ইচ্ছেঘুড়ি পর্ব-০৯

0
19

#ইচ্ছেঘুড়ি (৯)
#নুসরাত_জাহান_মিষ্টি

আমি বসকে ফোন দিয়ে আজকের দিনের জন্য ছুটি নিয়ে নিলাম। শান্তর কথা অনুযায়ী মনে হলো একদিন নিয়মের বাহিরে গিয়ে চলি। সেই কথা অনুযায়ী শান্ত এবং আমি বেরিয়ে পড়লাম ঘুরতে। শান্ত এবং আমি একই রিকশায় উঠলাম। রিকশা চলতে শুরু করলো। গন্তব্য শান্তই বলে দিয়েছিলো। একই রিকশায় পাশাপাশি বসে আমার কিছুটা অস্বস্তি অনুভব হচ্ছিলো। সেটা বুঝতে পেরে শান্ত বললো,“রাস্তার যানবাহন, রিকশার গতি, সেই গতির সঙ্গে তাল মেলানো আপনার খোপা করা চুলের মাঝ থেকে মুখের কাছে বেরিয়ে আসা ছোট চুলগুলোর বাতাসের সঙ্গে দুলে চলা উপভোগ করুন। দেখবেন ভালো লাগবে।”
শান্তর কথা শুনে আমি ম্লান হেসে তার দিকে তাকালাম। শান্তও আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি এক হাসি। অতঃপর সারাদিন ঘুরে বেড়ালাম। প্রথমে রিকশায় গন্তব্যহীন পথে বেশ কিছুক্ষণ ছুটে চললাম, অতঃপর একটি পার্কে গিয়ে দোলনায় উঠলাম। বেশ ভালোই লাগছিলো। সেখান থেকে বেরিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ফুচকা খেলাম। সেই সময়ে অবশ্য শান্ত ফুচকা না খেয়ে সিগারেট খাচ্ছিলো। এটা দেখে আমি কিছুটা বিরক্তি হয়ে বললাম,“আমার সামনে না খেলেও তো পারতেন।”
আমার এই কথা শুনে শান্ত ভ্রু কুচকে বলে,“আমার বাবা মহান সাজার কোন ইচ্ছা নাই। আপনার থেকে লুকিয়ে সিগারেট টেনে লাভ কি? আপনার কাছে ভালো সাজা হবে। তো? স্যরি এসব নাটক আমার দ্বারা হবে না। তাছাড়া আপনি যেখানে জানেনই আমি সিগারেট খাই সেখানে আপনাকে না দেখিয়ে খাবো কেন?”

“হয়তো এটা ভদ্রতার পর্যায়ে পরে।”
আমার মুখে এই কথা শুনে শান্ত হাসে। অতঃপর বলে,“এত ভদ্র হয়ে লাভ নাই। আমি বরং বাজে ছেলে হয়েই থাকি। তবে আপনি একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এই বাজে ছেলেটার সঙ্গে আরও ঘুরবেন নাকি বাড়ি গিয়ে বাবা-মায়ের বকা শুনবেন? এই ব্যাপারে একবার ভেবে দেখতে পারেন।”

“ঘোরার জন্যই তো আসলাম। তবে চলে যাবো কেন?”
আমি বুঝতে না পেরে প্রশ্ন করায় শান্ত হাসি দিয়ে বলে,“আপনি কিন্তু মাঝে মাঝে বোকা হয়ে যান। যাই হোক ভাবুন। বাজে ছেলে কি-না। বাজে ছেলেরা কিন্তু খুব একটা সুবিধার হয় না।”
শান্তর মুখে এই কথা শুনে আমি ম্লান হাসলাম। তবে জবাব দিলাম না। অতঃপর আমরা একটি চিড়িয়াখানায় গেলাম। এটা আমার ইচ্ছা ছিলো। সেখানে এসে নানা রকম পশু দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। আমি একটি বানর দেখে তার কাছে গেলাম। কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলাম দেখে শান্ত বলে,“কাছে যান। হাত দিয়ে ধরে দেখুন।”

“না। যদি আঁচড়ে দেয়।”
আমি কিছুটা ভয় পাচ্ছিলাম। এটা দেখে শান্ত আমার দিকে অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে বলে,“ভীতু তো ভালোই।”

“একদম না। আমার মনে হচ্ছে ক্ষতি হতে পারে। এরকম তো হতেই পারে। তো ক্ষতি আছে জেনে কাছে না যাওয়া বুঝি ভীতুর লক্ষন।”

“বাহ্ যুক্তি ভালো দিলেন। তবে মাঝে মাঝে নিজেকে খুশি করতে একটু সাহস করে এগিয়ে আসতে হয়। সামনে বিপদ হতে পারে ভেবে পিছয়ে যাওয়ার চেয়ে এগিয়ে এসে দেখা উচিত। বিপদ থাকলে তো যা হওয়ার তাই হবে আর বিপদ না থাকলে মনটা খুশি হবে।”
আমি শান্তর কথা পুরোপুরি বুঝতে না পেরে জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে তাকালাম। এটা দেখে শান্ত বলে,“যা ঘটার তা এমনি ঘটবে। বিপদ হওয়ার হলে অবশ্যই হবে। তাই বিপদ হতে পারে চিন্তা করে জীবনের ইচ্ছেগুলোকে দমিয়ে রাখা উচিত নয়। এতে আসলে লাভ নাই। বিশ্বাস করুণ সত্যি লাভ নেই।”
এটা শুনে আমি মাথা নাড়ালো। কথাটা মন্দ বলেনি শান্ত। আমি সাহস করে এগিয়ে গেলাম। বানরটাকে ধরতে সেও আমাকে ধরলো। আমি ভয় পেয়ে পিছিয়ে যেতে শান্ত আমাকে ধরে ফেললো। অতঃপর বললো,“এত ভয় পেলে চলবে।” এটা বলে নিজে বানরটিকে গিয়ে ধরলো। বানরটি তার কোলে বসে পড়লো। কিছুটা সময় পর তার কাধে উঠলো। শান্ত বলে,“এটা কোন ক্ষতি করবে না। আমি আগেই জেনে নিয়েছি। তাছাড়া টুকটাক এক্টিভিটিও তাকে শেখানো হয়েছে। বিশ্বাস নাহলে হাত বাড়িয়ে দাও।”

শান্তর কথা মতো আমি বানরটির দিকে হাত বাড়িয়ে তাকে ‘হাই’ জানালাম। সেও তাই করলো। বেশ ভালোই লাগলো। অতঃপর শান্তর সঙ্গে আমিও বানরটির সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ মজা করলাম। এরপর অবশ্য বাকি পশুদেরও ঘুরে ঘুরে দেখেছি। তবে কাছে যাইনি। কেননা এখানের সব পশু বানরটির মতো শান্ত নয়। তবে প্রথমবার বাঘ দেখে আমি অনেক বেশি খুশি হয়ে গিয়েছিলাম। এর আগে সামনা সামনি বাঘ দেখা হয়নি কখনো। এটা বুঝতে পেরে শান্ত বলে,“প্রথম বাঘ দেখার উৎসাহে আবার কাছে চলে যাবেন না। এখানে যদি বিপদ হয় কথাটির কিন্তু কোন মূল্য নেই। এখানে বিপদ হবেই হবে। নিশ্চিত বিপদ জেনে আবার যাওয়া উচিত নয়।”
শান্ত আমার সঙ্গে মজা নিচ্ছে বুঝতে পেরে আমি রাগ করার অভিনয় করে তাকালাম। সেটা দেখে শান্ত হেসে দেয়। তার হাসি দেখে আমিও হেসে দেই।
__
পুরো দিনটি এভাবেই মজায় কাটে। দুপুরের খাবারও একটি রেস্টুরেন্টে করি আমরা। আমি প্রথমবার রেস্টুরেন্টে খাবার খাচ্ছি শুনে শান্ত অবাক হয়ে যায়। বিষ্ময় নিয়ে বলে,“প্রথমবার!”

“হ্যাঁ। আসলে দুপুরের খাবার রোজ তো অফিসের ক্যান্ট্রিনেই খেয়ে নেই। আর বাবা-মা কখনো আমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হতো না। সেই সাথে বেতনের সব টাকাই তো মা নিয়ে যায়। শুধু যাতায়াতের টাকা হিসাব করে দিয়ে দেয়।”
এটা শুনে শান্ত কিছুটা বিরক্তি নিয়ে জিজ্ঞেস করে,“জীবনে কখনো বেতনের টাকার ভুলবাল হিসাব দিয়েও নিজের কাছে বাড়তি টাকা রাখেননি?”
আমি নাসূচক মাথা নাড়ালে শান্ত কিছুটা রেগেই বলে,“আসলেন আমার বিশ্ব পরিবার দরদী মহান বাংলা সিনেমার শাবানা। আরে ধরেন আপনি বের হলেন রাস্তায় তো চোখের সামনে একটি দূর্ঘটনা হলো তখন আপনি ছাড়া সেখানে কেউ ছিলো না। তো তাকে হাসপাতালে যে নিয়ে যাবেন তার জন্য তো মানুষ কিছু টাকা ব্যাগে রাখে।”
একটু থেমে আবার বলে,“আমি বোঝাতে চাচ্ছি এমারজেন্সি অনেক সময় তো প্রয়োজন পড়ে যায়। তখন কী করতেন?”

”আমার কাছে টাকা ছিলো না। তাই আমি আপনার মতো মানবসেবাও করতাম না। তবে আপনি যে বিপদের কথা বললেন তেমন বিপদে পড়লে আমি আশেপাশের মানুষের সাহায্য নিতাম। আশা করি আপনার মতো কারো সাথে ঠিক দেখা হয়ে যেতো।”
আমার কথা শুনে শান্ত বিরক্তি নিয়ে আমার দিকে তাকায়। আমি কিছুটা সংকোচ নিয়ে বলি,“আজ একদিনে আপনার অনেক খরচ করিয়ে ফেলেছি তাই না?”

”হ্যাঁ প্রচুর। তবে আমি অহেতুক খরচ করছি না। এটা ধার। কারণ আমি জানি আপনার কাছে টাকা নেই। খুব সামান্য টাকা রয়েছে। তো এটা ধার হিসাবে তোলা থাক।”
শান্ত এই কথাটি বলতে আমি মাথাটা নিচু করে ফেললাম। শান্ত এটা দেখে বলে,“মাথানত করার মতো কিছু করেননি। তাই মাথানত না করে উঁচু করে থাকুন। আর আমি আপনার পিছনে যা খরচ করেছি সেটাকে ধার হিসাবে কেন ধরেছি জানেন?”

“হ্যাঁ। কারণ এই টাকায় আপনি অনেকদিন মনমতো সিগারেট খেতে পারতেন। সেটা এখন হবে না। তো আমি দিয়ে দিলে সেটা করতে পারবেন।”
আমার এই কথা শুনে শান্ত শব্দ করে হেসে দেয়। পুরো অট্টহাসিতে ফেটে বলা যাকে বলে। তেমনভাবে হাসতে থাকে। আমি তার হাসির কারণ খুঁজে পেলাম না। তখন শান্ত বলে,“আমি আজ আপনার সাথে ঘুরতে যাবো এটা বাসা থেকে ঠিক করে আসছিলাম। তাই মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আসছি। এটা চাইলে আমি আপনার থেকে ফেরত নাই নিতে পারতাম। কিন্তু আমি এমনটা করবো না। আমার ধার শোধ দেওয়ার জন্য হলেও যদি আপনি আপনার বেতন থেকে কয়েক হাজার টাকা রেখে বাকি টাকা মায়ের হাতে তুলে দিতে পারেন তবেই আমার আপনাকে নিয়ে ঘোরাটা স্বার্থক হবে।”
শান্তর পুরো কথার ভাবার্থ বুঝতে পেরে আমি থমকে গেলাম। আমার জন্য এতদিনে কেউ এতটা তো দূর এক চিমটি পরিমান ভাবেনি। সেখানে এই ছেলেটা আমার পুরো জীবনটা বদলে দেওয়ার মতো চিন্তা-ভাবনা করছে। কিন্তু কেন? আমি এই প্রশ্নটি করতে শান্ত খুব স্বাভাবিক গলায় বললো,“খুব শীঘ্রই শহর ছেড়ে চলে যাবো। যাওয়ার আগে একটি ভালো কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই এমনটা করছি।”

”কোথায় যাবেন?”
শান্ত আমার প্রশ্নটি শুনে ম্লান হেসে বলে,“যাবার আগের দিন বলবো। আপাতত এটা না বলি।”
আমি মাথা নাড়ালাম। যেহেতু শান্ত বলতে চাচ্ছে না সেহেতু না শুনি। তবে কৌতূহল দমিয়ে রাখতে না পেরে বললাম,“তা এই ভালো কাজ করার সিদ্ধান্ত কখন নিলেন?”

“যখন আমার ইচ্ছেঘুড়ি সুতো কেটে আপনার হাতে গিয়ে পড়েছে তখন।”
শান্তর এই কথায় কিছুটা হতভম্ব হলাম। নিজের একটি বাচ্চামোর জন্য এই ছেলেটা এমন করছে। ভাবতেই অবাক লাগছে। এই দুনিয়ায় যে কত অদ্ভুত মানুষ আছে সেটা শান্তকে না দেখলে বুঝতামই না। এসব কথা নিয়ে আর ভাবলাম না। দুজনে গল্প করতে করতে খাওয়া শেষ করে বেরিয়ে পড়লাম নতুন গন্তব্যে। পুরো বিকেল নানা জায়গায় ঘুরে দুজনে বাড়ির উদ্দেশ্য পাড়ি দিলাম। মাঝ রাস্তায় একটি ছেলেকে গোলাপ ফুল বিক্রি করতে দেখে আমি তাকিয়ে ছিলাম। এটা দেখে শান্ত বলে,“নিবেন?”

”না।”
আমার এই কথা শুনে শান্ত হেসে বলে,“নিশ্চয় মা বলেছে এসব কিনে টাকা অপচয় ছাড়া কিছুই হয় না?”
আমি জবাব দিলাম না। সত্যি তো এটাই। জীবনে এই এক কারণে কোন শখ পূরণ হয়নি। এটা বুঝতে পেরে শান্ত দুটি গোলাপ কিনে আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে,“একটু বেশি বাবা, মায়ের আনুগত্য পালণ করছেন মনে হয় না? এই যুগে এসে একজন আটাশ বছরের মেয়ে যদি এমনভাবে বাবা, মায়ের কথায় সব করে তবে কেমন শোনায় না? এটা বাংলা সিনেমা নয়। আপনার জীবন। তাই জীবনটাকে নিজের মতো করে সাজান। অন্যকারো মতো নয়। আপনার এসব কর্মকান্ড সত্যি বলতে আমার খুব বিরক্তিকর লাগে। বিশ্বাস করুণ আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের কাছেও একই লাগবে।”

“জীবনের স্বার্থকতা কী শুধু স্বার্থপরতায়?”
আমার এই প্রশ্নের জবাবে শান্ত খুব সুন্দর একটি জবাব দেয়। শান্ত বলে,“না। শুধুমাত্র স্বার্থপরের মতো নিজের কথা ভাবা উচিত। তাই বলে নিজের কথা না ভেবে সারাজীবন ত্যাগ করাটা নিছকই বোকামি ছাড়া কিছুই নয়। কারণ আপনি যার জন্য ত্যাগ করছেন দিনশেষে তার কাছেই আপনি শূন্য। শুধুমাত্র মূল্যহীন এক বস্তু।”
শান্ত একটু থেমে আবার বলে,“স্বার্থপরতা যে শুধু খারাপটা বয়ে বেড়ায় তেমন নয়। স্বার্থপরতায় ভালোও থাকে। কিছু মানুষ হয়তো নিজেদের স্বার্থে ভুল কাজ করে বেড়ায়। আমি কিন্তু আপনাকে একবারও তেমন স্বার্থপর হতে বলিনি। আমি শুধু বলেছি আপনি একটু নিজের কথা ভাবুন।”
আমি শান্তর দিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছি। তার কথাগুলো মুগ্ধ হওয়ার মতোই। সেই সময়ে শান্ত রিকশা থামিয়ে একটি দোকানের সামনে নামে। আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে,“রং চা না দুধ চা?”
আমি এখন চা খাবো না জানাতে শান্ত তার খাওয়া অব্দি অপেক্ষা করতে বললো। কারণ এই মূহুর্তে সে চা খাবে। আমি মাথা নাড়িয়ে ঠিক আছে জানালাম। সেই মূহুর্তে আকাশ অন্ধকার হয়ে আসে। বর্ষাকাল চলছে। কিছুক্ষণের মধ্যে বৃষ্টি হবে আকাশ সেটাই জানান দিচ্ছে। হলোও তাই। দোকানদার চা বানাতে বানাতে বৃষ্টি চলে এলো। এটা দেখে শান্ত আমার হাত ধরে বলে,“চলুন বৃষ্টিতে ভিজি। সেই মজা হবে।”

“না। ঠান্ডা লেগে যাবে।”
আমার এই কথা শুনে শান্ত বিরক্তি নিয়ে বলে,“কাকি মা টাইপ কথাবার্তা ছাড়ুন তো। এজন্যই না আপনার কোন বন্ধু নেই। আরে ভাই এবার তো এসব ছাড়ুন। মনের বয়স চল্লিশ থেকে নামিয়ে ষোলো করুন। চলুন।”
শান্ত আমার হাত ধরে টানে। আমি যেতে চাচ্ছিলাম না। এটা দেখে শান্ত বলে,“একটু ঠান্ডা লাগলে কিছু হবে না।”
আমি আর না করতে পারলাম না। শান্ত আমাকে ধরে নিয়ে বৃষ্টির মাঝে গেল। বৃষ্টির পানি হাতে জমিয়ে শান্ত আমার মুখের দিকে ছুড়ে মারলো। আমি হতভম্ব হয়ে তাকে দেখছিলাম। বয়স তার সাতাশ। অথচ বৃষ্টির মাঝে দাঁড়িয়ে যেভাবে খেলা করছে মনে হচ্ছে সে একটা ছোট বাচ্চা। আমারও এমনটা করতে ইচ্ছা হলো। কিন্তু দোকানের সবাই দেখছে। তাই সংকোচ হচ্ছে এটা বুঝতে পেরে শান্ত আমাকে বলে,“আপনি এই পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষ হলেও লোকে আপনার খুঁত বের করবেই। লোকে মন্দ বলে বলুক না।”
এটা বলে শান্ত আমার হাত ধরে ঘুরিয়ে নিলো। আমিও সমস্ত ভাবনা মাথা থেকে ঝেরে ফেলে বৃষ্টির পানি নিয়ে খেলতে শুরু করলাম। আকাশের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলাম। বৃষ্টির ফোটা চোখের, কপালে, গালে অর্থাৎ পুরো মুখশ্রী জুড়ে পড়তেই অন্যরকম অনুভূতি হলো। পরক্ষণে আমিও হাতে পানি জমিয়ে শান্তর দিকে ছুড়ে মারলাম। এভাবে একই নিয়মে চলা আমার জীবনের একটি দিন অন্যরকম ভাবে কাটলো। যদিও জানি না এসব কথা সবার কানে গেলে কেমন প্রভাব পড়বে জীবনে। তবে আমি সেসব এখন ভাবছি না। এই মূহুর্তে শুধু সময়টাকে উপভোগ করছি। হোক না একটি দিন শুধুমাত্র আমার খুশির। আমার আনন্দের।


চলবে,