আজও বৃষ্টি নামুক পর্ব-২১+২২

0
356

#আজও_বৃষ্টি_নামুক❤️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম❤️
— পর্বঃ২১
_________________

শুভ্র রঙের পাঞ্জাবি পড়েই পাত্রীপক্ষের সামনে বসে আছে অপূর্ব। খুব স্বাভাবিক ভংগিতেই বসে বসে মোবাইল দেখছে সে। একটু লজ্জা লজ্জা ভাব থাকার দরকার থাকলেও অপূর্বের মাঝে বিন্দুমাত্র কোনো রিয়েকশন নেই। যেন পাত্রীপক্ষ দেখতে আসা এটা খুব স্বাভাবিক বিষয়। অন্যদিকে অপূর্বের পাশে বসে থাকা আকিব লজ্জায় লাল নীল বেগুনি হচ্ছে এতদিন শুনেছে পাত্রপক্ষ যায় পাত্রীকে দেখতে আর আজকে কিনা পাত্রী পক্ষ এসেছে পাত্রকে দেখতে। মেয়ের নাম সুইটি। ঘটকের নাম কেদার আলী। বর্তমানে সে এখানে উপস্থিত নেই। মেয়ের বাবা একজন বিজনেস ম্যান আর মেয়ে বর্তমানে অর্নাস থার্ড ইয়ারে পড়ছে। আজ থেকে ঠিক দু’দিন আগে রাস্তা দিয়ে হাঁটার পথে অপূর্বকে দেখে সে। আর দেখেই ভালো লেগে যায়। আড়ালে অপূর্বের একটা ছবি তুলে বাবাকে দেখায় ব্যস তারপর ঘটকের সাহায্যে অপূর্বের বায়োডাটা বের করে। অপূর্ব যে একজন রাজনীতিবিদ তাও জানে সবাই। এতে নাকি তাদের কোনো আপত্তি নেই। সর্বপ্রথম মেয়ের বাবা অপূর্বের বাবার সাথে কথা বলে তাও কাল রাত দুটো বাজে। অপূর্বের বাবা তো চরম অবাক কতক্ষন আগেও তার ছেলে বিয়ে নিয়ে কথা বললো আর এর মধ্যে মেয়েও হাজির। অপূর্বের বাবা কি ভেবে যেন হা বলে দেয়। আর মেয়ে পক্ষরাই এখানে আসতে চায়। সেও রাজি হয়ে যায়।’

সাদা আর সবুজের কম্বিনেশনের একটা চুড়িদার পড়েছে সুইটি, খোলা চুল, উজ্জ্বল ফর্সা গায়ের রঙ, ঠোঁটে রয়েছে তার মিষ্টি হাসি আর চোখ দুটো অপূর্বের মুখের দিকে। সুইটি জানে না দু’দিন আগে ঠিক কি এমন দেখলো এই অপূর্বের মাঝে যে সরাসরি ভালোবেসে ফেললো। অপূর্বের সোজাসুজিই বসে আছে অয়ন মিট মিট হাসছে সে। অপূর্বের বাবা নেই বর্তমানে। তাই অপূর্বও চুপচাপ বসে বসে তার বাবার অপেক্ষায় করছে। অপূর্বের বাবা রুমে যে বসে আছে এখনও নামছেই না। অপূর্বের ধৈর্য্যের সীমা যাচ্ছে তাকে যেতে হবে। এক’ঘন্টা পর হওয়া মিটিংটা তিন’ঘন্টা পর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে। তার পৌঁছাতে দু’ঘন্টা লাগতে পারে কারন এখন প্রায় এগারোটা বাজে এক ঘন্টা পর বারোটা বাজবে আর দুপুরের এই সময় রাস্তায় প্রচুর জ্যাম থাকে তাই তার যেতে সময় লাগবে। অপূর্বের ধৈর্য্যের সীমা যাচ্ছে ধীরে ধীরে। মেয়ের দিকে এখন পর্যন্ত তাকায় নি অপূর্ব। মেয়েকে মাঝখানে রেখে তার দু’পাশে বসে আছে আছে পাত্রীর বাবা মা। কিভাবে কি শুরু করবে তাই বুঝচ্ছে না তারা তারওপর পাত্রের বাবার খবর নেই।’

অপূর্ব খানিকটা বিরক্ত নিয়ে মেসেজ পাঠালো অয়নকে। লিখলো,

‘ বাবাকে ডাক অয়ন আমার কাছে সময় বেশি নেই, তারপর ছেড়ে ছুড়ে চলে গেলে বুঝতেই পারছিস।’

মেসেজ পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে অয়ন দেখলো। খানিকটা বিচলিত হয়েই বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললো,

‘ আপনারা বসুন আমি এক্ষুনি বাবাকে ডেকে আনছি?’

কিন্তু অয়নের আর যাওয়া লাগলো না এরই মাঝে হাজির হলো অপূর্বের বাবা। চোখে মুখে খানিকটা বিষ্ময়ের ছোঁয়া। অপূর্বের দিকে তাকালো অপূর্বের বাবা। ছেলের অবস্থাটা বোঝার চেষ্টা করছেন তিনি, কাল চালবাজিতে ছেলের পারমিশন না নিয়েই পাত্রীপক্ষদের আসতে তো বলে দিল এখন কি হবে তাই বোঝার চেষ্টা করছেন উনি। এতক্ষন ছেলের রিয়েকশন কেমন হবে এটা ভেবেই অপূর্বের বাবা আসেন নি নিচে। তার ছেলের যে স্বভাব কি করে কে জানে।’

এরই মাঝে অপূর্বের মাও পাত্রীপক্ষদের সামনে নাস্তা পানি রাখলেন। সাথে খেতেও বললেন। মেয়ের বাবা মা মুচকি হাসলেন এতে। অয়ন তার বাবাকে নিচে আসতে দেখে বললো,

‘ ওই তো বাবা এসে পড়েছে?’

সঙ্গে সঙ্গে সবার দৃষ্টি আটকালো অপূর্বের বাবার দিকে। অপূর্বও তার ফোন থেকে দৃষ্টি সরিয়ে তাকালো তার বাবার দিকে।’

এদিকে,

অপূর্বের বাবার সবার দৃষ্টি যেমন তেমন অপূর্বের দৃষ্টি দেখেই বুকের ভিতর কুটকুট করে উঠলো। যদিও অপূর্ব খুব স্বাভাবিক দৃষ্টি নিয়েই তাকিয়েছে তার বাবার দিকে। অপূর্বের বাবা সোজা হলেন, নিজেকে করলেন শান্ত। আশ্চর্য! ছেলেকে কি সে ভয় পাচ্ছে নাকি। আর অপূর্ব তো নিজেই কাল রাতে বিয়ের কথা বললো। তাহলে! অপূর্বের বাবা নানাবিদ ভাবতে ভাবতে এগিয়ে গেল সবার কাছে। উনি সামনে যেতেই মেয়ের বাবা ফজলুল মিয়া বললেন,

‘ আসসালামু আলাইকুম।’

উওরে শুঁকনো হেঁসে এগিয়ে এসে থর থর করে বললো অপূর্বের বাবা,

‘ ওলাইকুম আসসালাম ভালো আছেন তো আপনারা? বাসা চিনে আসতে কোনো অসুবিধা হয় নি তো?’

অপূর্বের বাবার কথা শুনে ফজলুল মিয়া মুচকি হাসলেন। তারপর বললো,

‘ না না অসুবিধা কিসের। আপনাদের এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষই তো অপূর্বকে চিনে নাম বলতেই দেখিয়ে দিল।’

উওরে হাল্কা হেঁসে বললো অপূর্বের বাবা,

‘ ওহ আচ্ছা, এই নাস্তাটুকু করে নিন আগে।’

কিঞ্চিত হাসলেন ফজলুল মিয়া। বললেন,

‘ ঠিক আছে আগে কাজের কথায় আসা যাক।’

এবার অপূর্ব নড়েচড়ে উঠলো। কোনো দ্বিধা ছাড়াই বললো,

‘ ওনার সাথে কি কাজের কথা বলবেন যা বলার আমার সাথে বলুন?’

চোখ মুখ ছোট হলো অপূর্বের বাবা। এবার বুঝি গেলেন তিনি। অপূর্বের কথা শুনে ফজলুল মিয়া বেশি না ভেবে বললো,

‘ তোমার বাবার সাথে বললে হবে না।’

‘ বিয়েটা কি আমার বাবা করবে যে বাবার সাথে বললেই হয়ে যাবে।’

চোখমুখ আড়ষ্টে উঠলো ফজলুল মিয়ার। আর সুইটি হা হয়ে তাকিয়ে রইলো অপূর্বের মুখ পানে যেন খুব ভালো লেগেছে অপূর্বের কথাটা। অপূর্বের বাবা কি বলবে বুঝতে পারছে না। অপূর্ব তার বাবার দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ তুমি এনাদের কেন আসতে বলেছো বাবা? আমি কি বলেছি আমি ওনার মেয়েকে বিয়ে করবো! নাকি আমি সিঙ্গেল আছি এটা তোমার ভালো লাগছে না।’

অপূর্বের এবারের কথা শুনে ফজলুল মিয়া বললেন,

‘ তোমার কি আমার মেয়েকে পছন্দ হয় নি অপূর্ব?’

অপূর্ব এবার তাকালো সুইটির দিকে। সঙ্গে সঙ্গে চমকে উঠে নিজের ধ্যান ভাঙা মুহূর্ত থেকে বেরিয়ে এসে সোজা হয়ে বসলো সুইটি। অপূর্ব দৃষ্টি সরালো। বললো,

‘ দেখুন আপনার মেয়ে যথেষ্ট সুন্দরী কিন্তু আমার কেন যেন পছন্দ হয় নি। আমার বাবার হয়তো আপনার মেয়েকে পছন্দ হয়েছে?’

বলেই অপূর্ব তাকালো তার বাবার দিকে। অপূর্বের এই কথাটার অর্থ পাত্রীপক্ষরা বুঝতে না পারলেও অপূর্বের বাবা ঠিকই বুঝেছেন তাই খানিকটা ধমকের স্বরে বললো,

‘ কি হচ্ছে অপূর্ব তোমার মা সামনে আছে তো।’

‘ তো কি, তুমি যদি আমার মাকে রেখে অন্য মেয়ের দিকে তাকাতে পারো তাহলে আমি কেন বলতে পারবো না। ওহ গাছের টাও খাবে আবার তলার টাও কুড়াবে।’

ছেলের কথায় চোখ মুখ কুঁচকে গেল অপূর্বের বাবা। খানিকটা গম্ভীর কণ্ঠে বললো,

‘ তুমি কিন্তু বেশি বেশি করছো অপূর্ব?’

‘ তো তোমার সাথে কম কম করবো এটা ভেবেছিলে নাকি তুমি আমাকে না বলে ওনাদের কি করে আসতে বললে। কোথাও শুনেছো পাত্রী পক্ষ পাত্রকে দেখতে আসে।’

এবার এদের মাঝখানে কথা বলে উঠল ফজলুল মিয়া,

‘ তোমার বাবার কোনো দোষ নেই অপূর্ব আমি নিজেই বলেছিলাম আমরা যাবো তোমাদের বাড়ি।’

অপূর্ব তাকালো সুইটির বাবার মুখের দিকে। তারপর বললো,

‘ দেখুন আঙ্কেল সরাসরি একটা কথা বলি আমি মানুষটা ভালো না। আমি একজন রাজনীতিবিদ এটা হয়তো জেনেই এসেছেন। সত্যি বলতে আমি এখন কোনো বিয়ে টিয়ে করছি না, আর যদি করেও থাকি তাহলে একটা পাগলী মেয়েকে বিয়ে করবো বাবার সাথে এমনই কথা হয়েছে। আর আপনার মেয়ে মটেও সেই পাগলীদের কাতারে পড়ে না তাহলে বুঝতেই পারছেন আমার উওর কি?’

অপূর্বের শেষের কথাগুলো শুনে হা হয়ে গেলেন সুইটির বাবা মা। এতক্ষণ পর সুইটির মা মুখ খুললেন বললেন,

‘ এসব কি বলছো তুমি অপূর্ব?’

উওরে অপূর্ব তার বাবাকে দেখিয়ে দিয়ে বললো,

‘ ঠিকই বলছি, কেন বাবা আপনাদের কিছু বলে নি।’

অপূর্বের কথা শুনে সুইটির বাবা মা না বোধক মাথা নাড়ায়। যা দেখে অপূর্ব বলে,

‘ কি করে বলবে বলুন বাবা তো আর আমায় বোঝে না। যাইহোক আমায় যেতে হবে হাতে সময় খুব কম। আপনারা খেয়েধেয়ে সাবধানে বাড়ি চলে যাবেন।’

বলেই সুইটির বাবা মুখের দিকে তাকালো স্বাভাবিক গলায় বললো অপূর্ব,

‘ দেখুন আঙ্কেল আপনার মেয়ে আপনার সম্পদ, এই সম্পদকে যার তার হাতেই তুলে দিবেন এমনটা তো হতে দেওয়া যায় না। মেয়েকে তার সাথেই বিয়ে দিন যে আপনার মেয়েকে মন থেকে চাইবে, যে ওকে পেলে নিজেকে ধন্য মনে করবে। আশা করি আমার কথাটা বুঝেছেন ধন্যবাদ।’

বলেই টেবিলের উপর থেকে হাত ঘড়িটা নিলো অপূর্ব তারপর আকিবকে উদ্দেশ্য করে বললো,

‘ আকিব চলো,

এতটুকু বলে অপূর্ব তার বাবাকে উদ্দেশ্য করে বললো,

‘ রাতে বাড়ি আসতে দেও তোমার সাথে সাবানা আন্টি, ববিতা আন্টির ব্রেকআপ করছি দাঁড়াও। আমার হাতে টাইম নেই না হলে আজ তোমার হচ্ছিল বাবা যাই হোক দুটো বিয়ার কিনে রেখো রাতে ছাঁদে বসে একসাথে খাবো তারপরই তোমার পাগলী বউমাকে খুঁজে বের করবো কেমন।’

বলেই আর দাঁড়ালো না অপূর্ব। চলে গেল বাহিরে আর বাকি সবাই জাস্ট হা হয়ে তাকিয়ে রইলো অপূর্বের যাওয়ার পানে ছেলেটা একটু বেখালিভাবে বাবার সাথে কথা বললেও কিছু কথা সত্যও বলেছে।’

আকিব নীরব দর্শকের মতো শুধু দেখেই গেল বাবা, ছেলে আর মেয়ের বাবার কাহিনি। এরই মাঝে হাক পড়লো আকিবের অপূর্ব ডাকছে তাকে। আকিব আর দাঁড়ালো না টেবিলের ওপর থেকে একটা মিষ্টি হাতে নিয়ে খেতে খেতে যেতে যেতে পাত্রী পক্ষদের উদ্দেশ্য করে বললো,

‘ খেয়ে ধেয়ে সাবধানে যাবেন কেমন। বাই বাই।’

বলেই ঘুরে এসে সুইটিকে উদ্দেশ্যের করে বললো,

‘ আর মিস সুইটি আপু অপূর্ব ভাইকে নিয়ে বেশি ভাববেন না কারন উনি কারো ভাবনায় থাকা খুব বেশি পছন্দ করে না।’

বলেই একপ্রকার দৌড়ে চলে গেল আকিব। আকিব যেতেই এবার অয়ন মুখ খুললো। তার বাবাকে উদ্দেশ্যে করে বললো,

‘ কি বাবা হুদাই এতক্ষণ সময় নষ্ট করলে। আমি জানতাম ভাই এমনটাই করবে। ধুরু খালি খালি টাইম ওয়েস্ট।’

বলে অয়নও চলে গেল। অয়ন যেতেই অপূর্বের মা বললো,

‘ তুমি তো জানো অপূর্ব কেমন কাজটা ঠিক হয় নি কিন্তু।’

উওরে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো অপূর্বের বাবা তার বউয়ের মুখের দিকে। না তার বউ সন্তান কেউ তার পক্ষ নিলো না, এরা কেউ ভালো না।’

অপূর্বের বাবার চাহনি দেখে টোটালি ইনগোর করে চলে গেলেন অপূর্বের মা।’

পরিশেষে শুধু রয়ে গেল পাত্রী, পাত্রীর বাবা, মা আর অপূর্বের বাবা। এরই মাঝে এগিয়ে আসলেন বিয়ের ঘটক কেদার আলী। বললেন,

‘ আমার আসতে দেরি হইনি তো আবার?’

উওরে সবাই এমন দৃষ্টিতে তাকালো ঘটকের দিকে যেন চোখ দিয়েই ওনাকে গিলে ফেলবে।’

____

দুপুরের সব রান্না কমপ্লিট করে গোসল করতে চলে গেল প্রিয়তা আর আয়মান। দুজনেই খুব আনন্দের সঙ্গে কাজ কমপ্লিট করেছে। আয়মান ছেলেটা মনের দিক থেকে খুবই ভালো আর মিশুক টাইপের। প্রিয়তার সাথে বেশ মিশে গেছে সে।’

অতঃপর প্রায় দুপুর আড়াইটার দিকে গ্র্যান্ডমা, প্রিয়তা আর আয়মান মিলে একসাথে লান্স সারলো হাসি ঠাট্টা আর আনন্দের সাথে। সময়টা যেন খুবই সুন্দর কাটলো তাদের।’

পরন্ত বিকেল! জানালার পর্দা বেয়ে ধেয়ে আসছে মৃদু বাতাস। মন জুড়ে খানিকটা বিষন্নতা। প্রিয়তা ভাবছে গভীর ভাবনায় মগ্ন হচ্ছে সে অপূর্বকে নিয়ে। ছেলেটার হুট করে আসা আবার চলে যাওয়াটা এখনও ঠিক নিতে পারলো না প্রিয়তা। কেন যেন কালকের অপূর্বকে কেমন একটু লাগলো প্রিয়তার। এমন সময় হঠাৎই প্রিয়তার রুমের বাহিরের দরজাটা নক করলো কেউ এতে যেন খানিকটা চমকে উঠলো প্রিয়তা। তবে বেশি ভাবলো না মাথায় ওড়না মুড়িয়ে চটজলদি এগিয়ে গেল দরজার দিকে। দরজা খুলতেই একজন ডেলিভারি বয়কে দেখে অবাক হলো প্রিয়তা। বললো,

‘ জ্বী বলুন!’

উওরে সামনের ছেলেটি প্রিয়তার হাতে একটা পার্সেলের বাক্স এগিয়ে দিয়ে বললো,

‘ আপনার পার্সেল ম্যাম।’

প্রিয়তা যেন চরম অবাক হলো। বললো,

‘ আমার পার্সেল কে পাঠালো?’

উওরে ছেলেটি বললো,

‘ নামটা জানা নেই ম্যাম আপনি পার্সেলটা ধরুন আর এই নিন চিরকুট হয়তো এটা পড়লে আপনি সবটা জানতে পারবেন। আমার একটু তারা আছে একটু দ্রুত করবেন প্লিজ।’

বলেই প্রিয়তার দিকে একটা কাগজ এগিয়ে দিয়ে ওর হাতের একটা সাইন নিয়ে চলে গেল বয়টি। আর প্রিয়তা চেয়েও কিছু বলতে পারলো না। একবার পার্সেল তো একবার চিরকুটটা দেখলো সে। মনে মনে বললো,

‘ এটা কে পাঠালো আমায়?’

প্রিয়তা পার্সেলের বাক্সটা বিছানার উপর রেখে চিরকুটটা খুললো। একটা ভাজ খুলতেই সেখানে লেখা দেখলো। কেউ একজন লিখেছে তাকে,

‘ তুমি বড্ড বাড়াবাড়ি করছো মেয়ে? দেখা হোক সব বাড়াবাড়ি কমিয়ে দিবো একদম।’

ব্যাস এতটুকুই লেখা প্রিয়তা যেন চরম চমকালো। এ কেমন কথা আর সে কি বাড়াবাড়ি করেছে?অদ্ভুত তো!’

#চলবে…..

#আজও_বৃষ্টি_নামুক❤️
#লেখিকা:#তানজিল_মীম❤️
— পর্বঃ২২
_________________

অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে প্রিয়তা একটু আগে দিয়ে যাওয়া এক ডেলিভারি বয়ের পার্সেলের ভিতরে থাকা গিফটটার দিকে কারন কেউ তাকে মোবাইল পাঠিয়েছে। তাও নরমাল নয় বেশ নামি দামি কোয়ালিটির মোবাইল। প্রিয়তা থ মেরে তাকিয়ে রইলো মোবাইলটার দিকে তাকে মোবাইল পাঠালো কে? প্রিয়তা মোবাইলটা হাতে নিলো এরই মাঝে মোবাইলে একটা মেসেজ আসলো কেউ লিখেছে তাকে,

‘ তুমি বড্ড খামখেয়ালি আর ছন্ন ছাড়ায় গড়া মেয়ে, এত ভাবলে চলে। আজ থেকে এই মোবাইল নামক যন্ত্র দিয়েই তোমার বোন আর চাচার সাথে কথা বলবে কেমন। আর হা আমায় নিয়ে বেশি ভেবো না মেয়ে আমি আবার কারো ভাবনায় থাকা পছন্দ করি না।’

প্রিয়তা ফের চমকালো আশ্চর্য এ কে? তার সম্পর্কে এত কিছু জানলো কি করে বোন চাচা। মোবাইলও দিয়েছে আবার সিমও কিনে দিয়েছে। প্রিয়তা কি ভেবে যেন মেসেজের রিপ্লাই হিসেবে লিখলো,

‘ আপনি কে বলুন তো?’

মেসেজ তো দিলো কিন্তু রিপ্লাই কি আর আসলো, আসলো না তো এমনকি অপর প্রান্তের ব্যক্তিটি প্রিয়তার মেসেজের ভিতরে ঢুকে সিনও করে নি। শুধু নোটিফিকেশন আসাটাই দেখেছে। আনমনে মুচকিও হেঁসেছে সে তবে রিপ্লাই আর করে নি।’

___

– হঠাৎ একদিন তোমার নামে,
লিখবো খোলা চিঠি
মন খারাপের বিজ্ঞাপন ভেঙে
আসবে কাছে ঠিকই!’

– হঠাৎ করে প্রেম হবে
কথোপকথন নিয়ে
আকৃষ্টতায় মন আঁকাবে
করবো দুজন বিয়ে!’

– হঠাৎ করে জীবন ঘুরবে
আসবে নতুন স্মৃতি
কল্পনাতেই বাস্তব গড়বে
হবে নানান নীতি!’

– হঠাৎ একদিন তোমার নামে
লিখবো খোলা চিঠি
মন খারাপের বিজ্ঞাপন ভেঙে
আসবে কাছে ঠিকই!’

নিঝুম রাত! চারিদিকে নিস্তব্ধতার হাহাকার। বাড়ির সামনের ল্যামপোস্টটাও আজ নীরব। কারন সন্ধ্যা থেকে কোনো এক কারনে জ্বলছে না সে হয়তো নষ্ট হয়েছে নয়তো তারে সমস্যা হয়েছে।
তবে খারাপ না, প্রকৃতিরা পুরো অন্ধকারে ঘেরা আজ। আর এই অন্ধকারের মাঝেই হাতে বিয়ার, গায়ে জড়ানো ইয়োলো রঙের টিশার্ট, সাদা প্যান্ট পরিধিত এক সুদর্শন যুবক আনমনেই উপরের কাব্য মিলানো কিছু অগোছালো কবিতাটা গেয়ে উঠলো। যুবকটি আর কেউ নয় একজন রাজনীতিবিদ নাম অপূর্ব। সে নিজেও জানে না হুট করে এমন কবিতা কি করে গেয়ে উঠলো। অপূর্ব হাসে, ইদানীং নিজের ওপর খানিকটা পরিবর্তন লক্ষ করছে অপূর্ব, হুটহাট কেন যেন হাসি পায় তার, প্রিয়তা নামক সেই মেয়েটিকে নিয়ে খুব ভাবতে ইচ্ছে করে। কথা বলতে মন চায়, কিন্তু বলে না। অপূর্ব বুঝতে পারছে ভালোবাসা নামক এক কঠিন ব্যামো ধীরে ধীরে তাকে আসক্ত করছে। কিন্তু এই আসক্তিটা বেশি ঘটে গেলে তারই তো বিপদ। অপূর্ব চেয়েও কেন যেন নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে না, প্রিয়তা নামক রমনীকে নিয়ে ভাবনাটা বাদ দিতে পারছে না।’

আচ্ছা এই প্রেম, ভালোবাসা, মেয়ে এই তিনটা জিনিস জীবনে না আসলে কি খুব খারাপ হয়ে যেত। হতো না তো উল্টো প্রেম, ভালোবাসা, মেয়ে জীবনে আসলেই যত ভেজাল। অপূর্ব দীর্ঘ শ্বাস ফেললো। জীবনের এক অদ্ভুত জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে সে। মাথা, মন, মস্তিষ্ক সব এলেমেলো হচ্ছে অপূর্বের। এই বাবাটা যে এখনও কেন আসছে না এটাই বুঝচ্ছে না অপূর্ব। বাবার সাথে দুই তিন লাইন ত্যাড়া ত্যাড়া কথা বললেই অপূর্বের উদাসীন মনটা বোধহয় ঠিক হতো। অপূর্ব বিয়ারে চুমুক দিলো। মোবাইলটা হাতে নিয়ে বাবাকে একটা মেসেজ দিলো। লিখলো,

‘ তুমি কি উপরে আসবে বাবা নাকি আমি নিচে গিয়ে তোমায় কোলে করে নিয়ে আসবো।’

মেসেজ পাঠানোর তিন সেকেন্ডের মাথাতেই রিপ্লাই আসলো। লিখেছেন অপূর্বের বাবা,

‘ বদমাশ ছেলে আসছি দাঁড়াও, আমায় কোলে তুলতে পারবে তুমি। খালি বড় বড় কথা।’

অপূর্ব হাসে তার বাবার মেসেজ দেখে। আবারও লিখে,

‘ তুমি চাইলে আমি কোলে নিলেও নিতে পারি বাবা শুধু কোমড় ভাঙলে দোষ নেই আমার।’

লিখেই হাল্কা হেঁসে মোবাইলটা রাখে পাশে। সে জানে তার বাবা আর কোনো রিপ্লাই দিবে না।
অপূর্ব আবারও বিয়ারে চুমুক দিয়ে আকাশ পানে তাকায়। খানিকটা নির্জীব কন্ঠে বলে,

‘ আমি তোমার নামে লিখবো কবিতা হয়ে যাবো কবি,
কি করে বলবো বলো, আমি আজও যত্নে রেখেছি তোমার একখানা ছবি!’❤️

সেই ছবি এমনই এক জায়গায় গাঁথা, যে ছবির মালিকও দেখতে পারবে না কখনও আবার যে ছবি আঁটকে রেখেছে সেও বের করে দেখাতে পারবে না কখনো।’

বুঝলে কিছু?”

আবার হাসে অপূর্ব না সে গেছে। ভালোবাসা বোধহয় তাকে পাগল বানিয়ে দিচ্ছে।’

হঠাৎই পায়ের শব্দ পাওয়া গেল অপূর্ব বুঝেছে তার বাবা আসছে। অপূর্ব নিজেকে সামলালো এসব আবেগ মাখা কথা বার্তা তার বাবা শুনলে হয়ে গেল। অপূর্ব আগের ভঙ্গিতেই বসে রইলো চুপচাপ। অশান্ত মনকে শান্ত করতে লাগলো মুহূর্তেই। এরই মাঝে তার পাশে এসে বসলো তার বাবা। খানিকটা গম্ভীর কণ্ঠে বললো,

‘ আমায় ডেকোছো কেন?’

‘ কেন আমি ডাকতে পারি না বুঝি।’

‘ না পারো না রোজ রোজ তোমার রাতের বেলা ডাকাডাকি আমার পছন্দ নয়।’

‘ পছন্দ কেমনে হবে আমি তো আর সাবানা আন্টি আর ববিতা নই।’

‘ তুমি কি আমায় এই ফালতু কথা বলার জন্য ডেকেছো অপূর্ব?’

‘ না।’

‘ তাহলে বলো জলদি ঘুমাতে যাবো।’

‘ কেন টিভিতে কি সাবানা আন্টির মুভি ছেড়ে এসেছো।’

উওরে চোখ রাঙিয়ে অপূর্বের দিকে তাকালো অপূর্বের বাবা। যা দেখে অপূর্ব বলে,

‘ একদম চোখ রাঙাবে না বাবা আমি তোমার চোখ রাঙায়ানোকে ভয় পায় নাকি।’

অপূর্বের কথা শুনে বেশ রাগী রাগী ভাব নিয়ে বললো অপূর্বের বাবা,

‘ তা পাবে কেন? তোমার মাথায় হাঙ্গাদিন খালি সাবানা আর ববিতাি ঘুরে।’

হাল্কা হাসে অপূর্ব। টপিক পাল্টে স্বাভাবিক কন্ঠে বলে,

‘ আজকের কাজটা কিন্তু তুমি একদমই ঠিক করো নি বাবা?’

‘ ঠিক করি নি মানে, ওমন মেয়ে আর পাওয়া যেত নাকি। মেয়েটা দেখতে কতটা সুন্দর। বলো তো।’

বাবার এবারের কথা শুনে এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকায় অপূর্ব তার বাবার দিকে। যা দেখে অপূর্ব কিছু বলার আগেই ধমকানো গলায় বলে উঠল অপূর্বের বাবা,

‘ একদম উল্টো পাল্টা কথা বলবে না অপূর্ব তাহলে কিন্তু তোমার খবর আছে।’

বাবার কথা শুনে উচ্চ স্বরে হাসে অপূর্ব। তারপর বলে,

‘ তাই নাকি তা কয়টার খবর দেখাবে বাবা দশটার নাকি ন’টার।’

অপূর্বের বাবা চুপ হয়ে যায়। না এই ছেলে তার চরম খারাপ। এর সাথে কথায় পারা যাবে না। বউ একটা আনলে তাকেও কথা শুনিয়ে শুনিয়ে মেরে দিবে। এর চেয়ে অপূর্ব বিয়েই না করুক।’
____

আজ ধরনী জুড়ে প্রবল বেগে বৃষ্টি নেমেছে। সেই ভার্সিটি ঢোকার পর থেকেই বৃষ্টি পড়ছে এখনও বন্ধ হওয়ার নাম গন্ধ নেই। ভার্সিটির এক কর্নারে বড় বাগানেও পানিতে ভরে যাচ্ছে। গাছের পাতা হচ্ছে ভেজালো।’

প্রিয়তা দাঁড়িয়ে আছে, অসহায় মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে সে ভার্সিটির করিডোরে বাড়ি কি করে ফিরবে তাই ভাবছে। প্রিয়তার কাছে ছাতা নেই, এখন এই বৃষ্টির মধ্যে বাড়ি ফিরলে নির্ঘাত তার জ্বর আসবে কিন্তু জ্বর আসার চেয়েও অনেক বড় সমস্যা হলো তার বোরকা হিজাব সব ভিজে যাবে। যেটা প্রিয়তা মোটেও চাচ্ছে না। কিন্তু কিছু তো করারও নেই। প্রিয়তা অনেক ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিলো বৃষ্টিতে ভিজেই বাড়ি ফিরবে সে। ভার্সিটি প্রায়ই ফাঁকা সবাই চলে গেছে বলতে গেলে। এখন এখানে একা একা দাঁড়িয়ে থাকাও যাচ্ছে না। কেমন যেন ছমছমে পরিবেশ। প্রিয়তা জোরে নিশ্বাস ফেলে বৃষ্টির ভিড়ে পা বাড়ালো তারপর আস্তে আস্তে ছুটে চললো বাড়ির উদ্দেশ্যে।’

বৃষ্টি নেমেছে, ঘন ফোঁটার ভিড়ে বৃষ্টি নেমেছে খুব। বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট সব ভিজে টুইটুম্বর, রিকশা জুড়ে থাকা নীল রঙের পলিথিনগুলো উড়ে যাচ্ছে একের পর এক প্রিয়তা দেখছে তাদের আর আনমনে হেঁটে যাচ্ছে। ভিজে গেছে সে, কালো হিজাব, বোরকা সব ভিজে গেছে অনেক। প্রিয়তার জিনিসটা মোটেও ভালো লাগছে না। এমন সময় হঠাৎই পায়ে সিলিপ কেটে পড়ে যেতে নিলো প্রিয়তা সঙ্গে সঙ্গে কেউ একজন ধরলো তাকে। জোড়ালো বাতাসের ধাক্কায় মুখের নিকাবটা খানিকটা উপরে উঠে মুখটা দৃশ্যমান হলো তার। প্রিয়তা এক মুহূর্তের জন্য পুরো থমকে গেল চোখ বন্ধ করে ফেললো নিমিষেই।

অন্যদিকে,

অপূর্ব ছাতা হাতে তাকিয়ে আছে প্রিয়তার ভেজালো মুখটার দিকে। আজ অনেকদিন প্রিয়তার মুখটা দেখলো সে। মেয়েটার মুখে এক অদ্ভুত মায়া আছে যেটাকে না চাইতেও এড়াতে পারছে না অপূর্ব। কিন্তু মেয়েটা বড্ড বেখেয়ালি এত বৃষ্টির মধ্যে কেউ ভিজে ভিজে বাড়ি ফিরে নাকি।’

এদিকে,
অপূর্ব প্রিয়তার থেকে বেশ খানিকটা দূরত্বে একটা চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে একটা ছেলে। অপূর্বের মুখটা দেখতে না পেলেও প্রিয়তার মুখটা ঠিকই দেখেছে সে। আজ কতদিন ধরে যে মেয়েটাকে খুঁজছে তারা তার হিসাব নেই। ফাইনালি সেই মেয়েটাকে খুঁজে পেল তারা। বোরকার আড়ালে থাকার কারনে এতদিন চিনতে পারে নি। ছেলেটি একটা ফোন করলো কাউকে। ফোন রিসিভ হতেই বললো,

‘ বস মেয়েটাকে পেয়ে গেছি এতদিন চোখের সামনেই ছিল কিন্তু বোরকা পড়ে থাকায় চিনতে পারে নি।’

উওরে অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তিটি বললো,

‘ মেয়েটি কি একা।’

‘ না বস একটা ছেলেও আছে।’

‘ এবার বুঝলাম কাহিনি ঠিক আছে তুই রাখ আমি দেখছি। মেয়েটাকে ফলো কর আর জায়গাটা চিনে রাখ আমি কালই আসছি ঢাকায়।’

‘ আচ্ছা বস। মেয়েটাকে এখানেরই একটা ভার্সিটিতে পড়ে।’

‘ ওহ তাহলে তো হয়েই গেল কালই মেয়েটাকে ধরে আনতে হবে।’

‘ আচ্ছা বস।’

বলেই ফোনটা কাটলো ছেলেটি। আবারও তাকালো অপূর্ব আর প্রিয়তার দিকে।’

___

‘ আর কতক্ষণ এভাবে চোখ বন্ধ করে থাকবে মেয়ে, আইথিংক এবার তোমার চোখ খোলা উচিত।’

প্রিয়তা চমকালো, ভড়াকালো, হুট করেই অনাকাঙ্ক্ষিত সেই পুরুষালির ভয়েসটা কানে আসতেই চোখ খুললো মুহুর্তে। সামনেই সত্যি সত্যিই অপূর্বকে দেখে হতভম্ব হয়ে অপূর্বের থেকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালো সে। মুখের নিকাব ঠিক করলো পরমুহূর্তেই। তারপর বললো,

‘ আপনি এখানে?’

‘ হুম আমি তা এভাবে বৃষ্টিতে ভিজচ্ছো কেন?’

উওরে খানিকটা বিব্রত ভরা মুখটা নিয়ে বললো প্রিয়তা,

‘ না মানে ছাতা নেই আমার তাই আর কি।’

‘ তাই আর কি ছাতা নেই বলে এভাবে ভিজে ভিজে বাড়ি ফিরবে একজায়গায় দাঁড়ানো যেত না।’

শেষের কথাগুলো একটু রাগী ভাবেই বলে অপূর্ব। অপূর্বের রাগী গলার কথা শুনে খানিকটা ধমকে চায় প্রিয়তা। মাথা নিচু করে বলে,

‘ আসলে ভার্সিটিতে কেউ ছিল না তাই দাঁড়াতে পারি নি। আমি একা একা কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতাম ভার্সিটিতে তাই বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছিলাম।’

প্রিয়তার কথা শুনে কিছু বলছে না অপূর্ব। নিশ্চুপ থাকলো অনেকক্ষণ। তারপর কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে বলে,

‘ গাড়িতে ওঠো,

প্রিয়তা শুনতে পায় নি অপূর্বের হুকুম করে কথা বলাটা। তাই বলে,

‘ কি?’

‘ গাড়িতে উঠতে বলে ছি।’

‘ গাড়ি লাগবে না অপূর্ব আমি যেতে পারবো।’

অপূর্বের মেজাজ বিগড়ালো, খানিকটা ধমকের স্বরে বললো,

‘ এত বেশি কথা কেন বলো মেয়ে, জানো না অপূর্ব বেশি কথা বলা পছন্দ করে না।’

বলেই কোনো দ্বিধা ছাড়াই প্রিয়তার হাত ধরে এগিয়ে চললো অপূর্ব। আর প্রিয়তার মস্তিষ্ক আটকালো অপূর্বের ‘মেয়ে’ বলা শব্দটার কাছে। তার কাছে আসা দু’দুটো চিরকুটেও তো মেয়ে নাম নিয়ে কথা ছিল। তবে কি অপূর্বই ওই মোবাইলটা পাঠালো? কিন্তু কেন?’

#চলবে…..