আমার হয়ে যা পর্ব-০৭

0
313

আমার হয়ে যা _পর্ব- ৭
.
৩.
রুমের বাতি বন্ধ করে কোলবালিশ জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছি।
আচ্ছা নূপুর আমাকে একটু গুরুত্ব দিলে আমার এমন লাগে কেন? কেমন যেন চোখে জল চলে আসার উপক্রম হয়ে যায়। মেয়ে মানুষ হলে নিশ্চয় ওর সামনেই আমার চোখ ছলছল হয়ে উঠতো। আজ যখন নূপুরকে অভিমান করে বললাম, ‘তোর এত ভয় লাগলে আমি আর তোদের বাড়িতে আসবো না।’

নূপুর সঙ্গে সঙ্গে আমাকে সান্ত্বনা দিতে ‘স্যরি’ বললো। বিছানায় গিয়ে লুডু বিছিয়ে খেলার জন্য ডাকলো। আমার নূপুর নিশ্চয় চায় আমি যেন রোজ ওদের বাড়িতে যাই। আমি নরম কোলবালিশটা আরেকটু বুকের সঙ্গে চেপে ধরে ওর চেহারাটা কল্পনা করলাম। ডার্ক চকলেট ওর গোলাপি ঠোঁটে লেগে আছে। ইস, যদি ও আমার বউ হয়ে যেত। আমি আঙুল দিয়ে ওর ঠোঁট মুছে দিতাম৷ বিয়ের পর ঠিক একদিন এই কাজটাই আমি করবো। ওকে অনেকগুলো চকলেট এনে দেবো। সে এভাবে খেয়ে ঠোঁটে মাখামাখি করবে। আমি আদর করে হাত বাড়িয়ে মুছে দেবো ওর ঠোঁট। দৃশ্যটা ভেবে আমার গা কাটা দিয়ে উঠলো। ভীষণ ভালো লাগছে ভাবতে। ওর ফরসা কোমল গালটা ভেবে আমি কোলবালিশে অনবরত চুমু খেতে শুরু করলাম। এভাবে কল্পনায় ওকে আদর করতে করতে কখন ঘুমিয়ে গেছি বুঝতেই পারিনি। এভাবেই আমার দিনকাল চলতে থাকলো। আমি রোজ ওদের বাসায় যাই, খেলি, চা-নাশতা খাই, মাঝে মাঝে এটা-ওটা ওর জন্য নিয়ে যাই। বাড়িতে মা অল্প অল্প এগুলো জানেন, শুনেন, বকেন। আমি এসব গায়ে মাখাই না। এভাবেই দিন যাচ্ছে।

প্রায় দুইমাস পর বইমেলা এলো। ফেব্রুয়ারি মাস। আমি ওদের বাসায় রোজকার মতো একদিন সন্ধ্যায় গেলাম। চাচি চা দিতে এসে বললেন, ‘দেখতো বাবা কি বিপদে পড়লাম। ও না-কি ঢাকা মেলায় যাবে। থাকবে কয়েকদিন। ও বলছে বাপকে নিয়ে যাবে। উনার কি এই বয়সে আর শরীরের এত জার্নি কুলাবে?’

আমি ব্যস্ত হয়ে বললাম ‘না না চাচি, চাচার জন্য তো এটা অসম্ভব।’

চাচি সাথে সাথে বললেন, ‘তুমি যদি একটু সময় বের করতে পারো বাবা তাহলে আমি নিশ্চিন্তে মেয়েকে দিতে পারতাম।’

আমি ভেতরে ভেতরে এত খুশি হয়েছি যে। ইচ্ছা করছিল চাচিকে কোলে নিয়েই নাচতে শুরু করি। নিজের উত্তেজনাকে নিয়ন্ত্রণে রেখে বললাম, ‘তা আমি সময় বের করতে পারবো। সমস্যা নেই।’

নূপুর প্রতিবাদ করে বললো, ‘আম্মু এগুলো লোকে জানলে কি হবে? তাকে নিয়ে আমি কীভাবে যাব?’

আমি ওর যুক্তি খন্ডন না করে সোজা বললাম, ‘লোকে জানলে অসুবিধা হলে জানাতে হবে না। চাচি বাস কাউন্টারে গিয়ে তোকে দিয়ে আসবেন। আমি সেখানে দুইটা টিকিট কেটে নিয়ে বসে থাকবো। কেউ জানবে না কিছু।’

– ‘তোর ঘরের লোক জানবে না?’

– ‘এগুলো তোর ভাবতে হবে না।’

নূপুর ইতস্তত করে বললো, ‘তাছাড়া আমি প্রকাশকের বোনের বাসায় থাকব। তোকে থাকতে হবে হোটেলে। আব্বা থাকলে না হয় মুরব্বি হওয়ায় ব্যবস্থা হতো।’

আমি নাছোড়বান্দা, সঙ্গে সঙ্গে বললাম, ‘ব্যাটা মানুষের জন্য এগুলো কোনো ব্যাপার হলো না-কি নূপুর। কেন চাচাকে টানছিস এসবে। উনার অসুখ বাঁধাবি এভাবে।’

নূপুর চিন্তিত চেহারায় ঠোঁট কামড়ে বললো, ‘আচ্ছা ঠিক আছে। মেলায়ও তাহলে তুই কোনো ছবিতে উঠবি না।’

– ‘আরে না, আমি ছবি তুলে দেবো শুধু। ছবিতে উঠলে তো সবাই জেনে যাবে। এগুলো এত ভাবিস না।’

‘তাহলে পরশুদিন সকাল দশটার টিকিট কাটবি। তুই আগে গিয়ে বসে থাকবি কাউন্টারে। পরে আম্মু আমাকে দিয়ে আসবে’ তারপর খানিক ভেবে মাকে বললো ‘কেউ যদি জিজ্ঞেস করে একা গেলাম না-কি বলবে, না ওর মামার কাছে দিয়ে এসেছি, সে নিয়ে যাবে।’

– ‘আচ্ছা যা, বলবো তোর ছোট মামা আসছিল।’

আমি চা-টা খেয়ে আজ আর লুডু না খেলে দোকানে চলে আসি। ঠিক এগারোটায় দোকান বন্ধ করে বাসায় এসে খেয়ে-দেয়ে বিছানায় যাই। আমার সন্ধ্যার কথা মনে পড়ে। খুশিতে ছটফট করতে থাকি আমি। ঘুম আসে না আমার। নাটক-সিনেমার রোমান্টিক দৃশ্যগুলোর মতো ভাবি আমি আর নূপুর পাশাপাশি বাসে বসে আছি। এত মিষ্টি লাগে এসব ভাবতে। পরদিন আমি একটা পাঞ্জাবি কিনলাম। ওর সাথে মেলায় পাঞ্জাবি পরে যাব। দাড়ি খানিক লম্বা রেখে চুল-দাড়ি কাটলাম। নতুন ভালো দেখে পারফিউম কিনলাম, যাতে ওর পাশে বসে গেলে খানিক পর পর সুযোগ পেলে দেয়া যায়। পরশুদিনটা আজকে হতে যেন অনন্তকাল লাগছে। অপেক্ষার সময় এমনই বিরক্তিকর। পরদিন শুক্রবারে সন্ধ্যায়ও আমি ওদের বাসায় গেলাম। আসলে না গিয়ে পারা যায় না। ওকে দেখা, ওর সাথে সময় কাটানো যেন আফিমের চাইতেও বড়ো নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসার আগে ও আমাকে টিকিটের টাকা হাতে গুঁজে দিয়ে বললো, ‘নে, তুই কাল আগে টিকিট কেটে নিবি।’

আমি বললাম, ‘লাগবে না, পরে দিয়ে দিস।’

ও ধমকে উঠে বললো, ‘তোর থেকে একবার ফ্লেক্সিলড এনেও পরে দিতে পারিনি। আগে নিয়ে যা টাকা, পরে নিবি না।’

আমি মুচকি হেসে টিকিটের টাকা নিয়ে এলাম। ওকে রাগাতে চাই না আমি। বাসায় ফিরে মা’কে বললাম, ‘ঢাকায় যাব একটা দরকারে। থাকা পড়তে পারে।’

ওরা কিছু বললো না৷ আমি নানান সময় ব্যবসায়িক কাজে এদিক-ওদিক যেতে হয়। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লাম। ভোর সাতটায় ঘুম ভেঙে গেল আমার। উঠে হাত-মুখ ধুয়ে এসে বসে নূপুরকে কল দিয়ে বসলাম। মিস করছি আসলে, অজুহাত থাকায় সুযোগ মিস করলাম না। ও ঘুম জড়ানো গলায় ‘হ্যালো’ বললো।

– ‘কিরে রাজরাণী, এখনও উঠিসনি?’

– ‘মাত্র সাড়ে সাতটা বাজে।’

– ‘আরও ঘুমাবি না-কি?’

– ‘ঘুম ভাঙিয়ে এখন আবার ঘুমাতে বলছিস কু*ত্তা।’

ওর ঘুম জড়ানো কণ্ঠ এমনিতেই ভীষণ মিষ্টি লাগছিল। গালি শুনে আরও ভালো লাগলো। আমি রসিকতার সুযোগে বলেই দিলাম, ‘তোর ভয়েজ সত্যিই অনেক মিষ্টি নূপুর, আর গালিও তোর মুখে শুনতে অনেক ভালো লাগে।’

ও খিলখিল করে হেসে উঠে বললো, ‘গা*লিও ভালো লাগে মানুষের? দিন দিন ভালো ফাজলামো শিখছিস। এখন রাখছি। পরে কথা হবে’ বলে সে কল কেটে দিল। আমি ধীরে ধীরে নাশতা করে রেডি হয়ে বাস কাউন্টারে চলে এলাম। সাড়ে দশটার বাসের টিকিট কাটলাম দুইটা। নূপুর আর চাচি দশটার আগে এসে রিকশা থেকে নামলেন। আমি নূপুরকে দেখে ভীষণ অবাক হলাম। সে আমার দেয়া সেই নীল শাড়িটি পরেছে। ভীষণ সুন্দর লাগছে ওকে। ওর শারীরিক ফিটনেস এখনও তরুণীদের মতো। হালকা, লম্বা গড়নের মেয়ে। যা পরে ভীষণ মানায়। চাচি ওকে দিয়ে কিছুক্ষণ বসে চলে গেলেন। ও তখন আমার পাশে এসে ফিসফিস করে বললো, ‘কিরে? শাড়িতে কেমন লাগছে কিছু যে বলছিস না।’

আমি সুযোগ পেয়ে ওর পা থেকে মাথা অবধি ভালোভাবে দেখলাম। তারপর মনখুলে প্রশংসা করলাম। ওর প্রশংসা করতে পারলে আমার কেমন শান্তি শান্তি লাগে। ও প্রশংসা শুনে ভ্রু-কুঁচকে তাকিয়ে বললো, ‘তুই শাড়ির প্রশংসা করলি না-কি আমার রূপের?’

আমি সাবধান হয়ে বললাম, ‘মানে শাড়িতেই তো আজ রূপবতী লাগছে, সেটাই বুঝাতে চেয়েছি।’

এসব কথা বলতে বলতে বাস চলে এলো। আমি ওর ব্যাগটা হাতে নিয়ে বললাম চল। ও জানালার পাশে গিয়ে বসলো। আমি ওর ব্যাগ উপরে রেখে নিজের কাঁধের ব্যাগটাও রাখলাম সেখানে। কয়েকদিন থাকা হবে বলে আমিও ব্যাগ নিচ্ছি। ব্যাগ রাখার পর আমি ওর পাশের খালি সিটটার দিকে তাকিয়ে গা কেমন করে উঠলো। আমি এখন ওর পাশে বসবো? ভাবতেই কেমন অদ্ভুত অনুভূতি কাজ করছে। নূপুর আমার দিকে তাকিয়ে বললো, ‘কিরে তোকে কী ইনভাইটেশন কার্ড পাঠিয়ে বসতে বলতে হবে? এত লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই, বস।’

আমি আস্তে-আস্তে ওর পাশে বসলাম। ওকে স্পর্শ করার, আদর করার কত তীব্র ইচ্ছা আমার হৃদয়ে। অথচ পাশে বসে মনে হচ্ছে এই না ওর গায়ের সাথে গা লেগে যায়। এই না সে কিছু মনে করে বসলো। নূপুর স্মিত হেসে বললো, ‘ঠিকমতো বস, সন্ধ্যায় খেলতে গেলেও এমন করিস। ছক্কা গুটার এটা হাতে না দিয়ে বিছানায় রাখিস। একদিন পানির গ্লাস দিচ্ছি এমনভাবে চিমটি দিয়ে গ্লাস ধরলি, হাত লাগলেই যেন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে। সব সময় স্বাভাবিক থাকবি। এতদূর একসাথে যাব, নিজের মতো আরাম করে বস। মন পরিষ্কার থাকলেই হলো।’

অদ্ভুত তো, নূপুর আমার এগুলো খেয়াল করে? তাছাড়া আমার তো ওর হাত ধরে ফেলতে মন চায়। চুমু খেয়ে ফেলতে মন চায়। তবুও বাইরে এত আনাড়িপনা প্রকাশ পায় কীভাবে। এগুলো ভেবে আমার অস্বস্তি আরও বেড়ে গেল। আমি তাহলে ভেতরে নিজেকে যেরকম ভাবি? বাইরে সেরকম লাগছে না? ওর কাছে লাজুক লাগছে আমাকে?

‘পাঞ্জাবিতে তো বেশ লাগছে তোকে’ নূপুর আমার দিকে তাকিয়ে বললো কথাটা। আমি হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম। পাঞ্জাবিতে তাহলে ভালোই লাগছে আমাকে। বাস চলতে শুরু করেছে। নূপুর এটা-ওটা গল্প করছে। ছোটবেলার কথা, পরিচিত মানুষদের কথা। আমি কেবল ওকে দেখছি। একটা মেয়ে এত মায়াবী কি করে হয়? ওর চুল খোলা। দাগহীন ফরসা লাবণ্যময় চেহারা। পাতলা রক্তাভ ঠোঁট। কথাও বলে কী ভীষণ মিষ্টি করে। তাকিয়ে শুধু দেখতে ইচ্ছা করে। ইচ্ছা করে হাতটা ধরে কাতর গলায় বলি কী হয় তুই আমার হয়ে গেলে? এসব ভাবনার মাঝেই অসভ্য বাসটা বাঁ দিকে মোড় নেয়ার সময় আমি নূপুরের দিকে হেলে গেলাম। মনে হলো কেউ যেন আমাকে ওর দিকে ঠেসে ধরে রেখেছে। আমি দ্রুত নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম, ‘স্যরি স্যরি৷ আমরা একেবারে সামনের সিট পেলেই ভালো হত।’

– ‘এত স্যরি স্যরি করতে হবে না। তাছাড়া আমরা পেছনে না, মাঝখানে বসেছি। আর খুব যে ঝাঁকুনি তাও না। এগুলো একটু-আধটু হবেই। আমরা ইউরোপে না, বাংলাদেশেই আছি।’

আমি ওর কথায় স্বস্তি পেয়ে বললাম, ‘তাও ঠিক।’

বাস চলছে, এখন আমার বারবার মনে হচ্ছে মাঝেমধ্যে এরকম ঝাঁকুনি দিলে মন্দ হয় না। ওর স্পর্শ পেতে ভীষণ মন চাচ্ছে। একটু আগে লজ্জা আর সংকোচে ব্যাপারটা অনুভব করতে পারিনি। এমন কোনো ঝাঁকুনি যদি দিত, ও হেলে এসে পড়ে যেত আমার কোলে। আমি ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে দেখতাম কেমন লাগে। ওর শরীর নিশ্চয় অনেক নরম। জড়িয়ে ধরে না ছেড়ে বলতাম ‘ঠিক আছিস তো? কিছু হয়নি তো? শালার ড্রাইভার বাস চালাতেই পারে না’ তারপর আস্তে আস্তে ওকে ধরে সিটে বসাতাম। আমি কল্পনা থেকে বের হয়ে ওর দিকে তাকালাম। ওর চুলগুলো খানিক উড়ছে। ওর সাথে বিয়ে হলে আমি এভাবে মেলায় নিয়ে যাব। পুরো বাসে বসার সময় জড়িয়ে ধরে বসে থাকবো। নূপুর আমার দিকে তাকিয়ে বললো, ‘কিরে আমার চুলের দিকে হা করে তাকিয়ে আছিস কেন?’

‘তুই এত সুন্দর নূপুর, তোকে যে পুরুষ পেল সে তো সবকিছু দিয়ে আঁকড়ে ধরে রাখার কথা। তবুও ডিভোর্স হলো কেন বুঝি না।’ কথাগুলো আমি ঘোরের মধ্য মুখ ফসকে বলে ফেলেছি৷ স্পর্শকাতর একটা বিষয়। ভেবেছিলাম নূপুর রাগ করে ফেলবে। কিন্তু ও রাগ না করে বললো, ‘সবই কপাল নিষাদ, আর সবাই কী সবার চোখে সুন্দর হয়?’

– ‘আমার চোখে তো তুই সব সময় সুন্দর ছিলি।’

ও দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো, ‘তা ঠিক, কিন্তু তখন তুই বেকার ছিলি। আমার বিয়েও অনেকটা ঠিক হয়ে গিয়েছিল। এখন তুই বেকার না জানি, তবে আমার আর বিয়ে-শাদির ইচ্ছা নেই।’

আমি ওর কথাগুলো শুনতে পেলাম না যেন। কারণ সে আমার এক হাত ধরে নিয়ে সান্ত্বনা দেয়ার মতো কথাটা বলেছে। আমি ক্রমশ বেহুশ, অবশ হয়ে যাচ্ছি যেন। নূপুর আমার হাতটা ধরেছে? ওর হাতটা কেমন উষ্ণ, আমি ধরতে পারলে কতটুকু কোমল তাও বুঝতে পারতাম। আমার ভীষণ অসহ্য লাগছে। শক্ত করে জড়িয়ে ধরে একদম আদর করতে করতে খেয়ে ফেলতে মন চাচ্ছে। আচ্ছা হুট করে এমন করে ফেললে ও কী খুব রাগ করবে? না-কি বকা দিয়ে মাফ করে দেবে? বাস খানিক ঝাঁকুনি দিল। ও এবার আমার দিকে হেলে পড়লে আমার বাহু ধরে পরে উঠে সোজা হয়ে বসলো। এবারও আমার আফসোস হলো। আমি এভাবে ওর বাহু ধরতে পারলে বুঝতে পারতাম কেমন অনুভূতি হয়। ঘণ্টা খানেক পর যাত্রা বিরতি দিল। আমরা দু’জন নেমে চা-নাশতা খেলাম। আমি বিল দিতে চাইলেও ওর জন্য সম্ভব হলো না। তাই বাইরে এসে বাদাম পেয়ে একটু বেশি করে নিলাম। দু’জন বাসে বসে বসে খেতে পারবো। আমি বাসে উঠার আগে ও হঠাৎ হাত ধরে টেনে দাঁড় করিয়ে বললো, ‘তুই সিগারেট খাস আমি জানি। বাসের সময় আছে এখনও খেতে হলে খেয়ে উঠ৷’

– ‘আরে না না, সিগারেট না খেলে আমার তেমন অসুবিধা হয় না।’

– ‘কেন খাচ্ছিস না? আমি গন্ধ পাব তাই?’

আমি লাজুক হাসলাম। ও কেমন যেন সবকিছু বুঝে ফেলে। কেবল আমি যে এত ভালোবাসি, সেটাই বুঝে না।
__চলবে…
লেখা: জবরুল ইসলাম