#আমার_স্নিগ্ধপরী
#পর্ব_৮
#লেখা: #নীল_মালতীলতা
কপি নিষিদ্ধ ❌❌❌
কিছুকিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও মাঝেমধ্যে ঘটে যায়, যা এই মুহূর্তে স্নিগ্ধার সাথে ঘটেগেলো।
এমন অনুভূতির সাথে দুজনেরই প্রথম পরিচয়, দুজনেরই শরীর জমে শক্ত হয়ে পরে রইল।
ফাইয়াজের এক হাত দিয়ে স্নিগ্ধার সেই হাতটা এখনো শক্ত করে ধরা, অন্য হাতে চলে গেল স্নিগ্ধার পিঠে, যা সে খুব সুন্দর ভাবে আঁকড়ে ধরেছে,, বেশ খানিকটা সময় কেটে গেল স্নিগ্ধার কাঁপতে থাকা বন্ধ চোখ আর কাঁপতে থাকা ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে, এখনো পর্যন্ত একটাও পলক পড়েনি তার, এতদিনতো বেশ ভালোই ছিল, এই মেয়েটার সঙ্গে দেখা হয়ে তার সবকিছু ওলট পালট করে দিল। এখন আবার তার ছোঁয়া ভিতর থেকে আরও অস্থির করে দিল, দুজনেই নিজেদের হুশ হারিয়ে পরে রইল খানিক্ষন,,
সরি সরি আমি কিছু দেখিনি দোস্ত ,, বলেই অন্যদিকে ফিরে চোখ বন্ধ করে দাঁড়ালো আগন্তুক
চিল্লিয়ে বলা কথাটায় দুজনেরই হুশ ফিরল,,
ফাইয়াজের দুই হাতই তখন আলগা হয়ে এলো,, স্নিগ্ধা লজ্জায় রাগে কোন রকম নিজেকে উঠিয়ে নিয়ে সেখান থেকে দৌড়ে চলে গেল নিজের জন্য বরাদ্দকৃত রুমে,,
ফাইয়াজ কোনো রকম নিজের কোমর ধরে উঠে বসল, কোমর আর পিঠে বেশ ভালই ব্যথা লেগেছে,, এতক্ষণ তো নিজের ভেতরেই ছিল না অন্য কোন অনুভূতিতে চলে গিয়েছিল যার কারণে ব্যথার লেস মাত্র ছিল না, এখন মনে হচ্ছে পিঠ কোমর ভেঙে যাচ্ছে,
আহহ,,,
আরে আরে কি হলো খুব ব্যাথা পেয়েছিস??
রাহাতের এমন কথা শুনে ফাইয়াজের মেজাজ সপ্তম আকাশে, আর কোন কিছু না ভেবেই নিজের পা দিয়ে রাহাতের পায়ে পা বাধিয়ে দিল এক টান, রাহাতও সোজা চিৎ,,
আাাাাাাহহ,,,
ফাইয়াজও এবার কৌতুক করে জিজ্ঞেস করল,,কিরে ব্যাথা পেয়েছিস খুব??
সালা নিজে ফেলেদিয়ে আবার জিজ্ঞেস করছিস , আহহ, আমার কোমর,,,
আরে আমি তো বোঝাতে চাচ্ছিলাম যে এভাবে পড়লে ব্যথা হয় কিনা, না হলে তুই অনুভব করবি কিভাবে,, আর আমার কোন বোন নেই যে তুই আমাকে শালা বলে ডাকবি,,
রাহাতও কোনরকম উঠে বসলো,, দুজনেই ছাদের মেঝেতে বসে আছে কোমরে হাত দিয়ে, দুজনে কিছুক্ষণ দুজনের দিকে তাকিয়ে হেসে দিল। লেখিকার পেইজ Story of Neel Maloti Lota, আপনারা আমার রিয়াল পেইজে এসে যত বেশি লাইক ও সুন্দর একটা কমেন্ট করবেন পরবর্তী পর্ব তত তারাতারি পাবেন। আর পেজটাকে ফলো করে রাখবেন।
রাহাত ভ্রুকুচকে কৌতুহল মেশানো কন্ঠে ফাইয়াজের দিকে তাকিয়ে বলল,,,
কিরে কাহিনী কি?? তুই না বললি তুই কারো প্রেমে পড়ছিস? তাও আবার এক দেখায়,,, তাহলে এটা কে তোদেরই বাড়িতে তোদেরই ছাদে একেবারে জড়াজড়ি করছিস,,
ঠিক করে কথা বল এটাই আমার সেই এক দেখায় প্রেমে পড়া এক এবং একমাত্র বৌ,
কিিিহ,
এত অবাক হওয়ার কি আছে,, বউয়ের প্রেমেই তো পড়েছি, এরপর রাহাতের দিকে কপাল কুঁচকে তাকিয়ে বলল,, কিন্তু তুই এ সময়ে এখানে কেনো ??
তোকে খুঁজতে খুঁজতেই তো এলাম। না এলে তো এমন সিন দেখতেই পারতাম না,, তারপর আফসোসের সুরে বলল,, ইস কেন যে চোখটা বন্ধ করতে গেলাম ভাবির চাঁদ মুখখানা দেখতে পেলাম না,,,
ফাইয়াজ তাৎক্ষণিক রাহাতের পিঠে একটা বসিয়ে দিয়ে বলল,, খবরদার আমার বউয়ের উপরে বিন্দুমাত্র নজর দেওয়ার চেষ্টা করবি না চোখ তুলে দেব,,
ওওওওওওও তাই নাকি,, তা এই বউয়ের কাছ থেকে পালাতে গিয়ে কে যেন আমাকে নিয়ে একেবারে লা পাত্তা হয়ে গিয়েছিল,,
সালা তোকে তো আমি!!
এই দাড়া দাড়া ভাই,, কোমরটা ভেঙে দিয়েছিস এখন দৌড়ানোর কোন শক্তি নেই বিশ্বাস কর, আহহহ,
এরপর দুজনে একে অপরকে ধরাধরি করে কোনরকম নিজেদের রুমে গিয়ে পৌঁছায়। ফাইয়াজের আর স্নিগ্ধার রুমের মাঝে যে রুমটা সেখানে রাহাত থাকে যখন সে রাতে এই বাড়িতে থাকে। ফাইয়াজ কারো সাথে রুম শেয়ার করতে ইচ্ছুক নয়, তাই তার পাশের রুমটা রাহাতের জন্য বরাদ্দ করা। দুজনেই ব্যাথা নাশক স্প্রে করে নিল ব্যথা জায়গায়,, অতটাও গভীর নয় যার কারণে ব্যথার স্প্রে দিলে অল্প সময়ের মধ্যে কমে যাবে।
——————
রাতে স্নিগ্ধাকে খাবার খেতে ডাকলেও সে নিচে আসে নি। সে এই মুহূর্তে কিছুতেই ফাইয়াজের সামনে পরতে চাচ্ছে না। আবার শুনেছে তখনকার সেই আগন্তুক এখনো আছে আর সে তার পাশের রুমে অবস্থান করছে, এ ব্যাপারে সে ফারজানা তালুকদারের কাছ থেকে শুনেছে, ফারজানা তালুকদার স্নিগ্ধার রুমে এসেছিল স্নিগ্ধাকে খেতে ডাকার জন্য মেয়েটা অসুস্থ হয়ে পড়লো কিনা সেটা দেখার জন্য, কেন নিচে আসছে না ওতো এরকম করে না আবার ভাবলেন হয়তো ছেলে এসেছে বলে এরকম করছে,, স্নিগ্ধা তাকে বুঝিয়েছে তার মাথা যন্ত্রণা করছে, তার জন্য সে এখন নিচে গিয়ে খেতে চাচ্ছে না, যদি খিদে পায় তখন সে নিজে গিয়ে খেয়ে আসবে তাই চিন্তা না করতে,, ফারজানা তালুকদারও আর কিছু বলেননি, ভাবলেন মেয়েটা তো কখনো এমন কিছু করেনা হয়তো সত্যিই তার মাথা যন্ত্রণা করছে, তবে তিনি বলেছিলেন খাবারটা ঘরে দেয়ার কথা,, স্নিগ্ধা তাতেও নাচোক করলো,, অগত্যা ফারজানা তালুকদার স্নিগ্ধার কথাই মেনে নিলেন।
স্নিগ্ধাও যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল,, একটু আগে ফাইয়াজ তার ঘরে এসে যেই কান্ডটা ঘটিয়ে গেলো তারপর আর তার সামনে পড়ার কোনো ইচ্ছা নেই, স্নিগ্ধাতো ভেবেছিল সে ফাইয়াজ কে তার পেছনে নাকানিচুবানি খাইয়ে তবেই ছাড় দিবে,, কিন্তু কিসের কি সে নিজেইতো ফাইয়াজের সামনে এলে এলোমেলো হয়ে যায়। স্নিগ্ধা ভেবেছিল সবাই খেতে যাওয়ার আগে সে খেয়ে আসবে, তাই পড়া রেখে রুম থেকে বেরোনোর আগে ওয়াসরুমে গিয়েছিল ফ্রেস হয়ে নিজেকে পরিপাটি করতে।ফ্রেস হরে রুমে এসে তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে খাটের দিকে চোখ যেতেই সে থমকে যায়, হাত থেকে তোয়ালেটা পড়ে যায়, কারণ সেখানে ফাইয়াজ কাত হয়ে শুয়ে আছে তার দিকে ফিরেই। এতদিন বাড়িতে ফজলুল তালুকদার ছাড়া পুরুষ মানুষ কেউই ছিলনা,, আর তিনি তো যখন তখন স্নিগ্ধার রুমেও আসতেন না, তাই কখনো দরজা আটকে রাখার প্রয়োজন পড়েনি,, কিন্তু এখনতো মনে হচ্ছে দরজা না আটকিয়ে মস্ত ভুল করেছে।
ফাইয়াজ সব কিছুই পর্যবেক্ষণ করছিল,,
এবার সে এক লাফে বিছানা থেকে নেমে স্নিগ্ধার দিকে এগিয়ে আসে, সেও একপা একপা করে এগিয়ে যায় আর স্নিগ্ধা একপা একপা করে পেছাতে পিছাতে দেয়ালে গিয়ে ঠেকে। ফাইয়াজ স্নিগ্ধার দুই পাশ থেকে দেয়ালে হাত ঠেকিয়ে স্নিগ্ধার দিকে ঝুকে স্নিগ্ধার চোখে মুখে পড়া চুলগুলোকে ফু দিয়ে উড়িয়ে দেয়। এতে স্নিগ্ধার ভিতরে যেনো কারেন্ট লাগার মত শিহরণ বয়ে গেলো, চোখ দুটো খিচে আপনা আপনি বন্ধ হয়ে গেল স্নিগ্ধার
একটু অন্য রকম কন্ঠে ফাইয়াজ স্নিগ্ধার কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,, আজকে আমার এই মুখ দিয়ে আর কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না,, এই ঠোটে কিছু ছোয়াতে ইচ্ছে করছে না। কেনো জানো?
মিনিট খানেক অপেক্ষা করলো ফাইয়াজ, এরপর নিজে থেকেই আবার বলল,, কারণ তাহলে তোমার ঠোঁটের ছোঁয়াটা মুছে যাবে,,,,
চলবে???