#আলো আধারের খেলা
#পর্ব_১৮
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ
লাল রঙের হাতের কাজ করা শাড়ি,সাথে আবার ম্যাচিং করে লাল রঙের চুড়ি আর টকটকে লাল গোলাপ দিয়ে খোপা বেধে নতুন বউ এর সাজে বসে আছে জান্নাত।রুয়েল ঠিক বুঝতে পারছে না এটি আসলে কে?কারণ জান্নাত অন্য মুখ হয়ে বড় একটা ঘোমটা টেনে চুপটি করে বসে আছে।তবে রুয়েল বুঝতে পারলো এটা জান্নাতই হবে।কারণ তার পরনে ছিলো রুয়েলের দেওয়া সেই লাল শাড়িটা।যেটা রুয়েল জান্নাতকে সেদিন পড়তে বলেছিলো।তবে রুয়েল কিছু বুঝতে পারলো না।কারণ এ যেনো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টির মতো।জান্নাতকে তো সে আজ শাড়ি পড়ে সুন্দর করে সেজে থাকতে বলে নি।তাহলে জান্নাত হঠাৎ একা একাই এতো সুন্দর করে সেজেছে কেনো?
রুয়েল মাত্র আড্ডাখানা থেকে ফিরলো।সে তার শাশুড়ীর হাতের হরেক রকম পিঠা আর বিভিন্ন রকমের ফলমূল খেয়ে ড্রাইভার কে সাথে নিয়ে গ্রামে ঘুরতে বের হয়েছিলো।রুয়েল তাদের গ্রামের জমিজমা গুলোও দেখে এসেছে।রুয়েল তাদের গ্রামের বাড়িতে যেয়ে তার চাচা চাচির সাথেও সাক্ষাৎ করেছে।পুরো গ্রাম ঘুরতে ঘুরতে আর গ্রামের চেনাজানা লোকের সাথে গল্প করতে করতে প্রায় রাত লেগে গেলো।কিন্তু রুয়েল জান্নাতের রুমে ঢুকতেই এতো বড় একটা সারপ্রাইজ পাবে সত্যি কোনোদিন ভাবতে পারে নি।
রুয়েল জান্নাতের দিকে এগিয়ে যেতেই জান্নাত বললো, আসসালামু আলাইকুম।রুয়েল জোরে করে শব্দ করে বললো,ওয়ালাইকুম আসসালাম।এই বলে রুয়েল জান্নাতের পাশে গিয়ে বসলো আর জান্নাতের মাথার উপর থেকে ঘোমটা সরাতেই সর্বপ্রথম জান্নাতের মাথার খোঁপাটি চোখে পড়লো রুয়েলের।একদম গাছের তাজা লাল গোলাপ বসানো হয়েছে খোঁপাতে।রুয়েল এবার জান্নাতের মুখটি তার দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে বললো,মাশাল্লাহ, মাশাল্লাহ। আল্লাহর কি অপরুপ সৃষ্টি।সত্যি আপনার রুপের কোনো তুলনা হয় না জান্নাত।সৃষ্টিকর্তা যেনো পরম যত্নে আপনাকে গড়িয়েছেন।আর সেই অপরুপ সৌন্দর্য আমাকে দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন।
জান্নাত রুয়েলের মুখে এতো এতো প্রশংসা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে গেলো।সে কিছুতেই রুয়েলের দিকে তাকাতে পারছে না।ভীষণ লজ্জা লাগছে তার।এভাবে সেজেগুজে কিছুতেই আর থাকতে ইচ্ছে করছে না।রুয়েল তখন জান্নাতের মুখ টি উপর করে ধরে বললো,জান্নাত!আপনাকে সুন্দরভাবে সেজেগুজে থাকতে বলেছিলাম,কিন্তু এভাবে আমার মাথা নষ্ট করতে বলি নি?আমি আপনাকে যত দেখছি ততো বেশি পাগল হয়ে যাচ্ছি।
জান্নাত রুয়েলের কথা শুনে এতোক্ষণে একটু তাকালো আর মিনমিনিয়ে বললো,আমি সাজতে চাই নি।দাদী পড়ে দিয়েছে শাড়িটি।আর জাহান এভাবে সাজগোছ করে দিয়েছে।এতে আমার কোনো দোষ নেই।
রুয়েল জান্নাতের কথা শুনে একটু অবাক হলো।সে তখন বললো, দাদী আর জাহান হঠাৎ এভাবে আপনাকে সাজিয়ে দিলো কেনো?
–জানি না আমি।আমি তো দাদীর সাথে বসে গল্প করছিলাম।হঠাৎ দাদী বললো, আজ তোকে আমি নিজের হাতে শাড়ি পড়ে দেবো।যা তোর একটা শাড়ি আন।
রুয়েল জান্নাতের কথা শুনে বললো, তা দাদীর সাথে কি বিষয় নিয়ে গল্প হচ্ছিলো?আমাকে কি বলা যাবে?
–না,না,বলা যাবে না।
–কেনো?
–এমনিতেই।এই বলে জান্নাত বিছানা থেকে নেমে এলো।আর রুয়েলকে বললো,আপনি তো এইমাত্র বাহির থেকে আসলেন।যান ফ্রেশ হয়ে নিন।আপনার জন্য খাবার দাবার আমি রুমে এনেছি।কারণ এই শাড়ি পড়ে কিছুতেই সবার সামনে যেতে পারছিলাম না।বিশেষ করে আব্বুকে দেখে ভীষণ লজ্জা লাগছে।এজন্য জাহান কে বলেছি ঘরেই দিতে যেতে খাবার টা।
রুয়েল তখন নিজেও জান্নাতের কাছে চলে গেলো।আর তার হাত ধরে টেনে নিলো। জান্নাত তা দেখে বললো,আপনি ফ্রেশ হবেন কখন?
রুয়েল জান্নাতের প্রশ্নের কোনো উত্তর দিলো না।সে জান্নাতকে তার একদম কাছে এনে বললো,আমাকে দেখে লজ্জা পাচ্ছেন না?
–হুম।জান্নাত মাথা নাড়িয়ে বললো।
রুয়েল তখন বললো, কিন্তু আমাকে দেখে তো এতো লজ্জা পেলে চলবে না।ফ্রি হতে হবে আমার সাথে। তা না হলে দুইজন দুইজনার কাছে আসবো কি করে?
জান্নাত রুয়েলের মুখে এমন কথা শুনে একদম স্তব্ধ হয়ে গেলো।তার পুরো শরীর ঠকঠক করে কাঁপতে লাগলো।কারণ রুয়েল যখনই তার কাছে আসতে চায়,তাকে ভালোবাসতে চায় ঠিক তখনি জান্নাতের পুরো শরীর এভাবে অবশ হয়ে যায়।
রুয়েল হঠাৎ জান্নাতকে কোলে তুলে নিলো।আর বিছানার দিকে এগোতে লাগলো।কিন্তু জান্নাত নিজেকে ছাড়ানোর জন্য হাত দিয়ে রুয়েল কে বাধা দিতে লাগলো।রুয়েল তখন জান্নাতের হাত দুটি শক্ত করে ধরে বললো,দাদী এতো সুন্দর করে সেজে দিয়েছে কিসের জন্য জানেন?আজ আর কোনো বারণ শুনবো না।
জান্নাত সেই কথা শুনে রুয়েলের দিকে তাকালো।কারণ সে জানে।কেনো আজ দাদী তাকে এতো সুন্দর করে সেজে দিয়েছে।দাদী জান্নাতের থেকে সব শুনেছে।রুয়েলের ব্যাপারে সবকিছু বলেছে জান্নাত।তাদের মাঝে যে এখনো কোনো স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক তৈরি হয় নি সেটাও বলেছে দাদীকে।
দাদী বুঝতে পারছে জান্নাতের সংকোচ এখনো দূর হয় নি।কিন্তু এভাবে চললে এদের মধ্যে মিলন টা হবে কি করে?
দাদী তখন জান্নাতকে বলেছে,স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্ক হলো পবিত্র একটা সম্পর্ক।এই সম্পর্ক সবসময় ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখতে হবে।দুইজন দুইজনকে বুঝতে হবে।একে অপরের পাশে থেকে সকল সুখ দুঃখ শেয়ার করতে হবে।কখনোই এই বন্ধনের মাঝে তৃতীয় পক্ষ আসার সুযোগ দেওয়া যাবে না।আর ছেলেরা সবসময় ভালোবাসার কাঙ্গাল হয়।এদের কে যত বেশি ভালোবাসা যায় এরা ততো বেশি তার প্রতি আকৃষ্ট হয়।আর আমার মনে হয় রুয়েল যথেষ্ট কেয়ারিং একজন ছেলে।তোকে অনেক বেশি ভালোবাসবে।সেজন্য তোর উচিত ওর ভালোবাসায় নিজেকে বিলীন করে দেওয়া।কখনোই রুয়েলের কথার অবাধ্য হবি না,ওর সাথে উচ্চস্বরে কথা বলবি না।ওর সাথে সুন্দর করে মিষ্টি ভাষায় কথা বলবি।ওকে এমন ভাবে ভালোবাসবি যাতে করে ওর মনে শুধু তুই রাজত্ব করতে পারিস।তুই ছাড়া কখনোই সে অন্য মেয়ের কথা ভাবতেই পারবে না।সেজন্য সবার প্রথম তোদের দুইজন কে ফ্রি হতে হবে।দুইজন দুইজনার কাছাকাছি থাকতে হবে সবসময়।আর কখনোই রুয়েলের থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিবি না।
জান্নাত দাদীর কথাগুলো আজ খুব মনোযোগ দিয়ে শুনেছে।এবং সে ঠিক করে নিলো আর কিছুতেই রুয়েলের থেকে সে মুখ ফিরে নিবে না।রুয়েল যখন তাকে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধে করতে চাইবে সে নিজেও সঙ্গ দিবে তাকে।কারণ সে চায় না রুয়েল তাকে ভুল বুঝুক।তার থেকে মুখ ফিরে নিক।জান্নাত এখন সারাজীবন এর জন্য রুয়েলের সাথে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে চায়।
রুয়েল হঠাৎ জান্নাতের গলায় তার মুখ ডুবিয়ে নিয়ে বললো,আমার ভালোবাসা কি অনুভব করতে পারছেন জান্নাত?আপনার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আমার বুকের ভিতর টা একদম ছটফট করছে।আমাকে আর কত কষ্ট দিবেন বলেন তো?এই বলে রুয়েল জান্নাতকে কিস করতে লাগলো। সে আর কিছুতেই থামলো না।ভালোবাসার অতল গহবরে তলিয়ে গেলো সে।আজ তাকে আর কোনো শক্তিই বাধা দিতে পারবে না।জান্নাত নিজেও রুয়েলের ভালোবাসায় নিজেকে নিমজ্জিত করলো।সকল সংকোচ আর লাজ ভুলে রুয়েলের ভালোবাসায় সঙ্গ দিলো সে।কারণ সে ভালো করেই বুঝতে পারছে রুয়েলের অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছে।সেজন্য বার বার তাকে কাছে পাওয়ার জন্য এতো কাকুতিমিনতি করছে।
আজ কোনো পূর্নিমার রাত ছিলো না।বা আকাশে কোনো তারার মেলাও ছিলো না। চারপাশ একদম ঘুটঘুটে অন্ধকারে ভরা।তবুও আজকের রাত টা রুয়েল আর জান্নাতের জীবনের শ্রেষ্ঠ রাত ছিলো।মনে হচ্ছিলো প্রকৃতির সমস্ত সুখ তাদের মাঝে এসে গেছে।এই সুখ থেকে কিছুতেই তাদের আর আলাদা করতে পারবে না।জান্নাত প্রতিজ্ঞা করলো সে আর কখনোই রুয়েলকে কষ্ট দেবে না।আর তার ভালোবাসায় রুয়েলকে সঠিক পথে চলার পরামর্শ দেবে।সবসময় তার পাশে থাকবে।অন্যদিকে রুয়েল নিজেও নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করলো,কখনোই জান্নাত কে কষ্ট দেবে না।তাকে পৃথিবীর সমস্ত সুখ দিয়ে সে ভরিয়ে রাখবে।জান্নাতের চোখে সে এক ফোঁটা পানিও ঝড়তে দেবে না।জান্নাতকে বউ হিসেবে পেয়ে রুয়েল নিজেকে ধন্য মনে করে।
জান্নাত শাওয়ার শেষ করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে বসে।তারপর মাথা থেকে তোয়ালে খুলে চুল আঁচড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।জান্নাত আয়নাতে বার বার নিজেকে দেখতে লাগলো।তার লজ্জা যেনো এখনো কমে নি।জান্নাতের চুল দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে।হঠাৎ রুয়েল এলো জান্নাতের কাছে।সে পাশে রাখা তোয়ালে টা নিয়ে নিজেই জান্নাতের চুল গুলো আবার মুছিয়ে দিতে লাগলো।জান্নাত কোনো কথা বললো না।সে আগের মতো চুপটি করে বসে থাকলো।রুয়েল জান্নাতের চুল গুলো মুছিয়ে দিয়ে হঠাৎ জান্নাতের কোলের উপর মাথা রাখলো।তবে কোনো কথা বললো না।জান্নাত তখন রুয়েলের মাথার চুল গুলো বোলাতে লাগলো।
রুয়েল হঠাৎ বললো, জান্নাত!আপনার মনে কোনো অভিমান নেই তো!আপনি কি আমাকে মন থেকে মেনে নিয়েছেন?
–হ্যাঁ।আমি আপনাকে মন থেকেই মেনে নিয়েছি।আর জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আপনারই থাকতে চাই।আর কখনো এই প্রশ্ন টা করবেন না।
রুয়েল সেই কথা শুনে তার মাথা টা উপরে তুললো তারপর জান্নাতের কপালে একটা কিস করে বললো,আমারও এটাই চাওয়া জান্নাত।আমিও যেনো আপনাকে আমার জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত ভালোবাসতে পারি।আমি আপনাকে আমার জীবন সঙ্গীনি হিসেবে পেয়ে খুব খুব খুব বেশি গর্ববোধ করি।এই বলে রুয়েল দাঁড়িয়ে গেলো।আর জান্নাতের হাত ধরে বললো, চলুন জান্নাত।তাহাজ্জুদের নামায টা পড়ে নেই।আজ আল্লাহ কে আমার অনেক কিছু বলার আছে।
–কি বলবেন?
–আপনাকে বলা যাবে না।শুধুমাত্র আল্লাহকেই বলতে চাই।
এই বলে রুয়েল জান্নাতকে সাথে করে নিয়ে আবার ওয়াশ রুমে চলে গেলো।ওয়াশ রুম টা জান্নাতের রুম থেকে একটু দূরে হওয়াই বেশ অসুবিধাই হচ্ছে রুয়েলের। কারণ তাদের বাসায় তো সবার ওয়াশরুম বেড রুমের সাথেই।
জান্নাত মগে করে পানি ঢালছে আর রুয়েল সেই পানি দিয়ে অজু করছে।রুয়েলের অজু করা শেষ হলে সে জান্নাতের জন্য দাঁড়িয়ে থাকলো।তারপর জান্নাত অজু করে নিলো।
দাদী দূর থেকে জান্নাত আর রুয়েলের অজু করা দেখছিলো।কারণ দাদী নিজেও তাহাজ্জুদ নামায পড়ার জন্য অজু করতে এসেছে।পুরো বাড়ি জুড়ে একটাই ওয়াশরুম।সেজন্য দাদী তার রুমে চলে গেলেন।দাদী জান্নাত আর রুয়েলকে এভাবে একসাথে অযু করা দেখে মনে মনে ভীষণ খুশি হলেন।জান্নাত আর রুয়েল যে এতো তাড়াতাড়ি দুইজনকে এতো আপন করে নেবে সত্যি তিনি ভাবতে পারেন নি।দাদীর তখন জান্নাতের দাদুর কথা মনে হলো।ঠিক এমনভাবেই দুইজন এভাবে গভীর রাতে একসাথে নামায পড়তো।তিনি বুঝতে পারলেন রুয়েলের সাথে বিয়ে হয়ে জান্নাতের তারা সর্বনাশ করেন নি।কতজন স্বামী এভাবে আরামের ঘুম বাদ দিয়ে স্ত্রীর সাথে গভীর রাতে নামায আদায় করে!
🖤🖤🖤
চোখের পলকে একটি সপ্তাহ পার হয়ে গেলো।রুয়েল আর জান্নাত এই সাতটি দিন খুব আনন্দে কাটালো।জান্নাত তো তার শশুড় বাড়ির কথা ভুলেই গেলো।দাদী আর জাহানের সাথে সারাদিন নানারকম গল্প আর হাসি ঠাট্টায় মেতে ছিলো এ কয়দিন।আবার অন্যদিকে রুয়েলের মতো এমন একজন হাজব্যান্ড পেয়ে সে দুনিয়াকেই বেহেশত মনে করছে।জান্নাত ভাবলো তার মতো এমন সুখী আর কেউ নয়।দুনিয়ার সমস্ত সুখ যেনো আল্লাহ তাকে দিয়েছে।কিন্তু এই সুখ যে তার জীবনে অস্থায়ী ভাবে এসেছে সে কখনো সেটা কল্পনাও করে নি।রুয়েল নিজেও বেশ আনন্দের মধ্যে আছে।তার কাছেও মনে হচ্ছে সে মনে হয় দুনিয়ার সবচেয়ে সুখী ব্যক্তি।জান্নাতের মতো এমন একজন বউ দিয়েছে আল্লাহ তাকে,আর কিছু চাই না তার।এজন্য রুয়েল সিদ্ধান্ত নিলো আর বিদেশ যাবে না।দেশেই তার ভাই এর সাথে শো রুমে বসবে।দুইজন মিলেমিশে ব্যবসা কে আরো বড় করবে।আল্লাহ তো তাদের অনেক কিছুই দিয়েছে।দুইটা বিল্ডিং করেছে।দুইটা গাড়ি আছে।আর গ্রামে জমিজমাও অনেক করেছে।আর যেভাবেই হোক না খেয়ে থাকতে হবে না।তাছাড়া ব্যাংকে তো তার জমানো টাকা আছেই।সেখান থেকে কিছু টাকা দিয়ে শো রুম টা আরো বড় করতে হবে।এসব পরিকল্পনা রুয়েল একা একাই করলো।কারন সে আর কিছুতেই জান্নাতকে রেখে বিদেশ গিয়ে থাকতে পারবে না।
সাতদিন পর হঠাৎ করে জান্নাতের বাড়িতে রুয়েলের চাচা আর চাচী আসলো।রুয়েল বেশ অবাক হলো যখন শুনলো তাদের বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তার চাচা চাচীকেই পাঠানো হয়েছে।রুয়েল সাথে সাথে তার মাকে ফোন দিলো।আর জিজ্ঞেস করলো আজ তো তার ভাই ভাবী আসার কথা।তাহলে তাদেরকে নিতে তার চাচা চাচী এসেছে কেনো?
রুয়েলের মা তখন বললো,বাবা রুবেল শো রুমে একটু ব্যস্ত আছে।সেজন্য যেতে পারে নি।আর ঊর্মি একা একা কি করে যাবে?আর জানিসই তো আমার শরীর ভালো না।সেজন্য রুবেল তোর চাচা আর চাচীকে পাঠিয়ে দিয়েছে।
ব্যাপার টা স্বাভাবিক ভাবে নিলো না জহির সাহেব।তিনি রুয়েলকে বললেন,এটা ঠিক হলো না বাবা।অন্তত তোমার মা আর ঊর্মি এসে নিয়ে যেতে পারতো।জান্নাতকে আমরা গুরুজন ছাড়া একা একা কি করে পাঠাই?
রুয়েল তার শশুড়ের প্রশ্নের কোনো উত্তর দিলো না।তবে সে বুঝতে পারলো ঊর্মি সেদিনের কথাটা তার ভাইকে বলে দিয়েছে আর সেজন্যই তার রুবেল ভাই রাগ করেছে।
#চলবে,