এক চিলতে রোদ পর্ব-৩০+৩১

0
896

#এক_চিলতে_রোদ
#Writer_Nondini_Nila
#Part_30

আমি বিস্মিত হয়ে বসে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে। তিনি আমার সামনে চোখ বন্ধ করে বসে আছে মাথায় হাত দিয়ে। হাতের আংগুল ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। যা আগে ছিলো না। এটা পাঁচ মিনিট আগে করেছে। ভাইয়াকে এতোটা রাগতে আমি কখনো দেখি নি। আজ দেখলাম। তাও সমস্ত রাগ নিজের উপর দেখিয়ে নিজের ক্ষতি করলো। আমাকে কিছু বলেনি। গাড়িতে তো আমি ভয়ে জরোসরো ছিলাম বাসায় এসে না জানি কি করে আমাকে। কিন্তু আমাকে সম্পুর্ন অবাক করে দিয়ে ভাইয়া নিজের ক্ষতি করলো।

আমাকে টেনে নিজের রুমে এনে দরজা আটকে দিলো আমি চমকে উঠে, ভয়ার্ত কন্ঠে বললাম, “ভাইয়া আপনার কি হয়েছে বলুন না।”

ভাইয়া রেগে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “বিছানায় বস।”

আমি হকচকিয়ে গেলাম। বসতে বলছে কেন? ভাইয়া হুংকার দিতেই আমি ভয়ে কেঁপে উঠলাম। আর তারাতাড়ি বিছানায় বসে কাঁপতে লাগলাম। ভাইয়া আমার দিকে থেকে রক্ত চোখ সরিয়ে দেয়ালে হাত রেখে দাঁড়িয়ে র‌ইলো। তারপর আচমকা হাত উঁচু করে নিজের হাতে বাড়ি দিলো আমি চমকে চেঁচিয়ে উঠলাম।
সাথে সাথে হাত কেটে রক্ত বেরোতে লাগলো আমি থমকে দাঁড়ালাম পরলাম। ভাইয়া এগিয়ে আমাকে টেনে আবার বসিয়ে দিল। আর আমার পাশে বসে মাথায় হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে র‌ইলো।

আমি হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছি। সাথে ভয় চোখে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার হাতের দিকে। এমন পাগলামী কেন করছে? রিহানের জন্য কিন্তু ওর জন্য এমন করার কারন কি?
আমি থেকে থেকে কেঁপে উঠছি ভাইয়া চোখ বন্ধ করেই আছে। ইশ কতো খানি কেটে গেছে। আমি হুট করেই উঠে পরলাম এইভাবে বসে থাকা সম্ভব না‌। আমি ড্রয়ার থেকে ফাস্ট এইড বক্স নিয়ে এলাম। এটা এখানে থাকে আমি জানি। আমি ভাইয়ার পাশে বসে নিজের কাঁপা হাত স্পর্শ করলাম ভাইয়ার হাতে। সাথে সাথে ভাইয়া চোখ মেলে তাকালো।

সেই লাল চোখ আমি কেঁপে উঠলাম। তাও আমতা আমতা করে বললাম,,

” প্লিজ বকবেন না। আপনার হাত কেটে গেছে অনেকটা। আপনি এতো রাগ কেন করছেন আমি জানি না ভাইয়া। কিন্তু নিজেকে কষ্ট কেন দিচ্ছেন?”

আমার কথা শেষ হতেই ভাইয়া বলল,,
“তোর জন্য। তোকে তো কিছুই করতে পারবো না তাই নিজেকেই ক্ষত বিক্ষত করছি।”

আমি থমকে গেলাম ভাইয়ার কথা শুনে। অবাক চোখে তাকিয়ে আছি। আমার জন্য।

“আমি কি করেছি?”

“তুই আমাকে ইগনোর করিস ওই রিহানের জন্য।”
ভাইয়া রেগে দাঁতে দাঁত চেপে বললো।

আমি হতবুদ্ধি হয়ে বললাম,, ” মানে।”

হুট করেই আবার বললাম,, “আমাকে ব্যান্ডেজ করতে দিন আগে‌”

বলে আমি রক্ত মুছে ব্যান্ডেজ করে দিতে লাগলাম। পুরোটা সময় আমার হাত কেপেছে। ইহান কিছু বলতে গিয়েও বললো না। ঊষার চোখে নিজের ব্যাথার জন্য কষ্ট দেখে। মনে মনে প্রশান্তি বয়ে গেলো ওর। ওর রাগ আস্তে আস্তে কমে এলো।

ইহানের রাগের কারন হলো রিহান। ঊষা ভেতরে চলে যাওয়ার পর ওর দেখা হয় রিহানের সাথে। রিহান ওকে দেখে অবাক হয়ে বলে এখানে কি করে?

ইহান আগে দেখেই রিহান কে পছন্দ করে না কারণ আগেও ওকে ঊষার প্রতি নজর দিতে দেখেছে তাই ওকে দেখলেই ওর রাগ হয়।
রিহানের প্রশ্ন এ ইহান উওর না দিয়ে জিগ্গেস করে,

“তুমি এখানে কি করছো?”

রিহান বড় হলেও ইহান তুমি করেই বলে। রিহান আচমকা হাসি টেনে ঊষার জন্য বলে দেয়।

ইহান ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে, হোয়াট?

রিহান ইহানের হাবভাব দেখে সিউর হয়েছে এই ছেলে ঊষার প্রতি দূর্বল তাই ও চায়না নিজের ভালোবাসার মানুষকে অন্য কারো সাথে দেখতে তাই সরাসরি বলে দিতে চায় নিজের মনের অনুভূতি। আর ও জানতে পেরেছে ইহানের মা ঊষাকে একদম সহ্য করতে পারেনা তাই ইহান কতটা এগিয়েছে জানা নেই। তাই ওকে ঊষার থেকে দূরে রাখার জন্য সব বলতেই হবে।

মানে আমি ঊষার জন্য এসেছি।

ইহানের কুঁচকানো কপাল আরেকটু কুঁচকে আসে।রিহান এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নেয়।
গরগর করে বলে দেয় ,,

ও ঊষাকে ভালোবাসে। সাথে আরো বানিয়ে বলে।ও ভাবে শুধু নিজে ভালোবাসে এটা না বলে ঊষাও ওকে ভালোবাসে এটাও বলে। সাথে ঊষাকে প্রপোজ করার ছবি দেখায় যেখানে ঊষা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রিহানের দিকে আর রিহার ফুল ধরে আছে।সাথে আরেকটা ফটো অটো বসা দুজন।

এসব দেখেতো ইহানের চোখ জ্বলে উঠে। হাত মুষ্টিবদ্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকে।
রিহান হুট করেই ইহানের হাত ধরে বলে,,

“ছোট ভাই তুমি তো ঊষার ও ভাই। আমাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেতে তোমার সাহায্য লাগবে। ”

ইহান টান মেরে হাত ছুটিয়ে নেয়। রিহানের হাত সরে যায় আর ইহান অতিরিক্ত রাগে টান দেওয়ায় ওর হাত পেছনে চলে যায় অনেকটা আর যার ফলে পেছনে একটা বাইকের সাথে লেগে হাত কেটে যায় কিন্তু ওর তাতে খেয়াল নেই। ওর ছবি দেখে রেগে বম হয়ে গেছে।
রিহান বিস্মিত হয়ে কিছু বলতে যাবে,,

ইহান বলে, আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু টক টু ইউ। গো এওয়ে।

রিহানের কি হলো ও ইহানে কথায় চলে গেল। বারতি কথা বাড়ালো না।

আমি ব্যান্ডেজ করা শেষ করে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি ভাইয়া আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি নিজে সরে বসি। ভাইয়া তখন বলে,,

“রিহানকে তুই ভালোবাসিস?”

আমি নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। হঠাৎ ভাইয়ার কথায় চমকে মাথা তুলে তাকালাম। ভাইয়া উওরের আশায় তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি ঢোক গিলে ভাবছি কা সব বলছে ভাইয়া আমি রিহানকে ভালোবাসতে যাব কেন?
কিন্তু অদ্ভুত আমার মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। ভাইয়া রক্ত চোখ করে তাকিয়ে আছে আমার ভয় লাগছে কথা বলার শক্তি যেন হারিয়ে ফেলেছি।

“তোরা দুজন দুজনকে ভালোবাসিস?”
আমার উওর না পেয়ে ভাইয়া কঠিন সুরে আবার বলল কথাটা‌।

আমি হতভম্ব হয়ে বসে আছি। ভাইয়ার চোখে মুখে বিরক্ত রাগ তো আছে আমাকে চুপ থাকতে দেখে তার রাগ আকাশে উঠে গেলো। এবার চেঁচিয়ে উঠলো,,

” বোবা হয়ে বসে আছিস কেন?কথা বলতে পারিস না। আমি তো কিছু জিজ্ঞেস করছি। রিহানকে তুই ভালোবাসিস, বিয়ে করতে চাস। ওর সাথে অটোতে করে বেরাস, ও তোকে ফুল দিয়ে প্রপোজ করে। ”

ভাইয়া উঁচু গম্ভীর গলায় আওয়াজে ভয়ে আমার হৃদপিণ্ড কেঁপে উঠলো। আমি বিছানায় থেকে ফট করে উঠে দাঁড়ালাম। ভাইয়াকে ভয় করছে খুব। কতো রেগে গেছে ভাইয়া। সব ওই রিহানের জন্য। এসব সেই বলেছে কিন্তু কেন মিথ্যা বললো। এখন ভাইয়া তা রেগেছে না কিছু শুনবেই না। আমার হাত পা কাঁপছে আমি এখন কেটে পরি সেটাই আমার জন্য ভালো।

ভাইয়া আমাকে দাঁড়াতে দেখেই নিজের ব্যাথা ব্যান্ডেজ করা হাতেই আমার বাহু চেপে ধরে নিলো। আমি আঁতকে উঠলাম। ভাইয়া আমাকে টেনে নিজের কাছে টেনে ধরে রেখেছে।

“কোথায় যাচ্ছিস আমার এ্যানসার না দিয়ে। ”

আমি ভয়ার্ত গলায় মিনমিন করে বললাম, ” রুমে যাই সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আযান দিবে এখন।”

“আমি যেতে বলেছি তোকে?”
রেগে বললো।

আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। হুট করেই ভাইয়া আমাকে বলে উঠলো,,

” রিহানকে ভালোবেসে থাকলেও তুই শুধু আমার। আর যদি ওই রিহানের জন্য আমাকে ইগনোর করে থাকিস তাহলে খুব ভুল করেছিস। আমি বেঁচে থাকতে ওই রিহানের সাথে তোকে মেনে নেব না। তুই শুধু আমার‌। বুঝতে পেরেছিস।”

আমি পিটপিট করে চোখ মেলে তাকালাম। পাগল হয়ে গেছে ভাইয়া। এবার কিছু বলতে হবেই।

আমি মুখ খুলতে যাব‌ ভাইয়া আচমকা আমাকে টেনে নিজের হাঁটুর উপর বসিয়ে ঠোট এ আংগুল দিয়ে আটকে বললো।

‘না ঊষা আমি ওই রিহানের হয়ে কথা তোর মুখে শুনতে চাইনা। আমার তিনদিনের অনুপস্থিতে তুই ওর সাথে রিলেশন এ চলে গেলি। আমি তোকে লেখা পড়া করার কথা বলেছিলাম। আর তুই। ওকে নিয়ে ঘুরাঘুরি করেছিস।”

আমি হাঁটুর উপর থেকে উঠার জন্য ছটপট করছি। ভাইয়া আমাকে ছারছে না‌।
আর ও শক্ত করে ধরে আছে। চোখে তার আগুন।

“আমি রিহান‌ ভাইকে ভালোবাসিনা।”
এক নিঃশ্বাসে এ বলে ফেললাম।

আমার কথা শুনে ভাইয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো,

” ভয়ে মিথ্যা বলছিস?”

আমি বিরক্ত হয়ে বললাম, মিথ্যা কেন বলবো? আপনি ওই রিহানের কথা শুনে আমাকে বকাবকি করছেন‌ নিজের ক্ষতি করছেন কেন?যেখানে আপনাকে বলা প্রত্যেকটা কথা মিথ্যা।

মানে? কপাল কুঁচকে বললো ভাইয়া।

আমি ঠোঁট ভিজিয়ে বলতে লাগলাম। একে একে সব রিহানের বিরক্ত করা থেকে প্রপোজ তারপর আমি বিরক্ত করতে মানা করা সেদিন অটোতে জোর করে উঠেছিলো। সব বলা শেষে বললাম।

“আপনি কিসের ছবি বলছেন সেটা জানি না। আমি তো কোন ছবি তুলিনি।”

“ভয় পেয়ে মিথ্যা বলছিস না তো।”

আমি মাথা নেড়ে না বললাম।

“আর আপনি আমার থেকে ওই রিহান ভাইকে কি বেশি বিশ্বাস করেন।”

ভাইয়া তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে। এবার তার রাগের মাত্রা কমে এলো কিন্তু চেয়াল শক্ত ই আছে। ভাইয়া নিজের হাত বাড়িয়ে আমার গালে রাখলো আমি কেঁপে উঠলাম। ভাইয়া বললো,,

“আমার রাগে কি করতে ইচ্ছে হয়েছিল তোকে বলে বুঝাতে পারবো না।”

” আমাকে ছারুন।”

ভাইয়া সাথে সাথে ছেড়ে দিলো আমি অবাক হলাম। আমার কথা শুনার জন্য সাথে উঠেও পরলাম।
চলে আসতে নিবো তাই পেছনে ঘুরি তখন ভাইয়া বললো,

“ওর প্রপোজ এ রাজি হচ্ছনি আমার জন্য?”

আমি চমকে দাঁড়িয়ে গেলাম।

” আমাকে ভালোবাসিস? ”

গরম নিঃশ্বাস আমার ঘাড়ে পরছে। আমার শরীর লোম খাড়া হয়ে গেল। ভাইয়া আমার খুব কাছ থেকে কথা বলছে তাই তাকে ফিল করতে পারছি।

কিছু ক্ষনের মাঝে ভাইয়া আমার সামনে এসে দাড়ালো আর বললো,

“অযথাই এতো কষ্ট দিলাম নিজেকে। আমার বুঝা উচিত ছিলো আমার ঊষা আমাকে রেখে অন্য কাউকে ভালোবাসতেই পারে না।”

বলতে বলতে ভাইয়া এগিয়ে এলো আমি এক পা পেছনে যাব ভাইয়া আমার হাত ধরে আটকে দিল আর এগিয়ে আমার কপালে চুমু খেলো। আমি ছিটকে সরে দাড়ালাম। আর সাইট দিয়ে গিয়ে দরজা খুলে বেরিয়ে এলাম।

নিচে আসতেই লতার মুখোমুখি। ও আমাকে চেপে ধরলো। ভাইয়া রেগে নিয়ে গেলো কেন কি হয়েছে আমি কিছু না বলে রুমে চলে এলাম। কি রাগ ভাইয়ার। ব‌ই ভাইয়ার রুমে রেখে এসেছি।

ধুর থাক পরবোই না।

মাগরিবের পর চাচা এলো। তাকে খেতে দিয়ে সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার জন্য। ভাইয়া অনেক সময় পর এলো এসে বসলো না আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,

“আমার খাবার রুমে নিয়ে আসিস।”

বলেই এক মিনিট দাঁড়ালো না রুমে চলে গেলো। চাচার খাবার শেষ হতেই আমি খাবার হাতে দাঁড়িয়ে আছি। যেতে ইচ্ছে না করলেও যেতে হবে।না হলে ভাইয়া আবার রেগে যাবে। আমি বড় শ্বাস ফেলে রুমে এলাম। ভাইয়া বিছানায় পা মেলে বসে আছে । আমি গিয়ে খাবার রাখলাম। ভাইয়া ডেকে বললো,

“এখানে নিয়ে আয় খাবার।”

আমি খাটে গিয়ে ভাইয়ার কাছে রাখলাম খাবারের প্লেট।
“আমি চলে আসতে যাব ভাইয়া বলে উঠলো, তুই যাচ্ছিস কেন?”

আমি অবাক হয়ে বললাম, “তো কি করবো?”

“আমাকে খাইয়ে দে। ”

আমি বড় চোখ করে তাকিয়ে বললাম, কি ?

ভাইয়া আমার সামনে নিজের কাটা হাত উঁচু করে বললো,

” খাব কি করে? ”

ভাইয়ার হাত যে কাটা আমি ভুলেই গেছিলাম।

#চলবে

#এক_চিলতে_রোদ
#Writer_Nondini_Nila
#Part_31

আমি পরেছি ঝামেলায়। ভাইয়াকে কি করে আমি খাইয়ে দিবো। লজ্জা আমি নিচের দিকে তাকিয়ে আছি‌। আমার ভাইয়াকে খাইয়ে দেওয়ার কথা ভাবতেই শরীর কাঁটা দিয়ে উঠছে।
ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমাকে এমন লজ্জায় লাল হয়ে যেতে দেখে বললো,,

” কি হলো এমন লজ্জা পাচ্ছিস কেন? তোর লজ্জা দেখে জাস্ট আমার চোখে নেশা হবে। পেটের খিদে যাবে না। তাই দাঁড়িয়ে থেকে সময় ব্যয় না করে শুরু কর।”

আমি থমকে সরু চোখে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। তার কথা শুনে আমার লজ্জার মাত্রা আরো বেড়ে গেল যেন‌। আমি তাই বললাম,,

“আমি পারবো না আপনি নিজেই চেষ্টা করেন।”

“তুই আমাকে খালি পেটে রাখতে চাস।”

সাথে সাথেই বললো ভাইয়া আমি অসহায় মুখ করে তাকালাম। আর মাথা নাড়িয়ে না বুঝালাম।

ভাইয়া বলল, ” তাহলে খাইয়ে দে।আমার এই অবস্থার জন্য তো তুই দায়ী। তোর রাগ নিজের উপর দেখিয়েছি যার ফল স্বরুপ এসব হচ্ছে। এখন আমাকে একটু সাহায্য করতে পারবিনা।”

ইহান ধমকাধমকি করতে চাইছে না ও চাইছে ঊষা নিজে থেকে পরম যত্নে ওর ওই নরম হাতে ওকে খাইয়ে দিক। তাই তো এতো গুলো কথা খরচ করছে। ধমক দিলে অবশ্য খাইয়ে দিতো কিন্তু তাতে ভয় থাকতো। আর এখন ঊষার চোখে ভয় না লজ্জা দেখতে পাচ্ছে ইহান। যা ওকে মাতাল করে তুলছে। ঊষার লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া গালের দিকে নেশাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।এই লজ্জা মাখা মুখ দেখে যেন আবার প্রেমে পরে গেলো ইহান।

“কি হলো খাইয়ে দিবি না?” নরম কন্ঠে বললো।

যা শুনে আমার বুকের ভেতরে টিপটিপ করতে লাগলো। ভাইয়ার জন্য মায়া হলো খুব। আমার লজ্জা লাগবে তাই ভাইয়ে কথায় রাজি হচ্ছিলাম না কিন্তু আমার লজ্জার জন্য ভাইকে না খেয়ে থাকতে হবে। এটা তো হতে দেওয়া যায় না। আমি এগিয়ে এসে ভাইয়ার পাশে বসে পরলাম। আড়চোখে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি নিচের দিকে তাকিয়ে খাবার মাখতে লাগলাম।

ইহান তা দেখে প্রশান্তির হাসি দিলো। ঊষা খাবার এগিয়ে দিতেই তারাতাড়ি মুখে পুড়ে নিলো ইহান। ভাইয়ার ঠোঁট হাতের আংগুল স্পর্শ করতেই আমার সারা শরীর কেঁপে উঠলাম। আমি কাঁপা হাতে আবার খাবার তুললাম। ঠোঁট কামড়ে ধরে কাঁপা থামানোর চেষ্টা করছি। খাবার খাওয়ানোর সময়টা ভাইয়ার আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো আমি লজ্জায় তাকাতে পারছিলাম না তার দিকে।

খাওয়া শেষ হতেই আমি প্লেট নিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। তখন ভাইয়া মৃদু কন্ঠে বলে উঠলো,,

“আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত ছিল এই সময়টা।মন বলছিলো সময়টা থেমে যাক তুই আমার সামনে লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া গাল নিয়ে বসে থাক আর আমি তোর দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি মুগ্ধ নয়নে। না চোখের পলক পড়বে এই চোখে শুধু তোর মায়াবী মুখের দিকে তাকিয়ে থাকবে।”

আমি চমকাইতো চোখের ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দ্রুতগতিতে রুম ছেড়ে বেরিয়ে এলাম।

ভাইয়ের কথায় আমার সারা শরীর অদ্ভুত অনুভূতি খেলে যায়। বুকের ব্যাথা ধুকপুক বাড়তেই থাকে হাঁপিয়ে যাই আমি।

রুমের বাইরে পা রাখতেই কোথা থেকে আমার হাত টেনে নিচে নিয়ে আসে লতা। আমি ওকে দেখে বড় বড় চোখ করে তাকায়। ও এখানে কি করছে?

লতা আমাকে টেনে ড্রয়িং রুমে এনে ছাড়লো আর চোখ বড় করে বললো,

‘তুই ভাইজানকে খাইয়ে দিচ্ছিলি‌?”

ওর কথা শুনে আমি চমকে উঠলাম। ও দেখে নিয়েছে এখন কি বলবো ও তো উল্টাপাল্টা ভাববে।এমনিতেই প্রতিদিন বলে ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে। আমি ও বাসি কিনা জিজ্ঞেস করে।এখন তো আরো বলবে।
আমি ঢোক গিলে তাকিয়ে আছি।

লতা সন্দেহ চোখে তাকিয়ে আছে। আমি চুপ। ও আবার বললো।

” আমি আগেই সন্দেহ করেছিলাম। তোর আর ভাইজানের মধ্যে কিছু আছে। ভাইজান যে তোরে পছন্দ করে আগেই বুঝছি কিন্তু তোরটা বুঝি নাই।আর তোরে জিজ্ঞেস করলে ও না করছোত। এখন তো সব পরিস্কার হয়ে গেলো। এতো মিছা কথা বলছত আমারে? সত্যি বললে কি হয়তো। আজ যদি ভাইজানের রুমের কাছে না যাইতাম জানতেই পারতাম না। তুই খাইয়ে দিছিলি আর ভাইজান এক ধ্যানে তাকিয়ে ছিলো।এই ভাবে আমারে মিছা কথা বললি।”

আমি জানতাম এই মাইয়া বেশি বুঝবে তাই হলো। আমার নিজের কপাল চাপড়াতে ইচ্ছে করছে।
আমি ওর কথা থামিয়ে বললাম,,

“তুই যা ভাবছিস তেমন কিছুই না!”

“আবার মিথ্যা কথা বলছিস? সত্যি বললে কি হয়বো। আমি জানলে কি তোদের বিপদ এ ফেলুম নাকি আমি তো চাই তুই ভাইজানের ব‌উ হ আর এই বাড়িতে মাথা উঁচু করে থাক। তোর ওই পাষাণ চাচি আর কিছু বলতে পারবে না তাহলে।”

আমি চমকে উঠলাম ওর কথা শুনে চাচির কথা মাথা থেকেই বের হয়ে গেছিলো।ভাইয়া যা শুরু করেছে চাচি দেখলে আমার যে কি করবে আল্লাহ মালুম জানে। আমি ভয়ার্ত মুখ করে দাঁড়িয়ে চাচির কথা ভাবছি।

“এই কি হলো?”

আমি চমকে উঠে বললাম,,
“লতা আমি সত্যি বলছি ভাইয়ার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই। ভাইয়ার হাত কেটে গেছে এজন্য আমাকে খাইয়ে দিতে বলেছে। আমি শুধু এজন্য খাইয়ে দিচ্ছি এটা নিয়ে প্লিজ রং কিছু ভাবিস না।”

লতা মুখ বেঁকিয়ে হাসলো আর বললো,,

” আমাকে এতো বোকা ভাবিস না।তোর মুখ আমি না দেখলেও ভাইজানের মুখ দেখছি সে তোর দিকে যেভাবে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে ছিল তাতে স্পষ্ট ভাইজান তোরে খুব ভালোবাসি।”

আমি লতার কথায় অর দিকে তাকালাম। আর কপাট রাগ দেখিয়ে বললাম,

“তুই সব সময় আমাকে নিয়ে আজেবাজে ভাবিস। কয়দিন আগে রিহানকে নিয়ে এখন আবার ভাইকে নিয়ে। এসব বন্ধ কর।”

“আমি কি খুব ভুল ভাবি নাকি। রিহান তোরে ভালোবাসা আর ভাইজান ও তোরে ভালোবাসি খুব। কিন্তু তুই কারে ভালোবাসিস বুঝতাছিনা।”

লতা আমার দিকে তাকিয়ে র‌ইলো আমি চলে এলাম ওর সামনে থেকে রান্না ঘরে। ওর সাথে কথা বলে পারা যায়না।লতা আমাকে সারাটা সময় জ্বালালো আমি মুখে কুলুপ এঁটে বসে র‌ইলাম।
পরদিন সকালেও ভাইয়াকে আমার খাইয়ে দিতে হলো সেটা খাবার টেবিলেই। কারন চাচা ছিলো না।লতা রান্না ঘর থেকে বড় চোখ করে তাকিয়ে ছিলো। আমি ভাইয়া খাইয়ে দিচ্ছি।

তখন ভাইয়া লতা বলে ডেকে উঠলো জোরে আমি লতা সহ আমি কেঁপে উঠলাম। লতা ভয়ে ছুটে এসে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে বললো,,

“ভাইজান এমন করে ডাকলেন কেন? আপনি কি আমারে বকবেন লুকিয়ে তাকিয়ে ছিলাম বলে।”

এক নিঃশ্বাসে বললো লতা ভাবছে এজন্য ওকে বকবে তাই ভয়ের চুটে বলে দিয়েছে।

ভাইয়া কিছু না বলে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,,

“কি হলো তুই খাওয়ানো অফ করলি কেন?”

আমি ভয়ে খাবার হাতে নিয়ে লতার দিকে তাকিয়ে আছি। ভাইয়ার কথায় চমকে খাবার ভাইয়ার দিকে বাড়িয়ে দিলাম। ভাইয়া খাবার নিলো ঠিক কিন্তু সাথে কামড়ে দিলো আমি থমকে চেঁচিয়ে উঠলাম। অবাক হয়ে ভাইয়ার দিকে তাকাতেই বললো,

“এটা লেট করে খাবার দেওয়ার জন্য।”

আমি আমার লাল হয়ে যাওয়া আঙুল এর দিকে তাকিয়ে আছি। ভাইয়া রাক্ষস হয়ে গেলো নাকি কেমন কামড়ে দিলো। ভাইয়া আমার থেকে চোখ সরিয়ে লতার দিকে তাকিয়ে বললো,,

“কাল তুই ঊষাকে কি জিজ্ঞেস করছিলি?”

লতা চমকে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ভাবছে ভাইজান জানালো কি করে আমি ঊষাকে কিছু জিজ্ঞেস করছি? আচ্ছা লতা বলে দিল নাকি। লতা আমার দিকে তাকাতেই আমি মাথা নেড়ে না করলাম। আমি কিছু বলিনি। কিন্তু লতা সন্দেহ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি কাঁদো কাঁদো মুখ করে তাকিয়ে আছি ওকে কি করে বুঝাই ওর মতো আমিও চমকেছি ভাইয়ার কথায়। ভাইয়া তখন আবার তার গম্ভীর গলায় বললো,,

” ঊষার দিকে তাকাচ্ছিস কেন? ও আমাকে কিছু বলেনি আমি নিজে থেকে জেনেছি।”

লতা অসহায় মুখ করে তাকিয়ে আছে। শাস্তির ভয়ে। আমিও।

“শুন ঊষাকে আমি ভালোবাসি।তাই আমাদের পেছনে সিসি ক্যামেরা হতে যাস না। আর ঊষাকে এসব জিজ্ঞেস করে বিব্রত করবি না। নাহলে তো তোর ভালো হবে না ব্যাপারটা।”

লতা ভয়ে মাথা নাড়লো।

আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি দুজনের দিকে। ভাইয়ার খাওয়া শেষ হতেই বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো আজ কলেজে যাবে। যাওয়ার আগে ইশারায় লতাকে ডাকলো। আমি হাঁ করে তাকিয়ে রইলাম লতা ভয়ে ভয়ে পেছনে গেলো।
কিছু ক্ষন পর আসলো আমি ভাবছি এখন তো লতা অনেক কিছু জিজ্ঞেস করবে আমি কি বলবো? লতা আমাকে অবাক করে দিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করলো না।

দুইদিন কেটে গেলো ভাইয়ার জ্বালানোতে। জোর করে আমাকে নিজের রুমে নিয়ে পরতে বসায়। আমি কাচুমাচু মুখ করে পরতে বসি। ভাবি ভাইয়ার কাছে গেলে আমি পরতেই পারবো না। কিন্তু না ভাইয়া আমাকে এতো সুন্দর করে পরিয়েছে যে আমি মনোযোগ না দিয়ে পারিনি। ভাইয়া কমন দেখে অংক করিয়ে চলে যেতো। সোফায় বসে কিছু করতো আর আমি পরতাম। মাঝে মাঝে তাকালে দেখতে পেতাম ভাইয়া ল্যাপটপ রেখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি তখন ভ্রু কুঁচকে তাকাতাম তা দেখেই ভাই গলার আওয়াজ বারিয়ে বলতো,,

“আমার দিকে কি পড়া লিখে রেখেছি যে ব‌ই ছেড়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছিস?”

আমি তখন মিনমিন করে বলতাম,,” না মানে আপনি ওমন করে তাকিয়ে আছেন কেন?”

“তো কি করবো তুই যদি আবার পড়া চুরি করিছ। তাই দেখছি ঠিক করে পরছিস কিনা।”

আমি গাল ফুলিয়ে পরতাম। আর ভাই আমাকে কোচিং এ নিয়ে আসতো প্রতিদিন।

তিনদিনের মাথায় চাচি এলো হাতে বড় ব্যাগ নিয়ে। দামী শাড়ি ও গহনা পরে। এসেই ব্যাগ সোফার পাশে রেখে সোফায় গা এলিয়ে দিল। আমি তাড়াতাড়ি শরবত করে লেবু দিয়ে চাচীর সামনে নিয়ে ধরতে চাচি ঢকঢক করে পুরো গ্লাস ফাটা করে দিল। তারপর 32 টা দাঁত বের করে হেসে বলল,,

“ঊষা রে এই দেখ এটা কি?”

বলে চাচী তার গলায় একটা সুন্দর নেকলেস দেখালো যেটার পাথর চিকচিক করছে খুব সুন্দর আমি তাকিয়ে রইলাম।

“বলতো এটা কিসের?”

আমি কপালে সূক্ষ্ম ভাঁজ ফেলে ভাবছি এটা কিসের সিটি গল্ড নাকি স্বর্ণের?

তখন চাচি আবার বলে উঠল।,,
-এটা ডায়মন্ডের নেকলেস আমারে কিনে দিসে আপা। আমার কতদিনের শখ ছিল একটা ডায়মন্ডের নেকলেস হবে আমার। কিন্তু কিপটা চাচা তোর আমাকে কিনে দেয় নাই। এই দেখ আমার বোন আমাকে কিনে দিছে।”

বলেই খুব খুশি মুখ করে তাকালো আমার দিকে। কানের দুল দেখাতে লাগলো। আসলেই খুব সুন্দর নেকলেস আমি দেখলাম কিন্তু কিছুই বললাম না।
চাচি ব্যাগগুলো দেখিয়ে বলল এই দেখ ব্যাগ ভর্তি শপিং করিয়ে দিয়েছে। এত সুন্দর সুন্দর দামি দামি শাড়ি ইমা ইলা ইহানের ওদের জন্য ও দিছে।

বলেই এই ব্যাগগুলো নিয়ে তার রুমে যেতে বললো আমাকে আমি চাচীর পেছনে পেছনে ব্যাগ নিয়ে রুমে ঢুকলাম ব্যাগগুলো পাশে রেখে চলে এলাম।সবার জন্যই জামাকাপড় আছে আমার জন্যই থাকলে আমিও খুশি হতাম আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল আমি মলিন মুখে বাইরে চলে এলাম।সবার জন্য গিফট দেখলে আমার নিজেরও খুব লোভ হয় গিফটের কেউ আমাকে গিফট দিক সারপ্রাইজ দিক কিন্তু সেটাতো আমার কপালে নাই।

এদিকে চাচি নিজের রুমে বসে সব শাড়ি এক এক করে দেখছে আর আলমারিতে তুলে রাখছে। ইমা ইলা ইহান তাও পাশে রেখে তাদেরকে দিয়ে দেবে পরে। তখনই আরেকটা ব্যাগ চোখে পরলো সেই টার মধ্যে ঊষার জন্য একটা ড্রেস আছে যেটা তার বোন কিনে দিসে খুব দামী আর খুব সুন্দর। উনি চান না এই ড্রেসটা উসা পরুক এত দামি ড্রেস কেন পড়বে?
থম থম মুখ করে ড্রেসটার দিকে তাকিয়ে আছে আপা কে কত করে বললাম দিও না ওর জন্য তাও দিল আপাটা এত ভালো কেন বুঝিনা তার নাকি ঊষার জন্য খুব মন কেমন করে তাই জন্য টাকা দিয়ে দিছে। বলে কিনা মেয়েটার সামনে এসএসসি পরীক্ষা টাকাগুলি দিস।

কিছুতেই এতগুলো টাকা দিব না 5000 টাকা কিনা আমি কখনো না। এই টাকা তো আমার।কিন্তু এই ড্রেসটাই এখন কি করব যত দামি হোক এই ড্রেসটা তো কারো হবে না এই মাপের আর কেউ নেই একমাত্র লতা আছে ওকে দিয়ে দেবো কিন্তু আপাকে বলল এই ড্রেস পরা ছবি ও তার লাগবে আমাকে একটু বিশ্বাস করে না সে খুব ভালো করে জানো আমি দেবো না এজন্য এমন কথা বলেছে।
পরে সিদ্ধান্ত নিল ড্রেসটা ঊষা কেই দিয়ে দিবে তাই করল কিছুক্ষণ বাদে ঊষাকের ডেকে ড্রেসটা দিয়ে দিল।

রুমে এসে ড্রেসটার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি পুরো সাদা কালারের ড্রেসটা সাদা হলেও তার মাঝে সাদা কাজ এত সুন্দর ড্রেসটা
আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। গ্রাউনটা আমার পা পর্যন্ত হবে আর অনেক ঘের।পাথর গুলো চিকচিক করছে সাদার মধ্যেও। ওড়নাটা সাদার মধ্যে হালকা অন্য রঙের আছে ক্রিম ক্রিম কিন্তু বোঝা যায় না সাদা লাগে।আমি ওড়না গায়ের জরিয়ে আমার রুমের ছোট আয়নাটা নিয়ে নিজেই মুখের দিকে তাকিয়ে আছি কেমন লাগছে দেখছি।

তখনই কেউ পেছন থেকে ওড়নাটা আমার মাথায় ঘোমটা টেনে দিল আমি আয়নায় থেকে তাকে দেখতে পায় সে আর কেউ না ইহান ভাই। ভাইয়াকে দেখে আমি জমে গেলাম। ভাইয়া পেছন থেকে আমার মাথায় ঘোমটা টেনে আমার হাতের উপর হাত রেখে আয়না ধরল এখন ছোট্ট আয়নার মাঝে আমার আর ইহান ভাইয়ের মুখ দেখা যাচ্ছে।
আমার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে কারণ ভাইয়া এক হাতে আয়না ধরে আছে আর এক হাতে আমার কোমর জড়িয়ে আছে। আয়নার কাছে রাখা আমার হাত নিচে পরে গেলো।

“পারফেক্ট জুটি”

ভাই আমার কানের কাছে কথাটা নরম কন্ঠে মৃদু আওয়াজ করে বলল ভাইয়ার গরম নিশ্বাস আমার কানে গিয়ে বাড়ি খেলো। আমার সারা শরীর কাঁটা দিয়ে উঠলো।

#চলবে