#আমার_ললিতা
#পর্ব:৩৮
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া
“বেলী।”
বাহির থেকে কারো ডাকে চোখমুখ মুছে নিলো বেলী।মুখবিবরে ঈষৎ হাসি ফোঁটাতে চেষ্টা করলো।একটু পরে পুরো এক দল যুবতী ভেতরে প্রবেশ করলো।এরা সবাই বেলীর কাজিন।আশ্চর্যভাবে এখন মেয়েটার ঠাহর হচ্ছে আজ মূলত তার বোনের বিয়ে।
“কীরে?তোকে এমন দেখাচ্ছে কেন?বড় বোনের বিয়ে আর সামান্য পরিমাণে সাজ নেই মুখে।”
বেলীর খালাতো বোন কণিকা বিছানাতে বসতে বসতে বলল।সে শশীরও বড়।সবার মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা বেশী।
“আপু আমি সেজেছিলাম।কিন্তু ভালো লাগেনা।”
“কেন?বয়ফ্রেন্ড মানা করেছে?অধিকাংশ যুবতী মেয়ের সাজতে তখুনি ভালো লাগেনা যখন বয়ফ্রেন্ড মানা করে।অথবা ব্রেকআপ হলে।তুই কোন পর্যায়ে রয়েছিস সেটা বল।”
বেলী স্মিত হেসে বলল,
“কোনোটাতে নয়।”
“তাহলে?এভাবে থাকলে চলবেনা।এক মিনিট তুই আজ শাড়ী পরবি।”
বেলীর আলমারিতে সোজা হা”ম”লা চালালো কণিকা।খুঁজে খু্ঁজে লাল রঙের একটি শাড়ী বের করলো।বেলী জানতো কণিকা এই শাড়ীটা বের করবে।কারণ বছর দুয়েক আগে সেই গিফট করেছিলো বেলীকে।কতো যে এটা পরে ছবি দিতে বলেছিলো।কণিকা বিজয়ীর হাসি হেসে বলল,
“অবশেষে আজ আমার টাকা খরচের সার্থকতা হবে।”
“বাহ রে আপু।আমাকে একটা শাড়ী দিয়েছো তাতে আবার টাকার কথা ভাবো?”
“অবশ্যই।টাকার থেকে বড় আত্মীয় নেই।যা এখন দ্রুত ব্লাউজ,পেটিকোট পরে আয়।”
“সবার সামনে নয়।”
“ওরা চলে যাবে।”
বেলী কথা না বাড়িয়ে চলে গেলো ওয়াশরুমে।সে জানে কণিকাকে নিষেধ করে বিশেষ কোনো লাভ হবেনা।চোখে মুখে পানি দিয়ে বেশ ভালোভাবে মুখটা পরিষ্কার করে নিলো।ক্ষণিক পূর্বের দিবাস্বপ্নের রঙ এখনও তার শরীরের মধ্যে তরঙ্গের তৈরী করছে।সে জানে অনলকে ভাবা বন্ধ করতে হবে তার।কিন্তু মন যে নিরুপায়।বাহির থেকে কণিকার কণ্ঠ শুনতে পেয়ে দ্রুত কাজ শেষ করে বের হয়ে এলো।তাকে বেশ সুন্দর করে শাড়ী পরতে সাহায্য করলো কণিকা।স্লিম হয়ে থাকা চিকন পেটে দেখে বলল,
“খালু কী তোর খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে?এতো চিকন কেন?”
“জি না।তুমি বিয়ের আগে এর থেকে শুকনো ছিলে আপু।বাই দ্য ওয়ে ছোটন কোথায়?ওকে রেখে এসেছো?”
“পাগল নাকী?ও কেবল দুই বছরের বাচ্চা।আমাকে ছাড়া বাসায় থাকবেনা।তোর দুলাভাইও সাথে এসেছে।”
“মনে হচ্ছে আজই উঠিয়ে নিবে।আমি জানতাম না এতো মানুষ আসবে।”
“এতো বড় খুশি সবার সাথে ভাগ করে নিতে হয়।এজন্য খালু যারা ঢাকায় ছিল তাদের সবাইকে ডেকেছে।শশীকে সে অনেক ভালোবাসে।এটা তো আমরা সবাই জানি।”
বেশী দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।সে জানে তার বাবা সত্যিই শশীকে অনেক ভালোবাসে।সেই তুলনায় বেলী কখনো ভালোই পায়নি।সবসময় একটা দূরত্ব বজায় রেখেছে তাদের মধ্যে।ছোটবেলায় বিষয়টা বুঝতে পেরে বেলী অনেক অবাক হয়েছিলো।বাবা-মা সত্যিই পৃথিবীতে সন্তানদের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে?কিন্তু যতো বড় হয়েছে ততো অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছে।সত্যিই এরকম হয়।
“কোন ভাবনায় ডুবে গিয়েছিস?”
“কিছুনা।তাড়াতাড়ি করো।আমাকে আবার নিচে ডাকবে।আমার মন যেন ইদানীং কেমন হয়ে ওঠেছে।পরে দেখা যাবে সব ছেড়ে বসে আছি রুমে।”
“আমার উপর বেয়াদবি করলে সোজা পিঠে পড়বে।তাই স্বাবধান।বোনের বিয়েতে এভাবে ঘুরলে লোকে কী বলতো?”
বেলী হেসে উঠলো।এখন মনটা ভালো লাগছে তার।সত্যিই তো তার অবস্থা ভালো ছিলনা।পরে এটা নিয়ে কথা হতো।বেলী দ্রুত তৈরী হয়ে নিচে নেমে এলো।সব কাজিনের সঙ্গে নিজেও যোগ হয়ে উল্লাসে মেতে উঠলো।দূর থেকে মেয়েকে হাসতে দেখে অনেকটা স্বস্তি পেলো রেবেকা।
(*** আমার নতুন পেইজ Samia’s Tales এ যুক্ত হয়েছেন তো?***)
তোফাজ্জল মুখ গোমড়া করে বসে রয়েছে।সে আজকে অনল ও সিকান্দারকে ডেকেছিলো অনুষ্ঠানে।অনেকটা কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে।শশীর এই বিয়েটা সিকান্দারের মাধ্যমে এসেছিলো।তোফাজ্জল জানে কখন নিজের ইগো থামাতে হয়।খোঁজ খবর নিয়ে দেখলো রাহাত বিয়ের বাজারে চড়া দামে হাঁকানো বর।এটাকে হাত ছাড়া করা যাবেনা কোনোভাবে।তাইতো রাজী হয়েছে।কিন্তু যেদিন সবকিছু চূড়ান্ত হলো সেদিন কেউ এলো না?অনলের না আসার কারণ কিছুটা আন্দাজ করতে পারে সে বেলীর ভেঙে পড়া শরীর দেখে।মন থেকে বিদ্রুপের হাসি বের হয়ে এলো মেয়ের জন্য।আপাতত বিষয়টা মাথা থেকে বের করে ফেললো।সামাজিকতার আবদ্ধ হয়ে সে দাওয়াত দিয়েছিল।এরপরেও দিবে।এতো তুচ্ছ বিষয়ে মাথা ঘামাবেনা এখন সে।রাহাতদের যাওয়ার সময় হয়েছে।শশী অনেকক্ষণ যাবত হাতে উজ্জ্বল হয়ে থাকা আঙটিটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছে।পাশ থেকে ধীর কণ্ঠে রাহাত বলল,
“পছন্দ হয়নি?”
“অনেক পছন্দ হয়েছে।ধন্যবাদ তোমাকে।”
“মা নিজে এটা গিয়ে কিনেছে।আমি অবশ্য অন্যটা বলেছিলাম।কিন্তু এখন দেখছি এটাই তোমার হাতে বেশী সুন্দর লাগছে।তুমি মানুষটাই সুন্দর শশী।”
রাহাতের কথায় শশী লাজুক ভঙিতে হাসলো।দূর হতে এই দৃশ্যটা দেখে বেলীর মনে একটা প্রশ্ন উত্থিত হলো।কতো সহজে মানুষ অতীত ভুলে ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়ায়।শশী তো ফাহিমের জন্য কম কষ্ট পায়নি।কিন্তু আজ রাহাতের পাশে মনে হচ্ছে এই মানুষটাকে ছাড়া পৃথিবীর আর কাওকে কখনো সে ভালোবাসি বলেনি।
“বেলী।এদিকে এসো তো।”
রাহাতের ডাকে সেদিকে এগিয়ে গেলো বেলী।পাশে বসিয়ে বিভিন্ন জিনিস জিজ্ঞেস করতে লাগলো।সিয়ামের পর যে আরো একটা বড় ভাই বেলীর হতে চলেছে এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।সব কাজ শেষে এবার রাহাতদের ফেরার পালা।শশী বাদে আর সবাই তাদের বাহির অবধি ছেড়ে দিতে গেলো।গেটের সামনে যখন রাহাত গাড়ীতে উঠবে ঠিক তখন পরিচিত একটা গাড়ী থামতে দেখলো বেলী।সেখান থেকে উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে প্রভাকর বেশে অনল নেমে এলো।ফর্মাল স্যুটে লোকটাকে ভালো লাগে।হঠাৎ করে তার বুকের মধ্যিখানে চঞ্চলতা তৈরী হলো।অনল হাসিমুখে এগিয়ে এসে রাহাতের সাথে হ্যান্ড শেইক করলো।দীর্ঘ দিনের পরিচয়ে বেলী এই প্রথম খেয়াল করলো অনলের হাসির নিজস্ব রুপ আছে।যেভাবে অন্য কাওকে হাসতে দেখেনি সে।পুরুষটার থেকে চোখ সরে গিয়ে গাড়ীর ভেতর পড়লো।আয়েশা বসে আছে।বেলীর মনে হলো তার গা একেবারে ১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উষ্ণ হয়ে গিয়েছে।এতো রাগ উঠলো কেন হঠাৎ তার?ভু্রু কুঁচকে অনলের পানে তাঁকিয়ে রইলো সে।রাহাতের সাথে কথা শেষ করে একবার অবশ্য মেয়েটার পানে সে তাঁকিয়েছিলো।ধীরে ধীরে সবাই চলে গেলে গেইটের কাছে সব ফাঁকা হয়ে গেলো।বেলীর ভেতরে যেতে মন চাচ্ছে না।বাগানের দোলনায় বসে রইলো।ফোনটা হাতেই ছিল তার।সেখানের স্ক্রিন জ্বলে উঠলো।
“বাহিরে এসো।”
অনলের এই দুটো শব্দতে অভিমান আরো বাড়লো মেয়েটার।সে একবার সিদ্ধান্ত নিলো যাবেনা।কিন্তু পরক্ষণে সেই চিন্তা বাদ দিয়ে বাহিরের দিকে পা বাঁড়ালো।কংক্রিটের রাস্তাতে পা রাখতেই কেউ তাকে টেনে আড়ালে নিলো।দেয়ালে ঠেস দিয়ে দাঁড়া করিয়ে নিজে সরে গেলো।অন্ধকারে অবয়ব দেখে অনুমান করা যায় এটা অনল।
“দুটো জিনিস মনে রাখবে মেয়ে।আপন ভাই ব্যতীত কাজিনদের হাত ধরে ছাদে লাফালাফি করতে হয়না।দ্বিতীয়ত জানালার কাছাকাছি এসে শাড়ী পরতে হয়না।এটা লাইফে শিক্ষা হিসেবে নিবে।ওকে?”
অনলের কথার সঙ্গে আশেপাশে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে।বেলী বুঝতে পারলো পুরুষটার হাতে ভ্যা’প আছে।রাগ নিয়ে শুধালো,
“আপনি আমাকে দ্বিতীয়টা নিয়ে শিক্ষা না দিলেও চলবে। প্রথমত পুরোদমে ব্লাউজ সব ঢেকে রেখেছিলো।দ্বিতীয়ত ওড়না ছিল সাথে।আমাকে সত্য বলেন।আপনার আয়েশার সাথে কী চলছে?”
“আর ইউ জেলাস মাই ললিতা?”
চলবে।
#আমার_ললিতা
#পর্ব:৩৯
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া
“আপনি দুনিয়ার সব মেয়েদের সাথে রিলেশন করুন।আই ডোন্ট কেয়ার।সেখানে আবার জেলাস হওয়ার কথা বলেন?হাস্যকর কথাবার্তা মি.অনল।”
কথাগুলো উচ্চারণ করতে গিয়ে বেলীর কণ্ঠ কেঁপে উঠলো।যেন সুগঠিত এক মিথ্যাকে আড়াল করার চেষ্টা।অনল অবশ্য কোনো শব্দ ব্যয় করলো না।নিজ ছন্দে ধোঁয়া গ্রহণ করতে ব্যস্ত।বেলী পুনরায় কেঁশে বলল,
“আয়েশা আপনার সাথে কী করছিলো তখন?সত্যি রিলেশনে গেলেন?মেয়েটা ভালো না।”
“তো?আমিও তো খারাপ।ব্যাড বয়।চরিত্রের ঠিক নেই।তোমার কনসার্ন দেখানোর দরকার নেই।”
“এভাবে বলতে পারলেন?”
“আরো কঠোর ভাবে বলা উচিত।”
বেলী দীর্ঘশ্বাস ফেললো।অকস্মাৎ বুকের ভেতরের সবথেকে গোপন জায়গায় শূন্যতা তৈরী হলো।সে ফিসফিস করে বলল,
“ঠিক আছে।আমি তাহলে চলে যাচ্ছি।”
“ওকে।”
অনল তৎক্ষনাৎ গেটের দিকে পা বাড়ালো।বেলী অবাক হয়ে সেদিকে তাঁকিয়ে রইলো।যদিও এতো অবহেলার বিষয়টা অন্তত স্বাভাবিক।কিন্তু মেয়েটার মানতে কষ্ট হচ্ছে।নিজেকে একটু বিন্যস্ত করে বাড়ীর ভেতর চলে গেলো।
অনল সদর দরজায় পা রাখতেই দুপাশ থেকে দুটো হাত এসে তার পথ আঁটকে দিলো।অনল বিরক্ত হয়ে বলল,
“কী চাস তোরা?”
রাহিমা লম্বা হাই তুলে বলল,
“আমরা টাকা চাই।ফ্রি ফ্রি গোয়েন্দাগিরি করে দিয়েছি।বর্তমান যুগে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয়না।”
“অনিম তুই টাকা চাস?”
ভাইয়ের চাহনিতে অনিম বিভ্রান্ত হলো।রাহিমা অবশ্য আড়ালে চোখ রাঙিয়েছে।যেন তার বিরোধিতা না করে।অনল বাসায় না থাকলে এই দুজনই বেলীর উপর নজরদারি রাখে।আজকের দুটো ঘটনাও এদের দেখা। অনিম ছাদ থেকে দেখেছিলো আর রাহিমা জানালায় দাঁড়িয়ে।যদিও এ কাজ করার জন্য তাদের কেউ বলেনি।অনল ছোট ভাইয়ের মনের কথা বুঝতে পেরে বলল,
“তোরা ছোট মানুষ।হিসেব করে টাকা দিতে হবে।আগে বল কী করবি?সর এখন।ভীষণ ক্লান্ত।”
অনল এসে সোফায় বসে পড়লো। গলায় ঝুলানো টাইটি খানিকটা ঢিলে করে দিলো।রাহিমা তার পাশে এসে বসলো।
“বাহ রে।তোমার এতো বড় উপকার করে দিলাম।আর তাছাড়া এতোদিন পর নিজের ললিতার সাথে কথা বলতে পেরেছো।আমাদের দুজনকে দশ হাজার টাকা তো দিতে পারো।”
“টাকা কী গাছে ধরে রাহিমা?”
“আমি জানি তোমার অনেক টাকা।”
“তবে সেটা অসীম নয়।যেকোনো কিছু স্বাবধানে হিসেব করা জরুরি।তাই জানা দরকার দুজন কী করার মতলবে আছিস।”
“ভাইয়া তুমি খুব নিরামিষ।যাও লাগবেনা।”
রাহিমা মুখটা গোমড়া করে চলে গেলো।অনিম অবশ্য সেখানেই বসে আছে।অনল শুধালো,
“তুই বসে রইলি।রাহিমার মতোন রাগ করে চলে যা।”
“আমি তো আপুর মতোন বোকা নই।আমি জানি তুমি নিশ্চয় আপুর জন্য কিছু প্ল্যান করেছো।সেটা জানাবেনা।আমার জন্যও নিশ্চয় কিছু আছে।তবে ভাই অনুরোধ আমার দরকারের জিনিস দিও।”
“ভেরি গুড।বুদ্ধিমান ছেলে।এখন গিয়ে পড়াশোনা কর।”
“একটা কথা ভাইয়া।তুমি বেলী আপুকে অনেক ভালোবাসো তাইনা?”
অনল অর্থহীন হাসলো।তার কপালে আসা চুলগুলো এলেমেলো করে ফেললো হাত দিয়ে।
“এই প্রশ্নের জবাব তুই একদিন নিজেই বুঝতে পারবি।”
ফোনের রিংটোন বেজে উঠলো অনলের।পকেট থেকে বের করে দেখলো আয়েশা কল করেছে।দ্রুত উঠে নিজের রুমে ফিরে এলো।
“হ্যালো।”
“মি.কাশফ।আপনার বন্ধুর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।সে দেশে ফিরতে রাজী নয়।আমি তাকে বাঁচিয়ে রাখতে ইচ্ছুক নই।একটা কথা বলেন তো।যে মানুষটা আপনার এতো বড় ক্ষতি করেছে তাকে সহি সালামত ফেরাতে চাচ্ছেন কেন দেশে?”
“এক আমি কারো জীবন চলে যাক।এটা মানতে পারবো না।দ্বিতীয় হলো ওর সাথে হিসেব বাকী আছে।বন্ধু হয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।”
“ওয়েল।আমি সর্বাত্বক চেষ্টা করে যাচ্ছি।কিন্তু আমি বিনিময়ে কী পাবো সেটা ঠিক করেছেন?শুনলাম বেলীর সাথে আপনার এখন কথা হয়না।”
“আর কী শুনেছেন?”
“বহু কিছু।”
“এতো মনোযোগ আপনার নিজের কাজে দেওয়া উচিত। অন্তত সময়কে কাজে লাগিয়ে প্রোফিট পাবেন।আর একটা কথা আমার বউয়ের উপর নজরদারি বন্ধ করুন।আমি এই কাজটা ঘৃণা করছি।”
‘আমার বউ’ শব্দটা কেন অনল উচ্চারণ করলো তা সে জানেনা।কিন্তু হৃদয়ের অভ্যেন্তরে এক সুখের দোলা দিয়ে উঠলো।সে জানে বেলী তাকে পছন্দ করে।তবে এটাও মানতে হবে মেয়েটার বেশী বোঁঝার বাতিক আছে।
(((** আমার নতুন পেইজ Samia’s Tales ফলো করেছেন তো?সেখানে নতুন গল্প #সন্ধ্যা পড়তে পারেন**)))
খুব ভোরে আজ ঘুম থেকে উঠেছে বেলী।বাড়ীতে মেহমানরা এখনও রয়ে গিয়েছে।তার একা থেকে অভ্যেস।বিশেষ করে ঘুমানোর সময় শরীরে হাত পা দিলে ঘুম ভেঙে যায়। জানালা দিয়ে বাহিরে তাঁকিয়ে দেখলো এখনও অন্ধকার রয়ে গেছে।হালকা ভোরের আলো ফুঁটতে শুরু করেছে।আড়মোড়া ভেঙে সে উঠে বসলো।এক কাপ কফি নিয়ে বই নিয়ে বসলে সময়টা মন্দ কাঁটবেনা।দ্রুত উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলো।নিচে নেমে দেখলো এখনও কেউ উঠেনি।কিন্তু সদর দরজা খোলা।বিষয়টা খানিক সন্দেহ তৈরী করলো তার মনে।দরজার দিকে এগিয়ে গেলো বেলী।ঈষৎ আলোতে দেখলো বাগানে তোফাজ্জল বসে আছে।চোখ বন্ধ অবস্থাতে হেলান দিয়ে আছে।বেলী উশখুশ করলো।সে একবার ভাবলো বিরক্ত করবেনা।কিন্তু পরক্ষণে কী ভেবে এগিয়ে গেলো।
“বাবা।”
তোফাজ্জল এক ডাকে চোখ খুললো।বেলীর পানে শূন্য দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে।
“কিছু বলবে?”
“আপনি এতো সকালে এখানে কেন?”
“এমনি।বসো এখানে তোমার সাথে কথা আছে।”
বেলী কৌতুহলী হয়ে শুধালো,
“কী কথা?”
“অনলের সাথে তুমি কাল বাহিরে কী করছিলে?”
বেলীর আত্মাটা কেমন করে উঠলো।সে শুকনো ঢোক গিললো।জিহবার মধ্যে পেস্টের স্বাদ পেলো সে।
“তেমন কিছু না।অফিসের একটা কথা জিজ্ঞেস করলাম।”
“তুমি কী তাকে পছন্দ করো?”
“না।”
“নিজের ব্যাপারে সব সময়ের মতো সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছো।তবে তোমার একটা সত্য জানা জরুরি।”
“কোন সত্য?”
“রামীমের ওয়াইফের নাম কী বেলী?”
“ওনার কথা এখানে এলো কেন?”
“যা জিজ্ঞেস করেছি সেটার জবাব দাও।”
“তটিনী।”
“তুমি কী জানো যে তটিনী অনলের অফিসে কাজ করে।অন্য ব্রাঞ্চে যদিও।এবং মেয়েটার সাথে অনেক ভালো সম্পর্ক।বেশ আনাগোনা আছে তাদের বাড়ীতে।অনলের ব্যাপারে দেখেশুনে সিদ্ধান্ত নিবে।হতেও পারে তোমাকে অতীতের মতোন আরেকবার সাইড করে দিবে।”
“মানে?কী বলতে চাচ্ছেন?”
“সহজ কথা।তটিনীকে ও আজ নয় বরং অনেক আগ থেকে সাহায্য করে চলেছে।যাকে তুমি একটুও দেখতে পারো না।সে অনলের অনেক কাছের।ছেলেটা তোমার জন্য ভালো নয়।হতেও পারে পুনরায় ওকে বিয়ে করলো।এখন যা ভালো বুঝো।”
বেলীর হাত পা কেঁপে চলেছে।সে এদের সহ্য করতে পারেনা।বিশেষ করে তটিনী আর ওর বাচ্চাকে।হুট করে কেমন যেন করে উঠলো মনটা তার।তোফাজ্জল চলে গেলে অনেকক্ষণ ঝিম ধরে বসে রইলো বেলী।হঠাৎ মাথাটা শূন্য হয়ে এলো তার।ক্ষাণিকবাদে গা এলিয়ে পড়ে গেলো ঘাসের উপর।
চলবে।
#আমার_ললিতা
#পর্ব:৪০
#লেখা:সামিয়া_খান_প্রিয়া
“বেলী!বেলী!চোখ খুল।এইযে শুনছেন বেলীর যেন কী হয়েছে।সিয়াম,শশী।”
রেবেকা ক্রমাগত ডেকে চলেছে সবাইকে।বেলীর নাকের কাছে হাত দিয়ে দেখলো নিশ্বাস আছে কীনা।ফজরের নামাজ পড়ার পর থেকে মনটা কেমন যেন ভার হয়েছিলো।সেই সুবাদে বেলীকে খুঁজতে ওর রুমে গিয়েছিলো।কিন্তু সেখানে না পেয়ে বাহিরে এসে দেখে নিচে পড়ে আছে।বাড়ীতে অনেক মানুষ হওয়ায় রেবেকার ডাকের সাড়া দেওয়ার জন্য বেশী অপেক্ষা করতে হলো না।মুহুর্তে ছোটখাটো ভীড় জমে গেলো।সিয়াম এসে দ্রুত বেলীকে কোলে তুলে নিলো।
“ওর দাঁতের সাথে দাঁত লেগে গিয়েছে।হসপিটালে নিয়ে যাবো?”
“আগে ভেতরে নিয়ে যাই।”
বেলীকে নিয়ে গিয়ে সোফায় শুইয়ে দিলো।কয়েকবার পানি ছিটালেও জ্ঞান ফিরছেনা।তোফাজ্জল পাশে দাঁড়িয়ে আছে।ললাটে তার কিঞ্চিত ভাঁজ। সে ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেনি বেলী এভাবে জ্ঞান হারাবে।
“যেহেতু জ্ঞান ফিরছেনা তাহলে আমি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছি।উবার কল দে তো শশী।গাড়ীটা এই সময়ে নষ্ট হতে হলো।”
“সিয়াম আমি অনলকে ফোন করছি।উবারের আগে ও আসতে পারবে।”
শশী অনলকে ফোন দেওয়া শুরু করলো।প্রথমবার না ধরলেও দুবারে ফোন রিসিভ হলো।পুরো বিষয়টা জানাতেই অনল অপেক্ষা করতে বলল।মিনিট পাঁচেকের মাথায় সে বেলীদের বাসায় এসে হাজির।
“কী হয়েছে ললিতার?”
“জানিনা।বাগানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে ছিলো।”
“এতো সবাই ঘিরে রেখেছে কেন?সরে দাঁড়ান।”
অনলকে বিভ্রান্ত দেখা যাচ্ছে।রেবেকা খেয়াল করলো ছেলেটার কথার মধ্যে একধরণের অধিকারবোধ কাজ করছে।এতোগুলো মানুষকে তোয়াক্কা না করে বেলীর হাত পা দেখতে লাগলো।
“সাপের কামড়ের দাগ আছে কোথাও?”
“না।”
“আমি ডক্টর ডেকেছি।অতি দ্রুত আসছে।কোথাও নিয়ে যেতে হবেনা।বেলী।বেলী কথা বলো।”
ক্রমাগত পানির ছিটা দিয়ে যাচ্ছে অনল।এভাবে বেশ কয়েক মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে মেয়েটাকে নড়াচড়া করতে দেখা গেলো।ইতিমধ্যে ডক্টর চলে এসেছে।এতো গুরুতর একটা মুহুর্তে হাস্যকর ছিল ডাক্তারের পোশাক।অনলের বয়সী একটা ছেলে থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট আর লেডিস টি শার্ট পরে চলে এসেছে।ছেলেটার ঘুম এখনও কাঁটেনি।তার সাথে অনিম ও করুণাও এসেছে।বোঝা যাচ্ছে পথ চিনিয়ে এনেছে।বিরস মুখে ডাক্তার সুমন্ত বলল,
“কে রোগী?”
“তোর চশমা কোথায় সুমন্ত?”
“তাড়াতাড়ি তে ভুলে গিয়েছি।তবে আমি পুরোপুরি অন্ধ নই।ভাবিস না।আগে বল রোগীর কী হয়েছে?”
“জ্ঞান হারিয়েছে।”
সুমন্ত বেলীকে দেখতে লাগলো।নড়াচড়া দেখে বুঝতে পারলো জ্ঞান ফেরার সন্নিকটে।
“জ্ঞান ফিরছে।এনাকে একটু রুমে নিয়ে চলুন।”
সিয়ামের আগেই কথাটা লুফে নিলো অনল।কারো অনুমতির অপেক্ষা না করে বেলীকে কোলে করে তার রুমে নিয়ে যেতে লাগলো।বিষয়টা মটেও ভালো লাগেনি সিয়ামের।কিন্তু শশী চোখ দিয়ে ইশারাতে কিছু বলতে না করলো।আধা ঘন্টার মধ্যে পুরোপুরি জ্ঞান ফিরলো বেলীর।শূন্য দৃষ্টিতে সে সবার পানে তাঁকিয়ে আছে। বিশেষ করে অনলের দিকে।সুমন্ত মেয়েটার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলল,
“এখন তোমার কেমন লাগছে বেলী?”
“বুঝতে পারছিনা।”
“খারাপ লাগছে?দূর্বল অনুভব হচ্ছে?”
“না।শুধু মাথাটা খালি মনে হচ্ছে।”
“কিছু দেখে ভয় পেয়েছিলে?বা সাডেন কোনো শক পেয়েছো?”
বেলী নিশ্চুপ হয়ে গেলো।সুমন্ত কিছুটা অনুমান করে হাসতে হাসতে বলল,
“কিছু নিয়ে হয়তো ভয় পেয়েছে।এজন্য জ্ঞান হারিয়েছে।তবে ভয়ের কিছু নেই।বেশী বেশী কথা বলেন ওর সাথে।”
“আপনাকে ধন্যবাদ।কাইন্ডলি যদি আপনার ফি টা জানাতেন।”
“ওসব লাগবেনা।আমি অনলের বন্ধু।খুব বেশী দূর নয় আমার বাসা।ঘুমের মধ্যে কল পেয়েছি অনলের।শুধু বলল বেলী অজ্ঞান হয়েছে জলদি আয়।এখন আমি তো চিনিনা যে বেলী কে?তবুও কোনমতে চলে এলাম।খেয়াল করিনি যে বউয়ের টি শার্ট পরে চলে এসেছি।”
সুমন্ত লাজুক হাসলো।এতোগুলো মানুষের সামনে এমন বেশে চলে আসাও কেমন হয়ে গেছে।হঠাৎ বেলী উচ্চ শব্দে বলে উঠলো,
“দয়া দেখাচ্ছেন অনল?নাকী করুণা?অথবা আমি কোনো দাবার গুটি।ইচ্ছা অনুযায়ী চালিয়ে যাচ্ছেন?”
সবার সামনে এমন কথাগুলো সেখানকার পরিবেশকে অন্যরকম করে তুললো।বেলীর কান্ডজ্ঞান কিছু কাজ করছেনা এখন।সে লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নামলো।টলে পড়ে যাচ্ছিলো অনলকে কোনমতে ধরলো।এতে করে তার বাহুর মাংসপেশিতে নখ ঢুকে গেলো।
“তটিনীর সাথে আপনার পরিচয় কীভাবে?নিজের অফিসে ওকে কাজে বসিয়ে রেখেছেন।আবার আমাকেই সেই অফিসে কাজ করতে বাধ্য করেছেন।ওয়াও?আপনি কেমন মানুষ?”
“ললিতা শান্ত হও।”
“চুপ।তটিনীর সাথে পরিচয় কীভাবে?”
অনল সবার দিকে তাঁকালো।পুরো বিষয়টাকে সে এভাবে সবার সামনে আসতে দিতে পারেনা।অনেক শান্তভাবে মেয়েটার মাথায় হাত রেখে বলল,
“শান্ত হও।আমি সব বলবো।এটা সঠিক সময় না।”
“আপনিও রামীমের মতোন করতেন তাইনা?আপনি আমার সাথে ভালোবাসেন একথা এজন্যই বলেন যেন তটিনীকে বিয়ে করতে পারেন।”
“গর্দভ মেয়ে।এই কথাটা আলটিমেটলি তোমার পঁচা বুদ্ধির ফসল।চুপ করো।সবাই দেখছে।”
“দেখুক।আপনি ওই মেয়েকে কেন নিজের অফিসে রাখবেন?”
“সব তোমার জানতে হবেনা।”
সিয়াম এতোক্ষণ পাশে দাঁড়িয়ে চুপ করে শুনছিলো।সে নিজের বোনকে অনলের থেকে সরিয়ে বলল,
“এসব কী কথা বেলী?আর তটিনী?রামীম ওরা এলো কেন এখানে?”
“এই লোকটা ভাইয়া একটা ঠকবাজ।ও আমার জীবনে এসেছে জীবন ধ্বংস করার জন্য।অনল একটা ঠকবাজ।ভাইয়া আমি খুব কষ্ট বেঁচে আছি।আবার কেন যেন সব খারাপ লাগছে।”
সিয়াম বোনকে বুকে জড়িয়ে নিলো।যদিও সে ঘটনার মর্মাথ বুঝতে পারছেনা।বেলী পুনরায় বলতে লাগলো,
“ওরা ভালোবাসে তটিনীকে বিয়ে করার জন্য।”
সিয়াম আস্তে করে শুধালো,
“অনল ও তোর রিলেশন চলছে?”
“না।”
“তাহলে ও যদি তটিনীকে বিয়েও করে তাহলে এতো রিয়াক্ট করার কী?”
“আমি তটিনীকে দেখতে পারিনা।একটা বাজে মেয়ে।আমি নিশ্চিত অন্যের বাচ্চাকে রামীমের নাম দিয়েছে।আমি রামীমকে ভালোবাসতাম ভাইয়া।ও আমাকে ভালোবাসতো।মাঝখানে তটিনী চলে এলো।আমি নিশ্চিত ওই বাচ্চাটা অনলের।নিজের অ’বৈ’ধ বাচ্চা রামীমের নাম দিয়ে ওনারা এখন এসেছে আমার জীবন নষ্ট করতে।”
সিয়ামের থেকে সরে গিয়ে যেই না বেলী অনলের দিকে তেড়েমেরে চলেছিলো ওমনি পুরুষটি চ’ড় বসালো গালে।একবার নয় বরং দুই তিনবার।এরপর টেনে নিজের শরীর দ্বারা আড়াল করে ফেললো।
“সাহস তো কম না।তুই আমার বোনের গায়ে আবারও হাত তুলেছিস।”
সিয়াম গিয়ে অনলকে ধাক্কা দিলো।এক হাত দিয়ে বেলীকে আগলে রেখে সে নিজেকে প্রটেক্ট করলো।
“উল্টো পাল্টা কথা বললে এমনটাই কী হওয়া উচিত না?বোনের প্রতি ভালোবাসা এতো থাকলে খেয়াল করতি ও এতো চুপচাপ কেন?শালার মানসিক সমস্যা হয়ে গেছে।”
রেবেকা শক্ত কণ্ঠে বলল,
“আমার মেয়েকে পাগল বলবেনা।আর বেলী এমনি এমনি কিছু…।”
“অবশ্যই ভুল বলছে।তটিনী একজন ভালো মেয়ে।তাকে ঘিরে এসব অপবাদ দেওয়া উচিত নয়।”
“বেলীকে ছাড়ো।এখুনি ছাড়বে।তোফাজ্জল আপনি কিছু বলছেন না কেন?”
তোফাজ্জল চুপ করে একপাশে দাঁড়িয়ে রইলো। মুহুর্তে অনেক বড় কোলাহলে রুপান্তরিত হলো রুমটি।অনিম গিয়ে দ্রুত সিকান্দারকে ডেকে আনলো।বেলীকে কেন চ,ড় দিলো এটা নিয়ে ঝগড়া হচ্ছে।এদিকে এতো সবকিছুর নেপথ্যে মেয়েটা অনলের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে কেমন যেন চুপ হয়ে গেছে।অনল আসন্ন ভবিষ্যতের জটিলতা অনুমান করতে পেরে ভীষণ রেগে যাচ্ছে।আস্তে করে শুধু বেলীকে বলল,
“ভেবেছিলাম জোর করবো না।কিন্তু সেটা আর সম্ভব না।আমি প্রচুর রেড ফ্ল্যাগ মেয়ে।এতোদিন বাচ্চামো,মানসিক অবস্থা এসব ভেবে ছেড়ে দিয়েছি।ভালোভাবে বিয়ে করতে চেয়েছিলাম।কিন্তু ভালোবাসবে অথচ এতোসব ঝামেলাও করবে?তৈরী করো নিজেকে আমার জন্য।”
কথাটা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেলীকে ধাক্কা দিয়ে সিয়ামের দিকে ঠেলে দিলো অনল।হাই তুলতে তুলতে বলল,
“সবাই বাসায় চলো।আমার এসব বিরক্ত লাগছে।আর সিয়াম বেলীকে আজ ভালোভাবে মানসিক ট্রিটমেন্টের জন্য নিয়ে যাবি।”
“আমাদের বাসায় আর তোকে কখনো যেন না দেখি।আমার বোনের আশেপাশেও আসবি না।”
অনল কিছুটা হেঁটে গিয়ে ফেরত এলো।সিয়ামের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলল,
“আমার বোনের আশেপাশেও আসবি না।”
সিয়াম কঠোর ভঙিতে বলল,
“দুটো বিষয় এক না।”
“আমি তো পার্থক্য দেখিনা।”
ফিরে যাওয়ার আগে হুট করে একটা কাজ করলো অনল।তোফাজ্জলের কাছে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলো।কানের কাছে ফিসফিস করে বলল,
“আজ যা করলেন এজন্য ভাববেন না যে আমি হেরে গিয়েছি।আপনাকে উল্টো ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন।খুব শীঘ্রই দুটো মেয়ের বিয়ে হতে চলেছে।এই সৌভাগ্য কয়জনের হয়?”
চলবে।