিয়া_আফরোজ
#পর্ব৫
এতটা কাছাকাছি থাকার ফলে, মায়ার মনে অস্থিরতার সৃষ্টি হচ্ছে, মায়ার ঠোঁট দুটো তরতর করে কাপছে।
তখনই হঠাৎ তুর্য মায়ার ঠোঁট জোড়ার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে।
মায়া ভয় পেয়ে যায়, তাইতো তুর্যর হাত থেকে ছুটতে তুর্যকে জোরে ধাক্কা দিয়ে বসে।
তূর্য অন্যমনস্ক ছিল তাই মায়ার ধাক্কায় কিছুটা পিছিয়ে যায়।
মায়া নিজের দিকে তাকিয়ে, দৌড়ে গিয়ে চেয়ারের উপর থেকে ওড়নাটা এনে নিজের গায়ে জড়িয়ে নেয়। তারপর ওয়াশরুমের দিকে দৌড় দেয়,
উদ্দেশ্য ওয়াশরুমের ভিতরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেওয়া।
কিন্ত কপাল খারাপ হলে যা হয় আর কি, ওয়াশরুমে ঢোকার আগেই তূর্য মায়ার হাত ধরে ফেলল। মায়াও কিন্তু কম যায় না, তূর্য মায়ার হাত ধরার সাথে সাথেই মায়া তূর্যর হাতে কামড় বসিয়ে দিল।
মায়ার সবকটি দাঁতের দাগ তুর্যর হাতের কব্জিতে বসে গেল। তবুও তুর্য মায়ার হাত ছাড়লো না।
কারণ তূর্য জানে হাত ছাড়লেই উড়ে যাবে তার পাখি।
-তূর্য রাগী গলায় বলল এই পুটি মাছের মতো শরীরে এত শক্তি আসে কোথা থেকে?(তুর্য)
-আমার শরীরে শক্তি থাকবে না তো কি আপনার মত বুরোর শরীরে শক্তি থাকবে?(মায়া)
মায়ার কথা শুনে তুর্যর কপাল কুচকে এলো।তূর্য কপাল কুঁচকে নিয়ে মায়াকে জিজ্ঞেস করলো
-তুমি কি কোনো ভাবে আমাকে বুড়ো বলছো? (তুর্য)
-কোনভাবে আবার কি? আমি ডাইরেক আপনাকে বুড়ো বলছি। (মায়া)
-আমার বয়স কত জানো?(তুর্য)
-হুম (মায়া)
-কত? (তুর্য)
-২৮, আর আমার বয়স ১৮। আপনি আমার থেকে গুনে গুনে দশ বছরের বড়, তাই আপনি বুড়ো। (মায়া)
-এটা কোন লজিক হলো?(তুর্য)
-আমার কাছে তো এটাই লজিক। (মায়া)
-আচ্ছা ঠিক আছে মানলাম আমি বুড়ো, কিন্তু তুমি কি জানো আর অল্প কিছু দিনের ব্যবধানে এই বুড়োকে সামলাতে তোমার হিমশিম খেতে হবে। (তুর্য)
মায়া চোখ বড় বড় করে তাকানো তূর্যর দিকে আর বির বির করে বলতে থাকলো হে আল্লাহ এ কেমন নির্লজ্জর হাতে ফেলেছ আমায়, এর মুখে কি কোন কথাই আটকায় না?
তখনই তূর্য বলে উঠলো:-
-আমাকে পেয়েছ বলে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছো নাকি?
-হ্যাঁ হ্যাঁ আমার তো খেয়ে দেয়ে আর কোন কাজ নেই। আপনাকে পেয়ে আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করব, নির্লজ্জের মত উল্টাপাল্টা কথা না বলে আপনি বরং বেরহন এখন এই রুম থেকে। (মায়া)
-আরে কোথায় যাবো? আমি তো আজ সারারাত তোমার সাথে গল্প করবো বলে এসেছি। (তুর্য)
-অনেক হয়েছে গল্প আপনার মতো নির্লজ্জ লোকের সাথে আর কোন গল্প করার ইচ্ছা নেই আমার। আপনি যাবেন না আমি তন্নি আপুকে ডাক দিব? (মায়া)
মায়ার হুমকি শুনে তুর্য একটু ন্যাকা ন্যাকা ভাব করে বলল :-
-ওরে বাবারে আমি তো ভয় পেয়ে গেছি, তন্নি আসলে তো আমাকে মেরে ফেলবে, তাই না?(তুর্য)
মায়া নিজেও জানে যে, তন্নি নিজের বড় ভাই কে কিছুই বলবে না।একটা মাত্র ভাই বলে কথা।
তারপর মায়া বলে ওঠে:-
-আচ্ছা ঠিক আছে আপনি এই রুমে থাকেন আমি তন্নি আপুর রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ছি। (মায়া)
মায়া চলে যেতে নিলে তূর্য হঠাৎই মায়ের হাত চেপে ধরে। তারপর মায়ার দিকে তাকিয়ে বলে:-
-একটা প্রশ্নর উত্তর জানতে এসেছি, আমাকে উত্তরটা দিয়ে দিলে আমি এখনি চলে যাবো এই রুম থেকে। (তুর্য)
-কি প্রশ্ন? (মায়া)
-গত ৮ বছরে যা যা হয়েছে তা নিয়ে কি তুমি আমার উপরে রেগে আছো? (তুর্য)
মায়া সোজা সাপটা উত্তর দিল :-
-না। গত আট বছরে আমার সাথে যা যা হয়েছে তা নিয়ে আমি কখনো আপনার উপরে রাগ করিনি। কারণ এখানে আপনার কোন দোষ ছিল না।
আর এই বিয়েটার কারণে আটটা বছর আপনিও আপনার পরিবারের থেকে দূরে থেকেছেন, কষ্ট আপনিও তো কম পাননি। তবে হ্যাঁ যখন সবকিছু, বুঝতে শিখলাম, তখন অভিমান হয়েছে আপনার উপরে। যখনই মানুষের তিরস্কারের শিকার হতাম তখনই ভাবতাম আপনার কথা। কেন আপনি আমাকে এই সমাজের কিছু মানুষরূপী পশুদের সামনে রেখে চলে গেলেন? যারা কিনা তাদের কথার তীরে আমার ছোট হৃদয়টাকে ক্ষতবিক্ষত করতো প্রতিনিয়ত। (মায়া)
এতক্ষণ মায়ের কথা চুপচাপ শুনে তুর্য এবার বলে উঠলো:-
-তখন আমাদের কারোই সংসার করার বয়স ছিল না।
-আমি কিন্তু একবারও বলিনি আমার সাথে সংসার করেননি কেন, কারন তখন আমার বয়স মাত্র ১০ বছর, ওই বয়সে কি সংসার হয়? কিন্তু পাশে তো থাকতে পারতেন যেভাবে মামনি, বাবাই ও তন্নি আপু ছিল। আপনি ওভাবে চলে না গেলে তো সমাজের লোকেরা আমার দিকে আঙ্গুল তুলতে পারত না।(মায়া)
-ভুলটা আমাদের কারোই ছিল না, পরিস্থিতি আমাদেরকে ভুল জায়গায় দাড় করিয়ে দিয়েছিল।
তবুও আমি নিজের ভুল স্বীকার করি।
আশা করি তুমি আমায় ক্ষমা করে দিবে। (তুর্য)
বলেই তূর্য মায়ার রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে চলে যায়।
মায়া খুব স্বাভাবিক ভাবে দরজা বন্ধ করে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ে।
মায়া জানে যে:-
সত্যি এখানে তুর্যর কোনো দোষ ছিল না। আর মহান আল্লাহতালা যা করেন তা মানুষের মঙ্গলের জন্যই করেন, কারণ তূর্য যদি তখন লন্ডনের পারি না জমাতো, তবে তুর্য এই বয়সে এতটা প্রতিষ্ঠিত হতে পারতো না। এগুলো ভাবতে ভাবতে মায়া ঘুমিয়ে পড়লো
_______________
মাঝখানে কেটে গেছে ১টা দিন, সেদিনে আর তুর্য তেমন একটা মায়ার সম্মুখীন হয়নি। তূর্য এখন মহাব্যস্ত ১মাত্র ছোট বোনের বিয়ে বলে কথা। বিয়ের সমস্ত দায়িত্ব আরাফ খান এবং তূর্যর কাঁধে থাকায় গতকাল তূর্যকে তেমন একটা বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
আজকের দিন টা খান বাড়ির সকলের কাছে খুবই আনন্দমুখর। খান বাড়ির একমাত্র মেয়ের বিয়ে বলে কথা।
খান বাড়ির সকল আত্মীয়-স্বজন গতকালই এসে গেছে।
সেই সাথে চলে এসেছে তুর্যর ফুপিরাও।
এত ব্যস্ততার মধ্যেও এক ফাঁকে তুর্যর বড় ফুপি আতিয়া বেগমকে বলে উঠলেন:-
-মেয়ের বিয়ে তো দিয়ে দিচ্ছো এবার আমাদের ছেলেটার জন্যও ঘরে একটা বউ আনো।
-সে কি আপা? ছেলেকে কয়বার বিয়ে করাবো, ছেলের বউতো আমার ঘরেই আছে। (আতিয়া বেগম)
-সেটাইতো বলছি তোমার ভাইজিকে এবার বিদায় কর তারপর তূর্যর জন্য একটা বউ আনো। আর তোমার ভাইজিকে তো ফেলে দিতে বলছি না। তূর্য সঙ্গে ডিভোর্স করিয়ে ওকেও একটা ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দাও। (পারভিন খান)
-এতকিছুর আর প্রয়োজন হবে না তুর্যও এখন মায়ার সাথে সংসার করতে চায়, তূর্য তো মায়া বলতে পাগল।
(আতিয়া বেগম)
আতিয়া বেগমের মুখে এ কথা শুনে পারভিন খান যেন নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছে না। মনে মনে ভেবে রেখেছিল মায়ার সাথে তূর্য ডিভোর্সটা হলে সে তার ছোট মেয়ে জুইকে তূর্য সাথে বিয়ে দেবে। তূর্য গলায় ঝুলানোর জন্য দুই বছর আগে মেয়েকে লন্ডনে পাঠিয়ে ছিলেন তিনি কিন্তু তার মেয়ে জুই গিয়ে অন্য একটা ছেলের সঙ্গে লিভিং রিলেশনশিপে থাকতে শুরু করে। ৬মাস আগে ছেলেটার সঙ্গে ব্রেকআপ হওয়ার ফলে,জুঁই এখন ফিরে এসেছে।
____________________
আজ তন্নির গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে, মায়া পড়েছে তন্নির কিনে দেওয়া সেই হলুদ শাড়ি টি। পার্লার থেকে মেকআপ আর্টিস্ট এসে সাজিয়ে দিচ্ছে তন্নিসহ তার সকল কাজিনদের, বাদ যায়নি মায়াও, যদিও মায়া প্রথমে রাজি হয়নি, মায়া বার বার বলছিল সে নিজের মতো করে সাজবে। কারন ভারিসাজ তার ভালো লাগেনা, তবু তন্নির জোরাজুরির কাছে হার মানতে হলো মায়ার। মায়া বারবার মেকআপ আর্টিস্ট কে বলছিল :-
-আপু আমাকে ভারী কোন মেকাপ লুক দেবেন না, আমাকে সিম্পল এর মধ্যে একটু সাজিয়ে দিন। (মায়া)
মেকআপ আর্টিস্ট মায়ার কথা অনুযায়ী সিম্পল এর মধ্যেই সুন্দর করে সাজিয়ে দিল।
সন্ধ্যায় নিরবদের বাসা থেকে সবাই এসেছে তন্নীর গায়ে হলুদ মাখাতে, হলুদ শাড়িতে মায়াকে দেখতে একদম পরির মতো লাগছে। মায়ার এই সৌন্দর্য হয়তো বংশগত। আতিয়া বেগম এই বয়সেও অসম্ভব সুন্দরী একজন মহিলা। আর তন্নিও হয়েছে মায়ের মতো, তন্নির সৌন্দর্য যেন উপচে পড়ছে আজ।
গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করা হচ্ছে খান বাড়ির ছাদে, এটা অবশ্য তন্নির ইচ্ছে ছিল। একে একে সবাই তন্নিকে হলুদ মাখাতে শুরু করে।
তখনই সব ব্যস্ততা শেষে করে খান বাড়ির ছাদে উপস্থিত হয় তুর্য। তূর্য সাথে আছে তার অ্যাসিস্ট্যান্ট+বন্ধু ইমন। ইমন আজ বিকেলে বাংলাদেশে এসেছে, তূর্য এয়ারপোর্ট-এ গিয়েছিল তাকে আনতে। তূর্য এবং ইমন লন্ডনে একই ভার্সিটিতে পড়াশোনা করতো, ওখান থেকেই তাদের বন্ধুত্বের সূচনা হয়। তুর্যর এমন কিছু নেই যা শুধু মায়ার বিষয়টা
ছাড়া। তূর্য কখনো মায়ার বিষয়টা ইমনকে জানানোর প্রয়োজনীবোধ করেনি, কারণ তূর্য তো এতদিন মায়ার সাথে ওর বিয়েটাই মানতো না।
তূর্য ছাদে গিয়েই এদিক-ওদিক তাকিয়ে মায়াকে খুঁজতে শুরু করে।
তখনই মায়া নিচের থেকে মিষ্টির প্লেট হাতে করে ছাদে আসে, ছাদের সিঁড়ির দিকে তাকাতেই তুর্যর ডান হাতটা আপনা-আপনি বুকের বা পাশে চলে যায়।
মায়াকে শাড়ি পরা অবস্থায় দেখে তূর্য তার বুকের বাম পাশে হঠাৎ চিনচিনে ব্যথা অনুভব করলো।
তখনই পাশ থেকে ইমন বলে ওঠে :-
-কিরে কি হলো তোর? (ইমন)
-তুই বুঝবি না। (তুর্য)
তার একটু পরেই মায়া তন্নীকে হলুদ মাখাতে তন্নির পাশে গিয়ে বসলো,
তখনই ইমনের চোখ গেল মায়ার দিকে, প্রথম দেখাতেই ইমন মায়ার উপর ক্রাশ খেলো।
গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান সুন্দরভাবে পার হয়ে গেল।
রাতে মায়া নিজের রুমের দিকে যাচ্ছিল, তখনই ইমন আবার দেখলো মায়াকে, দেখেই সে দৌড়ে মায়ের কাছে গিয়ে বলতে শুরু করলো :-
-Excuse me (ইমন)
-Yes (মায়া)
-আচ্ছা এখানে যে মেয়েটার বিয়ে হচ্ছে সে আপনার কি হয়? (ইমন)
-উনি আমার আপু (মায়া)
-আপনার নামটা বলা যাবে? (ইমন)
-আমার নাম মায়া। (মায়া)
-আপনার নামটাও দেখছি আপনার মতই। (ইমন)
-মানে? (মায়া)
-ইয়ে মানে আপনার নামটা খুব সুন্দর। (ইমন)
-thank you (মায়া)
-welcome (ইমন)
মায়া আর কথা না বাড়িয়ে নিজের রুমে চলে গেল, এদিকে মায়া নিজের রুমে যেতেই ইমন খুশিতে লাফাতে লাফাতে তূর্যর কাছে চলে গেল।
তূর্য তখন নিজের বিছানায় বসে ল্যাপটপে ক্লাইন্টদের মেইল চেক করছিল। তখনই ইমন তুর্যর হাত থেকে ল্যাপটপটা নিয়ে বন্ধ করে রাখল।
তারপর তূর্যকে বলতে শুরু করলো,
-ভাই আমি তো তোর বোনের প্রেমে পড়ে গেছি।(ইমন)
-কি বলছিস কি? তোর মাথা ঠিক আছে? কাল ওর বিয়ে। (তুর্য)
-আরে ওইটা না ছোটটার প্রেমে পড়েছি। (ইমন)
তুর্য বুঝতে পারল না ইমন তার কোন বোনের কথা বলছে, তাই কপাল কুঁচকে বলল
-কোথায় দেখেছিলি তাকে? (তুর্য)
-তোর বোনকে হলুদ মাখানোর সময়। (ইমন)
-ওখানে তো অনেকেই ছিল আমি কিভাবে বুঝব তুই কার কথা বলছিস? (তুর্য)
-ভাই ওর নাম মায়া। (ইমন)
এতক্ষণ ইমন তুর্যর সামনে বসেই কথাগুলো বলছিল।
মায়ার নাম শোনার সাথে সাথেই তুর্য ইমনের কোমর বরাবর লাথি মেরে দিয়ে চেঁচিয়ে বলতে থাকে :-
-শালা ওটা আমার বোন না ওটা আমার বউ। (তুর্য)
এই একটা কথা শোনার সাথে সাথেই ইমনের মন কাঁচের টুকরোর মতো ভেঙে গেল। কিন্তু এক মুহূর্ত পরে এমন মেঝেতে বসা অবস্থাতেই ভাবতে শুরু করল এই আট বছর তূর্য আমার সাথে ছিল, তাহলে বিয়ে করল কবে? এটা ভাবতেই ইমনের মনে আশার আলো জেগে উঠলো।
ইমন বলে উঠলো:-
-তুই মিথ্যে বলছিস, আট বছর তো তুই লন্ডনে থাকলি তাহলে বিয়ে করলি কবে? (ইমন)
তূর্য ইমনকে সব কিছু খুলে বলল, তুর্যর কথা শুনে ইমন মেঝেতে বসে বাচ্চাদের মত কান্না শুরু করল। আর বলতে থাকলো :-
-এটা কি হলো আমার সাথে আমি তো বরবাদ হয়ে গেলাম, এত বছর পরে কারোর উপর ক্রাশ খেলাম আর সেও আমার ভাবি বের হলো? ইমন এভাবে রাত পার করে দিলো। (ইমন)
_______________
সকালে বাড়ির সবাই ভীষণ ব্যস্ত, ব্যস্ততার মধ্যে অর্ধেক দিন পার হয়ে গেল, আর এক ঘন্টা পরে বরযাত্রী চলে আসবে।
মায়া এখনো তৈরি হয়নি, সে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দু-একটা ড্রেস নিজের শরীরের সঙ্গে লাগিয়ে দেখছে কোনটাতে তাকে বেশি মানাবে,
মায়া ভেবে পাচ্ছে না আজ তার কি পড়া উচিত।
তখনই তূর্য রুমে আসে, তূর্য সোজা এসে মায়ার পাশে দাঁড়ায়। তারপর মায়ার দিকে একটা শপিং ব্যাগ এগিয়ে দেয়। মায়া ব্যাগটা হাতে না নিয়েই জিজ্ঞেস করে,
-কি আছে এই ব্যাগে?
আর আমাকে দিচ্ছেন কেন? (মায়া)
-এটার মধ্যে একটা শাড়ি আছে। (তুর্য)
-তো এটা আমাকে দিচ্ছেন কেন?(মায়া)
-আজ তুমি এটা পরবে তাই (তুর্য)
-যদি না পরি? (মায়া)
মায়ার কানের কাছে মুখ নিয়ে তুর্য ফিসফিস করে বললো:-
-যদি না পড়ো, তাহলে তুমি যেটা পড়বে সেটা নিজের হাতে খুলে আবার নিজের হাতেই তোমাকে এই শাড়িটা আমি পরিয়ে দেবো। আর তুমি তো জানোই আমি কতটা নির্লজ্জ, বিশ্বাস কর তোমার ড্রেস চেঞ্জ করে দিতে আমার একটুও লজ্জা করবে না। (তুর্য)
তোর জন্য মুখে এসব কথা শুনে, মায়া রেগে গিয়ে তুর্যর হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে বিছানায় ছুড়ে ফেলে দিয়ে বলতে থাকে :-
-আমি এটা পরবো না, পরবো না, পরবো না। আর আপনি, খবরদার বেশি বাড়াবাড়ি করার চেষ্টা করবেন ন…উম….উ….
কথা শেষ করার আগেই তূর্য মায়ার ঠোঁট দুটো নিজের দখলে নিয়ে নিল….
চলবে।