#আবার_প্রেম_হোক (২য় খন্ড)
#নুসরাত_জাহান_মিম
২০.
চাঁদের মিসক্যারেজের মাসখানেক পেরুতেই সে জানতে পারে কস্মিনকালেও আর সে মা হতে পারবেনা।একের পর এক যন্ত্রণার ধাপ অতিক্রম করে বর্তমানে সে অনুভূতিশূন্য এক মানবমূর্তির রূপ কেবল।বেঁচেতো আছে তবে প্রাণহীন।এরইমাঝে তার অপারেশনের দিন পনেরো পরেই হঠাৎ প্রণয়ের আগমনে হৃদয় পুলকিত হলেও নিজেরই নিজেকে অপরাধী ঠেকে প্রণয়ের সম্মুখে তার।সে মনে করে তার জন্যই তার বাচ্চাটা আজ সাথে নেই।শুরু থেকেই বাচ্চাটার প্রতি খুব একটা যত্নশীল সে হতে পারেনি।যার দরুন অনুতাপের ছোয়াটা চাঁদেরই বেশি।যদিও বা এতে প্রণয়ের তাকে নিয়ে কোনো সমস্যা নেই তারপরেও নিজেকেই নিজে ধিক্কার জানায় চাঁদ।নিজের অতিরিক্ত সাহসিকতার দরুনই এত এত ঝামেলা তাকে পোহাতে হয়েছে।সতীত্ব হারানোর পর মাতৃত্ব হারিয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা দিনকে দিন তার কমছে।তবুও সে জানে প্রণয় নামক তার ঐ শুদ্ধ পুরুষটা তাকে ছাড়া ধ্বংস হবে,ভেঙে গুড়িয়ে যাবে।সেও তাকে ছাড়া নিজ জীবন কল্পনা করতে পারেনা,চায়ও না।তারপরেও মনে মনে লোকটার জন্য তার মায়া হয়।অদ্ভুতরকমের কষ্ট তার জন্য হৃদযন্ত্রে অনুভূত হয় চাঁদের।এই একটা মেয়েকে ভালোবেসে ছেলেটা তার সর্বস্ব খুইয়েছে।নিজ প্রধান ব্যক্তিসত্তা ছাপিয়ে এমন এক সত্তায় নিজেকে আবৃত পর্যন্ত করেছে যা চাঁদের কল্পনাতীত।ছেলেটা তার জন্য,কেবলমাত্র তার জন্য নিজ প্রাণ উৎসর্গ করে দিতেও দ্বিধাবোধ করেনি।অথচ সে?সে আজ অব্দি প্রণয়ের জন্য কী এমন করেছে যা ছেলেটাকে একটুখানি সুখ দেবে?যাও সুখের দেখা মিলতো তারও কোনো সুযোগ বর্তমানে নেই।সে কি কেবলই প্রণয়ের নিকট এক বোঝা?প্রণয় কি এখনো আগের ন্যায় তাকে ভালোবাসবে?বুক কি একটুও কাপবেনা ছোট্ট আরেকটা প্রণয়ের আশায়?তার নিজেরই তো আফসোসের সমাপ্তি নেই।অথচ ছেলেটা অনায়াসে নিজ গম্ভীর সত্তার আড়ালে দুঃখ,কষ্টসমূহ কি নিদারুন লুকাতে সক্ষম!এরূপ কেনো তার এই বিড়ালাক্ষী মানব?অতঃপর প্রণয়ের পানে চেয়ে থাকতে থাকতেই বুক চি!ড়ে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসতেই সে শুনতে পায় প্রণয়ের গম্ভীর কন্ঠস্বর,
“আপনি কস্মিনকালেও আমার কাছে বোঝা নন।আপনি আমার হৃদরানী,আমার প্রেমমানবী”
“এত কা…..”
চাঁদকে থামিয়ে দিয়ে গায়ে এপ্রোণ জড়াতে জড়াতে প্রণয় বলে,
“এদিকে আসুন”
অতঃপর ধীরসহিত চাঁদ নেমে আসে বিছানা হতে।আলতো পায়ে হেটে প্রণয়ের কাছে আসতেই চাঁদকে নিজের দিকে ভালোভাবে ঘুরিয়ে আলমারি হতে চাঁদের এপ্রোণ বের করে তা গায়ে জড়াতে জড়াতে প্রণয় বলে,
“ভাগ্যের উপর কোনো জোর নেই চন্দ্র।অনেকতো বিরহে দিন কাটালেন,এবার মজুন প্রণয়ের প্রেমে”
বলতে বলতেই চাঁদের অতি সন্নিকটে গিয়ে কানের পিঠে ঘাড়ের কাছে চুমু খায় প্রণয়।তৎক্ষনাৎ জাগ্রত হয় শিহরণের রেশ চাঁদের সমস্ত সত্তাজুড়ে।চাঁদের গালে গভীর চুমু এঁকে প্রণয় উঠে আসতে নিলেই বাইরে থেকে শুনতে পায় নিজ ভাইয়ের ঠাট্টামূলক স্বর,
“সরি ভাই সরি!মানছি স্বামী-স্ত্রী কিন্তু দরজা টরজা লাগিয়ে প্রেম করতে হয়না?দাড়া আমিই লাগিয়ে দিচ্ছি”
কপাল ঈষৎ কুচকে পেছনে ঘুরে গম্ভীরস্বরে প্রণয় বলে,
“ফারদার আমার সাথে ঠাট্টার ভুল যেনো ভুলেও না হয় তন্ময়”
অতঃপর চাঁদের পানে চেয়ে বলে,
“আপনি হিজাব পরুন আমি আসছি।হিজাব পরে বসে থাকবেন।নিচে নামবেন না।আমি এসে নিয়ে যাবো”
“আমার ভাই কত কেয়ারিং দেখেছো ভাবি?তোমায় পারেনা কোল….লা…লা লা লে……”
কথাখানা সম্পূর্ণের পূর্বেই প্রণয়ের গম্ভীর চাহনীর দরুন চুপসে যায় তন্ময়।অতঃপর আমতা আমতা করে বলে,
“আম….আমি বলছিলাম যে ভাবি তুমি হাসপাতালে যাচ্ছো?”
যেতে যেতে তন্ময়কে উদ্দেশ্য করে প্রণয় বলে,
“ভুলবশতও চাঁদকে আজেবাজে বলে বিরক্ত করবিনা”
কপাল কুচকে প্রণয়ের পানে তাকিয়ে কিছু বলার পূর্বেই প্রণয় প্রস্থান নেয়।আর তন্ময় শুনতে পায় চাঁদের ধীরকন্ঠ,
“তোমার ভাই কোথায় নিচ্ছে জানিনা।এপ্রোণ পরিয়েছে হয়তো হাসপাতালেই যাচ্ছি”
প্রণয়ের বিছানায় বসতে বসতে তন্ময় বলে,
“তুমি সুস্থ থাকলে অবশ্যই যাও ভাবি।কিন্তু ভালো না লাগ….”
তন্ময়কে থামিয়ে চাঁদ বলে,
“আ’ম পার্ফেক্ট তন্ময়।তাছাড়া তোমার ভাইয়ের তুলনায় আমার সুস্থতা সম্পর্কে আর কেউ জানবেনা,আমি নিজেও না”
“ভাইকে এত বিশ্বাস করো?”
“ভালোবাসার মূলভিত্তিই বিশ্বাস।বিশ্বাসহীন কোনো ভালোবাসা হতে পারেনা।সেসব বাদ দাও।আজই ফিরলে?আরও কয়েকদিন থাকার ছিলে না?”
“হ্যা।তোমার কথা শুনে তাড়াতাড়িই আসলাম”
অতঃপর চাঁদকে আরও কিছু বলার পূর্বেই কারো ফোনকল আসায় বিরক্ত হয় তন্ময়।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
“প্রণয়ের থেকে রিহার বিষয় লুকানো কি আমাদের ঠিক হচ্ছে মির?”
মিরার কথা শুনে বোনের পাশে বসে দীর্ঘশ্বাস ফেলে মির বলে,
“মাত্রইতো চাঁদের সাথে একের পর এক হওয়া ইন্সিডেন্ট সামনে আসলো।এখন রিহার বিষয়ে বলে প্রণয়কে গিলটি ফিল করানো টা হয়তোবা অনুচিতই”
“কিন্তু মির,প্রণয়ের তো অধিকার আছে।ও রিহুর জানাযা পর্যন্ত….”
মিরাকে থামিয়ে মির বলে,
“ভাগ্যে যা ছিলো তাই হয়েছে।কয়েকটা দিন যাক জানাবো।ওরা বাচ্চার ট্রমা থেকে বেরুক একটু”
ছোট্ট করে জবাব দেয় মিরা,
“হিম”
অতঃপর ফের মির বলে,
“অরণকে এখনো কিছু জানাস নি?”
“কী জানাবো?”
“তুই ভালো করেই জানিস আমি কীসের কথা বলছি”
“তোর মনে হচ্ছে এসব বলার সিচুয়েশন এখন?আর তাছাড়া এসব নিয়ে এখন আর ভাবছিও না”
“অরণকেও কিছু বলবিনা,বিয়েও করবিনা।চাচ্ছিস কী?”
কপাল কুচকে মিরা বলে,
“কী চাচ্ছি মানে?”
“বয়স হচ্ছে বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে তোর”
“তো তুই বলছিস আমি তোর বা বাবার কাছে বোঝা হচ্ছি?”
“থা!পড়াবো বেয়াদব।একবারও বলেছি?বেশি ভাবিস কেনো?আমি বলছি জীবনকে আরেকটা সুযোগ দেয়া উচিত না?”
“সুযোগ তো রিহুও দিয়েছিলো।কী হয়েছে ওর সাথে?”
“রিহার আর তোর বিষয়টা ভিন্ন।আর রিহা ভুল মানুষকে বেছে নিয়েছিলো ঠিক যেমন বছরের পর বছর তুই যা করে এসেছিলি”
কপাল কুচকে গম্ভীরকন্ঠে মিরা বলে,
“ভালো লাগছেনা এসব।আগে নিজের লাইফের ঝামেলা সামলা।পরে উপদেশ দে”
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
চাঁদকে নিয়ে কলেজে প্রবেশ করেই প্রিন্সিপালের রুমে হাজির হয় প্রণয়।অতঃপর হাতে থাকা ফাইলের সমস্ত কাগজপত্র তার নিকট এগিয়ে দিতেই প্রিন্সিপাল বলেন,
“বসো দু’জনেই”
অতঃপর কাগজগুলো দেখতে দেখতেই প্রিন্সিপাল বলেন,
“বেশ অনেকবছর পর দু’জনকে একসাথে দেখছি।তো জব কি চাঁদের জন্য নাকি দু’জনেরই প্রণয়?”
শান্তস্বরে প্রণয় জবাব দেয়,
“আপাতত চাঁদেরই।আমার সময় হয়ে উঠেনা স্যার।ভাবলাম চাঁদের ফ্রি সময়ে সে বর্তমান জেনারেশনকে কিছু জ্ঞান হলেও শিক্ষা দিক”
প্রণয় আর প্রিন্সিপালের কথা শুনে হকচকিয়ে উঠে চাঁদ,
“জব মানে?”
প্রিন্সিপাল প্রশ্ন করেন,
“তোমার টিচিং প্রফেশন নিয়ে কথা হচ্ছে।প্রণয় বলোনি কিছু তুমি ওকে?”
“ভাবলাম কথাবার্তা শেষে একবারে জানাবো”
“চাঁদ যদি করতে না চায়?”
“দুই,তিনটা ক্লাসই তো স্যার।তাছাড়া চাঁদেরও ইচ্ছা প্রফেসর ডাক অথবা কারো মেনটর হওয়া।সঠিক গাইডলাইন দেওয়া।ডাক্তার তো হলোই”
প্রণয়ের কথা শুনে চাঁদপানে প্রিন্সিপাল চাইতেই মৃদুস্বরে চাঁদ বলে,
“জ্বি স্যার”
চাঁদের জবাব পেতেই প্রিন্সিপাল বলেন,
“ঠিক আছে তোমরা যাও।আমি পরবর্তীতে আপডেট জানাবো”
অতঃপর প্রিন্সিপালের থেকে বিদায় নিয়ে চাঁদের সহিত ক্যাম্পাসে আসে প্রণয়।নিজেদের পূর্বের আড্ডাস্থলে এসে বসতেই চাঁদের কোলে মাথা এলিয়ে ঘাসের উপর শুয়ে চাঁদপানে চেয়ে প্রণয় বলে,
“চশমাটা খুলুন তো চাঁদ”
কপাল কুচকে কোলে শুয়ে থাকা প্রণয়ের পানে চেয়ে চাঁদ প্রশ্ন করে,
“কেনো?”
“খুলতে বললাম তো”
অতঃপর প্রণয়ের কথা মোতাবেক চশমা খুলতেই প্রণয় বলে,
“এদিকে আসুন”
“কী?”
“বললাম এদিকে আসুন,কান দিন”
প্রণয়ের ইশারায় মাথা খানিকটা তার পানে ঝুকিয়ে কানের দিক ঘোরাতে নিলে প্রণয় চাঁদের থুতনী হালকা চেপে নিজের দিকে ঘুরিয়ে আরেকটু তাকে নিচু করে ওষ্ঠদ্বয়ে আলতো করে চুমু খায় চাঁদের।প্রণয়ের কান্ডে হকচকায় চাঁদ।প্রথমদিনের ন্যায় হৃদস্পন্দন তীব্র হয়,গলার কাছে শ্বাস এসে আটকে যায় তার।শিরশিরায় বদন।শরীরে শীতল স্রোত বইতেই ঢোক গিলে প্রণয়ের থেকে দূরে সরে ঘনঘন শ্বাস নিয়ে চাঁদ বলে,
“দিনকে দিন অসভ্যের কাতারও ছাড়িয়ে যাচ্ছেন পুরো!”
“অসভ্যতামির কিছুই তো করা হলো না।ওদের ডাকাই?”
“ডাকিয়ে কি অসভ্যতামির রঙ দেখাবেন?”
চাঁদের কথা শুনে খানিক শব্দ করেই হাসে প্রণয়।অতঃপর দেহ ডান পাশে কাত করে চাঁদের পেটের কাছে মুখ নিয়ে দু’হাতে চাঁদের কোমড় জড়িয়ে শোয়াবস্থায়ই সে বলে,
“এতটাও অসভ্য হইনি যে নিজের বউয়ের উষ্ণরূপ অন্য কাউকে দেখাবো”
অতঃপর পেটের কাছে আলতো চুমু এঁকে ফের প্রণয় বলে,
“তার উষ্ণরূপে মত্ত থাকার অধিকার কেবলই প্রণয়ের”
প্রণয়ের উষ্ণ শ্বাস সহ পেটের কাছে ঠোটের মৃদু কম্পনে
গা শিরশিরায় চাঁদের।লোমকূপসমূহও দাঁড়ায় নিমিষেই।মৃদু কম্পিত বদনেই ঘনঘন শ্বাস নেয় সে।হৃদস্পন্দনের মাত্রা বেড়েছে খানিক।নিজেকে সামলানোর চেষ্টায় প্রণয়ের ঘাড়ের কাছে হাত রাখতেই ফের প্রণয়ের ঠোটের স্পর্শ পায় চাঁদ।অতঃপর চাঁদের পেটে ঠোটের গভীর স্পর্শ আঁকতেই প্রণয়ের নজর কারে চাঁদের শুভ্ররঙা উজ্জ্বল উদরের অল্প বিস্তর অংশবিশেষ।মৃদু শ্বাস নিয়ে সেথায় খানিক ফু দিয়ে হাতের তর্জনী দ্বারা আলতো ছুতেই শরীরে বৈদ্যুতিক স্রোত বয় চাঁদের।অভ্যন্তরে থাকা রক্তসমূহ শীতল হয়ে জমে যাচ্ছে যেনো।ঘনঘন শ্বাস নিয়ে প্রণয়ের ঘাড়ের কাছে থাকা হাত তার চুলে বিচরিত করে চাঁদ।অতঃপর মৃদু কম্পিত হাতেই প্রণয়ের চুলসমূহ টেনে ধরে আলতো হাতে।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
রুবার তথ্যানুযায়ী মিন্টুরোডে হাজির হয়েছে তন্ময়।মিনিট বিশেকের ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকায় একটু বেশিই বিরক্ত হয় সে।অতঃপর পকেট হতে ফোন বের করতে নিলেই হাপাতে হাপাতে হাজির হয় সেথায় রুবা।বুকের কাছে হাত রেখে মুখ দ্বারা লম্বা শ্বাস ফেলতে ফেলতে রুবা বলে,
“সরি….সরি ভাইয়া।একটু বেশি দেরি হয়ে গেলো?”
দাঁতে দাঁত চেপে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রুবার পানে দিয়ে কথা চিবিয়ে চিবিয়েই বলে তন্ময়,
“একটু দেরি হবে কেন?অনেক বেশিই তাড়াতাড়ি হয়ে গেলো।আরও আধঘন্টা পরে আসলে পার্ফেক্ট হতো”
ঘনঘন শ্বাস মুখ দ্বারা ফেলে কপাল কুচকে রুবা বলে,
“মেজাজ দেখাচ্ছো কেনো?”
রুবার কথায় তোয়াক্কা না করে হঠাৎ ই রুবার কব্জি টেনে নিজের পাশে এনে দাড় করায় তন্ময় তাকে।অতঃপর রুক্ষ কন্ঠেই বলে,
“কমনসেন্স বলতে আদোতে কিছু আছে তোর?পারিস তো শুধু মুখ চালাতে”
নাকমুখ কুচকে বিরক্ত হয়ে ফের রুবা বলে,
“আবার কী করলাম?”
“পেছনে গাড়ি ছিলো।কানে কালা তুই?”
হঠাৎ ভড়কে রুবা বলে,
“ইম…..ইম দা…দেখিনিতো!মানে শুনি…শুনিনি ভাইয়া”
“তা কী করে শুনবি?এদিকে আয়”
বলেই রুবার হাত ধরে নিজের বাম পাশে তাকে রেখে হাটাধরে তন্ময়।রুবা কেবলই মুচকি হাসে তন্ময়ের কান্ডে।ভাগ্য করে শাসনে রাখলেও রক্ষণশীল ভাই পেয়েছে সবগুলোই সে।অতঃপর তন্ময়ের পাশে হাটতে হাটতেই বলে,
“আসলে ভাইয়া তোমার একটা হেল্প লাগতো”
“হ্যা তাতো জানিই।দরকার ছাড়াতো আর আমায় মনে পড়বেনা আপনার!”
“আরেএ!তেমন কিছুনা।মানে একটু আরকি…..”
“ঝটপট বল।শুনছি”
হাটার গতি ধীর করা সহ গলার স্বরও ধীর করে রুবা,
“হয়েছি কী!মানে তুম….তুমিতো প্রেম….প্রেম করেছো তাইনা?”
রুবার কথায় পা জোড়া থামতে বাধ্য হয় তন্ময়ের।অতঃপর কপাল কুচকে রুবার পানে চেয়ে থেকেই সে বলে,
“কী বললি?”
রুবাও থামে।অতঃপর ঢোক গিলে বা’ হাতের দুই আঙুল দ্বারা নাক খানিক চেপে বলে,
“ইম…..বা….বললাম যে প্রেম….প্রেম করেছো কিনা তুমি!”
কপাল কুঞ্চিত রেখেই তন্ময় প্রশ্ন করে,
“আমার প্রেম দিয়ে তুই কী করবি?”
“বলো না!লাগবে”
বাকা চোখে রুবার পানে চেয়ে তন্ময় বলে,
“যদি ভুলেও কাউকে বলেছিস তাহলে ফাসাবো কিন্তু আমি তোকেও।কথাটা মাথায় থাকবে?”
“মাথায় মানে?মন,দিল,কলিজা,ফ্যাপড়া,কিডনি,ফুসফুস,মাথা সবজায়গায়ই থাকবে ভাইয়া।তুমি জাস্ট আমার একটু হেল্প করো প্লিজ!”
খানিক অবাক হয়ে নিজেও ঢোক গিলে তন্ময় বলে,
“বলবিনা কিন্তু কাউকে!”
মাথা ডানে বায়ে করে রুবা বলে,
“একদমই না!নিশ্চিন্তে বলো”
রুবার কৌতূহলে নিজেও কৌতূহলী হয় তন্ময়।অতঃপর বলে,
“করেছিলাম স্কুলে থাকতে।বেশিদিন টেকেনি ব্রেকআপ হয়ে গিয়েছিলো”
“তাহলেতো তুমি জানো কীভাবে মানুষ পটাতে হয় তাইনা?আই মিন…..আই মিন যার সাথে প্রেম করতে চাও আরকি?”
কপাল কুচকে তন্ময় বলে,
“তুই আবার কার সাথে প্রেম করতে চাস?থাপ!ড়াবো কিন্তু রুবা।আমি তোর বড় ভাই ভুলছিস কিনা?”
“আহহা!ভুলিনি তো।মানে বলোনা পটায় কীভাবে?”
“এই কাকে পটাতে চাচ্ছিস বলতো?বাই এনি চান্স প্রেম ট্রেম করছিস নাতো?অথবা করতে চাস?ভার্সিটি উঠতে না উঠতেই পাখা গজিয়ে গেছে?”
“আরে ভাইয়া এরকম কিছুনা।আমি জাস্ট পছন্দই করি কিন্তু সে আমায় দুইচোখে দেখতে পারেনা”
ধীরকন্ঠে বিরবিরায় তন্ময়,
“ভালো হয়েছে”
অতঃপর গম্ভীরস্বরে প্রশ্ন করে,
“কার কথা বলছিস?”
“বলবেনা তো কাউকে?”
“ঠ্যাকা পড়েছে?”
“ইম…..মিস্টার….মিস্টার চৈত্রের”
রুবার বলা দুই শব্দের বাক্যে মস্তিষ্ক ফাকা হয় তন্ময়ের।শ্বাস খানিকের জন্য থমকায়,স্থির হয় তার দৃষ্টিজোড়া।অতঃপর কপাল সামান্য কুঞ্চিত করে দ্বিধান্বিত স্বরেই সে বলে,
“চৈত….চৈত্র ভাইয়ের কথা বলছিস?ভাবির ভাই?চৈত্র ভাই?”
“হা…..হ্যা ভাইয়া”
“ভালোবাসিস?”
রুবার সোজাসাপটা জবাব,
“ভালোবাসি কিনা জানিনা।তবে আমার জীবনের প্রথম পুরুষ এবং শেষ পুরুষ হিসেবে তাকেই চাই।তুমি আমার হেল্প করবে ভাইয়া?”
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
সন্ধ্যা সাতটা,
চাঁদ হলরুমে সকলের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত।মূলত প্রণয়ের বন্ধুমহল বাড়িতে আসায় চাঁদই তাদের আপ্যায়ন করছে।সাথে এসেছে রবিনের মা আর বোনও।রবিন আর অমৃতার বিয়ের কার্ড নিয়েই তারা এসেছেন।বড়দের সাথে কথা শেষে সোফায় বসে থাকা চাঁদপানে চেয়ে রবিনের মা বলেন,
“চাঁদ মামনি?তুমিতো অমৃতার বোন”
“জ্বি?জ্বি আন্টি”
“বেয়াইনই তো তোমাদের কার্ড দিয়ে ফেলেছেন না?”
মৃদু হেসে চাঁদ বলে,
“অমি আমার খালাতো বোন কম আমার নিজের আপন বোনই বেশি।কেউ অমি,আমায় আর নিমুকে দেখলে বলেনা আমরা কাজিন হই।আর খালামনির কার্ড দেওয়ার প্রয়োজনই কোথায়?অমির বিয়ে আর ওর নিজের খালামনি বা চাঁদ আপু থাকবেনা তা হয়?আপনি টেনশন করবেন না আন্টি।তবে হ্যা!আমি কিন্তু হিসেবে তিনটে দাওয়াত পাই”
রবিনের ছোটবোন প্রশ্ন করে,
“কীভাবে ভাবি?”
অতঃপর চাঁদ রবিনের পানে চেয়ে চোখ দিয়ে তাকে ইশারা করে বলে,
“কী ভাইয়া বলবো?”
ভড়কে রবিন বলে,
“কী বলবে আবার?বলো”
“প্রথমত আমি অমির বোন সেই হিসেবে একটা তো পাচ্ছিই।দ্বিতীয়ত প্রণয়ের ওয়াইফ সেই হিসেবে আরেকটা।আর সর্বশেষ হলো আমি রবিন ভাইয়ারও বোন।সেই কলেজ লাইফ হতে।সেই হিসেবে আরেকটা পাওনা না বলো ভাইয়া?”
অরণ বলে,
“হ্যা অবশ্যই!অবশ্যই।আরেকটা কার্ড দে”
হঠাৎ মিরার প্রশ্ন,
“প্রণয় কোথায় চাঁদ?আমরা সবাই এখানে ও কী করছে?”
মিরার পানে চেয়ে চাঁদ বলে,
“রুমেই আছে আপু।কী যেনো করছে কলেজ প্রাসঙ্গিক”
চাঁদের কথা শেষ হতেই মির প্রশ্ন করে,
“শুনলাম তুমি নাকি প্রফেসর হচ্ছো?”
“শিওর না ভাইয়া।ইন্টারভিউ তে ডাকুক,দেখি”
রবিনের দৃঢ় কন্ঠ,
“ইন্টারভিউ দিয়ে কাজ কী?তোমাকে নেবে মানে নেবেই গ্যারান্টি দিলাম আমি”
______________________________
বিছানায় বালিশে হেলান দিয়ে এক পায়ের টাখনুর উপর অপর পায়ের পাতা তুলে উরুর উপর ল্যাপটপ নিয়ে কিছু কাজে ধ্যানমগ্ন ছিলো প্রণয়।অতঃপর ল্যাপটপের কী-বোর্ডে আঙুল চালানো থামিয়ে ঠোটের বাম পাশ কিঞ্চিৎ বাকা করে প্রণয়।হৃদয়ে প্রশান্তির জোয়ার ভাসে,হাসে প্রণয়ের বিড়ালাক্ষীজোড়াও।ল্যাপটপ সেভাবে রেখেই বিছানার পাশে থাকা টেবিল হতে ফোন হাতে নিয়ে টাইপ করে চৈত্রের নাম্বারে।সাথে যুক্ত করে ফায়ানকেও।অতঃপর তাদের সহিত কিছু বার্তা শেষে ফোন কাটে সে।
রাত্রি তখন নয়টা বেজে সাইত্রিশ মিনিট,
সুনসান নীরব রাস্তা দিয়ে নিটোল পরিবেশে ড্রাইভ করছে প্রণয়।মাঝেমাঝেই এপাশ ওপাশ চাইছে সে।অতঃপর ফোনে কারো নাম্বার ডায়াল করে লাউডস্পিকার দিয়ে ফেলে রাখে পাশের সিটে।কিয়ৎক্ষণ জরুরী আলাপ শেষে ফের ড্রাইভিং এ মনোযোগী হয় প্রণয়।অতঃপর কাউকে ‘দাও’ কথাটি উচ্চারিত করে গম্ভীরকন্ঠে প্রণয় শুধায়,
“কী মিস অহনা?মিস অহনা শেখ?নাকি অহনা অধিরাজ শেখ?হোয়াট ডিড ইউ থিংক?আপনি ধরা-ছোয়ার বাইরে হা?ইউ ব্লা!ডি ফুল লেডি”
To be continued……
#আবার_প্রেম_হোক (২য় খন্ড)
#নুসরাত_জাহান_মিম
২১.
অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘুটঘুটে এক কামড়ায় দুলন্ত চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছে প্রণয়।দৃষ্টি তার তীক্ষ্ণ দূর হতে দূরান্ত পানে।শব্দহীন বদ্ধ কামড়ায় ইজি চেয়ারের ক্যাচ ক্যাচ আওয়াজ খানিক ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি করছে চারিপাশ জুড়ে।প্রণয় হতে কয়েক ফুট দূরত্বে ঠিক তার সম্মুখ বরাবরই হাত-পা বাঁধা অবস্থায় চেয়ারের সাথে আবদ্ধ এক মেয়ে।মুখ আর চোখও তার বাঁধা।কোনোভাবেই কোনোকিছু দেখা অথবা বোঝার অবকাশ নেই।খানিক বাদে বাদেই চেয়ার দোলার আওয়াজে খানিক কেপে কেপে উঠছে মেয়েটা।অনেকাংশ ঘেমেও গিয়েছে।হাত-পা তার কাপছে,বুকের ধুকপুকানি বেড়েছে অতিমাত্রায়।অতঃপর ঢোক গিলে ঘনঘন শ্বাস নেয় সে।কিয়ৎক্ষণ বাদে চেয়ার দোলার আওয়াজ তীব্র হওয়ার সঙ্গে কারো পদধ্বনির শব্দও কর্ণগোচর হয় মেয়েটার।ভয় তার বাড়ে বহুগুন,নিশ্বাসের গতি তীব্র হয়।শরীরের লোমকূপসমূহ দাঁড়ায় নিমিষেই।অতঃপর আকস্মিক চোখের বাঁধনে টান পড়তেই দাঁতে দাঁত চাপে মেয়েটা।বাঁধন খুলতেই পিটপিট করে চাইতে নিলে মুখের বাঁধনও খোলা হয় তার।সবেমাত্র চোখজোড়া খুলে ভালোভাবে সামনের দৃশ্যসমূহ অবলোকন করতে উদ্যত হয়েছিলো সে তবে আকস্মিক গালে কারো শক্ত হাতের থাবা পড়তেই চামড়া ফে!টে যাবার উপক্রম মেয়েটার।মাথা ভনভন করছে।এখনো কানের কাছে তার সাইরেনের ন্যায় সংকেত বাজছে।গাল তার অতিরিক্ত পরিমাণে জ্বলে উঠতেই সম্মুখপানে নজর দিতেই গম্ভীরসত্তার প্রণয়কে দেখে শ্বাস তার আটকায়,নাসারন্ধ্র প্রসারিত করে শ্বাস নিতে গেলেই গলার কাছে প্রণয়ের শক্তপোক্ত হাতের স্পর্শ পেতেই দম বন্ধ হবার উপক্রম।চোখদু’টো উলটে আসছে তার।অতঃপর প্রণয়ের বিড়ালাক্ষীজোড়ায় নজর পড়তেই সেথায় হিংস্রতার চরম পর্যায় অবলোকিত হয় মেয়েটার।সে অস্ফুটস্বরে আওড়ায় কিছু শব্দ,
“প্রা….প্রণ..প্রণ….প্রণয়!”
তৎক্ষনাৎ মেয়েটার গলা হতে হাত সরিয়ে হাটুগেরে বসে প্রণয়।অতঃপর চেয়ারের দুইপাশে দুই হাত রেখে হাটুতে ভর দিয়েই মেয়েটার অতি সন্নিকটে বসে আফসোসের সুরে প্রণয় বলে,
“এতটা নিচে না নামলেই কি আপনি পারতেন না?পারতেন না মিস অহনা অধিরাজ শেখ!”
“প্রণয় আমার…”
নিস্তব্ধ কামড়ায় প্রণয়ের একেকটা শব্দ প্রতিধ্বনিত হয়ে কানের কাছে বারংবার ভাসে মেয়েটার।অন্তরাত্মা কাপে তার,
“হিশ!ডোন্ট লাউড।লেট মি ফিনিশ” [হিশ!চেচাবেন না।শেষ করতে দিন আমায়]
অতঃপর ফের গম্ভীরকন্ঠে শুধায় প্রণয়,
“হোয়াট ডিড ইউ রিয়েলি থিংক?আয় কুডেন্ট ক্যাচ ইউ হা?” [কী ভেবেছিলেন আপনি?আমি কখনোই আপনাকে ধরতে পারবোনা?]
ফের মেয়েটা কিছু বলতে নিলে প্রণয়ের তীক্ষ্ণ নজরের দরুন থামে সে।অতঃপর প্রণয় বলে,
“আপনি আদোতে মেয়ে তো?আমি মনে করি আপনি মানুষতো দূর,পশুর কাতারেও পড়েন না মিস অহনা!ওরফে অহনা পূর্ণতা শেখ!”
“প্রণয় আমার কথ…..”
অহনার চোখ বরাবর তর্জনী নিয়ে গর্জায় প্রণয়,
“জাস্ট শাট ইওর মাউথ পূর্ণ!সরি,ভেরি সরি!মিস অহনা শেখ!না,আসলে আপনাকে কী বলে সম্বোধন করবো বলুন তো?”
বলেই অহনার কাছ হতে সরে আসে প্রণয়।অতঃপর ফের গিয়ে পায়ের উপর পা তুলে হেলান দিয়ে বসে চেয়ারে।প্রণয় গিয়ে চেয়ারে বসতেই অহনা বলে,
“দা…..দেখ প্রণ..প্রণয় তুই আমায় ভুল ভুল বুঝ…..”
“স্টপ!স্টপ দেয়ার!আরেকটা মিথ্যে বললে ঠিক অনিন্দ্য ঘোষের ন্যায়ই তোর জিভ টেনে ছিড়ে ফেলবো পূর্ণ!নাকি তোর বাবা মি.অধিরাজ শেখের মতো জিভ তোর চি*ড়ে দেবো?”
প্রণয়ের ঠান্ডাস্বরের সতর্ক বার্তায় বুক কাপে পূর্ণতার।সে চোখের পানি ছেড়ে আটকানো কন্ঠে বলে,
“প্রণয়….শোন….আমার কথাটা তুই শোন।আম…আমার বাঁধনগুলো খোল আমি বলছি!সব….সবটাই বলছি”
পূর্ণতার বাক্য সম্পন্ন হতে না হতেই উচ্চশব্দের হাসি ভাসে কানে প্রণয়ের।উন্মাদের ন্যায় উচ্চস্বরের হাসি আরও জোরালো হয় তার।অতঃপর হাসি বহাল রেখেই প্রণয় শুধায়,
“ও মাই গড!আ’ম গন্না বিলিভ ইউ!রিয়েলি গন্না বিলিভ ইউ।তুই এখনো ভাবছিস আমি কোনোকিছুই জানিনা?সত্যি পূর্ণ?তুই আমায় বোকা ভাবিস?এতটা বোকা?একজন খু*নের আসামীকে তুই সত্যি সত্যি বোকা ভাবছিস?”
“তা…..তুই কা….কী জানিস?”
চুলের ভেতর হাত গলিয়ে খানিক গুচ্ছ কেশ টেনে মাথা চেয়ারের পেছন দিকে হেলিয়ে ফের উচ্চশব্দে হাসে প্রণয়।অতঃপর বলে,
“স্টপ অ্যাক্টিং লাইক আ ডাম্ব।আদারওয়াইজ আ’ম গন্না কি*ল ইউ।নিজ মুখে সবটা স্বীকার কর।আদারওয়াইজ আয় উইল রিয়েলি…..”
প্রণয়কে থামিয়ে গম্ভীরস্বরে পূর্ণতা বলে,
“তো তুই ভাবিস স্বীকার করিয়ে জেলে দিবি?রিয়েলি প্রণয়?ইউ থিংক আমি ওখানে আদোতে থাকবো?”
প্রণয়ের হাসির মাত্রা ক্ষীণ হয়।ঘাড় নিচু করে বাকা চোখে পূর্ণতার পানে চেয়ে ঠোট মৃদু বাকিয়ে বিরক্তিপূর্ণ দৃষ্টিসহিত ধীরকন্ঠে প্রণয় শুধায়,
“অ্যান্ড হাউ কুড ইউ ইভেন থিংক আমি তোকে জেলেও দেবো?যেখানে আয় ক্যান কি*ল ইউ ইন আ ভেরি রিসেন্ট মোমেন্ট”
খানিক হেসে পূর্ণতা বলে,
“জানিস যেহেতু সবই আমার কিলিং অথবা মা!র্ডারিং রেকর্ডও তোর জানা?তাছাড়া ইউ ক্যান নেভার কি*ল মি।ইহিম!নেভার প্রণয়।আমি তোর প্রিয় ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম”
“তুই তোর প্রিয় ব্যক্তিকে খু*ন করতে পারলে,হোয়ায় কান্ট আয়?”
হকচকিয়ে কপাল কুচকে পূর্ণতা বলে,
“কা….কার কথা বলছিস?”
চোখজোড়া বন্ধ করে লম্বা শ্বাস ভেতরে নিয়ে নাসারন্ধ্র প্রসারিত করে তা নির্গত করে প্রণয় বলে,
“ইউ কিল্ড ইওর বেস্টফ্রেন্ড!মাই বেস্টফ্রেন্ড!মাই সিস্টার।আমার হৃদয়ে বিরাজমান সর্বপ্রিয় বান্ধবী,আমার বোনকে তুই নিজ হাতে শেষ করেছিস।অ্যান্ড ইউ থিংক আয় রিয়েলি উইল স্পেয়ের ইউ?আ’ম গন্না রিয়েলি কি*ল ইউ,অ্যান্ড আয় ডেফিনেটলি উইল!”
“রিহ…রিহার বিষয়েতো তোর কিছু জানার কথা না!আমরা কেউতো তোকে জানাইনি।তাহলে….”
“তোরা কেউ জানাসনি বলে যে আমি কিছুই জানবোনা।সেটা ভাবাটাই তোর সর্ববোকামি ছিলো।তার চাইতেও বেশি বোকামির কাজ করেছিস রিহাকে তুই খু*ন করে।মেয়েটা বেঁচে গিয়েছিলো স্টিল তুই হাসপাতালে গিয়ে তাকে খু*ন করে এসেছিস।আর ভাবিস কেউ খোঁজ রাখবেনা?তুই আসলেই বোকা পূর্ণ।অতি সূক্ষ্মভাবে নিজেকে আড়াল করেছিস ঠিকই অথচ নিজেই নিজের ধরাটাও দিয়েছিস চাঁদের মিসক্যারেজ করিয়ে।কী ভাবিস?প্রণয় চুপ হয়ে গিয়েছে।শোকে,শোকে সে শোকাহত?ইহিম!আয় ওয়াজ জাস্ট স্টে কুয়াইট টু ক্যাচ ইউ!চাঁদের যেদিন মিসক্যারেজ হয় আর তুই ই তার অপারেশন করাস সেদিনই তোর সমস্ত মুখোশ আমার সম্মুখ হতে উন্মুক্ত হয় পূর্ণ।আর সিড়িতে যে তেলও তুই ঢেলেছিলি তাও আমার জানা।আমার বাচ্চাকে যে তুই ই খু*ন করেছিস সে খবরও আমার জানা।অরণকে জাস্ট মে*রেই দিয়েছিলি সেটাও আমার জানা রে পূর্ণ!তুই আমার চন্দ্রের গায়ে কলঙ্কের দাগ ছড়ানোর মূলে সে খবরও জানি।নিজের ভাইকে পর্যন্ত তুই গু*লি করেছিস মে*রে ফেলতে।তাকে এসাইলামে রাখিয়েছিস।কতশত নারীর সম্ভ্রম কা!ড়ার মূলে ছিলি তুই!কতটা নিম্ন পর্যায়ে তুই গিয়েছিস চিন্তাও করিস কখনো?করিস না যে সেও জানি।তো এত এত যে পাপের বোঝা তোর ঘাড়ে সেই পাপ হতে তোকে মুক্ত করা লাগবেনা?দায়িত্বটা নাহয় আমিই নিই?”
প্রণয়ের কথা শেষ হতেই খানিক কেশে পূর্ণতা বলে,
“এতকিছুতো তোর জানার কথা না!আমি যে অহনা সে খবর তুই তো দূর অন্যকারোরও…….ওয়েইট!রিহা!রিহা বলেছে তোকে?”
শেষের কথাগুলো কপাল কুচকে অতিমাত্রায় অবাক হয়েই বলে পূর্ণতা।আর লম্বা শ্বাস নিয়ে চোখমুখ গম্ভীর রেখে প্রণয় বলে,
“যতটা চালাক তুই নিজেকে মনে করিস আদোতে ততটা চালাক তুই নস পূর্ণ।আরও একটা বোকামি তোর কী জানিস?তোর সর্বসত্যিটা রিহুকে জানানো।চাঁদের সাথে কী কী তুই করেছিস সেসবকিছুও ওকে জানানো।তুই নিজের ঢোল নিজেই পিটিয়েছিস।ভেবেছিলি বেস্টফ্রেন্ড হয় কাউকে বলবেনা।অথবা তাকে পৃথিবী হতে নিঃশেষ করলেই সব ধামাচাপা!কিন্তু হ্যা রিহু তোর সত্যিটা আর সবার সামনে ঠিকই আসতে দেয়নি কারণ ও তোকে ভালোবাসে।তবে আমায় কী বলে গেছে জানিস?”
“কা….কী?”
“ওর শেষ কথা ছিলো ‘পূর্ণকে তুই ছাড়িস না প্রণয়!”
কথাখানা বলে খানিক থেমে ফের প্রণয় বলে,
“তো তোকে আমি কী করেই বা ছেড়ে দিই বল?”
“কিন্তু এসব…..এসবতো ওকে আমি গাড়ির মধ্যে থেকে বলেছিলাম!তারপর পরই তো আমি ওর এক্সিডেন্ট করি।তার মাঝে ও তোকে?ও তোকে?”
“হ্যা!ও তোর গাড়ি থেকে লাফ দিয়েছিলো কিনা?”
“হা….হ্যা”
“তখনই আমার মেসেঞ্জারে ভয়েজ পাঠিয়ে রেখেছে।তোর সমস্তকিছু সেখানেই বিবৃত করেছে।তৎক্ষণাৎ কোনোকিছুতো করার সামর্থ্য ছিলোনা।একদিন তো বের হতামই?অতঃপর তোর পতন ঘটতো,ঘটছে!এই দিনটার জন্যই রিহু সেদিন আমার কাছেই ওর দুঃখসমূহ বলে গিয়েছিলো।আমার বোন শেষবারের ন্যায় কিছু চেয়েছে।তা তাকে না দিই কী করে?একটা জিনিস এখনো আমার জানা হয়নি।বলবি তুই?”
অতি রুক্ষ কন্ঠে পূর্ণতা বলে,
“সবই জানিস।আর কী এমন জানিস না?”
“এতকিছু কেনো করলি?আমার চাঁদটাকে ছেড়ে দিলেই কি পারতিনা?আমার বাচ্চাটাকে কেনো মা*রলি?যেই বাচ্চাটা আমার পৃথিবীতেও আসেনি তাকে তুই অতি ধীরে গর্ভেই মে*রে দিয়েছিস?এত পাষাণী কেন তুই পূর্ণ?”
কতটা আক্ষেপের সহিত করুন কন্ঠে বাক্যসমূহ প্রণয় আওড়িয়েছে তা বোঝার ক্ষমতা হয়তোবা তার সামনে বসা পূর্ণতার পক্ষে সম্ভব না।এজন্যই হয়তো সে রুক্ষ কন্ঠেই পাল্টা জবাব দেয় প্রণয়ের,
“তোর চাঁদই তো সমস্ত সমস্যার মূল প্রণয়!ওকে কেউ বলেছিলো আমার রাস্তায় আয়?বল বলেছিলো?ও কেন ‘রাজ ভিলা’ য় গিয়েছে?তোর বউ এত বা* পাকনা কেনো?”
চেচায় প্রণয়,
“শাট ইওর মাউথ পূর্ণ!”
“তুই চেচালেই সবটা বদলাবে না।তোর বউ নিজেকে বাঘিনী ভাবে তো?সেই বাঘিনীকে নিজ পায়ের তলায় এনে সর্বসুখ আমি অনুভব করেছিলাম প্রণয়।শুধু যে আমাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড় করেছিলো সেই ক্ষোভে না।ও আমার সমস্ত সুখ কেড়ে নিয়েছিলো।ওকে তো এমনি এমনি ছাড়া যেতো না”
কথাখানা শেষ হতেই বসা হতে দৌড়ে আসে প্রণয় পূর্ণতার নিকট।অতঃপর তার টুঁটি চে!পে বলে,
“আমার চাঁদের গায়ে হাত দেয়ার সাহসও হয় তোর কী করে?আরে!তুইতো অরণকে পর্যন্ত ছাড়িস নি!অরণের সাথে চাঁদের কী বাজেভাবে উপস্থাপনা করেছিলি তুই!ছেলেটা তোকে ভালোবাসতো পূর্ণ!এখনো হয়তো বাসে!”
শ্বাস আটকে আসায় চোখদু’টো বড়বড় হয় পূর্ণতার।ঘনঘন শ্বাস নিতে গেলেই গলা ছাড়ে প্রণয়।অতঃপর পূর্ণতা কাশতে কাশতে বলে,
“আমি বলেছিলাম ওকে ভালোবাসতে?ও কেনো বেসেছে আমায়?জানতো না?জানতো না আমি তোকে ভালোবাসি?তারপরেও কেন বাসবে?বেসেছে ভালো!ঐ চাঁদের সাথে কেনো ওর এত মেলামেশা করতে হবে?যদি না ও চাঁদের এত হেল্প করতো আমি কখনোই অরণের ক্ষ*তি করার বিষয় চিন্তায়ও আনতাম না।আর না রিহুর এতটা করুন পরিণতি হতো।তোরা সবাই ঐ চাঁদের জন্যই কেন নিজেদের বিলিয়ে দিস?কী আছে টা কী ওর মধ্যে?ওর প্রেমে তুই কেন পড়েছিলি প্রণয়?আশেপাশে আমিও ছিলাম তোর!আমি যে তোকে ভালোবাসি কই সে খবর তো তুই রাখিস নি।কখনো বোঝার চেষ্টাই করিস নি!”
“তুই নিজের আর চাঁদের তুলনা দিচ্ছিস পূর্ণ?কখনো আকাশ আর পাতাল এক হতে দেখেছিস?আমার চাঁদ আর তুই আকাশ পাতালের ন্যায় ভিন্ন।আমার চাঁদ যদি শ্রেষ্ঠ নারী হয়।তুই হচ্ছিস নিকৃষ্টতম নারী!আর কী বললি?আমায় ভালোবাসিস তুই?ভালোবাসার মানেও বুঝিস?বল বুঝিস?বন্ধু হিসেবেও তো ভালোবাসতে পারলি না।না আমাকে পেরেছিস না আমাদের বন্ধুমহলের অন্য কাউকে!”
“আমার বন্ধুত্বে প্রশ্ন তুলবিনা প্রণয়!আমি তোদের সবাইকে ভালোবাসি।অসম্ভবরকম ভালোবাসি”
খানিক হেসে প্রণয় বলে,
“এতটাই ভালোবাসিস যে আমাদের সকলকে যদি খু*ন পর্যন্ত তোর করতে হয় তাও হাত কাপবেনা!”
“আমি সত্যিই তোকে ভালোবাসি বিশ্বাস কর প্রণয়!আমি আমি তোদের সবাইকে ভালোবাসি।শুধু…..শুধু ঐ চাঁদ!চাঁদ কেনো আসলো জীবনে?আমার ভাইয়েরা পর্যন্ত ঐ চাঁদের জন্য দিশেহারা।কেনো?কী আছে কী ওর মধ্যে?সবাই শুধু ওকেই কেনো ভালোবাসে?”
“ঈর্ষা পতনের মূল জানিস তো?তোর ক্ষেত্রেও তাই।আর রইলো আমায় ভালোবাসা।তো আমি বলবো তুই আমায় কখনোই ভালোবাসিস নি।ভালো তো আমায় অনেকেই বেসেছে।সচক্ষে আমি তা দেখেছিও।তবে তুই?তুই কখনোই বাসিস নি।বাসতে পারিস না।কারণ তুই চরিত্রহীণা।তোর চরিত্রে সমস্যা আছে।তুই এই পর্যন্ত নিজ জীবনে কী কী করেছিস বলতো?তুই আম্বিয়ার ফেস মাস্ক লাগিয়ে কী কী করিস নি?শেষে চাঁদের ফেস মাস্ক লাগিয়ে অতি নিকৃষ্ট কাজটা তুই করেছিলি।অরণ আর চাঁদের নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিলি।আমি কিছুই ভুলি নি পূর্ণ।শুধু মুখোশের আড়ালের সাপ নামক তুইটাকে চিনতে পারিনি।তুই কখনোই কারো আপন হতে পারিস না।তোর মাথায় অতিরিক্ত পরিমাণে সমস্যা আছে।তুই আমার বাচ্চাকে পয়জন পর্যন্ত দিয়েছিস।তোর ভেতর কি নারীসত্তা নেই?মায়া আদোতে আছে?”
গর্জায় পূর্ণতা,
“না নেই!একদমই নেই।তোর বাচ্চাকে খু*ন করে আমি সর্বশান্তি পেয়েছি।তোর আর চাঁদের অংশ পৃথিবীতে বাঁচবে কেনো?অথবা আসবেই কেনো?তাইতো মে*রে দিয়েছি।তুই আমার না হলে অন্য কারোও হতে পারিস না।কতবার যে ঐ মেয়েকে মা*রতে চেয়েছি পারিনি!কই মাছের প্রাণ কিনা!আর কী বলেছিস?হ্যা আমি মানি আমার চরিত্রে সমস্যা আছে।তবে তোকে পেলেতো সেসব থাকতোনা প্রণয়!তুই আমার হলে পরপুরুষের কাছে যেতাম আমি?কোনোদিনই তো যেতাম না।তুই আমার হস নি কেন বলতো?”
“ঠিক এজন্যই আমি তোর হইনি!কখনো হওয়ার সুযোগও নেই।প্রণয়ের জন্য সৃষ্ট নারী কেবল একজনই,আমার চন্দ্রময়ী”
উচ্চস্বরে হেসে পূর্ণতা বলে,
“তোর সেই নারীর তো সতীত্বই নেই!না আছে মাতৃত্ব!আমি,আমি নিজ চোখে তোর চাঁদের সতীত্ব ধ্বং*স হতে দেখেছি।আমারই হাতে তোর চাঁদের মাতৃত্ব পর্যন্ত ধ্বং!স করেছি।আমিই চাঁদের গর্ভাশয় ফেলে দিয়েছিলাম প্রণয়।তোর চাঁদ কোনোদিনই মা হবেনা!আজীবন এই অনুতাপে ভুগবে।তুইও ভুগবি।তোরা কখনোই সুখী হবিনা!আমার ভালোবাসা কেড়ে তোর চাঁদও কখনো সুখী হবেনা।ওর গর্ভাশয়ের বদলে জানটা কে*ড়ে নেওয়া উচিত ছিলো আমার!”
“পূর্ণ!”
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
চাঁদের রুমের কাছে এসে দরজায় কেউ টোকা দিতেই সে পানে চেয়ে হাসিমুখে চাঁদ বলে,
“এসো রুবা”
অতঃপর ভেতরে এসে রুবা চাঁদের বিছানায় বসতে বসতে বলে,
“আমি আর শিফু পার্মানেন্টলি এসে পড়লাম ভাবি!মানে যদিও বা টেম্পোরারিই”
“আগেইতো বলেছিলাম।তোমরাই শোনোনি”
“হ্যা।আর জানো কাল একটা সারপ্রাইজ আছে সবার জন্য!”
কপাল কুচকে চাঁদ প্রশ্ন করে,
“কীসের সারপ্রাইজ?”
“কালই বলবো ভাবি!অবশ্য তুমি কাল দু’টো সারপ্রাইজ পাবে”
কপাল কুচকে রেখেই চাঁদ বলে,
“দু’টো মানে?”
“মানে দুইটা”
বিরক্তি নিয়ে চাঁদ প্রশ্ন করে,
“কীসের দুইটা?বুঝিয়ে বলো”
“বলবো,বলবো।সময় হোক।আর হ্যা ভাবি আমিই তোমার ভাবি হবো”
বলেই বিছানা হতে উঠতে নিলে চাঁদ প্রশ্ন করে,
“তুমি এখনো ভাবো ভাই তোমায় ভালোবাসবে?”
“শুধু ভালোই বাসবে না।তোমার ভাই আমারই হবে ভাবি।মিলিয়ে নিও”
কথাখানা শেষে চাঁদের রুম হতে প্রস্থান নেয় রুবা।অতঃপর তন্ময়ের রুমের কাছে গিয়ে নক করতে গেলেই গম্ভীরস্বর ভাসে তন্ময়ের,
“ভেতরে আয়”
তন্ময়ের অনুমতি পেয়ে ভেতরে এসে সোফার উপর বসতে বসতে রুবা বলে,
“ভাইয়া!ভাইয়া!আমি এত এক্সাইটেড!জানিনা মিস্টার চৈত্র কী রিয়েক্ট করবেন”
কপাল ঈষৎ কুচকে তন্ময় বলে,
“চৈত্র ভাই ছাড়া আর কিছু তোর মাথায় আসেনা?”
“আপাতত আসছেনা।কালকের কথা ভেবেই আমার কেমন কেমন লাগছে ভাইয়া।আশা করছি থা!প্পড় টাপ্পড় না মে*রে দেয় আমায়!”
বেশ বিরক্ত হয়ে তন্ময় বলে,
“এসব বলতে এখানে এসেছিস?”
“আরেএ!এমন করো কেনো ভাইয়া?তোমার থেকে সাজেশন নিতে এসেছি শুধু”
“কী করবি কাল?”
তন্ময়কে কিছু বলার পূর্বেই রুবার ফোনে কল আসে রিদির।অগ্যতা রুবাকে চলে যেতে হয় সেথা হতে।রুবা চলে যেতেই তার যাওয়ার পানে একধ্যানে চেয়ে মনে মনে তন্ময় শুধায়,
“আমি কি বেশি দেরি করে ফেলেছি রুবা?তুই চৈত্র ভাইয়েরই হবি?”
অতঃপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে অন্যপানে চেয়ে চোখজোড়া বুজে বালিশে হেলান দেয় তন্ময়।
____________________________
রুবা তাদের জন্য বরাদ্দকৃত গেস্টরুমে এসে দরজা আটকাতেই শিফা বলে,
“কীরে?তন্ময় ভাইয়া কোনো আইডিয়া দিলো?”
“না।রিদু কল করেছে আয় কথা বলি”
“ভিডিও কল দে”
শিফার কথা মোতাবেক রিদিকে ভিডিও কল দিতেই ওপাশ থেকে রিদি রিসিভ করে বলে,
“কীরে প্ল্যানিং অল ডান?তুই সত্যি সত্যি চৈত্র ভাইয়াকে প্রোপোজ করবি রুবা?”
খানিক কেশে মনে মনে সাহস সঞ্চার করে রুবা বলে,
“হা…..হ্যা..হ্যা!আলবাত করবো”
কিঞ্চিৎ চিন্তিত হয়ে রিদি বলে,
“কিন্তু রিহাপু বেঁচে থাকতে সেও করেছিলো কিন্তু….. ”
তৎক্ষণাৎ রুবা জবাব দেয়,
“হ্যা করেছিলো কিন্তু আমার চৈত্র রিহাপুকে ভালোবাসেনি।আমি জানি সে আপুকে উলটো ইগনোর করেছে….”
রুবার আরও কিছু বলার পূর্বে শিফা বলে,
“কিন্তু রুবা,ভাইয়া যদি তোকেও ইগনোর করে?বা ভাবিকে যদি বলে দেয়?অথবা প্রণয় ভাইয়াকে বা রায়হান ভাইকে?”
শিফার গলার স্বর পেয়ে রিদি প্রশ্ন করে,
“কীরে শিফাও তোর সাথে?”
মনে পড়ার ভঙ্গিতে রুবা বলে,
“ও হ্যা!তোকে বলতে ভুলে গেছি।শিফু আর আমি এই বাড়িতে একসাথেই শিফট হয়েছি”
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
“অরণের ব্রেইনের পাশ ঘেষে তুই কী করে কি*ল প্রবেশ করিয়েছিলি?তুইতো গাইনী ডাক্তার”
প্রণয়ের প্রশ্নে মৃদু ঠোট বাকিয়ে আলতো হেসে পূর্ণতা বলে,
“এতকিছু জানিস ওটা জানিস না?তুই হয়তো এটাও জানিস না যে আমিই যে অহনা এ খবর অরণও হয়তো জানতো।তাছাড়া অরণ আমায় ভালোবাসে এটা কিন্তু আমার প্লাস পয়েন্ট প্রণয়!ডাফারটার উচিত ছিলো মিরুকে ভালোবাসা অথচ ও না জেনেবুঝে আমায় ভালোবেসেছে।শুধু শুধুই কি ডাফার বলি?”
“ভালোবাসা জেনেবুঝে হয়না।আর জেনেবুঝে কাউকে ভালোবাসতে গেলে তাকে আমি ভালোবাসা বলে গণ্য করিনা।আর এটাও ধ্রুবসত্য যে সর্বদাই আমরা ভুল মানুষে প্রেম নিবেদন করি!”
To be continued…..
[বিঃদ্রঃগল্পটা সম্পূর্ণই কাল্পনিক।তাই কাল্পনিকভাবেই নেওয়ার অনুরোধ]