অবশেষে ভালোবেসে পর্ব-১৭+১৮

0
857

#অবশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ১৭
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা
.
আচ্ছা মিস সান অর্নব তোমার কি হয়?? নির্ভানের আবার হটাৎ করে অর্নব এর কথা শুনেই ও চমকে উঠলো

– জি???
.

– ফ্রেন্ড বলেছিলে তাই না?

– হ্য হ্যাঁ।

– জাস্ট ফ্রেন্ড না বয়ফ্রেন্ড?

– মি.কে কি বলছেন এসব। বলেই হাসি দিয়ে পরিবেশ এর গম্ভীরতা টা দূর করতে চাইলো সানভি।

– ওহ। তো লাইফে আমার সেক্রেটারি থাকা বাদে আর কি করতে চাও আই মিন ফিউচার এ নিজেকে কোন পজিশনে দেখতে চাও?
সানভি এবার হাসি টা একটু কমিয়ে বললো

– নিজেকে ফিউচার এ কারো ভালোবাসার মানুষ তার লাইফ পার্টনার হয়ে থাকতে চাই। এরকম হেকটিক লাইফ বাহিরে বাহিরে দিন কাটানোর থেকে বাড়িতে থাকাই পছন্দ করি।

– তার মানে তুমি আমার সাথে সময় কাটানো পছন্দ করো না? নির্ভান দা রকস্টার এর সাথে সময় কাটাতে ভালো লাগে না?

– না না মি.কে তা বলিনি আমি বলতে…

– মিস সান আমি জানি মজা করছিলাম। বলেই নির্ভান হাসতে লাগলো যদিও সানভির একটু অদ্ভুত লাগলো।

– মি.কে আই থিংক আমাদের এখন যাওয়া উচিৎ।

– ওহ হ্যাঁ আইসক্রিম ও শেষ চলো। বলেই গাড়িতে উঠে বসলো।
সানভি কে বাসায় দিয়ে নির্ভান ও বাসায় চলে গেলো।
সানভি বাসায় এসেও নির্ভানের কথা গুলোই ভাবছে এদিকে নির্ভান ও সানভির বলা কথা গুলো নিয়ে ভাবছিলো যে সানভি যদি ভবিষ্যতে ওর পাশে না থাকে তখন কি হবে! অন্য কেউ কি ওর মতো কাজ গুলো করতে পারবে ব্যাপার টা চিন্তার।
.
সকালে রোজকার মতোই কাজে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলো তখনই ক্যালেন্ডার এ চোখ পরলো ওর

– ওয়াহ আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম এই দিন টার কথা আর এক মাস বাকি তারপর আমি মুক্ত এভাবে তো মুক্তই আছি কিন্তু এখন তো তবুও একটা বাধা আছে যা এর পর থাকবে না।
.
নির্ভান আজকে স্টুডিও তে নেই ওর বাড়িতে গিয়েছে তাই সানভি ও ওইখানে গেলো গিয়ে দেখে নির্ভান আর অমিও নাস্তা করছে একসাথে আর আন্টি বসে আছে।

– গুড মর্নিং এভরি ওয়ান।
নির্ভান বাদে দুইজনই উত্তর দিলো বরাবরের মতোই নির্ভান এর মা ওকে দেখে খুশি হয়ে গেলেন ওকে নাস্তা করতে বললে ও না করলেও জোর করে বসালেন।

– আর সান মাই সান বসো একসাথে কখনো ডিনার করার শখ তো পূরণ হবে না ব্রেকফাস্ট ই করি।

– এই বাদর ছেলে টা আর ভালো হবে না।

সানভি হেসে বসলো কোনোমতে একটু খেয়ে নিলো। ওর সাথে অমিও আর মিসেস খন্দকার অনেক কথা বললেও নির্ভান কিছুই বললো না খাওয়া শেষে উঠে বললো

– মিস সান আজকে ম্যাক্স এর ড্রেস এর নিউ কালেকশন এর লঞ্চিং পার্টি আছে মনে আছে।

– জি। বলেই উঠে দাড়ালো সানভি।

– নিশ্চয়ই এই ড্রেস এ যাবে না।

– আহ! না না আমি বিকেলে বাসায় গিয়ে রেডি হয়ে ডিরেক্ট পার্টি তে চলে যাবোনে।

– নাহ আমার সাথে যাবে আমি পিক করে নিয়ে যাবো।

– ওকে মি. কে।

– ঠিকাছে এখন আর কাজ নেই চলে যেতে পারো। সাত টার মধ্যে রেডি থেকো।

– জি মি. কে। তাহলে আমি এখন আসি।

– ঠিকাছে। ওহ হ্যাঁ এক মিনিট। স্টুডিও তে গিয়ে ডেস্ক এ একটা ব্যাগ আছে, ব্যাগ এ একটা ড্রেস আছে ওইটা পরেই পার্টি যাবে আজকে।

– কিন্তু মি.কে তার কি প্রয়োজন ছিলো?

– প্রয়োজন ছিলো তাই তো এনেছি তাই না মিস সান।
সানভি আর কথা বাড়ালো না কারণ নির্ভান কালকেই বলেছে যে ও বেশি তর্ক করে ভাবতে ভাবতে ও একটু মুখ বাকাতেই নির্ভান বললো

– মিস সান!! তুমি এভাবে মুখ বাকালে কেন??

– হা? কি না না আমি আপনার জন্য বেকাইনি।

– না তুমি…

– না মি. কে আপনাকে দেখে বেকাইনি। বলেই চলে যেতে যেতে বললো,,,, সন্ধ্যায় দেখা হবে এখন যাই।

– আরে আরে ব্যাগ টা তো নিয়ে যাও।
সানভি নির্ভানের কথা শুনে স্টুডিওর দিকে চলে গেলো পেছনে নির্ভান ও গেলো। ব্যাগ টা নিয়ে পেছনে ঘুরতেই দেখে নির্ভান গেইটের সাথের দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সানভি মুচকি হাসি দিয়ে বের হয়ে গেলো।
বাসায় এসে সানভি ড্রেস টা খুলে দেখলো ড্রেস টা ব্ল্যাক কালার এর খুব সুন্দর একটা পার্টি গাউন। সানভি চোখ ই সরাতে পারছে না ড্রেস টা থেকে। কল এসেছে ইলা দিয়েছে ওর সাথে কথা বললো ইলা ওকে অর্নব কে নিয়ে নেয়া সিদ্ধান্ত এর কথাই জিজ্ঞেস করছে কিন্তু সানভি কিছুই জানালো না বললো এখনো কিছু ঠিক করেনি।
সন্ধ্যা হতেই রেডি হতে শুরু করলো সানভি আগে মেকাপ করে ড্রেস টা পরে চুল টা বেধে আজকের লুক কমপ্লিট করলো। পুরো রেডি হয়ে যাওয়ার পর প্রায় আধা ঘণ্টা পর নির্ভানের কল পেলো ও এসে পরেছে তাই সানভি গোল্ডেন একটা হীল পরে ব্যাগ ফোন সব চেক করে গেইট লক করে বের হয়ে গেলো।।
নিচে নেমে এসে নির্ভানের গাড়ি তে পেছনের গেইট খুলে উঠতে নিলেই দেখে আগের থেকেই অন্য একটি মেয়ে বসে আছে। মেয়েটা কে তো ও চেনে এই মেয়ে তো নির্ভানের একটা এলবামে ভিডিও তে কাজ করেছিলো। সানভি কে দেখেই মেয়েটি,, হ্যালো বললো।

– মিস সান তুমি সামনের সীট এ বসো রিয়া ও পার্টিতে ইনভাইটেড ছিলো তাই ওকে ও নিয়ে নিলাম।।

– জি মি.কে।
বলেই সামনের সীট এ বসে পরলো এবার আসলেই ও প্রথমবারের মতো এই সামনের সীট এ বসলো ড্রাইভার এর পাশে। নির্ভান আর ওই মেয়ে টা খুব হেসে হেসে কথা বলছে সামনের আয়নায় দেখতে পাচ্ছে একদম ওর কাছে ঘেঁষে বসেছে।।
পার্টি সেন্টার এর এসে থামতেই ও বের হলো অনেক সাংবাদিক দাঁড়িয়ে আছে নির্ভানের গাড়ি এসেছে বুঝতে পেরেই একটু হইচই বেরে গেলো। সানভি নির্ভানের সাইড এ গিয়ে দাড়াতেই নির্ভান জানালার কাচ নামালো

– মি.কে বাহিরে অনেক প্রেস ক্যামেরাম্যান দাঁড়িয়ে আছে। আপনি তো বের হবেন কিন্তু রিয়া।

– সমস্যা নেই বের হলে।

– বাট মি. কে আপনার ইমেজ প্রেস তো ওলট-পালট সব খবর ছাপাবে।

– ইটস ওকে বলেই নির্ভান বের হয়ে ওর পরা ব্লেজার টা ঠিক করতে কর‍তে কিছু পোজ দিলো বডিগার্ড এসে ওকে প্রোটেকশন দিচ্ছে এখন। নির্ভান ঘুরে গিয়ে রিয়ার সাইডের গেইট খুলে ওর বের হওয়ার জন্য হাত এগিয়ে দিলো। রিয়া বের হয়ে আসতেই আশেপাশে যেন নিরব হয়ে তারপর আরো শব্দ বেরে গেলো। সানভি এখন নির্ভানের পেছনে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে ওর মি.কে এর এই সিদ্ধান্ত তে ও শক হয়ে আছে। এদিকে বিভিন্ন সাংবাদিক বিভিন্ন কথা জিজ্ঞেস করতেসে কিন্তু নির্ভান শুধু হাসি ই দিচ্ছে। অবশেষে ভেতরে ঢুকতেই শান্ত পরিবেশ ম্যাক্স কে এগিয়ে আসতে দেখে নির্ভান ও এগিয়ে গেলো ওর সাথে রিয়া কে দেখে ও একটু অবাক বুঝাই যাচ্ছে। সবাই কথা বলছে এখন আর সানভি ওদের পাশেই এক সাইডে দাড়িয়ে আছে। সানভির দিকে আজ অনেক চোখ বারবার ঘুরে ঘুরে আসছে ওর পরা কালো গাউন আর সাজগোজ এর জন্য যা ওকে অনেক টা ইনসিকিউর করে দিচ্ছে। ড্রেস গুলো লঞ্চ হতে এখনো একটু সময় বাকি তাই এর মাঝে কিছু গান ছেড়ে ডান্স ফ্লোরে আসার জন্য সবাই আমন্ত্রণ করা হলো। নির্ভান এর কাছে অন্য আরো মেয়ে এলো কিন্তু ও সানভির দিকে তাকিয়ে রিয়া কে নিয়ে গেলো আর ম্যাক্স ওর গার্লফ্রেন্ড এর সাথে। সানভি ওইখানেই দাঁড়িয়ে দেখছিলো তখনই একটা ছেলে এসে ওর দিকে হাত বাড়িয়ে বললো

– May I have a dance with you?
কথা টা শুনে সানভি তাকাতে এই ছেলে কেও চিনতে পারলো ও……
.
.
.
চলবে।

#অবশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ১৮
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা

….সানভি ওইখানেই দাঁড়িয়ে দেখছিলো সবাই ডান্স করছে তখনই একটা ছেলে এসে ওর দিকে হাত বাড়িয়ে বললো

– May I have a dance with you?
কথা টা শুনে সানভি তাকাতে এই ছেলে কেও চিনতে পারলো ও….
এটাতো আরেকজন পরিচিত গায়ক আসিম খান। নির্ভানের সবচেয়ে বড় rival বলা যায়। বাট উনি ও খুব ফেমাস তাই উনি যেন কিছু মনে না করেন তাই সানভি হাসি দিয়ে বলে দিলো

– I would like to but স্যার আমি একটু অসুস্থ তাই ডান্স করতে পারছি না।

– ওহ ইটস ওকে বাট ডোন্ট কল মি স্যার। হয় আসিম বলো না হয় মি.আসিম।

– ওকে। সানভি খেয়াল করলো আসিম ওর পাশেই এসে দাড়িয়ে কথা বলছে এখন

– তো বলেন আপনার মি.কে কেমন আছে?
মনে মনে বিরক্তই হলো সানভি তবুও বললো,,, জি আমার স্যার মি.কে ভালোই আছেন ডান্স ফ্লোরে ডান্স করছে।

– হ্যাঁ দেখলাম তো রিয়ার সাথে ডান্স করছে ভালোই ফেমাস হয়েছে মেয়েটা ওর মিউজিক এলবাম এ কাজ করে, সুন্দর লাগছে ওদের একসাথে।

– হুম।

– বাই দা ওয়ে আপনি জেলাস ফিল করছেন নাকি মি. কে এর সাথে রিয়া কে দেখে?

– জি! জেলাস কি বলছেন এসব এটা তাদের ম্যাটার আমি তো জাস্ট একজন সেক্রেটারি।

– ও তাই। আচ্ছা তো চলুন একটা ডান্স হয়েই যাক প্লিজ এবার না করেন না দেখুন সবাই ডান্স করছে আর আমার কোনো পার্টনার ও নেই তো প্লিজ….

– ঠিকাছে।
আসিম হাত এগিয়ে দিতেই সানভি ও এগিয়ে দিতেই আসিম ওকে ডান্স ফ্লোরে নিয়ে এলো। আর এসবই এতোক্ষন নির্ভান দেখছিলো ডান্স করায় ও মন দিচ্ছিলো না। এখন তো যেন নিজের চোখ সরাচ্ছেই না ওদের থেকে।

– এই নির্ভান কোথায় তাকিয়ে আছো ডান্স করো আর নাহলে চলো বার এর কাছে যাই আমার পিপাসা পেয়েছে।

– ঠিকাছে চলো। বলেই নির্ভান রিয়া কে নিয়ে ডান্স ফ্লোর থেকে নেমে গেলো। সানভি এখন আসিম এর সাথেই ডান্স করছে গানের বিট এ ভালোই তাল মিলাচ্ছে এখন সানভির ও ভালো লাগছে ও এনজয় করতে শুরুই করছিলো কি তখনই ওর পার্স এ ভাইব্রেট করে উঠলে কল এসেছে বুঝতে পেরে ডান্স থামিয়ে চেক করতেই দেখলো নির্ভান কল করেছে তাই আসিম কে সরি বলে নিচে চলে এলো।

নির্ভান কে খুজে ওর কাছে আসলো

– ভালোই এনজয় করছিলে আর আমাকে বলো যে তোমার এই জব খুব হেকটিক মনে হয়! যাই হোক যাও এখন একটু বাহিরে যাবে এমন একটা ভাব নিয়ে যে তোমার কাজ আছে বাট আসলে তুমি যাবে এজন্য যাতে সাংবাদিক রা আমাকে আর রিয়া কে নিয়ে প্রশ্ন করে এবং তুমি কিছু একটা বলে পরিস্থিতি হ্যান্ডেল করতে পারো। স্ট্রেঞ্জ কিছু যেন প্রিন্ট না করতে পারে কাজ হলে আমাকে জানাও।

– জি? হ্যাঁ মি. কে। বলেই চলে তো গেলো কিন্তু যেতে যেতে নিজেকেই বলছে,,, মানে কি এসবের নিজেই সব নষ্ট করলো এখন আমাকে ঠিক করতে বলছে আগে কি বলিনি!! উফফফ। ও রাগের মাথায় যাচ্ছিলো তাই সামনে কে আসছিলো দেখেনি আর একটু হলেই একজন কোক ভর্তি গ্লাস গুলো নিয়ে আসা ওয়েটার এর সাথে এখনই ধাক্কা খেতো বাট পেছন থেকে আসিম এসে ওকে ধরে ফেলায় বেচে গেলো।

– খেয়াল কোথায়? এখনি তো পরে যেতে বা ড্রেস টাও নষ্ট হয়ে যেতো।

– থ্যাংক ইউ। বলেই সানভি নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে গেলো আর পেছন থেকে আসিমের সাথেও কে যেনো কথা বলতে আসায় ও আর কিছু বললো না।
সানভি বাহিরে তো এসে পরলো কিন্তু ও তো ভাবেইনি কি বলবে ও প্রেস এর লোক দের কিন্তু ততক্ষণে অনেকেই এসে পরেছে হাতে ফোন রেকর্ড নিয়ে সবাই ওকেই ডাকছে আর সবার প্রশ্ন একটাই রকস্টার নির্ভান এর সাথে মিস রিয়া কি করছে? তারা কি কোনো রিলেশন এ আছে? নাহলে তারা একসাথেই বা কি করছে।
সানভি পেয়ে গেছে কি বলবে

– সব কিছুর জন্য উত্তর একটাই তারা দুইজন আজকে মি.কে আই মিন নির্ভানের নিউ মিউজিক এলবাম এর জন্য একটা ভিডিও শুট করছিলেন একসাথে তাই ওইখান থেকে আসায় তারা একসাথেই এসেছেন। মিউজিক ভিডিও টা সম্পর্কে আপনারা কিছুদিন পরই জানতে পারবেন এখন আর কিছু বলা যাচ্ছে না সরি। আই থিংক আপনারা আপনাদের উত্তর পেয়ে গেছেন সো এক্সকিউজ মি। বলেই তাদের সরিয়ে কিছুক্ষণের জন্য বাহিরের দিকে গেলো তারপর আবার নরমালি ফিরে গেলো পার্টি তে গিয়ে নির্ভান কে জানালো।
ম্যাক্স এর ড্রেস গুলো এখন মডেল রা পরে এসে মডেলিং করবে সবাইকে স্টেজ এর দিকে যেতে বললো।

মডেল দের পরনে ড্রেস দেখে সবাই অবাক কারন ড্রেস গুলো ব্রাইডাল সানভির খুব ভালো লাগছিলো একটা ড্রেস এ যেন ওর চোখ আটকেই গেলো ড্রেস টা গোল্ডেন এবং রেড এর মধ্যে সিম্পল কিন্তু গর্জিয়াস এটা। ও হয়তো ড্রেস টা দেখতে দেখতে মুখ থ করেছিলো তাই তো নির্ভান মুখ টা বুজিয়ে দিয়ে বললো

– এখানে মাছি তো নেই বাট মানুষ দেখছে।
সানভি একটু লজ্জা ই পেলো,, সরি মি. কে।
.
পার্টির প্রায় শেষের দিকে সানভি দেখলো নির্ভান একের পর এক ড্রিংক করেই যাচ্ছে

– আরে আরে মি.কে কি করছেন? আপনি এতো ড্রিংক করলে তো প্রবলেম হবে।

– মিস সান আমাকে বলতে এসো না আমার প্রবলেম হবে না।

– বাট মি.কে…

– বললাম তো সমস্যা নেই।

সানভি আর কিছু বললো না এভাবেই ও ড্রিংক করতে থাকলে তো পরে সে গন্ডগোল ঠিকই করবে তাই নির্ভানের দিকে খেয়াল রাখলো। ও রিয়া কে নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলো সানভি ও ওদের পেছনে পেছনে এলো নির্ভান যে সানভি কে নিবে তা ও ওর খেয়াল নেই ওকে রেখেই চলে গেলো সমস্যা হলো না ও বডিগার্ড দের গাড়ি তে করে নির্ভানের গাড়ির পিছু নিলো। এইটা নির্ভান ভালোই করেছে যে ওর বডিগার্ড দের ও ওর সাথে আসা যাওয়ার জন্য একটা গাড়ি দিয়ে দিয়েছে।
সানভি স্বস্তি ই পেলো যখন গাড়ি নির্ভানের বাড়ির দিকেই যাচ্ছিলো।
ও পৌছে গাড়ি থেকে নামতে নামতে দেখে ওই রিয়ে নির্ভান কে নিয়ে স্টুডিও তে যাচ্ছে সানভি গিয়ে থামিয়ে বললো

– মিস রিয়া এই পর্যন্তই এখন আমি মি.কে কে নিয়ে যেতে পারবো।

– আরে মিস সান!! আরে দুই দুই টা সান!!!
তার মানে নির্ভান গাড়ি তে রিয়া কে সানভি ভাবছিলো।

– না মি.কে আমি মিস সান চলুন। বলেই রিয়ার হাত থেকে নির্ভান কে ছাড়িয়ে নিলো ওর উপর ভরষা করা যায় না ওরা নির্ভান কে পাওয়ার জন্য অনেক নিচু লেভেলে ও চলে যেতে পারে। ,,,, বিজি ১ রিয়া ম্যাম কে তার বাসায় ড্রপ করে দিয়ে আসো। মিস রিয়া আপনি চাইলে গাড়ি তে যেতে পারেন বা নিজের মতেই চলে যেতে পারেন।
মেয়েটা রাগ দেখালো না শুধু নির্ভানের গালে হাত দিয়ে বললো

– বায় মি.কে আই মিন নির্ভান। বলেই চলে যাচ্ছিলো নির্ভান বললো

– আরেকটা সান চলে যাচ্ছে! ওর সাথে আমার কথা আছে ও আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে কোন সাহস এ এই এই…

– মি. কে আমি আছি আপনি আমাকে বলুন।।

– ওহ হ্যাঁ মিস সান তুমি ও তো আছো।

– চলো চলো। বলেই ওর হাত নিজের হাতে ভালো করে ধরে হাটা শুরু করলো অনেকটা ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলছিলো নির্ভান তাই সানভি আর ছাড়ালো না কারণ ও জানে মি.কে ড্রিংক করার পর আর সেই নির্ভান থাকে না এক অন্যই মানুষ হয়ে যায়।
স্টুডিও তে গিয়ে নির্ভান কে ওর রুমে নিয়ে গিয়ে ওর ওয়ারড্রব থেকে একটা টিশার্ট আর প্যান্ট বের করে দিয়ে নির্ভান কে বললো চেঞ্জ করে নিতে কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই ও ঢং শুরু করলো ওর পার্টিতে পরা ড্রেস টা নিয়ে। তারপর।সানভি ই বললো

– এখন তো আমরা বাহিরে হাটতে যাবো তাই এই ড্রেস টা পরে নিন তারাতারি।
এখন সহজেই নির্ভান রাজি হয়ে গেলো। সানভি বাহিরে গিয়ে দাড়ালো নির্ভান কিছুক্ষন পরে ডাক দিলে গিয়ে দেখে টিশার্ট না পরেই বসে আছে চোখ অন্যদিকে সরিয়ে বললো

– কি হয়েছে টিশার্ট পরেন নি কেনো??
নির্ভান কথা ঠিক মতো বলতে পারছেনা তবুও বললো
– গরম লাগছে অনেক তাই।

– গরম লাগছে! গরম ছুটাচ্ছি বলেই নির্ভান কে হাত ধরে উঠিয়ে বললো,,, চলুন।

– কোথায়?

– গেলেই বুঝবেন।
বাথরুমে নিয়ে গেলো

– আমরা এখানে কেন আসলাম!

– আপনার তো গরম লাগছে তাই এখন আপনি গোসল করবেন।।

– নাহ কেনো। বলেই বের হয়ে যেতে নিলো

– মি. কে গোসল করে নিন নাহলে আপনার সুন্দর বডি তে ময়লা লেগে যাবে।

– ওকে..
নির্ভান রাজি হতেই সানভি বের হয়ে আসছিলো তখনই ওর হাত জোরে ধরে বললো,, চলে যাচ্ছো কেনো?

– মি. কে।

– আমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার এতো ইচ্ছা কেন আমাকে ভালো লাগে না তোমার?

– কি বলছেন এসব মি. কে।

– হ্যাঁ সত্যিই তো বলছি। বলেই ওর মুখের সামনে গিয়ে বলতে লাগলো,,, তোমার কি আমাকে অন্য মেয়ে সাথে দেখলে জেলাস ফিল হয়? বলো বলো।

– নাহ মি. কে এখন আপনার একটু সাওয়ার নেয়া উচিৎ।

– লাগে না! তো আমার কেনো তোমাকে অন্য কারো সাথে দেখলে এমন লাগে?? আর ওই আসিম এর সাথে তুমি কেন ডান্স করলে আজকে হ্যাঁ?? বলেই আরো কাছে এসে বলতেই সানভি এলকোহল এর গন্ধ পেলো। আর সইতে না পেরে নির্ভান কে ধাক্কা দিয়ে সাওয়ার এর নিচে নিয়ে সাওয়ার টা ছেড়ে দিলো। পানি পেয়ে প্রথমে সরে আসতে চাইলেও এখন চুপ করে দাড়িয়ে আছে মাথা হাত দিয়ে আছে সানভি তাকিয়ে আছে ও জানে ব্যাপার টা খারাপ তবুও তাকিয়ে আছে।।। তারপর চুল গুলো তে হাত বুলাতে বুলাতে সাইডে তাকাতেই সানভি কে দেখে হাই বললো,, তারপরই খেয়াল হতেই নিচে তাকিয়ে তারপর সানভির দিকে তাকিয়ে বললো

– মিস সান তুমি এখানে???
সানভি কিছু বললো না।

– আমি আবার! ওহ নো।

– হ্যাঁ।

– কি কি করেছি??

– বের হয়ে আসেন তারপর বলছি। বলেই সানভি বের হয়ে এলো।
.
.
.
চলবে।