আবার প্রেম হোক ২ পর্ব-০৪

0
407

#আবার_প্রেম_হোক (২য় খন্ড)
#নুসরাত_জাহান_মিম

০৪.
চাঁদ আর প্রণয়ের রুমের বিছানার পাশে রাখা এক চেয়ারে বসে একধ্যানে দেয়ালে টানানো বড় ফ্রেমে বাঁধানো চাঁদ আর প্রণয়ের হাস্যোজ্জ্বল ছবির দিকে চেয়ে আছে চৈত্র।পলক তার পড়ছেনা।পড়বেই বা কেমোনে?ছবিখানাই এমন যে যেকেউ তাকিয়ে থাকতে বাধ্য হবে।প্রণয় আর চাঁদের মিলন যেনো অবধারিত।দরজার বাইরে হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো রুবা।কিয়ৎক্ষণ চৈত্রের পানে চাইতেই সে খেয়াল করে চৈত্র দেয়ালে টানানো ছবির দিকে নজর রেখেছে।তাই নিজেও সেখানে তাকায় রুবা।অতঃপর দেখতে পায় ঘাসের উপর বসে থেকে দুই হাত দিয়ে চুল ঠিক করতে করতেই চাঁদের পানে আড়চোখে চেয়ে আছে প্রণয় আর চাঁদও তার পাশাপাশি বসে হাটুতে কনুই চেপে গালে হাত দেয়ার ভঙ্গিমায় তার দিকেই একধ্যানে চেয়ে আছে।ছবিটার দিকে তাকাতেই হৃদয় হঠাৎ শীতলতায় ছেয়ে গেলো রুবার।ছবিটা যে কতটা প্রাণবন্ত সেদিকে তাকালেই তা বোঝা যাচ্ছে।এ যেনো সত্যি সত্যি প্রণয় আর চাঁদই তার সম্মুখে বসে আছে।একধ্যানে সে পানে রুবা কেবল তাকিয়েই থাকলো।ততক্ষণ তাকিয়ে থাকলো যতক্ষণ না তার হৃদয় থেকে মস্তিষ্কের চাপটা বেশি মনে হলো।অতঃপর মস্তিষ্ক ফের সজাগ হতেই ধ্যান তার ভাঙলো আর চৈত্রের পানে সে তাকালো।এখনো ছেলেটা সে পানেই তাকিয়ে আছে।দীর্ঘশ্বাস ফেলে এগিয়ে আসলো রুবা।অনেকটা কাছাকাছি আসতেই সে চৈত্রের চোখের কোনে পানিকণা জমে থাকতে দেখলো।আরেকটু হলেই হয়তোবা পড়ে যাবে।চৈত্রকে এরূপ পরিস্থিতিতে ফেলে বিব্রত না করতে নিজেই খানিক কেশে চৈত্রের দিকে মুখ করে তার থেকে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে বিছানার উপর বসলো রুবা।অতঃপর বললো,

“ভাইয়া আর ভাবি কলেজ লাইফ থেকেই একে অপরকে ভালোবাসতো মিস্টার চৈত্র”

কোনো মেয়েলি কন্ঠস্বর পেয়ে নিজেকে যথেষ্ট সামলে চোখজোড়া বন্ধ করে চোখের পানিসমূহ চোখের ভেতরেই শুষে নিয়ে চৈত্রও মৃদু কেশে বললো,

“হিম জানতে পেরেছিলাম পরে”

“আগে জানতেন না?”

গম্ভীর কন্ঠে চৈত্রের জবাব,

“না”

“আমরাও কিছু জানতাম না।পরে মির ভাইয়ার থেকে ভাইয়া আর ভাবির লাভ স্টোরি অর্ধেক শুনেছিলাম বাকিটুকু ভাবি নিজেই বলেছে।জানেন?ভাইয়া আর ভাবির প্রেম এতটা মনোমুগ্ধকর ছিলো যে আমি নিজেই বারংবার সেই সাগরে হারিয়ে যাই”

রুবার পানে চাইতেই চৈত্র দেখে চোখ বন্ধ করে ঠোটে মৃদু হাসি ঝুলিয়ে কিছু একটার সুবাস সে নিচ্ছে।এমনটা রুবা কেনো করছে জানা নেই চৈত্রের।ঘাটাতেও চাইলোনা তাকে।বেশ ধীরকন্ঠে চৈত্র বললো,

“ওদের প্রেম সম্পর্কে অতকিছু জানিনা।শুধু জানতে পেরেছি কলেজ লাইফ থেকেই একে অপরকে ভালোবাসতো বলেনি হয়তোবা তবে সকলেই বুঝতো”

চৈত্রের কথা শুনে চোখজোড়া খুলে বেশ আগ্রহ নিয়ে রুবা বললো,

“আপনি শুনবেন ভাইয়া আর ভাবির লাভস্টোরি?আমি সবটা জানি।শোনাই?”

ফ্লোরে দৃষ্টি রেখে কপাল কিঞ্চিৎ কুচকায় চৈত্র।এত কথা তার পছন্দ নয় তার উপর মেয়ে মানুষের থেকে তো মোটেও নয়।তাই বেশ বিরক্তি নিয়েই ‘না সূচক’ জবাব দেয়ার জন্য উদ্যত হয়ে রুবার পানে তাকাতেই মেয়েটার হাস্যোজ্জ্বল আর আগ্রহমিশ্রিত মুখশ্রী দেখে কপাল শিথিল হলো চৈত্রের,চোখজোড়া হলো শান্ত।বিরক্তি ভাব সামান্য কেটে গিয়ে মায়া জন্মালো মেয়েটার প্রতি।বাচ্চাদের মতো আবদার যেনো!’শোনাই?’ অবশ্য বাচ্চা ই তো।তার তুলনায় অবশ্যই মেয়েটা এক বাচ্চা মেয়ে।সে যেভাবে সবকিছু ভাবে অবশ্যই কমবয়সী সবে কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা রাখা মেয়েটা ভাববেনা অথবা ভাবতে পারবেনা।তার ভাবনার মাঝেই আবারও শোনা গেলো রুবার কন্ঠস্বর,

“কী হলো?শোনাই?”

ধ্যান ভাঙতেই রুবার পানে চেয়ে চৈত্র কিঞ্চিৎ হাসতেই কন্ঠনালি মৃদু কাপলো তার।অতঃপর লম্বা শ্বাস নিয়ে বললো,

“আজ না।প্রণয় আর চাঁদ ফের এক হোক শুনবো,আপনার মুখেই শুনবো মিস রুবা।কেমন?”

নিষ্পলক চাইলো চৈত্রের পানে রুবা।ঠিক যেনো চাঁদের পুরুষালি প্রতিচ্ছবি।চাঁদ মেয়ে আর চৈত্র ছেলে এই যা তফাৎ।একইরকম ব্যবহার,একই আন্তরিকতা।কন্ঠস্বরে একই কোমলতা।আর হাসি?হাসিও যেনো হুবুহু এক!তবে তার অবচেতন মনে ঠেকলো এ হাসি যেনো সেই হাসির তুলনায়ও অত্যাধিক সুন্দর!সুন্দর সেই স্নিগ্ধ রূপ।চৈত্রের গম্ভীর আর রগচটা রূপের বাইরেও যে আরেকটা স্নিগ্ধ,কোমল রূপ আছে জানা ছিলোনা রুবার।এবং এই রূপটা যথেষ্ট মনকাড়া।সে কেবলই তাকিয়ে থাকলো চৈত্রের পানে।প্রথমবারের ন্যায় ভালোভাবে তাকে অবলোকন করতে আরম্ভ করলো।মুখশ্রী বেশিরভাগই চাঁদের ন্যায় মনে হলেও পুরোপুরি চাঁদের মতো নয়।চাঁদের ভ্রু যুগোল যেমন চিকন,চৈত্রের ভ্রুজোড়া সামান্য মোটা,ঘনকালো নয় কিঞ্চিৎ লালচে কালো বর্ণের।চাঁদের চোখের মনি যেমন কুচকুচে কালো তারটা খানিক লালচে।পাপড়িগুলো ঘন এবং লম্বা।বেশ সুন্দর!চাঁদের তুলনায় অত্যাধিক সুন্দর চৈত্রের চোখজোড়া।চোখ থেকে নজর যায় চৈত্রের চুলের দিকে।চুলগুলো বেশ বড় তবে ততটাও নয়,রেশমিকোমল কালো ঠিক চাঁদের ন্যায়ই।ফর্সাভাব চাঁদের তুলনায় একটু কম তবে তাতেই যেনো সে নজরকাড়ে সবার।নাকটা মোটামুটি সরু,চেহারার আদলের সাথে বেশ মানানসই।পরিশেষে ঠোটের দিকে নজর যেতেই ঢোক গিলে রুবা।অপলক চাইতেই সে উপলব্ধি করে ঠোটজোড়া হুবুহু চাঁদের কার্বন কপি।নয়তোবা চাঁদই তার বড়ভাইয়ের ন্যায় অধর পেয়েছে।সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবে চৈত্রকে পর্যবেক্ষণ করতে করতে হঠাৎ চৈত্রের ধীরকন্ঠেও কেপে উঠলো রুবা।খানিক ভয় পেয়ে চৈত্রের পানে চাইতেই দেখলো কপাল কুচকে সে তার পানেই চেয়ে আছে।একধ্যানে ছেলেটার পানে চেয়ে থাকায় বেশ বিব্রতবোধ আর লজ্জায় আড়ষ্ট হয় রুবা।অতঃপর দৃষ্টি নত করে খানিক তুতলিয়ে সে বললো,

“জা…..জ্বি….জ্বি?”

কপাল কুচকে রেখেই বেশ বিরক্তি নিয়ে চৈত্র বললো,

“চাঁদকে কোন হাসপাতালে নিয়েছে?”

“হাসপাতালে নেয়নি তো।রিহা আপুর চেম্বারে নিয়ে গেছে”

এবারে মাত্রাতিরিক্ত বিরক্ত হয়ে চেয়ার থেকে উঠতে উঠতে চৈত্র বলে,

“এটা বলতে এতক্ষণ লাগলো?মেয়ে মানুষ আসলেই বিরক্তিকর”

শেষের কথাটা বিরবির করতে করতেই উঠছিলো চৈত্র।আর রুবা বলে,

“ভাবির সাথে মিরা আপু আর পূর্ণ আপু আছেতো।আপনি কোথায় যাচ্ছেন?আমি আপনার জন্য খাবার এনেছি।খেয়ে যান,নাহয় ভাবি আমায় বেশ বকবে”

কপাল কুচকে রেখেই চৈত্রের প্রশ্ন,

“বকবে মানে?”

“আমায় বলে গিয়েছিলো আপনি নাকি কিছু খাননি আপনাকে যেনো সচক্ষে খেতে দেখে তাকে জানাই”

“চাঁদ বলেছে এটা?”

বেশ দৃঢ়তার সাথেই মিথ্যা বললো রুবা,

“হ্যা!ভাবি না বললে আমার অতো ঠেকা পড়েছে যে আপনার মতো কথায় কথায় কপাল কুচকানো লোককে ভাত বেড়ে নিজে সামনে বসে থেকে খেতে দেখবো?”

ফের চেয়ারে বসতে বসতে রুবার পানে সন্দিহান দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চৈত্র বলে,

“সত্যিই চাঁদ বলেছে?কিন্তু ও নিজেইতো খাবার না খেয়ে সারাদিন রুমে থাকে।দেখলো কী করে?”

“বোনদের কি দেখা লাগে মিস্টার চৈত্র?ভাইয়ের শুকনো মুখ দেখলেই বোনেরা বুঝে যায় তার ভাই খেয়েছি কি খায়নি”

রুবার পানে কিছুক্ষণ চেয়ে চৈত্র বলে,

“আপনি বলুন তো প্রণয় কিছু খেয়েছে কিনা?”

হতাশার শ্বাস ফেলে রুবা বলে,

“প্রণয় ভাইয়া কখনোই খাবার নিয়ে রাগ অথবা জেদ দেখায় না।ভাইয়ার জেদটা খুব কমই বলা যায়।রাগ হলেও কখনো ভাইয়াকে খাবার নিয়ে রেশারেশি করতে দেখিনি।সে অন্নের বেশ সম্মান করে।তাই সে অবশ্যই খাবে,হয়তোবা খেয়েছে”

রুবার কথা শুনে মৃদু ঠোট বাকে চৈত্রের।কিন্তু রুবা তা দেখার পূর্বেই ফের নিজেকে গম্ভীর করে সে বলে,

“প্লেট দিন”

চৈত্রের দিকে প্লেট এগিয়ে দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুবা বলে,

“আপনিতো বাবুর মামা।আপনার শরীরে শক্তি না থাকলে বাবুকে কে দেখবে বলুন তো?”

ভাত মাখতে মাখতে বেশ সাবলীলভাবেই চৈত্র বললো,

“বাচ্চার বাবা দেখবে।বাচ্চার উপর তার অধিকারই তো প্রখর”

দৃষ্টি আর কন্ঠের খাদ নিচু করে রুবা বলে,

“কিন্তু প্রণয় ভাইয়াতো!আর দু’দিন আছে।ভাইয়াকে…….. মানে আদোতে কিছু করা যাবে?”

ভাতের লোকমা মুখের কাছে নিতে নিতে চৈত্র বলে,

“অরণ আর সমুদ্র গেছে প্রণয়ের কাছে।দেখি কী করা যায়”

বলেই খাবারের লোকমাটা মুখে পুড়ে চৈত্র।আর রুবা অসহায় দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে ফ্লোরপানে।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
শহীদুল্লাহ হলের ঝোপের কাছে মাহতিম,অনিন্দ্য ঘোষ আর কাশেম বাবুর্চিকে যেখানে রেখেছিলো সে পাশেই বস্তা থেকে অধিরাজ শেখকে বের করে ধা!ক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে প্রণয়।অতঃপর গম্ভীর কন্ঠে ব্যাঙ্গাত্মকভাবেই বলে,

“কী বাবুর্চি মশাই?ঘুম ভাঙলো তবে?”

কাশতে কাশতে কাশেম বাবুর্চি বলে,

“তুমি…..তুমি সবাইরে ধরে আনলে?এত বড় কলি…….”

কাশেম বাবুর্চির কথা সম্পূর্ণের পূর্বেই প্রণয় বলে,

“কলিজার দেখলেনই কী মামা?আপনার কলিজা চে!ড়ার ক্ষমতাও আমি রাখি”

বলতে বলতেই কাশেম বাবুর্চির দিকে এগিয়ে আসে প্রণয়।অতঃপর হাতে থাকা বড় এক ধা!রালো ফল কাটার নতুন চকচকে ছু*ড়ি আঙুল দ্বারা ঘষতে ঘষতে বলে,

“আপনাকে আর কীই বা বলবো মামা?আচ্ছা আপনি কি মামা ডাকেরও যোগ্য?ইহিম!আপনি সেটারও যোগ্য নন।আপনার সাথে ক্যাম্পাসের প্রায় সব ছেলে মেয়েরই সখ্যতা।অথচ আপনি কী করলেন?নিজের মেয়ের বয়সী মেয়েদের সাথে নোংরা কাজগুলো করতে আপনার রূচিতে বাঁধলোনা?এই!আমার চাঁদের গায়ে টোকা দিতেও কি তোর রূচিতে বাঁধেনি?”

হাত জোর করার ভঙ্গিমায় কাশেম বাবুর্চি বলে,

“আমারে মাফ করে দাও বাবা!আমিতো চাঁদকে ছুইনি পর্যন্ত।বিশ্বাস করো”

হাসতে হাসতে প্রণয় বলে,

“ছোননি?ছোননি আপনি?হ্যা শারীরিকভাবে অবশ্যই ছোননি।তবে?ছোয়ার আশায় তো ছিলেন?কি ছিলেন না?বলুন ছিলেন না!”

শেষের কথা উচ্চস্বরে বলতে বলতেই দৌড়ে কাশেম বাবুর্চির কাছে গিয়ে গলার মাঝ বরাবর ছু*ড়ি ধরে প্রণয় বলে,

“আচ্ছা আপনাকে কীভাবে মা*রা যায় বলুন তো?কীভাবে মা*রলে আমার রুহ শান্তি পাবে?আপনার সেই সাথীর তো ক!ব্জি ফেলে দিয়েছি।আপনার কী ফালানো যায় হা?”

“কা……কব্জি?কা…কা….কার?”

ঠোট মৃদু বাকিয়ে প্রণয় বলে,

“আপনাদের সকলের সেই মধ্যবয়স্কা সঙ্গিনী।এতক্ষণে তার পরাণপাখি উড়াল দিয়ে চলেও গিয়েছে”

বলতে বলতেই গলার কাছে বাম হাত দিয়ে ছু*ড়ি ধরে রেখে মাটিতে পড়ে থাকা আরেকটা ছুড়ি অপরহাতে নিয়ে কাশেম বাবুর্চির বাম চোখের পাশ হতে ধরে থুতনি পর্যন্ত টা!ন দেয় প্রণয়।সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার দিয়ে উঠে কাশেম বাবুর্চি।তার ঠিক পরপরই ডান গালেও একইভাবে টা!ন দিতে ফের চেচায় সে।হুট করেই প্রণয় উচ্চশব্দে হাসতে হাসতে বলে,

“মাচ প্লিজিং!”

অতঃপর নাকের ঠিক নিচে ঠোটের মাঝ বরাবর আরেক টা!ন দিতেই ব্যথায় চিৎকার পর্যন্ত করতে পারেনা কাশেম বাবুর্চি।চোখ দিয়ে কেবল পানি ঝড়ছে তার।সে হাত জোর করতে গেলেই শার্টের পকেট থেকে গ্যাসলাইট বের করে পাশে থাকা কয়েক টুকরো কাঠের উপর ডান হাত দ্বারা গ্যাসলাইট জ্বালিয়ে আগুন ধরায় প্রণয়।আর বাম হাত দিয়ে কাশেম বাবুর্চির দুই হাত ধরে আকস্মিক দুই হাতই আ*গুনের ভেতর ঢু!কিয়ে দিতেই ধরণী কাপানো চিৎ!কার দেয় কাশেম বাবুর্চি।র*ক্তে তার শরীর ভরে যেতেই সে বেশ করুন কন্ঠে আওড়ায়,

“আল্লাহর দোহাই লাগে প্রণয়!আমার হাত উঠাও।জা!ন বের…….”

তার পরপরই ফের ফল কাটার ছু*ড়ি নিয়ে গ!লার মাঝ বরাবর টা!ন দিতেই আরও একবার তার সারা শরীরে র*ক্তের ছড়াছড়ি হয়।তাতেও যেনো প্রণয়ের শান্তি মিলছেনা।সে কাশেম বাবুর্চির বুকের কাছে আকস্মিক পুরো ছু*ড়ি ঢুকিয়ে দিতেই শেষবারের ন্যায় আ!র্তনাদ করে লুটিয়ে পড়ে সে মাটিতে।আর প্রণয় সে পানে তাকিয়ে থেকে হাটু গেড়ে বসেই ডান হাত চুলের মাঝে গলিয়ে দিয়ে উচ্চস্বরে হাসতে আরম্ভ করে।হাসতে হাসতে মৃদু দুলছে তার শরীর।সেইসঙ্গে বাতাসে উড়ছে শুভ্ররঙা এপ্রোণও।শুভ্ররঙা সেই এপ্রোণ লালচে বর্ণে আবৃত হয়েছে।ছোপ ছোপ র*ক্তের দাগ আর সারা বদনে র*ক্তের ছড়াছড়ি,সেইসঙ্গে সন্ধ্যার লালচে আভার আলোয় সুনসান নীরব সে’ স্থানে উচ্চস্বরের পৈশাচিক সেই হাসি!প্রণয়কে যেনো আরও ভয়ঙ্কর আরও উন্মাদ করে তুলেছে।চুলের ভাজে হাত গুজে অধরজোড়া ফাক করে উচ্চশব্দের হাসিতে কন্ঠনালি কাপছে প্রণয়ের,গা দুলছে মৃদু।কী যে গা শিরশিরানো সেই দৃশ্য!আকস্মিক কেউ দেখলে নিশ্চিত ভয় পেয়ে যেতো।হয়তোবা সেখানে চেতনা হারিয়ে ফেলতো?ভরসন্ধ্যায় নীটল পরিবেশে দূর থেকে দেখলে অশরীরীর প্রতিচ্ছবি মনে হয় যেনো!কেউ কি দেখলো?কারো নজরে পড়লো কি?পড়লে কী হতো?রুহ কি তার বেরিয়ে যেতো?হৃদয় থমকে হাত-পা অসাড় হয়ে আসতো কি?নাকি সেখানেই ঘেমে-নেয়ে অচেতন হয়ে পড়তো সহজসরল ঐ মানবজাতি?এবং?প্রণয়ের এই ভয়ঙ্কর রূপ আদোতে দেখার সুযোগ মিলতো কারো?মিলেছিলো কি?ইম হ্যা!পাশেই কোনোকিছু নড়চড়ের শব্দে সেভাবে বসে থেকেই ঘাড় সামান্য বাকায় প্রণয়।র*ক্তিম চোখজোড়া দ্বারা আড়চোখে চায় সে পানে।তারপর?তারপর কী হলো?কে ছিলো সে?প্রণয় কি তাকে রেহাই দিয়েছিলো?নাকি তার মৃ!ত্যুটা হয়েছিলো আরও নির্ম!ম?

To be continued……

[বিঃদ্রঃগল্পটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক]