#আষাঢ়ে_শ্রাবণের_বর্ষণ
#মাইশাতুল_মিহির
[পর্ব-১৫]
স্নিগ্ধ প্রভাত। পরিষ্কার নীল আকাশে শুভ্র মেঘের ভেলা ভেসে বেড়াচ্ছে। পক্ষিরা তার আপন ঢানা মেলে অদূর আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে। দূর দূরান্ত থেকে শীতল হাওয়া মনের আনাচে কানাচে ভালোলাগা কাজ করছে। কিন্তু দীবা ক্ষুব্ধ মনে বসে আছে গাড়িতে। মেজাজ তার আকাশ সমান। রেগে আছে রিমি ও নুরার উপর। কি এমন ক্ষতি হতো দীবাকে তাদের সাথে নিয়ে গেলে? তা না হলে আবরারের সাথে এই গাড়িতে কলেজ গেলে? এভাবে আবরারের সাথে তাকে একা রেখে চলে যাওয়ার ব্যাপারটা কিছুতেই স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারছে না দীবা। অস্বস্তি লাগছে তার। যদিও এই কয়েকদিনে আবরারের সামনে নিজেকে স্বাভাবিক রাখার আপ্রান চেষ্টা করেছে দীবা। আবরারের প্রতি থাকা ভয় কিছুটা দূর হলেও স্বাভাবিক হতে পারেনি। আজ আবরারের সাথে একা গাড়িতে পাশাপাশি বসতে অনেক অস্বস্তি-জড়তা কাজ করছে তার মনে। গাড়ির কাচ নামিয়ে বাহিরের আকাশটা দেখলো। এই স্বচ্ছ নীল আকাশে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো দীবা।
আবরারের মন প্রফুল্লিত। উল্লাসিত মনে ড্রাইভ করছে সে। মুখে তার তৃপ্তিকর হাসি। রিমি ও নুরাকে মনে মনে অসংখ্য বার থ্যাংকস জানাচ্ছে। মেয়ে দুটো বুদ্ধিমান বটে। দুজনের প্রশংসামুখর হয়ে রাস্তা থেকে চোখ ফিরিয়ে দীবার দিকে তাকালো আবরার। অনেকক্ষণ হয়েছে দীবা নিশ্চুপ। এভাবে পুরোটা রাস্তা চুপচাপ থেকে পাড়ি দিতে চায় না আবরার। আবার নিজে কি বলবে তা বুঝতে পারছে। বেশ কিছু সময় ভাবার পর হঠাৎ জিজ্ঞেস করে বসলো, ‘তোমার পুরো নাম কি?’
আবরারের কথা কর্ণগোচর হতেই বিস্ফোরিত হলো দীবা। অবাক চোখে আবরারের দিকে ফিরে তাকালো। চোখ তার কোটর বেরিয়ে আসার উপক্রম। এখনো তার নাম জানে না? দীবার এমন প্রতিক্রিয়া দেখে আবরার হকচকিয়ে গেলো। ইনিয়েবিনিয়ে বলে উঠলো, ‘আসলে তোমার সাথে তো তেমন কথা হয় নি। তাই বেশী কিছু জানি না। এভাবে তাকানোর কিছু হয়নি। নাম কি বলো?’
চোখ ফিরিয়ে নিলো দীবা। ছোট করে উত্তর দিলো, ‘দীবা সানজিদাহ্!’
‘সুন্দর নাম।’ আবরার আর কোনো কথা খোঁজে পাচ্ছে না। তার অপ্রস্তুত হওয়া দেখে দীবা ঠোঁটে ঠোঁট চেপে হাসলো। আবরার সামনে চোখ রেখে বললো, ‘তোমাকে প্রতিদিনের তুলনায় আজ অতিরিক্ত সুন্দর লাগছে।’
প্রত্যত্তরে দীবা নিরব রইলো। লজ্জায় আবরারের থেকে চোখ সরিয়ে বাহিরে তাকালো। মন তার প্রফুল্ল। আবরার কে নিয়ে ভাবছে সে। আবরারের করা প্রশংসা ভালোলাগা কাজ করছে তার মনে। হঠাৎ-ই স্বচ্ছ অম্বর মুহূর্তেই তিমিরাচ্ছন্ন হয়ে গেছে। ঝরো হাওয়ায় চারপাশের গাছের পাতা দুল খাওয়াচ্ছে। মনে হচ্ছে কিয়ৎক্ষণ পর ঝিরিঝিরি বৃষ্টি নামবে আগ্রাবাদে এবং হলোও তাই। ফোটা ফোটা বৃষ্টি আঁচড়ে পরলো ধরনীতে। আবরার গাড়ির কাচ লাগিয়ে দিলো। কিছুসময় পর দীবা খেয়াল করলো তাদের গাড়িটা অন্য রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। অবাক হলো অনেক। আশেপাশে তাকিয়ে অস্থির কন্ঠে বলে উঠলো, ‘কোথায় যাচ্ছেন আপনি?’
আবরার ড্রাইভ করতে করতে সামনে তাকিয়ে উত্তর দিলো, ‘তোমার কলেজে।’
দীবা প্রথমের ন্যায় বিহ্বল কন্ঠে বললো, ‘কিন্তু কলেজের রাস্তা তো এই দিকে না। কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আপনি? আমাকে কলেজে দিয়ে আসুন প্লিজ।’
আবরার রুক্ষ চোখে দীবার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। কণ্ঠস্বর ত্যাছড়া করে বলে উঠলো, ‘এতো অস্থির হওয়ার কি আছে? আমি কি তোমাকে বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাচ্ছি নাকি আশ্চর্য!’
‘হতেও পারে। আপনাকে বিশ্বাস নেই আমার।’ মিনমিনে গলায় বিড়বিড় করে বললো দীবা। সম্পূর্ণ কথাটি আবরারের কর্ণগোচর হলো। সে ভ্রুঁ কুঁচকে তাৎক্ষনাৎ প্রশ্ন ছুড়লো, ‘কি বললে তুমি?’
হকচকিয়ে গেলো দীবা। এতো আস্তে বলার পরেও শুনলো কিভাবে? ইতস্তত করে বললো , ‘আব্ কিছু না।’
‘মিথ্যে বলবে না। আমি শুনেছি তুমি কি বলেছো।’
বিরক্ত হলো দীবা। শুনেছে যখন তাহলে আবার জিজ্ঞেস করার কি আছে? তেঁতে উঠে বললো উঠলো, ‘শুনেছেন বেশ করেছেন। তালিয়া! এবার গাড়ি ঘুড়ান। আমার দেরি হয়ে যাবে।’
অল্পস্বল্প বৃষ্টির ফোটা এখন ভারি বর্ষণের রূপ নিয়েছে। অম্বরে জমেছে কালো মেঘ। প্রবল শীতল বাতাস চারপাশে। রাস্তাঘাট ভিজে একাকার। রাস্তার পাশে থাকা কৃষ্ণচূড়া ফুল গুলো ভিজে টুইটুম্বুর। পিচ ঢালা রাস্তা জনমানবশূন্য প্রায়। রিকশাচালক মাথায় পলিথিন মুড়িয়ে যাত্রীর অপেক্ষায়। গাড়ির গতি আবরার আগের তুলনায় দ্বিগুণ করলো। তুমুল বেগের কারণে দীবার শরির পিছিয়ে সিটে হেলান পরলো আপনা আপনি। এতো দ্রুত গাড়ি চলার কারণে ভয়ে শুকনো ঢুক গিললো। আবরার কে ভয়ার্ত গলায় কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো, ‘একটু আস্তে চালান প্লিজ।’
আবরার ঠোঁটে মৃদু হাসি রেখে নির্বিকার ভাবে গাড়ি চালাচ্ছে। এই মুহূর্তে গাড়ি চালানোটাই তার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। অন্যদিকে ভয়ে দীবার প্রাণপাখি উড়াল দেবার মতো অবস্থা প্রায়। আবরার দীবার অবস্থা বুঝতে পেরে মৃদু কন্ঠে আশ্বাস দিয়ে বললো, ‘ভয় পাচ্ছো নাকি? আমি কিন্তু খুব ভালো ড্রাইভিং জানি। ভয়ের কিছু নেই। জাস্ট এঞ্জয়।’
দীবা কপাল কুঁচকে বিরক্তি প্রকাশ করে বললো, ‘এঞ্জয় এক সাইডে রাখেন। আপাতত একটু আস্তে চালান। আমার ভয় করছে।’ শেষের বাক্যটা দীবা অনুনয় স্বরে বললো। আবরার ঘাড় ঘুরিয়ে দীবাকে দেখে গাড়ির গতি একটু কমিয়ে আনলো। ধীরগতিতে গাড়ি রাস্তার এক পাশে থামলো। এবার যেন দীবা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। কিন্তু গাড়ি থামিয়ে দেওয়ার কারণে প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকালো আবরারের দিকে। আবরার এগিয়ে দীবার একপাশে হাত রেখে তার দিকে ঝুকে আসলো। আড়ষ্ট হলো দীবা। চোখে মুখে তার স্পষ্ট ভয়ের ছাপ ভেসে উঠলো। আবরার একবার দীবার ভয়ার্ত মুখখানি ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখলো। অতঃপর এক হাতে মুখের উপর পরে থাকা ছোট ছোট চুল গুলো কানের পিছে গুঁজে নরম গলায় বললো, ‘ভয় পাচ্ছো কেন তুমি?’
উত্তরে দীবা নিশ্চুপ রইলো। হার্টবিট তার দ্রুত গতিতে ছুটছে। আবরারের চোখে চোখ রেখে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে। আবরারের প্রতি এক প্রকার অদ্ভুত টান অনুভব করছে তার মন। চোখ সরাতে ইচ্ছে করছে না। একদম না।
‘এইটুকু স্প্রিডে তোমার এই অবস্থা? লামিয়া তো হাই স্প্রিডে চালালে প্রচুর এঞ্জয় করতো।’
লামিয়া নামটা শুনে ভ্রুঁ কুঁচকালো দীবা। বিস্মিত হলো অনেক। মেয়েটা কে জানার জন্য জিজ্ঞেস করলো, ‘লামিয়া কে?’
আবরার জড়তাহীন গলায় উত্তর দিলো, ‘একটা মেয়ে।’
মুহূর্তেই দীবার মুখ ক্রোধে লাল বর্ণ ধারন করলো। দাঁতে দাঁত, ঠোঁটে ঠোঁট লেগে এলো তার। তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে কণ্ঠস্বর ঝাঁঝালো আকারে বলে উঠলো, ‘লামিয়া যে মেয়েদের নাম সেটা আমি জানি।’
দীবার চেহারা ও রাগান্বিত কন্ঠ শুনে আবরার মনে মনে হাসলো। দীবাকে আরো রাগাতে ইচ্ছে হলো তার। তাই দীবার কাছাকাছি থেকেই শান্ত কন্ঠে বললো, ‘হুম! লামিয়ার সাথে লং ড্রাইভে গেলে প্রচুর মজা লাগে। তোমার মতো এতো ভিতু না। সাহসী খুব।’
অপমানে দীবার দেহ রিনরিনিয়ে উঠলো। ক্রোধান্বিত হয়ে আবরারের বক্ষস্থলের নিজের নরম দুই হাতে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিল। চোখমুখ শক্ত করে ঘাড় ঘুরিয়ে বাহিরে তাকিয়ে ঝাঁঝালো গলায় বলে উঠলো, ‘ভালো তো ওরে নিয়েই যান। আমাকে সাথে নিয়ে আসতে কে বলছে? আমি তো নাচতে নাচতে আসি নি। কলেজ যাবো আমি। গাড়ি ঘুড়ান নয়তো নেমে যাচ্ছি।’
আবরার তার সিটে হেলান দিয়ে দীবাকে অবলোকন করছে। মাত্রারিক্ত ক্রোধের কারণে দীবা একটু জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলছে। নাকটা লাল হয়ে আছে। আবরারের হাসি পেলো খুব। লামিয়ার কথা বলার পরেই দীবা রেগে গেলো। রেগে গেলেও দীবাকে এতো কিউট লাগে। আচ্ছা দীবা কি তাহলে জেলাস? দীবা তাকে পছন্দ করে? তাকে নিয়ে ভাবে? কিছুটা অবাক হলেও খুশী হলো আবরার। ফুরফুরে হলো তার মন। কিন্তু প্রতিক্রিয়াহীন ভাবে বসে দীবার দিকে তাকিয়ে রইলো। আবরার কে নিরব বসে থাকতে দেখে দীবা কিড়মিড় করে বলে উঠলো, ‘লামিয়াকে কি ভাবনার সাগরে ডুবে গেছেন নাকি?’
তাৎক্ষনাৎ ভ্রুঁ জোড়া কুঁচকে আসলো আবরারের। দীবাকে রাগতে দেখতে সুন্দর লাগছে। তার উপর আবার রাগার কারনটা দেখে আরো ভালো লাগছে। আবরার ভ্রুঁ উঁচিয়ে ভাবুক কন্ঠে বললো, ‘সাগরের গভীরে তলিয়ে গেছি। এখন উঠবো কিভাবে?’
দিবার রাগ আরো দ্বিগুণ বেড়ে গেলো। এযেনো আগুনে ঘি ঢালার মতো অবস্থা। ঘাড় ঘুরিয়ে বাহিরের দিকে মুখ করে চোখ বন্ধ করলো সে। জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলে নিজেকে যথারীতি শান্ত করার চেষ্টা করতে লাগলো। কয়েকবার জোরে শ্বাস নেওয়ার পর আবরারের দিকে তাকালো। তারপর শান্ত গলায় বললো, ‘আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে। আপনি গাড়ি ঘুরাবেন নাকি আমি নেমে যাবো?’
দীবার শান্ত কন্ঠ শুনে আবরার কিছু বললো না। সম্মতি জানিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলো। দীবা এক ধ্যানে বাহিরে তাকিয়ে রইলো। অম্বর তিমিরাচ্ছন্ন হয়ে আছে। রাস্তার পাশে বিশাল বৃক্ষের সবুজ পাতা গুলো বৃষ্টির ফোটার সাথে তাল মিলিয়ে দুলে যাচ্ছে। সদ্য বেড়ে উঠা কচি পাতা গুলো পরিবেশের সজীবতা চারপাশ ছড়িয়ে দিয়েছে। নিজ গন্তব্যের দিকে ঢানা ঝাপটাচ্ছে আকাশে উড়ন্ত পক্ষী গুলো। ভিজে রাস্তায় হর্ণ বাজিয়ে বিভিন্ন গাড়ি তার যাত্রী নিয়ে চলছে। কিছু মানুষ মাথায় ছাতা ধরে রাস্তার পাশে ফুটপাত ধরে হাঁটছে। আগ্রাবাদ কলেজের সামনে ছাত্রছাত্রীদের আনাগোনায় কোলাহলময়। কলেজের সামনে গাড়ি থামতেই দীবার ধ্যান ভাঙ্গলো। সিট বেল খুলে আবরারের দিকে না তাকিয়ে, কোনো প্রকার কথা না বলে নিরবে গাড়ি থেকে নেমে গেলো। গাড়ির দরজাটা শব্দ করে লাগিয়ে গটগট পায়ে কলেজের ভিতরে চলে গেলো সে। দীবার চলে যাবার দিকে তাকিয়ে থেকে মৃদু আওয়াজে হেসে ফেললো আবরার। দীবার রেগে যাবার কারন টা নিয়ে সে প্রসন্ন মনে বসে আছে। দীবাও যে তার প্রতি দুর্বল সেটা উপলব্ধি করতে পারছে সে। লামিয়া সামিয়া যেই হোক, ভাজ্ঞিস তখন হুদাই নামটা মাথায় এসেছে। দীবার জেলাসি দেখে আবরার আবারো মুচকি হেসে গাড়ি স্টার্ট দিল।
দীবা দ্রুত গতিতে পা চালিয়ে তিন তলার উদ্দেশ্যে ছুটছে। হাতে থাকা যান্ত্রিক বস্তুটিকে একবার প্রখর করে সময় দেখে নিলো। ক্লাস শুরু হতে আর মাত্র ৩ মিনিট বাকি। ‘উফ শিট!’ বলে ঠোঁটে জিভ বুলিয়ে এগোতে লাগলো। দূর থেকেই দেখল বাংলা ডিপার্টমেন্টের স্যার তাদের ক্লাসের দিকে যাচ্ছে। দীবা এবার দ্রুত দৌড়ে ক্লাসের দরজার সামনে চলে আসলো। বাংলা স্যারও দরজার কাছে আসলো। তিনি দীবার দিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকালেন। দীবা অপরাধী ন্যায় বলল, ‘সরি স্যার, একটু লেইট হয়েছে।’
তিনি গম্ভীর কন্ঠে বললেন, ‘ঠিক আছে যাও। নেক্সট টাইম লেইট করবে না।’
‘আচ্ছা!’ বলে দীবা ক্লাসে গিয়ে রিমি নুরার পাশে না বসে পিছনের ব্যাঞ্চের মধ্যে গিয়ে বসে পরলো। দীবার রাগান্বিত চেহারা, দূরে গিয়ে বসায় রিমি ও নুরার বুঝতে বাকি নেই। একে অপরের দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢুকলো গিললো দুজন। আজ দীবাকে একা ফেলে আসার কারণে তাদের দুইজনের কপালে শনি দশা আছে!
বাংলা ক্লাস শেষ হলো কিছুক্ষণ আগে। আকুলপাকুল হয়ে আছে রিমি ও নুরা। কারণ এখনো দীবা তাদের কাছে আসে নি। এমন কি একবারো তাদের দিকে তাকায় নি। দুইজনই পিছনে ফিরে দীবার দিকে তাকিয়ে আছে। নুরা বললো, ‘আমাদের উপর রেগে আছে? নাকি আরব ভাইয়ার উপর?’
রিমি কাধ নাড়িয়ে বললো, ‘কি জানি। আয় গিয়ে জিজ্ঞেস করি।’
‘পাগল নাকি তুই? স্বেচ্ছায় সাপের গর্তের কাছে গিয়ে হাডুডু খেলতে মন চাইছে? আশ্চর্য!’
‘না গেলে তো বুঝবোও না। একা একা বসে থাকলে আরো মন খারাপ করবে। রাগ দেখালে দেখাক। এখন দীবার কাছে আয়!’
নুরা সম্মতি দিলো। তারপর দুইজন উঠে দীবার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। কিন্তু দীবা ভুলেও তাদের দিকে তাকালো না। বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে রাখলো। বিরক্ত হলো নুরা। দীবার সামনে খোলা বইটা ঠাস করে বন্ধ করে দিয়ে বলে উঠলো, ‘নাটক বন্ধ কর তো। আর ভাল্লাগছে না। কি হয়েছে? মন খারাপ কেন?’
দীবা নুরার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো, ‘তোদের কেন বলবো? তোরা কে? তোরা আমার কেউ না। যা এখান থেকে।’
দীবার পাশে বসার মতো জায়গা নেই। তবুও রিমি দীবার পাশ ঘেঁষে চেপে বসলো। দীবাকে জড়িয়ে ধরে আহ্লাদী কন্ঠে বললো, ‘ওহহো বেবি! প্লিজ আমাদের উপর রাগ করো না। তোরা একা টাইম স্পেন্ড করার জন্য আমরা চলে এসেছি। এই জন্যই তো তোরা একা সময় কাটাতে পারলি। কত উপকার করলাম বল তো?’
দীবা ব্যঙ্গ্য করে বললো, ‘হ্যাঁ বহুত উপকার করছেন। নাহলে তো লামিয়ার কথা জানতেই পারতাম না।’
দীবার কথা শুনে নুরা ও রিমি অবাক হলো। একইসঙ্গে প্রশ্ন করে উঠলো, ‘লামিয়া কে?’
চলমান..
নোট : আজ তাড়াতাড়ি পর্ব দিলাম। খুব দ্রুত টাইপ করেছি। বানান ভুল থাকতে পারে।