অবসশেষে ভালোবেসে পর্ব-২৯+৩০

0
764

#অবসশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ২৯
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা
.
– জানি না আন্টি এটাই পরতে বলেছেন।

– আচ্ছা জাস্ট একটা ডিনার ই তো আজকে তাই না? অন্যকিছু না তো তুমি কিছু জানো?

– না আমি তো জানি ডিনার আছে এছাড়া আর কিছুই না।
.
নির্ভান ওর মায়ের দেয়া ডার্ক গ্রীন কালার শার্ট আর ব্ল্যাক প্যান্ট পরে যখন ওর মায়ের সামনে আসতেই তিনি যেন চোখ ই সরাতে পারছিলেন না। সানভির ও মনে হলো আজ নির্ভান কে অন্যরকম লাগছে আজকে ও আবার দাড়ি গুলো সুন্দর করে কাট দিয়েছে মনে হচ্ছে।

– আরে কোথায় তোমরা ওরা এসে পরেছে সবাই রেডি তো? ফোন হাতে মি.খন্দকার বলতে বলতে এলেন।

– হ্যাঁ হ্যাঁ সবাই রেডি আয় নির্ভান চল সানভি তুমিও আসো। বলেই মিসেস খন্দকার নির্ভান কে নিয়ে এগিয়ে গেলেন গেইট এর দিকে সানভি গেলো না ও কিচেনে চলে গেলো তাদের জন্য পানি এবং কোল্ড ড্রিংক আনতে।
.
সবাই বসার পর সানভি একজন কাজের লোক এর সহায়তায় পানির গ্লাস এবং ড্রিংক গুলো নিয়ে হলে গেলো সবাই কথা বলছিলো একটা লোক সম্ভবত রাইসার বাবা ওকে দেখে বললো

– Who is she??

নির্ভানের মা বললেন,,, ও নির্ভানের সেক্রেটারি আমাদের পরিবারেরই একজন।

উনারা সানভির দিকে তাকাতেই ও সালাম দিলো তারপরই ও রাইসার দিকে তাকালো রাইসা ওকে দেখে হাই দিলো সানভি ও উত্তর দিলো। তারপর রাইসা সানভি কে বললো ওর পাশে এসে বসতে ও গিয়ে বসলো

– সামনে তোমাকে আমার খুব প্রয়োজন হবে আফটার অল আমার ফিউচার হাসবেন্ড সম্পর্কে জানতে যে হবে। সানভি হাসি দিয়ে মাথা নাড়ালো কতোটুক খুশি হতে পারলো কে জানে!
রাইসা সামনাসামনি অনেক বেশি সুন্দর নির্ভানের ওকে পছন্দ হওয়ার ই কথা।

– নির্ভান যাও রাইসা কে বাড়ি টা ঘুরিয়ে দেখিয়ে আনো যাও রাইসা।

– জি পাপা। মিস সান তুমিও চলো।

– না মি. কে আমার কিচেন টা দেখতে হবে আপনি ম্যাম কে নিয়ে যান।

– আরে সানভি আপনি আমাকে ম্যাম বলবেন না আমাকে নাম ধরে ডাকতে হবে নাহলে হবে না।
রাইসার প্রতি টা কথায় ও সবাইকে ইমপ্রেস করে নিচ্ছিলো, নির্ভান এখনো কিছু বুঝেনি তাই হেসে কথা বলছে ওদের মানাচ্ছে একসাথে।
সানভি কিচেন থেকে এসে দেখে ওরা এখনো আসেনি তাই ওদের বাবা মায়ের সাথে বসে কথা বলছিলো তো রাইসার মা সানভি কে জিজ্ঞেস করলেন ও কত বছর ধরে ওর সাথে কাজ করছে ও বললো তিন বছর। ততোক্ষণে ওরা এসে পরেছে ওরা হাসতে হাসতে আসছে। ওরা এসে বসার পরই নির্ভানের বাবা ওদের জিজ্ঞেস করলো ওদের একে অপরকে কেমন লেগেছে! নির্ভান বললো

– আমার সবাইকে অনেক ভালো লেগেছে. And Raisa is so funny she is totally my type. ও নিশ্চয়ই বুঝেনি কোন ভালো লাগার কথা বলেছে। সানভি তখন ফোন নিয়ে উঠে গেলো এভাবে যেন ওর কল এসেছে।

– গ্রেট আমি জানতাম আমাদের চুজ করা মেয়ে নির্ভান কখনোই না করতে পারেনা।

– মানে? পাপা তোমার চুজ করা মেয়ে মানে?

তখন ওদের বাবা মা ওদের বিয়ের কথা তুললেন যে তারা ওদের বিয়ে দিতে ইচ্ছুক ওদের কি মতামত? রাইসা তো আহে থেকেই জানতো তাই ও খুশিতে লজ্জা পেলে ও নির্ভান চমকে গিয়েছিলো। ও কিছু বলতেই নিচ্ছিলো কি তার আগেই ওর কল আসে সানভি দিয়েছে নির্ভান বুঝতে পারে যে এরা সবাই এই কথা জানতো শুধু ও ই জানতো না। তাই নির্ভান কল টা রিসিভ করলো কিন্তু কিছু বললো না

– মি.কে সব ভালো ভাবে চলছে প্লিজ নষ্ট করেন না। যেভাবে চলছে চলতে দিন সব ই আপনার জন্য ভালো। প্লিজ এখন কিছু বলেন না আপনাকে রাইসা আর ওর ফ্যামিলি অনেক পছন্দ করে আর আংকেল আন্টি রাইসা কে। যা হছে….
নির্ভান আর কিছু শুনতে চাচ্ছে না তাই কল টা কেটে দিলো। এবার সানভি নিজেই চলে এলো নির্ভান কিছু বললো না শুধু বললো,,,, এক দেখায় কি আর বিয়ের ডিসিশন নেয়া যায় নাকি!
তখন ওর বাবা বললো

– হ্যাঁ অবশ্যই তোমরা দুইজনই সময় নিবে আর উত্তর আমার পজিটিভ ই চাই।

নির্ভান এখন কিছু বলছেনা ব্যাপার টা এখন আর তুলতে চাইছে না একবার উনারা চলে গেলেই বাবা মা বুঝিয়ে দিবে। এখন তারা ওদের বিয়ে নিয়ে আর কথা বলছেন না ডিনার করতে যাচ্ছেন। রাইসা নির্ভানের পেছনেই ঘুরছে আর এদিকে ও রেগে আছে সানভির উপর সব জেনেও কেনো ওকে আগে থেকেই কিছু জানায়নি। ওর ভালোলাগার কি কোনো মুল্য নেই ওর কাছে!
.

যাওয়ার আগে যখন রাইসার বাবা মা নির্ভানের বাবা মা কে জিজ্ঞেস করলেন যদি কথা আগে বাড়ানো হয় তাহলে কি উনারা এই ফ্রাইডে আসবে কিনা! কিন্তু তারা বলতে না বলতেই নির্ভান প্রায় জোরেই বলে উঠলো

– না সম্ভব না।

– কি বলছো তুমি কেনো?

– আসলে মি.কে এর এই ফ্রাইডে তে একটা টিভি শো আছে সেটা তাকে এটেন্ড করতে হবে। তাই তিনি সম্ভব না বলছেন।

– ওহ তাহলে তো ঠিকই আছে। আমাদের পরে একটু ডেট টা জানিয়ে দিয়ো তাহলে ঠিকাছে?

– জি জি আংকেল।
তারপর তাদের বিদায়ের পালা নির্ভানের বাবা মা তাদের বাহিরে বিদায় দিতে গেলে সানভি ও গেলো। ফিরে আসতে সময় নির্ভানের মা ওকে জিজ্ঞেস করলো

– সানভি বলো তো কেমন লাগলো রাইসা আর ওর পরিবার কে?

– রাইসা আর ওর পরিবার সবাই কে তাদের কথা শুনে তো ভালোই লাগলো আর রাইসা তো ছবির থেকে ও বেশি সুন্দর। মি.কে আর রাইসা কে অনেক ভালো মানাবে।

– হ্যাঁ আমারও তাই লেগেছে। আচ্ছা তুমি যে ওই যে কি যেনো নাম” অর্নব ছেলে টার কথা বলেছিলে তার কি হলো?
সানভি সত্য টা বলবে নাকি না তাই ভাবছিলো তখনই নির্ভান এসে বললো

– মিস সান একটু স্টুডিও তে আসো কাজ আছে।
তাই ওর মা ও বললো,,, ঠিকাছে যাও কাজ প্রথমে কিন্তু কালকে এটা নিয়ে ঠিকই কথা হবে।

বলেই তিনি বাড়ির ভেতরে চলে গেলেন আর দাঁড়িয়ে থাকা নির্ভান ওকে পেছনে থেকে টেনে নিয়ে আসলো ওর মা যাতে কিছু না বুঝে তাই সানভি শব্দ করলো না খুব ধীরে ধীরে বলছে ছেড়ে দিতে। কিন্তু স্বাভাবিক নির্ভান হাত ছাড়ছে না সোজা ওকে ধরে স্টুডিও তে নিয়ে গেইট টা লাগিয়ে দিলো।

– মি.কে।

– ভাবো টা কি তুমি নিজেকে? আমি কি তোমার যোগ্য না? তা নাহলে কি আমি এতোই অযোগ্য যে তুমি আমাকে একবার ও এটা জানানোর প্রয়োজন মনে করলে না?

– না মি.কে এমন কিছু ই না আমাক…

– তুমি কি জানো না আমি তোমাকে পছন্দ করি তোমাকে ভালোবাসি। আমি আগে জানলে বাবা মা কে প্রথমেই না করে দিতে পার‍তাম আমি তোমাকে ভালোবাসি অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবো না।

– মি.কে প্লিজ এই কথা বলেন না আমি জাস্ট আপনার একটা অভ্যাস যা প্রতিদিন আপনার আসেপাশে থাকায় আপনার অভ্যাস বা ভরসায় পরিনত হয়েছি যার কারনে আপনার মনে হচ্ছে আপনি আমাকে পছন্দ করেন কিন্তু এই না যে এটা সবসময় থাকবে। আপনি আমাকে যে ভালোবাসেন এই ধারণা ভুল।

– না তুমি ভুল ভাবছো। বলেই সানভির দিকে এগিয়ে ওর গালে দুই হাত দিয়ে ধরলো নির্ভান। কিন্তু সানভি পিছিয়ে সেই হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বললো

– আমার মা বাবা অনেক বছর ধরে সেই ভালোবাসা পাইনা। ফ্যামেলি বলতে এক ইলা ই ছিলো এতো দিন এতো বছর কিন্তু এখন আমার আরো একটা ভরসার জায়গা আছে আংকেল আন্টি মানে আপনার বাবা মা।

– আমি সব সত্যি জানিয়ে দিলে তারা তোমার আরো আপন হয়ে যাবেন।

– নাহ তারা রাইসা কে পছন্দ করে আমাকে বিশ্বাস করেন। আমি সেই বিশ্বাস হারাতে চাইনা তাদের হারাতে চাইনা তাদের ভাল্যবাসা টা খুব বেশি প্রয়োজন আমার।

– আর আমি! আমি তোমার কিছু না? আমার ভালোবাসা কে হারাতে রাজি? আমাকে হারাতে রাজি??
বলেই আবার ওর কাছে এগিয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু সানভি আরো পিছিয়ে গিয়ে বললো

– আপনি আমার কখনো ছিলেনই না।
.
.
.
চলবে।

#অবশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ৩০
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা
.
আর আমি! আমি তোমার কিছু না? আমার ভালোবাসা কে হারাতে রাজি? আমাকে হারাতে রাজি??
বলেই আবার ওর কাছে এগিয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু সানভি আরো পিছিয়ে গিয়ে বললো

– আপনি আমার কখনো ছিলেনই না।
.

– সান!!
কি যেনো একটা বলতে নিয়েও আর কিছু বলে উঠতে পারলো না তাই বের হয়ে গেলো রুম থেকে। পেছনে সানভি ও বের হয়ে এলো সানভি ও ভাবছে এটা উনি না তার রিজেক্ট হওয়া সেল্ফ টা এরকম করছে।,,,,সে অবশ্যই আমাকে ভালোলাগা ভালোবাসা না।
নিজে নিজেই কথা বলছিলো মেইন বাড়িতে গিয়ে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে আসলো এগারো টা বেজে গেছে প্রায় তারাতারি চলে যাওয়াই ভালো তাই স্কুটি টা নিয়ে বাসায় রওনা হলো ।
.
পরেরদিন সকালে নির্ভানের স্টুডিও তে এসে দেখে নির্ভান স্টুডিও তে নেই গেইট বন্ধ পেয়ে মেইন বাড়িতে যেতেই দেখে রাইসা এসে বসে আছে। নির্ভান আর ওর মায়ের সাথে বসে কথা বলছে তাই ওকে দেখেই রাইসা বলে উঠলো

– আরে সানভি তুমি এসেছো। আসো আসো তোমার সাথেও আমার অনেক কথা আছে। বলেই উঠে গিয়ে সানভি কে নিয়ে এসে সোফায় বসালো।

– আহ হ্যাঁ কিন্তু আমার কাজ আছে মিস রাইসা। আপনার সাথে তো এখন প্রায়ই দেখা হবে, এখন আসি?

– হুম ওয়ার্ক কামস ফার্স্ট তুমি যেতে পারো।
সানভি হেসে নির্ভানের দিকে তাকিয়ে বললো,,, মি. কে স্টুডিওর গেইট এর লক এর কী টা আনতে ভুলে গিয়েছি আপনার কাছে থাকা কী টা দিন।

নির্ভান ওর দিকে না তাকিয়েই চাবি টা বের করে দিয়ে দিলো।

– আর হ্যাঁ মি.কে আপনার আজকের লাঞ্চ টাইমে একটা মিটিং আছে নতুন এলবাম এর প্রডিউসার এর সাথে।।

– হু ঠিকাছে।
সানভি চাবি টা নিয়ে চলে আসছিলো তখন রাইসা ও সানভির সাথে যাওয়ার কথা বলে উঠে এলো।

– চলো আমি ও যাবো তোমার সাথে স্টুডিও তে।
সানভি ও মাথা হেলিয়ে সায় দিলো। রাইসা স্টুডিও তে গিয়ে তো পুরোই ফ্যান গার্ল দের মতো করা শুরু করলো যে রকস্টার নির্ভান হেন রকস্টার নির্ভান তেন…

– সানভি তোমার কখনো এমন হয়েছে যে তুমি খুশিতে আহ্লাদে আটখানা হয়ে গেছো এই ভেবে যে তুমি নির্ভান দা রকস্টার এর সেক্রেটারি ওর সব খবর তুমি জানো ওর এতো কাছে থাকো সবসময়! আমি তো যখন জানতে পেরেছি ওর সাথে আমার বিয়ের কথা চলছে আমি তো পুরোই উরে বেরাচ্ছি।

– না আমার এমন কিছু মনে হয়না। হ্যাঁ স্পেশাল মনে হয় কারণ আমি যেভাবে জব টা পেয়েছিলাম ড্রামাটিক ছিলো।

– ওহ সেক্রেটারি সানভি তুমি তো খুবই বোরিং!

– রাইসা। নির্ভানের ডাকে দুইজনই পেছনে ফিরে তাকালো সানভি বুঝতে পারছে কালকের বিহেভ এর কারণ এ নির্ভান রেগে আছে আর নির্ভানের ভালোর জন্যই ও চায় না যে এই রাগ ভাঙুক। রাইসা আর নির্ভান কে কথা বলতে দিয়ে সানভি ওর ডেস্ক এ গিয়ে কাজ করতে লাগলো।
.
দুপুরে সানভি নির্ভানের সাথে মিটিং এ যাওয়ার জন্য বের হলো সাথে ছিলো রাইসা ও। রাইসা নিজেই যাওয়ার কথা বলেছে নির্ভান না করেনি। গাড়িতে নির্ভান উঠতেই সানভি বডিগার্ড কে ইশারায় বললো রাইসার জন্য ও গাড়ির গেইট খুলে দাড়াতে রাইসা গাড়িতে বসতেই সানভি ও ড্রাইভার এর পাশের সীট এ বসে পরলো। যেটা ওর কাছে মনে হচ্ছিলো ও নির্ভানের ভালোর জন্য করছে সেটাই নির্ভানের কাছে খুব কষ্টের মনে হচ্ছে।

নির্ভান না এই অবহেলা সহ্য করতে পারছে আর নাই কাউকে বলতে পারছে না রাইসার সাথে কথা বলার সময় টা ও ওকে আরো বেশি অসহ্য করে ফেলছিলো তবুও নিজেকে সামলে নিয়েছে।
.
কিন্তু রাইসা একের পর এক ডিমান্ড করেই যাচ্ছে এই যেমন গাড়ি থেকে বের হয়েই বলছে আজকে নাকি ও নির্ভানের সেক্রেটারি হয়ে সবার সামনে পরিচিত হতে চায়। কিন্তু সানভি এই ব্যাপার এ রিস্ক নেয়ার পাত্রি না

– মিস রাইসা আপনি সেক্রেটারি হতে চান ঠিকাছে বাট আজ নয় অন্য একদিন আগের থেকে প্রিপারেশন নিয়ে তারপর নাহয় আপনি সেক্রেটারি পরিচয় দিয়েন। আজকে এলবাম নিয়ে বেশ কিছু কথা আছে বলার তাই আজ নাহয় থাক।

– ওহ আচ্ছা।

– আরে মিস সান ও আজকে করতে চাইছে করতে দাও এভাবেও যা কথা আছে সামলে নিতে পারবে না পারলে আমি তো আছিই। রাইসা তুমি চাইলে আজকেই করতে পারো।

– সত্যি!! থ্যাংক ইউ। বলেই নির্ভান কে জড়িয়ে ধরলো রাইসা।

নির্ভানের বলা কথায় সানভি বললো

– ঠিকাছে স্যার আমি তাহলে মিস রাইসা কে ফাইল গুলো দেখিয়ে দিচ্ছি।

– হু ঠিকাছে।
.
দশ মিনিট পর সানভি গাড়ি তে বসে আছে আর রাইসা আজকে নির্ভানের সাথে ওর সেক্রেটারি হয়ে গিয়েছে। সানভির খুব চিন্তা হচ্ছিলো সব ঠিক আছে কিনা ভাবছিলো এই হয়তো কল আসবে কল আসবে কিন্তু আসেনি। প্রায় দুই ঘন্টা পেরিয়ে যাবার পর ওরা বের হয়ে এলো। সানভি তখন গাড়িতেই বসে আছে ওদের দেখতে পেয়েই বের হয়ে এসে গাড়ির গেইট খুলে দাড়ালো নির্ভান কিছু না বলেই ভেতরে বসলো আর রাইসা সানভি কে ওকে সাইন দেখিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো। .
বাসায় ফিরে আসার পথেই সানভির বাসার রোড আসতেই ও নেমে যায়। এরপর আর নির্ভান রাইসার সাথে তেমন কথা বলে না রাইসা কে বাসায় পৌছে দিয়ে নিজেও বাসায় চলে যায়।
.
পরের দিন গুলো ও নির্ভান খুব চুপচাপ কাটায় আর সানভি ও তার কাজ করে যায়। সানভি নির্ভানের মা বাবার সাথে প্রতিদিন দেখা করে মাঝেমাঝে রাইসার সাথেও দেখা হয় রাইসা নির্ভানের সম্পর্কে অনেক কিছু জেনে নিয়েছে।
শনিবার এর অপেক্ষায় আছে এখন ওদের দুইজন এর পরিবার কিন্তু নির্ভানের অবস্থা যেন কারোই চোখে পরছে না আর সানভি সব জেনেও চুপ।
.
আজ শুক্রবার নির্ভানের এর আজকে একটা টিভি শো তে যেতে হবে। শো এর শুটিং টা হচ্ছে মল এ লাইভ শো হবে। সকালেই ম্যাক্স এসেছে নির্ভানের শো এর জন্য সিলেক্ট করা ড্রেস টা দিতে। নির্ভান সানভি আর রাইসার মধ্যে যে কি চলছে ও সবই জানে তাই বারবার সানভি কে ফলো করছিলো যখন ও কাজ করছিলো। তাই নির্ভান কে ওর রুমে একা নিয়ে এসে ম্যাক্স জিজ্ঞেস করলো

– তুই কি করতে চাচ্ছিস এখন? রাইসা কে বিয়ে করবি নাকি সানভি কে?

– এখন আর এসব ভেবে কি লাভ যা কে নিজের করে নিতে চাই সে তো আমাকে কিছু ভাবেই না।

– তাহলে কি তুই গিভ আপ করতে চাচ্ছিস? এই মাস শেষ হতেই কি তাহলে সানভি চাকরি ছেড়ে দিবে?

– জানিনা।

– আচ্ছা তোর বের হবার টাইম হয়ে যাচ্ছে আমি আর বেশি টাইম নিবো না। ব্যাস ডোন্ট গিভ আপ ওকে?

নির্ভান কিছু বললো না, ম্যাক্স বের হয়ে যেতেই নির্ভান শো এর সেট এ যাওয়ার জন্য সানভি কে নিয়ে বের হলো।
গাড়িতে সানভি কে নির্ভান জিজ্ঞেস করলো ও কি রিজাইন করতে চাচ্ছে নাকি! তাতে সানভি সিওর হয়েই বললো ও রিজাইন করবেই নির্ভান আর কিছু বললো না।
.
ড্রেসিং রুমে বসে ড্রেস চেক করে কিছু টা মেকাপ এর টাচ আপ নিয়ে চুল সেট করছিলো তখন সানভি এসে বললো

– আর কিছুক্ষনের মধ্যেই আপনার নাম এনাউন্স করা হবে তাই স্ট্যান্ডবাই থাকতে হবে। বলেই সানভি চলে যাচ্ছিলো নির্ভান বললো

– সান দাড়াও।

– জি মি.কে।
নির্ভান উঠে গিয়ে ওর সামনে দাড়ালো

– তুমি খুব স্ট্রং মাইন্ডেড তাই না?

– মি.কে টাইম হয়ে যাচ্ছে। আপনার এখন যেতে হবে ব্যাক স্টেজ এ।

– তোমার সাথে আর পারলাম না।। বলেই নির্ভান বের হয়ে গেলো বাহিরে এসেই একজন এসে জানিয়ে গেলো ওকে এখনই ডাকা হবে। তাই ব্যাক স্টেজ এর সামনে যেতেই শুনতে পেলো,,,, Attention everybody I am your today’s host Siam,, we are just going to begin the Very first round of Mr. nd Ms. couple. And we want to welcome our special chief guest the rockstar the singer Nirvan Khandaker give him a big round of applause.

ওর নাম নিতেই ও স্টেজ এ উঠে আসতেই করতালি শব্দ শুনতে পেলো আর সাথেই চোখ গেলো অডিয়েন্স এর সাথে প্রথম সাড়ি তে বসে থাকা সানভির উপর।।
.
.
.
চলবে।