একি বন্ধনে জড়ালে গো বন্ধু পর্ব-০২

0
13

#একি_বন্ধনে_জড়ালে_গো_বন্ধু
#দ্বিতীয়_পার্ট
#কাজী_সানজিদা_আফরিন_মারজিয়া

ঘরে দুটো জোনাকি পোকার আগমন হলো। পটপট করে পোকা দুটো আশেপাশে ঘুরতে লাগল। মানুষটা ম্যাজিকের মতন করে একটা জোনাকি খপ করে হাতের মুঠোয় পুরে নিল। পুষ্পি সম্মুখে এনে ছেড়ে দিল। জোনাকিটা একবার পুষ্পির কাঁধে বসল তারপর পুনরায় জানালা দিয়ে বেড়িয়ে গেল। মানুষটা ঘন কালো ভ্রু যুগল কুটি করে বলল,
“আচ্ছা একটা কথা বলো? কবুল বললে কাকে? আমার নাম না শুনেই কবুল বলে ফেললে? ইশশ এত তাড়া ছিল বিয়ে করার!”
পুষ্পি খুব লজ্জা পেল। মনেই করতে পারল না, কি নাম বলেছিল। কখন যে বিয়েটা হয়ে গেল, কেমন করে যে হয়ে গেল, কিচ্ছুই টের পেল না। বলল, “আমার স্মরণ শক্তি খুব দূর্বল।”

মানুষটা জানে পরিস্থিতি। পরিবার ছেড়ে আসা একটা মেয়ের মন, মস্তিষ্ক কেমন থাকতে পারে সে ব্যাপারে তার ধারণা আছে। তাছাড়া পুষ্পির সাথে বিয়েটাও হুট করেই হয়েছে কেবল তার মায়ের তাড়ায়। খুব একটা জানার সুযোগ পেয়েছেই বা কখন মেয়েটা। এতশত বুঝেও তার একটু রশিকতা করার চেষ্টা। শুতে শুতে বলে,
“কিন্তু এখন আমি নিজে তো নিজের নাম বলবো না। তুমি খুঁজে নিবা। নিজের বরের নাম খোঁজার মাঝেও প্রেম আছে। একটু নাহয় প্রেম দিলা আমায়, ক্ষতি কি?”
পুষ্পি ভাবে, মানুষটা কি ঠোঁটকাটা স্বভাবের। যা মুখে আসে তাই বলে ফেলে! কি হয় নিজের নাম নিজে বললে? সে নাহয় অসচেতনতায় নামটা ভুলে গিয়েছে, তাই বলে এত ঢং!
এসব ভাবতে ভাবতে পাশে ফিরে চমকে গেল। এই সেকেন্ডের মাঝে ঘুম! পায়ের উপর পা রেখে, বুকের উপর দুহাত রেখে সটান হয়ে ঘুম! সুখী মানুষ! কি দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তে পারে!

পুষ্পি নিজেও একপাশ হয়ে শুয়ে পড়ল। ভারী অস্বস্তি হচ্ছে ঘুমাতে। বাতি না নিভিয়েই চোখ বুঝতে নিল, আকস্মিক এক কন্ঠস্বর ভেসে এলো,
“বাতি নিভাবে না?”
পুষ্পি হতচকিত হয়ে পাশ ফিরে চাইল। বিস্ময় নিয়ে কইল, “আপনি…..ঘুমাননি?”

মানুষটার চোখ এতক্ষণ বন্ধই ছিল। এবার সেই বন্ধ চোখ মেলে, শীতল চোখে চাইল মেয়েটার দিকে। রহস্য করে খুব ধীরে ধীরে বলল, “কেন? আমি ঘুমিয়ে পড়লে বেশি খুশি হতে? তুমি কী ভয় পাচ্ছ?”
পুষ্পি এতক্ষণ ভয় পায়নি, এবার পেল। ভ্রুকুটি করে চুপ হয়ে রইল।
মানুষটা ভারী মজা পাওয়ার মতো করে হাসল। মুখে হাসি রেখেই আঁখি যুগল বন্ধ করে বলল,
“লাইট অন থাকলে আমার ঘুমাতে কিঞ্চিৎ অসুবিধে হয়।”
পুষ্পি যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল। খুশিও হলো বোধহয়। মুখে ‘ওহ’ আওয়াজ করে দ্রুত বাতি নিভিয়ে দিল।
পাশের মানুষটার হাসি বিস্তৃত হয়। আল্লাহ তাকে এত বোকা আর ভীতু বউ দিল!

মেয়েটা নিজের বরের দ্রুত ঘুমানো দেখে বিস্মিত হলো ঠিক, আদতে সে নিজেও খুব দ্রুতই ঘুমিয়ে পড়ল। হয়তো শরীর ভীষণ ক্লান্ত তাই!
.
জীবনের প্রতিটি পাতায় মানুষের জন্য নতুনত্ব থাকে। দিন বদলের সুর প্রত্যেকটা মানুষের জীবনেই দোলা দেয়। হয়তো আগে, নয়তো পরে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা কাউকে ঠকান না! ব্যর্থ, অনর্থক জীবনটা কখন যে অর্থবহ, সুখের সাগর হয়ে উঠবে টেরই পাওয়া যাবে না।
পৃথিবীর প্রত্যেকটা ঘরে আলাদা আলাদা গল্প, অন্যরকম জীবন, অন্যরকম সুর, ছন্দ।
রোজ রাত কেটে যায় নির্জনতায়, নিরবতায় কিংবা গভীর প্রেমে।
এই যে এই মধ্যরাতে এক পুরুষ মানুষ মুগ্ধ নয়নে দেখছে তার সদ্য বিয়ে করে আনা নববধূকে; এই গল্পটাই বা জানে ক’জন! সারা রাত জেগে জেগে কাটিয়ে দিচ্ছে আকুলতা, ব্যকুলতায়, তাও বা জানে ক’জন! তার চোখেমুখে যে তৃপ্তি, হৃদয়ে জন্মানো নতুন এক মায়ার রাজ্য, এ ব্যপারটি তো আর কেউ জানবে না, উপরওয়ালা ব্যাতিত। এমনকি মেয়েটাও….
মানুষ হাসফাস করে উঠে বসে। জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। আকাশের দিকে চায়। জীবন বদলের সুর মেনে নেয় নিদারুণ মুগ্ধতায়।

পুষ্পির খুব সকাল সকাল ওঠার স্বভাব। ফজরের আজান কানে আসতেই ঘুম ভেঙে যায় তার। আজও তার ব্যতিক্রম হলো না। ঘুম ভেঙে আড়মোড়া দিয়ে কয়েক সেকেন্ড লেগে গেল বুঝতে, আজ তার জীবনে নতুন ভোরের সূচনা। এই জীবন অন্যরকম, এই জীবনের রঙ ব্যাতিক্রম। নতুন জীবনের ভোর বেলাটাও চমকে দেয়ার মতো সুন্দর! পাশ ফিরে যখন চাইল, দেখল মানুষটা তখনও সজাগ৷ নিশ্চুপ চেয়ে আছে ওর দিকেই!
পুষ্পি আমতা আমতা করে বলল,”আপনি জেগে আছেন?”
মানুষটা পুষ্পির প্রশ্নের জবাব দিল না। বলল,
“এক সাথে নামাজ পড়ি চলো।”
পুষ্পি দ্বিমত করল না। দুজন একত্রে নামাজ পড়ল। খানিকক্ষণ চুপ করে বসে রইল। মানুষটা এক পলক পুষ্পির দিকে চেয়ে মোহিত হাসল। উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলল, “পুষ্প? আমি আজ সারাদিন ঘুমাবো। কেউ যেন এই রুমে না আসে, ব্যাপারটা ইনশিওর করবা তুমি। কারণ আমার নির্ঘুম রাতের জন্য তুমি দায়ী। ঘুম ভাঙলে তোমার জন্য কঠিন শাস্তি।”
পুষ্পি হতবিহ্বল হয়ে চেয়ে রইল কেবল। ও কী করে দায়ী হলো? ও কী নিষেধ করেছে ঘুমাতে? আজ যদি মেয়েটা বাকপটু হতো, তবে নিশ্চিত কৈফিয়ত চাইত। কিন্তু আফসোস! আপসে আদেশ মেনে নেয়া ছাড়া ওর দ্বারা কিছু সম্ভব না।

পুষ্পি এসব চিন্তা করতে করতে মানুষটা ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেল। পুষ্পি অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করে রুমটা ঘুটঘুটে অন্ধকার করে দিয়ে, রুম থেকে বেড়িয়ে এলো।
শাশুড়ী সাবেরী খাতুনও ততক্ষণে উঠে গিয়েছে। পুষ্পিকে দেখে অবাক হয়ে বলল, “মা! তুমি এত ভোরে কেন উঠেছ!”
পুষ্পি মৃদু হেসে বলল, “আমার সকালে ঘুমানোর অভ্যাস নেই।”
সাবেরী খাতুন পুষ্পির মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, “লক্ষি মেয়ে!”
মেয়েটা কাজে সাহায্য করতে চেয়েছিল, কিন্তু শাশুড়ী দেননি। অলস হয়ে থাকতে একেবারেই ভালো লাগে না ওর। ‘কি করবে’ ‘কি করবে’ ভাবতে ভাবতেই এক ফাঁকে এসে রুমে ডু মেরে গেল। মানুষটা অঘোরে ঘুমাচ্ছে। ‘আহারে, রাতে নিশ্চয়ই এমন কিছু করেছে, যার ফলে মানুষটা ঘুমাতে পারেনি।’ ভেবেই নিজের উপর খুব রাগ হলো মেয়েটার।
এরপর গোসল করে আকাশি রঙের একটা শাড়ি পড়ল। রুম থেকে বেড়িয়ে ছাদে এলো। তখন বোধহয় সাতটা বাজে। পাখির কলকাকলি ভালো লাগছে।
ছাদটা পুষ্পির মারাক্তক পছন্দ হলো। এত এত ফুলের সমারোহ! গাছগুলোতে পানি দিল। মনটা বেশ ফুরফুরে হয়ে উঠলো। ছাদের এক পাশ থেকে অন্যপাশে যেতেই একটা মজার ঘটনা ঘটল।
পুষ্পি দেখল, তার একমাত্র ননদিনী ফোনে কথা বলছে। পুষ্পি একটা রুক্ষ কাশি দিতেই হকচকিয়ে উঠল মুনমুন৷ মেয়েটা এবার কলেজ উঠেছে। ভাই যেই কলেজের লেকচারার হয়েছে সেই কলেজেই পড়ছে। সাইন্স নিয়ে পড়ছে, যদিও তার বিন্দু মাত্র ইচ্ছে নেই এসব সাইন্স-ফাইন্স পড়ার। কিন্তু বন্ধুরা সব সাইন্স নিয়েছে তাই। আসলে বন্ধুরা না, বিশেষ একজনের ইচ্ছেতেই সাইন্স নেয়া।
পুষ্পিকে দেখে মুনমুন অপ্রস্তুত হাসল। বলল, “আরে ভাবীমনি!”
“হুম আমি। তুমি এখানে কি করছিলে?”
মুনমুন একদম কিচ্ছু হয়নি টাইপ ভাব করে বলল, “কই? কিচ্ছু না তো! সকাল দেখছিলাম।”
পুষ্পি মৃদু হাসলো। মুনমুনের খুব পছন্দ হয়েছে তার ভাইয়ের বউটাকে। মুগ্ধ স্বরে বলল, “ইউ আর সো সুইট ভাবী। আমার ফ্রেন্ডরা দেখলে নিশ্চিত ক্রাশট্রাশ খেয়ে উল্টে পড়বে।”
পুষ্পি হেসে দিয়ে বলল, “তুমি তো সুইট স্কোয়ার, ডাবল সুইট। তোমার বন্ধুদের আসতে বলোনি? আমার সাথে আলাপ করাবে না?”
মুনমুনের মন হালকা হয়ে গেল। বলল, “আসবে তো, জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ, ভাবীজান!” বলেই খিলখিলিয়ে হাসল।
মেয়েটা ভারী চঞ্চল। মূহুর্তে মানুষের সাথে মিশে যেতে পারার বিরল ক্ষমতা আছে। পুষ্পির সাথেও মিশে গেল। নিজের বন্ধুদের ছবি দেখাল এক এক করে। এর মাঝে একজন বিশেষ বন্ধুর ছবিও দেখাল। পুষ্পি অবশ্য টের পেল না তা।

দুজন মিলে পুকুরপাড় এলো। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর মুনমুন যখন পুষ্পির হাত ধরে উঠাতে গেল তখন একটা জিনিস তার নজর কাড়ল। পুষ্পির হাতের আংটিটা।
মুনমুন বলল, “ওয়াও ভাবী! আংটিটা কি সুন্দর! এটা তো মা দেয়নি!”
কথায় একটু বিরতি দিয়ে দুষ্টু দুষ্টু মুখ করে বলল, “ওঃ ওঃ! ভাইয়া দিয়েছে না? হাও রোম্যান্টিক!”

পুষ্পি প্রথমে মুনমুনের কথা শুনে অবাক হলো, আংটি দেখার পর দ্বিগুণ অবাক হলো।
আরেহ! এই আংটি কে দিল? কখন দিল? কই, কিছু তো মনে পড়ছে না!

পুষ্পি সকল প্রশ্ন মনে রেখেই ঘুরল। বার কয়েক আংটিটা দেখল। খুব সুন্দর। হাতে চমৎকার ফিট হয়েছে। বিয়ের বাকি আংটিগুলো এত সুন্দর ফিট হয়নি! কিন্তু আংটিটা উনি কখন দিল! কত শত প্রশ্ন উঁকি দিল মনে! কি অদ্ভুদ মানুষটা সকল কাজকর্ম!
এর মাঝে শাশুড়ী নাস্তা খাওয়ার জন্য ডাকল। মুনমুনকে বলল, “শাহরিয়ারের জন্য একটা ডিম ভেজে দে।”
পুষ্পি নামটা খেয়াল করে শুনল। তার নিজেরও স্মরণে এলো এবার নামটা। বিরবির করে দুবার বলল ‘শাহরিয়ার’ ‘শাহরিয়ার’! ইশশ! শুধু শুধু ভুলে গিয়ে লজ্জায় পড়তে হলো। পুষ্পি মনে মনে শয়তানি হাসলো আর ভাবল, ‘আহারে চান্দু! কাল রাতে তো খুব নিজের নাম বললেন না। না বলেছেন তো কি হয়েছে? নাম কি আমার অজানা থাকবে? হুহ!’

শাশুড়ী বলল, “মা? ছেলেটাকে ডেকে নিয়ে আসো। সবাই মিলে খাই।”
পুষ্পি মনে বিজয়ের হাসি নিয়ে রুমের কাছে আসতেই মনে পড়ল, নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু এখন কি করবে? এত সুন্দর করে ঘুমাচ্ছে, ঘুম ভাঙাতে ইচ্ছে হচ্ছে না। কি করবে কিচ্ছুই ভেবে পাচ্ছে না।
হালকা করে জানালার পর্দা সরিয়ে জানালার কাছে দাঁড়িয়ে রইল।

ঘুম পাতলা মানুষটার ঘুম ভেঙে গেল খুব সহজে। হালকা করে ঘুমুঘুমু চোখের পাতা মেলতে লাগল। আবছায়ায় দৃষ্টিতে আসমানী রমনীকে দেখে ঘুম উবে গেল পুরোপুরি। অঙ্গে জড়ানো আটপৌড় শাড়ি, খোলা চুল আর কাজল কালো আঁখি যুগল! ঠিক যেন মায়ারাজ্যের মায়াপরী! সব বাঙালি বউরাই কি এত সুন্দর হয়? নাকি কেবল তারজন?

পুষ্প মানুষটাকে এভাবে চেয়ে থাকতে দেখে বলল, “মা আপনাকে ডেকেছে। আমি…আমি ডাকিনি কিন্তু।”
মানুষটার মুখে হাসি ফুটে উঠল। চোখ বুজে, ঘাড়ে হাত রেখে আড়মোড়া দিয়ে বলল, “কাছে আসুন সুন্দরীতমা, আপনি শাস্তি প্রাপ্য আসামি।”

পুষ্পি পর্দা আঁকড়ে ধরল। সত্যি সত্যি শাস্তি দিবে নাকি লোকটা!
মিনমিন করে বলল, “আমি তো আপনাকে ডাকিনি!”
তিনি শিতল কন্ঠে বললেন, “আমি তো ডাকছি, আসুন, প্লিজ! অনুগ্রহ করুন।”

পুষ্পি নিরুপায় হয়ে ধীর পায়ে কাছে এলো। একেবারে কাছে যেতেই মানুষটা খপ করে হাত ধরে ফেলল, হেঁচকা টেনে বসিয়েও ফেলল। একজন তাকাল মুগ্ধ নয়নে, অন্যজন বিস্ময়ে।
পুষ্পি বলল, “আমি কিছু করিনি।”
মানুষটা বলল, “করেছেন। এবং কি করেছেন আপনি নিজেও জানেন না। এখন শাস্তিটা গ্রহণ করুন প্লিজ।”

এত অনুনয় করে এই প্রথম কেউ বোধহয় শাস্তি দিতে চাইছে, কি আশ্চর্য, কি আশ্চর্য!

লোকটা শোয়া থেকে উঠে বসল। পুষ্পির মাথায় হাত বুলাল। ওর কাছে ঝুঁকে বলল, “আপনার শাস্তি খুবই সহজ। মেনে নিয়ে ধন্য করুন জনাবা।”

পুষ্পি শেষমেশ বাধ্য হয়েই বলল, “কী শাস্তি বলুন?”

“নট আ বিগ ডিল। শুধু দশ মিনিট আমার হাত, পা আর মাথা ম্যাসেজ করে দিবেন। আমায় তুষ্ট করতে পারলে আপনার শাস্তি মওকুফ।”

পুষ্পি বিস্ময়ে কিংকর্তব্যবিমুঢ়! বিয়ের চব্বিশ ঘন্টা না যেতেই হাত-পা, মাথা টিপিয়ে নিচ্ছে, আর দিন তো পরেই আছে। হে প্রভু! বাঁচাও।

মানুষটা বলল, “ওহে আমার বধূ এমন সহজ শাস্তি নিয়ে এত ভাবনা, কঠিন শাস্তি তো পরেই আছে। দিব নাকি কঠিনটা?”
পুষ্পির দ্রুত মাথা ম্যাসেজ করতে আরম্ভ করল।
মানুষটা মিটিমিটি হাসছে।
ম্যাসেজ করতে করতে চুলে হালকা একটু টান পড়ল, অমনি মানুষটা বলে উঠল, “ইশরে! একটু নাহয় মাথাটা ম্যাসেজ করে দিতেই বলেছি, তাই বলে আমার এত সাধের চুলগুলো টেনে ছি*ড়ে ফেলবে নাকি? তুমি কি চাও তোমার বর টাক হয়ে যাক? লোকে তখন বলবে, ওই দেখ টাক শাহরিয়ারের বউ যাচ্ছে!”

পুষ্পির মাথায় যেন ব*জ্রপাত হলো। শুধু একটু জোড়ে টান পড়ায় নিজেকে ডিরেক্ট টাক বানিয়ে ফেলল? এমন ভাওতাবাজ লোকটা! একটু রাগও হলো মনে মনে। সেই রাগ থেকেই চুলে এবার সত্যিকার অর্থে জোড়ে টান দিল। মানুষটা এবার প্রতিবাদ না করে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল।

পুষ্পি না পারতে মানুষটার মুখ চেপে ধরল। ফিসফিসিয়ে বলল, “চুপ, চুপ! প্লিজ হাসবেন না। এত জোরে হাসেন আপনি!”
তবুও তাঁর হাসি যেন থামেই না।
আশ্চর্য! দুনিয়ার সব হাসি কি আল্লাহ এই মানুষটাকেই দিয়ে দিয়েছে!….. (চলবে)