অবৈধ বাচ্চা পর্ব-০৮ এবং শেষ পর্ব

0
1196

#অবৈধ_বাচ্চা
#পর্ব_শেষ
#আরিয়ান

যখনই রান্না ঘরে আসলাম তখনই আমার মা আর কোন কথা বললেন না। তখনই আমার শাশুড়ি আম্মা বলতে লাগলেন আমার মাকে বেয়াইন কিছু বলবেন নাকি?
না কিছু না এমনিতেই তো কি রান্না করবেন আজকে সেটা বলতে চাচ্ছিলাম। আমি রান্নাঘরে যাওয়াতে আমার শাশুড়ি আম্মা আমাকে অনেক বকা দিচ্ছে তুমি কেন রান্না করে এসেছো। তুমি এখনই তোমার রুমে যাবে এবং রেস্ট নাও। এ কথা বলার সাথে সাথে আমি রান্না ঘরে যাব তখন হুট করে আমার মাথা ঘুরে পড়ে যাই নিচে ।

আমার মা এবং আমার শাশুড়ি আম্মা আমাকে দ্রুত তুলে আমার রুমে নিয়ে যায়। এবং আরিয়ানকে ডাক দেয় দ্রুত ডাক্তারকে খবর দে।

আরিয়ান এই কথা শুনে দ্রুত এসে ডক্টর আঙ্কেলকে খবর দিলেন। ডক্টর আংকেল বাসায় আসলেন এবং বললেন।
এখনই আপনার বৌমাকে হসপিটাল নিয়ে যেতে হবে ডেলিভারির সময় হয়ে গিয়েছে ।

তাই আর দেরি করবেন না দ্রুত হসপিটাল নিয়ে চলে যান।
আরিয়ান – আম্মা এবং ভাবির মা সবাই মিলে দ্রুত হসপিটালে নিয়ে গেলাম।

আর ডক্টর ভাবিকে দেখে দ্রুত অপারেশন থিয়েটার নিয়ে চলে গেলেন। ডক্টর বললেন এখনই ওনাকে অপারেশন করতে হবে।

আমি দ্রুত ভাইয়াকে কল দিলাম এবং বাবাকে বললাম আপনারা যেখানেই থাকুন দ্রুত হসপিটালে চলে আসুন।
ভাইয়া ব্যবসার কাজে বাহিরে গিয়েছিলেন সে এই কথা শুনে দ্রুত হসপিটালে চলে আসলেন ।

এসেই ভাবির কাছে কানে কানে বললেন ভয় পেয়ো না আমি জানি আমারই সন্তান।
আমার মনে হয় ভাই আমি একটা সান্ত্বনা দিলেন ভাবিকে আসলে ভাইয়া তো কখনো বেবি হওয়ার সম্ভাবনাই ছিল না।
হসপিটালে ফর্মালিটি এগুলো সব কিছু ভাইয়াকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন ডক্টর।

ভাইয়াকে বললেন আমি আপনার স্ত্রীকে অপারেশনে নিয়ে যাব কিন্তু যদি কোন ক্ষয়ক্ষত হয়ে যায় সেটা দায়িত্ব কিন্তু আমরা নিতে পারবো না।

এ কথা যখন ডক্টর বললেন ভাইজান অনেক কান্না করে ফেললেন।
ভাইয়া সত্যিই অনেক ভালোবাসতো ভাবিকে। কিন্তু এ বাচ্চাটা হওয়ার কথা শুনে সে খুব মন খারাপ ছিলো। কিন্তু তার এগুলো মনে নাই কারণ আমি এখন মৃ*ত্যু শয্যায়।
আরিয়ান – ভাইয়া তুমি টেনশন করো না ইনশাল্লাহ দেখবে ভাবি ঠিক সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে আবার আসবেন।

ভাইয়া তখন বলল তোর কথাটা যেন ঠিক হয় আল্লাহ যেন তোর ভাবিকে সুস্থ ভাবে আমাদের মাঝে নিয়ে আসেন। সবকিছু কমপ্লিট হওয়ার পরে ডক্টর আর দেরি করলেন না দ্রুত অপারেশন করতে চলে গেলেন।

কিন্তু ভাবি বারবার আরিয়ানকে ডাকতেছে?
ভাইয়া বলল আরিয়ান তোকে ডাকতেছে ভাবি দ্রুত তুই তোর ভাবীর সাথে একটু কথা বল।
আমি দ্রুত ভাবির কাছে গেলাম এবং ভাবিকে বললাম কিচ্ছু হবে না তোমার। দেখবে তুমি ঠিক সুস্থ হয়ে আবার আমাদের মধ্যে চলে আসবে।
আমাদের বাবুটা খুব সুস্থভাবে আসবে দেখবে ইনশাআল্লাহ।

ভাবি আমার কথাটা শুনে খুব করে কান্না করে দিলেন। বললেন একটা কথা বলব আরিয়ান রাখবা।
ভাবি কি বলো তোমার একটা কথা কেন তোমার সব কথা রাখতে আমি রাজি আছি।

আচ্ছা আমার যদি কিছু হয়ে যায় আল্লাহ না করুক। যদি বাচ্চাটা ঠিক থাকে ওকে হয়তোবা তোর ভাই অবহেলা করতে পারে। কিন্তু তোর কথা দিতে হবে এ বাচ্চার কোন ক্ষতি না হয় 🙏🙏

ভাবি তুমি চিন্তা করো না এই বাচ্চা টা শুধু তোমার না এই বাচ্চাটা আমার। ওকে আমার সন্তানের মতন করে বড় করব। যদি কখনো বিয়ে না করতে হয় তবুও করব না। তোমার কথাটা শুনে ভাবি আমাকে একটু জড়িয়ে ধরতে চাইলো, আর ওই রুমে কেউ নাই আমি আর ভাবি ছাড়া আমি বললাম সমস্যা নেই আমাকে যতক্ষণ জড়িয়ে ধরে রাখতে মন চাই ধরতে পারো।

এরপরে ডক্টর চলে আসলেন এবং আমাকে বললেন আপনি এখনই বাইরে চলে যান। আমি ওখান থেকে দ্রুত চলে আসলাম বাইরে বাসার সাথে সাথে ভাইয়া বললেন।
কি বলল তোর ভাবি আরিয়ান?
তেমন কিছু না ভাইয়া তুমি যাতে কোন টেনশন না করো সে বিষয়ে আমার সাথে একটু শেয়ার করলো।

আচ্ছা সমস্যা নেই আল্লাহ আল্লাহ কর।
কিছু মধ্যে অপারেশন কমপ্লিট হলো আর ফুটফুটে একটা ছেলে সন্তান হয়েছে। দেখতে ঠিক আরিয়ানের মতনই, তারপর ডক্টর একটা কথা বলতে যাবে তখনই ভাইয়া বলল আমার বউ কেমন আছেন?
ডক্টর একটু মুখটা ঘাবড়ে বললেন দেখেন আমরা খুব চেষ্টা করেছি দুজনকে বাঁচাতে কিন্তু ?

মানে আপনি কি বলতে চাচ্ছেন সরাসরি বলেন তো? ডক্টর তখন বলে আমরা বাচ্চাকে বাঁচাতে পেরেছি বাচ্চার আম্মাকে বাঁচাতে পারি নাই 🙏🙏
ভাইয়া হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দিলেন এর সাথে আম্মা এবং বাড়ির সব মানুষ।

এরপরে বাচ্চাকে নিয়ে আমরা সবাই বাড়িতে গেলাম। বাচ্চার নাম রাখা হলো আয়াস।

সবাই বাবুকে নিয়ে অনেক খুশিতে দিন যাপন শুরু করতে লাগলেন । আমার আম্মু আয়াস কে খুব ভালবাসে।
আয়াস কে ছাড়া কোন কিছু বোঝেনা সবাই 😍
আরিয়ান – আমিও প্রতিজ্ঞা করেছি আয়াস যতদিন বড় না হবে ততদিন কখনো আমি বিয়ে করবো না!
ভাবির কথাটা অবশ্যই আমার রাখতে হবে কারণ আয়াস আমারই ছেলে 🖤

———সমাপ্তি —–