#আগুনের_তৃষ্ণা
#Maishara_Jahan
Part………..26
মারু,,,,,তুই এতো ভুতের গল্প পাস কোথায়।
রিয়ান,,,,,,, ভুত এফ এম এ।
প্রহর,,,,, শুরু করা যাক।
অয়ন,,,,,,ফাস্টে তাহলে আমি শুরু করি।
রিয়ান একটু ভাব নিয়ে বলে,,, আমার মন অনেক বড়ো যাও ফাস্টে তোমাকে সুযোগ দিলাম।
অয়ন,,,হুমম থ্যাংকস,,, আচ্ছা শুনো সবাই, ঐ দিন রাত ১ টা বেঝেছিলো ছিলো, আমার কাজ করতে করতে লেইট হয়ে যায়। আমি যখন ফিরছিলাম তখন হসপিটালের একটা রুম থেকে অদ্ভুত অদ্ভুত আওয়াজ আসছিলো। আমি চেক করতে গেলাম কিসের আওয়াজ এটা দেখার জন্য।
যে রুমটাতে আওয়াজ আসছিলো আমি সে রুমের দরজা খুলে দেখি ঐ রুমটা মৃত লাশ রাখার জায়গা। সেখানে অনেক লাশ রাখা ছিলো। আওয়াজটা আসছিলো কোথা থেকে এটা দেখার জন্য আমি রুমের ভিতরে গিয়ে চেক করতে থাকি।
হঠাৎ করেই আমার কাঁধে কেও হাত রাখে আমি পিছনে ফিরতেই দেখি,,
অয়ন আর কিছু বলার আগেই রিয়ান জোরে ভয়ানক আওয়াজ বের করে চিল্লিয়ে উঠে,আর সবাই চিৎকার করে উঠে। আমি অয়নকে জরিয়ে ধরি, আলোও সায়নের হাত জোরে শক্ত করে ধরে।
সবার এমন ভাবে চিৎকার শুনে রিয়ান নিজেও ভয় পেয়ে যায়। পরে আবার জোরে জোরে হাসতে থাকে। প্রহর রিয়ানে মাথায় মেরে বলে,,,,,,, এমন করে হঠাৎ চিৎকার করার কি হলো।
আমি রাগে বললাম,,,, তুই সব সময় এমন করিস, গল্পের মাঝখানে এভাবে চিৎকার করে উঠিস।
রিয়ান,,,,,, আরে এটাই তো ভুতের গল্প বলার আসল মজা।
প্রহর আলোর দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,আলো এখনো কি ভয় পেয়ে আছো।
আলো প্রহরের কথা শুনে সায়নকে ছেড়ে দিয়ে একটু নড়েচড়ে বসে। সবাই ওদের দেখে মুচকি হাসছে। সায়ন একটু লজ্জা মাখানো হেঁসে নিজের মাথা চুলকাচ্ছে আর বলছে,,,অয়ন ভাই পড়ে কি হলো।
অয়ন,,,,, আমি দেখতে পেলাম আমার পিছনে একটা লোক দাঁড়ানো, সাদা সার্ট পাইজামা পড়া। আমি তাকে দেখে বললাম,,,, কে আপনি।
লোকটি সোজা ভাবে উত্তর দিলো,,,, আমি এই রুম দেখা শুনা করি।
,,,ওহহ ওয়ার্ডবয়,, আচ্ছা একটু চেক করোতো কিসের আওয়াজ আসছে, আমি আসছি। আপনার নামটা কি।
,,,,,,দুলাল
,,,,ওহহ আচ্ছা।
বলে আমি চলে যায় বাসায়।
রিয়ান,,,এটা কোনো ভুতের গল্প হলো।
মারু,,,,,এটা তোহ নরমাল ঘটনা।
সায়ন,,,,, দূররর একটু ভয় লাগলো না।
অয়ন,,,,,পুরোটা আগে শুনে নে,, আমি পরের দিন সকালে গিয়ে জিজ্ঞেস করি দুলাল নামের ওয়ার্ডবয় কোথায়। তখন আমি জানতে পারি এই নামের কেও এই হসপিটালে কাজ করে না।
আলো,,,,,কিহহ আমাদের হসপিটালে এমন জ্বীন-ভূত আছে আগে জানতাম না। এখন তো আমার ভয় লাগছে, রাতে কতো বার গিয়েছি মর্গে।
সায়ন চোখ ছোট ছোট করে অয়নের দিকে বলে তাকিয়ে ,,,,,ভাই ঐখানে এসব আজেবাজে জিনিস আছে এটা জেনেও আমাকে মর্গের পাশের রুমটাতে ভর্তি করিয়েছিলে।
প্রহর,,,,,, রিয়ান হসপিটালটা তোমার বাসার পাশেই তোহ তাই না।
রিয়ান একটা ডোগ গিলে বলে,,,, হুমম তো কি হয়েছে। এসব দেখে ভয় পাই নাকি। আচ্ছা এখন আমি গল্প বলি।
রিয়ান ভয়ানক গলায় কিছু ভুতের গল্প শুনায়। রিয়ানের গল্প শুনে সবাই একটু একটু ভয় তোহ অবশ্যই পেয়েছে। রিয়ানের বলা শেষ হলে প্রহর বলে,,,,দূরর এসব গল্পে হয়, এটা তোহ আমার কোনো ভুতের গল্পের মতো লাগলো। বাস্তবে এমন হয় নাকি।
রিয়ান,,,,,, এই জন্য লেখকদের কিছু শুনাইতে নেই। ওদের সব গল্পই মনে হয়।
প্রহর,,,, আচ্ছা এখন আমি শুনায় তাহলে। কিছুদিন আগের ঘটনা, আমি গাড়ি নিয় যাচ্ছিলাম।
মারু,,,,,এখন আপনিও এমন অদ্ভুত কন্ঠে বলবেন।
প্রহর,,,,,এমন কন্ঠে বললে ভুতের গল্প বলছি এমন একটা ফিল আসে। আচ্ছা শুনো,, গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলাম, ঐ যে রিয়ানদের বাসায় যাওয়ার সময় একটা ব্রিজ পড়ে না সামনে। ঐদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম। সবসময় তো ঐ ব্রিজ একদম ফাঁকা থাকে।
আর ঐ রাতেও ব্রিজ একদম ফাঁকা ছিলো, এমন অন্ধকার ছিলো। রাস্তায় লাইটের আলোতে হালকা দেখা যাচ্ছিলো। আমার গাড়ি নিয়ে যাচ্ছি হঠাৎ একটা সাদা কাপড় পড়া লোক দাঁড়িয়ে ছিলো সামনে। ঐটা ছেলে ছিলো নাকি মেয়ে বলতে পারি না।
অদ্ভুত চেহেরা ছিলো, চুল গুলো লম্বা অগোছালো, চোখ গুলো লাল টুক টুকে, মুখটা কেমন পুড়া ঝলসানো ছিলো। পা দেখা যাচ্ছিলো না।
রিয়ান,,,,দূররর কেমন দেখতে ছিলো এতো ডিটেলে বলা লাগে।
প্রহর,,,,আমি লেখক তো তাই একদম বর্ণনা সহ বলি।
রিয়ান,,,বর্ণনা বলা লাগবে না৷ পড়ে কি হয়ছে সেটা বলো।
প্রহর,,,,,,হঠাৎ করেই সেই অদ্ভুত কিছু একটা আমার গাড়ির দিকে জোরে দৌড়ে আসতে লাগলো। আমি স্প্রিটে গাড়ি চালিয়ে যেতে থাকি ঐটা আমার গাড়ির পিছনে পিছনে দৌড়াচ্ছিলো, মনে হচ্ছিল এখনি ধরে ফেলবে, সেটা হঠাৎ করেই আমার গাড়ির পিছন থেকে সামনে এসে পড়ে আর আমি তাড়াতাড়ি ব্রেক করি।
ঐটা আমার দিকে যেভাবে দেখছিলো মনে হচ্ছিল এখনি মেরে ফেলবে। আমি তাড়াতাড়ি সূরা জ্বীন পড়া শুরু করি, পরে ঐটা চলে যায় আর আমি তাড়াতাড়ি চলে যায়। এই সূরাটা না পারলে আজ হয়তো আমি এখানে থাকতাম না।
রিয়ান ভয়ে জোর করে হেঁসে বলে,,,,, তুমি গল্প বানিয়ে বলছো তাই না।
,,,,আমি গল্প বানিয়ে কেনো বলবো, এটা সত্যি ঘটনা।
রিয়ান,,,,দূরর মিয়া কিসের সত্যি ঘটনা, আমার প্রতিদিন ঐ রাস্তা দিয়ে যাওয়া লাগে।
প্রহর,,,,, তুমি কোনো দিন রাত ১২/১ টার দিকে গেছো।
,,,না তা যায়নি কখনো, সব সময় মানুষ তোহ ছিলো কিছু।
অয়ন,,,,,,তাহলে যেদিন থাকবে না, ঐদিন তোমার ঐটাকে দেখার সুযোগ হতে পারে।
সায়ন,,,,,প্রহর ভাই আর অয়ন ভাই তোমাদের সাথে এমন হয়েছে কই আমাকে তোহ বলোনি কোনো দিন।
প্রহর একটু ইশারা দিয়ে বলে,,,, আরে এসব কি বলার মতো কথা।
সায়ন প্রহরের মতলব বুঝে বলে,,, হুমম তাও কথা।
আমি অয়নের দিকে তাকিয়ে তার হাত ধরে বলি,,,তুমি আর ঐ মর্গে যাবে না, আর বেশি রাত পর্যন্ত ঐ হসপিটালে থাকার দরকার নেয়। শুনেছি ওদের নজর যার উপর এক বার পরে যায়, তাদের পিছা সহজে তারা ছাড়ে না।
অয়ন আমার গাল টিপে দিয়ে বলে,,,, ওরে আমার টুনটুনি আমার কিছু হবে না, আমি সাবধানে থাকবো ঠিক আছে।
,,,হুমম,,,আর প্রহর আপনিও সাবধানে থাকবেন কিন্তু।
প্রহর,,,,, হুমম থাকবো।
সায়ন আলোর কানের কাছে গিয়ে বলে,,,,,, তুমিও সাবধানে থাকবে কিন্তু, কারন জ্বীনরা সুন্দরী মেয়েদের পিছনে বেশি পড়ে।
আলো ভয়ে সায়নের দিকে তাকিয়ে শুধু হুমমম বলে। সবাই আরো কিছু ক্ষন বসে গল্প করতে থাকে। সায়ন হালকা হালকা ঝিমিয়ে পড়ছি। মেডিসিনের কারনে এমন হচ্ছে। আলো সায়নকে ধরে বলে,,,, তোমার আর বসে থাকা লাগবে না, চলো তোমাকে রুমে শুয়িয়ে দিয়ে আসি।
সায়ন,,, আরো কিছু ক্ষন থাকি না।
অয়ন,,,সায়ন চুপচাপ নিজের রুমে যা।
সায়ন আর কিছু না বলে উঠে দাঁড়িয়ে মন খারাপ করে তাকিয়ে থাকে। আলো সায়নের হাত ধরে বলে,,,এভাবে তাকিয়ে কোনো লাভ নেয় চলো।
বলে সায়নে ধরে নিয়ে যায়। রিয়ান ভাবছে আর কি গল্প বলা যায়। অয়ন আর প্রহর ইশারা করে, মারুকে চুপ থাকতে বলে, মারুর হাত ধরে দৌড়ে নিচে চলে যায়, সাথে প্রহর ও দৌড় দেয়। রিয়ান পিছনে তাকিয়ে তাদের দৌড়ে যেতে দেখলে, সেও ভয়ে আশেপাশে তাকিয়ে চিৎকার করে দৌড় দেয়।
অয়ন প্রহর তাদের রুমের সামনে এসে দাঁড়ায়। রিয়ান ও দৌড়ে এসে তাদের সাথে দাঁড়ায়, আর ভয়ে হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে বলে,,,, এভাবে দৌড় দিলে কেনো।
অয়ন স্বাভাবিক ভাব করে বলে,,,,, কোথায় আমরা দৌড় দিলাম, আমরা তো স্বাভাবিক ভাবে হেঁটে আসলাম। তাই না প্রহর।
প্রহর,,,হুমম তাই তো, এক দম স্বাভাবিক ভাবে হেঁটে এসেছি।
রিয়ান,,,,হুমম সেটা তো আমি দেখেছিই। এখনি আমার জান বেরিয়ে যেতো।
প্রহর,,,,,, হুমমম,,, আচ্ছা আর গল্প করবো না,, রিয়ান তুমি বাসায় যাবে না।
রিয়ান,,,,হুমম তাহলে আমি এখনি বেরিয়ে যায়, রাত তো আর কম হলো না।
অয়ন আর প্রহর দুদিক দিয়ে রিয়ানের কাঁধে হাত রাখে, অয়ন আগে বলে,,, সাবধানে যেয়ো, সামনেই তো আবার হসপিটাল।
প্রহর,,,,, আর রাস্তাটা আল্লাহ নাম নিয়ে পাড় হয়ো, এখন তোহ মনে হয়না মানুষ আছে।
রিয়ান দুজনের হাত সরিয়ে বলে,,,, দূরর এগুলো বলার কোনো দরকার ছিলো। এখন আমি যাবো কিভাবে। মারু কিছু বল, আমি আজ যাবো না। এমনি আমি হেন্সাম তার উপর আমি তো আবার সূরা জ্বীন ও পারি না।
প্রহর আর অয়ন দুজন দুজনকে দেখে হেঁসে বলে,,,, ঠিক আছে তাহলে তুমি ঐ রুমটাতে শুয়ে পড়ো। কাল রাতে যেয়ো।
রিয়ান,,,হুমম ঠিক আছে,আমি গিয়ে শুয়ে পড়লাম।
,,,হুমম
সবাই আমরা সবার রুমে যায়।
আলো সায়নকে শুয়িয়ে দিয়ে একটু ভয়ে বলছে,, আমি এখন আসি।
সায়ন উঠে বসে বলে,,, এতো রাতে কিভাবে যাবে,, চলো আমি তোমাকে দিয়ে আসছি।
আলো,,,না লাগবে না, তুমি তো চোখি ঠিক মতো খুলতে পারছো না, তাছাড়া আমি এর আগেও অনেক রাতে রাস্তায় চলাচল করেছি।
সায়ন,,,, হুমম কিন্তু আজ ভয় পাচ্ছো। এক কাজ করো তুমি আজ এখানে থেকে যাও,, আমার পাশের রুমটা খালি আছে, আর পরিষ্কার ও। তুমি সেখানে থেকে যাও।
আলো,,,, না না আমি ঠিক মেনেজ করে নিতে পারবো।
আমি এসে দরজায় টুকা দিয়ে বললাম আসতে পারি।সায়ন তাকিয়ে বলে,,,ভাবী আসো।
আমি এসে বলি,,,,, আলো তোমাকে আজ যেতে হবে না, পাশের রুমটাতে থেকে যাও, আর কিছু, লাগলে আমাকে জানাবে।
সায়ন,,,,, ভাবী আমিও এটাই বলছিলাম।
আমি মুচকি হেসে বলি,,,তাই নাকি হুমম।
আলো,,,, ভাবী আমি চলে যেতে পারবো।
,,,এতো রাতে যাওয়ার কোনো দরকার নেয়। চলো রুমে ঘুমাবে।
আলো আর না করলো না, সায়নকে বিদায় জানিয়ে আলোকে তার রুমে দিয়ে আমি আমার রুমে চলে গেলাম। আমি রুমে যেতেই অয়ন আমাকে কোলে উঠিয়ে কয়েকটা ঘুরান দেয়। আমি অয়নকে শক্ত করে ধরে বলি,,,, আরে আরে, কি করছো।
অয়ন আমাকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে বলে,,,তোমাকে না আমি আমার বেবিকে কোলে উঠিয়েছি।
,,,আচ্ছা,,,বদমাইস।
অয়ন আমার দিকে অন্য রকম ভাবে তাকিয়ে, আমার দিকে এগোতে থাকে। আমি আমার একটা আঙ্গুল দিয়ে অয়নের কপালে ধরে উল্টো দিকে ঢেলে সরিয়ে দিয়ে বলি,,,,,, কি হচ্ছে এসব হুমম।
অয়ন আমার হাত ধরে বলে,,,,, হয়নি তো কিছুই এখন হবে।
বলে আমার কাছে এসে আমার দুহাত বিছানার সাথে লাগিয়ে কিস করতে থাকে।
,,,,,
প্রহর লুকিয়ে গিয়ে রিয়ান এর দরজার সাইডে একটা ছোট বক্স রেখে দেয়, যেখন থেকে কিছু ক্ষন পর পর ভয়ানক আওয়াজ বের হবে। এরা লুকিয়ে রেখে দিয়ে প্রহর চলে যায়।
রিয়ান ঘুমানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু এমনি তার ভয়ে ঘুম আসছে না। তার মধ্যে এই আওয়াজ শুনে সে লাফ দিয়ে উঠে বসে। আর কে কে করতে থাকে। কোনো জবাব না পেয়ে আর এমন আওয়াজ শুনে ভয়ে প্রায় রিয়ানের খারাপ অবস্থা।
কিছু ক্ষন পরে প্রহরের দরহা কে বার বার ধাক্কাচ্ছে। প্রহর দরজা খুলতেই রিয়ান তাড়াতাড়ি তার রুমে ডুকে গিয়ে সোজা তার বিছানায় শুয়ে পড়ে। প্রহর কিছু বুঝে উঠার আগেই রিয়ান এসে শুয়ে পড়ে। প্রহর দরজায় দাঁড়িয়ে আছে।
চলবে,,,,,,,,
ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট করতে ভুলবেন না ধন্যবাদ।