এখানে সুখ ছোঁয়া যায় পর্ব-১৩

0
100

‘এখানে সুখ ছোঁয়া যায়’ (পর্ব-১৩)
ইনশিয়াহ্ ইসলাম।

মৌনতা থম মে’রে বসে আছে। ইখতিয়ার তার সামনের সোফায় বসল। মৌনতা এক ফাঁকে ইখতিয়ারকে চোখ দিয়ে পরখ করে নিলো। অদ্ভুত লাগছে ইখতিয়ারকে তার কাছে। সে গোমড়া মুখে বলল,

-‘আপনি এখানে কেন এসেছেন?’

-‘এখানে আসতে মানা নাকি?’

-‘আপনি দেখছেন না আমি একা থাকতে চাইছি!’

-‘স্যরি! বাট আপনি কি চাইছেন সেটা দেখা যাচ্ছে না। কারোরই চাওয়া টা চোখে দেখা যায় না। এটা তো অনুভবের ব্যাপার। কেউ কারো ভেতরে কি চলছে সেটা অনুভব করতে পারে না। এটাই সত্য। আপনি কষ্ট পাচ্ছেন বলে অপর জনের খারাপ লাগতে পারে কিন্তু সে আপনার কষ্টের পরিমাণ অনুভব করতে বা দেখতে পারে না। সে আপনাকে বলবে বুঝতে পারছি আপনার কষ্টটা, কিন্তু এটা কারো পক্ষে বলা সম্ভব নয় যে আপনার কষ্ট টা আমি অনুভব করছি। এটা মিথ্যা। যার যার দুঃখ কষ্ট তার তার কাছে। এর ভাগীদার কেউ হয় না। ঠিক ভালোবাসাও এমন! আপনি কাউকে কতটা ভালোবাসেন সেটা আপনি ছাড়া আর কেউ বুঝবেই না। জানতে পারবে কিন্তু বুঝতে পারবে না। আমরা যদি কারো ভালোবাসা মাপতে পারতাম কিংবা তার মতো করে অনুভব করতে পারতাম তবে এই পৃথিবীতে এক পাক্ষিক ভালোবাসা থাকতো না।’

মৌনতা অবাক চোখে তাকিয়ে রইল ইখতিয়ারের দিকে। উপলব্ধি করে দেখল আসলেই তো! চমৎকার বলেছে মানুষটা। এমন করে সে তো আগে কখনোই ভাবেনি। ইখতিয়ার কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে আবার বলা শুরু করল,

-‘প্রতিটি মানুষের আলাদা গল্প থাকে‌। এটা তো জানেন? আপনি একজনকে পাগলের মতো ভালোবাসলে সেও তো আরেকজনকে ঠিক সেভাবেই ভালোবাসতে পারে। কেউ কারো ভালোবাসা মাপতে পারে না এটা যেমন সত্য তেমনি আরেকটা সত্য হলো আমাদের সবার ভালোবাসাই এক। কিন্তু সেটা বরাবরই অন্যের প্রতি। আপনার তার প্রতি, তার আবার অন্য কারো প্রতি। এটাই লাইফ সার্কেল! আর এই কারণেই বলা হয় কেউ কারো ভালোবাসা বোঝে না অনুভব করে না। কারণ ওই বোঝার কিংবা অনুভবের স্থানে অন্য কারো বসবাস থাকে। আর সবার কাছেই ভালোবাসা মূখ্য। তাই এখানে অপরের জন্য দয়া টুকুও আসেনা।’

-‘আপনি কেন বারবার ভালবাসার কথা বলছেন? আমি কি বলেছি ভালোবাসা না পেয়ে আমি কাঁদছি?’

-‘কি জানি! আমার মনে হলো ওটাই। নাও হতে পারে। আমার বলতে ইচ্ছে করছিল।’

-‘বলবেন না। আমার শোনার ইচ্ছে নেই।’

-‘জ্বি।’

ইখতিয়ার শূন্যে তাকিয়ে রইল। মনে হলো কত কি যে ভাবছে! মৌনতার হঠাৎই নিজের কথা ভুলে লোকটা কি ভেবে উদাসীন হচ্ছে তা জানার ইচ্ছে হলো।

-‘আপনি কি কোনো কিছু নিয়ে আপসেট?’

ইখতিয়ার চমকে উঠল। মৌনতার দিকে তাকালো। একটু পর সময় নিয়ে বলল,

-‘শোনার ইচ্ছা না থাকার কারণে কত কিছু হারালাম সেই ভেবে একটু আফসোস অনুশোচনায় ভূগছি আর কি!’

-‘মানে!’

-‘মানে কিছু না। কখনো কখনো ইচ্ছে না থাকলেও শুনতে হয়। না শুনলে দেখা যায় অনেক কিছু হারাতে হয়।’

-‘আপনি কি হারিয়েছেন? সামওয়ান স্পেশাল?’

ইখতিয়ার থমকে গিয়েছিল প্রশ্নটায়। বোঝার সাথে সাথেই মাথা নাড়ল,

-‘ইয়েস! বাবারা তো স্পেশালই!________________________________

আড্ডার এক ফাঁকে তাইফ উঠে দাঁড়ালো। ঈশানকে উদ্দেশ্য করে বলল,

-‘ভাই একটু আমার সাথে চলো!’

ঈশান ভ্রু কুঁচকে বলল,

-‘কোথায়?’

-‘ওয়াশরুম যাবো।’ মিনমিন করে বলল তাইফ।

-‘তো যা! আমায় কেন যেতে হবে?’

রিতি হেসে ফেলল। বলল,

-‘আরে বোঝো না! ভয় পাচ্ছে ও। জরিনা আপার ভূ’তকে।’

তাইফ চোখ গরম করে তাকালো রিতির দিকে। রিতি চুপ হয়ে গেল। ঈশানকে আবারো অনুরোধ করতেই সে বিরক্ত মুখ করে উঠল। একটু সুযোগ পেয়েছে রুমঝুমের কাছাকাছি বসার। একটু যে মেয়েটাকে মন ভরে দেখবে তা না তাকে এখন ওয়াশরুমের সামনে পাহারায় থাকতে হবে কারোর। ধুর!

কাজ সেরে ওয়াশ রুম থেকে বের হয়েই তাইফ ঈশানকে বলল,

-‘একটা প্রাঙ্ক করি ভাই চলো!’

-‘কীসের প্রাঙ্ক!’

-‘ভূতের!’

ফিরে এসে তাইফ খুব হাঁপাতে থাকে‌। সবাই কি হয়েছে জানতে চাইলে তাইফ বলে,

-‘ছোট চাচার স্টাডি রুমের সামনে কেউ একজন ছিল! লম্বা, দশ হাত লম্বা!’

ঊষান বলল,

-‘কী আবোল তাবোল বলছিস? মাথা ঠিক আছে?’

-‘আমি দেখেছি। ছিল ওখানে! কেউ ছিল। জরিনা আপা ঠিকই বলেছে।’

জরিনা ভয়ে ঢোক গিলল। সাক্ষাৎ ভূ’ত দর্শন করেছে সে আজ! একেবারে সামনাসামনি। ভাবতেই তার গলা শুকিয়ে গেল। রিনিঝিনি ঈশানকে বলল,

-‘ও এসব কি বলছে!’

-‘জানি না। আমি তো দেখিনি কিছু!’

তাইফ তাড়াতাড়ি বলে উঠল,

-‘আমি ভাইকে দেখাতেই ওটা গায়েব হয়ে গেল আচানক।’

রিতি রিনিঝিনির হাত চেপে ধরে ভয়ে ভয়ে বলল,

-‘মিথ্যে বলবে না ভাইয়া!’

-‘আশ্চর্য! মিথ্যা মনে হচ্ছে তোর? আমি দেখেছি, এর আগে জরিনা আপা দেখলেন। আবার রুমঝুম আপুও দেখেছেন।’

রুমঝুম মাথা নাড়ল।

-‘ওটা তো বিড়াল ছিল।’

-‘না! বিড়াল ছিল না। বিড়ালের ছদ্মবেশে অন্য কেউ ছিল।’

ভয়ে গা কাঁটা দিয়ে ওঠে রুমঝুমের। এসব কি শুনছে? শেষে কিনা ভূতের বাড়ি এসে পড়ল সে! রুমঝুমকে ভয় পেতে দেখে ঈশান বলে উঠল,

-‘ভয় পাবেন না মিস। আমি তো আছি।’

ঈশানের কথাটা যেন রুমঝুম শোনেই নি। মনে মনে দোয়া দুরুদ পড়তে থাকে এক নাগাড়ে। হঠাৎ করেই রান্নাঘরে একটা আওয়াজ হলো। রিতি আর জরিনা ভয়ে চেঁচিয়ে উঠলো। তাহমীদ ধমকে উঠতেই চুপ হয়ে গেল দুজনে। রিতির কাঁদো কাঁদো অবস্থা তখন। তাইফ বলল,

-‘নিশ্চয়ই সেটা রান্নাঘরে!’

জরিনা বলে উঠল,

-‘ছোট ভাইজান এমুন কইরা কইলে হেরা গোসা করব। তাগোরে সন্মান দিতে হইবো।’

রিনিঝিনি ভুল শুধরে দিলো,

-‘সন্মান নয় সম্মান হবে।’

-‘হ আপনে এই বি’প’দ কালেও আমার দোষ ধরতেছেন!’

রান্নাঘরে আবারো শব্দ হলো। কিছু পড়ে যাবার। ঊষান বলল,

-‘চল তো গিয়ে দেখি আসল ঘটনা কি!’

তাইফ আর ঈশান দুজনেই মাথা নাড়ল। তারা যাবে না। গেলে ঊষান একা যাক। ঊষান ও তাদের চোখে ভয় দেখে একটু ঘাবড়ে গেল। অনিরুদ্ধ বলল,

-‘চলো আমি যাচ্ছি সাথে।’

ঊষান, অনিরুদ্ধ রান্না ঘরে গিয়ে দেখল একটা চামচ আর বাটি নিচে পড়ে আছে। মনে হচ্ছে এটা বিড়ালের কাজ। তারা ফিরে আসার সময় খেয়াল করল সিঁড়ির কোণে লাল আলো জ্বলছে। ঊষানের হুট করেই ভয় হলো। এখানে তো লাল আলো জ্ব’লার কথা নয়। অনিরুদ্ধ বলল,

-‘কি হলো? দাঁড়িয়ে পড়লে যে!’

-‘না, কিছু না। চলুন!’

তারা যখন সবার কাছে গেল তখনই একটা কান্নার আওয়াজ শুনতে পেল। জরিনা ‘ওরে আল্লাহ্ রে’ বলেই আবার চিৎকার দিয়ে উঠলো। তাহমীদ তাইফকে জিজ্ঞেস করল,

-‘তোরা কোনো মজা করছিস না তো?’

তাইফ দ্রুত মাথা নাড়ে,

-‘না ভাই! আমি কিছু করিনি। আমি এমন করব কেন?’

ঊষান বলল,

-‘তোকে ভরসা নেই।’

তাইফ মিইয়ে গেল। কিন্তু জরিনা বলে উঠল,

-‘আমি জানি এমুন ক্যান হইতেছে!’

রিচি বলল,

-‘কেন জরিনা আপা?’

-‘দাদী কইছিল দাদার রুহ নাকি নারাজ হইছে। মনে হয় এই কারণেই!’

রিনিঝিনি জরিনার দিকে অ’গ্নিদৃষ্টি নিয়ে তাকালো,

-‘বাজে কথা বলবি না। ভূ”ত প্রে’ত হয় না।’

রুমঝুম ও মাথা নেড়ে সায় জানায়,

-‘আমিও জানি ভূ’ত বলতে কিছু নেই। তবে জ্বী’ন আছে।’

তাহমীদ চট করে রুমঝুমের দিকে তাকালো। রুমঝুম বুঝতে পেরে মাথা নিচু করে ফেলল। কান্নার আওয়াজটা আবারো হলো। এবার রিতি কেঁদেই ফেলবে এই অবস্থা। রাতের দেড়টা বাজে। সবাই গভীর ঘুমে। রুম গুলো সব ভেতরের দিকে। এদিকের শব্দ তারা ছাড়া আর কেউই পাচ্ছে না। ছোট চাচার স্টাডি রুমে খচখচ করে শব্দ হচ্ছে। ঈশান শুনতে পেল। ঊষানকেও ইশারায় শুনতে বলল। কান পাততেই শুনতে পায় ঊষানও। রিনিঝিনি বলল,

-‘আজ অনেক গল্প হয়েছে! চলো! ঘুমাতে যাই। আর গল্প করা লাগবে না।’

কারোরই আর গল্প করার বিশেষ ইচ্ছে রইল না। সবাই উঠল। রিতি বলল,

-‘আপু আজ আমি তোমার সাথে ঘুমাবো।’

-‘আমার সাথে? আচ্ছা চল।’

জরিনার এক ফাঁকে নিজের ঘর থেকে বালিশ কাঁথা নিয়ে এসে বলল,

-‘আইজ আমিও একলা ঘুমাইতে পারুম না। আপনের রুমে বিছনা পাইতাম এক ঘুম দিমু, রাইত কাবার।’

ঈশান আর তাইফ সবার পেছনে হাঁটতে লাগল। তাইফকে ঈশান বলল,

-‘তোর ওই মিনি সাউন্ড সিস্টেমটা উঠিয়ে আন জলদি। কেউ দেখতে পেলে আমাদের খবর আছে।’

তাইফ উঠিয়ে আনতে গেল সাউন্ড সিস্টেমটা সিঁড়ির নিচে থেকে তখনই বেকায়দায় পড়ে গিয়ে কান্নার আওয়াজটার ভলিউম বেড়ে গেল। আর তখন এত জোরে আওয়াজটা হলো সবাই শুনতে পেল। ছোট চাচা তার স্টাডি রুমে ছিলেন সেখান থেকে বেরিয়ে এলেন! রিনিঝিনির বাবা,মা আর বড় চাচাও হন্তদন্ত হয়ে নিজ নিজ রুম হতে বের হয়ে এলো। ছোট ফুফু আর বড় ফুফু একজন আরেকজনকে জাপটে ধরে ঘরের বাইরে বেরিয়ে এলো। গেস্টদের কয়েকজন ও এসে পড়ল। তাইফ চেষ্টা করেই যাচ্ছে কিন্তু সাউন্ড কমাতে পারছেনা আর বন্ধ করতেও পারছে না। অতঃপর আছাড় মে’রে ভেঙে ফেলল। ততক্ষণে সবাই সিঁড়ির নিচে এসে পড়ল। তাহমীদের দিকে তাকিয়ে তাইফ ভ্যাবলার মতো হেসে ফেলল। রিতি বলল,

-‘আমার আগেই মনে হয়েছে সব এর কাজ!’

ছোট চাচা এসে তাইফকে প্রচুর বকাঝকা করলেন। শা’স্তি দিলেন বাকি রাত তাইফকে হল রুমেই কাটাতে হবে। সে যেন এখান থেকে না যায় সেই পাহারায় রাখলেন ঈশানকে। এরপর জরিনা আর গেল না রিনিঝিনির রুমে। যা যা এনেছে সব নিয়ে আবার নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ল। তবে রিতির ভয় কাটেনি। সে রিনিঝিনিকে বলল একটু তার সাথে তার রুমে যেতে। প্রয়োজনীয় সব নিয়ে চলে আসবে। রিনিঝিনি রুমঝুমকে বলল,

-‘তুমি গিয়ে শুয়ে পড়। আমরা এইতো যাব আর আসব।’

রিনিঝিনি চলে যেতেই রুমঝুম একা হয়ে পড়ল। ঊষান অনিরুদ্ধকে নিয়ে নিজের রুমে গেল। অল্প সময়ে দুজনের ভালোই ভাব হয়েছে। রুমঝুম ভেবেছিল কেউ নেই আশেপাশে। সে রিনিঝিনির রুমের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় কেউ তার লম্বা বেণী টেনে ধরল। ভয়ে আতঙ্কে তার মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল। পেছন ফিরে তাহমীদকে দেখে আরো চমকে উঠল। চুল ছাড়িয়ে নিলো। তাহমীদ বলল,

-‘কি ভেবেছিলে? জ্বী’ন!’

থমথমে গলায় রুমঝুম জবাব দিলো,

-‘জ্বী’ন এতো অভ’দ্র না।’

-‘আমি অভ’দ্র? আমি তো জানি আমি অস’ভ্য।’

রুমঝুম নিজের কৌতূহল ধরে রাখতে পারল না। বলল,

-‘আমি অবাক হচ্ছি আপনাকে দেখে। বিশ্বাস হচ্ছে না এটা আপনি।’

-‘কেন?’

-‘আপনি আগে এমন ছিলেন না। আপনি যে এমন জানতাম না তো।’

-‘তুমি আমাকে জানার চেষ্টাই বা করেছ কখন?’

তাহমীদ এই কথাটা বলেই চলে গেল। আর দাঁড়ালো না। রুমঝুম তার কথার মর্মার্থ বুঝতে না পেরে দাঁড়িয়ে রইল। কি বোঝাতে চেয়েছিল তাহমীদ?

রিতি নিজের রুমে এসে দেখল মৌনতা বসে আছে। সে অবাক হলো।

-‘আমি ভেবেছিলাম তুমি চলেই গিয়েছ!’

-‘না উপরে ছিলাম। তোরা কোথায় ছিলি? ঘুমাবি না?’

-‘হ্যাঁ, ঘুমাবো। আপু তুমি যাও মৌনতা আপু তো এসেই গেছে। এখন আর একা নেই আমি।’

রিনিঝিনি মাথা নেড়ে চলে এলো। মৌনতা বলল,

-‘কি হয়েছিল রে?’

লাইট অফ করে বিছানায় শুয়ে রিতি বলতে লাগল,

-‘অনেক কিছু হয়েছে!’

রিনিঝিনি রিতির রুম থেকে বেরিয়ে তিন তলার সিঁড়ির কাছে আসতেই দেখল ইখতিয়ার নামছে। রিনিঝিনিকে দেখে সে যেন খুব খুশিই হলো। বলল,

-‘রিনিঝিনি! মাথাটা খুব ধরেছে। একটা কড়া কফি হবে?’

রিনিঝিনি মৃদু হেসে বলল,

-‘নিশ্চয়ই হবে। আপনি ঘরে গিয়ে বসুন আমি আনছি। চিনি কয় চামচ খান?’

-‘খাই না। তবে আপনি চাইলে একটু দিতে পারেন।’

রিনিঝিনি আবারো হাসল। সে চলে যেতেই ইখতিয়ার হেসে বলল,

-‘প্রিটি উম্যান্!’

#চলবে।