অমৃতে অরুচি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব

0
2

#অমৃতে_অরুচি
#কলমে_গুঞ্জন_চৈতি
#পর্ব_৬ (শেষ পর্ব)

দ্যুতি অনিন্দ্যের চোখের দিকে চেয়ে রইলো, ফ্যালফ্যাল করে। পরক্ষণেই চোখ নামিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো নতমস্তকে। চোখে দ্বিধা, আর শরীর জুড়ে অপরিচিত এক অস্থিরতা। থাকতে চায় না সে গ্রামে, আবার ছাড়তেও চায় না। বাবা-মায়ের স্মৃতি ছাড়া আর তো কিছু নেই। সেটুকু ছেড়ে চলে যাবে?

কিন্তু থাকার উপায় নেই সে বুঝে গেছে। যেতে তাকে হবেই৷ কিন্তু কোথায়? যাদের থেকে আশা করা যায় তারা কেউ তো বলেনি, “দ্যুতি আমার সাথে যাবি? আমি আছি তোর পাশে।”

পাশের বাড়ির জগলু কাকাও বলল না, “আমাদের সাথে থাকবি দ্যুতি? আজ থেকে আমরাই তোর পরিবার।”

ছোট থেকে একসাথে বড় হওয়া বান্ধবী নিতু, সেও বলেনি। সান্ত্বনা দিয়ে চলে গেছে। ও বাড়ির মনি কাকিকে প্রতিদিন পুজোর ফুল তুলে দিয়ে আসতো, লক্ষ্মী পুজোর আলপনা থেকে শুরু করে পুজোর প্রসাদ পর্যন্ত বিলি করে দিতো। কত আদরই না করতো তাকে। সেই মানুষটার স্নেহভরা চোখও এড়িয়ে গেছে আজ। করুণা করেও বলেনি, “আমি আছি তোর পাশে।”

আর মিনু ঠাকুমা, অসুস্থ হয়ে প্রায়ই রান্নাবান্না বন্ধ করে বিছানাসঙ্গী হয়, ছেলেমেয়ে কেউ সাথে থাকে না বলে দ্যুতির মা খাবার দিয়ে আসতো প্রতিবার অসুস্থ হলে। মায়ের হাত ধরে কত কাঁদতো মানুষটা। মা না থাকলে নাকি সে না খেতে পেয়ে মরেই যেতো। সেও একটু আগে চলে গেল। বলে গেছে অবশ্য, বিকেলে আবার আসবে। নিতুও বলে গেছে আবার আসবে পরে। কেউ বলেনি, “চল আমার সাথে। আজ থেকে আমার সাথে থাকবি। তোর মা-বাবা নেই তো কী হয়েছে? আমি আছি তোর পাশে।”

মা ছিল অনাথ, আর বাবা ছিল পরিবারের একমাত্র সন্তান। তাই আত্মীয়স্বজন কেউ নেই বলার মতো। ওই ছেলেটাই শুধু বলেছে। কিন্তু সে তো অচেনা। কাল অনেক সাহায্য করেছে, এখনও করে চলেছে। কিন্তু কার মনে কী আছে কী করে জানবে দ্যুতি? যদি সেও তার মতো হয় যার সাথে তার বিয়ে ঠিক হয়েছিল!

আশীর্বাদের পর থেকে রোজ দ্যুতির বাবার ফোনে কল করতো সে। মুখিয়ে থাকতো কখন দ্যুতির বাবা বাড়ি ফিরবে আর সে কল করে দ্যুতির সাথে কথা বলবে।

দ্যুতি “কেমন আছেন” বলার পর আর কথা খুঁজে পেত না। ওপাশ থেকে “ভালো আছি, তুমি কেমন আছো” শোনার পর “ভালো” বলেই চুপ করে যেতো।

মাঝেমধ্যে প্রশ্নের উত্তর দিতো খুব বেশি প্রয়োজন হলে, মাঝেমধ্যে দিতো না। হু হা করে চালিয়ে যেতো কথোপকথন। সেই মানুষটা কী পাগলামি টাই না করতো। মিতভাষী দ্যুতির সাথে একা একাই কথা বলে যেতো ঘণ্টা পার করে।

বিয়ের পর কোথায় ঘুরতে যাবে, কীভাবে নতুন জীবনের শুরু হবে, কীভাবে সাজাবে দ্যুতিকে, কী রঙে মানাবে ভালো, বলতো একা একাই। কখনো অভিযোগ করতো না দ্যুতির স্বল্পভাষী স্বভাবের জন্য। প্রশ্ন করে জবাব না পেলে উত্তরও নিজেই দিয়ে দিতো, নিজের মতো করে।

দ্যুতি কী ভরসা টাই না করতে শুরু করেছিল। ভালোবাসাটা হয়ে ওঠেছিল কিনা জানে না। কিন্তু বিশ্বাস করেছিল। সেই মানুষটা তো কথা রাখেনি। ফোনে কথা বলা মানুষটার সাথে সেদিনের বিয়ের মণ্ডপ ছেড়ে উঠে গিয়ে মারামারি করে চলে যাওয়া মানুষটার মিল কোথায়? নেই তো মিল। সেখানে অনিন্দ্যকে কী করে ভরসা করবে সে?

চোখে ভাসলো সেই মানুষটার মুখ, কানে বাজলো তার কথা। অসিত! নামটা মুখে নিলে মা বকতো। বলতো স্বামীর নাম মুখে নিতে নেই। বিয়ের আগে থেকেই অভ্যাস করতে হবে।

অনিন্দ্য অপরিবর্তিত মুখভঙ্গিতে পুনরায় প্রশ্ন করলো, “যাবে আমার সাথে?”

দ্যুতির ধ্যান ভাঙলে আমতা আমতা করলো। কথা খুঁজে পেল না। কী বলবে ভাবতে ভাবতে আনমনে বলল,
“আমি তো… আপনাকে চিনি না।”

“যাদেরকে তুমি চেনো তারা তোমায় এখন থেকে আর চিনবে না। তা বুঝতে পারছো তো? আমাকে চেনো না, চিনে নাও। আমি অনিন্দ্য, অনিন্দ্য চ্যাটার্জি। ঢাকায় থাকি। পড়াশোনা কমপ্লিট, চাকরিবাকরি কিছু করছি না। ব্যাবসা দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে। মা নেই, বাবা আছে কিন্তু বাবার সাথে থাকি না। দাদুর আশ্রম আমার বাড়ি, আশ্রমের মানুষগুলো আমার পরিবার, প্রেমিকা হচ্ছে রাগ, আর শত্রু হচ্ছে দাদুর ছেলে।”

শেষ কথাটা বিড়বিড় করে বলল অনিন্দ্য।
দ্যুতির হাঁসফাস লাগছে। অদ্ভুত লাগছে অনিন্দ্যর কথা। কিন্তু মানুষটাকে প্রতারক মনে হচ্ছে না।

“এবার বলো, যাবে আমার সাথে?”

দ্যুতি গ্রামে থাকতে চায় না কিন্তু অনিন্দ্যর সাথেও যেতে চায় না। হ্যাঁ, না কোনটাই মুখে আসছে না।

“কিছু বলো।”

“আমি যাবো না।”

কথাটা বলে ভারী শ্বাস ফেলল দ্যুতি। অনিন্দ্য বলল, “দেখো, তোমার হাতে-পায়ে ধরে তো আমি নিয়ে যেতে পারবো না, আর না জোর করে। ভেবে বলো, সময় নাও। এখানে সার্ভাইভ করতে পারবে বলে তোমার মনে হয়? এখানে থাকতে গেলে কোন মাথা খারাপ কিংবা নেশাখোরের গলায় মালা পড়িয়েই আজীবন থাকতে হবে। তাই চাও তুমি?”

দ্যুতির চোখ ভরে উঠলো। মনে মনে মাকে অভিযোগ করলো। বাবার সাথে করলো অভিমান। ঠিক যেভাবে ছোটবেলায় করতো।

“আমাকে এখনই ঢাকা ফিরতে হবে। আবারও জিজ্ঞেস করছি, যাবে আমার সাথে?”

দ্যুতি সেকেন্ড দশেক চুপ থেকে মাথা নেড়ে না করলো। অনিন্দ্যর খুব রাগ হলো। মেয়েটা অতিরিক্ত আবেগী সে বুঝে গেছে দু’দিনে। ভীতুও, কিন্তু তাই বলে এতো বোকা! এখানে থাকলে ওকে কেউ শান্তিতে বাঁচতে দেবে? পুলিশি ঝামেলা শেষ হলেই শুরু হবে গ্রামবাসীর ঝামেলা।

একা একটা মেয়েকে থাকতে না দেওয়ার বাহানায় দ্যুতির দুর্বলতার সুযোগ নেবে। দিনের আলোয় ভালো কথায় দ্যুতি না গললে হয়তো রাতের অন্ধকারকে ব্যাবহার করে কাবু করতে চাইবে। বলা যায় না, রাতের বেলা ঘরে ঢুকে মিছে বদনামও দিতে পারে।

কিন্তু সেই বা আর কী করবে? জোর করে তুলে নিয়ে যাবে? তাই হয়? বড্ড চিন্তায় পড়ে গেল। কী করবে এখন? ঢাকায় আজ ফিরতেই হবে। এদিকে মেয়েটাকে একলা রেখে গেলে কাল এসে অক্ষত দেখবে কিনা তার ভরসা নেই।

অনিন্দ্যর হঠাৎ মনে হলো, সে যদি দ্যুতির জায়গায় থাকতো তাহলে কী করতো? একদিন একটা ছেলে সাহায্য করেছে বলে আকাশ সমান ভরসা করে তার সাথে চলে যেতো সম্পূর্ণ অচেনা একটা শহরে? যাকে সে একদমই চেনে না। জানে না তার মনে কী আছে।

কখনোই যেতো না। চেনা পরিবেশে একা থাকা যতটা সহজ, অচেনা পরিবেশে দশজন সাথে নিয়ে থাকা তার চেয়ে কঠিন। শত্রু পরিচিত হলে মোকাবেলা সহজ, কিন্তু শুভাকাঙ্খী অচেনা হলে সখ্যতা রাখা কঠিন। অচেনা একজন মানুষকে বিশ্বাস করে তার সাথে অচেনা শহরে চলে আসা এক প্রকার বোকামিই। দ্যুতি তাকে ভরসা করবে কেন?

অনিন্দ্য কিছু সময় ভাবলো। অতঃপর হাল ছেড়ে দিলো, দ্যুতিকে আর কিছু বলল না। পুলিশের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে দ্যুতির কাছে এলো বিদায় নিতে।

“আমি চলে যাচ্ছি, সাবধানে থেকো। আর হ্যাঁ, খেয়ে নিয়ো। ওরা খাবার নিয়ে আসবে এক্ষুনি। কী যেন নিয়ম কাজ আছে, শেষ করে খাও। আসছি…”

আসছি বলে অনিন্দ্য আর এক মুহুর্তও দাঁড়ালো না। দ্যুতি চমকে উঠলো অনিন্দ্যকে সত্যি সত্যি যেতে দেখে। কান্নায় বুক ভেঙে এলো তার। পিছু ডেকে বলতে ইচ্ছে করলো, “যাবেন না। আমার আর কেউ নেই। আমি আপনাকে বিশ্বাস করি না, করতে পারছি না। তবুও থাকুন আমার পাশে। যাবেন না, দোহাই লাগে।”

আফসোস, দ্যুতি কিছুই বলতে পারলো না। চলে গেল মানুষটা। দ্যুতির কান্না ধীরে ধীরে বাড়তে লাগলো। কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়লো মাটিতে।

.

দুপুরের করা রোদে অসহনীয় গরম। সূর্য এখন মাথার উপরে দাপুটে ভঙ্গিতে বসে আছে। আনোয়ার আলী এবং ঋণদাতাদের থানায় নেওয়া হয়েছিল। আনোয়ার আলীকে রেখে ঋণদাতাদের তিন লাখ টাকা দিয়ে স্ট্যাম্প পেপারে সই করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷ তাদের যে আর কোন দাবী নেই দ্যুতির কাছে, সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে, তা নেওয়া হয়েছে লিখিত।

তারা টাকা পেয়েই খুশি। কে দিলো, কেন দিলো তা জানতে চায়নি। প্রশ্ন করলে যদি টাকা না দেয়! সেই ভয়ে চুপচাপ চলে এসেছে। আনোয়ার আলীর সাথে কী হবে তাও জানতে চায়নি। নিজে বাঁচলে বাপের নাম।

এদিকে দ্যুতির বাড়ির ভীড় মোটে কমছেই না। পাশের গ্রাম থেকে জনে জনে দেখতে আসছে দ্যুতিকে। বিয়ে ভাঙলে যেন মেয়েদের সিং গজায়! তারপর ঋণের বোঝা রেখে বাবা-মা মারা গেলে যেন আরও দুটো শিং বেশি গজায়। তাই দেখতে আসছে সবাি। দ্যুতির বাড়ির বর্তমান পরিস্থিতি দেখে আপাতত তাই মনে হচ্ছে। নয়তো দূর দূরান্ত থেকে এভাবে দলবেঁধে কেউ দেখতে আসে?

দ্যুতি ঘরে বসে থাকতে পারছে না মানুষের ভীড়ে। একেকজন আসছে, পাশে বসছে, অদ্ভুত প্রশ্ন করে খুঁচিয়ে কষ্ট দিচ্ছে আর তারপর সান্তনা দিচ্ছে। দ্যুতির পাগল পাগল লাগছে। বিয়ে কেন ভাঙলো, কী ঘটেছিল রাতে, বাবা-মা কীভাবে মরলো, মরার আগে কী কী বলে গেছে, কী কী রেখে গেছে এমন আরও শত শত প্রশ্নের জবাব দিতে হচ্ছে দ্যুতিকে। এমনকি না হওয়া শ্বশুর বাড়ি নিয়ে কত প্রশ্ন তাদের।

আর এসবের ফাঁকে অনেকেই নিজের ছেলে, কিংবা আত্মীয়ের ছেলের কথা ইনিয়ে বিনিয়ে বলছে দ্যুতিকে। দ্যুতির মনে ভয় ঢুকছে ক্রমশঃ। আবার বিয়ের আলাপ! এখন তো গ্রামের বাইরের মানুষও বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসছে। কিন্তু তাই বলে একটা পাত্রও ঠিকটাক নয়। সেই একই গুণ তাদের।

কেউ মানসিক ভারসাম্যহীন, কেউ বিয়ের বয়স পার করে এসেছে বহু আগেই। এখন মেয়ে পায় না বলে বিয়ে হচ্ছে না, কেউ বা বিপত্নীক, কেউ আবার নেশাখোর।

এইতো পাশের গ্রামের গোপাল দাসের ছেলে। নেশা করে সারাদিন-রাত পড়ে পড়ে ঘুমায় আর নেশা করার জন্য টাকা চেয়ে বাবা-মায়ের উপর জুলুম করে। ছেলেকে সংসারী বানাতে বিয়ে দিতে চায়। নেশাখোর ছেলের অত্যাচার সহ্য করে সংসারে টিকে থাকার মতো একটা মেয়ে লাগবে তাদের, যে কথায় কথায় বাবার বাড়ি দৌড়াতে পারবে না। যার পায়ের তলার মাটি শক্ত নয়। তাদের জন্য দ্যুতির চেয়ে ভালো বিকল্প আর হতেই পারে না

দ্যুতির শরীর ভালে লাগছে না। অসুস্থ লাগছে খুব। চুপ করে থাকলে প্রশ্ন বাড়ছে, বাড়ছে ভীড়। গতকাল সারাদিন উপোস ছিল বিয়ের জন্য, আজ ফলাহারের ব্যাবস্থা থাকলেও গলা দিয়ে তা নামেনি। শরীর আর চলছে না। এমন কাউকে পেল না যাকে বলা যায়, “আমার কষ্ট হচ্ছে।” অথচ চারপাশে কথা বলার মানুষের অভাব নেই।

বিকেলের রোদ কিছুটা ম্লান হয়েছে, কিন্তু ভীড়ের মাত্রা কমেনি দ্যুতির বাড়িতে। পাঁচজন বিদায় নিলে আসছে আরও দশজন। ঘরের কোণে বসে থাকা দ্যুতি যেন আজ এক খাঁচাবন্দি পাখি। চোখে ঘুম নেই, শরীরে বল নেই, মুখে কোনো অভিব্যক্তি নেই। শুধু দুটো কানে দিনভর আটকে থাকে শত শত প্রশ্ন, হাজারটা দৃষ্টি। হঠাৎ হঠাৎ বাবা-মায়ের র ক্তা ক্ত শরীরটা চোখের সামনে ভেসে উঠলে ফুঁপিয়ে কাঁদে।

ঠিক এমন সময় পুলিশ এলো বাড়িতে। সাথে আরও দু’জন ভিন্ন পোশাকের নারী। গলায় আইডি কার্ড ঝোলানো, তাতে লেখা “নারী ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, জেলা শাখা”।

দ্যুতিকে সাথে নিতে চায় তারা। নতুন জীবন দিতে চায়। উপস্থিত স্থানীয় প্রশাসনের একজন প্রতিনিধি সাক্ষী রেখে দ্যুতিকে সম্মতিপত্রে সই করিয়ে তারপর নিয়ে যাওয়া হবে ঢাকার কোন এক পুনর্বাসন কেন্দ্রে।

যারা ওঁৎ পেতে ছিল দ্যুতি একা হলেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করবে, করবে অকর্মণ্য ছেলের বউ। তারা অখুশি হলো জেনে। লোকগুলো কার মাধ্যমে এসেছে তা জানতে চাইলো গ্রামের অনেকেই। জানা গেল, উপরমহলের হস্তক্ষেপ আছে। উপরে থাকা ব্যক্তি ঠিক কে, তা কোনভাবে জানা গেল না।

দ্যুতি অনিন্দ্যকে যেভাবে মানা করেছিল, ঠিক সেভাবেই মানা করতে চাইলো। বলতে চাইলো সে যাবে না। কিন্তু পুলিশের সামনে কোন কথাই বের হলো না তার মুখ দিয়ে। দ্যুতির নিরবতা দেখে পুনর্বাসন কেন্দ্রের আইডি কার্ড ঝুলানো একটা মেয়ে এগিয়ে এলো। কাউকে কল করে ফোন দিলো দ্যুতির হাতে।

দ্যুতি দ্বিধা নিয়ে তাকিয়ে থাকলে মেয়েটা ফোন চেপে ধরলো দ্যুতির কানে। দ্যুতি শুনতে পেল ওপাশ থেকে কেউ বলছে, “হ্যালো, দ্যুতি। আমি অনিন্দ্য বলছি।”

দ্যুতি বিস্মিত স্বরে বলল, “আপনি!”

“আমকে ভরসা করে আমার সাথে আসতে পারোনি তাই পুলিশ পাঠালাম। পুলিশকে ভরসা করো তো? সই টা করে চলে এসো ঢাকা। এখানে তোমার জন্য নতুন জীবন অপেক্ষা করছে।”

“আপনি থাকবেন সেখানে?”

”তোমার সাথে না থাকলেও পাশে থাকবো।”

শেষ কথাটায় আঁটকে গেল দ্যুতি। কথাটা আর কেউ বলেনি তাকে। শুধু অনিন্দ্যই বলল। এবার কী করে ফেরাবে?

দ্যুতি ফোন রাখার পর কাঁদতে কাঁদতে সই করলো। সমস্ত কার্যপ্রণালী সমাপ্ত করে চলল ঢাকার উদ্দ্যেশে। তার নতুন জীবন অপেক্ষা করে আছে অচেনা শহরের বাঁকে বাঁকে। কেমন হবে সে জীবন?

সমাপ্ত