অবশেষে ভালোবেসে পর্ব-১৫+১৬

0
899

#অবশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ১৫
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা
.
সানভি নির্ভানের স্টুডিও তে এসে নির্ভান কে তো পেলোনা কিন্তু অমিও কে দেখতে পেলো। ওকে ইগনোর করেই ও নিজের অফিস ডেস্ক এ যাচ্ছিলো তখনই

– মাই সান ওয়েট….
.
সানভি দাড়ালো কিছু বললো না

– সানভি আই এম সরি। প্লিজ আমার আগে করা সব গুলো ভুল মাফ করে দাও। আই প্রমিজ আমি ভবিষ্যতে আর এরকম করবো না প্লিজ মাফ করে দাও?? বলে ওর সামনে গিয়ে কান ধরে বসে পরলো,,,, প্লিজ সানভি।

– আরে আরে কি করছেন। উঠুন প্লিজ।

– না তুমি আমাকে মাফ করো তারপর।

– উফফ আচ্ছা ঠিকাছে।

– সিরিয়াস??

– হু।

– ফ্রেন্ডস? বলেই হাত এগিয়ে দিলো

– নাহ আই কান্ট।
অমিও হাত সরিয়ে নিয়ে বললো

– তার মানে তুমি আমাকে এখনো মাফ করোনি? বলেই আবার কান ধরে নিচে বসে পরলো

– আরে আরে আবার। এভাবে জোর করে ফ্রেন্ড পাওয়া যায় না।

– প্লিজ সানভি আমার কাজ গুলো ভুলে প্লিজ এই চান্স দাও সত্যি আমি আর কিছু চাইবো না। সত্যি ফ্রেন্ডস হলে আমি অনেক ভালো হয়ে যাবো। তোমার ভালোবাসা না পেলেও তোমার বন্ধু হবার সুযোগ টা তো পেতে পারি প্লিজ।

– না।

– সত্যি বলছি ফ্রেন্ড হলে আমি মোটেও খারাপ বিহেভ করবো না ভালো হয়ে যাবো। প্লিজ প্লিজ…. বলে অনেক রিকোয়েস্ট করে ফাইনালি সানভির সম্মতি পেলো। নির্ভান ছিলো না সানভি কাজ করছিলো তাই অমিও ওর সাথে বসে কথা বলছিলো ও নিজেই লন্ডন এ কি করে ওর গার্লফ্রেন্ড দের নিয়ে বিভিন্ন কথা বলছিলো এতোদিন সানভির ভয় হলেও আজ ওর কথা শুনে ও বুঝতে পারলো অমিও কতোটা ফানি আর আজকে কোনো খারাপ আচরণ ও পায়নি ও কিন্তু বিশ্বাস ও তেমন করছে না।।
ওরা কথা বলছিলো তখনই নির্ভান এসে অমিও কে দেখেই বলে

– অমি তুই আবার এখানে?.

– ভাই ভাই এবার আমি ভালো হয়ে গিয়েছি মাফ চেয়েছি আর অনেক ঘ্যানঘ্যান করে সানভি কে আমার ফ্রেন্ড ও বানিয়েছি। Believe me bro no bad intension.

– তোকে ভরষা করা যায় না। আচ্ছা যাই হোক মিস.সান আমার রেকর্ডিং রুমে আসো।

– জি মি.কে।

– বায় বায় মাই… আই মিন সানভি।
সানভি হেসে চলে গেলো, রেকর্ডিং রুমে নির্ভান নেক্সট উইক এর পারফরম্যান্স নিয়ে কিছু ডিসকাশন করছিলো।।

– মি.কে এক্সকিউজ মি।। বলেই একটা কল রিসিভ করলো কিছুক্ষন কথা বলে কল টা রেখেই,,,,, মি.কে Good news a clothing brand wants to.sign you as their brand ambassador.

– Clothing brand? cool.

– হ্যাঁ এবং এটার জন্য তারা আজ বিকেলেই আপনার সাথে মিটিং করতে চেয়েছে এবং তারা খুব শীঘ্রই একটা শুটিং করতে চাইছে এইজন্য।

– ওকে। মিটিং প্লেস টাইম ঠিক করে জানাও। আমি এখানে একটু প্র‍্যাক্টিস করি গান ।

– জি। বলেই সানভি বের হয়ে গেলো।
.
অন্যসব বারের মতো এবার ও নির্ভান এর সাথে মিটিং থেকে আসছিলো কিন্তু নির্ভান তেমন কোনো সাড়া দিচ্ছিলো না কথার। অনেকক্ষন ধরে খেয়াল করার পর অবশেষে জিজ্ঞেস করে

– মি. কে কি হয়েছে আপনার? আপনি কি কিছু নিয়ে চিন্তায় আছেন?

– নাহ কিছু না।

– বাট মি.কে..

– মিস সান কিছু হয়নি ডোন্ট ওয়ারি।

– Are you sure?

– Miss San stop it. প্রায় চিৎকার করেই উঠলো নির্ভান আর সানভি ও হটাৎ ওর এই কথায় ভয় পেয়ে গেলো আর কিছু বললো না ও বুঝেতে পেরেছে কিছু একটা নিয়ে আসলেই চিন্তায় আছে এরকম আরো একবার করেছিলো যখন ক্যারিয়ার এর একটা সময় খুব টেনশন এ ছিলো। তাই সানভি নির্ভানের মুড ভালো করার জন্য ড্রাইভারকে বললো সামনে একটু রাখতে। গাড়ি রাখতেই সানভি বের হয়ে যেতে যেতে বললো আমি আসছি। তারপর কিছুক্ষন পর ফিরে এসেই বললো

– মি.কে একটু বাহিরে আসবেন?

– কেনো?

– আসুন তো। বাহিরে তেমন কেউ নেই প্লিজ কাম।
নির্ভান বের হয়ে আসতেই

– একটু অপেক্ষা করুন। বলেই দোকানে গিয়ে হাতে দুই টা আইসক্রিম নিয়ে ফিরে এলো,,, এই নিন আপনার জন্য আপনার ফেভারিট স্ট্রবেরি আইসক্রিম এনেছি নিন মাথা ঠান্ডা করুন।

– আমি চেয়েছি?

– না আমি নিয়ে আসলাম আইসক্রিম টা খেয়ে নিন তারপর বলুন কি হয়েছে। বলেই আইসক্রিম টা এগিয়ে দিলো কিন্তু নির্ভান না করে সরিয়ে দিয়েই গাড়িতে ঢুকে গেলো

– খাওয়া শেষ করে এসে বসো। নির্ভানের এই কথার কোনো উত্তর দিলো না সামনের সীটে ড্রাইভার কে বললো

– ভাইয়া আপনি মি.কে কে বাসায় পৌছে দিন আমি যাবোনা।

– জি আপা।

– মিস.সান কোথায় যাচ্ছো?

– কাজ আছে। বলেই আইসক্রিম দুটো দুই হাতে নিয়ে হাটা শুরু করলো হাটতে হাটতে নিজেই খাচ্ছে একবার এটা একবার ওটা।

– হুহ এমন কি হয়েছে যে এমন করছে। এই কয় বছরে এরকম রাগ তিনি দ্বিতীয় বারের মতো দেখালেন তিনি। কিছু তো বলছেও না। বলেই নিজের ভাবনায় ভাবতে ভাবতে বাসায় এসে পরলো।,,, কি আজব মি.কে কল ও করলো না বাসায় পৌছালাম নাকি তা জানতেও তো কল দিলো না। বলেই ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে যাচ্ছিলো তখনই ফোনের রিংটোন শুনে দৌড়ে এসে দেখে ইলা কল করেছে

– হ্যাঁ ইলি বল।

– কেমন আছিস প্রোপোজাল পেয়ে?

– টেনশন এ আছি।

– টেনশন নিয়ো না বেবি বিয়ের প্রিপারেশন নাও।

– যাহ কি বলছিস।

– হ্যাঁ ইলা অর্নব কিন্তু তোকে অনেক পছন্দ করে। ও ই তোর মি.কে.. ধ্যাত মি.কে শুনতে শুনতে ওইটাই এসে পরছে অর্নব ই তোর মি.রাইট।

– রাখি রে।

– সানুউউউউউ….

– ওই কথা পরে বলবো এখন রাখি। বলে রেখে দিলো ও এখন নির্ভানের করা সেই ব্যবহার নিয়ে খুব চিন্তিত।। রাতেও বারবার ভাবছিলো কি হলো হটাৎ মিটিং এর পর থেকেই কেমন চুপচুপ হয়ে আছেন এসব ভাবতে ভাবতে রাতে ঘুম ও এলো না সহজে তাই সকালে ও উঠতে দেরি হয়ে গেলো।

– ওহ নো সারে নয়টা বাজে!! মি.কে এর আজকে শ্যুটিং সাইটে যাওয়ার কথা।
তারাহুরো করে রেডি হয়ে বের হয়ে গেলো কিছু কাজ করতে হবে তাই ট্যাক্সি ডাকিয়ে নিলো। নির্ভান কে কল দিলে ও ধরলো না তাই বিজি ১ কে দিলেই উনি জানালেন নির্ভান অলরেডি শ্যুটিং সাইটে আছে কার সাথে নাকি কথা বলছেন। তাই ও ও সাইটের এড্রেস বলে ওইখানেই যেতে বললো । নতুন এডভারটাইজমেন্ট এর শ্যুটিং কাস্ট সম্পর্কে তথ্য দেখতে দেখতে এক জায়গায় চোখ আটকে গেলো সানভির।।

– রাফিনা!!! ওহ নো। আমি আগে কেনো দেখলাম না এটা? আহ সানভি এতো বড় ভুল। এইজন্যই নিশ্চয়ই তার মুড অফ ছিলো।
আবার নির্ভান কে কল করতে লাগলো কিন্তু ও পিক করছেই না তাই যতো দ্রুত সম্ভব ওইখানে ওর পৌছাতেই হবে।
.
এদিকে সাইটে এতোক্ষন নির্ভান ডাইরেক্টর এর সাথে ছিলো একজন এসে ডাইরেক্টর কে জানালো যে ফিমেল লিড এসেছে

– That’s great, চলো নির্ভান আমি তোমাকে আমাদের ফিমেইল লিড আর এই বিজ্ঞাপন এ তোমার পার্টনার এর সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দেই।
বলেই উঠে দাড়ালেন কিন্তু নির্ভান চাচ্ছিলো না যেতে।,,, আসো আসো রকস্টার নির্ভান।
ডিরেক্টর এর সাথে যেতেই নিচ্ছিলো তার আগেই সে ই এসে হাজির

– Hello sir. বলেই নির্ভানের দিকে তাকিয়ে বললো,,, Hello NK after a.long time right?

– তোমরা চেনো একে অপরকে ?

– হ্যাঁ স্যার খুব ভালো করেই আমরা ক্লাস মেট ছিলাম এবং খুব ভালো ক্লোজ ফ্রেন্ড ছিলাম আমরা।

– ওয়াও গ্রেট। তাহলে তো ভালোই হলো। নির্ভান তুমিও তো কিছু বলো।
নির্ভান নিজের নার্ভাসনেস বুঝতে না দিয়ে বললো

– হ্যাঁ।। আর হ্যালো রাফ….
পেছন থেকে তখনই সানভি চিৎকার করে বলে উঠলো

– মি.কে..
নির্ভান ওর দিকে ঘুরেই দেখে সানভি হাপাচ্ছে,,,,, সরি মি.কে একটু দেরি হয়ে গেলো আপনি আমার জন্য অপেক্ষা করলেন না যে!

– ওয়াহ! এন কে এর সেক্রেটারি তুমি?

– জি মিস রাফিনা নাইস টু মিট ইউ। বলেই এগিয়ে এসে দাড়ালো,,,,
.
.
.
চলবে।

#অবশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ১৬
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা
.
নির্ভান সানভির দিকে ঘুরেই ও সানভি হাপাচ্ছে,,,,, সরি মি.কে একটু দেরি হয়ে গেলো আপনি আমার জন্য অপেক্ষা করলেন না যে!

– ওয়াহ! এন কে এর সেক্রেটারি তুমি?

– জি মিস রাফিনা নাইস টু মিট ইউ। বলেই এগিয়ে এসে দাড়ালো,,,,
.
তারপর ডিরেক্টর এর কাছে গিয়ে বললো,,,,মিস রাফিনা ও কি এই শ্যুট এর অংস?

– হ্যাঁ ও ফিমেইল লিড। কাল রাতেই আমি ওকে নিউ সাইন করেছি।

– ওহ দেটস মিন মি.কে এর সাইন এর পর??

– হ্যাঁ। ওদের জুরি পুরো হিট হবে দেখো। আর আমার ব্র‍্যান্ড এর নাম আরো বেশি হিট।

– সরি স্যার বাট মি.কে এই শ্যুটিং করতে পারবে না।

– কি????

– হ্যাঁ। আমাদের কাছে আপনি এটা বলেছেন মি.কে ব্র‍্যান্ড এম্বেসেডর হবে এবং তিনিই এর জন্য ফোটোশ্যুট করবেন আপনি বলেননি যে এখানে অন্য কেউ ও থাকবে।

– হোয়াট ডু ইউ মিন বাই অন্য কেউ? আমি রাফিনা, এন্ড এনকে কিছু বলছেনা তুমি এতো কথা কেনো বলছো মাঝখানে। বলেই নির্ভান এর দিকে তাকালো রাফিনা।

নির্ভান এখনো কিছু বললো না কিন্তু ওর মুখে একটু হাসি তো দেখাই যাচ্ছে।

– মি.কে বলছেন না কারন তার পক্ষ থেকে বলার জন্য তার সেক্রেটারি আছে মানে আমি আছি। So Mr.K আর এই শ্যুট এ কন্টিনিউ করবেন না এবং যেহেতু আমরা কোনো Advance payment নেয়নি সেহেতু আমরা এটা ক্যান্সাল করতেই পারি।

– এটা করতে পারো না। নির্ভান তোমার সেক্রেটারি কে বোঝায়।

– আমার সেক্রেটারি যা বলছে তাই হবে।

– হটাৎ এসব বলার মানে কি??
একটা কাগজ এগিয়ে দিলো সানভি

– মনে আছে এটার কথা? কাল রাতে আপনাকে দেখিয়েছিলাম।

– হ্যাঁ তাতে কি???

– এই পেপার টা কালকে ঠিক মতো দেখে নিলে আজ এমন টা হতো না।

– কি??

– হ্যাঁ এর মধ্যে থাকা পয়েন্ট নাম্বার ৩ টা একটু দেখুন কষ্ট করে, আহ আমিই বলে দিচ্ছি এটাতে লিখা আছে মি.কে বিজ্ঞাপন, ফোটোশ্যুট এর সব কাস্ট এর ইনফরমেশন তাকে দিতে হবে। তারপর ৪ নাম্বার তিনি কখনোই এডভান্স পেমেন্ট নেন না তাই সে চাইলেই কন্ট্রাক্ট ক্যান্সাল করতে পারেন। আসা করি বুঝতে পেরেছেন।

– কা..কালকে তো এই কথা তোমরা আমাকে বলোনি।

– এই পেপার টা কালকে আমি নিজ হাতে আপনাকে দিয়ে বলেছিলাম ভালো করে দেখে নিতে। আপনিই তো বলেছিলেন তার কোনো প্রয়োজন নেই আপনি মি. কে কে ভালো করেই জানেন।

– তো এখন?

– Bad luck I am not doing it.

– কিন্তু নির্ভান…

– Let’s go Miss San. নির্ভানের পেছনেই হাটা শুরু করলো সানভি। নির্ভান একদম গাড়ির সামনে গিয়েই থামলো এবং সানভি কে চমকে দিয়ে ওকে Hug করে বললো

– থ্যাংক ইউ সো মাচ মিস সান। বলেই ছেড়ে দিয়ে বড় একটা হাসি দিলো।

– এটাই আমার কাজ মি. কে কালও আপনি এটা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন তাই না? আমাকে বললেই তো পারতেন।

– হু কেন যেন নিজের উপরই খুব রাগ হচ্ছিলো বলতেই পারছিলাম না।

– ইটে ওকে চলুন এখন যাওয়া যাক বলেই ওরা গাড়ি তে উঠতে নিচ্ছিলো কিন্তু পেছন থেকে রাফিনার কথায় থেমে গেলো

– Hey you that secretary. সানভি আর নির্ভান দুইজনই ঘুরে দাড়ালো,,,, what do you think huh???

– মিস রাফিনা আই থিংক আমরা আমাদের কথা ওই খানেই শেষ করে এসেছি। আপনার এখানে আসার প্রয়োজন ছিলো না।

– কতোবার আর বাচাবে তোমার মি. কে কে? একদিন তো এই রাফিনার জালে….

– উফফ মিস সান তুমিও কার কথা শুনতে দাঁড়িয়ে রইলে। নির্ভানের কথায় সানভি ও ওর কথা বাদ দিয়ে গাড়িতে উঠতে নিলেই রাফিনা এবার গিয়ে নির্ভানের হাত ধরে বললো

– এনকে প্লিজ আমার কথা একবার শুনো আমি ভালো হয়ে গেছি বেবি আমাকে একটা লাস্ট চান্স দাও প্লিজ। আমি সত্যিই ভালো হয়ে গিয়েছি এনকে প্লিজ।
নির্ভান নিজের হাত ছাড়িয়ে নিলো আবার ধরতে নিলেই সানভি এসে রাফিনার হাত ধরে বললো

– রাফিনা আপনি হয়তো আপনার উত্তর পেয়ে গেছেন। মি. কে আমাদের এখন যাওয়া উচিৎ । নির্ভান কে আগে বসিয়ে ও অন্য পাশ দিয়ে গিয়ে গাড়ি তে বসতেই গাড়ি চলতে শুরু করলো।
.
কে এই রাফিনা!! নির্ভান এর ক্যাম্পাসের সিনিয়র ছিলো রাফিনা তা সত্বেও প্রেমে পরে গিয়েছিলো নির্ভান, আসলে প্রেমের জ্বালে ফেলেছিলো রাফিনা।। এক সময় জানতে পারে এই মেয়ে শুধু ওকে না অনেক কেই নিজের প্রেমের জ্বালে ফেলে আগে পিছে ঘোরাচ্ছে। ওই মেয়ে তখন ওকে সহজেই ছেড়ে দিলেও কষ্ট পেয়েছিলো নির্ভান। দুই বছর আগে নির্ভানের সফলতা দেখে এবারের মতোই এসেছিলো ওর লাইফে ব্যাক করার জন্য, নির্ভান রাজি না হওয়ায় ওদের কিছু ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল পর্যন্ত করেছিলো কিন্তু সানভি নির্ভানের থেকে পুরো স্টোরি শুনে তা হতে দেয়নি ও উল্টো রাফিনার বিভিন্ন ছেলের সাথে থাকা ছবি দিয়ে ওকে দমিয়ে দিয়েছিলো। আবার আসতে চাইছে এবার ওকে কোনো চান্স দেয়া যাবে না সানভির মনে হচ্ছে রাফিনা কে দেখলে নির্ভান এখনো একটু নার্ভাস হয়ে যায় যা সে ওকে বুঝতে দেয়না।

– মি.কে আপনি ঠিক আছেন?

– হ্যাঁ আমার কি হবে আমার?

– নাহ কিছু না।
বাকি রাস্তায় আর কথা বলেনি ওরা। নির্ভানের স্টুডিওর সামনে এসে গাড়ি থামতেই দেখতে পেলো নির্ভানের খালামনি লাগেজ নিয়ে দাড়িয়ে আছে। নির্ভান এগিয়ে যেতেই তিনি জানালেন তার ছুটির দিন প্রায় শেষ আর তাই তিনি লন্ডনে ব্যাক করছেন তবে অমিও কিছুদিন পরে যাবে।। নির্ভান খালামনি কে এয়ারপোর্টে পৌঁছে দিতে গেলো। এদিকে সানভি যায়নি ও অফিসে বসে কাজ করছিলো তখনই অমিও আসলো

– আপনি যাননি?

– নাহ আর কয়দিন পর মাম্মির কাছেই যাবো তাই। ওহ বাই দা ওয়ে সান আমাকে তুমি করেই বলতে পারো।

– ওইটা পরে দেখা যাবে।

– ওকে সান তোমার ইচ্ছা। কিছু বলে তোমার সম্পর্কে আই মিন জানি একটু তোমাকে।

সানভি বলতেই নিচ্ছিলো যে কি জানতে চায় ও কিন্তু তার আগেই কল আসায় স্ক্রিনে তাকাতেই দেখে অর্নব এর কল তাই অমিও কে আসছি বলে উঠে আসলো কল টা রিসিভ করার জন্য কিন্তু বের হয়ে আসতে আসতে কল টা কেটে গেলো, তারপরই আবার এলো তখন সানভি পিক করলো

– হ্যালো।

– হ্যালো, যাক রিসিভ তো করলে আমি তো ভেবেছিলাম আমার সাথে আর কথাই বলবে না।

– না না তা কেনো করবো?

– তা বাদ দাও বলো কেমন আছো?

– ভালো আপনি?

– হ্যাঁ ভালো। আমার কথা টা নিয়ে কি কোনো করেছো???

– আপনার কথা নিয়ে!!,,, কাল থেকে এখন পর্যন্ত কাজে থাকায় তো ওর মনেই আসেনি এই কথা তো ও ভুলেই গিয়েছিলো।

– ওহ সানভি এখন রাখি বস এসে পরেছে বায় আবার কথা হবে ভালো থেকো।

– হু আপনিও।
ফোন কেটে ওর অফিস রুমে চলে গেলো এলো অমিও বসে অপেক্ষা করছে ওইখানেই যাওয়ার পর কিছুক্ষন কথা বললো ওর সাথে। অমিও বিভিন্ন কথা বললো জিজ্ঞেস করলো আর সাথে সাথে সানভি নিজের কাজ শেষ করলো। কথা বলায় সানভি বুঝতে পারলো অমিও ছেলেটা খারাপ না ফানি বাট তখন ওইসব কেন করেছে কে জানে তবুও একটু লিমিট রাখলো কারণ ভরষা ও তো করতে পারছেনা।
অনেকক্ষন হয়ে যাওয়ায় নির্ভান এলো না দেখে ও কাজ শেষ করে স্টুডিও লক করে চলে গেলো। অমিও মেইন বাড়িতে ওর আন্টির কাছে গেলো। বের হয়ে যাবে রিকশা খুজছে তখনই নির্ভানের গাড়ি এলো, কাচ নামিয়ে জিজ্ঞেস করলো

– মিস সান এখানে কি করছো?

– কাজ শেষ মি.কে বাসায় যাবো তাই রিকশা দেখছি।

– তো স্কুটার কোথায়?

– আহ আজ তাড়াহুড়ো করে সাথে আনিনি।।

– ওহ তো চলো আমি দিয়ে আসি।

– নো নো মি. কে আমি রিকশা নিয়ে চলে যেতে পারবো।

– মিস সান….

– ওকে। বলেই উঠতে নিচ্ছিলো তখন নির্ভান বললো

– সামনে বসো। সানভির একটু আজব লাগলো আগে তো কখনো ড্রাইভার এর পাশে বসতে বলেনি!! তবুও উঠে বসলো সানভি। তারপর নির্ভান বের হয়ে এসে ড্রাইভার কে বললো চলে যেতে ও নিজেই ড্রাইভ করবে।

– মি.কে আপনি ড্রাইভ করবেন? কিন্তু কেনো?

– কেন আমি কি পারিনা??

– না, না মানে হ্যাঁ।

– তো ব্যাস বসো। আর তুমি না খুব বেশি তর্ক করো।

– সরি মি.কে।
নির্ভান গাড়ি চালাচ্ছে একটু এগিয়ে গিয়ে গাড়ি থামিয়ে বললো

– মিস সান কালকের সেই আইসক্রিম গুলো নিয়ে আসো আজকে। আমি তো যেতে পারবোনা জানোই।

– জি স্যার। বলেই সানভি বের হয়ে গেলো ও আসার আগেই সানভির মোবাইলে একটা মেসেজ আসলো নির্ভান তাকালো সাউন্ড এ মেসেজ টা দেখার ইচ্ছা না থাকা সত্বেও দেখে ফেললো যেটাতে লিখা ছিলো ” I m missing u do u?? ” কৌতুহলেই ও ফোন টা হাতে নিয়ে নাম টা দেখলো অর্নব দিয়েছে মেসেজ টা। সানভি কে আসতে দেখেই ফোন টা রেখে ক্যাপ পরে বাহিরে এসে দাড়ালো। নিজের আইসক্রিম টা নিয়ে বললো

– কালকে তো খেতে পারিনি বাট আজকে খাবো ওয়েদার টাও পারফেক্ট তাই না?

– হ্যাঁ।

– আচ্ছা মিস সান অর্নব তোমার কি হয়?? নির্ভানের আবার হটাৎ করে অর্নব এর কথা শুনেই ও চমকে উঠলো

– জি???
.
.
.
চলবে।