#একি_বন্ধনে_জড়ালে_গো_বন্ধু
#পার্ট_১৭
#কাজী_সানজিদা_আফরিন_মারজিয়া
পুষ্পির কথা শেষ হতে না হতেই দরজায় কড়া নাড়ে, “কাকী? ও কাকী….কাকী।”
কে ডাকছে তার বুঝতে কষ্ট হয় না পুষ্পির। শাহরিয়ারের দিকে চেয়ে ‘পাত্তা না দেয়া’ টাইপ দৃষ্টি দিয়ে দ্রুত দরজা খুলতে যায়। শাহরিয়ার কপাল কুঁচকে, দাঁত খিচে দাঁড়িয়ে থাকে। প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হচ্ছে। নিজের উপর, পুষ্পির উপর, সবার উপর। পুষ্পির একেবারেই কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। মেজাজ কি কেবল তার একার আছে? আর কারো নেই?
দরজা খুলে পুষ্পি হাঁটু গেরে বিচ্ছুর সাথে কথা বলতে থাকে। বিচ্ছুটা শাফিনের বড়ো ভাই এর ছেলে। নাম শাওন। নামটা প্রথম শুনে পুষ্পি মনে মনে ভেবেছিল, এই গোষ্ঠীশুদ্ধ সব ছেলেগুলোর নামই ‘শ’ দিয়ে নাকি?
পুষ্পি বলল, “কি বাবা? কিছু লাগবে তোমার?”
মেয়েটা এত শ্রুতিমধুর ভাবে ‘বাবা’ বলে সম্বোধন করেছে যে, যে কারো মন স্পর্শ করবে। শাহরিয়ারের ক্ষেত্রেও ব্যাতিক্রম ঘটল না। সে খাটে গিয়ে বসে দেখতে লাগে শাওন এর সাথে পুষ্পির কথপোকথন।
তিন বছরের শাওন আধোআধো বুলিতে বলে, “কাকী? তুমি খেলবা না আমাল সাতে?”
শাওনের কথার ধরণে পুষ্পি হেসে ফেলে। শাহরিয়ারও হাসে মৃদুমন্দ। পুষ্পি বলল, “খেলবো তো, বাবা। চলো যাই।”
কথাটা বলেই শাহরিয়ারের দিকে চেয়ে, মুখ বাকিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যেতে লাগে। শাহরিয়ার দ্রুত এসে শাওনকে কোলে তুলে নেয়। বলে, “আব্বু? আমরা লুকোচুরি খেলবো। তুমি বাহিরে গিয়ে লুকাও, আমরা তোমায় খুঁজে বের করবো।”
শাওন বলে, “ছত্তি?”
শাহরিয়ার এক গাল হেসে বলে, “তিন ছত্তি, বাবাই। যাও, দ্রুত। না ডাকা অব্দি বের হবা না। মনে থাকবে?”
শাওন শাহরিয়ারের কোল থেকে নেমে বলে, “মনে তাকবে।” বলেই দ্রুত লুকাতে চলে যায়।
পুষ্পি হতবাক। মনে মনে ভাবে, কেমন ফাজিল লোক! রগে রগে শয়তানি বুদ্ধি।
পুষ্পি তাও পাত্তা না দিয়ে চলে যেতে চাইলে দরজা আটকে দেয় শাহরিয়ার।
বলে, “ভালো মেয়ের মতো তৈরি হয়ে নাও পুষ্প। জিদ করবা না। মাথাটা গরম হয়ে যাচ্ছে।”
পুষ্পি মুখে কোনো প্রতিবাদ না করে। খাটের সাথে হেলান দিয়ে বসে থাকে৷ শাহরিয়ার অবাকের চূড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে ক্রমশ। এমন ঘাড়ত্যাড়া কবে থেকে হলো মেয়েটা!
সে অবাক বিস্ময়ে বলে, “কি হলো? বসে গেলে যে?”
পুষ্পি একদমই পাত্তা না দিয়ে বলল, “যাব না বলেছি না? নিজে যান।”
শাহরিয়ার বুঝে যায়, এই মেয়েকে এই মূহুর্তে আর ধমকে-টমকে, মিছে রাগ দেখিয়ে লাভ নেই। মাথায় তার শয়তানি ভূত চাপে। বলে, “আমি যে তোমার জান, তাতো জানিই, জানেমন! সেটা কি বলতে হয়?”
পুষ্পি হতবাকের স্বরে বলে, “ইশশ! যেতে বলেছি….জান বলিনি। আপনাকে জান-টান বলবো, বয়েই গেছে আমার!”
শাহরিয়ার আরো রসিক হয়ে বলে, “আরেহ বউ! লজ্জা পাও কেন? নিজের স্বামীকেই তো বলছো। আমি বুঝি তো।”
এরপর নিজের শার্ট খুলতে খুলতে বলে, “আচ্ছা, ঘুরতে না গেলে এদিকে আসো, কাছে আসো। কাজ করো। আমার পিঠে তেল মালিশ করে দাও!”
পুষ্পি বিস্ময়ে স্তব্ধ, কিংকর্তব্যবিমুঢ়। আর্তনাদের স্বরে বলে, “আপনি প্রচন্ড খারাপ স্বামী তো! নিজের বউকে কেউ এভাবে খাটায়? হাত টেপান, পা টেপান, ঘাড় টেপান, মাথা টেপান, এখন আবার বলছে তেল মালিশ করে দিতে! নির্দয় পুরুষ মানুষ! এত খারাপ আপনি! আমি পারব না। আল্লাহ আপনাকে দুটো হাত দেয়নি? হুম? নিজের দুটো হাতের ব্যবহার করুন।”
শাহরিয়ার অট্টহাসিতে মাতিয়ে ফেলে ঘর। হাসতে হাসতে হেলে পড়ে সে। পুষ্পির কোলে মাথা রেখে ওর চোখে চেয়ে বলে, “আল্লাহ আমায় দুটো হাতও দিয়েছে। দুটো নরম হাতওয়ালা একটা বউও দিয়েছে। আমার যেটা ইচ্ছে আমি সেটার ব্যাবহার করবো৷ তোমার অসুবিধা কিসে?”
পুষ্পি হতবাক, হতবিহ্বল! শয়তানি কথাবার্তা সব ঠোঁটের আগায় প্রস্তুত থাকে সর্বদা।
পুষ্পি শাহরিয়ারকে ঠেলে উঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে করতে বলে, “দেখি উঠুন। আমি পারব না আপনার কোনো কাজ করতে।”
শাহরিয়ার নড়েও না, চড়েও না। মুখের হাসি প্রস্ফুটিত করে বলে, “ও বুঝেছি, তুমি পারিশ্রমিক চাচ্ছো? আগে বলবা না? ছোট বেলায় নানা-দাদার হাত-পা টিপে দিলে, পাকা চুল বেছে দিলে, পিঠে তেল মালিশ করে দিলে দুই টাকা করে দিত। আচ্ছা যাও, তোমায় নাহয় পার-মিনিট পাঁচ টাকা করে দিব।”
পুষ্পি ব্যার্থ হয় গাম্ভীর্য ধরে রাখতে। পুরোদমে হেরে গিয়ে হেসে ফেলে। কিঞ্চিৎ দুঃখ প্রকাশ করার মতো করে বলে, “উফফ! এত জ্বালান আপনি আমায়। দেখি সরুন তো…..”
শাহরিয়ার বোঝে পুষ্পি নরম হতে শুরু করেছে। সুযোগের সঠিক ব্যবহার করে সে বলে, “তো মহারানী? আমরা কি যাচ্ছি তবে?”
পুষ্পি ভাব নিয়ে বলে, “দ্রুত রুম থেকে বের হন, রেডি হবো।”
শাহরিয়ার বলে, “বের হতে হবে কেন? আমি কি আটকে রেখেছি তোমাকে? তুমি তোমার কাজ করো, আমি থাকাতে কি এসে-যায়?”
পুষ্পি কপট রাগ দেখিয়ে বলে, “আপনি বের হবেন?”
শাহরিয়ার দুঃখ পাওয়ার ভঙ্গিমায় বলে, “এরম করো ক্যান? একটু মায়া-দয়া হয় না, এমন নিষ্ঠুর আচরণ করতে?”
পুষ্পি মুখ টিপে হাসে। জবাব দেয়ার আগেই দরজায় নক হয়, “কাকী? তোমলা কি আমালে কুজে পাও না? এই দেকো আমি।”
শাহরিয়ার পুষ্পি দুজনই হেসে ফেলে। শাহরিয়ার দরজা খুলে শাওনকে কোলে নিয়ে বলে, “ওরে বাবাটা! পেয়ে গেলাম তোমাকে….চলো আমরা ওইদিকে যাই।” বলে শাওনকে নিয়ে শাহরিয়ার বেড়িয়ে আসে।
পুষ্পি বিড়বিড় করে বলে, “পাগল একটা!”
শাফিনের বড়ো ভাই শফিক আর ভাবী রত্নার কথা কাটাকাটি হয় রুমের মধ্যে। রত্না বলে, “মাইনষেরও কপাল, আর আমারও কপাল। কত খাতির যত্ন আর ভালোবাসা পায় মাইনষের বউরা। আর আমার পিছামারা কোয়ালে, পিছার বাড়ি ছাড়া আর কিছু নাই।”
শফিক বলে, “তোমার মুখে কি পিছার বারি আর কাইছার বারি ছাড়া আর কোনো ভালো কতা আহে না? কোনদিক দিয়া তুমি অসুখী কও দেহি? খাওন-পরন কোন দিক দিয়া অভাবে আছো? শোকর বলতে কিছু আছে তোমার জীবনে? হারা জীবন খালি মাইনষের লগে রিশ-পিউন!”
রত্না কেঁদেকেটে অস্থির হয়ে বলে, “হ, আমি তো দুইন্নাইর খারাপ। আপনেরা সব ধোঁয়া তুলসীপাতা। আপনের ফুফুরে দেহেন আর আপনের মা’রে দেহেন। হেয় হের বউর নামে কত সুনাম করে, আপনি জীবনে দেখছেন আমার নামে আপনের মা’রে সুনাম করতে? সুযোগ পাইলে এক বস্তা বদনামের ঝুলি খুইলা বয়।”
শফিক মায়ের পক্ষ নিয়ে বলে, “হ, নিজে আগে নিজের লগে শাহরিয়ারের বউরে মিলাইয়া দেহ৷ হেয় তোমার লাহান ঘুইরা ঘুইরা শাশুড়ীর নিন্দাগান্দা করে? মিলতাল দিয়া চলতারো না আর দোষ দেও আমার মায়ের।”
রত্নার কান্নার মাত্রা আরো বাড়ে। সে বলে,”এই জীবনে আপনে আমার ভালো দেখছেন? হেই বিয়ার শুরু হইতে এহন পর্যন্ত সব দোষ খালি আমারই। থাহুম না আমি আর এই সংসারে।”
শফিকও উল্টো পার্ট নিয়ে বলে, “হ, যাও যাও। পায় ধইরা বাইন্দা রাহুম যেন হেরে। যার মন চাইবো থাকবো, মন না চাইলে যাইবো গা। আমার কি? আমার পোলারে না লইয়া গেলেই হইবো।”
রত্না প্রতিবাদ করে বলে, “আপনের পোলা মানে? দশ মাস দশদিন গর্ভে ধরছি আমি, পাইলা-লাইলা বড়ো করতাছি আমি আর আপনে আপনার পোলা কইলেই দিয়া দিমু আপনেরে? আপনার হেই আশার গোড়ায় বালি মারি।”
শফিক মোক্ষম জবাব পায়। সে বলে, “নিজেরডা তো ভালোই বোঝো। আমার মারে যে ফালায় দিতে কও, হে আমারে দশমাস গর্ভে ধরে নাই? তোমার পোলা বড়ো হইবো না? হের ঘরে বউ আনবা না? নিজের গার দিকে চাইয়া কতা কইও, বুজ্জ?”
রত্না ব্যাগ গোছাতে গোছাতে বলে, “আপনের লগে আর একটা কতাও কইতে চাই না আমি। আপনে আপনের মার আঁচলের তলে ঢুইকা বইয়া থাহেন। খবরদার আমার বাপের বাড়িতে পাও রাখবেন না। গেলাম আমি।”
শফিক বলে, “হ, যাও যাও। আমার ঠেকা পড়ছে তো আনতে যাওনের লাইগা। দুই দিন পর নিজে আইয়াই কুল পাইবো না, হুহ!”
শাহরিয়ার শাওনকে নিয়ে বৈঠকখানায় বসে খেলছে তখন। বাচ্চাদের সাথে বাচ্চাদের মতো করেই উৎফুল্ল হয়ে ওঠে মানুষটা। চোখেমুখে উচ্ছ্বাস খেলা করে। দূর হতে আছমা আর সাবেরী খাতুন তা মুগ্ধ হয়ে দেখে। সাবেরী খাতুনের হঠাৎ-ই নাতি-নাতকুরের শখ জাগে। ছেলেটা তার কত ভালোবাসে বাচ্চাকাচ্চা। তুলতুলে নরম অনুভূতিতে ভোরে ওঠে মন।
পুষ্পি তৈরি হয়ে বেড়িয়ে আসে। শাহরিয়ার তাকিয়ে সুন্দর করে হাসে। প্রশংসা করে বলে, “সুন্দরী বউ আমার! মাশাআল্লাহ!”
শাওন শাহরিয়ারকে অনুকরণ করে বলে, “সুন্দলী বউ!”
পুষ্পি শাওনের গাল টেনে বলে, “সুন্দর বাবা।”
রত্না তখন হনহনিয়ে ব্যাগপত্র নিয়ে ভেতর থেকে বেড়িয়ে আসে। শাওনকে টেনে নিয়ে বলে, “আর একদন্ডও থাহুম না এই বাড়িতে। চল বাপ।”
আছমা দ্রুত এগিয়ে আসে। সাথে সাবেরী খাতুনও আসে। আছমা বলে, “কই যাইতাছ বড়ো বউ?”
রত্না ক্ষেপে উঠে বলে, “জাহান্নামে যাই। আপনে পথের সামনের থেইকা সইরা খাঁড়ান আম্মা।”
সাবেরী খাতুন শান্ত স্বরে বলে, “শান্ত হয়ে বসো মা। কি হয়েছে খুলে বলো। সমস্যা যখন আছে, তার সমাধানও আছে। খুলে না বললে বুঝবো কেমন করে? শফিক কিছু বলছে?”
রত্না বলে, “কেউ কিছু কয় নাই। এই বাড়ি সবাই সাধু খালি আমি একলা খারাপ। এই সাধুসন্ন্যাসীগো লগে থাহা আমার পক্ষে সম্ভব না ফুফুআম্মা। আপনে আমারে বাঁধা দিয়েন না।”
বলেই সে শাওনকে নিয়ে বেড়িয়ে যায়৷ ভেতর থেকে শফিক চেঁচিয়ে বলে, “হে যেদিক মন চায় যাক, আমার পোলারে থুইয়া যাইতে কও।”
রত্না সেদিকে কর্ণপাত না করে শাওনকে নিয়েই বেড়িয়ে যায়। কারো কোনো কথাই সে শোনে না।
আছমা কাঁদোকাঁদো হয়ে বলে, “হায় আল্লাহ! এই ঘরডার মইধ্যে এক রত্তি শান্তি নাই।”
মেঝোজন অনুপ্রাণিত হয়ে শাফিনের মেঝো ভাই শফিউলকে বলে, “বড়ো ভাবী ঠিকই করছে। কোনদিন জানি আমারও ধৈর্যের বাঁধ ভাইঙ্গা যায়।”
উত্তরে শফিউল বলে, “দেহ? এহন আবার তুমি কাহিনী তৈরি কইরো না। মেজাজ-মুজাজ গরম আছে এমনেই।”
বলেই সে ঘরের ভেতর চলে যায়। মুখ বাঁকিয়ে বউ অন্যদিকে চলে যায়।
সাবেরী খাতুন আছমাকে শান্তনা দেয়, সব ঠিক হয়ে যাবে বলে। পুষ্পি আর শাহরিয়ারকে ইশারা করে চলে যেতে।
শাহরিয়ারও বলে, “চলুন জনাবা। আপনাকে আমার পছন্দের একটা স্থান ঘুরিয়ে আনি। এসব ঝগড়াঝাটি দেখে বিভ্রান্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। আপনার সাথেও আমার একটা বিশাল ঝগড়াঝাটি করার ইচ্ছে আছে। সুতরাং এক্সপেরিয়েন্স নিয়ে রাখুন, কাজে লাগবে।”
বলেই একগাল হাসে। তারপর এগিয়ে চলে।
পুষ্পি গায়ের শালটা ভালোভাবে জড়িয়ে নিয়ে শাহরিয়ারকে অনুকরণ করে। মুখে সুন্দর হাসি। পাগল পাগল কথাগুলোও শাহরিয়ার এত সুন্দর করে বলে যে, না হেসে পারা যায় না।
শাহরিয়ার পুষ্পিকে নিয়ে একটা ঘন বনজঙ্গলে আসে।
শীতের সূর্যরানী সবুজ অরণ্যের ফাঁকফোকর দিয়ে উঁকি মারে। চিকচিক করে চোখের মনিকোঠায় এসে লাগে। পুষ্পির মাথায় মধ্যখানে সিঁথি করা। দুই পাশে কিছু কোকড়ানো ছোট ছোট চুল বেড়িয়ে আসে। শাহরিয়ার হাঁটতে হাঁটতে তা লক্ষ্য করে দেখে। বেড়িয়ে আসা চুলগুলো কানের কিনারে গুঁজে দেয়। পুষ্পি মায়াকাড়া হাসে। চারপাশের গাছগাছালি অতিথি পাখিদের কলরবে মেতে ওঠে।
এত প্রাণবন্ত এই সময়, শাহরিয়ারের বাক্সবন্দি করে রাখতে ইচ্ছে করে।
দূরে সরিষা ক্ষেত দেখা যায়। পুষ্পি বলে, “আমি ওখানে যেতে চাই। কি সুন্দর, দেখুন।”
শাহরিয়ার সহাস্যে বলে, “চলো আমার হলুদিয়া পাখি, তোমায় হলুদে রাঙাই।”
তারপর গুনগুন করে গায়, “হলুদিয়া পাখি সোনারই বরণ,
পাখিটি ছাড়িল কে?
পাখিটি ছাড়িল কে রে আমার,
পাখিটি ছাড়িল কে!”
কী সুন্দর করে গায় মানুষটা! পুষ্পি মুগ্ধ না হয়ে পারে না।
সরিষা ক্ষেতে এসে পুষ্পি হলুদে মিশে গেল। অন্যরকম উন্মাদনায় মেতে উঠল তার মন। উজ্জ্বল হাসির কারণে চোখ দুটো ছোট হয়ে আসে। তারার মতো ঝিলমিল করে রোদ লাগা চুল। শাহরিয়ার কিছু ফুল ছিড়ে পুষ্পির কানে গুঁজে দেয়। অপার সৌন্দর্যে মাতোয়ারা হয়ে বলে, “ফুল হয়ে প্রিয় এসেছ ধরায়,
সঁপেছি তোমায় চোখেরও তারায়।
মনেরই মলিন মুছেছি সেদিন,
ফুল হয়ে তুমি এসেছ যেদিন।”
মধ্যদুপুর চিকচিক করে জ্বলে। কুয়াশা লাজে আড়ালে লুকায়। এত প্রেমময়, চোখে দেখা দায়। ফিনফিনে শীত শরীর ছুঁয়ে যায়!
(চলবে)…..