#ইঁচড়েপাকা_এবং_সে❤️
#Ruhi_Jahan_Maya
পর্বঃ– ৩৫
বাইরে থেকে শোঁ শোঁ বাতাস আসছে। জানালা গুলো মৃদু বাড়ি খাচ্ছে। রুম টার মধ্য এক পাশে আলো আছে অন্য পাশে আলো নেই। ওরিন বিছানার এক পাশে বসে কান্না করছে। কান্না করতে করতে বেচারি গলা গুকিয়ে গেছে। পাশেই মাথায় হাত দিয়ে ফরিদ নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করছে।
ফরিদ ওরিনের কাছে এসে বসলো। ফরিদ দু হাত দিয়ে আলতো করে ওরিনে গাল ধরে বললো…
” আমি তোমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য আনি নি। আমি চাই না তুমি অন্য কারো হও। তোমাকে আমি অনেক আগে থেকেই ভালোবাসি ওরিন। ”
ওরিন ফরিদের হাত দুটো সরিয়ে বললো…”এই আপনার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। একটা এতিম মেয়ে কে তুলে নিয়ে এসেছেন। বাড়িতে বাবা হয়তো চিন্তায় পাগল হয়ে যাচ্ছে। ”
” তুমি মানতে না, বাবার চাপে হয়তো বিয়ে করে ফেলতে। ”
” কি আজে বাজে বকছেন। বিয়ে কেনো করতে যাবো আমি? আর আপনি আমার কাছে আসবেন না। দূরে সরুন, বলছি। আপনি একটা নির্দয়। ”
ফরিদ রাগে ধমক দিয়ে বললো…
” ওরিন..। কি করেছি আমি? তোমায় ভালোবাসি এটাই আমার অপরাধ। তোমার বিয়ে ঠিক হয়েছে, কি করতাম আমি? তোমাকে কিডন্যাপ করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিলো না আমার। ”
” মিথ্যা বলছেন আপনি। এতো মিথ্যা কি ভাবে বলেন হ্যাঁ? ”
ফরিদ চুপ করে, সরে এলো। রাগের বসে, হয়তো ওরিন কে সে চড় ও দিতে পারে। ওরিন কষ্ট পেলে, নিজের হাত কেটে ফেলতে ইচ্ছা করবে ফরিদের। ফরিদ রুম থেকে বের হয়ে একটা সিগারেট ধরালো। সিগারেটের ধোঁয়া আকাশের সাথে মিলিয়ে যাচ্ছে। ফরিদ পায়চারি করতে করতে, নিজের রুমে ঢুকে গেলো।
ভাইয়া বাসায় নেই, নাছিম ভাইয়া, বাসায় থকলে কিছুনা কিছু একটা সলিউশন বের করতে পারতো। তাড়াহুড়োর বসে, ওরিন কে এনে ভুল করেছে ফরিদ। ওরিনের বিয়ে তো ঠিক হয়েছে, ওরিনের বাবা কি ফরিদ কে মেনে নিতো? হয়তো নিতো না। ওরিন নিজ ইচ্ছায়ও আসতো না। আসলে এক তরফা ভালোবাসা গুলো হয়ই বেদনার।
———————————-
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে নাছিম। কালো শার্টে তাকে বেশ ফুটিয়েছে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে, শার্টের বোতাম আটকাচ্ছে। ঠিক তখনি আয়শা নক করলো। বাইরে থেকে আয়শা বললো..
” স্যার আসবো?”
নাছিম চুল আঁচড়াতে, ভেতরে আসার পার্মিশন দিলো। আয়শ দরজা খুলে, ভেতরে প্রবেশ করলো। নাছিম আয়নাতে আয়শাকে দেখলো, কালো ফর্মাল গাউনে তাকে বেশ সুন্দর লাগছে, গলায় চিকন সাদা পাথরের নেকলেস আর কানের ছোট ঝুমকো নড়ছে। নাছিম আয়শার দিকে তাকালো।
আয়শা ইতস্তত বোধ করছে, আয়শা কানের পিঠ চুলকাচ্ছে এবং অন্য দিকে তাকিয়ে আছে, নার্ভাসনেস কাটানোর জন্য। আয়শা হালকা মেক-আপ করেছে ঠোঁটে লাল খয়েরী লিপ্টিকে তাকে বেশ মানিয়েছে, চোখে টানা করে আইলাইনার আয়শাকে সিন্ড্রেলা মতো কম সুন্দর লাগছে। আয়শা যে নাছিমের মনের এক মাত্র রমণী। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রমণীকে অপলক দৃষ্টিতে দেখছে নাছিম।
আয়শা হালকা কাঁশি দিলো। নাছিম নিজের কাজে মন দিলো। চুল গুলো জেল দিয়ে সেট করে নিলো। নাছিম ব্লেজার পড়বে, পাশেই ব্লেজার টাঙ্গানো, নাছিম ব্লেজার টা হাতে নিলো। আয়শা এগিয়ে, গিয়ে বললো…
” আমি হেল্প করি।”
নাছিম “হুম। ” বললো। আয়শা ব্লেজার হাতে নিয়ে, নাছিম কে পেছন থেকে পড়িয়ে দিলো। নাছিম কে বেশ সুদর্শন লাগছে। আয়শা আড় দৃষ্টিতে তাকালো। নাছিম কে মডেলদের মতো লাগছে। নাছিম পার্ফিউম লাগালো। ক্ষানিকটা দূর থেকে আয়শা নাকে ঘ্রাণ লাগলো।
নাছিম ব্লেজারটা ঠিক করতে করতে বললো…
” চলুন যাওয়া যাক। ”
আয়শা হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লো। নাছিম রিসিপশনের রুমের চাবি দিয়ে, গাড়ির কাছে গেলো। নাছিম গাড়ি ড্রাইভ করছে, নাছিম কে এতো সুন্দর লাগছে কেনো? আয়শার নিজের চোখ সরাতে পারছে না। নিজেই নিজের চোখ কে বেহায়া বলে গালি দিচ্ছে।
নাছিম সব বুঝতে পারছে, আয়শার তার পানে, তাকাচ্ছে কিছুক্ষণ পর পর। নাছিম আয়শার দিকে, তাকালো না। রিসোর্টা খুব সুন্দর আলোক রশ্নি দিয়ে, সজানো হয়েছে। বাইর থেকে বেশ সুন্দর লাগছে। নাছিম আয়শা এক সাথে গাড়ি থেকে নামলো। রাশিয়ান মেয়েটা নাছিম দেখা মাত্রই কোলা কুলি করলো। আয়শা ভেংচি কাটলো, সুন্দর ছেলে দেখলে আর তড়সয় না।
এক জন বিদেশি লোক এসে আয়শার সাথে হ্যান্ডশেক করলো। হঠাৎ করে আশার হাতের পিঠে চুমু দিয়ে, বললো…
” ইউ আর লুকিং সো বিউটিফুল সেইনওরিটা ”
আয়শা হাত টা সরিয়ে নিলো, ভদ্রতার খাতিরে বললো..” থাংক ইউ মিস্টার।”
লোকটা হেসে তাদের ভেতরে স্বাগতম জানালো। নাছিম সবার সাথে কথা বলছে, আয়শা একটা টেবিলের চেয়ারে, গিয়ে বসলো। নাছিম কিছুক্ষণ পর পর আয়শার দিকে আড় দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। এক জন ওয়েটার আয়শার টেবিলে জুস দিয়ে, গেলো। আয়শা খেলো না । বিদেশি পার্টিতে জুসের সাথে এলকোহল মিশিয়ে দিতে পারে এদের বিশ্বাস নেই।
নাছিম আয়শার কাছে, এলো। জুসের গ্লাস টা হাতে দিলো। কিন্তু আয়শা মাথা নাড়িয়ে না করলো। নাছিম হালকা হেসে বললো… ” এখানে কিছু মেশানো নেই। সেইম টা আমিও খাচ্ছি। ”
আয়শা জুস টা একটু খেলো, স্বাভাবিক জুসের মতোই লাগছে। পরিবেশ টা বেশ শান্ত, সবাই সবার সাথে কথা বলছে। এক দল ছেলে মেয়ে গান গাইছে। হঠাৎ স্টেজের একটা মেয়ে বললো…
” এখন রোমান্টিক গানে, কাপিল ডান্স হবে। ”
নাছিমের সাথে দাঁড়ানো, রাশিয়ান মেয়ে টা নাছিমের হাত ধরলো নাচ করার জন্য। আয়শার কেনো জানি না, এক দম খারাপ লাগছে। নাচ করার জন্য এতো মানুষ কে থাকতে, নাছিম কে কেনো? হতছেরি! বলে আয়শা ভেংচি কাটলো।
হঠাৎ আয়শার সামনে, দরজায় দাঁড়ানো বিদেশি লোকটা এসে দাঁড়ালো। কোমল হাসি দিয়ে বললো…
” হেই সেইনওরিটা..”
আয়শা ভদ্রতার খাতিরে ” হায় ” বললো। লোকটা হাত বাড়িয়ে, দিলো অায়শার বড্ড মেজাজ খারাপ হচ্ছে। এসেছে পরের থেকে এই লোকটা পিছুই ছাড়ছে না। আগে হাতে চুমু দিলো, এখন আবার হাত বাড়িয়েছে। আয়শা হাত বাড়াচ্ছে, না। লোকটা বললো…
” লেটস হেভ আ ডান্স। ”
আয়শা নাছিমের দিকে, তাকালো নাছিম ওই মেয়েটার সাথে নাচছে, মেয়েটা নাছিমের কাধে হাত রেখেছে। তাহলে, আয়শা পারবে না কেনো? আয়শা লোকটার হাতে হাত রাখলো৷ গানের তালে তালে সবাই নাচ করছে। এক সময় সবার পার্টনার বদল হলো। আয়শা ঘুরতে ঘুরতে নাছিমের কাছে গেলো। নাছিম আয়শার কোমর পেঁচিয়ে ধরলো। আয়শা নাছিমের কাধে হাতে রাখলো..
l love you when it call me senorita.
I wish i pretend didn’t ya
But every tuch is uh la la…its true la la.. I shoul be running ooo you keep me coming for ya…
Land in my yammi the air was hot for
Summer rain.. Sweat dropping off me
Even i know la la la
It felt like oo la la la… Yeah la la
নাছিম আয়শার দিকে তাকিয়ে আছে, আয়শা নাছিমের দিকে তাকাতে পারছে না। গান শেষ হতেই আয়শা সরে গেলো। তার খুব লজ্জা লাগছে, নাছিম তার এতো কাছে, নাছিমের নিঃশ্বাস আয়শার গালে পড়ছিলো।
আয়শার ফোনটায় আলো জ্বলে উঠলো। আয়শা একটু সাইডে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করলো। আফজাল সাহেব চিতকার দিয়ে, বললেন…
” আয়শা ওরিনে খুঁজে পাচ্ছি না। সকাল সারে নয় টায় বের হয়েছে এখনো বাসায় ফেরেনি। ”
আয়শার ভেতর টা ধক করে, উঠলো। এ কোন বিপদের সংবাদ আয়শা তারাহুড়ো করে, বললো.. ” তনুর বাড়িতে যায় নি তো?তুমি তনুকে ফোন দিয়েছো বাবা?”
” হ্যাঁ। তনু বললো ওরিন নাকি কলেজে যায় নি। কি করবো এখন আমি। আমার মেয়েটা কখনো, না বলে কোথায় যায় না। ”
আয়শা মাথা চেপে দাঁড়িয়ে রইলো, সিলেট থেকে কি ভাবে তার বোন কে খুঁজবে, বাবা এমনি তেই হার্টের রুগি। নাছিম আয়শার পেছনে দাঁড়িয়ে বললো…
” এনি প্রব্লেম? ”
” আমার ছোট বোনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বাসায় বাবা একা।”
” কোথায় গিয়েছে আপনার ছোট বোন? কোন খবর পেয়েছেন? ”
আয়শা ঢুকেরে কেঁদে বললো..
” আমি জানি না। আমাকে ঢাকায় যেতে হবে আজই।”
।
।
চলবে
#ইঁচড়েপাকা_এবং_সে❤️
#Ruhi_Jahan_Maya
পর্বঃ-৩৬
চারিদিকে অন্ধকার, কাছের কিছু অংশ আলোতে দেখা যাচ্ছে। নিস্তব্ধ চারিদিকের থেকে ঝি ঝি পোকার শব্দ আসছে। গাড়ির আলোতে হাইওয়ে বেশ ক্ষানিকটা দেখা যাচ্ছে। নাছিম দ্রুত গাড়ি চালাবার চেষ্টা করছে। পাশে আয়শা ঘুমিয়ে, আছে। মেয়েটা অনেক ক্ষন যাবত কান্না করছিলো বোনের জন্য, তাই নাছিম বাধ্য হয়েই গাড়ি নিয়ে বের হয়েছে ঢাকার উদ্দেশ্য।
নাছিমের নিজেও তো একটা বোন আছে, বোন বিপদে পড়লে, ভেতরে কত দুশ্চিন্তা হয় তা নাছিমের ভালো ভাবেই জানা আছে। ভালো থাকুন পৃথিবীর সব বোনেরা।
আয়শার গালে বেয়ে কান্নার পানি শুকিয়ে ছাপ হয়ে গেছে।
নাছিম ড্রাইভ করতে করতে ভাবছে, ওরিনের কথা। কারো সাথে আয়শাদের দুশমনি থাকতে পারে, নাকি মেয়ে টাকে কেউ পছন্দ করে, তাই তুলে নিয়ে গেছে। মেয়েটা যেন নিরাপদে থাকে এটাই আগে কাম্য। মেয়ে টাকে খুঁজে পাওয়া গেলে নাছিম নিশ্চিন্ত হবে। মেয়েটাকে যে তুলে নিয়ে গেছে, তার শাস্তি দরকার। এক জন অসুস্থ বাবার ঘরের আমানত নিয়ে সে ঠিক করে নি।
নাছিমের গরম লাগছে, তাই এসি টা অন করলো। এসি অন করার কিছুক্ষন পরই আয়শা কাঁশি দিচ্ছে। এসির বাতাস সবার জন্য ঠিক হলেও ডাস্টার্ড এলার্জির মানুষদের শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। নাছিম এসি টা বন্ধ করে দিলো। আয়শার হয় তো ঠান্ডা লাগছে, তাই নাছিম বাম হাত দিয়ে ব্লেজার আয়শা গাঁয়ে ঢেকে দিয়ে আবার ড্রাইভিংয়ে মন দিলো।
———————————-
ডাইনিং টেবিলে, দাদী এবং ফরিদ রাতের খাবার খাচ্ছে। কাজের সহকারী মহিলা খাবার বেরে দিচ্ছে। শেহতাজ বেগম ফরিদের দিকে আড় দৃষ্টিতে তাকালেন। ফরিদ খাচ্ছে না, খাবারের প্লেটে রুটি হাতে নিয়ে বসে আছে।
” তোর মন কোনদিকে? ”
হঠাৎ করে, দাদী ফরিদের উদ্দেশ্য বললো। ফরিদ দাদীকে বললো…
” কিছু না দাদী খেতে ইচ্ছা করছে না। ”
” একটা রুটি অন্তত খা। নাহলে, ঘুমাতে গেলে ক্ষুধা লাগবে। ”
ক্ষুধা শব্দটা শুনতেই ফরিদের মনে পরলো, সারাদিন ওরিন ও তো কিছু খায় নি। কান্না করে মেয়েটা সারাদিন কাটিয়েছে। ফরিদ আর খেতে পারলো না। হাত ধুয়ে সরে গেলো। কিছুক্ষণ পর দাদীও ডিনার শেষে নিজের রুমে চলে গেলেন।
রান্না ঘর ফাঁকা হতেই ফরিদ ফ্রিজ থেকে ভাত এবং মাংসের তরকারি ওভেনে গরম করে, বাসার পেছনে, গেলো।
ওরিন ঘুমিয়ে, আছে। ঘুমালে মেয়ে,টাকে বড্ড নিষ্পাপ লাগে। দু দিন আগেও ওরিন তাকে সম্মান করতো অথচ আজ ওরিনে মনে কতো ক্ষোভ ফরিদের জন্য। ফরিদ ওরিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। ওরিন চোখ খুলে, ফরিদ কে দেখে ঘাবড়ে গেলো…
” আপনি আবার এসেছেন? ”
” হ্যাঁ। সারা দিন কিছু খাওনি তাই খাবার নিয়ে এসেছি। ”
” কিডন্যাপ করে এনে, আবার দরদ দেখাচ্ছেন? ”
” তোমার বাবার কাছে আমি এক টাকাও মুক্তিপন চাই নি সো এটা কিডন্যাপ না। তোমার বাবা বিয়ে দিয়ে, দিতো তাই তুলে আনতে বাধ্য হয়েছি? ”
” কি আবল তাবল বোকছেন। কার বিয়ে? মিথ্যা কথা বলার জায়গা পান না তাই না। ”
” আমার কথা মিথ্যাই মনে হবে তোমার। খেয়ে নাও। ”
ওরিনের বড্ড ক্ষুধা লেগেছে, এখন ত্যারামি করে না খেলে সারা রাত না খেয়েই কাটাতে হবে তাকে। এদিকে ক্ষুধায় ওরিনের পেটে তবলা বাজছে। ওরিন প্লেট হাতে নিয়ে বললো…
” পানি কোথায়? হাত ধুবো।”
” পানি আনতে তো মনে, ছিলো না। এমনি তেই খেয়ে নাও।”
ওরিন নাক মুখ কুচকিয়ে ফরিদের দিকে তাকালো। ফরিদ ভেবাচেকা খেলো,ওরিনের চাহুনি দেখে।
” আপনি কি মানুষ? সারা দিন হাত ধুই নি। হাতে কমপক্ষে তিরিশ হাজার জীবানু আছে। এই জীবানু খেলে আমার পাতলা পায়…”
” থাক বুঝেছি বুঝেছি। আমার হাত ধোয়া, আমি খাইয়ে দিচ্ছি। ”
” আপনার হাতে আমি কেনো খাবো?আমি কি বাচ্চা,আমি শুধু বাবা হাতে আর আপার হাতে খাই। ”
ওরিনের আয়শার কথা খুব মনে পড়ছে। আপা কি জানে সে কিডন্যাপ হয়েছে। তাকে যে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আপাও মনে হয়, আমার মতো না খেয়ে আছে।
” কি হলো?হা করো। ”
ওরিন কে, ফরিদ খাইয়ে দিলো। ওরিন খাবার চিবুতে চিবুতে ফরিদে দিকে ভেংচি কাটলো। হুহ কিডন্যাপ করে এনে দরদ দেখাচ্ছে। এতোই যেহেতু দরদ আমাকে তুলে আনার কি দরকার ছিলো। আর ওরিনের বিয়ে, হলেই বা এই ব্যাটার কি? ”
” দ্রুত খাবার টা শেষ করো।”
” দ্রুত তো খাচ্ছি। এর চেয়ে বেশি দ্রুত চিবুতে পারবো না। লাইফে ফার্স্ট টাইম দেখলাম, তুলে এনে মুরগীর মাংস দিয়ে ভাত খাওয়াচ্ছে। কিন্তু রান্না টা ভালো হয়নি। আমার আপাই অনেক ভালো মুরগির মাংস রান্না করে। ”
” তাহলে তো একদিন তোমার বাসায় যেতে, হবে।”
” আপনি আমাকে তুলে, এনেছেন জানলে, আমার বাবা আর আপা আপনার পা ভেংগে দিবে। ”
” আচ্ছা। দেখা যাক। ”
” কি দেখবেন আপনি?”
” কিছু না। খাওয়া হয়েছে এখন ঘুমাও।”
বলেই যাওয়ার জন্য উঠে দাড়ালো ফরিদ। ওরিন মোচরাতে মোচরাতে বললো…
” এই কথায় চলে, যাচ্ছেন। একা একা ভয় লাগে আমার৷”
” পাশের রুমেই আছি। ঘুমাও। ভায় পেও না। ভুত তোমায় খেতে আসবে না। ”
” যদি আসে, তখন?”
” আমার কাছে, পাঠিয়ে দিও।”
বলেই জোড়ে নিঃশ্বাস ফেললো ফরিদ । এক পা টেবিলে রেখে চেয়ারে ভর দিয়ে, শুয়ে পরলো। পাশের রুমে, ওরিন পালানোর রাস্তা খুঁজেছে। কোন উপায় না পেয়ে ওরিন নিরাশ হয়ে শুয়ে রইলো।
———————————-
কিছুক্ষণের মধ্যেই ভোরের আলো ফুটবে। নাছিম ইতিমধ্যে ঢাকার কাছাকাছি চলে এসেছে। দু’ঘন্টার মধ্যেই আয়শা বাড়ি পৌঁছে যেতে পারবে। সারা রাতের নির্ঘুম থাকার কারনে নাছিমের মুখে ক্লান্তি ছাপ দেখা যাচ্ছে। নাছিম দ্রুত গাড়ি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
ভোরের আলো, এসে আয়শার চোখে মুখে লাগছে। আয়শা ভ্রু কুচকিয়ে ধীরে ধীরে চোখ মেললো। সারা রাত না খেয়ে থাকার কারনে আয়শা পেট কিছুটা মুচড়াচ্ছে। আয়শা নাছিমের দিকে তাকালো, নাছিম ড্রাইভ করছে। আয়শা কিছুটা অবাক হলো, একমাত্র আয়শাকে সময় মতো বাড়ি পৌঁছে দেয়ার জন্য, লোকটা সারা রাত এক নাগাড়ে গাড়ি চালিয়েই যাচ্ছে।
নাছিমের জন্য আয়শার মনে মধ্য সম্মান বেড়ে গেলো। অদ্ভুত হলেও আয়শা নানা ভাবেই নাছিমের কাছে কৃতজ্ঞ। আয়শাকে প্রতি পদক্ষেপে নাছিম এগিয়ে, নিয়ে যাচ্ছে। আয়শার অজান্তেই নাছিম আয়শার মনে বিন্দু বিন্দু করে নিজের জায়গা করে নিয়েছে। তাতে আয়শার কোন আপত্তি থাকলেও কিছু করার নেই তার।
” আমরা ঢাকায় চলে এসেছি। আর কয়েক মিনিটের মধ্যেই আপনার বাসায় পৌঁছে যাবেন। ”
আয়শা বাইরে তাকিয়ে, দেখলো সত্যি তাদের বাড়ির পাশের রাস্তা। আয়শা ছল ছল চোখে নাছিমের দিকে তাকিয়ে, রইলো। নাছিম গাড়ি থামিয়ে আয়শার দিকে তাকিয়ে, অবাক হলো। আয়শা এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে।
” এভাবে তাকিয়ে, আছেন কেনো? ”
” জানি নাহ। আপনাকে কি বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো সেটাই ভেবে পাচ্ছি না। ”
সিট বেল খুলতে খুলতে নাছিম বললো…
” আমাকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে না। আগে বাসায় চলুন।”
আয়শা দ্রুত বিল্ডিংয়ের ভেতর ঢুকলো। ছয় তলায় আসতেই আয়শা, দেখলো বাবা টেবিলে বসে আছে। পাশেই কাজে সহকারী খালা নাস্তা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। আয়শার বাবা ভারী গলায় বললেন…
” যায় মেয়ে এক দিন ধরে, নিখোঁজ তার গলা দিয়ে খাবার কিভাবে নামবে?”
আয়শা নাছিম বাসায় ঢুকতেই, ছল ছল চোখে আফজাল সাহেব তাকিয়ে রইলেন। আয়শা চোখ মুছতে মুছতে বললো.. ” আমরা ওরিন কে খুঁজে নিবো বাবা।”
“””””””””””
সকালে ফরিদের ঘুম ভাংতেই পাশের রুমের দরজা খোলা দেখে, ফরিদের মাথায় আকাশ ভেংগে পরলো। ওরিন, ফাঁকি মেরে দরজা দিয়ে পালিয়ে গেছে। ফরিদ মাথায় হাত দিয়ে বসে রইলো। মেয়েটা কথায় গেলো?
রুম থেকে বের হতেই ফরিদ আরো অবাক হলো, সামনে দাদী দাঁড়িয়ে আছে। এতো সকালে এখানে, কি করছে, দাদী। ফরিদের উদ্দেশ্য দাদী বললো…
”
চলবে
#ইঁচড়েপাকা_এবং_সে❤️
#Ruhi_Jahan_Maya
পর্বঃ-৩৭
” দাদী তুমি এখনে?”
ভেবাচেকা খেয়ে জিজ্ঞেস করলো ফরিদ। শেহেতাজ বেগম সরু চোখে তাকিয়ে, বললেন…
” তুই এখানে কি করছিস?
” আমি তো এমনিতেই এসেছি।”
দাদী সরে গিয়ে বললো..” এই মেয়েটা কে ফরিদ?”
ফরিদ ওরিনের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে তাকালো। কথায় আছে না, যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যে হয়। দাদী ধমকের সুরে বললো…
” কি হলো বলছিস না কেনো?”
” দাদী ওর নাম ওরিন। ”
” ও এখানে কি করছে? তোর লজ্জা নেই একটা মেয়ে কে তুলে এনেছিস?”
” দাদী প্লিজ আমার কথা টা শোনো, আমি ওরিন কে ভালোবাসি। ওর বাবা ওর বাবা ওর বিয়ে ঠিক করেছে তাই তুলে আনতে বাধ্য হয়েছি। ”
” দাদী আমার বিয়ে ঠিক হয়, নি। আমি তো এখনো বাচ্চা মানুষ। ”
দাদী ওরিনের দিকে তাকালো, আবার ফরিদের দিকে তাকিয়ে, বললো…
” এই কথাটা তুই আমাকে বলতে পারতি। কিন্তু মেয়েটাকে তুলে আনার কি আছে? আমি ওর বাবা মায়ের সাথে কথা বলতাম। ”
” সরি দাদী।”
” সরি বলেই, সব বিষয়ে মাফ পাওয়া যায় না। কাল রাতে যখন তুই খাবার নিয়ে, যাচ্ছিলি তখন বুঝতে পেরেছি কোন না কোন ঘাপলা আছে। মেয়েটার বাবা মায়ের ওপর কত চাপ যাচ্ছে। জানিস তুই?”
ফরিদ মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইলো। দাদী আর কিছু বললো না। দাদী চলে গেলো, ওরিনও দাদীর পিছু পিছু হাটা শুরু করলো। দাদী ওরিনের দিকে আড় দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো…
” তোমাদের বাসা কোথায়?”
” শাহাবাগ চার রাস্তার মোর, বাম দিকে হালকা হলুদ রংয়ের বিল্ডিং টা আমাদের। ”
দাদী গাড়িতে উঠলো, ইশারা করে ওরিন কেও বসতে বললো। ওরিন দাদীর পাশে বসলো। গত কাল রাতে যখন ফরিদ রুম থেকে বেরিয়ে গেছিলো, হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে, দাদীর কিঞ্চিৎ সন্দেহ থেকে ফরিদের পিছু নেয়।
এপার্টমেন্টের পিছনে, ছোট দুটো রুম ওয়ালা ঘর আছে। দাদী সেখানে যেতেই দেখতে পেলো একটা মেয়ে কে ফরিদ ঘরে তালাবদ্ধ করে রেখে দিয়েছে। নিজের নাতী এমন কুকর্ম করবে তা তিনি মনের এক কোনেও আনতে পারেন নি। তারপর যখন ফরিদ নিজ হাতে ওরিন কে খাইয়ে দিলো, তখন তার ধারনা টাই বদলে গেলো। ওরিন কে খাইয়ে দিয়ে যখন আবার দরজা আটকে দিয়েছে , ফরিদ অন্য রুমে চেয়ারে বসে ঘুমিয়ে পড়েছিলো। ঠিক তখনি দরজা খুলে ওরিন কে বের করে নেয় শেহতাজ বেগম।
ওরিনের মুখে সত্য ঘটনা জানার পর রাগে উঠছিলো শেহতাজ বেগমের। ফরিদ এমন ছেলে নয় নিশ্চয়ই কেও মিথ্যা কথা বলে ছিলো, ওরিনের বিয়ে ঠিক হয়েছে। তাই ছেলেটা বাধ্য হয়ে কাজ টা করেছে। হঠাৎ গাড়ি থামতেই শেহতাজ বেগমে ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে এলেন। ড্রাইভার পেছন ঘুরে বললো…
” ম্যাডাম চলে এসেছি। ”
শেহতাজ বেগম, গাড়ি থেকে নামলেন। যেহেতু ওরিন দের বিল্ডিংয়ে লিফট নেই, শেহতাজ বেগমের শিড়ি বেয়ে উঠতে সমস্যা হলো। ওরিন দাদীর অনুমতি নেয়ার জন্য বললো…
” দাদী আপনার উঠতে সমস্যা হচ্ছে, আমি আপনার হাত টা ধরি? ”
শেহতাজ বেগম কিছু বললেন না, কোন এক মহা পুরুষ বলেছিলেন চুপ থাকা সম্মতির লক্ষন। তাই ওরিন দাদীর হাত টা ধরলো। তারপর ওরিনের সাহায্য ছয় তালায় উঠতে সক্ষম হলেন৷
ওরিন দের বাসার দরজা খোলা, দরজা বরাবর সোফায় নাছিম বসে, আছে। দাদী কে দেখা মাত্রই নাছিমের চোখ চড়ক হয়ে উঠলো। এই সকাল বেলা দাদী এ বাসায় কি করছে। নাছিম দ্রুত দাদীর কাছে যেতেই, শেহতাজ বেগম নাছিমের দিকে ভুত দেখার মতো তাকিয়ে রইলো।
” নাছিম তুই এখানে কি করছিস?”
” দাদী এটা মিস আয়শার বাসা। ওনার বোন কে কেউ ধরে নিয়ে, গেছে। কিছুক্ষণ আগেই এসেছি। ”
নাছিম ওরিন কে দেখে, আবারো অবাক হলো। আয়শার বোন দাদীর সাথে, কি করছে। দাদী কি কিডন্যাপ করেছে? নাহ নাহ দাদী এমন কেন করতে যাবে। সব তাল গোল পাকিয়ে যাচ্ছে। ভেতরে ঢুকতেই আয়শা ওরিন কে জিরিয়ে ধরলো, দু বোন কান্না করছে। আয়শা ওরিনে কাধ চেপে ধরে, বললো…
” তুই গত কাল কোথায় ছিলি। বাবা তোর চিন্তায় কান্না করতে করতে অসুস্থ হয়ে গেছে। ”
শেহতাজ বেগম বললেন..
” সব প্রশ্নের উত্তর আমি দেবো। ”
” তোমাদের বাবা কোথায়, উনি এখন কেমন আছেন? ”
” বাবা ওনার রুমে রেস্ট নিচ্ছেন। ”
” আমি কি ওনার সাথে কথা বলতে পারি?”
আয়শা বললো..” জ্বি দাদী অবশ্যই। ”
আয়শা এবং নাছিমের দাদী শেহতাজ বেগম আয়শার বাবার রুমের দিকে গেলো পিছু পিছু নাছিম ও গেলো। ভেতরে প্রবেশ করার আগে, আয়শা দাদীর হাত ধরে বললো…
” আমি জানি না কি হয়েছে, কি করেছে ওরিন কিন্তু, বাবার সামনে প্লিজ অমন কথা বলবেনা প্লিজ যাতে বাবা কষ্ট পায়। ”
দাদী হালকা হেসে আয়শায় গালে হাত দিয়ে, বললো…
” তোমার মতো মেয়ে, আছে বলেই তোমার বাবা ভাগ্যবান আমার মনে হয়। ”
আয়শা দাদী আর নাছিম কে নিয়ে ঘরে ঢুকলো, আয়শা দুটো চেয়ার এনে, নাছিম এবং দাদী কে বসতে দিলো। আয়শা বাবা চোখ খুলে তাকালেন। আয়শা প্রফুল্লের স্বরে বললো…
” বাবা ওরিন এসেছে। উনি নাছিম স্যারে দাদী উনিই ওরিন কে নিয়ে এসেছেন। ”
নাছিমের দাদী ভদ্রতার খাতিরে বললো..” এখন কেমন আছেন আপনি?”
আয়শার বাবা মর্মাহত গলায় বললেন। ” যার মেয়ে চব্বিশ ঘণ্টা ধরে নিঁখোজ হয়, সে কেমন থাকতে পারে? ”
” ওরিন ঠিক ঠাক আছে। আসলে, লজ্জার কথা, কিভাবে বলি, আমার ছোট নাতী ওরিন কে পছন্দ করে, কারো কাছ থেকে শুনেছে ওরিনের বিয়ে ঠিক হয়েছে, তাড়া হুড়ো বসতো সত্যি টা যাচাই না করে, ও ওরিন কে কিডন্যাপ করে। আপনার মেয়ে আমার কাছে সুরক্ষিত ছিলো, আমার নাতি ওকে ছিটে ফোটা কষ্ট দেয় নি। অসভ্য আচারন করেনি। আমি আপনার কাছে মাফ চাইছি। ”
” আপনি আমার বয়সে বড় এভাবে হাত জোর করবেন না। মেয়ে হলো, বাবার আমানত এই আমানত যদি কেউ ক্ষতি করে তাহলে আমি, সত্যি রাগ হতাম। তবে আপনি আমার মেয়েকে নিজ দ্বায়িত্ব রেখেছেন। আমার মেয়ে সহীহ ছালামত বাসায় এসেছে এটাই শুকরিয়া। ”
” আপনার কথা শুনে খুশি হলাম। আয়শার কাছ, আপনার কথা শুনেছি। যদি কিছু মনে না করেন একটা প্রস্তাব দিতে চাই, একটা ছেলে যেহেতু একটা মেয়ে কে পছন্দ করে, ভালোবাসে। পরিবারের উচিত তাদের এক করে, দেয়া। আমি চাই ফরিদ আর ওরিনের বিয়ে হোক। ”
আয়শার বাবা, চুপ করে রইলেন। বড় লোকদের কাছে, সম্পর্কে ভিত্তি মূলবান হয়, না। আর পাঁচটা সম্পর্কের মতো তারা বিয়ের সম্পর্ক মূল্যায়ন করে না। এজন্যই হয়তো সমাজে ডিভোর্স এতো বেশি হয়।
চব্বিশ বছর আগেই তা বুঝতে পেরেছিলেন। যখন আয়শার মা পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে আফজাল সাহেব কে বিয়ে করেন। আয়শার নানা তাদের সম্পর্কটা মেনে নেয় নি। আফজাল সাহেব তখন ছোট চাকুরী করতেন বলে। আসলে, টাকার নিচে রক্তের সম্পর্ক গুলো মাঝে ধামা, চাপা পরে যায়। আজ আয়শার বাবারও সব আছে, কিন্তু শেষ বয়সে আয়শার নানা তার মেয়েকে পেলেন না।
” কিছু বলছেন না, যে?”
আয়শা বাবা বেখেয়ালি হয়ে, বললেন…
” তাড়াহুড়ো করে ডিসিশন নিতে চাচ্ছি না। দুটো জীবনের ব্যাপার এখানে। ”
” আপনার সাথে, আমি সহমত। সময় নিন, কিন্তু আশা করি, আপনি দুজন কে নিরাষ করবেন না। আজ আসছি আফজাল সাহেব। ”
বলেই উনি উঠে রুম থেকে বেরিয়ে, গেলেন। আয়শা সব সময় দাদীকে হাসি খুশিই দেখেছে, কিন্তু আজ দাদীর সিনসিয়ারনেস দেখতে পেলো। দাদীর সিদ্ধান্তটাকি বাবা মেনে নিবে, বিষয় টা আয়শাকে ভাবাচ্ছে।
আয়শা দাদী কে এগিয়ে, দেয়ার জন্য দাদীর পিছু পিছু গেলো। দাদী আয়শা কে দেখে মিষ্টি হাসি দিয়ে, বললেন…
” তোমার বাবা কে একটু বুঝিও আয়শা। আমি তো হাওয়ায় হাওয়ায় বুড়ো হইনি। আমার একটু হলেও ওনার চেয়ে বেশি জ্ঞান আছে। ”
” আমি বুঝতে পারছি দাদী আমি অবশ্যই বাবা কে বুঝাবো। বাবার বিয়ে নিয়ে একটা অতীত আছে। বাবা এখনো সেই ট্রামা কাটাতে পারেনি। ”
দাদী নিঃশ্বাস ফেলে, বললেন…” দেখা যাক কি হয়। ইনশাআল্লাহ ভালোই হবে। ”
দাদী গাড়িতে উঠে গেলেন। নাছিম, আর আয়শা দাঁড়িয়ে আছে, আয়শার দাদীর যাবার পানে তাকিয়ে আছে। নাছিম আয়শার উদ্দেশ্য বললো…
” আমি যে দিন, প্রথম আপনার বাসায় এসেছিলাম, তখন আপনার ছোট বোন আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলো আমার ছোট ভাই আছে, কি না। ”
” আপনার আর ফরিদের চেহারায় বেশ মিল আছে। এই জন্যই হয়তো জিজ্ঞেস করেছে। ”
” হুম। ঠিক বলেছেন। এখন আমি আসি। ”
” চলে যাচ্ছেন? ”
নাছিম, আয়শার দিকে তাকিয়ে হাসলো। মেয়েটা বড় অদ্ভুত, কাছে আসতে দেয় না। দূরের যেতেও দেয় না।
।
।
চলবে।