#এই_অবেলায়_তুমি
#পর্ব_২০
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
“কে আপনি?? বার বার ফোন দিচ্ছেন কেনো? সমস্যা কি!!??”
নীল কোনো কথা না বলে চোখ বন্ধ করে ফোনটা কানে চেপে ধরে আছে।
~ ফাইজলামি করেন এতো রাতে ফোন দিয়ে। কথা যখন বলবেন না তাহলে ফোন দেন কেন বার বার!! আরেক বার ফোন দিলে মোবাইলের ভিতর দিয়ে গিয়ে মেরে ভর্তা বানিয়ে আসবো। আজাইরা পাবলিক।
নীল এবারের কথাটা শুনে মুচকি হাসলো। তারপর খট করে ফোনটা কেটে দিয়ে মোবাইলের দিকে তাকালো। জ্বলজ্বল করে বেসে উঠেছে “হরিন” নামটি।মেয়েটার বোকা বোকা কথাগুলো মনে করে আবারো হেঁসে উঠলো নীল।তারপর সবার দিকে তাকালো।
আদিবা আর আবিরকে অনেক আগেই রুমে পাঠিয়ে দিয়েছে। সত হলেও বাসর তো আর ছাঁদে সবার সামনে সারতে পারবে না। রাত ২টায় ওদের রুমে পাঠিয়েছে।
নূর কথা বলতে বলতে রেলিঙে মাথা ঠেকিয়ে ঘুমিয়ে গেছে। নীল গেলো নূরকে ডাকতে। কিন্তু তার আগেই আদি এসে বললো, ” নীল ওকে ডাকতে হবে না। ঘুমিয়ে পড়েছে আমি নিয়ে রুমে দিয়ে আসবো।”
আদির কথা শুনে মাহির চোখ মুখ আসতে আসতে লাল হয়ে আসছে। কত বড় সাহস আবারো ওর ছোট্ট বোনটার কাছে আসার কথা কোন মুখে বলছে এই ভাই নামের নরপিশাচ!!….
আদি নূরের হাত ধরবে। মাহি কিছু বলার আগেই রুদ্র বলে উঠলো, ” আদি তোর বউ ডাকছে নিচে। তুই তোর বউয়ের কাছে যা। আমি নূরকে দিয়ে আসছি। বলেই নূরকে কোলে নিয়ে নিলো।
আদি শান্ত চোখে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। নূর রুদ্রের শার্ট খামচে ধরেছে। আদি চোখ সরিয়ে নিলো। চোখ খুব জ্বালা করছে। আচ্ছা শুধু কি চোখ জ্বালা করছে?? ওহু বুক টাও খুব জ্বালা করছে!!
রুদ্র নূরকে নিয়ে নিচে চলে যেতেই আদি আর নীল নেমে গেলো।
মাহি চলে যাওয়ার জন্য ওঠে দাঁড়াতেই ফায়াজ এসে দাঁড়ালো মাহির সামনে।
সামনে কয়েকটা ফুল গাছ আছে। ফুল ও ফুটে আছে।সব গুলোই গোলাপ।নূরের গোলাপ খুব পছন্দ। তাই এই গাছগুলো ও নিজে যত্ন করে।
“কাল থেকে এত গুলো কল দিলাম। একটাও কল ধরলে না কেন??”
মাহি ফুল গাছ থেকে চোখ সরিয়ে বিরক্তকর দৃষ্টিতে ফায়াজের দিকে তাকালো। এই লোক কাল থেকে আজ পর্যন্ত না হলেও ১০০+কল দিয়েছে।বিরক্ত হয়ে ফোনটাই বন্ধ করে রেখেছে মাহি।
~বার বার কল কেনো দিয়েছেন?? আমার জানা মতে আপনার সাথে তো আমার তেমন কোনো সম্পর্ক নেই য়ে বার বার কল দিতে হবে!”
ফায়াজঃ ওওহ আচ্ছা!! সম্পর্ক নেই তাই কল ধরবে না? এতো এতো কল দিলাম মানবতার খাতিরে ও তো একবার ধরতে পারতে।আর সম্পর্কের কথাই যখন বলছো। তুমি চাইলে সম্পর্ক হতে পারে…
মাহিঃ অনেক রাত হয়েছে ঘুমানো দরকার। সকালে আবার ভার্সিটিতে যেতে হবে।
ফায়াজঃ রুদ্র বলছিলো। তোমার নাকি একটা টিউটর ধরকার…?
মাহিঃ হুম দরকার তো ছিলো!
ফায়াজঃ তুমি চাইলে আমি তোমাকে পড়াতে পাড়ি।
মাহির মুখটা চুপসে গেলো সে তো চেয়েছে রুদ্র ওকে পড়াক। কিন্তু রুদ্র ওর জন্য অন্য জন দেখে ফেললো। আর এই বেটা তো পড়াবে ধুর আমার মুখের দিকে হা করেই তাকিয়ে থাকবে। মনে মনে কতগুলো বলে মাহি ভাবছে কি উত্তর দেওয়া যায়। ‘না’ বললে ওকে অপমান করা হবে তাই বাধ্য হয়ে বললো,” আচ্ছা ” (শুধু একবার পড়াতে আসো চান্দু দুই দিনে পালাবে। পড়ানোর সখ মিটে যাবে।)
———
আবির ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আদিবা কে বললো ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পরতে। অনেক রাত হয়ে গেছে। কাল আবার অফিসে যেতে হবে।
আদিবা আবির কে কিছু জিজ্ঞেস করতে গিয়েও করলো না। আজ বিয়ে হয়েছে কাল কি অফিসে না গেলে হয় না। কিন্তু মনের কথা মনে রেখেই ওয়াশরুম ফ্রেশ হতে চলে গেলো।
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে আবির শুয়ে পরেছে। আদিবা গিয়ে আবিরের বিপরীত পাশে শুয়ে পরলো।
———
সকালে আবিরের ঘুম ভাংগে আদিবার চুড়ির রিনিঝিনি শব্দে। বিরক্ত হয়ে পাশ ফিরতেই চোখ আটকে গেলো আদিবার মাঝে।মিষ্টি কালার শাড়ি পরেছে,সাথে দু’হাতে ভর্তি মিষ্টি রঙের চুড়ি।চুড়ি হাতে দিয়ে মাথা আঁচড়ানোর ফলে রিনঝিন শব্দ হচ্ছে। আবির তাকাবে না তাকাবে না করেও বার বার তাকাচ্ছে।
আবির চোখ সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতেই আবার চোখ আটকে গেলো। আদিবার হাত উঁচু করার কারনে উন্মুক্ত পেট দেখা যাচ্ছে। আবির নেশা ময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ।আবির নিজের মাথায় নিজে বার কয়েক বারি দিলো ওর এমন নেশা নেশা কেনো লাগছে। আজ আদিবাকে পুরাই অন্য রকম লাগছে। বউ বউ লাগছে।বউ কে তো বউ এই লাগবে আবার ভাবলো ওতো আমার বউ তাহলে এতো জড়তা কীসের!! আমি চাইলেই এখন ওকে আমার কাছে টেনে নিতে পারি।ভালোবাসায়,ভালোবাসায় রাঙিয়ে দিতে পারি। নিজের এই অদ্ভুত ভাবনা গুলোকে এক সাইডে সরিয়ে উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে চোখে মুখে পানি দিলো।
হটাৎ দরজার ঠকঠক আওয়াজে নূর লাফিয়ে উঠলো। সে যানে রুদ্র বাদে আর কেউ ওর রুমের দরজা খোলা থাকলে পারমিশন নেয় না। রুদ্র একমাত্র ওর রুমে পারমিশন নিয়ে আসে। আজ আবার রুদ্রের কি কাজ ওর রুমে। খুব সুন্দর করে আয়নার সামনে বসে সাজগোজ করছিলো নূর। সাজগোজ প্রায় শেষ ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়ে, চোখে কাজল দিচ্ছিল।
~দরজা খোলা আছে…
রুদ্র নূরের রুমে ঢুকে হা করে তাকিয়ে আছে।
~কি হলো ভাইয়া এভাবে থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?? কিছু বলবেন??
রুদ্র কিছু না বলে নূরের সামনে এসে দাঁড়ালো। একদম সামনে নিজের বৃদ্ধ আঙ্গুল নিয়ে ওর ঠোঁটে ছোঁয়িয়ে দিলো।
রুদ্রের হটাৎ এমন কাজে নূর একদম জমে গেছে।
ঠোঁটের আশেপাশে লেপ্টে থাকা লিপস্টিক মুছে দিয়ে রুদ্র সরে গেলো।
রুদ্রঃ এমন ভূত সাজার কারন কি??
নূরঃ ভূত!!
রুদ্রঃ হুম! আমি তো প্রথম দেখে ভয় পেয়ে গিয়ে ছিলাম। তুমি দেখতে এমনিতেই পেত্নী, ডাইনী,পিশাচিনীদের মতো আর আজকে সেজে তো একদম ভূত হয়ে গেছো।দাঁড়াও এক মিনিট বলে পকেট থেকে মোবাইল বের করে ফটাফট নূরের কয়টা ছবি তুলে নিলে। আর নূর বেকুবের মতো তাকিয়ে আছে। ওর কি রিয়াকশন দেওয়া উচিৎ সে বুঝতে পারছে না। ওকে অপমান করে আবার ওর ছবি নিজের মোবাইলে তুলে নিলো। কি উচ্চ লেভেলের বেয়াদব ছেলে।
নূর কিছু বলবে তার আগে রুদ্র বলে উঠলো, “যাও ওয়াশরুমে গিয়ে মুখ ধুয়ে আসো”
নূরঃ আপনি বলবেন আর আমি শুনবো ভাবলেন কিভাবে।!!?কালকে আপনার জন্য আমি কোনো মজা করতে পারিনি তাও আপনাকে কিছু বলিনি। তাই বলে আপনি আজকেও আমার আনন্দ মাটি করতে পারেন না। আজ আমি খুব সুন্দর করে সাজলাম কই একটু প্রসংশা করবেন তা না।
রুদ্রঃ তুমি কি প্রসংশা নেওয়ার জন্য সেজেগুজে বাহিরে যাচ্ছ??
নূরঃ অবশ্যই।
রুদ্রঃ চুপচাপ ওয়াশরুমে গিয়ে মুখ ধুয়ে কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে বের হও। আমি নিচে অপেক্ষা করছি।
নূরঃ নাআআআআআআআআ! না! আমি আজকে কলেজ যাবো না। আজ কিসের কলেজ!! বাসায় বিয়ে রেখে আমি কলেজ কি করবো!!
রুদ্রঃ বাসায় বিয়ে রেখে মানে!!?কাল তো বিয়ে হয়ে গেছে। আর বিয়েটা তোমার না। যে তুমি থাকতে হবে। তারাতারি এই সব ধুয়ে একদম নরমাল সাজে নিচে আসবে।
রুদ্র রুম থেকে বের হতেই নূরের রাগে মন চাচ্ছে সব কিছু ভেঙে চুরমার করে ফেলতে।এই লোকের সমস্যা কি? আবির ভাইয়ার মতো এই লোকের গলায় ও বউ ঝুলিয়ে দিতে হবে। না হলে শান্তিতে কিছুই করা যাবে না। এই লোকের বিয়েতে ইচ্ছে মতো সাজগোজ করে সারা বাড়ি টইটই করে ঘুরে বেড়াবো।হুম আজকেই বড় আম্মুকে বলবো উনার বিয়ের কথা।
———
আবির সকালে অফিসে চলে গেছে। ওর নাকি খুব ইম্পর্ট্যান্ট কাজ পরে গেছে না গেলেই নয়। তবে কাজটা শেষ করেই বাসায় চলে আসবে।
মাহি গেলো আদিবার রুমে।
আদিবা এসে মাহিকে জড়িয়ে ধরলো।
মাহিঃ এই ছাড় বলছি। একদম ধরবি না। আমি কি তোর জামাই নাকি..?এভাবে জামাই কে ধরিস (চোখ মেরে বললো)…
আদিবাঃ না ছাড়বো না জান্স।তোকে জড়িয়ে ধরে যেই শান্তি পাই জামাই কেও মনে হয় জড়িয়ে ধরে এই শান্তি পাবো না!!
মাহিঃতুই আমার কাছে এসে যদি সব শান্তি নিয়ে নিস আমার জামাইর কি হবে!! আর কাল রাতে কি কি হয়েছে বল..? দুষ্টু হেসে…
আদিবাঃ মাহির বাচ্চা লুচু মেয়েদের মতো হাসবি না!!
মাহিঃ আরেহ্ বাহ্ তোমরা কিছু করবা সেটা দোষ না আর আমি শুনলেই দোষ হয়ে গেলো। এটাই বুঝি তোর ভালোবাসা!!
আদিবাঃ থুর!! তোর ভাই তো পুরাই নিরামিষ ভালো করে হাতটাও ধরে নি…আর অন্য কিছু…
মাহিঃ কি বলিস!! সত্যি!!!…?
আদিবা উপর নিচ মাতা দুলিয়ে বুঝালো সত্যি।
মাহিঃ আহারে ভাই না হয় নিরামিষ তুই তো আমিষ নিজে হাতটা ধরতে পারলি না…. তোদের এই নিরামিষ বাসরের গল্প শুনে আমার তো বিয়ে করার ইচ্ছে টাই চলে গেলো।
আদিবা মাহির মুখের অবস্থা দেখে খিলখিল করে হেসে উঠলো। আর মাহি ওর হাসির দিকে তাকিয়ে আছে। কতদিন পর মেয়েটা এমন মন খোলে হাসছে। আদিবা নিজের হাসির শব্দে নিজেই অবাক হয়ে গেলো।
———
নূর এক গাল হেসে বললো,”থ্যানক্স ভাইয়া।”
রুদ্র চোখ ছোটো ছোটো করে তাকিয়ে আছে, ” কি বেপার ওর তো রেগে থাকার কথা। এতো সুন্দর হাসি দেওয়া হচ্ছে। মনে মনে কি খিচুড়ি পাকাচ্ছে..?এই মেয়ে!!
———
আদিবা কে ওর শাশুড়ী অনেকের সাথেই পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। আর ইশারায় সালাম করতে বলছে।এক এক করে সবার সাথে পরিচয় হলো। সবাই খুব পছন্দ করলো আদিবা কে৷ অনেকেই জিজ্ঞেস করেছে আদিবার আব্বু আম্মু কি করে?? উওরে ওর শাশুড়ী বলেছেন ওর আব্বু অনেক নাম করা উকিল ছিলো। কিন্তু একটা এক্সিডেন্টে ওর আব্বু আম্মু মারা গেছে। ওর মামা-মামী মেয়ের মতো করে ওকে বড় করেছে।
———
নূর আর ইরিন ক্লাস শেষ করে গিয়ে ক্যান্টিনে বসলো।
ইরিন কয়েকটি শাড়ির ছবি নূরের সামনে রাখলো এমন সময় ওদের সাথে এসে যোগ হলো নীল।
ইরিন নীল কে দেখেও না দেখার মতো করে নূরকে বললো,” দেখ তো কোনটা বেশি সুন্দর!!? ”
নূর কিছু বলার আগেই নীল বলে উঠলো, ” এই হরিণ এইগুলো কি তোমার বিয়ের শাড়ি নাকি..?
ইরিনঃ জ্বি ভাইয়া! নূর কোনটা সুন্দর বল তো..?
নূরঃ সব গুলোই তো সুন্দর। কিন্তু এগুলো কার জন্য..?
নীলঃ বিয়ে তে শাড়ির ছবি পাঠিয়েছে বলে এমন ধেই ধেই করে ছবি গুলো নিয়ে নেচে নেচে সবাইকে দেখানোর কি আছে??আর নূর তকে বলি তুই একবার ভাব তো এই যে তোর বেস্ট ফ্রেন্ড, বিয়ে ঠিক হয়ে গেলো একবার ও তকে বললো?? না। আজকে বিয়ের শাড়ির ছবি এনে তকে দেখাচ্ছে। কেমন মেয়েকে বেস্ট ফ্রেন্ড বানিয়ে ছিস। দিন দিন তুই ক্যারেক্টারলেস হয়ে যাচ্ছিস।শেষ পর্যন্ত আমি কি না ক্যারেক্টারলেস এর ভাই হলাম তাও বড় ভাই ছি!ছি!….
ইরিনঃ বলা শেষ আপনার!! এখন আমার সামনে থেকে যান তো প্লিজ।
নীল রেগে ফুসফুস করতে করতে বললো, ” সত্যি কথা বললে কেউ পছন্দ করে না..”
ইরিন রেগে বলে উঠলো, “নূরের বাচ্চা তোর এই ক্যারেক্টারলেস ভাইটাকে বলবি আমার সামনে থেকে যেতে!!”
———
মাহি ভার্সিটি থেকে এসে দরজায় কলিং বেল টিপ দিলো। আজকে কখনোই ভার্সিটিতে যেতো না। কিন্তু আজ পরিক্ষার কিছু নোট দিবে তাই বাধ্য হয়ে যেতে হলো।
আনিতা বেগম দরজা খোলে মাহির দিকে তাকালো তারপর সাথের ছেলেটার দিকে।
আম্মু তোমাকে বলে ছিলাম না ওই দিন রাস্তা এক্সিডেন্ট এর কথা।
আনিতা বেগম হ্যাঁ বললেন।
এই হলো মাহিন ওই দিন আমাকে যে বাঁচিয়ে ছিলো তার সাথে মাহিন ও ছিলো। আজ বাসার সামনে দেখা হয়ে জোর করে নিয়ে আসলাম।
আনিতা বেগমঃ খুব ভালো করেছিস। আসো বাবা ভেতরে আসো।
মাহিন ভদ্র ছেলের মতো সালাম দিলো।
ইতি মধ্যে মাহিন সবার সাথে ভালোই ভাব জমিয়ে ফেলেছে।
মাহি এসে বললো, ” মাহিন ভাইয়া চলেন আপনাকে আমারদের নতুন ভাবির সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।”
মাহিন মাহির সাথে আদিবার রুমের সামনে দাড়িয়ে আছে।
মাহিঃ নতুন ভাবি দেখো কাকে নিয়ে এসেছি?
আদিবা মাহির মুখে ভাবি ডাক শুনে ভূত দেখার মতো পিছন ফিরলো।
আদিবা কে দেখে মাহিনের বুক কেঁপে উঠল। এটাই কি মাহির নতুন ভাবি!! না!না! এটা কিছুতেই হতে পারে না৷ হাত মুষ্টি বদ্ধ করে তাকিয়ে আছে আদিবার দিকে৷
পিছন থেকে রিয়া বলে উঠলো, ” তুহিন ভাইয়া..!!??
চলবে…
#এই_অবেলায়_তুমি
#পর্ব_২১
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
পিছন থেকে রিয়া বলে উঠলো, ” তুহিন ভাইয়া..”
সবাই পিছন ফিরে তাকালো। মাহিন তো রিয়াকে দেখে অবাক। এই মেয়ে এখানে কেন??
মাহিঃ রিয়া তুই মাহিন ভাইয়া কে চিনিস?
রিয়া বিরক্ত হয়ে বললো,” মাহিন বলো না। তুহিন বলো। আমার স্যার হয়।”
মাহিন একটা প্লাস্টিক হাসি মুখে ঝুলিয়ে বললো,” আজ আসি আমার একটা কাজের কথা মনে ছিলো না৷ এখন যেতে হবে।”
মাহিঃ সে কি খাবার না খেয়ে যাওয়া যাবে না।
মাহিনঃ আরেক দিন আসবো ওই দিন না হয়। নতুন মেহমানের হাতের রান্না খেয়ে যাবো। এখন আমাকে যেতে হবে।
———
সারাদিন ভালোই কাটলো। মাহি বসে বসে ক্রিম আফার ভিডিও দেখছে আর হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছে।এক সময় দরজায় চোখ পড়তেই লাফ দিয়ে উঠে বসলো।
ফায়াজ দরজায় দাঁড়িয়ে বললো,” আসবো…”
মাহিঃ আসুন।
ফায়াজঃ টেবিলে বসো।
মাহি চুপচাপ মোবাইল রেখে গিয়ে টেবিলে বসলো।
ফায়াজ খুব ভালো করে মাহি কে পড়াচ্ছে৷ বুঝিয়ে দিচ্ছে।
মাহি একটু পর পর ফায়াজের দিকে তাকাচ্ছে। ফায়াজ কালো পাঞ্জাবি পরে এসেছে৷ খুব সুন্দর লাগছে। একদম ক্রাশ খাওয়ার মতো অবস্থা কিন্তু না মাহি তো ক্রাশ খেতে খেতেও খাবে না। চোখ সরিয়ে নিয়ে আবার ফায়াজের দিকে তাকালো। কিন্তু কি আজব বেপার আজ ফায়াজ আসার পর এক বার ও মাহির দিকে তাকালো না। যেই ছেলে ওকে দেখার জন্য রাস্তার পাশে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা তাকিয়ে থাকে ওর বারান্দার দিকে। সেই ছেলে সামনে বসে থেকেও একবার তাকালো না। আর সব চেয়ে বড় কথা মাহি চাচ্ছে ফায়াজ ওর দিকে তাকাক কিন্তু কেন? সে তো ফায়াজ কে ভালোবাসে না। তাহলে এমনটা চাওয়ার মানে কি…?
ফায়াজ এবার মাহি কে দমক দিয়ে বললো,” আমাকে কি আজকে বেশি সুন্দর লাগছে। যে চোখ দিয়েই আমার ইজ্জত হরন করার চেষ্টা করছো। বেশি তাকিয়ে থাকলে প্রেমে পড়ে যাবে।”
মাহি লজ্জায় অন্য দিকে ফিরে গেলো। ইইস উনি তো নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলো তাহলে বুঝলো কি ভাবে। যে আমি তাকিয়ে আছি।
হাঠাৎ ফায়াজ চোখ মুখ লাল করে মাহির হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে মাহির চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো। চোখে রাগ স্পষ্ট। মনে হচ্ছে মাহি কে কিছু বলতে চায় কিন্তু পারছে না৷
~তোমার হাত কেনো ধরে ছিলো মাহিন…?
মাহি এখনো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। লোকটা হঠাৎ কেনো রেগে গেলো..?
~কি হলো বলছো না কেনো!?
~আপনি জানলেন কিভাবে..?
~দেখো মাহি আমার রাগ বাড়িও না! ওর এত বড় সাহস কি করে হয়,তোমার হাত ধরার..
মাহির মন চাইলো কিছু কড়া কথা শুনাতে ফায়াজ কে ওর হাত যার ইচ্ছা সে ধরবে ওর কি? কিন্তু না মনে আসলেও কথা গুলো মুখে আসছে না।আজ ওর সাথে কি হচ্ছে। একবার চোখ,আরেক বার মুখ সব আজ ওর হয়েও ফায়াজের পক্ষ নিচ্ছে কেনো??
~আমি বাসায় আসার পথে মাহিন ভাইয়াকে আমাদের বাসার সামনে দেখলাম তাই বললাম বাসায় আসতে। আসার সময় উনার হাতের বইটা আমার কাছে দিয়ে ছিলো। বইটা নেওয়ার সময় দেখলো আমার হাত পুড়া তাই বললো দেখি হাত কিভাবে পুড়েছে বলে হাত ধরে ছিলো।
ফায়াজঃ আমার এই সব পছন্দ না… অন্য কেউ তোমার হাত যেনো আর কখনো না ধরতে দেখি..।
মাহি কিছু বলতে যাবে ফায়াজ বলে উঠলো, ” বই বের করো। আর কোনো কথা নয়।”
মাহিও বই বের করলো। আজ তো অনেক কিছু ভেবে রেখে ছিলো ফায়াজের জন্য। কিভাবে ওকে কিভাবে টিউশনি থেকে বাদ করবে সব প্লেন করা ছিলো। কিন্তু এইগুলোর একটাও করতে ইচ্ছে হচ্ছে না মাহির।
ফায়াজঃ মাহি তুমি চাইলে আমরা স্যার আর স্টুডেন্ট না ফ্রেন্ড হতে পারি। বেস্ট ফ্রেন্ড! তাহলে তোমার পড়তেও সুবিধা হবে।
মাহি কিছু ভেবে বলে উঠলো, ” হুম ঠিক বলেছেন স্যার আর স্টুডেন্ট না ফ্রেন্ড ঠিক আছে।কফি খাবেন আমি খুব ভালো কফি বানাতে পারি। (আজ ওর কি হয়েছে। ফায়াজের কথার তালে কেনো তাল মিলাচ্ছে। ওফ্ফ নিজের কাজে নিজেই বিরক্ত হয়ে বললো। আচ্ছা ফায়াজ কি ওকে পড়াতে এসেছে, নাকি যাদু করে নিজের বসে নিতে এসেছে..?)
———
“আমি যে বলছি তুমি পারবে না।সেটা শুনতে পারছো না..??আর একটা কথা বললে,তোমাকে এই খোলা বেলকনি থেকে টুপ করে নিচে ফেলে দিবো।চুপচাপ বসে থাকো। ”
নূর রুদ্রের থেকে চোখ সরিয়ে মুখ ফুলিয়ে অন্য দিকে ফিরে চুল গুলো হাত খোপা করতে নিলেই রুদ্র নূরের হাত শক্ত করে ধরে নিলো।
রুদ্রঃ একদম চুল খোঁপা করবে না। ছাড়া থাকুক এভাবেই খুব ভালো লাগছে।
নূরঃ কিন্তু ভাইয়া আমার খুব গরম করছে।
রুদ্রঃ গরম লাগলে কিছু করার নেই। আমার সামনে চুল খোঁপা করবে না। আর অন্য কারো সামনে চুল ছেড়ে যাবে না।
নূরঃ এটা কেমন কথা। আমি কি আপনার কেনা সম্পত্তি যে আপনি যা বলবেন তাই শুনবো।
রুদ্রঃ তুমি আমার শুধু সম্পত্তি না।এর থেকেও বেশি কিছু। এবার চুপচাপ পড়ায় মন দাও।
নূরঃ আমি আপনার কাছে পড়বো না।
রুদ্রঃ আমি এতো কথা শুনতে চাচ্ছি না।
নূরঃআপনি ফ্যান তো বন্ধ করে রেখেছেন।
রুদ্রঃ তাতো দেখতেই পাচ্ছ।এটা তোমার শাস্তি আমার কথা না শুনার।
নূরঃ এমন শাস্তি যদি আপনার বউকে দেন । তাহলে তো বেচারি নাতি নাতনি দেখার আগেই অক্কা পেয়ে উপরে চলে যাবে।
রুদ্রঃআমার বউ অক্কা পাবে কেনো। ফ্যান বন্ধ থাকলে আমি আছি কিসের জন্য। আমি ফু দিয়ে দিয়ে বাঁচিয়ে তুলবো।আর সেটা যদি তুমি হও তাহলে নাতি নাতনি কেনো পতি পতনির মুখ ও দেখাবো।
নূরঃ ফু দিয়ে বাঁচায় কিভাবে!?? আর সত্যি আমি হলে পতি পতনির মুখ ও দেখাবেন..?
রুদ্রঃ আরেহ্ শুধু ফু কেনো,দরকার হলে আরো অনেক কিছুই করবো। আমি ওর ঠোঁটে নিজের ঠোঁট লাগিয়ে আমার নিশ্বাস ওকে দিয়ে দিবো।আর তুমি রাজি থাকলে আমি আম্মু কে বলে রেডি করে নিবো কাজী।
নূরঃ নিশ্বাস কেনো দিবেন..? আপনার বউয়ের তো আর শ্বাসকষ্ট রোগ নেই। যে শ্বাস নিতে কষ্ট হবে। আপনার বউয়ের তো গরম করবে..গরম কি আর ফু দিয়ে কমাতে পারবেন..?
রুদ্রঃ এক কাজ করো তুমি আমার বউ হয়ে চলে আসো। তারপর না হয় দেখাবো কিভাবে গরম কমাই।
নূর বেআক্কেলের মতো রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে। এই ছেলে কথায় কথায় ওকে কেনো টানছে..?ওর খেয়াল করে দেখলো রুদ্র এখনো ওর হাতটা যত্ন করে ধরে আছে।
(নূর আজকে বাসায় এসেই রুদ্রের আম্মুর রুমে গিয়ে শায়েলা বেগমকে জড়িয়ে ধরলো।
শায়েলা বেগমঃ আজ হঠাৎ আমার রুমে। কিছুর কি দরকার লেগেছে না কি…?
নূরঃ বড় আম্মু তুমি এভাবে বলতে পারলে। আমি শুধু দরকার হলেই তোমার কাছে আসি। এমনিতে আসি না…?
~আজ কতো দিন হলো আমার রুমে পা রাখিস না…?
~ওফ্ফ বাদ দাও তো। ছেলে যে বড় হয়েছে সে দিকে খেয়াল আছে! আজ আসার সময় দেখলাম….
~কি দেখেছিস..?
~নাহ্ থাক তুমি তো আবার আমার কথা বিশ্বাস করবে না…
~ কে বলেছে আমি তোর কথা বিশ্বাস করবো না। আগে বলবি তো কি দেখেছিস..?
~আসার সময় দেখলাম তোমার ছেলে আমাদের কলেজের পাশে যেই রেস্তোরাঁটা আছে না। ওই টায় বসে আছে..
~তো কি হয়েছে..? বসতেই পারে। হয়তো কোনো ফ্রেন্ড এর সাথে দেখা করতে এসেছে।
~আগে আমার কথা তো শেষ করতে দিবে।
~আচ্ছা বল..?
~সাথে একটা সুন্দরী মেয়ে ছিলো। একজনের হাত আরেক জন খুব যত্ন করে ধরে রেখে ছিলো। এক জন আরেক জনের দিকে প্রেমময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো। আর একটু পর তো দেখলাম তোমার ছেলে যত্ন করে ওই সুন্দরী ভাবি কে খাইয়ে দিচ্ছে।
~ সুন্দরী ভাবি!!
~আরে বিয়ের পর তো ভাবি হবে। আমি না হয় আগে আগে ডাকা শুরু করলাম।
~এত দূর চলে গেলো আমার রুদ্র একটা বার আমাকে বললো না!
~তোমার কি মাথা ঠিক আছে বড় আম্মু। তোমার ছেলে কি ফিটার খায় যে এখন প্রেম করবে তোমাকে বলে করবে! এখন বড় হয়েছে।তুমি মা তোমাকে কিভাবে নিজের ভালোবাসার কথা বলবে।লজ্জার ওতো একটা বেপার সেপার আছে তাই না।
~হুম ঠিক বলেছিস।
~এখন তোমার ছেলেকে তারাতাড়ি বিয়ে দাও। না হলে দু’দিন পর কাউকে না বলে বিয়েটাও করে নিবে।
আমি তো এটা ভেবে দেখিনি আজকে বাসায় আসুক আমি ওকে মেয়ের কতগুলো ছবি দেখাবো। ওই দিন ঘটক ভাই কয়েকটা মেয়ের কথা বলছিলো। আমি বললাম ছেলের বিয়ের এখনো বয়স হয়নি। তাও জোর করে মেয়েগুলোর ছবি দিয়ে গেছে।
~এই তো গুড বড় আম্মু উমমমমমাহ লাভ ইউ আমি এখন গেলাম। নূর শয়তানি হাসি দিয়ে বললো কি মিথ্যা কথাগুলোই না বললাম ওফ্ফ বড় আম্মু তো সব বিশ্বাস করে নিলো। এখন শুধু ধরে বেধে বিয়ে টাই দিয়ে দিলে হবে।
রুদ্র বাসায় আসার পর থেকে ওর আম্মু ওর রুমে বসে আছে। ফ্রেশ হয়ে এসে খাটে মায়ের পাশে বসে বললো,” কিছু কি হয়েছে আম্মু। তোমার মুখটা এতো শুখনো কেনো..?”
~বয়স তো আমার কম হলো না। কয় দিন আর বাঁচবো আমার একটা শেষ ইচ্ছে রাখবি রুদ্র..?
~মায়ের কথায় রুদ্র অবাক হয়ে ওর মায়ের দিকে তাকালো। একটা কেনো তোমার যতগুলো ইচ্ছে বলো আমি রাখার চেষ্টা করবো।
~জিসান,আদি,আবির সবার বিয়ে তো দেখলাম এখন তোরটা বাকি আছে।
~আম্মু আমি ও বিয়ে করবো কিন্তু এখন না আরো কয়েক দিন সময় দাও।
~তোর যত দিন ইচ্ছা সময় নে। কিন্তু একটু তারাতারি করার চেষ্টা কর।এই নে এখানে কতগুলো মেয়ের ছবি আছে।সময় করে দেখে নিস।
~আম্মু ঘরে মেয়ে থাকতে বাহিরে মেয়ে দেখার কি দরকার।
ঘরে মেয়ে শুনে চমকে ছেলের দিকে তাকালেন,” কিন্তু তুই তো নাকি বাহিরে কোন মেয়েকে ভালোবাসিস।”
মায়ের কথা শুনে রুদ্র বলে উঠলো, ‘ মা কিসের মেয়ে..? আমি তো বললাম ঘরে মেয়ে রেখে বাহিরে কেনো দেখছো।’
ঘরে মেয়ের কথা শুনে শায়েলা বেগমের চোখ মুখ খুশিতে চিকচিক করে উঠলো। আসলেই তো ঘরে মেয়েরেখে বাহিরে কেনো দেখছি।আমাদের মাহি তো খুব ভালো মেয়ে।আমি আজকেই আনিতার সাথে কথা বলবো।
খুশিতে গদোগদো হয়ে উনি নিজের রুমে চলে গেলেন।
কিন্তু উনি কি জানেন উনার ছেলে আসলেঘরের কোন মেয়ের কথা বলছে..
রুদ্র খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছে ওর বোলা বালা মা টাকে কে এই বিয়ের কথা মাথায় ঢুকিয়েছে।সকালে নূরের মুখ দেখেই বুঝে ছিলো নূর কিছু একটা করবে।
আর এই জন্য ফ্যান বন্ধ করে নূরকে শাস্তি দিচ্ছে রুদ্র)
———
“আপনি খাটে ঘুমান। আমি সোফায় ঘুমাচ্ছি..”
আবির কিছুক্ষন আদিবার দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠলো, ” তোমরা মেয়েরা একটু বেশি সিরিয়াল দেখো। যে স্বামী দেরি করে বাসায় আসলে বউ রাগ করে সোফায় ঘুমায় আর স্বামীকে খাটে থাকতে দেয় আবার মাঝ খানে কোলবালিশ ও দেয়। যেনো এপাশের মানুষ ওপাশে না যেতে পারে তাহলে বিয়ে কেনো করেছে..?যত্তসব।
আদিবা কিছু না বলে খাট থেকে উঠে গেলো।
আবির রেগে বলে উঠলো, “এক্ষনি এখানে এসে ঘুমাবে না হলে কিন্তু এখনি এখানে বাসর রাত হবে। কাল রাতে ভালো ছেলে সেজে ছিলাম বলে ভেবো না আমি ওত টাও ভালো ছেলে।
আবিরের কথা শুনে আদিবা লজ্জা পেলেও এখন সেই সব লজ্জা বস্তায় পেকে টিং করে এক সাইডে রেখে বলে উঠলো, ” আমি কাপড় চেঞ্জ করবো।”
আবিরঃ কেনো? এই শাড়িতে সমস্যা কি..?
আদিবা মিনমিন করে বললো,”শাড়ির কুঁচি খুলে গেছে…”
আবিরঃ তাহলে ঠিক করে নাও।
আদিবাঃ আমি শাড়ির কুঁচি দিতে পারি না।
আবির কিছুক্ষন আদিবার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে খাট থেকে নেমে আদিবার সামনে এসে বললো,” দেখি এদিকে ফিরো। ”
আদিবা চোখ বড় বড় করে বলে উঠলো, ” এই একদম শাড়িতে হাত দিবেন না।”
আবির আদিবার অবস্থা দেখে শব্দ করে হেসে উঠলো।
আবিরঃ এখনো কিছু করিনি তাতেই তোমার এই অবস্থা। এটা ঠিক না আদিবা তুমি তোমার স্বামীর প্রতি অন্যায় করছো।আমার স্বামীর অধিকার আমি চাই।বলেই আবার হেসে উঠলো আবির।কি ভেবে ছিলে আমি এসব বলবো।দেখো আদিবা আমি অন্য সব স্বামীদের মতো না। আমি আমার ভালোলাগা ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারি না। কিন্তু তবু আমাকে বুঝে নিতে হবে। তুমি যখন নিজে আমার কাছে আসবে আমি তোমাকে একদম আমার করে নিবো।এখন শাড়িটা দাও কুঁচিটা ঠিক করে দেই।
আদিবা দাঁড়িয়ে আছে আবির নিচে হাঁটু গেড়ে বসে একটা একটা করে কুচি ধরে উঠে দাড়িয়ে কুঁচি গুলো ভাঁজ করে আদিবার হাতে দিলো। আদিবা কুঁচি গুলো কোমরে গোঁজার সময় শাড়ি ফাক হয়ে কোমড়ের খানিক অংশ দেখা যাচ্ছিলো। আবির তাকিয়ে আছে আদিবার সেই কোমরের দিকে। আবির সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নিলো বেহায়া চোখ আবার তাকালো আদিবার মেদহীন পেটের মধ্যে থাকা গর্তহীন নাভীর দিকে।
আবির বলে উঠলো, ” মেয়েরা শরীর দেখিয়ে নাকি ছেলেদের যাদু করতে যানে..?”
হঠাৎ আবিরের এমন কথা শুনে আবিরের দিকে তাকালো। আবির এখনো ওর পেটের দিকেই তাকিয়ে আছে। আদিবা লজ্জায় ডুকরে উঠলো। তারাতাড়ি গিয়ে শুয়ে পরলো। আদিবার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো আবির। ওকি যানতো কখনো এই মেয়েটা ওকে এভাবে পাগল, পাগল বানিয়ে দিবে।এই যে আজ সকাল থেকেই কেমন নিজেকেই নিজে চিনতে পারছে না আবির।
আবির গিয়ে আদিবার পাশে শুয়ে বলে উঠলো, ” আদিবা তোমার হাতটা দাও।”
আদিবা নিজের হাতটা আবিরের দিকে বাড়িয়ে দিলো।
আদিবা বাড়িয়ে দিতেই আবির একটানে আদিবাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললো,” আমাকে এমন পাগল বানানোর জন্য তোমকে কি শাস্তি দেওয়া যায় বলো তো..?আমার চোখে নেশা ধরানোর জন্য তোমার এই পাতলা শাড়ির ফাঁকে মেদহীন পেটের মধ্যে থাকা ছোট্ট তিলটাই যথেষ্ট। আমার অভিমান হলে একবার এসে ভালোবেসে জড়িয়ে ধরো আমি সব কিছু ভুলে যাবো।”
চলবে…
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।