#আমার_স্নিগ্ধপরী
#পর্ব_৬
#লেখা: #নীল_মালতীলতা
কপি নিষিদ্ধ ❌❌❌
আমি নিয়ে যাই????
একসাথে তিন জোড়া চোখ পড়লো কন্ঠের মালিকের দিকে,,
এতে ফাইয়াজ খানিক ভরকে গিয়ে বলল,, এভাবে তাকানোর কি আছে আমিও তো বেরোবো তাই বলছিলাম,,
ফারজানা তালুকদার একটু রাগ নিয়েই বললেন,, তোমার কি হয়েছে বলোতো ফাইয়াজ, ঘন্টা কয়েক আগেই তুমি মেয়েটা কে তোমার ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছো,, আর এখন শুরু করেছো আদিখ্যেতা, বিরক্ত করবে না,,
না মানে মা আমি তো বলতে চাচ্ছিলাম বাবার তো কষ্ট হয়ে যাবে,, (ইস কি ভুলটাই না করলাম বউ রেখে পালিয়ে মনে মনে)
ফজলুল তালুকদার গম্ভীর স্বরে বললেন,, আমার মায়ের ব্যাপারে আমার কখনোই কোনো কষ্ট হবে না, তুমি তোমার কাজে যেতে পারো,,
ফাইয়াজের কেন যেনো এখন নিজের সাথে সাথে মা বাবার উপর খুব রাগ হচ্ছে,, নিজেকে শান্ত করতে চোখ বন্ধ করে সোফায় গিয়ে হেলান দিয়ে বসল, মাথার পিছনে দুই হাত, ভাবছে তারা চাইলেই পারতো স্নিগ্ধপরীকে আমার সাথে যেতে দিতে মনে মনে বলল,, কোথায় ছেলে অনেকদিন পর এসেছে ছেলে আর ছেলের বউকে মিলিয়ে দেবে তা না এই বাপ মাই শত্রুতা শুরু করে দিয়েছে,, নিজে দেখো কি সুন্দর বউ নিয়ে থাকে, কেন ওই ব্যাটা তো জানে যে বউ ছাড়া থাকা কত কষ্টের বেটা জোর করে আমাকে বউটার সঙ্গে রেখে দিতে পারো না? এখন দেখো কেমন আমার বউটাকে নিয়ে যাচ্ছে,, এতোই যদি সখ তো নিজের বউকে নিয়ে গেলেইতো পারে?
ফজলুল তালুকদার আর অপেক্ষা করলে না স্নিগ্ধাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন।
—————-
ফারজানা তালুজদার নিঃশব্দে গিয়ে বসলেন ছেলের পাশে, হাত রাখলেন ছেলের মাথয়,
ফাইয়াজ চোখ খুলে পাশে মাকে দেখে বলল,,
মা আমাকে খুব নির্লজ্জ মনে হচ্ছে তাই না?
কেনো,,,
এইযে সেই তখন থেকে কেমন নির্লজ্জের মত ব্যবহার করে চলেছি,
সব তো ঠিকই ছিল তাহলে সেদিন চলে গিয়েছিলে কেন??
মা আমার ভুল হয়ে গিয়েছে,, প্লিজ কিছু একটা করো,
মা বাবা কখনো সন্তানের খারাপ চায়না,, আমি তোমার জন্য বেস্ট খুঁজে আনলাম আর তুমি তার অপমান করলে, এখন যা করার তোমাকেই করতে হবে, এতকিছুর পরেও মেয়েটা তো তোমার ঘরে ছিল তাও কি করলে,, আর এখন সেই মেয়ের রূপেই তুমি পাগল হয়ে যাচ্ছ,,
ফাইয়াজ তৎক্ষণাৎ বুঝানোর সুরে বলল,, মা এটা ঠিক যে আমি প্রথম ওকে দেখেই থমকে গিয়েছিলাম,, কিন্তু এখন কেমন যেন একটা টান অনুভব করছি বিশ্বাস কর,,
করলাম বিশ্বাস তাহলে এই টান একদিন কোথায় ছিল শুনি?
ধ্যাত যা করার আমাকেই করতে হবে বলেই গড গড পায়ে বেরিয়ে গেল বাড়ি থেকে।
ফারজানা তালুকদার ছেলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে মুচকি হেসে চলে গেলেন নিজের কাজে।
—————–
ভার্সিটি এসে স্নিগ্ধা যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলছে,, সে এর আগে মোবাইলে দেখেছিল কিন্তু কখনো এখানে আসা হয়নি। ফজলুল তালুকদার স্নিগ্ধাকে কিছুক্ষণ ঘুরিয়ে দেখালেন,, রাজধানীর বিশ্ববিদ্যালয় কি আর এইটুকুন যে অল্প সময়ে সব দেখা হয়ে যাবে?? সময় ফুরিয়ে এলে ফজলুল তালুকদার স্নিগ্ধাকে তার ডিপার্টমেন্টে পৌঁছে দিয়ে তিনি ছুটলেন তার কাজের উদ্দেশ্যে,, যাওয়ার আগে অবশ্য অনেক কিছু উপদেশ দিয়ে গেলেন,, এটা ঢাকা শহর, তাই সাবধান থাকতে বলে গেলেন,, কোন সমস্যা হলে যেন ফোন করে সেটাও বলতে ভুললেন না। স্নিগ্ধাও তার কথায় সায় জানিয়ে চলে গেল নতুন জীবন গড়ার উদ্দেশ্যে।
——————
লেকের পাড়ে বসে পানিতে ঢিল ছুড়ছে ফাইয়াজ, আর তার পাশে বসে আছে তার প্রিয় বন্ধুর, সহচর, বেস্ট ফ্রেন্ড রাহাত। মন খারাপের সময় মাঝে মাঝে এখানে আসে ফাইয়াজ।
কিরে ভাই সেই কখন থেকে শুধু ঢিল ছুড়েই যাচ্ছিস ছুড়েই যাচ্ছিস, মনে হচ্ছে তুই এই লেকটা কে ঢিল দিয়ে দিয়েএকেবারে মাঠ বানিয়ে ফেলার পাঁয়তারা করছে,, সে কখন থেকে দেখছি মুড অফ করে বসে আছিস কিছু তো একটা বলবি?? আজ সকালেই বাড়ি ফিরলি আর এর মধ্যে আবার কি এমন হয়ে গেল এখন এখানে এসে পুরো লেকটা কে একেবারে ভরে ফেলছিস,,
আমার সর্বনাশ হয়ে গেছে,,
মানে কি?
লাভ এট ফার্স্ট সাইট,,
এহ,
এহ নয় হ্যা
কিন্তু তুই তো সকালেই মাত্র বাড়িতে গেলি আর এখন দুপুরের মধ্যে তর কোথায় এই লাভের আগমন ঘটল?
বাড়িতে,,
এই ক্লিয়ার করে বল না ভাই,, একে তো বউ রেখে এতদিন পালিয়ে বেরিয়েছিস এখন আবার বাড়িতে বউ রেখে তুই পরকীয়া করবি??
চলবে??