#একজোড়া_আগুন_পাখি
®অরনীতা তুশ্মি (#তুশকন্যা)
পর্ব→০৮
🛑প্রাপ্তমনষ্ক ও মুক্তমনাদের জন্য🛑
—“রুহি!ডু ইউ হেয়ার মি? ”
মাথাটা বড্ড বেশি ঘুরছে। শরীরটা কেমন যেন প্রচন্ড দূর্বল লাগছে। চোখের পলক ঠিকমতো খুলতেও পারছে না রুহি। হালকা চোখ খুলতেই সবকিছু ঝাপসা! মাথাটা এখনো ঝিমঝিম করছে। রুহি বুঝতে পারছে না তার সাথে কি হচ্ছে তবে তার নিষ্ক্রিয় মস্তিষ্ক তাকে জানান দিচ্ছে তার শরীর থেকে ধীরে ধীরে সব র*ক্ত নিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
হঠাৎ কারো কন্ঠস্বর শুনে রুহি ধীরে ধীরে চেষ্টা করলো চোখদুটো খোলার। কিছুক্ষণ চেষ্টার পর সফলও হলো সে। ঝাপসা চোখে ধীরে ধীরে সব স্পষ্ট হতে লাগলো। তবে বুঝতে পারলো না সে ঠিক কোথায় আছে। বিশাল বড় এক এরিয়া অথচ দেখতে কেমন অদ্ভুত সঙ্গে কি না কিসব জিনিস, যন্ত্র রেখে দেওয়া। চারপাশটায় কেমন গাঢ় লাল আলোর ছড়াছড়ি।
এরপর ওসব কি জিনিস তা বুঝতে মাথা না ঘামিয়ে নিজের দিকে তাকালো। সে একটা বড়সড় চেয়ারে কিছুটা আধশোয়া হয়ে বসে রইছে। তার হাতদুটো চেয়ারের হাতলের উপর রাখা। কিন্তু সে চমকে উঠলো নিজের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে।
ও বুঝতে পারছে না তার সাথে কি হচ্ছে। তারাহুরো করে মস্তিষ্কের সাথে যুদ্ধ করতে লাগলো সে কোথায় ছিলো আর এখন সে কোথায় আছে সঙ্গে তার সাতে এই মূহুর্তে কি করা হচ্ছে।
রুহি নিজের দূর্বল শরীর নিয়েও ছোটাছুটির চেষ্টা করলো অথচ তার মনে হচ্ছে সে একদম অবশ হয়ে বসে হইছে। এরই মাঝে হঠাৎ সামনে থেকে আবারও কারো কন্ঠ স্বর শোনায় ও সামনে দিকে তাকিয়ে আবারও চমকে উঠলো।
তার সামনে চেয়ারে বসে দু’পা ছড়িয়ে, হাটুতে কনুই ঠেকিয়ে দু’হাতে দুটো চা*পা*তি নিয়ে এক আজব খেলায় মেতেছে কেনীথ। বারবার চা*পা*তি দিয়ে বিভৎস রকমের আওয়াজ ধ্বনি সৃষ্টি করে চলেছে। রুহির নিজের বর্তমান অবস্থার সাথে তার আশেপাশের পরিস্থিতির কোনো হিসবেই মেলাতে পারছে না। তার কাছে সবকিছু সপ্নের মতো লাগছে।
মূহুর্তেই মেয়েটার ঘাম ছুঁটতে লাগলো যখন কেনীথের স্পষ্ট কন্ঠ স্বর কানে আসতেই বুঝতে পারলো এসব সত্যি।
—“এভাবে নড়াচড়া করাটা ঠিক না! যা হচ্ছে সুন্দর ভাবে হতে দাও! ”
রুহি কখনো কেনীথের কাছ থেকে এমন নরম সুরে বলা কোনো কথা আজ পর্যন্ত শোনেনি। তার উপর কেনীথ তাকে তুই করে না বলে তুমি সম্মোধন করছে। এছাড়া কেনীথের মুখের বাঁকা হাসিটা যেন পুরো সিচুয়েশনটাকে আরো লোম*হর্ষ* ক করে তুলেছে। সঙ্গে যে রুহি কেনীথের সামান্য সংস্পর্শে আসার জন্য কতশত তপস্যা করতে রাজি থাকতো সেই মেয়েই আজ কেনীথের খোলা বুক, বলিষ্ঠ দেহ দেখেও সামান্য আকৃষ্ট হচ্ছে না বরং তার মাঝে তীব্র ভয়, আতং*কের অনুভূতি জাগ্রত হচ্ছে। কেনীথের পরনে শুধু একটা কালো টাউজার সঙ্গে মাথার চুল গুলো এলোমেলো হয়ে মুখের সামনে পড়ে রইছে।
কিন্তু কেনীথ তার সাথে এসব কেনো করতে চাইছে! আর ওর হাতে ওসব অ*স্ত্র কেনো! ওগুলো দিয়ে ও কি করবে।
রুহির নেশালো মস্তিষ্কটাও এখন ভয়ংকর দুশ্চিন্তায় নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে। রুহি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো,
—“এসব কি করছো কেনীথ! আমি তো নাইট ক্লাবে ছিলাম তাহলে এটা কোন জায়গা, আমার সাথে এসব কি করছো! তুমি কেনো এসব করছো!”
রুহির কাঁদো কাঁদো কন্ঠ স্বরে বলা প্রশ্ন গুলো শুনে কেনীথ কপালটা মৃদু কুঁচকিয়ে মিথ্যে বিরক্তির সুরে বললো,
—“উফ! এতো প্রশ্ন কেউ একসাথে করে নাকি। তবে জানতে চাইছো যেহেতু তাই বলছি। ”
কেনীথ কথা শেষ করে সোজা হয়ে রুহির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। এরপর শিরদাঁড়া সোজা করে বসে চাপাতি দুটোর উল্টো পিঠ দিয়ে চুলে ব্যাক ব্রাশ করলো। তারপর পায়ের উপর পা তুলে চেয়ারে হেলান দিয়ে বলতে লাগলো,
—“এটা হলো আমার সাম্রাজ্য! আর তুমি হলে এখানকার নতুন অতিথি। আর তোমার
সাথে যা হচ্ছে তা হলো তোমার প্রাপ্য। এন্ড আমি তোমার প্রাপ্যই তোমাকে বুঝিয়ে দিচ্ছি। ”
কথা শেষ করেই কেনীথ শিরদাঁড়া সোজা করে বসে রুহির দিকে তাকিয়ে আবারও মুচকি হাসলো। অন্য দিকে রুহির গলা শুকিয়ে কাটকাট হয়ে গিয়েছে। তার হাত পায়ে কোনো শক্ত রশির বাঁধন না থাকলে সে আজ সম্পূর্ণ নিস্তব্ধ অচল দেহে চেয়ারে পড়ে রয়েছে। শত চাইলেও না এখান থেকে নড়তে পারছে আর না পালিয়ে চলে যাওয়ার পরিকল্পনাও তার মস্তিষ্ক ভাবতে পারছে।
কারণ তার শরীরের সব শক্তিই এখন ধীরে ধীরে কেনীথ নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিচ্ছে। মানুষের শরীরে র*ক্ত একটি অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান সেখানে কেনীথ ব্যাগের পর ব্যাগ রক্ত রুহির শরীর থেকে সরানোর ব্যবস্থা করেছে।
রুহি নিজের মস্তিষ্ক সক্রিয় করে নিজের অবস্থা দেখে এই কারণেই চমকে উঠেছিলো কারণ সে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলো তার দুই বাহুতে ভেইনে নিডল/সুঁই বিঁধানো। এবং তার দুপাশে দুটো স্যান্ড, যেখানে দুটো ব্লা*ড ব্যাগ ঝুলছে। অর্থাৎ ভেইনপাঙ্কচার কিট/ব্লাড কালেকশন কিট যাতে সুঁই এর সাথে একটি টিউব/নল সংযোগ থাকে যা দিয়ে দেহ থেকে রক্ত গিয়ে ব্লা*ড ব্যাগে সংরক্ষিত হয়।
সাধারণ একটি মানুষের দেহ থেকে একবারে শুধু মাত্র এক ব্যাগ অর্থাৎ ৪৫০-৫০০ মিলি র*ক্ত সংরক্ষণ করা যেতে পারে যাকে নিরাপদ বলা যায় কিন্তু কারো দেহ থেকে ৫০% কিংবা এর চেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থাৎ ২.৫-৩ লিটার র*ক্ত সরিয়ে নিলে মানুষ মা*রা যেতে পারে। কারণ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দেহে সাধারণ র*ক্তই থাকে ৫-৬ লিটার। আর রুহির ভয়ের কারণ হলো তার দেহ থেকে একসাথে দুটো ব্যাগ র*ক্ত দিয়ে পূর্ণ করা হচ্ছে যার অনেকটাই এখন ভরে গিয়েছে।
রুহি কান্নারত কন্ঠে বললো,
—“কেনীথ আমার সাথে এসব কেনো করছো। প্লিজ আমায় ছেড়ে দেও। তুমি হঠাৎ আমায় “তুমি” বলে ডাকছো কেনো । তোমার হাবভাব, কাজকর্ম আমার ঠিক লাগছে না।”
কেনীথের যেন কথাটা শুনে হাসি পেলো। তবে তার হাসি সেই শব্দহীন বাঁকা হাসিতেই আবদ্ধ। সে ওভাবেই হেলান দিয়ে থাকা অবস্থাতেই বললো,
—“একটা মানুষ চিরতরে পৃথিবী থেকে বিদায় নিবে আর তুমি বলছো আমি যেন তার সাথে তুইতোকারি করে খারাপ ব্যবহার করি! তার উপর আমার নতুন অতিথিটা একজন মেয়ে। ছিহঃ কেনীথ এতোটাও খারাপ না! ”
এতোটুকু কথা শেষ করেই কেনীথ নিজের হাতে থাকা দুটো চা*পাতির উদ্দেশ্যে বললো,
—“কি ঠিক বলছি তো মাম্মাহ! ”
কেনীথের কথাটা শুনে যেন ওই দুটো প্রাণহীন বস্তুরও হাসি পেলো। কিন্তু রুহি কেনীথকে ভয়া*র্ত চোখে দেখতে লাগলো। এরপর যতটা পারলো নিজেকে স্বাভাবিক করে বললো,
—“কেনীথ প্লিজ! আমি জানি না তোমার কি হয়েছে, কেনো তুমি এমন করছো। কিন্তু আমি এতোটুকু জানি যে তোমার কারো প্রতি অনেক রা*গ ক্ষো*ভ থাকলে তাকে তুমি মার*ধোর করো। প্লিজ যদি আমার কোনো ভুল থাকে তুমি আমায় মাফ করে দেও। আমি প্রমিজ করছি আমি কখনো তোমার আশেপাশে আসবো না। তোমার সাথে কখনো….. আচ্ছা এখন থেকে আর তুমি করেও বলবো না।প্লিজ স্যার, আমায় মাফ করে দিন,প্লিজ। ”
কেনীথ রুহির কথা শুনে মৃদু ভ্রু কুঁচকে বললো,
—“ওয়ান সেকেন্ড! না আমি এখানে না কারো বস, না কারো শুভাকাঙ্ক্ষী। তাহলে এতো ফর্মালিটির কি আছে।
আচ্ছা আমি তোমাকে একটা গান শোনাই। তুমি তো আমার গান শুনতে পছন্দ করো তাই না! তবে গানের মতো না কিছুটা কবিতা আবৃত্তির মতো করে বলি। নিউ এক্সপেরিয়েন্স হবে, কি বলো!
কারো আদেশ মানি না আমি চির স্বাধীন
আমি না মানি আইন, আমি না কারো অধীন
যেন আমি শ্রেষ্ঠ, শুধু আমিই সঠিক
কেবল আমিই সত্য, পুরা দুনিয়া বেঠিক।
প্রলয় আমি, আমি করি ধ্বংস
আমি শত্রু ঘায়েলে সদা হন্য,
আমি-শৃংখল মানি না, মৃত্যু চিনি না
আমি জ্বলে ওঠা শিখা, নিভতে জানি না,
তোমার দাসত্ব, আমার রাজত্ব
ধুঁকে ফুকে মর, ওহে বিশ্বাসঘাতক,
আমারই আদালত, আমিই বিচারক
হত্যা করি পাপী না মানি স্বর্গ-মর্ত
আমি হত্যা করি পাপী না মানি স্বর্গ-মর্ত।
কেনীথ খুব ধীর সুরে গানের লাইনগুলো মুচকি হেসে হেসে গাইলো বলতে গেলে গানের লাইন গুলো আবৃত্তি করলো। কিন্তু রুহি কান্নারত কন্ঠে বললো,
—“কেনীথ প্লিজ আর এসব করো না। আমাকে এসব কি লাগিয়ে রেখেছো। আমার শরীর থেকে অলরেডি দু’ব্যাগ র*ক্ত বের করা হয়ে গিয়েছে। আমার আর কথা বলার শক্তিটাও আসছে না।আমি তো তেমন কোনো দোষ করিনি তাহলে এমন কেনো করছো! ”
রুহি কথা গুলো শুনে কেনীথ কিছুক্ষণ কিছুই বললো না এরপর হেলান দেওয়া অবস্থাতেই বললো,
—“রুহি! আটমাস আগে ছোঁয়া কিভাবে মা*রা গিয়েছিলো?
হঠাৎ ছোঁয়ার নাম শুনতেই আঁতকে উঠলো রুহি। কেনীথের তো এই বিষয়ে কিছু জানার কথা ছিলো না।আর কেনীথ যদি জানতো তাহলে তো অনেক আগেই এর স্টেটমেন্ট নিতো কিন্তু এতোদিন পর হঠাৎ ছোঁয়ার কথা কিভাবে আসছে? এরমানে কি কেনীথ সব জানে। এইজন্যই কি তার সাথে এমনটা করছে!
রুহি কিছু বলার আগেই কেনীথ আবারও নির্বিকার সুরে বললো,
—“ছোঁয়ার কি দোষ ছিলো রুহি! ওর কি কোনো দোষ ছিলো! তবুও কেনো ওকে ম*রতে হলো। ”
রুহি এবার সম্পূর্ণ নিশ্চুপ হয়ে গেলো। তার আর বুঝতে বাকি রইলো না কেনীথ সবটাই জানে। এমনিতেই শরীর দূর্বল হয়ে যাচ্ছে আর এখন তো তার দম বন্ধ হয়ে আসছে।
কেনীথ এবার নিজের চোখমুখ শক্ত করলো এরপর আধশোয়া থেকে সোজা শিরদাঁড়া সোজা হয়ে বসে অনেকটা ক্ষিপ্ত স্বরে বলতে লাগলো,
—“বল কি দোষ ছিলো ওর! কেনো ওকে ছাঁদ থেকে ফেলে দিয়েছিলি? যাস্ট ও আমার স্টুডিওতে নিজের দায়িত্ব গুলো ঠিকঠাক করতো আর আমার মুখে সামান্য হাসি দেখেই তোর হিংসা হলো! যা তা সব সন্দেহ করে শেষ করে দিলি ওকে?
একটা কথা মায়া রাখা উচিত ছিলো। আমি কেনীথ, কোনো ফিল্ম-এর হিরো আশিক না! যে নিজের এমপ্লয়িদের সাথে দুদিন ঠিক ভাবে কথা বললো তো তার সাথে সো কল্ড ফা**কিং প্রেম ভালোবাসার খেলা খেলবো।
আমি কেনীথ! কোনে গল্পের নায়ক নয় বরং গল্পের মারা*ত্মক সাইকো ভিলেন। যার মাঝে মহত্ত্বের ছিটেফোঁটাও পাবি না, পাবি শুধু নিজের শিকারকে শেষ করার হিং*স্র*তা!
তবে বুদ্ধি, পরিশ্রম কোনোটাই তুই কম করিসনি। বুদ্ধি করে সিসিটিভির সব ফুটেজ নষ্ট করে দিয়েছিলি। কিন্তু ওসব কোনো কাজে লাগেনি। আমার পি.এ. বিষয়টিকে পুলিশ কেস পর্যন্ত যেতে দেয়নি কারণ আমার নামে লোক কাঁদা ছোড়াছুড়ি করবে তাই কিন্তু এর মানে এই ছিলো না যে আসল দোষী পার পেয়ে যাবে। বিষয়টি এক্সিডেন্টে হলে ভাবা যেতে কিন্তু তুই সম্পূর্ণ প্লান করে ছোঁয়াকে শেষ করেছিলি। আর আমি প্লান করে তোকে নিজের শিকার বানবো দেখে এতোদিন বাঁচিয়ে রেখেছিলাম। কি, ঠিক করেছি না! ”
ছোঁয়া আরো বেশি দূর্বল হয়ে যাচ্ছে এবং আরো বেশি কাঁপছে। এই পর্যায়ে কেনীথ চা*পাতি দুটো রেখে রুহির কাছে গেলো। এরপর স্যান্ডে পূর্ণ হওয়া ব্লা*ড ব্যাগ গুলো নিয়ে সেখানে আরো দুটো খালি ব্লাড ব্যাগ লাগাতে লাগাতে বললো,
—“তোকে বেশি কষ্ট দিয়ে মারার কোনো ইচ্ছে নেই। শুধু যতটা র*ক্ত নিলে তুই মা*রা যাবি ঠিক ততটুকুই নেবো। এখন হয়তো ভাবতে পারিস এই র*ক্ত দিয়ে আমি কি করবো, রাইট!
তুই মা*রা যাওয়ার পর তোকে খুব সুন্দর করে পিস পিস করে কাটবো, লাইক কসাই। মানুষ কাঁটার কসাই। কি কপাল আমার, আমার কুকুর দুটোকে ফ্রেস মাং*স খাওয়াতে আমাকে কসাই-ও হতে হয়েছে,হা হ…! যাই হোক, ওরা খুশি তো আমিও খুশি।
ওহ! এরপর আর বেশি কিছু না, হাড় থেকে মাংস আলাদা করতে, ওই যে বড় বড় কেমিক্যালের জার দেখছিস না! এগুলোতে তোর হাড় দিলে খুব দ্রুত মাংস গলে আলাদা হয়ে যাবে। এরপর সেই হাড়গুলোকে কি করবো জানিস!
হারগুলো গুড়ো করে আমার বাড়ির সুন্দর সুন্দর দেওয়ালগুলোতে লাগিয়ে আবার প্লাস্টার করে আবার কালার করে ফেলবো। এছাড়া সেন্ড পেইটিং এর নাম শুনেছিস তো! বালি দিয়ে যে পেইন্টিং করে। কিন্তু আমি হাড়ের গুড়ো দিয়ে করি। আমার বাড়িতে অনেকগুলো আছে। আপাতত ওসব পেইটিং তো এখানে নেই, আগামীতে বেঁচে থাকলে হয়তো দেখাতে পারতাম। কিভাবে মানুষের হাড় দিয়ে পেইন্টিং করতে হয় আর ওগুলো দেখতে ঠিক কত সুন্দর হয়।
আবার আমার বাড়ির বাগানে কিন্তু অনেক সুন্দর সুন্দর গাছ রয়েছে। হাড়ের গুড়ো মাটির সাথে মিক্স করে দিলে গাছগুলো আরো বেশি তরতাজা হয়। ইউ নো হোয়াট, আ’ম এ নেচার লাভার!
আর এতোকিছু করার পর নিজের শুদ্ধতার একটা ব্যাপার আছে না! এইজন্যই আমার শিকারের শেষ চিহ্নটাও চিরতরে শেষ করার পর নিজেকে শুদ্ধ করতে ব্লা*ড বাথ আইমিন র*ক্ত দিয়ে স্ন্যান করে নিজেকে শুদ্ধ করি৷ শুধু তাই নয়, তারপর আবার দুধ দিয়ে স্ন্যান করি। দ্যান আমি আবারও হয়ে যাই সবার প্রিয় ড্যাশিং,হেন্ডসাম,পশার ভিকে! আমি শুধু নামেই ভ্যাম্পেয়ার কেনীথ নয় আমি সত্যিই একজন মানব রুপী ভ্যাম্পায়ার। যার জীবনে শুধু র*ক্তের নেশা! র*ক্তের খেলা! শুধুই র*ক্ত! ”
কেনীথের নির্বিকারে হাসতে হাসতে বলা কথা শুনে রুহির মাথা যেন ঘুরছে। এসব কি আদোও সত্য। তারমানে কেনীথ কোনো সাধারণ মানুষ নয় বরং ও একটা ভয়ং*কর সাইকোপ্যাথ। যার ছোটখাটো কাজকর্ম সবার কাছে অ্যাট্রাক্টিভ হলেও আদোও ও যে কতটা ভ*য়ংকর এটা সবার কল্পনার বাহিরে।
এরই মাঝে কেনীথ ব্লাড ব্যাগ গুলো নিয়ে নিজের ব্লাড স্টোরেজ ফ্রিজারে গিয়ে রেখে দিয়ে এলো। এরপর আবারও রুহির সামনে এসে প্রশস্ত বুকে হাত গুঁজে গম্ভীর হয়ে বললো,
—“তুই নিজের অপকর্ম ছাড়াও আরো একটা ভুল করেছিস। তুই আমার পারসোনাল ব্লাডকে আঘাত করতে চেয়েছিস। আমার পারসোনাল প্রোপার্টিকে আঘাত করতে চেয়েছিস। ধরে নে তারই মাশুল দিতে হচ্ছে তোকে। ”
রুহি কেনীথের কথার কিছুই বুঝতে পারলো না।মানুষ আবার কারো পারসোনাল ব্লাডকে কিভাবে আঘাত করতে পারে। আর সেই বা এইরকম কাজ কবে করতে চেয়েছিলো। হঠাৎ তার মনে আগ্রহ জাগলে খুব ছোট করেই বললো,
—“মানে! ”
কিন্তু কেনীথ ওর প্রশ্ন উত্তর না দিয়ে বললো,
—“প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি বলে ফেলেছি আজ। আর তুইও বেশি জেনে গিয়েছিস। আপাতত এতোটুকুই থাক। ওপারে গিয়ে ভালো থাকিস, গুড বাই বেবস্!”
রুহি আর কিছুই বললো না, । শরীর থেকে অনেকটা র*ক্ত করে নেওয়া হয়েছে। কেনীথ আবারও দুই ব্যাগ র*ক্ত পূর্ণ হলে সেগুলো নিয়ে ব্লা*ড ফ্রিজারে রেখে এসে আবারও দুটো নতুন ব্যাগ এসে রুহির র*ক্ত নিতে লাগলো। এখন রুহির রক্তস্বল্পতায় হেমোরাজিক শক/ রক্তচাপের অভাব দেখা দিচ্ছে। আর হয়তো বেশিক্ষণ বাঁচার সম্ভবনা নেই ।
একটা সময় পর তার মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছে। সাধারণ রক্তচাপ কমতে থাকলে মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছাতে না পেরে মানুষ অচেতন হয়ে যায়। রুহিরও এমনটা হচ্ছে, ওর শরীর সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে তার করুন অবস্থা মোকাবেলা করার কিন্তু পর্যাপ্ত রক্ত আর অক্সিজেন না থাকার কারণে তার দেহের অঙ্গ গুলো বিকল হতে শুধু করেছে৷ রুহির দৃষ্টি শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। সঙ্গে প্রচন্ড শ্বাস কষ্ট হতে লাগলো। আর একটা সময় পর কেনীথের পৈ*শা*চিক কর্মকান্ডের শিকার হয়ে তাকেও নিজের প্রা*ণ দিতে হলো।
_____________________
বড়সর এক বুচার টেবিল/মাংস কাঁটার জন্য বিশেষভাবে তৈরি টেবিলের উপর পড়ে রইছে রুহির প্রাণহীন দেহখানা। পাশে আরেকটি ছোট টেবিলের উপর রাখা ক্লে-স্কিনিং ,সিরেটেড ,বোনিং, চকলেট,কার্ভ নাইফ সহ নানা রকমের অ/স্ত্র, ছুরি। এই সব কিছুর ব্যবহারে অত্যন্ত পারদর্শী কেনীথ।কোনটার কি বৈশিষ্ট্য তাও কেনীথের পরিপূর্ণ ভাবে জানা।
কেনীথের উর্ধ্বাঙ্গ উন্মুক্ত শরীরের উপর শুধু একটা লেদার এপ্রোন পড়া। দু’হাতে দুটো গ্লাভস পড়া। আর এতেই শুরু করে দিয়েছে তার পৈ/শাচি/ক খেলা। একে একে রুহির দেহ থেকে যতটা পারলো সুন্দর ভাবে মাং*স কেটে নিচ্ছে। প্রায় অনেক খাটাখাটুনির পর যখন তার এই কাজের প্রথম ধাপটা সুন্দর ভাবে সমাপ্ত হলো তখন সে দ্বিতীয় ধাপের জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগলো।
এবার কেনীথ নিজের ড্রেসআপ অনেকটা পরিবর্তন করলো। পরনে তার কেমিক্যাল রেসিস্ট্যান্ট এপ্রন যা ক্ষ/তিকর কেমিক্যাল থেকে দেহকে রক্ষা করে , চোখে গগলস্ পড়া যা কেমিক্যালের স্প্ল্যাশ বা ধোঁয়া থেকে রক্ষা করে এছাড়া ফেস শিল্ড, রেসপিরেটরস ও পরিধান করে সুদক্ষ কেমিস্টে রুপান্তরিত হলো।
এরপর রুহির অবশিষ্ট মাংস যুক্ত হাড় গুলো নিয়ে চলে গেলো তার পরবর্তী প্রক্রিয়া কেমিক্যাল ডিসসোলভিং যার অর্থ হলো ক্ষতিকর কেমিক্যাল দিয়ে মাং*স গলিয়ে হাড় আলাদা করার প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্যে। এই প্রক্রিয়ায় একাধিক কেমিক্যাল ব্যবহার করে মাংসের প্রোটিন ও টিস্যু গুলোকে আলাদা করে, যার ফলে হাড় আলাদা হয়ে যায়।
এক্ষেত্রে কেনীথের পারসোনাল হ্যাজারডাস মেটেরিয়াল স্টোরেজ কিংবা HazMat Storage যেখানে নানান বিপ*দজনক ক্ষতিকর কেমিক্যালের নিয়ে কাজ করা হয়। সেখানে নানান কেমিক্যালের মাঝে প্রয়োজন অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে থাকে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড এবং সালফিউরিক এসিড। কারণ উভয়ই অত্যন্ত বি*পদ*জনক ও প্রচন্ড শক্তিশালী। যা দ্রুত প্রোটিনের সাথে প্রতিক্রিয়া করে এবং টিস্যুগুলিকে দ্রবীভূত করত পারে অর্থাৎ মাং*স গলাতে সাহায্য করে। তবে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইডের ব্যবহারে মাংস গলানোর প্রক্রিয়া দ্রুত এবং কার্যকর বেশি হয়ে থাকে। এছাড়া তার এই ল্যাবে এসব কর্মকাণ্ডের জন্য নাইট্রিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম হাইড্রোক্সাইড, প্যারাফরমালডিহাইড ইত্যাদি প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করে থাকে।
কেনীথ মূলত মাং*স যুক্ত হার গুলো নিয়ে দীর্ঘ সময় প্রক্রিয়ায় এসব কেমিক্যালে ডুবিয়ে হাড় গুলো বের করো। এরপর সেসব হাড় গুরো কিংবা প্রক্রিয়াধীন করতে নেক্রোপসী, মর্টাল এন্ড পেস্টল, বোন গ্রাইন্ডার,ম্যাশিং মেশিন সহ আরো বেশ কিছু ইন্সট্রুমেন্টস ব্যবহার করে থাকে।
এরপর সেসব হাড়ের গুড়ো দিয়ে দেওয়াল, ক্যানভাস সহ আরো বিভিন্ন জায়গায় কেনীথ পেইন্টিং কিংবা প্লাস্টার করে রং দিয়ে থাকে যাতে তার কু*কর্মের কোনো সুনির্দিষ্ট চিহ্নই আর অবশিষ্ট থাকে না। এক্ষেত্রে কেনীথের একটি প্রিয় পেইন্টিং পদ্ধতি হলো ফ্রেস্কো” (Fresco)। তবে, ফ্রেস্কো সাধারণত প্রাচীন কৌশল যেখানে সিমেন্ট বা প্লাস্টার সঙ্গে দেওয়াল পৃষ্ঠে তাজা রঙ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কেনীথ সিমেন্ট সঙ্গে হাড়ের গুড়ো ব্যবহার করে থাকে।
তার এই বাড়ির বিশেষ অংশে একই সাথে স্লটারহাউস” বা “অ্যাবাটোইর, ল্যাবরেটরি,ব্লাড ব্যাংক।সোজা বাংলায় যাকে পৈ/শাচিক কর্মকাণ্ডের কার্যালয় বলা চলে। যেখানে কেনীথের পৈশা/চিক কর্মকাণ্ডের জন্য সকল গুরুত্বপূর্ণ সুসজ্জিত ভাবে সাজানো হয়েছে।
মোটামুটি সব কাজ শেষ করে রুহির দেহ হতে নেওয়া ব্লাড গুলো আরো আরো অনেকগুলো ব্লাগ ব্যাগ এনে নিজের স্পেশাল বাথটাবটা পূর্ণ করলো। যেহেতু একটি বাথটাব পূর্ণ হতে ক্ষেত্রবিশেষে ১৫০-৩০০ লিটার পানি লাগতে পারে তাই শুধু একজনের ব্লাড দিয়ে কখনোই একটা বাথটাব পূর্ণ হবে না। সেজন্য কেনীথের ব্লাড স্টেরেজে আগে থেকেই অনেকগুলো করে ব্লাড ব্যাগ সংগ্রহ করা থাকে। তবে সেসব কেনীথ রুহির মতো করে নিজে সংগ্রহ করে না বরং তার ক্ষমতার জোরে বিভিন্ন ব্লাড ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে আসে।
এক্ষেত্রে কেনীথ প্রতিদিন কিংবা নিয়মিত কখনো র/ক্ত দিয়ে গোসল করে না বরং যখনই এসব পৈ/শা/চিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয় তখনই তাকে এভাবে র*ক্ত দিয়ে গোসল করতে দেখা যায়। কিন্তু তার এই উদ্ভট ইচ্ছে পূরণে তাকে যে কতশত মানুষের র/ক্তে নিজের গা ভাসাতে হয় তার সুনির্দিষ্ট কোনো হিসেব নেই।
এমনিতেই কেনীথ সত্যিকারের কোনো র/ক্তপিপাসু ভ্যাম্পয়ার না হলেও সে একজন সুদক্ষ ও তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন সাইকোপ্যাথ। আর এজন্যই এসব কাজ সে মানসিক শান্তির জন্য করে থাকে। তবে একজন মানুষের হটাৎ এতোটা সাইকোপ্যাথে পরিণত হওয়া কোনো স্বাভাবিক বিষয় নয় বরং এর পিছনেও রয়েছে এক অন্ধকার কালো অধ্যায় । যার সচক্ষে সাক্ষী হতে হয়েছিলো কেনীথকে আর আজ সেজন্যই কেনীথ আজ কোনো সাধারণ মানব নয়।
এছাড়া কেনীথ শুধু র/ক্ত দিয়ে গোসল করেই ক্ষান্ত হয় না বরং এরপর সে নানা লাক্সারিয়াস প্রসাধনী এবং দুধ দিয়ে গোসল করে নিজের সকল কাজের পরিসমাপ্তি ঘটায়।
এই পুরো জায়গাটার আলাদা কোন পার্ট নেই। একটি বড় এরিয়া নানা অংশে গ্লাস দিয়ে পার্টেশন দেওয়া হয়েছে। যেখানে কেনীথ নানা ধরনের কাজ করে থাকে। তবে একপাশে একটি সুইমিংপুল রয়েছে। সেখানে কেনীথ নিজের সব কাজ শেষ করে বাড়ির অপর অংশে যেতে সুইমিংপুলে ঝাপ দেয়। এরপর এক দমে পানির নিচের এক ছোট্ট সুরঙ্গ পথ দিয়ে বাড়ির অন্যপাশের সুইমিং পুলে প্রবেশ করে।
তারপর সেখান থেকে আরো কিছুক্ষণ পানিতে গা ভাসানোর পর সোজা চলে যায় নিজের রুমের ওয়াক-ইন ক্লোজেট কিংবা ড্রেসিং রুমে। যেখানে নিজের পরিধানের জন্য সকল লাক্সারি প্রোডাক্ট সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আজ সেখান থেকেই পছন্দ মতো একটি টিশার্ট আর টাউজার পড়ে নিলো। এরপর তাতে তার খুব পছন্দের একটি পারফিউম যা সে সচারাচর এসব কাজের শেষে কিংবা বাড়িতে থাকা অবস্থায় লাগিয়ে থাকে সেটিই ব্যবহার করলো।
আর সেটি রক্তের গন্ধের মতো বা ধাতব ঘ্রাণযুক্ত পারফিউমকে সাধারণত “মেটালিক” নোটের পারফিউম বলা হয়। এমন পারফিউমগুলিতে লোহা বা তামার মতো ধাতব উপাদানের গন্ধ থাকে, যা কিছু ক্ষেত্রে রক্তের গন্ধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হতে পারে। কিছু বিশেষধর্মী পারফিউম ব্র্যান্ড এই ধরনের ঘ্রাণ তৈরি করে, তবে এগুলি খুব সাধারণ নয় এবং সাধারণত বিশেষ স্বাদের মানুষের জন্যই তৈরি হয়। আর সেসব ব্যাক্তিদের মাঝে কেনীথ একজন।
কেনীথ আয়নায় সামনে দাঁড়িয়ে চুল গুলো ঠিক করে পারফিউম দিয়ে কিছুটা শুঁকে নিয়ে আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,
বিশ্বাস ভাঙে কাছেরই মানুষ
ভালোবাসা কই? উড়ছে ফানুশ,
যুদ্ধে আমি এই, নেশায় অনুভুম
ফাটে উচ্ছ্বাসে জগদিশ্বরী মাতম,
ঘৃণ্য আলেয়া, পিশাচালয়
যে ডরে, সেই মরে, এই আগুনের খেলায়,
তাই র/ক্তপিপাসু আমি, হিং/স্র হায়েনা আমি
আমি কালজয়ী মহাবীর,
আমি ঘাত/কের ভয়, হবে শোষিতের জয়
এই আগুন খেলায় রক্তযুদ্ধের নেশায়
ধুলোয় উড়িয়ে আগুন
আমিই কেনীথ! আমিই কেনীথ!
আমিই র/ক্তপি/পাসু কেনীথ!”
গানের লাইন গুলো আবারও ধীরগতিতে তাচ্ছিল্যের সুরে গেয়ে এক বাঁকা হাসি হাসলো।
কেনীথের এই বিশাল রুমের একটি কমন বিষয় হলো কেনীথের ব্যবহৃত সকল জিনিসই কালো, কিংবা ব্লা/ড রেড কালার অথবা এই দুটি রংএর সমন্বয়ে তৈরি।
এছাড়া কেনীথে বাড়ির পুরো অংশ জুরেই এই দুটি রংএর ছড়াছড়ি। দেখতে হরর মুভির থিয়েটরের চেয়ে কম কিছু নয়।
কেনীথের এই লোমহর্ষক সাম্রাজ্য অল্প দিনে গড়ে ওঠেনি বরং সে এসব কাজ বহু বছর আগে থেকেই ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছে তারই রহস্যময় বাড়িতে। তার বাড়িকে রহস্যময় বলায় কারণ এইসব পৈ*শা*চিক কর্মকান্ড ঘটানো এই বিশেষ জায়গাটার খোঁজ কেনীথ ব্যতীত আর কারো জানা নেই। অথচ এই জায়গাটা তার বাড়িরই একটা অংশ কিন্তু কেনীথের বাড়ির ভেতরে সচারাচর প্রবেশ করা যেমন কারো পক্ষে কোনো সহজ বিষয় নয়। এরচেয়েও অসম্ভব বিষয় হলো কেউ যদিও বা তার বাড়িতে কোনোভাবে প্রবেশ করতে পারলেও বাড়ির এই অংশটাও খুঁজে পাওয়া কেনীথ ব্যতীত আর কারো পক্ষে সহজ নয় বরং অনেকটা অসম্ভব।
এই জায়গায় পৌঁছানোর দুটো রাস্তা রয়েছে যার দুটোই অত্যন্ত কৌশল অবলম্বন করে বানানো হয়েছে। আর এই দুটি রাস্তার মধ্যে একটি শুধু কেনীথ ব্যবহার করতে পারবে কারণ সেই রাস্তা যদি কেউ কখনো খুঁজেও পায় তবুও তাতে কোনো লাভ হবে না কারণ সেই ব্যাক্তি সেই রাস্তায় প্রবেশ করার সাথে সাথেই তার সরাসরি মৃত্যু না ঘটলেও দেহের মারাত্মক ক্ষতি হবে যাতে পরবর্তী রাস্তাটুকু আর সে ব্যাক্তির পক্ষে অতিক্রম করা সম্ভব হবে না।কারণ সেই রাস্তায় ব্যবহার করা হয়েছে ভ*য়ংকর সব আল্ট্রা হাই পাওয়ার লেজার যেমন সুপারকন্টিনিউম লেজার বা পিকোসেকেন্ড লেজার।
এখানে অবশ্য অনেকের মনে হতে পারে অন্য সবার ক্ষতি হলেও কেনীথের কিছু হবে না কেনো! সে কি কোনো আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী! নাকি সে কোনো মানবই না!
নাহ এমন কিছুই না। এইসব কিছুই প্রযুক্তি আর কেনীথের তীক্ষ্ণ বুদ্ধির খেলা। সেই রাস্তায় কেনীথ ব্যতীত অন্য সকলের ক্ষতি হবে এই কারণেই কেননা সেখানে সিকিউরিটি হিসেবে শরীরের সবকিছু স্ক্যান করা হয় যেখানে শুধু কেনীথের বডি স্ক্যানই গ্রহণ যোগ্য তবে সেখানে দিয়ে অন্য কেউ চাইলে কাঙ্ক্ষিত স্থানে পোঁছানো যাবে যদি সঙ্গে কেনীথ নিজে থাকে। এককথায় সেই সিক্রেট রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করতে হলে কেনীথের বডি স্ক্যান যা পাসওয়ার্ড হিসেবে কাজ করে তা প্রয়োজন। তা ব্যতীত কোনো একক ব্যাক্তি কখনোই সম্পূর্ণ রাস্তা অতিক্রমে সক্ষম হবে না।
আর অন্যদিকে দ্বিতীয় রাস্তাটা খুঁজে পেলে তা দিয়ে যেকেউ সচারাচর কেনীথের গোপন আস্তানায় পৌঁছাতে পারবে কিন্তু সেটা আদোও বাড়ির ঠিক কোন জায়গায় তাই খুঁজে বের করাটাই হলো মূখ্য বিষয়। কারণ প্রথম রাস্তা স্থলপথ আর এটি হলো পানি পথ। অথচ পুরো খেলাটাই কেনীথের রহস্যময় বাড়ির ভেতরেই ঘটে থাকে। যার পুরোটাই রহস্যে ঘেরা। দেখতে সাধাসিধা বিলাসবহুল বাড়িটাও যে ভেতরে কতটা ভয়ংকর হতে পারে তা এখন পর্যন্ত সবার কল্পনার বাহিরে। বহু বছরেও এখানে কোনো মানুষের ভয়ং*কর মৃ*ত্যু ব্যতীত স্বাভাবিক আগমন ঘটেনি কিন্তু আশা করা যায় খুব শীঘ্রই হয়তো এক নতুন অতিথির আগমন ঘটবে কেনীথের দুনিয়ায়। যার জন্মই হয়েছে হয়তো কেনীথের পৈ*শা*চিক কর্মকাণ্ডের সাক্ষী হওয়া জন্য।
#চলবে