অবশেষে ভালোবেসে পর্ব-২৭+২৮

0
835

#অবশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ২৭
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা
.
সানভি কিছু বলছে না দেখে নির্ভান বললো,, আমি সরি সানভি তুমি যদি আমার কিস করায় রাগ করে থাকো বাট তুমি জানতে চাওয়ায় কেন যেনো নিজেকে থামাতে পারিনি… কিন্তু আমার ফিলিং তোমার জন্য মোটেও খারাপ না আমি সবার থেকে আলাদা ফিল করি তোমার জন্য। তোমাকে আমি…

– মি.কে..!!
.
– সান আমি জানি এটা সঠিক সময় না এসব বলার। তবুও আজ যখন এতোটুকু এগিয়েছি বাকি আর কোনো কথা রাখতে চাইনা। আমি তোমার সব স্বপ্ন পূরণ করতে চাই আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। তুমি জব করোনা কিন্তু আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা বলো না প্লিজ।
সানভি খুব মাথা ঠান্ডা রেখেই উত্তর দিলো যেন কোনো একটা বাচ্চাকে চকলেট দেয়ার জন্য না করছে।

– মি.কে এখন আপনার ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবা উচিৎ বিয়ে নিয়ে ভাবলে আপনি আপনার ক্যারিয়ার নিজ হাতে নষ্ট করে ফেলবেন। আর বাকি জব এর কথা ওইটা আমার ফাইনাল ডিসিশন মি.কে আমি আর এই জব করতে চাইনা। পরে কি করবো জানি না কিন্তু তা এখন ভাবতে পারছিনা।

– বাট সানভি আমি তোমাকে…..

– মি.কে আমার ভালো লাগছে না এই বিষয়ে আমরা পরে কথা বলবো নে।

– ঠিকাছে তুমি এই রুমে শুয়ে থাকো আমি বাহিরেই আছি।
সানভি গেইট লাগিয়ে হাফ ছেড়ে বাচলো ওর কাছে মনে হলো ও মাত্রই মি.কে কে রিজেক্ট করলো। কিছুক্ষন আগে যে পরিস্থিতি থেকে ও এসেছে সেই পরিস্থিতি টা প্রায় ভুলেই গিয়েছে ওর মাথায় এখন নির্ভানের কথা গুলোই ঘুরছে ও যেই কথোপকথন টা ইগনোর করতে চাইছিলো সে টা এভাবে সামনে এসে পরেছে। নির্ভান অনেক বেশি অস্থির হয়ে আছে সানভি কে নিজের লাইফ থেকে যেতে না দেয়ার জন্য।।
সানভির অনেক পানি পিপাসা পেয়েছে তাই বের হয়েছে। গেইট খুলে নির্ভান কে দেখতে পেলো না তাই কিচেনে চলে গেলো ফিরে আসতে সময় কেমন একটা গন্ধ পেয়ে স্টুডিওর ভেতরের পেছনের ব্যালকনি থেকে আসছিলো তাই ওইদিকে এগিয়ে যেতেই দেখে নির্ভান স্মোক করছে

– মি. কে আপনি স্মোক করছেন??
নির্ভান চমকে গেলো তারপর বললো,,, হু।

– কিন্তু এটা তো আপনার জন্য হার্মফুল।

– অনেকদিন পর আজকে একটা তে কিছুই হবে না। বলেই স্মোক করতেই থাকলো কিন্তু সানভি খেয়াল করলো নিচে আরো একটা পরে আছে ওইটাও শেষ করেছেন তিনি তাই এগিয়ে গিয়ে ওইটা তার হাত থেকে নিয়ে নিলো

– আপনি এমন বিহেভ করতে থাকলে আমি কিন্তু জব ছেড়ে যেতেই বাধ্য হবো।

– তো আমার ভালো লাগলে আমি কি করবো! আমার কথা টাও তো ভাবো আমিও তো কখনো ভাবিনি আমি তোমার জন্য এমন করবো কিন্তু করছি তো আর এমনটা করতে চাই কারণ এটাই ভালো লাগে তোমার জন্য….

– মি.কে আপনি বারবার এরকম করলে আমার জন্য সব কিছুই খুব কঠিন হয়ে উঠবে। কেমন একটা পরিস্থিতি থেকে এসেছি কিন্তু আপনি আমাকে বারবার চাপ দিয়েই যাচ্ছেন।
নির্ভান ব্যাপার টা খেয়াল করতেই বসা থেকে দাঁড়িয়ে বললো,,,, সরি আমার এমন করাটা ঠিক হয়নি কিন্তু কেন জানি আজকেই বলার সাহস টা পেলাম। সত্যিই তোমাকে হারাতে চাইনা।
দুইজনই দাঁড়িয়ে আছে এখন সানভি ও কিছু বলছে না কেন জানি যেতেও পারছে না।

– ঠিকাছে আমি আর এটা নিয়ে কথা বলবো না যতো পর্যন্ত তুমি না চাও এই টপিক আমি আর তুলবো না। কিন্তু আজকের রাত টা কি তুমি আমার সাথে এখানে বসে কাটাবে? শুধু এই সময় টাই কালকে থেকে আর তোমাকে অস্বস্তি তে ফেলবো না।
সানভি বসবে কি বসবে না ভেবে বসে পরলো কারণ ওর নির্ভানের প্রতি বিশ্বাস আছে। সানভির বসার পরই নির্ভান ও বসে পরলো তাকিয়ে আছে ওর দিকে।
এরপর নির্ভান ওকে ওর সম্পর্কে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞেস করছিলো আর সানভি তার উত্তর দিচ্ছিলো। তার মধ্যে নির্ভানের একটা প্রশ্ন এতোই বড় ছিলো যে ও খেয়াল ই করেনি যে সানভি কখন ঘুমিয়ে গেছে। প্রশ্ন শেষে যখন সানভির কাছ থেকে কোনো রিপ্লাই পাচ্ছিলো না তখন তাকাতেই দেখে ঘুমিয়ে আছে,,, ঘুমিয়ে গেলো! এভাবে বসে থাকলে তো সাড়া শরীর ব্যাথা হয়ে যাবে। রুমে দিয়ে আসি। বলেই দাঁড়িয়ে গেলো তারপর সানভি কে কোলে তুলে নিয়ে ওর রুম নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলো এখন সানভিকে যেভাবেই দেখুক না কেন ভালো লাগে ওর ঘুমের মধ্যেও কতো মায়াবী দেখতে।,,,, তোমাকে ভালোবাসবে কখনোই ভাবিনি কিন্তু তুমি এই মনে ঘর করে নিয়েছো।
.
সানভির ভোরে ঘুম ভাঙতেই দেখে ও বিছানায় শুয়ে আছে আর নির্ভান ওর বরাবর নিচে বসে ঘুমিয়ে আছে ওকে না জাগিয়ে সানভি খুব ধীরে ধীরে বিছানা থেকে উঠে গেলো। ভালো লাগছেনা তাই বাসায় চলে যাবে সেই কালকে সকালে বাসা থেকে বের হয়ে এখনো বাসায় যায়নি।
.
বের হয়ে কোনো রিকশা পাচ্ছিলো না তাই অনেকক্ষন চেষ্টা করার পর একটা রিকশা পেলো। বাসায় পৌছেই আগে সাওয়ার নিলো এখন ফ্রেশ লাগছে তারপর এক মগ কফি বানিয়ে নিয়ে বসলো কাল খুব খারাপ একটা অভিজ্ঞতা ছিলো কিন্তু সানভি ভেঙে পরার মতো মেয়ে নয় একা একা থাকায় এখন এসব ওকে বেশি ভাবাতে পারেনা। কফি প্রায় শেষের দিকে তখনই বেল বেজে উঠলো,,, এ সময় কে আসলো! বলেই উঠে গিয়ে গেইট খুলতেই ইলা জোরে ওকে পেচিয়ে ধরলো

– সানু তুই ঠিক আছিস!? আমি কতো চিন্তায় ছিলাম। তোকে কতো ফোন করলাম। কোথায় ছিলি?

– অঅর্নব…

– আমি জানি কিছু বলতে হবে না। ইফাজ আমাকে বলেছে আর অর্নব এর বাবা মা ওকে… আই এম সো সরি সানু আমি এসব জানতাম ই না ইফাজ ও আগে জানতো না যে ও এমন উফফ আমারই ভুল ছিলো।

– এটা কে ই বা জানতো! বাদ দে যা হওয়ার হয়ে গেছে।

– কিভাবে ভুলে যাবো!! ব্যাপার টা কতো বড় হয়ে যেতে পারতো। নির্ভান বাচিয়েছে তোকে?

– হ্যাঁ। তারপর সানভি একে একে কাল রাতের সব কথা জানালো নির্ভান এর ভালোবাসার কথা গুলো বলেনি ওইগুলো পরে জানাবে।,,,, ও এমন কেনো করলো কিছু জানিস?

– হ্যাঁ ইফাজ গিয়েছিলো পুলিসস্টেশন এ ওর বাবা মায়ের সাথে সেখানে তারা বললেন যে ও নাকি মেন্টালি আনস্টেবল। অনেক আগে এমন ছিলো না কয়েক বছর ধরেই এরকম ছোটো ছোটো attack আসতো কিন্তু এমন ও কখনোই করেনি ও এর জন্য প্রতিদিন মেডিসিন নিতো হটাৎ হয়তো রিজেকশন পেয়ে এরকম হাইপার হয়ে গিয়েছিলো। তবুও পুলিশ ব্যাপার টা বিশ্বাস করেনি তারা ওকে চেকাপের জন্য মেন্টাল হসপিটালে নিয়ে যাবেন।

– ওহ।

– তুই এটা নিয়ে কোনো চিন্তা করিস না ওর মা বাবা যদিও ছেলের কষ্ট দেখতে চান না কিন্তু তারা এ ও চান না যে তাদের ছেলে কারো ক্ষতি করুক তাই তারাও পুলিশের দেয়া যেকোনো শাস্তি ই মেনে নিবেন। আর হয়তো সঠিক পর্যবেক্ষণ এ থাকলে অর্নব সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। আর আমার মনে হয়না ওর বাবা মা মিথ্যে বলবেন উনারা সব মেডিকেল পেপার ও দেখিয়েছেন।

– হুম।

– আমি সত্যিই সরি রে সানু।

– আরে ধ্যাৎ বারবার তুই কেন সরি বলছিস? এটা হওয়ার ছিলো তাই হয়েছে এতো সুস্থ দেখতে একটা ছেলে এমন হবে তা ই বা কে জানতো? যাই হোক বাদ দে আমি একদম ঠিক আছি।

– Yes and all thanks to your Mr. K our rock star. উনি ই তো রিয়েল লাইফ হিরো। আচ্ছা রাতে কি তার বাসায় তার সাথে ছিলি?

– হুম তার স্টুডিওর রুম টায় ছিলাম।

– আর সে কোথায় ছিলো?

– বাহিরের রুমে ছিলো। আবার তুই তাকে নিয়ে ভুলভাল কথা বলছিস?

– আরে এখনো তো কিছুই বললাম না।

– আর বলা লাগবেনা আমার স্টুডিও তে ব্যাক করতে হবে।

– এতো কিছুর পর আজকেও স্টুডিও তে ব্যাক করতে হবে? আজকে বাসায় রেস্ট নিবি না?

– কিছু তো হয়নি আমার রেস্ট নেয়ার কি আছে! আমি তো ফিট এন্ড ফাইন আছি। মি.কে কিছুই হতে দেয়নি সে সঠিক সময়ে আসতে পেরেছে এবং সে যে কিভাবে আসলো আমার জন্য সেটাও একটা রহস্য সেটাও আমার জানতে হবে সো আমাকে যেতে হবে।

– হ্যাঁ তা ঠিক তুই যে অর্নব এর বাসায় ছিলি তা কিভাবে জানলো! অর্নব এর বাসা কোথায় তা ও বা কিভাবে জানলো সব কিছুই রহস্যময়।
.
.
.
চলবে।

#অবশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ২৮
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা
..
মি.কে কিছুই হতে দেয়নি সে সঠিক সময়ে আসতে পেরেছে এবং সে যে কিভাবে আসলো আমার জন্য সেটাও একটা রহস্য সেটাও আমার জানতে হবে সো আমাকে যেতে হবে।

– হ্যাঁ তা ঠিক তুই যে অর্নব এর বাসায় ছিলি তা কিভাবে জানলো! অর্নব এর বাসা কোথায় তা ও বা কিভাবে জানলো সব কিছুই রহস্যময়।
.
নির্ভান এর ঘুম ভাঙতেই প্রথমে মনে ছিলো না যে কাল রাতে সানভি এখানে ছিলো তাই উঠেই নিজেকে নিচে বসা দেখে একটু অবাক হয়ে যায় তারপর খেয়াল করতেই মনে পরে যে রাতে সানভি ওর সাথে ছিলো এবার অবাক হয়ে যায় সানভি কোথায়? তারপর টেবিলে একটা কাগজ দেখে ওইটাই সানভি রেখে গেছে।কাগজে এ লিখা মি.কে আমি বাসায় যাচ্ছি সময় মতো আবার কাজে চলে আসবো। আসা করি আমরা আমাদের আগের মতোই কাজের সম্পর্ক টা রাখবো।
কাগজ টা পরা শেষে নির্ভান বড় একটা হতাশা ভরা শ্বাস ত্যাগ করলো।
.
সানভি ইলার সাথেই বের হলো ওর স্কুটি তে করে ইলা কে ওর অফিসের সামনে নামিয়ে দিয়ে স্টুডিও তে চলে যাবে। ইলা যেখানে কাজ করতো সেখান থেকেই এইসবের শুরু সেদিন মি.খন্দকার আমাকে সেইদিন আমাকে জব অফার না করলে আজ পরিস্থিতি অন্যরকমই হতে পারতো জীবন ও কতো খেলা ই না দেখায়!

– কি রে দাঁড়িয়ে আছিস যাবি না?

– হ্যাঁ যাচ্ছি।

– ওকে পরে দেখা হবে।
.
সানভি স্কুটি টা পার্ক করে স্টুডিওর দিকে যাচ্ছিলো তখনই নির্ভানের বাবার সাথে দেখা

– আরে সানভি কেমন আছো?

– ভালো স্যার আপনি কেমন আছেন?

– হ্যাঁ আমিও ভালো আছি। তোমাকে না বলেছি আমাকে আংকেল বলতে।

– জি আংকেল।

– গুড গার্ল। তোমার সাথে কথা ছিলো ভালোই হয়েছে এখানে দেখা হয়েছে। নির্ভানের স্টুডিও তে যাওয়ার আগে কিছুক্ষণ এর জন্য বাসায় আসো।

– হ্যাঁ আংকেল। বলেই তার সাথে বাড়িতে চলে গেলো নির্ভানের মায়ের সাথে ও দেখা হলো কথা শেষে তারা দুইজনই সানভি কে এমন কিছু একটাই বললেন যাতে সানভি দ্বিধায় পরে গেলো। নির্ভানের বাবা মা নির্ভানের জন্য একটা মেয়ে কে পছন্দ করেছেন তাদের ফ্রেন্ড এর ভাইয়ের মেয়ে। ওকে ওই মেয়েটার ছবি দেখিয়ে তারা জিজ্ঞেস করলেন এই মেয়ে কি নির্ভানের পছন্দ হবে নাকি! সানভি একটু ইতস্তত করলেও ছবি টা হাতে নিয়ে দেখলো মেয়ে টা অনেক সুন্দর আর এর আগে নির্ভান যাদের সাথেই রিলেশন মানে নামের রিলেশন করেছে তাদের মতোই ওর পছন্দ হওয়ার ই কথা আর সবচেয়ে বড় কথা মেয়েটার ফ্যামিলি আছে ভালো ফ্যামিলি থেকে বিলোং করে। তাই সানভি হেসেই বললো,,, অবশ্যই পছন্দ হবে। মেয়েটা খুব সুন্দর, নাম কি?

মিসেস খন্দকার জানালেন ওর নাম রাইসা। তারপরই মি.খন্দকার বললেন

– এই ফ্রাইডে তেই একটা মিটিং ফিক্স করে ওদের পরিচয় করাবো। আপাতত নির্ভান শুধু দুই ফ্যামিলির মিটিং এটাই জানবে ওকে বাকি কিছু জানাবো না। আর হ্যাঁ ওই দিন তোমাকেও কিন্তু থাকতে হবে সানভি।

– কিন্তু ওইদিন তো আপনাদের পার্সোনাল একটা মিটিং চলবে আমি কিভাবে!

– না না তোমাকে থাকতেই হবে তা এখন তুমিও তো আমাদের পরিবারের একটা সদস্য হয়ে গেছো। আর যেহেতু ব্যাপারটা নির্ভান কে নিয়ে আর তুমি ওর সেক্রেটারি তোমাকে তো থাকতেই হবে।

– হ্যাঁ আমাদের আংকেল আন্টি বলো আমাদের এই কথা রাখবেনা?

সানভি একটু হেসে বললো,,,, ঠিকাছে আংকেল আন্টি, তো এখন আমি আসি। বলে উঠে চলে যাচ্ছিলো তখনই
– আরে সান তুমি এখানে?

– জি মি.কে আংকেল এর একটু কাজ ছিলো তাই এসেছিলাম।

– ওহ বাট কি কাজ??

– আমি বলছি, নির্ভান এই সপ্তাহে ফ্রাইডে তে আমার ফ্রেন্ড এর ফ্যামিলির সাথে ছোট্ট একটা ডিনার প্লান করতে চাইছিলাম তাই এর আগে জেনে নিলাম যে তুমি ফ্রি আছো নাকি।

– আর হ্যাঁ ফ্রি আছিস তাই তোকে আমরা বুক করে নিয়েছি তাই এই ফ্রাইডে তোকে আমাদের সাথে ওই গেস্ট দের খাতির করতে হবে।

– অবশ্যই মা সেটা আবার জিজ্ঞেস করতে হয়। বলেই মা কে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে বললো,,, তুমি তো জানোই আমি তোমাকে কতো ভালোবাসি আমি কি আর তোমার কথা টালতে পারি!

নির্ভান ওর মা কে আদর করছে দেখে ওর বাবা একটু অভিমানি কন্ঠে বললো,,,,আমাকে তো কেউ ই ভালোবাসে না।

– ওওও… পাপা। বলেই ওর বাবার দিকে এগিয়ে গিয়ে উনাকে জরিয়ে ধরলো। আই লাভ ইউ বোথ এ লট।
এটা দেখে সানভি সাইড হয়ে চলে আসলো ওর ও ওর বাবার কথা মনে পরছে আর মা এর স্মৃতি তো নেই। স্টুডিও তে গিয়ে সানভি দাঁড়িয়ে ওর বাবার কথা ই ভাবছিলো পেছনে থেকে নির্ভান এসে বললো,,, কি ভাবছো?

– আ… না কিছুই না।

– সত্যি? আমার কথা ভাবছিলে আমি কিন্তু তোমাকেও…

– মি. কে আপনি বলেছিলেন এসব নিয়ে আর কথা হবে না।

– আচ্ছা ঠিকাছে আর বলবো না। তুমি ভালো আছো তো?

– জি মি.কে। আমার জন্য আপনাকে কালকে রাতে অনেক প্রবলেম ফেস কর‍তে হয়েছে। কিন্তু মি.কে একটা প্রশ্ন ছিলো আপনি কিভাবে জানলেন আমি যে অর্নব এর বাসায় ছিলাম এটা আপনি কি করে জানলেন আর ওর বাসার ঠিকানাই বা কি করে জানলেন?

– জানতে চাও?

– হ্যাঁ।
সানভির কথা শুনেই নির্ভান ওর দিকে আগাতে লাগলো,,,, আমি জানতে পেরেছি কারণ,,,, বলেই আরো আগাতে লাগলো,,,,কারণ আমি তোমাদের পিছু নিয়েছিলাম। সত্যি বলতে আমি খুব ইনসিকিউরড ফিল করছিলাম তারপর যখন তোমাদের দুইজন ওই এপার্টমেন্ট এ গেলে তাই আর পিছু নিতে পারলাম না। আর ফিরে আসছিলাম তখনই তুমি কল দিলে। সানভি পিছাতে পিছাতে এটা শুনে থেমে গেলো আর নির্ভান ওর হাত ধরে বললো,,,, আমি ভালো করেছি তাই না তোমার পিছু গিয়েছিলাম ভালোই হয়েছে তাই না!
সানভি তারাতারি হাত ছাড়িয়ে নিলো।

– মি.কে আমার কাজ আছে। বলেই হাত ছাড়িয়ে সানভি সরে গেলো। কিছুক্ষন পর আবার নির্ভান এর কাছে গিয়ে বললো বিকেলে একটা নতুন এলবামের কিছু এডিটিং বাকি তার জন্য যেতে হবে। বিকেলে এলবাম এর কাজ শেষ করে ফিরে এলো।
শুক্রবার দিন টা নিয়ে নির্ভান যেমন কিছুই জানেনা তার উল্টো ওর বাবা মা সেই দিন টা নিয়ে খুব এক্সাইটেড তাদের একমাত্র ছেলের বিয়ে নিয়ে তারা খুব বড় কিছুই আসা করছেন আর এদিকে সানভি খুব চিন্তায় আছে নির্ভান ব্যাপার টা কিভাবে নিবে যদি পজিটিভলি নেয় রাইসা কে পছন্দ করে তাহলে তো ভালোই কিন্তু যদি না হয় ব্যাপারটা যদি উল্টো হয়ে যায়! আমি আংকেল আন্টির বিশ্বাস হারাতে পারি না। তারা আমাকে অনেক বিশ্বাস করেন মি. কে এর রাইসা কে পছন্দ করতেই হবে।
.
ফাইনালি শুক্রবার টা এসে পরেছে নির্ভানের বাসায় ওর মা বাবা আজ অনেক ব্যাস্ত ছিলো আর সাথেই ব্যাস্ত ছিলো সানভি ও। পুরো বাড়ি আজ চকচক করছে আসেপাশে বিভিন্ন মজাদার রান্না চলছে আর নির্ভান বারবার চেষ্টা করছে সেগুলা টেস্ট করে দেখার কিন্তু সানভি আর ওর মা দুইজনই বাধা দিচ্ছেন। সাত টার দিকে নির্ভানের মা সানভি কে নির্ভানের জন্য আনা ড্রেস এর ব্যাগ টা দিয়ে বললো ওকে দিয়ে আসতে। নির্ভান ও এই বাড়ির রুমেই ছিলো সানভি দিয়ে আসলো।

– এইটা কি?

– আন্টি আজকের ডিনারের জন্য এটাই পরতে বলেছে।

– বাট আমার তো শার্ট টি শার্ট ছিলোই এসবের কি দরকার ছিলো?

– জানি না আন্টি এটাই পরতে বলেছেন।

– আচ্ছা জাস্ট একটা ডিনার ই তো আজকে তাই না? অন্যকিছু না তো তুমি কিছু জানো?

– না আমি তো জানি ডিনার আছে এছাড়া আর কিছুই না।
.
.
.
চলবে।