এক চিলতে রোদ পর্ব-১৩+১৪

0
928

#এক_চিলতে_রোদ
#Writer_Nondini_Nila
#Part_13

সকালের মিষ্টি সোনালী রোদের আলো মুখে আছড়ে পড়ছে। মুগ্ধ নয়নে আঁকাবাঁকা পথে দিকে তাকিয়ে আছি। সবুজ পাহাড় উঁচু ঝাঁকি লাগছে তাতে ভাইয়ার বাহুর সাথে স্পর্শ লাগছে। সাথে সাথে শিউরে উঠছি। জানালার মুখ ঢেকিয়ে বসে আছি। একদম ভাইয়ার দিকে তাকাবো না রাতের কথা ভাবলেই লজ্জায় মরে যেতেছি।চোখে চোখ মিলাতে পারছিনা।
তখন গাড়ি থেমে গেল একটা পুরোনো দোতালা বাড়িতে এসে।
নামার পর জানতে পারলাম এটা রিহান ভাইয়ার দাদার বাসা। তারা আগে ঘন ঘন এখানে আসা হতো তাই একটা বাসা করে রেখেছে থাকার জন্য। আমরা ও এখানেই থাকবো।
একজন দেখাশোনার লোক আছে যে আমাদের দেখেই এগ এগিয়ে এসে চাবি দিয়ে রিহানের সাথে সাক্ষাৎ করলেন তারপর চলে গেলেন।
ইহান ভাই একা এক রুম নিয়েছে। ইলা আপুও একটা আলাদা রুম নিলো।আমি ইমা আপু আর আপু ফ্রেন্ড দিয়া তিন একটা।
রিহান ভাই তার তিন ফ্রেন্ড এক রুমে। কেউ থাকে না বাসায় দেখে কেউ বলতে পারবেনা। কারন এতো সুন্দর পরিষ্কার করা চকচক করছে সব।

বেতের চেয়ার, খাট কি সুন্দর নকশা করা আমি ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছি।
“ঊষা এখন ওইভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? যা ফ্রেশ হয়ে আয়।”
আপুর কথা হেসে মাথা নেড়ে বাথরুমে ঢুকে গোসল করে ফেললাম। তোয়ালা দিয়ে মাথা মুছে ঠাস করে বিছানায় শুয়ে পরলাম।
আপু বলল,
“চল খেয়ে আসি খিদে পেট আমার চো চো করছে। দিয়া চল। এখন এতো সাজছিস কেন সবাই এখন বিশ্রাম নিবে বেরাতে বিকেলে যাব।”
দিয়া আপু সাজগোজ করতেছে। তাই ইমা আপু বিরক্ত হয়ে বলল।
“তাই কি একটু না সাজলে আমার ভালো লাগে না‌।”
“তোর এতো সাজ কি জন্য বলতো?আবার কাউরো উপর ক্রাশ খাইছোত।”
ভ্রু উঁচু করে বলল।
দিয়া থতমত খেয়ে বলল,, ” কক- ক‌ই না তো।”
ইমা আপু সন্দেহ চোখে তাকিয়ে আছে।
আমি শোয়া থেকে উঠে বসে তাদের কথা শুনছি তখন নিচে থেকে রিফাত ভাইয়ার ডাক এলো।
আপু আর কথা না বাড়িয়ে আমাকে বলে বেরিয়ে গেল আমি ও পেছনে চলে এলাম।
খাবার টেবিলে এসে বসলাম সবাই আছে ভাইয়া নেই। আমি আশেপাশে তাকিয়ে খুঁজে বসে র‌ইলাম ভাইয়া খাবে না প্রশ্ন টা মাথায় এলো কিন্তু কাউকে জিজ্ঞেস করলাম না।
“ইহান ক‌ই?”
“এইতো আমি। ”
বলতে ভাইয়া এগিয়ে এলো আমাদের দিকে ভাইয়ার গোসল করেছে বোধহয়।
চুল থেকে টপটপ করে পানি ঘাড় ভিজে‌ আছে হাত দিয়ে চুল নাড়াতে নাড়াতে এসে বসলো একদম আমার সামনা সামনি।বসে আমার দিকে তাকালো সাথে সাথে চোখাচোখি হয়ে গেল।
খাবার মাঝে একবার দিয়া আপুর দিকে নজর পরলো তিনি ভাইয়ার দিকে কেমন নেশাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। যেন চোখ দিয়েই গিলে খাবে। ভাইয়া একটা দুইটা কথা বলছে আর খাচ্ছে আর ওই দিয়া খাওয়ার থেকে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে নিজেই লজ্জা পাচ্ছে চুল ঠিক করছে আবার ভাইয়া দের কথার মাঝে নিজেও কথা বলছে এতে একবার ভাইয়া তার দিকে তাকালেই হয় কি ভাব ধরে আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি বোকা হয়ে।

খাওয়া শেষে সবাই রুমে এসে বিশ্রাম নিতে চলে গেছে।আমরা ও শুয়ে আছি ইমা আপু মাঝখানে।
দিয়া আপু ডান সাইটে। আপু আবার চেপে ধরেছে দিয়াকে দিয়া কিছু না বলে মুচকি মুচকি হাসছে।
শেষে বলেই ফেলল,
আমার তোর ভাইকে খুন পছন্দ হয়েছে রে। আমি ক্রাশিত।
আমি বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছি দিয়ার দিকে ইমা আমি গোল গোল করে তাকিয়ে আছে যেন চোখ খুলে পরবে।
সাথে সাথে সটান হয়ে বসে পরলো ,
“কি বললি তুই?”
আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে বসে পরলাম। আমার খাবার সময় সন্দেহ হয়েছিল কিন্তু পরে নিজেকেই বকেছি কারন দিয়া আপু ভাইয়ার সিনিয়র। তাই কথাটা আর ভাবি নি কিন্তু এখন তো দেখিছি সত্যি।
“তুই পাগল হয়ে গেলি নাকি ইহান তোর ছোট সেটা তুই জানিস না কোন সাহসে এসব স্বীকার করছিস ছিঃ লজ্জা করে না ছোট ছেলের উপর নজর দিতে।’
“আমি খুব বেশি বড় না বুঝলি। আর আমার ওতো বয়স ও না বয়স হ‌ওয়ার আগেই আম্মুর স্কুলে ভর্তি করেছিল তাই‌ আগে চলে গেছি। ”
“তোকে আমার খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে জানিস?”
“কেন আমি সত্যিই পছন্দ করি ইহানকে।”
“চরিয়ে তোর গাল লাল করবো আর একবার এই কথা বললে।”
দিয়া মুখ গোমড়া মুখে শুয়ে পড়লো আপু রাগে গজগজ করতে লাগলো। তারপর দিকে তাকিয়ে বলল,
“কি দুঃসাহস দেখছিস ওকে নাকি আমার ভাবি বানাবো? আহাম্মক একটা।”
বিরবির করতে লাগললো আপু। তারপর শুয়ে পড়লো‌।
দুপুরে খাবার খেয়ে বের হলাম ঘুরতে। কাছাকাছি ঘুরা হবে আজ আশেপাশে বেড়ানো হলো। পাশেই একটা গ্ৰাম ছিলো সবাই সেখানেই গেলাম।
নতুন পরিবেশের সাথে পরিচিত হলাম। তাদের পোশাক অন্য রকম একদম।
সন্ধ্যায় আগেই ফিরে আসা হলো।
রাতে একটা বিরাট ঘুম।

পরদিন আমরা পানসি রেস্টুরেন্টে গিয়ে সকালের নাস্তা করলাম।
তারপর এলাম চা বাগান এ। বিশাল বড় বাগান। সবুজ সমাহার তার মাঝে মেয়েরা কাঁধে ঝুড়ি নিয়ে চা পাতা তুলছে আমি মুগ্ধ হয়ে দেখছি সবাই যে যার ফোন বের করে ছবি তুলছে ইহান ভাই ফোন কথা বলছে। আমি একা ঘুরে ঘুরে দেখছি সবুজ সমাহারের মাঝে রঙিন পোশাকের মহিলা গুলোকে একটা অপূর্ব লাগছে।
ছবি তুলার আওয়াজ হতেই ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালাম অবাক হয়ে ‌ইহান ভাইয়া আমার ছবি তুলছে।
আমি বিস্মিত হয়ে গেলাম।
ভাইয়া এগিয়ে এসে বলল,,
“সবাই ছবি তুলছে তুই বাদ কেন?”
আমি বললাম, “আমার তো ফোন নেই আর না ছবি তুলে দেওয়ার কেউ আছে।”
ভাইয়া বলল,” ভালোই হয়েছে ফোন থাকলে পাজি হয়ে যেতি। চল আমি তোকে ছবি তুলে দেয়। যখন ফোন হবে নিয়ে নিস।”
আমি খুশি হয়ে আচ্ছা বললাম।
ভাইয়া আমার ছবি তুলে দিচ্ছে আমি দাঁড়িয়ে আছি হাসি মুখ করে।
লাঞ্চ করা হলো রেস্টুরেন্টে।
তারপর আমরা গেলাম ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর দেখতে। নৌকায় বসে আছি। সচ্ছ পানির উপর দিয়ে নৌকা বেয়ে চলেছে যত এগিয়ে যাচ্ছে মুগ্ধতাও বেড়ে যাচ্ছে। নীল আকাশ তার গ ঘেঁষে আছে উঁচু পাহাড় দূর থেকে এমন লাগছে। মুগ্ধ হয়ে দেখছি। প্রথম সব কিছুর অনূভুতি অন্যরকম ঊষার ও সেই অবস্থা।
একজন সেই আনন্দিত মুখের দিকে তাকিয়ে আছে হা করে সে আর কেউ না ইহান। ঊষাকে বাসায় সব সময় মন খারাপ করে থাকতে আর এখানে আসার পর থেকে ওর মুখে আনন্দ লেগে থাকে যা দেখে ওর ঠোঁটে ও ফাঁকা হয়ে যায়।
ঊষা সব কিছু মুগ্ধ নয়নে দেখছিলো তখন ওর মনে হয় কেউ ওর হাত স্পশ করেছে তাকিয়ে চমকে হাত সরিয়ে নেয়। রিহান ভাইয়া। থমকে জরোসরো হয়ে গুটিয়ে বসি।
উনার হাবভাব আমার প্রথম থেকেই পছন্দ হচ্ছে না। কেমন করে যেন তাকায় থাকে ভিশন অস্থির লাগে আমার। সাথে সাথে ভাইয়ার দিকে তাকালাম ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
নৌকায় থেকে নামতেই ভাইয়া আমাকে জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে?
আমি কিছু না বললাম।
ভাইয়া তাও সন্দেহ চোখে তাকিয়ে র‌ইলো তখন এলো দিয়া আপু,
হাই ইহান!
ভাইয়া হেসে বলল, হ্যালো।
ভাইয়ার গায়ে পরা কথা বলছে হায়রে ভাব আমি তাকিয়ে আছি। ভাইয়ার চোখ মুখ ও বিরক্ত লাগছে তবু ও হেসে কথা বলছে।
হঠাৎ আপু বলে উঠলো , তুমি আমাকে আপনি করে বলো কেন? তুমি করে বলো কেমন জানি লাগে।
ভাইয়া হা করে তাকিয়ে বলল, আপনি আমার সিনিয়র আপু তাই আপনি টাই ঠিক আছে।
বলেই চলে গেল।
দিয়া আপু গোমড়া মুখে তাকিয়ে আছে।

#চলবে

#এক_চিলতে_রোদ
#Writer_Nondini_Nila
#Part_14

বাসায় আসার পর থেকে দিয়া আপু মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করে বসে আছে। ওই সময়ের কথাটার জন্য তিনি একটু সন্তুষ্ট না‌। আমি তার মুখের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছি।
তারপর এগিয়ে গিয়ে বললাম,,
আপু আপনার কি মন খারাপ?
উনি আমার কথা শুনে বিরক্ত হয়ে তাকালো কারন কথা বলার সময় আমি ছিলাম।
দেখলে না ইহান আমাকে কিভাবে বড় আপু বলল। তার পর আমার মন খারাপ থাকবে না তো কি ভালো থাকবে। তুমিই বলো আমাকে দেখে কি ওর থেকে বড় লাগে।
আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি কি বলবো ভাবছি? মনে মনে বলছি দেখতেই তাই লাগুক আপনি তো বড়। তাই বড়‌ই লাগে কিন্তু মুখে অন্য কথা বললাম,
না না আপু আপনাকে একদম বাচ্চা লাগে মনে হয় আপনি আমার ছোট হবেন।
আমার কথা শুনে আপু হাঁ করে তাকালো অবুঝ মুখ করে বলল,
এতো ছোট লাগে?
চরম অবাক হয়ে বলল।
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম। আপু হাঁ করে তাকায় র‌ইলো আমি কোন মতে হাসে চেপে লাফিয়ে বেরিয়ে এলাম। তখন ঠাস করে ইহান ভাইয়ার সাথে ধাক্কা লেগে পরে যেতে নিলাম কিন্তু ভাগ্য ভালো এবার ও ভাইয়া আমাকে ধরছে। আমার ডান হাত ধরে টেনে সোজা করে ধমক সুরে বলল,
এতো লাফালাফি করিস কেন এখন‌ই তো যেতি পরে।
ভাইয়ার কড়া গলায় কথা শুনে চুপ করে মাথা নিচু করে আছি।
আচ্ছা মন খারাপ করতে হবে না। আমার একটা কাজ কর‌।
আমি মাথা উঁচু করে বললাম কি?
আমার জন্য কফি করতে পারবি?
আমি কিছু একটা ভেবে আচ্ছা বলতেই ভাইয়া কফি নিয়ে আসতে বলে চলে গেল।
আমি বুকে হাত দিয়ে শ্বাস নিলাম তারপর নিচে এসে রান্না ঘরে চলে গেলাম। একটা কাজের লোক আছে নাম ঝুমা খুব ভালো। তার সাথে আমার সাক্ষাত হয়েছে তার থেকে রান্না ঘরের সব চিনে নিয়েছি। তাই কফা করতে টাইম লাগলো না‌। ইমা আপু রিফাত ভাইয়ার রুমে গেছে। সবাই যার যার আছে রাতে আর কোথায় বা থাকবে।
ভাইয়ার রুমে এসে দেখি বিছানায় সোজা হয়ে শুয়ে আছে। হাতে ফোন। আমি না করতেই উঁচু গলায় ভেতরে আসতে বললো।
আপনার চা ভাইয়া।
ভাইয়া আমার হাত থেকে কফি নিয়ে উঠে বসলো।
আমি চলে আসতে গেলে পেছনে ডাকলো,
ঊষা……
ভাইয়ার ডাক শুনে থমকে দাঁড়িয়ে পরলাম।
তারপর পেছন ঘুরে বলল,
জি আর কিছু লাগবে?
ভাইয়ার আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল না যা তুই।
আমি আচ্ছা বলেই ছুটে চলে এলাম। বাইরে এসে হাঁপাতে লাগলাম ভাইয়ার কাছাকাছি থাকলে আমার এমন কেন লাগে যেন দম বন্ধ হয়ে মারা যাব। হার্টবিট এতো জোরে জোরে লাফায় যেন বেরিয়ে আসবে।
হাত পা কাঁপে কেন এমন হয় কেন?
আমি লজ্জায় লাল নীল হতে হতে আসছি তখন কেউ বলল,
হাই ঊষা কোথায় গিয়েছিলে?
মাথা উঁচু করে দেখি আমার সামনে রিহান ভাই দাঁড়িয়ে।
আমি হকচকিয়ে গেলাম। উনার হাবভাব আমার ভালো লাগে নে কেন করে তাকায় থাকে।
আমি জরোসরো হয়ে দাঁড়িয়ে বললাম,,
ভাইয়াকে কফি দিতে গেছিলাম।
উনি এগিয়ে এসে মুখ গোমড়া করে বলল,
তুই কেন বাসায় ঝুমা নাই।
আমি বললাম, আছে কিন্তু আমিই দিয়েছি সমস্যা নাই।
উনি বললেন, সমস্যা আছে তুমি কেন এসব করবে
কাজের লোক থাকতে আর ইহান বা কেমন তোমাকে কেন এসব করতে বলেছে।
আমি উনার ব্যস্ত হ‌ওয়া কন্ঠ শুনে হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। উনি এমন করছে কেন আমার মা খুশি তাই করুম উনার কি?
বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি।
আমার অবাক হওয়া দেখে থেমে বলল,,
আসলে তুমি কাজ করবে কেন তাই বলেছে ডোন্ট মাইন্ড।
আমি আস্তে বললাম,
কতো কাজ করি এটা তো তার কাছে কিছুই না।
উনি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল,কি বললে?
আমি কিছু না বলে কেটে পরলাম।

পরদিন আমার গেলাম রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট। রাতারগুল চৌরঙ্গী ঘাট থেকে সোয়াম্প ফরেস্ট ঘুরে দেখতে লাগে ৭৫০ টাকা নৌকা ভাড়া। উত্তরে গোয়াইন নদী দক্ষিণে বিশাল হাওর। মাঝখানে জলার বন রাতারগুল যা বাংলাদেশের অ্যামাজন নামে পরিচিত।
আমি মুগ্ধ হয়ে এই প্রকৃতি দেখছি কি অপূর্ব সুন্দর এই স্থান। চারদিকে ঘন নির্জনতা। আর ঝি ঝি পোকার ডাক ইশ ।চোখ ধাঁধানো সুন্দর আমার চোখে মুখে অসম্ভব মুগ্ধতা বিরাজ করছে। মনে হচ্ছে প্রকৃতি যেন তার মায়াবী রুপের সবটাই এখানেই ঠেলে দিয়েছে এখানে। আমার পাশে ইহান ভাইয়ার দাঁড়িয়ে ছিলো আমি উজ্জ্বল মুখ করে তাকিয়ে বলল,
কতো সুন্দর নিস্তব্ধতা।
দুটো নৌকা নেওয়া হলো একটায় আমি ইমা আপু ইলা আপু আর রিফাত ভাই।
আরেকটায় দিয়া ইহান ভাই রিহান ভাই ও রাজিব।
এটা দেখেই ইমা আপু নেমে পরলো আর ইহান কে আমাদের টায় দিয়ে নিজে রিফাত ভাইয়াকে নিয়ে চলে গেল ওইটায়।
আমি জানি কেন করেছে ওই দিয়ার আশেপাশে ভাইকে রাখতে চায়না আপু তাই।দিয়া মুখটা ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে র‌ইলো‌।
রিহান ও চলে এলো আমি অস্থি নিয়ে আছি কিন্তু ভাইয়ার জন্য স্বস্তি বোধ করলাম ভাইয়া আমার পাশে দাঁড়ালো।
এটা দেখে রিহান কটমট করে তাকালো।
নৌকা চলতে থাকে সবাই মুগ্ধ চোখে দেখছে সব কিছু কি অপূর্ব এই রুপ।
একটা দুইটা কথা বলছে ইলা আপু ছবি তুলছে। ইমা আপু রাও আর দিয়া মলিন করে তাকায় আছে আমাদের নৌকায়।
গাড়ি ঘাটে এসে থামলো একটা। আমি ইহান ভাইয়ের দিকে তাকালাম।ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো।
একটু হাঁটতে হবে চল।
কোথায় যাচ্ছি।
গেলেই দেখতি পাবি।
সবাই হাঁটতে লাগলাম মাটির উপর দিয়ে। কিন্তু ইলা আপু করলো ঝামেলা হাঁটাহাঁটি পছন্দ না আপুর তাই বিরবির করছে।
হাঁটতেছি সবাই মিলে হঠাৎ আমার মনে হলো কিছু আমার পায়ে কাপড়ে ধরছে।আমি মাথা নিচু করে পায়ের দিকে তাকাতেই এক চিৎকার করে উঠলাম নিজের সবশক্তি দিয়ে।
কি যেন আমার পা কামড়ে ধরে আছে ভয়ে আমি ঘেমে গেলাম মূহুর্তে। আমার হাত পা কাঁপছে সবাই আমার চিৎকার শুনে আমার দিকে তাকালো।
দিয়া আপু চিৎকার করে বলল,
ও মাগো জোঁক।
আমি তার ভয় পাওয়া দেখে আরো ভয়ে মিইয়ে গেলাম কেঁদে উঠলাম।ইহান ভাইয়া আগে ছিলো দৌড়ে এসে আমার কাছে দাড়ালো আর বললো,
কি হয়েছে কাঁদছিস কেন?
আমি দুই হাতে ভাইয়ার বাহু খামচে ধরে ঠোঁট কামড়ে ধরে কাঁদছি। ইমা আপু বলল ওকে জোকে ধরেছে পায়ে।
কথাটা শুনে ভাইয়া আমার পায়ের দিকে তাকিয়ে নিচে বসে পরলো আর আমাকে কান্না করতে মানা করলো।
আমি শুনছি না। ভাইয়ার টেনে জোঁক পা থেকে নিয়ে ফেলে দিলো পা দিয়ে গলগল করে রক্ত পরছে নিজের পকেট থেকে একটা রুমাল বের করে পায়ে বেঁধে দিলো।
ইমা আপু এসে বলল,
কাদিস না এটা সামান্য ব্যাপার এখানে এসব থাকেই।
আমি কাঁদছি না ফুপাচ্ছি এখনো ভাইয়ার বাম হাত শক্ত করে ধরে আছি।
ইলা আপু মুখ বেঁকিয়ে বলল,
ঢং না করে চল তো তোর জন্য এখানেই থাকতে হবে দেখছি।
সবাই হাঁটতে লাগলো আমি ভাইয়ার হাত ছেড়ে দিলাম যদি ভাইয়া বিরক্ত ড়য় তাই। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে ভাইয়া আমার হাত শক্ত করে ধরে হাঁটতে লাগলো।

#চলবে