#আমি_গোপনে_ভালোবেসেছি
#পর্বঃ১৭
#writer:Mishmi_muntaha_moon
ভালোই চলছিলো সব কিছু এই নিশাদ ব্যাক্তিটাকে ছাড়া।রেজাল্ট ভালো হওয়ার কারণে আব্বু ঘরে ঘরে মিষ্টি বিলীন করলো।আমিও ভেজায় খুশি ছিলাম।এখন আবার নতুন বছরে এক ক্লাস পেরিয়ে নতুন ক্লাসে পড়বো আমার যোগ্যতাও টা যেনো কিছুটা বাড়লো?
সবই কল্পনায় চলতে থাকলো আমার।উনি সেই দিন ই আমার জন্য আস্ত একটা ফুলের তোরা দিয়ে গেলো চকলেট সহ সাথে ছিলো একটা সাদা সুন্দর সুতার কাজের শাড়ি।এইসব কিছুই সুন্দর করে যত্নসহকারে আলমারির সর্বগোপন স্তরে রেখে দিলাম।যখনই প্রথম উনি আমাকে শাড়িতে দেখার আবদার করবে এই শাড়িটা তখন গায়ে জরাবো।
_
তারপরে ১ দিন কাটলো।উনার সাথে দেখা হয় নি কিন্তু কলে কথা হয়েছিলো।
এর মাঝে আম্মু রুমে এসে আমার রুমের বিছানার চাদর তুলে নতুন চাদর বিছিয়ে দিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বললেন
” ফিয়ানা?শুনো আমার কথা”
আমিও আমার পড়ার টেবিল থেকে আগের বইগুলো নিচে সাজিয়ে রাখতে রাখতে বললাম
“হুম আম্মু বলো শুনছি।”
” আমরা তোমার ফেমিলি, আমি তোমার আব্বু তোমার গার্ডিয়ান। আর নিশাদের সাথে আমরা তোমার বিয়ে কথা ভাবছি তো তুমি যদি কিছু বলতে চাও এখনই বলতে পারো নাহলে বারবার একই সুযোগ দেওয়া হয় না বুঝলে”
আম্মুর কথায় ঢোক গিলে আম্মুর দিকে তাকালাম। আমার কি আম্মুকে উনার কথা বলে দেওয়া উচিত?বলা কি ঠিক হবে?
উনাকে জিজ্ঞেস করে নেওয়া হয়তো উচিত আমার।আর উনিতো এখনো আমাকে তেমনভাবে আই মিন অফিসিয়াল প্রপোজ করে নি।আম্মুকে রিনিরিনি কন্ঠে বললাম
” আমি এখন বিয়ে করতে চাই না আম্মু”
আমার কথায় আম্মু ছ্যাত করে উঠলো চাদরটা অর্ধেক বিছানো রেখেই রেগে বললেন
” একই কথা আমি শুনতে চাই না ফিয়ানা।কেনো বিয়ে করতে চাও না সেই কারণ জিজ্ঞেস করেছি সেই কারণ যদি না বলো বিয়ে ভাঙার কথাও বলবে না বুঝলে?”
বলেই আম্মু চলে গেলো।আমি তো এখনো হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।আম্মুতো একদম রেগেই গেলো।বিয়েটা কি সত্যি হয়ে যাবে নাকি। আর উনার সাথে আমার এতোদিন দেখা হলো কথা হলো আমি একটি দিনও উনাকে আমাদের বিয়ের কথাবার্তার কথা তো বললাম না।উনি কি জানে যে আম্মু অতি শীঘ্রই আমার আর নিশাদ ভাইয়ের বিয়েটা দিয়ে দিতে চাচ্ছে।
উফ আমি যে কি করবো!
~~~~~~~~
তারপরের দিনই আম্মু এসে আমাকে যা বলল তা শুনে জেনো আমি সেন্সলেস হয়ে পরে যাবো যাবো অবস্থা।
আম্মুর কথামতে আজকে আমার কাবিন তাও আবার নিশাদ ভাইয়ের সাথে।আমি আম্মুর কথার বিপরীতে থেমে থেমে বললাম
” ক,,,,কি বলছো আম্মু।তোমারা তো বলেছিলে অনুষ্ঠান করেই বিয়ে হবে ত,,তাহলে এতো তাড়াতাড়ি কেনো?”
” তোমার দাবানো স্বভাব আমি আর নিতে পারছিনা ফিয়ানা।আমি যা বলেছি তাই হবে বার বার বলবো না।যেভাবে যা আছে সেভাবেই সব হবে কোনো প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই।”
” মা,,,,,,”
আমার কথা শুনলো না আম্মু চলে গেলো। আমার চোখের পানিগুলো নিশ্চিত দেখেছে কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া দিলো না
আমি নিশ্বাস আটকা অবস্থাতে দ্রুত ফোন নিয়ে উনার নাম্বার ডায়াল করলাম।কেনো যেনো হঠাৎ উনার উপরও রাগ লাগছে।
১ বার রিং হয়ে কেটে গেলো তারপর আবারও কল করলাম রিসিভ করতেই আমি রেগে বললাম
” আমি কি হই আপনার।হয়ে যাক আমার বিয়ে আপনার কি তাই না।আপনি তো এখনো আমাকে অফিসিয়ালি প্রপোজ ও করেন নি আর কোনো কমিটমেন্ট তো দূরের কথা।আমিই লাফিয়ে লাফিয়ে আপনার জন্য বিয়ে ভেঙে দেওয়ার কথা বলছি।আজ আমার বিয়ে বুঝলেন আম্মুরা ধরে আমাকে কাবিন দিয়ে দিচ্ছে আপনি থাকেন দেবদাস হয়ে আর নাহ আপনি দেবদাস হবেন কেনো দেখা যাবে আমার বিয়ে হয়ে গেছে আপনি ও বিয়ে করে সুখেই থাকবেন।”
হিচকি দিয়ে উলোট পালোট কথা বলে রেখে দিলাম উনার আর কথা শুনলাম।কি যে বললাম নিজেও জানি না যা মুখে এসেছি তাই উগলে দিয়েছি।তারপর মোবাইলটা বিছানায় ফেলে দিলাম তারপরে যে একের পর এক উনি কল দিলেন আর রিসিভ করলাম না।বালিশে মুখ গুজে কাদতে থাকলাম
~~~~~~~~~~
দুপুর পেরিয়ে বিকেল হলো বিকেল পেড়িয়ে সন্ধ্যার অন্ধকার চারদিকে ছেয়ে যাওয়ার পরেও যখন নিশাদ ভাইয়ের কোনো ফেমিলির ছিটেফোঁটাও দেখলাম না তখন কিছুটা খটকা লাগলো।উঠে খবরাখবর নিতে যাবো তখনই বেল বেজে উঠতেই নিঃশ্বাস আটকে দরজা ফাকা দিয়ে উকি দেই দেখার জন্য কে এসেছে। নিশ্চয় নিশাদ ভাইয়ের ফেমিলি।এখনি আমাকে জোর করে নিয়ে যাওয়া হবে।
কিন্তু রুদ্ধ সাহেবকে দেখে জেনো আকাশ থেকে পড়লাম চোখ বড় বড় দরজা মেলে উনার দিকে তাকিয়ে থাকলাম।আম্মু দরজা খুলেছে।উনাকে দেখে স্বাভাবিক ভাবেই এসে সোফায় বসতে বলে আম্মুও বসে পড়লো।উনি আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থেকে মুখটাকে শক্ত করে সোফায় আম্মুর বরাবর বসে পড়লেন।
উনাকে তো বললাম কতো কিছুই কিন্তু এখন আমারই ভয় লাগছে বুক ধুকপুক ধুকপুক করেই যাচ্ছে চিনচিন ব্যাথাও করছে যেনো।উনি বসতেই উনার বাবা অর্থাৎ লিয়াকত আংকেল এসে গেট পেরিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েছে।আম্মু উনাকে ও বসতে বললে উনি দাঁড়িয়ে মাথাটা ঝুকিয়ে বললেন
” মাফ করো তুমি যা ভাবছো,,,”
উনার কথায় উনি একই তেজে বলল
” আমি এখনো উনাকে কিছু বলিনি বাবা।তো তোমার এমন বিহেভ করার প্রয়োজন নেই।আর তুমি কথা যদি না বলো আমি বলতে বাদ্ধ হবো।”
উনার কথায় লিয়াকত আংকেল অসহায় মুখ করে উনার দিকে তাকাতেই আম্মু বলল
” আপনাদের কিছুই বলতে হবে আমি সব জানি আর তাই আমি ইচ্ছে করে ফিয়ানাকে মিথ্যা বলি যে আজ ওর কাবিন।নিশাদ তো আগেই বিয়ের জন্য না দিয়েছে তোমার মুখ থেকে সব শুনতে চাচ্ছিলাম তাই এইসব করা।”
আম্মুর কথায় আমি হতভম্ব কি বিলে আম্মু উনি এইসব মিথ্যা বলেছে আমাকে!আমার আর রুদ্ধ সাহেবের ব্যাপারে আগে থেকেই জানতেন?আর নিশাদ ভাই কেনো না করে দিলো উনিও কি জানে রুদ্ধ সাহেব আর আমার ব্যাপারে?
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতেই দেখি উনি ঘার বাকা করে বাকা চোখে কঠিন চাহনি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি ঢোক গিলে তারাতারি রুমের ভিতরে ঢুকে পড়লাম। উনার চাহনি দেখে ভয় লাগলো। কতোটা ইমবেরেসিং সিচুয়েশন।
আমি দরজায় কান পেতে উনাদের কথোপকথন শুনতে চাইলাম।
” আমি খুবই ইমবেরেসিং এই মুহূর্তে আন্টি কিন্তু সত্যিটা হলো আমি ফিয়ানাকে পছন্দ করি এবং ওকেই বিয়ে করতে চাই আগে বলা হয় নি তার জন্য খুবই দুঃখিত ”
উনার কথা শেষ হতে লিয়াকত আংকেল বললেন
” হুম আগের কথা ভুলে যাও যেহেতু নিশাদ বিয়েতে অমত করেই দিয়েছে তাহলে তোমার মেয়েকে আমাদের হাতেই তুলে দাও”
” দেখুন ভাই আমার কথা এইটা না কথা হলো ওরা দুজন আমাদের পিঠ পিছে যা করলো তা একদমই ঠিক করে নি। আপনি বলেন ওরা দুজন যা করেছে তা কি ঠিক? মানুষের চোখে পড়ে নি”
” আন্টি প্লিজ আপনি এভাবে বলবেন না। আমাদের মধ্যে কোনো খারাপ সম্পর্ক ছিলো না।আমি আপনাকে যথেষ্ট রেসপেক্ট করি। আর আপনি কি মনে করেন আমি কি ইমমেচুয়ার একটা ছেলে যে রাস্তা ঘাটে প্রেম করে বেরাবো। আপনার চোখে কি উল্টাপাল্টা কিছু পড়েছে সত্যি করে বলুন তো”
উনি তীক্ষ কন্ঠে বলায় আম্মু ঠিকই চুপ হয়।তারপরই লিয়াকত আংকেল এর কন্ঠ আবার ও শুনতে পাই
” রুদ্ধ তুমি এখন যাও আমি তোমার আন্টির সাথে কথা বলছি।”
আংকেলের কথায় উনি উঠে চলে গেলেন ধপাধপ পায়ে।আর আমিও দ্রুত পায়ে বারান্দায় গিয়ে উনার চলে যাওয়া দেখলাম।একদিনে কি থেকে কি হয়ে গেলো!উনি একটি বারও আমার বারান্দায় ফিরে তাকালো না।হাটার গতিটাও উনার বড্ডই দ্রুত।
চলবে,,,
(ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই।❤️❤️❤️)
#আমি_গোপনে_ভালোবেসেছি
#পর্বঃ১৮
#writer:Mishmi_muntaha_moon
লিয়াকত আংকেল অনেক সময় আম্মুর সাথে কথা বলল আম্মু আব্বুকেও কল করে ডেকে নিয়েছিলো তারপর সকলে সমালোচনা করেছে কি করবে না করবে।
উনি যাওয়ার পরে আমিও মন খারাপ নিয়ে বসে থাকতে থাকতে দুর্বল হয়ে ঘুমিয়ে পরি।রাতে আম্মু আমাকে খেতে ডাক দিলো না আর, কিন্তু বাবা এসে রুমে খাবার দিয়ে গেছে।না করেও আব্বু জোর করায় খেয়ে নেই।
উনি যে রেগে আছেন তা বুঝতে পেরেছিলাম কিন্তু পাত্তা দেই নি কিন্তু তাই বলে উনি গত একদিন ধরে আমাকে কল করেন নি।যেহেতু আমার নিজের বাড়িতেই সমালোচনা হয়েছে বিভিন্ন কার্যকর রটছে তাই আমার কানে আসবেই কথাবার্তা স্বাভাবিক।
আর এই কথাটা আমাকে খুবই আনন্দ দিয়েছে।আম্মুরা একটু গাম্ভীর্যের সঙ্গেই সকল কাজ করছে কিন্তু ব্যাপার না ঠিক হয়ে যাবে ধীরে ধীরে।তাছাড়া আম্মু রুদ্ধ সাহেবকে সবসময় অনেক পছন্দ করতেন এখন একটু অভিমান করে আছে আই নো।
উনাদের কথা মতে আমার আর রুদ্ধ সাহেবের বিয়ে হতে চলেছে গত সপ্তাহে আর হলুদ, বিয়ে এক কথায় সব অনুষ্ঠান সহই করা হবে।লিয়াকত আংকেল খুবই সুন্দর ভাবে আম্মু আর আব্বুকে হ্যান্ডেল করেছে। অবশ্য একটা মাত্র ছেলে উনার।
এইসব কথা শুনার পরতো ইচ্ছে করছিলো দৌড়ে গিয়ে উনার সাথে শেয়ার করে আসি কিন্তু কোনো যোগাযোগ নেই।অতঃপর না থাকতে পেরে ফোন হাতে নিয়ে নিজেই কল করলাম তিনবার কল করার পরেও কল না ধরায় মন খারাপ করে বসে পড়তেই উনার কল আসে। উনার নাম দেখেই উত্তেজিত হয়ে রিসিভ করতেই উনার গম্ভীর কন্ঠ ভেসে আসে
” নদীর পারে ওয়েট করছে। তারাতারি দেখতে চাই।”
বলেই কল কেটে দিতেই চিন্তায় পড়ে যায় আম্মু কি এখন আমায় যেতে দিবে এভাবেই তো মুড বেশি ভালো না।কিন্তু উনাকেও না করতে পারবো না এভাবেই তো রেগে আছে তার উপর নাহ করলে একেবারে শেষ আমি।যেতেই হবে যেভাবেই হোক।
মাথায় ঘোমটা টেনে ধীর পায়ে আম্মুর কাছে যাই তখন আম্মু খাতা কলমে নিজের লিস্ট তৈরি কর্য ব্যস্ত।
ধীর পায়ে আম্মুর কাছে গিয়ে বললাম
” আম্মু একটু বাহিরে যাচ্ছি আমি”
আমার কথায় আম্মু একনজর আমার দিকে তাকিয়ে বলল
” যাও”
আম্মুর কথায় অবাকতার রেশ ধরে রেখেই ধীর পায়ে দরজা খুলে বাহিরে চলে গেলাম।
~~~~~~~~~~
নদীর পারে যেতেই অফ হোয়াইট রঙের শার্ট পরা রুদ্ধ নামক পুরুষ কে দেখতে পেয়ে পাশে গিয়ে বসতেই উনি আমার দিকে তাকিয়ে আবার সামনে তাকিয়ে থাকে।আমি যে কি দিয়ে কথা শুরু করবো ভেবেই পাচ্ছিনা। আবার ভয়ও করছে।উনার রাগ কখনো দেখিনি কিন্তু এখন দেখে ভয় পাচ্ছি কি সাংঘাতিক ব্যাপার।
নিজেকে সামলে নিয়ে আগ থেকে কথা বাড়ালাম।
” আপনি কখন এসেছেন। অনেকক্ষণ ধরে বসে আছেন নাকি?”
আমার কথায় কোনো জবাব দিলেন না উনি।কিছুক্ষন চুপ থাকার পরেও কোনো জবাব না পেয়ে আর সামলে রাখতে পারলাম না নিজেকে।অসহায় ভাব মুখে এনে বলি
” আমিতো একটু বলদ টাইপের জানেনি আপনি।এভাবে রাগ করে আছেন কেনো।আম্মু নাহয় মিথ্যা বিলেছিলো কিন্তু আমি তো সত্যি ভেবেছিলাম তাই না।তবুও সরি”
আমার কথা শুনে উনি বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে আমার দিকে তাকাতেই আমিও উঠে উনার মুখোমুখি হয়ে দাড়াই।উনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমার দিকে পূর্ণদৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন
” ইটস ওকে মিস ফিয়ানা।এতে তোমার কোনো দোষ নেই আই নো।জাস্ট আমারই মুডটা স্পোয়েল হয়ে ছিলো।আর তোমআর তেমন উত্তেজিত ভয়মিশ্রিত আর কান্নামাখা কন্ঠ শুনে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম”
উনার কথা শুনে আমিও অসহায় ভাবে থেকে আবার মুখে হাসি টেনে বললাম
” কিন্তু একটা জিনিস তো ভালোই হয়েছে তাই না আর কিছু লুকানো না আর,,,, ”
আমি কিছু বলার আগেই উনি বাকা হেসে বললেন
” হুম ভালোই হয়েছে এখন আমি বউ তারাতারি ঘরে তুলতে পারবো”
উনার কথা শুনে ভ্রু কুচকে মুচকি হাসলাম।তার মাঝেই উনি আবারও ভ্রু কুচকে বললেন
” ও আরেকটা কি জেনো বলেছিলো ও ইয়াহ কনফেশন করি নি আর কোনো কমিটমেন্ট ও দেই নি।”
বলেই ঠোট দুটো চেপে দূরে কোথাও তাকিয়ে থাকলো।আমিও মন খারাপ করলাম। রাগের বশে বলে দিয়েছি এখন উনি এইটা বলে আমাকে অদ্ভুত ফিল করাবে।
আমি মাথা নিচু করে চুপ থাকার মাঝেই সামনে গোলাপি রঙের ফুল বাড়িয়ে দিতে মাথা তুলে তাকাই পর পরই মুখে এক বিশাল হাসি ফুটে উঠে।আমিও হাত বাড়িয়ে উনার হাত থেকে ফুল নেই।
ফুল টার নাম বলতে পারিনা কিন্তু আগেও দেখেছি।
উনার মন ভালো করতে পেরে একটা প্রশান্তির হাসি দিতেই কিছু মনে করে বললাম
” গত সপ্তাহে যে আমাদের বিয়ের কথা হচ্ছে জানেন?”
” আমি সবই জানি তাও তোমার আগে।”
উনার কথায় অবাক হলাম।উনি কি করে সবই আমার বলার আগে থেকেই জানা থাকে।
~~~~~~
বিছানায় শুয়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছিলাম বাহিরে কিছুক্ষন পর পর থেমে থেমে বৃষ্টি পড়ছিলো।সকাল থেকে ঘর থেকে বের হইনি। আম্মু কোথায় জেনো গিয়েছে আব্বু ফায়াজ সহ শুধু আমিই বাড়িতে।
সন্ধ্যার দিকে বেল বাজতেই গিয়ে দরজা খুলতেই অনেক গুলো শপিং ব্যাগ হাতে আম্মুকে নজরে পরে আব্বুর হাতেই কিছু ব্যাগ আছে।
” সরে দাড়াও”
আম্মুর কথায় তারাতারি সরে দারালাম।আম্মু ভিতরে ঢুকে সোজা সোফার রুমে গিয়ে সব ব্যাগ গুলো সোফায় রাখে আমিও উনাদের পিছে পিছে সোফার রুমে গিয়ে এক কর্নারে দাঁড়িয়ে আছি।
আব্বু তখনি আমার কাছে এসে দাঁড়িয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে
” দেখো সব খুলে পছন্দ হয়েছে কিনা।আমিতো তোমার আম্মুকে বলেছিলাম ও তোমাকে নিয়ে যেতে কিন্তু,, তা যাই হোক দেখে নিও ”
মাথায় হাত বুলিয়ে আব্বু উনার রুমে চলে যায়।তখনি আমি ভ্রু কুচকে আম্মুর সামনে গিয়ে বলি
” এগুলো কিসের শপিং আম্মু?”
” তোমার বিয়ের।”
আম্মুর কথায় আমি অবাক হয়ে যাই।আমার বিয়ের শপিং আমি নিজে পছন্দ করে করবো অনেক বছরে ইচ্ছে আমার।কতো কিছু ভেবেছিলাম এই শপিং নিয়ে।বিয়েতে কেমন লেহেঙ্গা পড়বো তারও কতো জল্পনা কল্পনা।
আমি দুঃখী দুঃখী মুখ করে বললাম
” কিন্তু আমাকে নিয়ে গেলে না তুম তো জানতেই”
আমার কথা না শুনেই আম্মু যেতে যেতে বলল
” এইটা তোমার শাস্তি। এখন আমাদের আর তোমার শশুর শাশুড়ীর পছন্দ মতোই চলতে হবে তোমার।”
বলেই আম্মু চলে গেলো।কি করার এখন এইগুলা জরুরি না রুদ্ধ সাহেবের সাথে যে আমার বিয়ে হচ্ছে এইটাই বড় বিষয়। আর আম্মুও নরমাল বিহেভ করছে। বিয়ে তো আর বার বার মানুষের জীবনে আসে না তাই এনজয় করাটা মাস্ট।
চলবে,,,,
(ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই।)