একি বন্ধনে জড়ালে গো বন্ধু পর্ব-১৩

0
12

#একি_বন্ধনে_জড়ালে_গো_বন্ধু
#পার্ট_১৩
#কাজী_সানজিদা_আফরিন_মারজিয়া

রাত যত বাড়ে, মনুষ্য মন বরফের মতো শীতল হতে থাকে। বিন্দু বিন্দু জল মিলে বিশাল পাহাড় তুল্য বরফের জন্ম হয় প্রত্যেকটা রাতে। দিনের বেলাতে এই বরফের জন্ম নয়। দিনের তেজ এই শীতলতা সহ্য করতে পারে না। তাই তো রাতের গভীরে টেনে নেয়, আঁকড়ে ধরে।
দুনিয়াবি সকল মান-অভিমান রাতের কোলে এসে ঢোলে পড়ে। অন্ধকারচ্ছন্ন রজনী পরম আদরে সমস্ত অভিমান-অভিযোগ সাদরে গ্রহণ করে নেয়। পরম আদরে মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, ‘হে অভিমানী, দুঃখী মানুষ! তোমার যত বিষন্নতা, যত মলিনতা, অভিযোগ, অনুরাগ আর যত প্রেম আছে মনে; সমস্ত কিছু আমার নামে লিখে দাও। হালকা করো নিজের মনকে। আমি সাদরে গ্রহণ করছি, একটুও অভিযোগ করবো না।’

মানুষও বোধহয় এই আদুরী প্রশ্রয় শুনতে পায়, অক্ষরে অক্ষরে সেই প্রশ্রয় পালন করতে ব্যাকুল হয়ে ওঠে। আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নেয় তমসাবৃত রাত কে।

এই যে এতদিন ধরে মনে জমা করে রাখা পুষ্পির সুপ্ত অভিমান, যা এতগুলো দিনেও পৌছায়নি শাহরিয়ারের ধারে; সেগুলো সব যেন আজ এই তমসাচ্ছন্ন রজনীতে উগড়ে ফেলার বড়ো সাধ জাগে। অভিমানী মন ক্ষণে ক্ষণে ডুকরে কেঁদে ওঠে।
শুধুই কি অভিমানী মন? কিঞ্চিত ঈর্ষান্বিতও নয় কি? নচেৎ নিজের ভাগের ভালোবাসায় অন্যকারো বিন্দুমাত্রও ভাগ মেনে নিতে পারে না কেন মন? সবটুকুই নিজের জন্য চায় কেন!

এও অস্বীকার করা যায় না যে, পুষ্পি মেনে নিতে চেয়েছে বহুবার৷ কিন্তু শত চেষ্টা করেও প্রত্যেকবারই ব্যর্থ হচ্ছে সে। যত দিন যাচ্ছে, মনে চেপে রাখা সুপ্ত অনুযোগ বাড়ছে বৈ কমছে না। রোজ যতটা শাহরিয়ারের প্রতি মায়া বাড়ছে, টান বাড়ছে আর বাড়ছে ভালোবাসা, ঠিক ততটাই যেন অবাধ্য হয়ে উঠছে মন। সে কিছুতেই মানিয়ে নিতে পারছে না, পুরোনো হয়ে যাওয়া অতিতটার সাথে। শুধু মনে হচ্ছে, আদতে শাহরিয়ার তাকে ভালোবাসে না। যা করে তা কেবল করতে হবে বলেই করে, দায়বদ্ধতা থেকে করে। এই চিন্তাটাই ক্রমশ কুরেকুরে খাচ্ছে তাকে। মেনে নেয়ার অভিনয় চালিয়ে যেতে পারছিল না আর। শাহরিয়ারের শাসন অমান্য করা স্পর্ধা দেখাতেও দুবার ভাবছে না।
আজ যেন তার পুরোপুরি সুযোগ পেয়ে বসল।
বাচ্চাদের মতো আহ্লাদী হয়ে উঠল মন। ঠিক যেন এমন, মনটা আস্ত একটা সমুদ্দুর আর চোখদুটো তার সমুদ্র-স্রোত! নিরব জলধারা কপোল গড়িয়ে পড়ে।
শাহরিয়ার রাতভোর শত চেষ্টা করে রাগ ভাঙাতে চায়। বারংবার করে বলে, “এত কাঁদুনে বুড়ি! উহ্, আল্লাহ! কী করি এখন? আমার ভুল হয়েছে। মাফ করে দাও। হাত জোড় করছি, দেখ!”

শাহরিয়ার করজোড়ে বসে থাকে। পুষ্পির ঠোঁট উল্টে আসে কান্নায়। খুব কষ্ট করে নিয়ন্ত্রণ করে বলে, “আপনি আমার সামনে থেকে সরুন। আপনাকে আমার সহ্য হচ্ছে না। খুব রাগ লাগছে…..খুব। প্লিজ সরুন।”

শাহরিয়ার তার বউ এর এই হঠাৎ হঠাৎ অনুযোগে ভরপুর প্রতিক্রিয়ার কারণ ধরতে পারে না।
আরো নরম হয়ে বলে, “কেন সহ্য হচ্ছে না বলো? একটু বকেছি বলে এত রাগ? আগে তো কখনো এত রাগ করতে না! কি হচ্ছে ইদানিংকালে তোমার? একটু সদয় হও। আমায় নিয়ে কি তোমার মনে কোনো অভিযোগ আছে? খুলে বলো আমায়। না বললে বুঝব কেমন করে?”

কথাগুলো বলতে বলতেই সে পুষ্পির হাতে হাত রাখে। পুষ্পি বড্ড অবাধ্য হয়ে ওঠে ক্রমশ। ঝাটকা মেরে হাত সরিয়ে দিয়ে বলে, “ছুঁবেন না আমায়। একদম স্পর্শ করবেন না।”

এবার শাহরিয়ারের মেজাজও কিঞ্চিত বিগড়ে যায়৷ এত চাপা স্বভাব হলে কেমন করে হবে! কিছু তো বলা উচিৎ। না বললে বুঝবে কি করে!

শাহরিয়ারে রাগাটাও স্বাভাবিক। নরম করে ধরে রাখা হাত এবার শক্ত করে ধরে। ভ্রু কুঁচকে আসে তাঁর। বার কয়েক ঘনঘন শ্বাস নিয়ে নিজেকে ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করে। দাঁত কিড়মিড় করে বলে, “ছুঁব না মানে? একশবার ছুঁব। এই দুনিয়ায় তোমার প্রতি আমার সবচেয়ে বেশি হক, সবচেয়ে বেশি অধিকার। শাসন করবো, ভালোবাসবো, ছুঁতে ইচ্ছে হলে ছুঁবো। তুমি আমায় নিষেধ করবে কেন? কী করেছি আমি? চুপ করে থাকবা না। বলো কী করেছি আমি?”
নিশুতি রাতটা মিটিমিটি হাসে, এক জোড়া রাগান্বিত কপোত-কপোতী দেখে। চাঁদ-তারা যেন ফিসফিসিয়ে বলে, ‘চুপ চুপ! হাসিস না। অগ্নিকান্ড বেঁধে যাবে যে!’

পুষ্পি তাচ্ছিল্যের সহিত হাসে। মুখ বাঁকিয়ে বলে, “হুহ! কিছু করেননি। দূর্ভাগ্য আমার।” বলেই শুয়ে পড়তে চায়।
এবারও শাহরিয়ার আটকায়। পুষ্পির এই অদ্ভুত আচরণের পেছনে যে তার বড়োসড় একটু ভূমিকা রয়েছে তা বুঝতে আর বাকি থাকে না। সদ্য জন্মান রাগ মূহুর্তেই মিলিয়ে যায়। খুব অনুনয়ের স্বরে বলে, “শুবে না প্লিজ৷ আমায় বলো, কেন আমার প্রতি তোমার এত অভিমান আজকাল? আমি জানতে চাই, প্লিজ মনে চেপে রেখো না।”

পুষ্পি শাহরিয়ারের দিকে চায়। এবার আর নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চায় না। বরং প্রশ্রয়ে আশ্রয় খুঁজে পায়। টপাটপ অশ্রুসিক্ত আঁখি যুগলে চেয়ে থেকে বলে, “আমি ভীষণ হিংসুটে। আমার কোনো কিছুতে কারো ভাগ সইতে পারছি না। আপনার সম্পূর্ণ প্রায়োরিটি না হতে পেরে মন ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আর মানিয়ে নিতে পারছি না।”
শাহরিয়ার কিচ্ছু বুঝতে পারে না। সে পুষ্পির গালে উষ্ণ হাত রাগে। প্রেমময় হয়ে বলে, “এই বোকা? কে বলেছে তুমি আমার সম্পূর্ণ প্রায়োরিটি না? এই অল্প দিনে তোমায় যতটা প্রায়োরিটি দিয়েছি, পূর্বে কাউকে দেইনি। তোমার থেকে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু নেই আমার জীবনে। ট্রাস্ট মি।”

পুষ্পি বলে, “মিথ্যা কথা, মিথ্যা কথা! আপনার প্রথম প্রায়োরিটি তো অন্যকেউ ছিল! আমি ভাগ বসিয়েছি, তাই না? আমি মানিয়ে নিতে পারছি না নিজেকে এই সত্যের সাথে৷ দোষ আমার, আপনার না। আপনাকে আমি দোষ দিচ্ছি না, বিশ্বাস করুন। শুধু আমায় সময় দিন, আমার অসভ্য ব্যবহার সহ্য করে নিন ততদিন, আমার সময় লাগবে।”

শাহরিয়ারের বুকটা ধুক করে ওঠে। চারুলতার কথা আকস্মিক মনে পড়ে গেল। বেমালুম ভুলে গিয়েছিল চারুর কথা। কিন্তু চারুলতার কথা পুষ্পি কিভাবে জানল ভেবে বিচলিত হলো।
পুষ্পিকে কাছে টেনে নেয়। মাথায় হাত রেখে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। ধীরে ধীরে জানতে চায়, “চারুর কথা কি করে জানলে?”

পুষ্পি চুপ করে থাকে। আর একটা কথাও বলতে চায় না সে এ ব্যাপারে। শাহরিয়ার বুঝতে পারেনা কিভাবে সামলাতে, কিভাবে মানাবে পুষ্পিকে, কিভাবেই বা পুরো বিষটাকে সহজ করবে। তবে আপাতত আগে পুষ্পকে স্বাভাবিক করতে চায় সে। তাই পুষ্পিকে কাছ থেকে সরিয়ে বসায়৷ মুখ বিমূর্ষ করে বলে, “ওকে, ওকে….লুক এট মি। আমি এক্সপ্লেইন করছি।”
পুষ্পি মুখে জোর পূর্বক হাসির রেখা ফুটিয়ে বলে, “আপনাকে দোষ দিচ্ছি না আমি। আপনার তো দোষ নেই এতে। আমি বুঝতে পারছি তো। এক্সপ্লেইন করতে হবে না৷ অনেক রাত হয়েছে। ঘুমাতে হবে, সকালে কলেজ আছে না আপনার? আসুন ঘুমাবেন।”

শাহরিয়ার মলিন হাসে। বলে, “কিন্তু তোমার ভুল ধারণা না ভাঙিয়ে আমি কখনোই ঘুমাতে যাব না, পুষ্প। এবং তোমাকেও ঘুমাতে দিব না। তুমি একটা ভুলে বসবাস করছ। এই ভুলের রাজ্য থেকে বের তো তোমায় হতেই হবে প্রিতমা!”

এটুকু বলে একটু থামে। দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে বলে,
“আমি জানি না তুমি কিভাবে জেনেছো চারুর কথা। এও জানি না কি জেনেছো। কিন্তু এটা জেনে রেখো, চারু যেমন আমার জীবনে সত্য, তুমি তার থেকেও বড়ো সত্য। তোমার থেকে বড়ো সত্য আর কিছু নেই, আমার জীবনে।”

পুষ্পির বাধভাঙ্গা কান্না। বলে, “আপনি তো তাঁকেও ভালোবাসতেন, অনেক ভালোবাসতেন৷ প্রথম প্রেম আপনার। হোক অতিত, ভালো তো বাসতেন।”

শাহরিয়ার পুনরায় পুষ্পিকে বাহুডোরে জড়িয়ে নেয়। বলে, “হ্যাঁ, বাসতাম।”

এরপর নিরবতা। এই নির্মম সত্যের পর তো প্রকৃতি নিরব হতে চাইবেই।
নিরবতা ভেঙে শাহরিয়ারই বলে, “এই সামান্য ফ্যাকাসে অতীত নিয়ে এত যন্ত্রণা তোমার? সত্যিই বোকার স্বর্গে বাস তোমার। আমার জীবনে যদি আরো একশটা প্রেমও আসতো, তোমার জায়গা তবুও কেউ নিতে পারত না, পুষ্প। তুমি নিজেও জানো না, তোমায় আমি কতটা ভালোবাসি। কসম করে বলছি, একজনম ভালোবেসেও তুমি এই ভালোবাসার ঋণ শোধ করতে পারবে না।”

এরপর রাতটা ফিসফিসে আওয়াজ ছাড়ে। ঝোপঝাড় হতে ঝিমিয়ে পরা পোকারা যেন সজিব হয়ে ওঠে। উত্তাল কল্লোল ভেসে আসে আনাচ-কানাচ হতে। জোনাক পোকা টিপটিপ আলো নিয়ে নৃত্য করে। কি সুন্দর প্রকৃতির আমোদ! প্রেমময় জুটিটার প্রেম বুঝি ছড়িয়ে পরে জগতের প্রতিটি কোনায়-কানায়!

পুষ্পির মন মোমের মতো নরম হয়ে আসে! সত্যিই এত প্রিয় সে মানুষটার কাছে! বড্ড আশ্চর্য ঠেকে নিজের কাছে। বিশ্বাস করতে কুন্ঠা বোধহয়। নিজের ডান হাত দিয়ে শাহরিয়ারের বা’হাত ধরে। তুলতুলে নরম কন্ঠে সুধায়, “আপনার এত অহমিকা নিজের ভালোবাসা নিয়ে?”

এইযে এই রাতটার এত দীর্ঘ কথপোকথন, এই পুরোটা সময়ে এই প্রথম শাহরিয়ার এত উচ্চস্বরে হাসল। সেই প্রথম দিনের মতোই পুষ্পি শাহরিয়ারের মুখ চেপে ধরে বলে, “উফ! চুপ, চুপ! সবাই জেগে যাবে।”
শাহরিয়ার মুখের থেকে হাত সরায়। পুরোপুরি সরায়ও না। হাত দিয়ে হাত ধরে রাখে গালের কাছে। ফিসফিসিয়ে বলে, “হাসি নাহয় বন্ধ করলে, দাম্ভিকতা কমাবে কেমন করে? আমার নিজের বউ নিয়ে অহংকার, বউয়ের প্রতি নিজের প্রেম নিয়ে অহংকার। জন্মান্তরেও এই ঔদ্ধত্য তুমি বিচূর্ণ করতে পারবে না, সুন্দরীতমা। আমার এই অহংকার তো আল্লাহ প্রদত্ত, প্রিয়তমা। তিনি আমায় কক্ষনো ঠকায়নি, কক্ষনো না। রূপার বিনিময়ে সে আমায় সর্বদাই অমূল্য রত্ন দিয়েছে। এত দম্ভ কই রাখি কও তো?”

মন ভরে যায়, চোখ ভেসে যায় পুষ্পির। কন্ঠরোধ হয়ে আসে আনন্দ অশ্রুতে। এত প্রেমময় এই দুনিয়া! এত নির্মল সুন্দর, এত দৃঢ় আল্লাহ প্রদত্ত এই বাঁধন! এই প্রথম সে তার নিজের নিগূঢ় প্রেমও উপলব্ধি করতে পারে। শাহরিয়ারের প্রণয়কে প্রশ্রয় দিয়ে বলে,
“আমার দাম্ভিক স্বামী, আমি আপনার দম্ভের প্রেমে পড়ে গিয়েছি। প্লিজ উদ্ধার করুন।”

শাহরিয়ার এবার কোনো বাক্য ব্যয় করে না। কেমন যেন ধমকে যায়! আবারও নিরবতা। এবং এবারও নিরবতা ভাঙার দ্বায়িত্ব শাহরিয়ারই গ্রহণ করে। সে ডাকে, “পুষ্প।”
পুষ্পি সায় দেয়, “হুহ!”
আবার ডাকে, “পুষ্প”
পুষ্পি পুনরায় সায় দেয়।
এমন করে চলতেই থাকে, চলতেই থাকে। পুষ্পি ক্ষান্ত হয়ে যায়। কিন্তু মানুষটার বোকা-কান্ড থামে না। সে ডেকেই যায়, বারংবার ভিন্ন-ভিন্ন নামে।
পুষ্পি মৃদু হেসে বলে, “পাগল হলেন?”

“হ্যাঁ।” শাহরিয়ার যেন আপসেই মেনে নিল।
পুষ্পি বলে, “আধ পাগল স্বামী আমার, হায় দুঃখ!”

মুখচোরা লাজুক মেয়েটার এমন স্পষ্ট সম্বোধনও বারংবার অস্পষ্ট লাগে শাহরিয়ারের কাছে। শ্যামবর্ণ মুখটা অনুভূতির সর্বোচ্চ আসন গ্রহণ করে লাল বর্ণ ধারণ করে। পূর্ণ গতিতে চলা বৈদ্যুতিক ফ্যানের নিচে বসেও চুপচুপে ঘামে ভিজে যায় শরীর। মেয়েটার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কথাতেও কেন মনটা এমন অনুভূতি প্রবণ হয়ে উঠছে, কিছুতেই ভাবতে পারে না।
দুটো মানুষের প্রনয়ণ আদান-প্রদানের মূহুর্তটাকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মূহুর্ত হিসেবে ঘোষণা করতে ইচ্ছে জাগে।
পুষ্পি এক হাতে গলা জড়িয়ে ধরে, বুকে মাথা রাখে। শাহরিয়ার প্রশ্রয় পেয়ে আকুলতা নিয়ে আশ্চর্য স্বীকারোক্তি দেয়, “এই রাত সাক্ষী রেখে বলছি পুষ্প, তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় আশির্বাদ! তুমি আমার প্রাণাধিক প্রিয় হয়ে উঠছ ক্রমশ।”

(চলবে)….