#আমার_বধু!
#আফসানা_ইমরোজ_নুহা
#সমাপ্তি_পর্ব
দুপুর হতে না হতেই বাড়ি জুড়ে শোরগোল লেগেছে। বিষয়টা তৃনয় এবং তন্নী কে নিয়ে। রোজিনা, জুঁই, জবা এক আশ্চর্যজনক ঘটনার সম্মুখীন হলো এই প্রথম। একটা অদ্ভুত সংবাদ হলো, তৃনয় তন্নী ঝগড়া লেগেছে। এবং দুজন দুজনের সাথে কথা বলছে না। কেনো? বিষয়টা ওরা ভালো জানে। অসম্ভব ব্যাপার! বিশ্বাসযোগ্য নয় মোটেই। ও বাড়িতে বিয়ে আজ। সবাই যখন তৈরি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন তারা ব্যপারটা সম্পর্কে জানতে পারল। রাগ করেছে তন্নী। তৃনয় কতক্ষন আগে বের হয়েছে। তন্নী ঘরের ভেতর শাড়ি পড়ছে। লাল একটা শাড়ি। সোনালী রঙের মোটা পাড়। সকালকে রেডি করাচ্ছে জবা। রোজিনা ঘরে এসে দেখলেন, তন্নী কুঁচি গুজছে কোমড়ে। তিনি বিছানায় বসলেন। জিজ্ঞেস করলেন,
“ কি নিয়ে লেগেছিস দুজনে? ”
তন্নী আয়নায় তাকালো। একপলক শাশুড়ির মুখ দেখে ফের নিজের কাজে মনোযোগ দিল,
“ বলেছিলাম, আমি আর রান্নাবান্না করতে পারব না। ”
রোজিনা সেকথা মোটেও বিশ্বাস করলেন না। বিয়ে হয়ে আসার পর থেকে কখনো বউ এমন কথা বলে নি। তখন ছিল ছোট। আজ প্রাপ্তবয়স্ক নারী হয়ে এমন ফালতু বিষয়ে ঝগড়া করবে তা মেনে নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তিনি ভ্রু কুঁচকে তাকালেন,
“ মিথ্যা কথা বলিস না, বউ। তোকে চিনি আমি। ”
তন্নী তখন কাঁধে শাড়ি তুলেছে। সে কাজল চোখে দিতে দিতে মিনমিন করলো,
“ মিষ্টি কে মেরেছিলাম। ”
মিষ্টি! সকাল। নাম সকাল রাখলেও মাঝেমধ্যে ডাকা হয় মিষ্টি নামে। রোজিনা নিজেও রাগ করলেন। উঠে দাঁড়ালেন। আয়নার সামনে দুটো তরতাজা লাল গোলাপ। খোঁপায় গুজবে বোধহয়। তিনি ফুলগুলো খোঁপায় লাগিয়ে দিলেন সুন্দর করে। তন্নী চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো। সকাল সকাল খাওয়া নিয়ে তন্নী কে জ্বালিয়ে মারে মেয়েটা। পাক্কা তিন ঘন্টা পার হয় ওকে খাওয়াতে গেলেই। রাগ হওয়া কি স্বাভাবিক না? তন্নীর নিজের কি মায়া নেই মেয়ের প্রতি? হাত একটু লেগেছে কি লাগে নি। ওমনি আহ্লাদির কান্না শুরু। মেয়েকে মেরে মা নিজেও কান্না জুড়েছে। তৃনয় তাই ধমকেছে কতক্ষন। এমন ধমক তন্নী কত খেয়েছে! মেয়েকে আদর করবে, মারবে। দুটোই সে করবে। রোজিনা বললেন,
“ এতো ছোট মেয়েকে মারলি কেনো? ”
“ মা হয়ে দু একটা থাপ্পর দেওয়ার অধিকারও কি আমার নেই? ”
“ অবশ্যই আছে। কিন্তু শুনে রাখ, তন্নী। বাপের সামনে কোনোদিন ছেলেমেয়েদের উপরে হাত তুলবি না। মনে থাকবে? ”
তন্নী মাথা দোলালো। তিনি থুতনি উঁচিয়ে মুখটা দেখে বললেন,
“ তোকে আজকে সুন্দর লাগছে। ”
তন্নী লজ্জা পেল। শ্বাশুড়ির মুখের তুই ডাক ওর বড্ড পছন্দের। সে আয়নায় নিজেকে দেখে বের হলো। গোলাপ দুটোর ঘ্রান বেশ সুন্দর। তৃনয় এগুলো নিয়ে এসেই মেয়েকে কাঁদতে দেখেছে। তারপর ধমকে টমকে চলে গেছে। তন্নী হেঁসে ফেললো। গোলাপ দেওয়া ঝগড়া? ওটা আদোতে ঝগড়া ছিল? তন্নী তো মনেই রাখে নি।
বিয়ের খাওয়া দাওয়া শুরু হয়েছে দুপুর দুইটা থেকে। তৃনয়ের পড়নে লাল পাঞ্জাবি, তন্নী পড়েছে লাল শাড়ি। আর সকাল কে একটা লাল জর্জেটের গোল জামা পড়িয়েছে জবা। ওরা তিনজন একদম একরকম। পুরো বিয়ের সময় জুড়ে অতিথিদের অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে রইলো তৃনয় তন্নী জুটি। খাওয়ার সময় স্বামী স্ত্রী একত্রে বসেছে। তৃনয় কথা বলে নি। তন্নীও বলে নি। তবুও সবার সামনে তারা খুব স্বাভাবিক। বোঝার উপায় নেই, দুজনে কথা বলছে না। বিয়ে শেষ হতে হতে রাত হয়ে এলো।
***
বরের বাড়ি বহুদুরে। নিয়াজ মোর্শেদের কোথাকার কোন আত্মীয়ের বাড়ি পটুয়াখালী। বহুদিনের শখ হিসেবে বিয়েটা হয়েছে। বর তাই আজকে আর যাবে না। রাতটা এখানে পার করে দিয়ে সকাল সকাল রওনা হবে তারা। তৃনয়ের কাজিন মহলের সবাই খুশি। একটু আধটু আড্ডা দেওয়া যাবে। অর্ধেক রাত কথা বলেই কাটিয়ে দেওয়া যাবে। তাসফিয়ার রুমে এসে একে একে সবাই জড়ো হলো।
রুমটা বেশ বড়। সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে এখানে সেখানে বসলো। কেউ কেউ দাঁড়িয়ে রইলো। নতুন বর বউকে বসানো হলো বিছানায়। ওদেরকে এখানে আনতে বহু কসরত করতে হয়েছে।
সেখানে অবশ্য অভিমানে জর্জরিত দম্পতিও আছে। এবং ওরাই আজ রাতের মুল হেতু।
মোট কাজিন মিলিয়ে তৃনয়রা ছয় চাচাতো ভাই। অর্থাৎ ছয়টা জুটি। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে রোমান্টিক জুটি হিসেবে পরিচিত তৃনয় তন্নী। যাদের মধ্যে আজ পর্যন্ত কখনো ঝগড়া হয় নি। এমনকি ওদের লুতুপুতু ভালোবাসাও ওদের সামনে প্রকাশ পায় নি। কি সুন্দর স্বাভাবিক দুজনে। ঝগড়া নেই , মারামারি নেই।
তাই আজকে ওদের বিষয়টা সবার কাছে বেশ বেমানান লেগেছে। এরা নাকি ঝগড়া করে কথা বলছে না। ভাবা যায়? অথচ ওরা জানে না, তন্নী সেসব মনেই রাখে না।
তাসফিয়া বললো,
“ তোমরা নাকি কথা বলছো না? ”
দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিল। সবাই ঠোঁট চেপে হাসলো। আর ঘাটলো না। তন্নীর বড় জা রুবিনা তন্নী কে জিজ্ঞেস করলো,
“ তন্নী, একটা কথা বলো। তৃনয় ভাইজান কোনোদিন তোমার গায়ে হাত তুলেছে? ”
তন্নী চমকে তাকালো। তওবা তওবা। তৃনয় কোনোদিন ওকে মারে নি। ঝগড়ার সময় রাগ বেড়ে গেলে চুপচাপ ঘর থেকে বের হয়ে গেছে। সে তড়িঘড়ি বললো,
“ না না। ”
জবার কোলে মিষ্টি। সকলে আরো একবার মুগ্ধ হলো তৃনয়ের প্রতি। জবা বললো,
“ তোমরা দুজনে একটা গান গাও। ”
তৃনয় একটু রেগে গেল, “ তোরা কি কথার টপিক খুঁজে পাচ্ছিস না? মেয়েকে দে। বাড়ি যাবো। ”
আরেকজন টিপ্পনী কাটলো,
“ বউকে নেবেন না, ভাইজান? ”
সবাই জোরে হেসে ফেললো। তৃনয়ের মুখটা আরেকটু গম্ভীর হলো। জুঁই বললো, “ তাহলে ভাবী একটা গান বলো। বোরিং লাগছে। ”
তন্নী মাথা নামিয়ে মিনমিন করলো, “ আমি গান জানি না। ”
তৃনয় কপালে আঙুল ঘষছে। ঘরে গেলেই এসব রাগ অভিমান সুরসুর করে পালাবে। সে জিজ্ঞেস করলো,
“ এখান থেকে মুক্তির উপায় নেই? ”
“ আছে তো। ভাবীকে প্রপোজ করো। সবার সামনে। ভালোবাসি বলো। ”
এক কথায় সবাই হৈ হৈ করে উঠলো। তন্নী লজ্জা পেয়েও ঘাড় ঘুরিয়ে তৃনয়ের দিকে তাকালো। একসাথে দাঁড়িয়েছে দুজন। তৃনয় জিজ্ঞেস করলো,
“ তোমাকে আমি কখনো ভালোবাসি বলি নি? ”
তন্নীর নাকের পাটা ফুলে উঠলো, “ বলেছো তো। চোখ রাঙাবে না। আমি বলেছি? ”
এখান থেকে বের হওয়ার একমাত্র উপায় এটাই। তৃনয় আশেপাশে তাকালো। কিচ্ছু নেই। ভালোবাসি বলবে কি দিয়ে? তার চোখ পড়লো তন্নীর খোঁপায়। সে একটানে একটা গোলাপ বের করলো সেখান থেকে। তন্নী মাথায় হাত চেপে ধরলো। ওর সামনে নেতিয়ে যাওয়া গোলাপটা ভাসমান হলো। একটা অস্থির কন্ঠ এলোমেলো হয়ে জানাল,
“ আই লাভ ইউ। ”
তন্নী আশ্চর্য হয়ে মাথা তুললো। ওর গালগুলো লাল হয়ে গেছে। হৈ হুল্লোড় বাড়ছে। সে ধীরে ধীরে ফুলটা হাতে নিল। তৃনয় আর অপেক্ষা করে না। তন্নীর হাত টেনে বাইরে বের হয়ে বড় বড় কদমে ছাদে এলো সে। তন্নী শাড়ি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। দু’জন এসে দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়াল। আজ পুর্নিমা সেদিনের মতো। পাশাপাশি দু’জনের কতক্ষন কাটার পর তন্নী জিজ্ঞেস করল,
“ এভাবে নিয়ে এলে কেনো? ”
“ এসব ঝগড়ার বিষয় সবাইকে কে জানিয়েছে? ”
“ জেনে গেছে। ”
ওর হাতটা তখনো তৃনয় ধরে রেখেছে। তৃনয় আস্তে করে জিজ্ঞেস করলো,
“ অভিমান কমেছে? ”
রাগ, অভিমান, অভিযোগ সম্পর্কে তন্নী তেমন বোঝে না। সে এক তৃনয়কে ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না। এই যে সকাল থেকে কথা নেই, তাতে ওর কিচ্ছু যায় আসে নি। সে জানত, এই ধমকের ফল স্বরুপ রাতে তৃনয় হয়তো একজোড়া চুরি, নয়তো একজোড়া নুপুর পড়িয়ে দিত ওকে। তারপর বুকে আগলে নিয়ে বোঝাতো। ওর দোষটা ধরিয়ে দিয়ে নিজের দোষ গুলোও জানাতো। বলুক না সবাই। তন্নী সেসব মনে রেখেছে নাকি? অভিমান কার উপর করবে সে? যে লোকটা সে ব্যথা পাবে, এই ভয়ে ওকে বুকে আগলে ভালোবেসেছে, যে লোকটা ও না খেলে মুখে তুলে খাইয়ে দিয়েছে। তার উপর রেগে থাকা যায়? সকালের যখন জন্ম হলো? তন্নী সেসময়ের স্মৃতি আজও ভুলতে পারে না। মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার পর আধো চোখ মেলে সে তৃনয়ের লাল চোখগুলো দেখেছিল। উস্কো খুস্কো চুলগুলো, আতঙ্কিত মুখটা ওর চোখে জ্বলজ্বল করে। রাতের পর রাত তার হাত পায়ে মালিশ করেছে তৃনয়। সবার সামনে দাম্ভিক লোকটাও ওর পায়ে হাত রেখে ওকে আরাম দিয়েছে। তার উপর রেগে থাকা যায়? সেসব স্মৃতি ভোলা যায়? রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটিয়ে লোকটা সকালে বেশ দিব্যি কাজে চলে গেছে। অপটু হাতে জটসহ চুলে এলোমেলো বেনি গেঁথে দিয়েছে। ঘুমের মধ্যে আজও একটু নড়চড় করলে কপালে ঠোঁটের স্পর্শ পায় সে। সেসব তন্নী ভুলেছে? ভালোবাসি বলার থেকেও বেশি প্রকাশ করা লোকটার প্রতি রেগে থাকলে তন্নীর পাপ হবে। পাপ!
তন্নী তৃনয়ের কাঁধে মাথা রাখলো। আস্তে করে বললো,
“ অভিমান সেই কবেই গলে গেছে। ”
“ মেয়ের গায়ে কখনো হাত তুলবে না। ”
“ আচ্ছা। ”
“ দুষ্টুমি করলে বুঝিয়ে বলবে। ”
“ আচ্ছা! ”
তৃনয় দুষ্টু গলায় বললো,
“ আমার লাভ ইউয়ের উত্তর পাই নি কিন্তু। ”
তন্নী মুখ লুকানোর জায়গা পেল না। ছাদের দরজায় টোকা পড়লো। দু’জন একটু সরে দাঁড়াল। জবা এসে সকালকে ওদের কাছে দিয়ে গেল। তৃনয় মেয়েকে কোলে নিয়ে চাঁদ দেখাল। জিজ্ঞেস করল,
“ বলো তো ওটা কি? ”
সকাল বললো, “ চাঁদ। ”
তন্নী মুগ্ধ চোখে দুজনকে দেখছে। বাবা মেয়েকে কি সুন্দর দেখাচ্ছে! তৃনয় ফের জিজ্ঞেস করল,
“ চাঁদ সুন্দর, নাকি তোমার আম্মু সুন্দর? ”
সকাল মায়ের দিকে তাকিয়ে হাসলো। গাল আঁকড়ে ধরে উত্তর দিল,
“ আমাল আম্মুই তো চাঁদ। ”
দু’জনে হেসে ফেললো। কথাটা তৃনয় শিখিয়েছে। তন্নী এগিয়ে এসে মেয়ের কাছে জানতে চাইলো,
“ এবার বলো, আম্মু বেশি সুন্দর নাকি আব্বু? ”
এ পর্যায়ে সকাল একটু দ্বিধাবোধ করলো। সে একবার মায়ের দিকে, আরেকবার বাবার দিকে তাকালো। বহু চেষ্টা করেও উত্তর খুঁজে পেল না। তাই দুই হাতে দুজনকে একসাথে গলায় আঁকড়ে ধরে বললো,
“ দুজনই সুন্দল! ”
তৃনয় মেয়ের নাকে নাক ঘষলো। তন্নী চাঁদের দিকে তাকালো। হাসি হাসি মুখটা একটু নিভে এলো। ছোট বেলায় সে নিশ্চিত কোনো ভালো কাজ করেছিল। নইলে ওর ভাগ্যে তৃনয় জুটে যাওয়া অসম্ভব ছিল। তৃনয়ের মতো স্বামী পাওয়া তার সাত জনমের ভাগ্য।
তৃনয় সকাল কে বললো,
“ তুমি আমার আম্মাজান। ”
তন্নী সেটা শুনলো। খুবই মনোযোগ দিয়ে। ঐ যে দুরের আকাশ, কিশোরগঞ্জের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া নরসুন্ধার থৈ থৈ জল, বাতাসের নিদারুণ ঝাপ্টায় তার নিজেকে পাগল পাগল লাগে। হারিয়ে যেতে মন চায় অজানায়। এতো সুখ ওর কপালে থাকার কথা নয়। মেয়ে হিসেবে তন্নী আদর্শ রমনী হতে পারে নি। আজও শার্ট আয়রন করতে গেলে পুড়ে যায়। আজও স্বামীর একটা টিশার্ট ধুয়ে দিলে ঠিকমতো পরিষ্কার হয় না। সে আকুল স্বরে জানতে চায়,
“ আর আমি? ”
তন্নীর চোখ টলমল করছে। যেকোনো সময় কেঁদে ফেলতে পারে। তৃনয় নিশ্চুপ হাসে। কথা বলে না। প্রথমে মেয়ের গালে শব্দ করে একটা চুমু খায়। তারপর শরীরটা বাঁকিয়ে ঝুঁকে আসে ওর দিকে। একইসাথে তিন তিনটে মুখ সমান্তরাল হলো। তৃনয় মেয়ের সামনেই মায়ের কপালে চুমু খেল। তারপর মেয়েকে বললো,
“ চাঁদ দেখো, আম্মু । ”
সকাল সেদিকে তাকালো। তৃনয়ের ঠোঁটটা ফের কপালে গেল। স্পর্শ উঠলো না। উত্তপ্ত ঠোঁটজোড়া কপাল বেয়ে গালে, গাল থেকে কানের কাছে গেল। কানের লতিতে ছোট্ট স্পর্শে তন্নী কেঁপে উঠলো। গরম লাগছে। সে তৃনয়ের পাঞ্জাবীর বুকপকেট খামচে ধরলো। ওর জীবনের সুখ আরো কয়েকধাপ বাড়িয়ে দিতে, একটা গুরু গম্ভীর স্বর থেকে ঠিকরে এলো দুটি মধুর শব্দ। তৃনয়, ওর স্বামী ওকে জানাল,
“ #আমার_বধু! ”
( তন্নীর বদ্ধ চোখ থেকে দু ফোঁটা গরম নোনা জলের বৃষ্টি হলো টুপটাপ। শরীরটা দুলে উঠলো নিদারুণ খুশিতে, সুখের উল্লাসে। তন্নীর আশ্রয় তৃনয়। তৃনয় তন্নীর ঘর। তার চোখের নোনা বৃষ্টি টুকু পর্যন্ত ঠাঁই নিল তৃনয়ের শরীরে। কারন, তৃনয়ই তন্নীর সব। তন্নীর শরীরের প্রত্যেকটা বিভাজন, বাক, সবকিছুতে তৃনয়ের অধিকার। সেখানে দু ফোঁটা অশ্রুও বাদ গেল না। চাঁদের অপরুপ আলোটা তিনটে তিনটে প্রাণের সুখের সাক্ষীতে নিশ্চুপে হাসলো বোধহয়। আকাশের মেঘগুলো একে একে সরে গেল। সম্পুর্ন জ্যোৎস্না এসে বর্তালো ওদের তিনজনের উপর। তন্নীর বহু আকাঙ্ক্ষিত সংসারটার উপর। )
_____________________সমাপ্ত!!________________